25/01/2023
বাংলাদেশ! কতটুকুই বা অংশ? ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটারের ছোট্ট একটা দেশ। এই দেশে বসবাস করে ১৭ কোটিরও বেশি মানুষ। ইউরোপের একটা দেশের ৫ ভাগের একটা অংশে যতটুকু জায়গা থাকে বাংলাদেশ তার থেকেও ছোট। কিন্তু ইউরোপের ৪-৫ টা দেশ মিলিয়েও ১৭ কোটি মানুষ হবে না!
ট্রাফিকজ্যামের কথা যদি বলি।কোন্ দেশে ট্রাফিকজ্যাম নেই? রাশিয়ার মস্কো থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডের লন্ডন, আমেরিকার ওয়াসিংটনেও কিন্তু জ্যাম আছে। এই জ্যামের কারণে ঠিক সময়ে অফিসে পৌছানোর জন্য বাংলাদেশিদের মত তাদেরও ২-৩ ঘন্টা আগে বাসা থেকে বের হতে হয়।
তাদের মধ্যে আর বাংলাদেশিদের মধ্যে পার্থক্য হল, তারা ট্রাফিকজ্যামের সিগ্ন্যাল মেনে বসে থেকে কিভাবে জ্যাম কমানো যায়, কি করলে জ্যাম কম হবে সেটা ভাবে। আর আমরা বাংলাদেশিরা ট্রাফিকজ্যাম লাগলেই সরকারকে গালাগাল দেয় এবং কিভাবে এই জ্যাম থেকে শুধু মাত্র নিজে নিজের গন্তব্যস্থানে পৌছাবো সে চোরা চিন্তা করি, ফলে জ্যাম আরো বেড়ে যায়!
পৃথিবীর সব দেশের রোড এক্সিডেন্টে মানুষ মারা যায়।কিন্তু ইউরোপ আমেরিকা অস্ট্রেলিয়ান লোকেরা যেখানে সেখানে গাড়ী ওভারট্রেক করে না, তারা রাস্তা পারাপারের সময় ফুটওভারব্রীজ ব্যবহার করে। আর আমরা বাংলাদেশিরা রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় ওভারট্রাক করি, কে কাকে পিছে রাখতে পারে সেটার প্রতিযোগিতা করি।
আমাদের বাংলাদেশের যে গাড়ির পেছনে লেখা থাকে, 'সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি' দূর্ভাগ্যক্রমে সেই গাড়ির ড্রাইভার'ই ওভার স্প্রিডে গাড়ি চালায়।
রাস্তা পারাপারের জন্য ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করেই রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকি, এদিক ওদিকে একনজর তাকিয়ে ভুম করে দৌড় দেই, এই আমরা। কিন্তু এক্সিডেন্ট হলে দেশকে গালি দিতে একটুও ভুল করিনা।
পৃথিবীতে কোন্ দেশে চুরিডাকাতি হয় না? আমেরিকা,অস্ট্রেলিয়া,ইউরোপ প্রতিটা মহাদেশে প্রতিটা জায়গায়-ই চুরিডাকাতি হয়।
তাদের দেশে চুরি ছিন্তাই হলে কিন্তু কথার সাথেই দেশকে খারাপ বলে না।কিন্তু নুনের থেকে চুন ঘষলেই আমরি বাংলাদেশিরা নিজের দেশকে একটুও ছাড় দেই না। (আমেরিকাতে চলন্ত কন্সার্টে বোমা মেরে শিল্পিকে উড়িয়ে দেয়ার ঘটনা অহরহ)
লোডশেডিং সব দেশেই হয়। ইউরোপীয়, আমেরিকানরা কিন্তু অযথা ঘরের লাইট ফ্যান এসি চালিয়ে রাখি না। আর আমরা বাংলাদেশিরা ঘর থেকে বের হবার সময়ও লাইট ফ্যান এসি সব চালিয়ে বের হয়ে যাই। শীতের দিনে চুলা জ্বালিয়ে রাখি ঘর উষ্ণ রাখার জন্য। এখনো বাংলাদেশে হাজার হাজার পরিবার আছে যারা রান্নার শেষে চুলা বন্ধ না করে চুলার আগুণটা একটু কমিয়ে রাখে যাতে পরের বার দেয়াশলাই জ্বালাতে না হয়। এর জন্য গ্যাসের সমস্যা তো হয়'ই। দৈনিক কত ঘরে যে আগুণ লাগে এবং ঐ আগুণে ক্ষতির পরিমান কতটুকু তা হিসেব করাটাও লজ্জাজনক।হাজার হাজার মানুষও পুঁড়ে ছাঁই হয়ে যায়। আগুণ লাগলে এটাও দেশকে দেশের সরকারকে দোষ দিতে আমরা দ্বিধা করি না।
এত কিছুর পরেও দেখছি বাংলাদেশ কিন্তু উন্নত হচ্ছে। একদিন আমরা সুঁইও বানাতে পারতো না, গার্মেন্টন্সের জন্য সুঁই আসতো চীন থেকে আর এখন আমরা জাহাজ পর্যন্ত বানিয়ে ফেলি। বাংলাদেশের গার্মেন্টের কাপড় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়!
বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে এশিয়ার শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী দলদের একটা বলা হয়!
মাত্র ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার জায়গায় মানুষ বসবাস করে ১৭ কোটিরও বেশি। আর এই জনবহুল দেশের মধ্যেও ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে জায়গা দিয়েছি। বেঁচে গেছে ১০ লক্ষ মানুষের প্রাণ। যদিও এখন তাদের বাচ্চাকাচ্চা সহ ২৫ লক্ষ হবে 🙈
যেদিকে আমাদের থাকার জায়গা পর্যন্ত নেই, আবার সেই আমরাই খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের মধ্যে চীনের পরে দ্বিতীয়স্থান অধিকার করেছি।
হাজার হাজার ঝামেলার মধ্যেও বাংলাদেশ কিন্তু এগিয়ে চলেছে। একসময় অনুন্নত দেশ, বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আছে।
প্রতিদিন নিউজে শুনি বাংলাদেশে অগনিত ধনীলোক আছে। প্রতিনিয়ত ধনীলোকের জন্ম হচ্ছে!
আমাদের উচিত দেশকে ভালোবাসা। সরকার দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।জনগনের উচিত সরকারের পাশে দাঁড়ানো। তা যে সরকারই হোক না কেন্!
ইউরোপ আমেরিকা এতটা উন্নত কেন জানেন? কারণ তারা সব সময় সরকারের পাশে থাকে।অন্যায়ের প্রতিবাদ করে।সত্যের কথা বলে!!
~Ataur Shusmoy