
31/10/2024
টাইম ম্যানেজমেন্ট এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জীবনে। সময়ের চেয়ে দামি আসলেই কিছু নেই। আমরা কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ নিই। আসলে দিনের কাজ কোনটা কখন করবেন, কোনটা আগে বা পরে—এসবই আসে সময় ব্যবস্থাপনার মধ্যে। যদি এই বিষয়টি সঠিক না হয়, তবে সারা দিন কাজ করেও ভালো ফল মেলে না।
আর আসলে প্রথমে জানতে হবে সময় বলতেই–বা আমরা কী বুঝি। সময় তো ঘড়ির কাঁটায় চলে। একে ক্লক টাইম বলা হয়, যার কোনো হেরফের হয় না। কিন্তু সময় আসলে আপেক্ষিক। কাজ থেকে ১০ মিনিটের বিরতি নিয়ে ইউটিউব বা ফেসবুক ব্রাউজ করতে গিয়ে নিজের অজান্তে ঘণ্টা কাবার হয়ে যায়। আবার ল্যাপটপে প্রাত্যহিক একঘেয়ে কাজ করতে করতে যেন লাঞ্চ টাইম আর আসে না। তাই সব মিলিয়ে দিনের ২৪ ঘণ্টাকে বুদ্ধি করে সাজিয়ে সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা করতে পারলে জীবনে মিলবে সফলতা।
মাত্র তিনভাবে সময় কাটানো যায়। চিন্তা করা, কথা বলা ও কাজ করা। আমরা সারা দিন যা–ই করি না কেন, তাকে এই তিন শ্রেণির একটিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। আর জীবনে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে এই তিন ধরনের কাজই রাখতে হবে দিনের করণীয় কাজের তালিকায়। এবারে টাইম ম্যানেজমেন্ট বা সময় ব্যবস্থাপনার কিছু কার্যকর উপায় দেখে নেওয়া যাক।
১. সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন সময় রেকর্ড করা
কর্মক্ষেত্রে কথোপকথন, প্রজেক্ট আর বিভিন্ন কার্যক্রমে কতটুকু সময় লাগে, সেটা খেয়াল করে রেকর্ড করতে হবে প্রথমে সপ্তাহভর। আর তা যে শুধু কাজের হিসাব, তা নয়। যতভাবে সময় ব্যয় হয়, তার সবই আমলে আনতে হবে। এভাবে এক সপ্তাহের উপাত্ত পর্যবেক্ষণ করলেই বোঝা যাবে সময় কোথায় যাচ্ছে।
২. নিজের কাজের জন্য আলাদা সময় রাখা
আলাদা করে সময় না রাখলে কোনো কাজই করা হয় না ভালোভাবে। দিনের প্রাত্যহিক করণীয় কাজের ভিড়ে নিজের কোন বিশেষ কাজ হারিয়ে যায়। করা হয় না অথবা মানের ক্ষেত্রে আপস করা হয়।
৩. চিন্তা করার জন্য সময় বরাদ্দ
কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পেতে হলে যত কাজ করতে হয়, যার প্রতিটি হওয়া উচিত সুচিন্তিত। এই ব্রেনস্টর্মিংয়ের জন্য আলাদ্য সময় অবশ্যই রাখতে হবে।
৪. কাজের বিঘ্ন ও বিরতিগুলোকে গোনায় ধরা
শুধু কাজ নয়, অকাজগুলোকেও গোনায় ধরতে হবে। কেউই টানা কাজ করতে পারে না। আবার আগে থেকে ঠিক করে রাখা শিডিউল অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে বিরতি নেওয়া বা বিভিন্ন কারণে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এই সময়গুলোকে খেয়াল করে হিসাবের মধ্যে ধরতে হবে।
৫. দিনের প্রথম ৩০ মিনিট পরিকল্পনার জন্য রাখা
কাজ শুরু করার আগে প্রথমে আধা ঘণ্টা দিনের পরিকল্পনা করার জন্য রাখা উচিত। এতে উল্টাপাল্টা সময় ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। পরিকল্পনা ছাড়া দিন শুরু করলে কাজের শৃঙ্খলা থাকে না। তাই এই ৩০ মিনিটই দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়।
৬. লক্ষ্য স্থির করা
লক্ষ্যবিহীনভাবে কাজ করে কিছুই অর্জন করা যায় না। প্রতিটি কাজ, মিটিং বা ফোনালাপের আগে এর মূল লক্ষ্য বা এর থেকে কী ও কতটুকু পাওয়া যাবে, তা ঠিক করে নিতে হবে।
৭. সবাইকে জানান দিন যে আপনি ব্যস্ত
‘ডু নট ডিস্টার্ব’ সাইন সব সময় লাগানো না গেলেও কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার আগে সবাইকে জানিয়ে দিলে ভালো। এতে এ সময় কেউ অযথা বিরক্ত করবে না। যেকোনো মেসেঞ্জার বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিরক্ত না করার সিগন্যাল সেট করা যায়।
৮. সারাক্ষণ অন্যদের মনোযোগ না দেওয়া
আপনাকে সব সময় চাইলেই পাওয়া যাবে, এ ধারণা থেকে সবাইকে বের করে আনুন। নয়তো কোনো কাজই ঠিকভাবে করা হবে না ফোন বাজলেই ধরতে হবে, ই–মেইল এলেই খুলে দেখতে হবে তা নয়। মেসেঞ্জারগুলোতেও আপনার সক্রিয় উপস্থিতির বেলায় একই কথা প্রযোজ্য।