Imam Jalaly Al Haramain Hajj Kafela

Imam Jalaly Al Haramain Hajj Kafela Like & Follow Our page
to get latest update.

🌟 Welcome to Imam Jalaly Al Harmain Hajj Kafela! 🌟

Embark on a sacred journey with us as we lead you to the heart of the Holy Land. 🕋✨ Imam Jalaly Al Harmain Hajj Kafela is not just a travel company; we are your companions on the spiritual pilgrimage of a lifetime.

🕋 About Us:
Imam Jalaly Al Harmain Hajj Kafela is dedicated to facilitating a seamless and enriching Hajj experience for our beloved

brothers and sisters in Bangladesh. With a passion for service and a commitment to excellence, we take pride in being your trusted guides on this sacred journey.

✨ Our Services:
Experience the essence of Hajj with the assurance of comfort and convenience. Our comprehensive packages include:

👉 Expert Guidance: Led by experienced and knowledgeable leaders, our team ensures a spiritually fulfilling pilgrimage.

👉 Accommodations: Rest in peace and tranquility with carefully selected accommodations that prioritize your comfort.

👉 Travel in Ease: From flights to local transportation, we handle the logistics so you can focus on your spiritual journey.

👉 Educational Programs: Enrich your understanding of Hajj rituals with informative sessions conducted by scholars.

👉 24/7 Support: Our dedicated support team is always ready to assist you, ensuring a worry-free pilgrimage.

🤲 Our Commitment:
Imam Jalaly Al Harmain Hajj Kafela is driven by a commitment to providing a Hajj experience that goes beyond the ordinary. We understand the significance of this sacred journey, and our goal is to make it as spiritually uplifting and comfortable as possible.

🌈 Join Us on This Spiritual Odyssey:
Let us be your companions on this transformative journey. Trust Imam Jalaly Al Harmain Hajj Kafela to guide you through the sacred rituals, immerse you in the spirituality of the Holy Land, and ensure an unforgettable Hajj experience.

📞 Contact Us:
Reach out to us for inquiries, bookings, or any assistance you may need. Your journey of faith begins with Imam Jalaly Al Harmain Hajj Kafela!

[Contact Information]

🌐 Website: [imamjalalyalharmainhajjkafela.com]
📧 Email: [imam jalaly [email protected]
📞 Phone: [01723113600]

May your Hajj be blessed, and may your spiritual aspirations be fulfilled! 🤲✨

06/12/2024
কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীসের আলোকে হজ্ব ও উমরার গুরুত্ব ও ফযীলতইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হল হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমান,...
06/12/2024

কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীসের আলোকে হজ্ব ও উমরার গুরুত্ব ও ফযীলত

ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হল হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমান, নামায, যাকাত ও রোযার পরই হজ্বের অবস্থান। হজ্ব মূলত কায়িক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর হজ্ব পালন করা ফরয। অর্থাৎ হজ্ব আদায়ে সক্ষম এমন শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচাপাতি ও আসবাবপত্রের অতিরিক্ত হজ্বে যাওয়া-আসার ব্যয় এবং হজ্ব আদায়কালীন সাংসারিক ব্যয় নির্বাহে সক্ষম এমন সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর হজ্ব আদায় করা ফরয। হজ্ব প্রত্যেক মুসলমানের উপর সারা জীবনে একবারই ফরয হয়। একবার ফরয হজ্ব আদায়ের পর পরবর্তী হজ্বগুলো নফল হিসেবে গণ্য হবে। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন-

يا أيها الناس! إن الله كتب عليكم الحج، فحجوا، فقال رجل : أكل عام يا رسول الله؟ فكست حتى قالها ثلاثا، ثم قال : لو قلت نعم لوجبت ولما استطعتم.

