22/12/2020
বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত, এবং সাদা মাটির পাহাড়ের দেশ, #সুসং_দুর্গাপুরে ঘুড়তে যাবার আগে, অবশ্যই এই তথ্য গুলো জেনে নিন।
প্রথমেই বলে নিচ্ছি,
পুর্বে যাদের ধারনা ছিলো (দুর্গাপুরের) রাস্তা খুবই খারাপ, তাদের জন্য সুখবর এই যে, দুর্গাপুরের রাস্তা এখন খুবই ভালো।
আমাদের দুর্গাপুরে এসে আপনি যা যা দেখতে পাবেনঃ..
১ সাদা মাটি সহ কয়েক রঙের মাটির পাহাড়।
২ সাদা মাটির পাহাড়ের ঘেঁসেই রয়েছে, নীল এবং সবুজ পানির লেক।
৩ রানীক্ষং মিশনারি খ্রীষ্টান ক্যাম্প।
৪ বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত ঘেসা উচু গারো পাহাড়।
৫ বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্প।
৬ কমলা বাগান।
৭ কমলা রানীর দীঘি।
৮ বিরিশিরি কালচারাল একাডেমী।
৯ সোমেশ্বরী নদী।
এবং আরো অনেক কিছু।
কিভাবে যাবেন দুর্গাপুর?
ঢাকা থেকে সুসং দুর্গাপুর যাওয়ার উপায়ঃ
"বাস সার্ভিস"
ঢাকা থেকে সুসং দুর্গাপুরে যাওয়ার এবং ফেরার জন্য সবচাইতে ভালো হবে নাইট কোচ বাস সার্ভিস।
ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সুসং দুর্গাপুরে উদ্দেশ্যে নাইট কোচ সহ দিনে ও রাতে বেশ কিছু বাস ছেড়ে যায়।
এই বাস আপনাকে সুসং দুর্গাপুর এর প্রাণকেন্দ্রে নিয়ে নামাবে।
রাত ১২ থেকে প্রায় কয়েকটা বাস মহাখালী টার্মিনাল থেকে নাইট কোচ ছেড়ে যায়।
আগে থেকে যোগাযোগ করে টিকিট বুকিং দিয়ে রাখবেন। আবার ঢাকা ফেরার জন্য রাত ১১ টা থেকে কয়েকটা নাইট কোচ বাস দুর্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দ্যশ্যে ছেড়ে যায়।
আপনি এখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে যেতে পারেন।
ভোর পাঁচটার মধ্যেই মহাখালী পৌঁছে যাবেন।
ঝামেলা মুক্ত এবং নিরাপদ ভ্রমন এর জন্য এটাই সবচেয়ে ভাল সাজেশান।
টিকিট বুকিং এর ফোন নাম্বারঃ
ঢাকা কাউন্টার: 01917710008 (এরশাদ)
সুসং দুর্গাপুর কাউন্টার: 01711669774 (শিপার)
এছারা দিনেও বাস আছে ঢাকা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকেই পেয়ে যাবেন।
বিআরটিসির একটি স্পেশাল বাস প্রতিদিন বিকাল ৩.২০ তে কমলাপুর বিআরটিসি কাউন্টার থেকে ছেড়ে যায় যা ছয় ঘন্টার মধ্যে আপনাকে সুসং দুর্গাপুরের একবারে প্রানকেন্দ্র পৌচে দিবে।
কিন্তু স্থানীয় পরিবহন রাজনীতির কারনে প্রায়ই বাসটির সার্ভিস বন্ধ থাকে।
"ট্রেন সার্ভিস"
ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ভোর ৪:৪৫-বলাকা কমিউটার ছেরে যাবে ময়মনসিংহ হয়ে জারিয়ার উদ্দেশ্যে।
(এখন টাইম কিছুটা এদিক সেদিক হতে পারে)
সকাল সারে ১১টায় জারিয়া রেলস্টেশনে ট্রেনটি অবস্থান করবে।
সেখান থেকে সিএনজি, লেগুনা, মাহিন্দ্রা, কিংবা ভাড়ায় চলে মোটরসাইকেল নিয়ে আপনি দুর্গাপুর যেতে পারবেন।
ভাড়াঃ
লেগুনা, মাহিন্দ্রা ৩০/৩৫টাকা
সিএনজিঃ ৪০ টাকা
মোটরসাইকেলঃ ৬০/৭০ টাকা
নতুন আগতদের জন্য সরাসরি বাস এ আসাই ভাল এতে ঝামেলা কম।
সুসং দুর্গাপুর বাজার থেকে নৌক বা ফেরীর মাধ্যমে সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে, গারো পাহাড়, গোলাপী পাহাড়, নীল/সবুজ পানির লেক, ঘুরে আসা যায়। সেখানে ভারত বাংলাদেশ বর্ডার ছাড়াও দেখার মতন রয়েছে একটা চার্চ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ট্রেনিং নেয়ার জন্য তৈরী কয়েকটা পিলার।
