04/10/2020
সেইন্টমার্টিনে যাওয়ার নৌপথের কিছু তথ্যঃ-
১। টেকনাফ থেকে সাধারণত ২টি ট্রলার যায় সেইন্টমার্টিন প্রতিদিন। সময় সকাল ৯টা, ১০টা। কিন্তু ওরা কোনো সময় মানেনা। ট্রলার লোড হয়ে গেলে আগেভাগেই ছেড়ে দেয়। আমার ট্রলার ছিলো ১০ টায়, ছেড়েছিলো ৯:৩০ টায় আনুমানিক। আবার প্রথম ট্রলার ৯টায় ছাড়বে বললেও ওটাও ১০টার ট্রলারের আগেপরেই ছাড়ে।
২। ট্রলারের সাভিস: একদম যাচ্ছেতাই। যে যেভাবে পারছে উঠছে। প্রচুর মাল দিয়ে পেট লোড করবে। আর এর উপর মানুষ। যাত্রীর চাপ বেশি হলে আপনাকেও মালের মত লোড হয়ে যেতে হতে পারে। ভাড়া ২২০ টাকা।
৩। ট্রলারে যাবার নিয়ত থাকলে বাসা থেকে ছাতা অবশ্যই নিয়ে আসবেন। কারণ সমুদ্রের উপরে রোদের তাপ একদম খাড়াভাবে লাগে। ইন্জিনের সাউন্ডটা অনেক। চেষ্টা করবেন ইন্জিন থেকে দূরে বসতে। আপনার যদি মোশন-সিকনেস থাকে তাহলে ট্রলারে না যাওয়াই ভালো, বমি করে দিতে পারেন। রোদের তাপ, ইন্জিনের শব্দ; এসব সহ্য করার শক্তি না থাকলে মাথা ঘুরতে শুরু করবে আপনার। তবে ট্রলার সমুদ্রে পা দেয়ার পর বাতাস পাবেন। সাধারনত ২:৩০ মিনিট সময় লাগে টেকনাফ থেকে সেইন্টমার্টিন পৌছাতে।
৫। ট্রলারে কারা যাবেন: একা, সাথে ২-৩জন বন্ধু, সাহসওয়ালা মহিলাও সাথে নিতে পারেন। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে ট্রলারে না যাওয়াই ভালো। সময় কম লাগে, টাকা সেইভ ছাড়াও একটু বাড়তি উত্তেজনার জন্যও ট্রলারে যেতে পারেন। তবে চেস্টা করবেন যে ট্রলারটায় লোকাল লোকজন বেশি সেটায় উঠতে। কারণ সমুদ্রে ঢেউ দেখে আপনি ভয় পেতে পারেন। কিন্তু আসলেই কি সেটা ভয় পাওয়ার যোগ্য কিনা সেটা লোকালদের এক্সপ্রেশন দেখে বুঝতে পারবেন। আর যদি এমন ট্রলারে উঠেন যেটায় সবাই ভ্রমনের জন্য ফাস্ট/সেকেন্ড টাইম সেইন্টমার্টিন যাচ্ছে তাহলে মাঝসমুদ্রে গিয়ে বাচাও, উঠাও, মইরা গেলামগো, মাফ কইরা দেওগো টাইপ কান্নাকাটি, চিল্লাচিল্লি শুনতে পাবেন।
৬। সেইন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ ফিরার ট্রলার ছাড়ে সকাল ৮টা, ৯টায়। এছাড়া এখন কর্নফুলী শিপ পাবেন কক্স-সেইন্টমার্টিন, সেইন্টমার্টিন-কক্স আসা-যাওয়া করে। ভাড়া ওয়ান ওয়ে ১০০০ টাকা। সেইন্টমার্টিন থেকে বিকাল ৩ টায় ছাড়বে বললেও ৪টা করে ফেলে। সময় লাগে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা। ভাড়া ১০০০ হলেও আপনি টিকেটটি সেইন্টমার্টিনের লোকাল লোকের মাধ্যমে নেন তখন ৫০০-৬০০ টাকায় ম্যানেজ করতে পারবেন। কারণ কর্ণফুলীতে লোকালদের জন্য ভাড়া ৫০০ টাকা। সেক্ষেত্রে শিপের স্নাক্সটা পাবেননা।
এই হলো সেইন্টমার্টিন ভ্রমনে ট্রলার/শিপের ওভারভিউ। সেইন্টমার্টিন খুবই ছোটো দ্বীপ, দিন’ত দিন আরো ছোটো হচ্ছে। ডাব খেয়ে খোষাটা নির্দিষ্ট যায়গায় ফেলুন। চিপস, পানির বোতল এখানে সেখানে ফেলে নোংরা করবেননা। চেস্টা করবেন অফসিজনে সেখানে যেতে, তাহলে একচুয়াল সেইন্টমার্টিনের ফিলটা পাবেন। আমার সাথে থাকা লোকাল ছেলেকি জিজ্ঞেস করেছিলাম, মানুষ এত কম কেনো, ওর ভাষায়; অনসিজনে সেখানে পা ফেলার জায়গা পাবেননা, এত ভিড় থাকে। ছেড়াদ্বীপে যাওয়ার সময় ভুলেও সাইকেল নিবেননা, শেষে সাইকেল আপনাকে বয়ে বেড়ানো বদলে আপনাকেই সাইকেলকে বয়ে বেড়াতে হবে। যেখানেই যাবেন, লোকালদের সাথে প্রচুর কথা বলবেন/ আড্ডা দিবেন; তাহলে অনেককিছু জানতে/দেখতে পারবেন যা পূর্বে কেউ দেখেনি।
কার্টেসি abdullah al gofran