হে মানবসকল! আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হজ্ব ফরয করেছেন। সুতরাং তোমরা হজ্ব করো। এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! প্রতি বছর কি হজ্ব করতে হবে? তিনি চুপ রইলেন এবং লোকটি এভাবে তিনবার জিজ্ঞেস করল। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি যদি হ্যাঁ বলতাম, তাহলে তা (প্রতি বছর হজ্ব করা) ফরয হয়ে যেতো, কিন্তু তোমাদের পক্ষে তা করা সম্ভব হতো না।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৩৭ (৪১২); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১০৬০৭; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৭০৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫০৮; সুনানে নাসায়ী ৫/১১০; শরহে মুশকিলুল আছার, হাদীস : ১৪৭২; সুনানে দারাকুতনী ২/২৮১

ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত অনুরূপ হাদীসে আরো বলা হয়েছে, হজ্ব (ফরয) হল একবার, এরপরে যে অতিরিক্ত আদায় করবে তা নফল হিসেবে গণ্য।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩০৪; সুনানে দারিমী, হাদীস : ১৭৮৮; সুনানে নাসায়ী ৫/১১; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৭২১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৮৮৬; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ৩২০৯

হজ্ব যেহেতু একবারই ফরয তাই যার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে সে যদি মৃত্যুর আগে যে কোনো বছর হজ্ব আদায় করে, তবে তার ফরয আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু হজ্ব বিধানের মৌলিক তাৎপর্য, তার যথার্থ দাবি ও আসল হুকুম হচ্ছে হজ্ব ফরয হওয়ার সাথে সাথে আদায় করা। বিনা ওজরে বিলম্ব না করা। কারণ বিনা ওজরে বিলম্ব করাও গুনাহ। আল্লাহ তাআলা ও তার রাসূল ফরয হজ্ব আদায়ের প্রতি এমনভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন যে, কেউ যদি এই হজ্বকে অস্বীকার করে বা এ বিষয়ে কোনো ধরনের অবহেলা প্রদর্শন করে তবে সে আল্লাহর জিম্মা থেকে মুক্ত ও হতভাগ্যরূপে বিবেচিত হবে।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا، ومن كفر فان الله غنى عن العلمين.

(তরজমা) মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্ব করা ফরয। আর কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রতি মুখাপেক্ষী নন।-সূরা আলে ইমরান (৩) : ৯৭

তাছাড়া যে কোনো ধরনের বিপদ-আপদ, অসুখ-বিসুখের সম্মুখীন হওয়া বা মৃত্যুর ডাক এসে যাওয়া তো অস্বাভাবিক নয়। তাই হজ্ব ফরয হওয়ার পর বিলম্ব করলে পরে সামর্থ্য হারিয়ে ফেললে বা মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাআলার নিকট অপরাধী হিসেবেই তাকে হাজির হতে হবে। এজন্যই হাদীস শরীফে হজ্ব ফরয হওয়ামাত্র আদায় করার তাগিদ ও হুকুম দেওয়া হয়েছে।

ইবনে আববাস রা. বর্ণনা করেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

من أراد الحج فليتعجل، فإنه قد يمرض المريض وتضل الضالة وتعرض الحاجة.

যে ব্যক্তি হজ্ব করার ইচ্ছে করে, সে যেন তাড়াতাড়ি তা আদায় করে নেয়। কারণ যে কোনো সময় সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে বা বাহনের ব্যবস্থাও না থাকতে পারে অথবা অন্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৮৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৮৮৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৭৩২; সুনানে দারিমী, হাদীস : ১৭৮৪; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৮৭; তবারানী, হাদীস : ৭৩৮

অন্য বর্ণনায় ইরশাদ হয়েছে, ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

تعجلوا إلى الحج، يعني الفريضة، فإن أحدكم لا يدري ما يعرض له.

ফরয হজ্ব আদায়ে তোমরা বিলম্ব করো না। কারণ তোমাদের কারো জানা নেই তোমাদের পরবর্তী জীবনে কী ঘটবে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৮৬৭; সুনানে কুবরা বায়হাকী ৪/৩৪০

উপরন্তু একটি হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তাআলা যে স্বচ্ছল সামর্থ্যবান ব্যক্তি সত্ত্বর হজ্ব আদায় করে না তাকে হতভাগা ও বঞ্চিত আখ্যায়িত করেছেন।

আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

يقول الله عز وجل : إن عبدا صححت له جسمه، ووسعت عليه في المعيشة تمضي عليه خمسة أعوام لا يفد إلى لمحروم.

আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি আমার বান্দার শরীরকে সুস্থ রাখলাম, তার রিযিক ও আয়-উপার্জনে প্রশস্ততা দান করলাম। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও যদি সে আমার গৃহের হজ্বের উদ্দেশ্যে আগমন না করে তবে সে হতভাগ্য, বঞ্চিত।-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৬৯৫; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ১০৩১; তবারানী, হাদীস : ৪৯০; সুনানে কুবরা বায়হাকী ৫/২৬২; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫২৫৯

শুধু তাই নয়, একসময় বায়তুল্লাহ উঠিয়ে নেয়া হলে মানুষ হজ্ব করতে পারবে না এই আশঙ্কার কারণেও আল্লাহর রাসূল উম্মতকে তাড়াতাড়ি হজ্ব করার হুকুম করেছেন। ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

استمتعوا بهذا البيت فقد هدم مرتين ويرفع في الثالثة.

তোমরা হজ্ব ও উমরার মাধ্যমে এই (বায়তুল্লাহ) গৃহের উপকার গ্রহণ কর। কেননা তা ইতিপূর্বে দু’বার ধ্বংস হয়েছে। তৃতীয়বারের পর উঠিয়ে নেওয়া হবে।-সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫০৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৬৭১৮; মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৭২; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ১৬৫২

হজ্ব করার শক্তি-সামর্থ্য ও অর্থ-বিত্ত থাকার পরও যে ব্যক্তি হজ্ব করে না তার সম্পর্কে হাদীস শরীফে কঠোর হুমকি প্রদান করা হয়েছে। ওমর ইবনুল খাত্তাব রা. বলেন-

من أطاق الحج فلم يحج فسواء عليه مات يهوديا أو نصرانيا.

যে ব্যক্তি হজ্ব করার সামর্থ্য রাখে, তবুও হজ্ব করে না সে ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করল কি খৃস্টান হয়ে তার কোনো পরোয়া আল্লাহর নেই।-তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৫৭৮

তিনি আরো বলেন, আমার ইচ্ছে হয় কিছু লোককে বিভিন্ন শহরাঞ্চল ও লোকালয়ে পাঠিয়ে দিই, তারা সেখানে দেখবে, কারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্ব করছে না। তারা তাদের উপর কর আরোপ করবে। তারা মুসলমান নয়, তারা মুসলমান নয়।-প্রাগুক্ত

যারা হজ্ব-উমরা না করে সন্ন্যাসী হওয়ার চেষ্টা করে ইসলাম তা কখনো অনুমোদন করে না। ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

لا صرورة في الإسلام.

ইসলামে বৈরাগ্য নেই। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হজ্বের ক্ষেত্রে কোনো বৈরাগ্য নেই।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৩১১৩, ৩১১৪; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৭২৯; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৮৬; তবারানী, হাদীস : ১১৫৯৫; শরহু মুশকিলুল আছার, হাদীস : ১২৮২

ইকরামা রাহ.কে জিজ্ঞাসা করা হল, সারুরা কী? তিনি বলেন, যে ব্যক্তি হজ্ব-উমরাহ কিছুই করে না অথবা যে ব্যক্তি কুরবানী করে না।-শরহু মুশকিলুল আছার ২/২১৫-১৬

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রাহ. বলেন, জাহেলী যুগে যখন কোনো ব্যক্তি হজ্ব করত না তখন তারা বলত, সে সারুরা (বৈরাগী)। তখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইসলামে বৈরাগ্য নেই।-প্রাগুক্ত

যারা হজ্বের সফরের সৌভাগ্য লাভ করেন তারা যেন আল্লাহর মেহমান। তাই প্রত্যেকের উচিত সর্বদা আল্লাহর আনুগত্য ও তার ইশক-মুহববতের অনুভূতি নিয়ে সেখানে অবস্থান করা। বায়তুল্লাহ ও আল্লাহর অন্যান্য শেআর ও নিদর্শনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। দ্বন্দ-কলহ, ঝগড়া-বিবাদ এবং অন্যায়-অশ্লীলতা থেকে সর্বাত্মকভাবে দূরে থাকা। কুরআন-হাদীসে এ সম্পর্কে বিশেষ হুকুম নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

الحج اشهر معلومات فمن فرض فيهن الحج فلا رفث ولا فسوق ولا جدال في الحج، وما تفعلوا من خير يعلمه الله.

