17/11/2023
রসুল স: এর প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজা রা: মারা যাওয়ার আগে রাসুল স: এর দুটো হাত ধরে বললেন....
"আমাকে কথা দিন, আপনার গায়ের জোব্বা দিয়ে আমার কাফনের কাপড় বানাবেন আর নিজ হতে আমাকে কবরে নামিয়ে দিয়ে আমার সওয়াল-জবাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনি কবরের পাশেই থাকবেন। আমাকে একা ফেলে যাবেন না।"
রসুল স: অশ্রুসিক্ত নয়নে বললেন,
"হে আমার প্রিয়তমা স্ত্রী, আমি কথা দিচ্ছি...।"
খাদিজা রা: শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন।
গোসল, জানাজা শেষ করে রসুল স: তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রীকে নিজেই কবরে শুইয়ে দিলেন এবং কবরের পাশে অশ্রুজল চোখে কবরের পাশে দাড়িয়ে রইলেন। হাবীবের এমন বিমর্ষ মানসিক অবস্থা দেখে মহান আল্লাহ ফেরেস্তা জিবরাইল আঃ কে পাঠালেন।
জিবরাইল আঃ এসে সালাম দিয়ে জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রসুল স: আপনি এভাবে আপনার স্ত্রীর কবরের পাশে দাড়িয়ে আছেন কেন?
রসুল স: বললেন, "হে জিবরাইল, আমি প্রিয়তমা স্ত্রীকে কথা দিয়েছি তাঁর সওয়াল- জবাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি এখান থেকে নড়বো না।
জিবরাইল আঃ বললেন, হে আল্লাহর রসুল স:, আপনি জেনে রাখুন আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, খাদিজা রা: কে করা মুনকার-নাকীর এর সওয়ালের জওয়াব আল্লাহ আরশে আজীম থেকে নিজেই দিয়ে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সেই খাদিজা রা:, যাকে মহান আল্লাহ সালাম দিয়েছেন। যেখানে তিঁনিই কবরের সওয়াল-জবাবকে ভয় পেয়েছেন। সেখানে আমরা কোন চিন্তাই করিনা কবরের জীবন নিয়ে। আল্লাহ আকবর!
খাদিজা রা: এর মৃত্যুর পর প্রায় প্রতি রাতেই আয়িশা রা: এর ঘুম ভেঙে গেলে, উঠে এসে দেখতেন রসুল স: কান্নারত অবস্থায় আল্লাহর কাছে মিনতি করছেন,
"হে আল্লাহ! যখন শেষ বিচারের দিন ছেলে বাবাকে চিনবে না, বাবা ছেলেকে চিনবে না, স্বামী স্ত্রীকে আর স্ত্রী স্বামীর চেহারা দেখে বিস্তৃত হবে তখন যেনো আমি আমার আমার প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজাকে চিনতে পারি এবং তাঁকে দেখে যেন বিস্তৃত না হই।"
খাদিজা রা: গোশত খেতে পছন্দ করতেন।যদিও খুব কম সুযোগ হতো। কিন্তু কখনো হঠাৎ কোন উট, দুম্বা কিংবা খাসির গোশতের ব্যবস্থা হতো, তিনি তৃপ্তি করে খেতেন।
উনার মৃত্যুর পর রসুল স: যখনি কোন গোশত হাদিয়া পেতেন কিংবা কোনোদিন হঠাৎ কোন পশু জবাই হতো, তখন রসুল স: খুব যত্নে এক ভাগ মাংস সরিয়ে রাখতেন।
সেটা একটা পোটলায় ভরে মদীনার রাস্তায় চোখ মুছতে মুছতে হাটঁতেন, প্রিয়তমা খাদিজা রা: এর কোন পুরনো বান্ধবীর দেখা পান কিনা, সেই আশায়। কোনো বান্ধবীকে দেখলে, পোটলাটা দিতেন।
******আফসোস!!! বর্তমান সময়ে স্বামী স্ত্রীর এরকম ভালোবাসা কল্পনাও করা যায়না,কেউ কারো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনা,পান থেকে চুন খসলেই মুখ দেখাদেখি বন্ধ,সাংসারিক কোলাহল ঝগড়াঝাঁটি হরহামেশা লেগেই থাকে।
আল্লাহ সকল হালাল সম্পর্কের বারাকাহ দান করুক।
প্রত্যেক সংসারকে আল্লাহ ভালবাসা এবং স্নেহের আঁচলে আবৃত করুক.... আমিন-🖤