নদী পার হবার পর, অর্থাৎ শিবগঞ্জ বাজার থেকে স্পটে যাবার জন্য,
অটো, বা ভাড়ায় চলে বাইক পেয়ে যাবেন।
অটো, মোটরসাইকেলের ভাড়ায় প্রতারিত হবেন না।
স্থানীয় দোকানদার, বা অন্য কারো কাছে আগেই জেনে নিবেন।
কেনো-না ট্যুরিস্ট দেখা মাত্রই অনেক অটো ড্রাইভার, তাদের ভাড় দ্বিগুণ করে ফেলে।
থাকার ব্যবস্থাঃ
সুসং দুর্গাপুরে থাকার জন্য ভাল মানের বেশ কয়েকটি গেস্ট হাউস আছে।
নিম্নে এদের নাম এবং কন্টাক্ট নাম্বার দেয়া হল-
১. জেলা পরিষদ ডাক বাংলা: 01558380383, 01725571795
২. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল একাডেমী গেষ্ট হাউজ।
ফোনঃ 09525-56042; মোবাইলঃ 01815482006
৩. ইয়ুথ মেন খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বা ওয়াইএমসিএ-এর রেস্ট হাউস।: 01818613496, 01716277637, 01714418039, 01743306230, 01924975935, 01727833332।
৪. YWCA গেষ্ট হাউজ: 01711027901,।YWCA এর জন্য ‘অমিতা সাংমা – ০১৭১২০৪২৯১৬’
এদের বিরাট একটা হলরুম আছে যেখানে একসাথে ১৮ জন থাকতে পারবে।
YWCA এর ছাদটা বেশ সুন্দর, সেখান থেকে পূর্ণিমা দেখতে অসাধারণ লাগে।
এখানকার থাকার হোটেল গুলোর রুম ভাড়া ৫০০ থেকে শুরু করে ২ হাজার/ ৩হাজার অব্দি, এসি, নন এসি রুম পাবেন।
এছাড়া আরো অনেক থাকার হোটেল রয়েছে।
তবে ট্যুরিস্টেরদের জন্য সব চেয়ে উত্তম দুর্গাপুর যাবার আগেই, কিংবা গিয়েই, সেখানকার ট্যুরিস্ট গাইড, অথবা দুর্গাপুর রিলেটেড ফেবু গ্রুপ গুলোর সাথে পরিচিত হয়ে নেয়া।
এক্ষেত্রে আপনি অনেক হেল্প পাবেন।
কিছু কথা না বললেই না।
ঠিক দুই একদিন আগে এক আপু দুর্গাপুর নিয়ে এই গ্রুপেই খুব কস্টদায়ক একটি পোস্ট করেছেন।
উনার এইরকম বাজে অভিজ্ঞতার জন্য পুরো দুর্গাপুর বাসীর পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
আসলে প্রতিটা এলাকাতেই কিছু নিম্ন শ্রেণির মানুষ থেকেই থাকে।
সেই কিছু মানুষের জন্য পুরো এলাকার বদনাম হলে ব্যাপারটা খুবই কস্ট দায়ক হয়ে যায়।
তাই আপনারা দুর্গাপুর আসার আগে, এবং আসার পরে এলাকার মানুষের হেল্প নিবেন।
এবং আমি আছি।
Emran Hussain Orpon
01833 627070
যেকোন ধরনের হেল্প, বা তথ্য জানার জন্য ফোন দিলে অবশ্যই হেল্প করার চেস্টা করবো।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
বিরিশিরি নামে আমরা যেটাকে হাইলাইট করি সেটা আসলে দূর্গাপুর এবং বিজয়পুরের চিনামাটির পাহাড়।
আপনারা যারা চিনামাটির পাহাড়, গারো পাহাড় বা সোমেশ্বরী নদী বলতে বিরিশিরি বুঝেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বিরিশিরি সুসং দুর্গাপুরের একটি ইউনিয়ন।
চিনামাটির পাহাড় ,রানিখং , সীমান্ত , সোমেশ্বরী নদী আরও যা দেখবেন সবই দূর্গাপুর থানার অন্তর্গত এবং অন্যান্য ইউনিয়নে।
অর্থাৎ এগুলো সবই সুসং দুর্গাপুর থানায় অবস্থিত।
এবং আপনি বিরিশিরিতে যা দেখতে পাবেন, কালচারাল একাডেমী এবং সোমেশ্বরী নদী।
অনুগ্রহ করে সুসং দুর্গাপুরকে বিরিশিরি বলা থেকে বিরত থাকুন।
আমরা এভাবে যদি ভুল নামে পরিচিতি দিতে থাকি, তাহলে আগামী প্রজন্ম ভুল নামেই পরিচিতি পাবে।
আর হ্যা,
আপনি বাংলাদেশের একজন শচেতন নাগরিক হিসেবে,
দেশ কে এবং দেশের পরিবেশ কে সর্বদা পরিষ্কার পরিছন্ন রাখার চেষ্টা করবেন।
ঘুড়তে এসে, পরিবেশ কে নিজে নোংরা করবেন না, এবং অপর কেও করতে দিবেন না।
কোন ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ।