01/02/2024
দিনাজপুর জেলা- ২য় পর্ব
গত পর্বে আমরা দিনাজপুর সদরের আশপাশের ভ্রমণ স্পট সম্পর্কে জানিয়েছি। আজকে আমরা শহর থেকে একটু দূরে যাবো, নবাবগঞ্জ উপজেলায়। আজকে দেখবো এখানে কি কি দেখতে পাবেন আপনারা।
প্রথমে বলি 'স্বপ্নপুরী' কে নিয়ে। এটা দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে প্রায় ৫০০ একর ভূমির উপর গড়ে তোলা হয়েছে যা উত্তরবংগের সবচেয়ে বড় এমিউজমেন্ট পার্ক। সড়কপথে দিনাজপুর থেকে স্বপ্নপুরীর দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার। কৃত্রিম লেক, পাহাড়, উদ্যান, ঝর্ণা, বৈচিত্র্যপূর্ণ গাছগাছালি, ফুলের বাগান, বিভিন্ন প্রতিকৃতি, শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, ডাকবাংলো কি নেই এখানে। আরো আছে কেবলকার, ঘোড়ারগাড়ী, কৃত্রিম মৎস্য জগত। দর্শনার্থিদের খাবারের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি মোটামোটি মানের রেষ্টুরেন্ট। আর যারা পিকনিকের জন্য দল বেধে যাবেন তাদের জন্যও সমস্ত ব্যবস্থা সেখানে করা আছে। সাধারন দর্শনার্থিদের প্রবেশের জন্য টিকেট লাগে, মূল্য ১০০ টাকা। তাছাড়া স্বপ্নপুরীর ভিতরে প্রায় প্রতিটি আলাদা আলাদা অংশে যেতে বিভিন্ন মূল্যের আলাদা আলাদা টিকেট কাটতে হয়।
এরপর বলতে হয় নবাবগঞ্জ ন্যাশনাল পার্ক নিয়ে। ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ৫১৭.৬১ হেক্টর বা ১২৭৮.৪৯ একর জমি নিয়ে এই জাতীয় উদ্যানটি গঠিত। নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের প্রধান বৃক্ষ শাল ও সেগুন। এছাড়াও আছে গামার, ইউক্যালিপটাস, জাম, আকাশমনি ও নানান শ্রেণির অর্কিড। বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে বনবিড়াল, খেঁকশিয়াল, মেছোবাঘ ও নানান রকম সাপ। নানান জাতের পাখিও আছে এ বনে। এখানের অন্যতম আকর্ষন আশুড়ার বিল। এই বিলের বোয়াল পাবদা বেশ বিখ্যাত। আর সাথে পদ্মফুলের সমারোহে ঘুরে বেড়ানোর জন্যে রয়েছে বোট। সম্প্রতি একটি আঁকাবাঁকা কাঠের সেতুও নির্মাণ করা হয়েছে। এই উদ্যানেই রয়েছে বাল্মিকী মনির থান এবং ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সীতাকোট বিহার।
তো নবাবগঞ্জের এই জায়গা গুলোতে কিভাবে ঘুরতে আসবেন। আমাদের বিগত পোস্টেই ঢাকা হয়ে দিনাজপুর আসার নিয়ম জানিয়ে দিয়েছি। এই স্পট গুলোতে আসতে চাইলে দিনাজপুর যাওয়ার পথে ভাদুরিয়া বাজার নেমে যেতে হবে। আর দিনাজপুর থেকে আসতে চাইলে বগুড়া মেইল বাসে আসতে হবে। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। সময় লাগবে ১.৫ ঘন্টা। ভাদুরিয়া বাজার থেকে ৫০ টাকা জনপ্রতি ভাড়ায় অটোতে নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের ভেতরে থাকা আশুড়ার বিল, কাঠের ব্রীজ পর্যন্ত যাওয়া যায়। সেখান থেকে ১০ টাকা জনপ্রতি ভাড়ায় সীতাকোট বিহার ও যাওয়া যায়। আর ২০০ টাকায় রিজার্ভ নিলে প্রথমে সীতাকোট বিহার ঘুরে পরে উদ্যানের ভেতর দিয়ে আশুড়ার বিলের গেট পর্যন্ত নামিয়ে দিবে। ফিরতি পথে একইভাবে আসা যায়। আর স্বপ্নপূরী যেতে চাইলে প্রথমে ভাদুরিয়া বাজার থেকে নবাবগঞ্জ বাজার আসবেন অটোতে ৩০ টাকা জনপ্রতি দিয়ে। এরপর সেখান থেকে আবার অটোতে জনপ্রতি ৩০ টাকা দিয়ে স্বপ্নপূরী চলে আসতে পারবেন। এছাড়া দিনাজপুর থেকে আসলে ফুলবাড়ি বাজার নেমে সেখান থেকেও জনপ্রতি ৩০ টাকা কিংবা রিজার্ভ ১৫০ টাকায় অটোতে সোজা চলে আসতে পারবেন স্বপ্নপূরীতে। দিনাজপুর আসলে ১ দিন সময় নিয়ে অবশ্যই এই স্পটগুলো ঘুরে আসবেন।