(তরজমা) হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে (ইহরাম বেঁধে) নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয় সে হজ্বের সময় কোনো অশ্লীল কথা বলবে না, কোনো গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না। তোমরা যা কিছু সৎকর্ম করবে আল্লাহ তা জানেন।-সূরা বাকারা (২) : ১৯৭

উক্ত আয়াতে তিনটি বিষয় থেকে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এক. ইহরাম অবস্থায় অশ্লীল কথা বলা। এমনকি স্ত্রীর সাথে যৌন উত্তেজনামূলক কথা বলাও নিষিদ্ধ। দুই. কোনো ধরনের গুনাহয় লিপ্ত হওয়া। ইহরাম অবস্থার বিশেষ গুনাহ যেমন শরীরের কোনো স্থানের চুল, পশম বা নখ কাটা, আতর বা সুগন্ধি লাগানো, পশু শিকার করা, শরীরে উকুন মারা থেকে যেরূপ বিরত থাকবে তেমনি সাধারণ অবস্থার গুনাহ যেমন অন্যকে কষ্ট দেওয়া, কু-দৃষ্টি ও গীবত শেকায়েত থেকেও বিরত থাকবে। তিন. ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হওয়া।

এ ধরনের পাপ-পঙ্কিলতা ও ঝগড়া-বিবাদমুক্ত হজ্বকেই হাদীস শরীফে হজ্বে মাবরূর বা মকবুল হজ্ব বলা হয়েছে এবং এর বিশেষ বিশেষ ফযীলত ও মর্যাদা উল্লেখিত হয়েছে। এখানে কিছু ফযীলত বর্ণনা করা হল।

১. হজ্ব পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মুছে দেয়

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

من حج فلم يرفث ولم يفسق غفر له ما تقدم من ذنبه.

যে ব্যক্তি হজ্ব করে আর তাতে কোনোরূপ অশ্লীল ও অন্যায় আচরণ করে না তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।-সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮১১

অন্য বর্ণনায় রয়েছে

من حج لله فلم يرفث ولم يفسق رجع كيوم ولدته أمه.

আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্ব করল এবং অশ্লীল কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত থাকল সে ঐ দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ্ব থেকে ফিরে আসবে যেদিন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হয়েছিল।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৫২১; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৫০; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭৩৮১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৮৮১; সুনানে নাসায়ী ৫/১১৪; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৬৯৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫১৪

অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে-

من حج البيت فقضى مناسكه وسلم المسلمون من لسانه ويده غفر له ما تقدم من ذنبه.

আতা ইবনে ইয়াসার রাহ. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর হজ্ব করে, হজ্বের বিধানগুলো যথাযথভাবে আদায় করে, মুসলমানরা তার মুখ ও হাত থেকে নিরাপদ থাকে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৮৮১৭; তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৩৫৮

আমর ইবনুল আস রা. বর্ণনা করেন, (দীর্ঘ এক হাদীসে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

أما علمت يا عمرو! أن الإسلام يهدم ما كان قبله، وأن الهجرة تهدم ما كان قبلها، وأن الحج يهدم ما كان قبله.

হে আমর! তুমি কি জান না যে, ইসলাম (গ্রহণ) পূর্বেকার যাবতীয় পাপকে মুছে ফেলে। হিজরত তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহকে মিটিয়ে দেয় এবং হজ্ব অতীতের পাপসমূহ মুছে দেয়।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১২১; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫১৫; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৭৭৭৭; শরহু মুশকিলিল আছার, হাদীস : ৫০৭

২. হজ্বে মাবরূরের প্রতিদান হল জান্নাত

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

العمرة إلى العمرة كفارة لما بينهما، والحج المبرور ليس له جزاء إلا الجنة.

