12/06/2024
আপনি জানেন কি?
ধর্ম হিসেবে ইসলামের উত্থান এবং তার ক্রমসপ্রসারণ সুনির্দিষ্ট কিছু জনপদের পুরো চিত্রই পাল্টে দিয়েছিল। বিশেষ করে মসজিদ কেন্দ্রিক ওযুখানা প্রতিষ্ঠা, অসহায় মানুষের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ এমনকি মুসাফিরদের অন্তত ঘুমিয়ে একটা রাত পার করার সুযোগ ইসলাম ধর্মকে বিশেষত্ব দান করেছিল।
বিশ্বের নানা দেশের বিপরীতে বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের প্রাথমিক যুগের মসজিদগুলো ছিল আরেক ধাপ উপরে। বিশেষ করে সুফি সাধকদের খানকাহ সংলগ্ন মসজিদে একটি লঙ্গরখানা সব সময় থাকতো।
সেখানে হিন্দু মুসলিম তথা জাতি-ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রবেশাধিকার এবং খাবার খাওয়ার সুযোগ ছিল।
সময়ের আবর্তে সেই মসজিদের চাকচিক্য বেড়েছে বহুগুণে। তবুও প্রতিদিন চলে নানাভাবে চাঁদা আদায়।
আর এইভাবে একটা পর্যায়ে গণমানুষের সঙ্গে তৈরি হয়ে গেছে মসজিদের দূরত্ব।
ভয়ানক হলেও সত্য যে, মানুষ পেট ফেটে মরে গেলেও প্রস্রাব কিংবা টয়লেট করার কাজে বেশিরভাগ আলিশান মসজিদের ওয়াশরুম আর ব্যবহার করতে পারে না এখন।
কিংবা এই প্রচণ্ড গরমে ঝলসে গেলেও সাধারণ মানুষ মসজিদের এসি তো দূরের কথা ফ্যান ছেড়ে ঠাণ্ডা বাতাসে একটু আরাম করে বসতেও পারে না।
সেই সুযোগ নেই। নামাজের সময় ছাড়া বাকি পুরোটা সময় মসজিদগুলো তালা মারা থাকে
অথচ, আমরা সবাই কমবেশি কিন্তু জানি মসজিদ কমিটির বাপের টাকায় এই মসজিগুলো তৈরি হয় না। এখানে আমার আপনার সবার টাকা থাকে। আমাদের পকেট থেকে প্রতি সপ্তাহে যে টাকা সেখানে গেছে তার থেকেই কেনা হয়েছে টাইলস, লাগানো হয়েছে ফ্যান ও এসি। তারপর অতিরিক্ত একটা তালাও কিনে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে গেইটে।
প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কেন সপ্তাহান্তে মসজিদে টাকা দিচ্ছি !!
এই প্রশ্নের উত্তর কি কেউ দিতে পারবেন?
আমরা দিচ্ছি মুসলিম উম্মাহর প্রয়োজনে। গণমানুষের একটু শান্তিতে প্রার্থনার সুযোগ করে দিতে। কিন্ত আমার আপনার অর্থায়নে নির্মিত মসজিদের গেইটে যদি তালা ঝুলতে থাকে সব সময় তবে লাভ কি হলো?
একজন দরিদ্র মজুর, রিকশাচালক কিংবা পরিশ্রান্ত শ্রমিক যদি মসজিদে ঢুকতে না পারে,প্রচণ্ড গরমে যদি একটু স্বস্তিতে ফ্যান ছেড়ে বসতে না পারে, মসজিদের ওযুখানার পানিতে চোখমুূখ ধুতে না পারে, তাহলে এই মসজিদ কেনো?
এটা কি শুধুই কমিটির কিছু লোকের বিলাসিতা আর বাহাদুরির জন্য??
ওয়াক্ত শেষ হতে না হতেই দেখি বেশিরভাগ মসজিদের গেইটে তালা ঝুলে!!
আমার মনে হয়, বিষয়টি নিয়ে ভাবার এবং বলার সময় এসেছে।
নচেৎ মসজিদের এই জনবিচ্ছিন্নতা পরবর্তীকালে মুসলিম উম্মাহর অনেক বড় ক্ষতি করে দিবে।😔😔😔