31/10/2024
বিমান যাত্রায় ব্যাগেজ বা মালামাল রুলস এয়ারলাইনস ভেদে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ নিয়ম বেশিরভাগ এয়ারলাইনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যাত্রীরা এসব নীতি মেনে চললে তারা সহজেই যাত্রার জন্য প্রস্তুত হতে পারেন। নিচে সাধারণ কিছু ব্যাগেজ নীতি তুলে ধরা হলো:
১. ক্যারি-অন ব্যাগেজ (হাতে বহনযোগ্য ব্যাগ):
- বেশিরভাগ এয়ারলাইনস একটি ক্যারি-অন ব্যাগ নিয়ে যেতে দেয় যার ওজন সাধারণত ৭ থেকে ১০ কেজির মধ্যে হয়।
- ব্যাগটির আকারও নির্দিষ্ট থাকে। সাধারণত ২২ ইঞ্চি x ১৪ ইঞ্চি x ৯ ইঞ্চি (৫৫ সেমি x ৩৫ সেমি x ২৫ সেমি) এর মতো আকারের ব্যাগ কেবিনে নিয়ে যাওয়া যায়।
- ক্যারি-অন ব্যাগের পাশাপাশি একটি ছোট পার্স, ল্যাপটপ ব্যাগ বা ছোট ব্যাকপ্যাক নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
২. চেকড ব্যাগেজ (কেবিনে বহনযোগ্য নয় এমন ব্যাগ):
- সাধারণত ইকোনমি ক্লাসে ১-২টি চেকড ব্যাগ বিনামূল্যে নেওয়া যায় যার ওজন সাধারণত ২৩-৩০ কেজির মধ্যে হয়।
- চেকড ব্যাগের সর্বোচ্চ আকার সাধারণত ১৫৮ সেমি (দৈর্ঘ্য + প্রস্থ + উচ্চতা) হয়।
- অতিরিক্ত ব্যাগ বা ওজনের জন্য যাত্রীর থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। ওজনের অতিরিক্ত পরিমাণের জন্য প্রায়শই ৫০-১০০ মার্কিন ডলার বা তার বেশি ফি হতে পারে।
৩. ওভারসাইজড বা অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজ:
- যদি ব্যাগের আকার বা ওজন নির্ধারিত সীমার বেশি হয়, তাহলে অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য। ওভারসাইজড ব্যাগ বা ওজন বেশি হলে প্রতি ব্যাগের জন্য প্রায় ১০০-২০০ ডলার বা তার বেশি চার্জ হতে পারে।
- সাইকেল, বড় মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট, স্পোর্টস গিয়ার ইত্যাদি বহন করলে এর জন্যও আলাদা ফি প্রযোজ্য হয়।
৪. বিমানের লুকিয়ে বা নিষিদ্ধ মালামাল:
- ধারালো বস্তু, আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক বা দাহ্য পদার্থ, কিছু ধরণের লিকুইড ইত্যাদি বিমানে বহন করা নিষিদ্ধ।
- এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি চেকপয়েন্টে আপনার ব্যাগ স্ক্যান করা হয় এবং নিষিদ্ধ কোনো বস্তু পেলে তা জব্দ করা হয়।
৫. লিকুইড ও জেল নীতি (ক্যারি-অন ব্যাগে) :
- ক্যারি-অন ব্যাগে ১০০ মিলিলিটারের বেশি লিকুইড, জেল বা অ্যারোসোল নেওয়া নিষিদ্ধ। এগুলো একটি স্বচ্ছ, পুনরায় সিলযোগ্য প্লাস্টিক ব্যাগে নিয়ে যেতে হয় যার ধারণক্ষমতা ১ লিটার বা তার কম।
- প্রসাধনী সামগ্রী, পানীয়, পারফিউম ইত্যাদি এ নিয়মের আওতায় পড়ে।
৬. ফ্র্যাজাইল আইটেম বা মূল্যবান সামগ্রী:
- মূল্যবান বা ভঙ্গুর জিনিস (যেমন: ল্যাপটপ, ক্যামেরা, গহনা) ক্যারি-অন ব্যাগেই বহন করা উচিত। চেকড ব্যাগে এসব জিনিস রাখা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়, কারণ সেগুলোর ক্ষতির জন্য এয়ারলাইনস দায়ী থাকবে না।
৭. বাচ্চাদের জন্য ব্যাগেজ নীতি:
- বেশিরভাগ এয়ারলাইনস শিশুদের জন্য আলাদা ফ্রিব্যাগ দেয়, বিশেষ করে স্ট্রোলার বা কট বহনের ক্ষেত্রে।
- কিছু এয়ারলাইনস শিশুদের জন্য ছোট ব্যাগ বা শিশু সরঞ্জাম বিনামূল্যে চেক-ইন করার সুযোগ দেয়।
৮. ফ্রি ব্যাগেজ ভাতা:
- বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থায় ইকোনমি ক্লাসে ১টি থেকে ২টি ব্যাগ বিনামূল্যে চেক করা যায়, বিজনেস ও ফার্স্ট ক্লাসে আরো বেশি ব্যাগ বিনামূল্যে নেয়া যায়।
- তবে লো-কস্ট ক্যারিয়ারগুলোতে সাধারণত বিনামূল্যে কোনো চেকড ব্যাগেজের সুযোগ থাকে না, সেক্ষেত্রে আলাদা করে টাকা দিয়ে ব্যাগেজ অনুমতি নিতে হয়।
৯. লস্ট বা ড্যামেজড ব্যাগেজ:
- যদি আপনার ব্যাগ হারিয়ে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এয়ারলাইনসকে অবিলম্বে জানানো উচিত। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস ব্যাগ হারানোর জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করে, তবে এর জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে।
১০. অনলাইন ব্যাগেজ বুকিং:
- চেকড ব্যাগেজ অনলাইনে আগে থেকেই বুক করা হলে সাধারণত এয়ারপোর্টের তুলনায় খরচ কিছুটা কম হয়। তাই চেক-ইন ব্যাগেজ আগেই বুক করে রাখা ভালো।
এই সাধারণ ব্যাগেজ নীতিগুলো মেনে চলতে পারলেই আপনার যাত্রা হতে পারে সহজ এবং ঝামেলামুক্ত। তাই ভ্রমণের আগে এয়ারলাইনের নির্দিষ্ট ব্যাগেজ নীতি ভালোভাবে দেখে নেয়া শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, আবশ্যকও বটে।
তথ্যঃ সংগৃহীত