এক উমরা আরেক উমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহর ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়। আর হজ্বে মাবরূরের প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭৭৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৪৯; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭৩৫৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫১৩; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৬৯৫; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৮৮৮; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৭৮২

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

تابعوا بين الحج والعمرة، فإنهما ينفيان الفقر والذنوب كما ينفي الكير خيث الحديد، والذهب والفضة، وليس للحجة المبرورة ثواب إلا الجنة.

তোমরা হজ্ব ও উমরা পরপর একত্রে পালন কর। কেননা এ দুটি (হজ্ব ও উমরাহ) দারিদ্র ও গুনাহসমূহ এমনভাবে দূর করে দেয় যেমন কামারের হাপর লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা দূর করে দেয়। আর হজ্বে মাবরূরের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।-সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮১০; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৩৬৬৯; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৭৮০; সুনানে কুবরা, নাসায়ী, হাদীস : ৩৬১০; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫১২; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৬৯৩; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ৪৯৭৬; তবারানী, হাদীস : ১০৪৬০

জাবির রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الحج المبرور ليس له جزاء إلا الجنة، قيل : وما بره؟ قال : إطعام الطعام وطيب الكلام.

হজ্বে মাবরূরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়। জিজ্ঞাসা করা হল, হজ্বের সদাচার কী? তিনি বললেন, খানা খাওয়ানো এবং উত্তম কথা বলা (অর্থাৎ অনর্থক ও অশ্লীল কথাবার্তা পরিত্যাগ করা)।

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, খানা খাওয়ানো ও বেশি বেশি সালাম করা (সালামের বিস্তার ঘটানো)।-সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ৩০৭২; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৪১১৯; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৪৮২; তবারানী আওসাত ১/১১৩; মুসনাদে আবু দাউদ, ত্বয়ালিসী, হাদীস : ১৭১৮; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৮১২; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৮৮১৭

৩. সর্বোত্তম আমল হজ্বে মাবরূর

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم أي العمل أفضل؟ قال : إيمان بالله ورسوله، قيل : ثم ماذا؟ قال : الجهاد في سبيل الله، قيل : ثم ما ذا؟ قال : حج مبرور.

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হল, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হল, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, হজ্বে মাবরূর বা কবুল হজ্ব।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ২৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৮৩; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭৫৯০; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ১৬৫৮; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ১৫৩; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ২০২৯৬; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৪২১১

মায়িয রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

سئل : أي الأعمال أفضل؟ قال : إيمان بالله وحده، ثم الجهاد، ثم حجة برة تفضل سائر الأعمال كما بين مطلع الشمس إلى مغربها.

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন আমল সর্বোত্তাম? তিনি বললেন, এক আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান আনা। তারপর জিহাদ করা। অতপর কবুল হজ্ব অন্যান্য আমল হতে এত উৎকৃষ্ট ও মর্যাদাপূর্ণ যেরূপ সূর্যের উদয়াচল হতে অস্তাচলের ব্যবধান।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৯০১০; তবারানী ২০/৮০৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫২৬৩

এ সম্পর্কিত অন্য একটি দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আমর ইবনে আবাসা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
.. ثم عملان هما أفضل الأعمال إلا من عمل بمثلهما : حجة مبرور أو عمرة.

অতপর এমন দুটি আমল, যা অন্য সকল আমল হতে শ্রেষ্ঠ। তবে যে ব্যক্তি তার অনুরূপ আমল করে তা ব্যতীত : মকবুল হজ্ব অথবা মকবুল উমরা।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৭০৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ২০১০৭; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫২৬১

৪. নারী, বৃদ্ধ, দুর্বল ব্যক্তি ও শিশুদের জিহাদ হল হজ্ব ও উমরাহ

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

يا رسول الله! نرى الجهاد أفضل العمل، أفلا نجاهد؟ قال : لا، لكن أفضل الجهاد حج مبرور.

ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা তো জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। আমরা কি জিহাদ করব না? তিনি বললেন, না। বরং তোমাদের নারীদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হল হজ্বে মাবরূর।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৫২০; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৪৪২২; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ৩৬০৭; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৭০২; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ৪৭১৭; শরহু মুশকিলিল আছার, হাদীস : ৫৬০৯

অন্য বর্ণনায় রয়েছে-

আয়েশা রা. বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি আপনাদের সাথে জিহাদ করব না? তিনি বললেন, তোমাদের জন্য সবচেয়ে সুন্দর ও উত্তম জিহাদ হল হজ্বে মাবরূর। আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাললাম থেকে এ কথা শুনার পর হতে আমি হজ্ব ছাড়িনি।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৬১; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৪৪৯৭; সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৪/৩২৬

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إن كان قاله جهاد الكبير والضعيف والمرأة الحج والعمرة.

বৃদ্ধ, দুর্বল ও নারীর জিহাদ হল হজ্ব ও উমরা।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস: ৯৪৫৯; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৯৭০৯; সুনানে নাসায়ী ৫/১১৩; তবারানী আওসাত, হাদীস : ৮৭৪৬; সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৪/৩৫০

হুসাইন বিন আলী রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

جاء رجل إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال : إني جبان وإني ضعيف، فقال : هلم إلى الجهاد لا شوكة فيه : الحج.

এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, আমি ভীরু ও দুর্বল (জিহাদে যাওয়ার শক্তি-সামর্থ্য নেই)। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি অস্ত্র ও শত্রুর সাথে লড়াইবিহীন জিহাদ-হজ্ব পালন করতে এস।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৮৮০৯; তবারানী, হাদীস : ২৯১০; সুনানে সাঈদ ইবনে মনসূর, হাদীস : ২৩৪২; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫২৫৮

৫. হজ্ব ও উমরাকারীর দুআ কবুল করা হয়

জাবির রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الحجاج والعمار وفد الله دعاهم فأجابوه وسألوه فأعطاهم.

হজ্ব ও উমরাকারীগণ আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা দুআ করলে তাদের দুআ কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদেরকে তা দেওয়া হয়।-মুসনদে বাযযার, হাদীস : ১১৫৩; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫২৮৮; তবারানী, হাদীস : ১৭২১

ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

الحجازي في سبيل الله، والحاج والمعتمر وفد الله دعاهم فأجابوه وسألوه فأعطاهم.

আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী (গাযী), হজ্ব ও উমরা আদায়কারীগণ আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা দুআ করলে দুআ কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদেরকে তা দেওয়া হয়।-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৮৯৩; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪৬১৩

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

وفد الله ثلاثة :الغازي والحاج والمعتمر

তিন প্রকারের লোক আল্লাহ তাআলার প্রতিনিধি : গাযী, হজ্ব ও উমরাকারী।-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৬৯২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫১১; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৫৩; সুনানে নাসায়ী ৫/১১৩; সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৫/২৬২

৬. হাজীদের গুনাহ মাফ হয় এবং তারা যাদের গুনাহ ক্ষমা চায় তাদেরকে মাফ করা হয়

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

يغفر الله للحاج ولمن استغفر له الحاج.

আল্লাহ তাআলা হাজীদের গুনাহ ক্ষমা করেন এবং হাজী যাদের জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করেন, তাদেরকেও ক্ষমা করেন। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১১৫৫; তবারানী সগীর, হাদীস : ১০৮৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫১৬; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৫৪

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হজ্ব ও উমরাকারীগণ যখন দুআ করে, তাদের দুআ কবুল করা হয়। তারা যখন কারো জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদেরকে ক্ষমা করা হয়। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৮৯২; সুনানে নাসায়ী, ৫/১১৩

৭. হজ্ব ও উমরার জন্য খরচ করার ফযীলত

আয়েশা রা. হতে বর্ণিত-

أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لها في عمرتها : إن لك من الأجر على قدر نصبك ونفقتك.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরা করার সময় তাকে তার উমরা সম্পর্কে বলেছেন, তুমি তোমার পরিশ্রম ও খরচ অনুপাতে নেকি পাবে।-মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ১৭৭৬; সুনানে দারাকুতনী, ২/২৮৬

আয়েশা রা. হতে অন্য বর্ণনায় আছে রয়েছে তুমি তোমার উমরার সওয়াব তোমার খরচ অনুপাতে পাবে।-মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ১৭৭৭; সুনানে দারাকুতনী, ২/২৮৬

বুরাইদা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

النفقة في الحج كالنفقة في سبيل الله بسبع مائة ضعف.

