09/06/2021
হয়ত একেই বলে বাঘের বাচ্চা। নদী, জঙ্গল, দ্বীপ কিছুই বাধা হয়নি তার কাছে। তাই ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ, তিনটি দ্বীপ, একাধিক নদী, বড় বড় জঙ্গল পার হয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের সুন্দরবন অংশে ফিরে এসেছে একটি পুরুষ রয়েল বেঙ্গল টাইগার। আর এই পথ পাড়ি দিতে তার সময় লেগেছে প্রায় তিন মাস।
বাঘের গতিবিধির ওপরে নজর রাখার জন্য তার গলায় রেডিও কলার পরিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বন বিভাগের কর্মীরা।
ওই রাজ্যের প্রধান ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন ভি কে যাদব জানান, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে রেডিও কলার পরিহিত ওই পুরুষ বাঘটি বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশ সুন্দরবনেই অবস্থান করেছে।
তিনি বলেন, ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হরিণভাঙ্গা থেকে বাসিরহাট রেঞ্জের অন্তর্গত হরিখালী শিবিরের সামনের দিকে বাঘটিকে ধরা হয়েছিল এবং গত ২৭ ডিসেম্বর স্যাটেলাইট কলার পরিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিন ভারতের এলাকায় ঘুরে বাঘটি তালপট্টি দ্বীপে প্রবেশ শুরু করে এবং ছোট হরিখালী, বড় হরিখালী এমনকি রায়মঙ্গলের মতো চওড়া নদীগুলো পেরিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবনে এসে পৌঁছায়। যদিও বাঘটি সুন্দরবনের ভারত না বাংলাদেশের অংশের তা নিশ্চিত করতে পারেনি ভারতের বন বিভাগ।
চলতি বছরের ১১ মে ওই বাঘটি রেডিও কলার সংকেত দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তার আগে বাঘটি হরিণভাঙ্গা, খাতুয়াঝুরি এবং বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপ অতিক্রম করে। বাঘটির শেষ অবস্থান ছিল সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে।
১১ মে রেডিও কলার থেকে সিগন্যাল পাঠানো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কিভাবে তারা সেই বাঘটির অবস্থান বুঝতে পারলেন জানতে চাইলে ভারতের বন বিভাগ জানান, রেডিও কলারের গ্যাজেটে একটি মৃত্যুর সেন্সরও ছিল, যা বাঘের মৃত্যু ঘটলে সংকেত দেয়। কিন্তু কলার থেকে কোনো স্থিতিশীল সংকেতও পাওয়া যায়নি, যা বাঘ নিরাপদ রয়েছে তা নির্দেশ করে। তাই মনে হচ্ছে কলারটি বাঘের ঘাড় থেকে খুলে পড়ে গেছে। পানির লবণাক্ততার কারণে কলারের ক্ষতিও হয়ে থাকতে পারে।
তবে ওই বাঘ নিয়ে বাংলাদেশের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য জানা যায়নি।
ভারতের বন বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে একটি বাঘিনীকে রেডিও কলার পরিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই বাঘটিও বঙ্গোপসাগরের প্রান্তে পৌঁছানোর জন্য চার মাসে ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়েছিল।
তথ্য সূত্র - যুগান্তর
ছবি - সংগৃহীত