হজ্বের জন্য খরচ করা, আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার মতই, যার সওয়াব সাতশ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ২৩০০০; শুয়াবুল ঈমান বাইহাকী, হাদীস : ৪১২৫; তবারানী আউসাত, হাদীস : ৫২৭০

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আনাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

الحج سبيل الله، النفقة فيه الدرهم بسبع مائة.

হজ্ব হল আল্লাহর রাস্তা। তাতে (আল্লাহর রাস্তায়) এক দিরহাম খরচের সওয়াব সাতশ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।-তবারানী, আউসাত, হাদীস : ৫৬৯০

জাবির রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন-

ما أمعر حاج قط، قيل لجابر : ما الإمعار؟ قال : ما افتقر.

কোন হজ্বকারী ব্যক্তি নিঃস্ব হয় না। জাবের রা.কে ইমআর শব্দের উদ্দেশ্য কী জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, অভাব-অনটন। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৮০; তবারানী আউসাত, হাদীস : ৫২০৯

ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

ما ترفع إبل الحاج رجلا ولا تضع يدا إلا كتب الله بها حسنة أو محا سيئة أو رفع بها درجة.

হজ্বে গমনকারী ব্যক্তির উট চলার পথে যখনই পা উঠায় এবং পা রাখে এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা ঐ হজ্ব কারীদের জন্য সওয়াব লিখে দেন। অথবা তার একটি করে গুনাহ মুছে দেন অথবা তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।

৮. হজ্ব ও উমরা পালনকালে মৃত্যুবরণকারীর ফযীলত

ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত-

بينما رجل واقف مع رسول الله صلى الله عليه وسلم بعرفة إذ وقع عن راحلته فأقعصته، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : اغتسلوه بماء وسدر، وكفنوه بثوبيه ولا تخمروا رأسه ولا تخطوه، فإنه يبعث يوم القيامة ملبيا.

এক ব্যক্তি আরাফাতের ময়দানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে উফূফরত ছিলেন। হঠাৎ তিনি বাহন থেকে নীচে পড়ে গেলেন। এতে তার ঘাড় মটকে গেল এবং তিনি মারা গেলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে বড়ইপাতা সিদ্ধকরা পানি দিয়ে গোসল দাও, তার দুই কাপড় দিয়ে তাকে কাফন পরাও। তাকে সুগন্ধি লাগিও না এবং তার মাথাও আবৃত করো না। কেননা তাকে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হবে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১২৬৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১২০৬; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৫১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩০৮৪

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

من خرج حاجا فمات كتب له أجر الحاج إلى يوم القيامة، ومن خرج معتمرا فمات كتب له أجر المعتمر إلى يوم القيامة، ومن خرج غازيا فمات كتب له أجر الغازي إلى يوم القيامة.

যে ব্যক্তি হজ্বের উদ্দেশ্যে বের হল, অতঃপর মৃত্যুবরণ করল, কিয়ামত পর্যন্ত তার হজ্বের সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি উমরার উদ্দেশ্যে বের হল, আর সে অবস্থায় তার মৃত্যু হল কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য উমরার সওয়াব, লেখা হবে। যে ব্যক্তি জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হল, এবং তাতে তার মৃত্যু হল, কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য মুজাহিদের সওয়াব লেখা হবে।-মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ৬৩৫৭; তবারানী আউসাত, হাদীস : ৫৪৮০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ৫২৭৪

৯. তালবিয়া পাঠ ও উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠের ফযীলত

আবু বকর সিদ্দীক রা. হতে বর্ণিত-

أن النبي صلى الله عليه وسلم سئل : أي الحج أفضل؟ قال : الحج والثج.

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল, কোন হজ্ব সর্বোত্তম? তিনি বললেন, যে হজ্বে উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা হয় এবং কুরবানী করা হয়। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮২৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯২৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৬৩১; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৯৭; সুনানে দারিমী, হাদীস : ৮১৫১; মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ৭১; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ১১৭

সাহল ইবনে সা’দ রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

ما من مسلم يلبي إلا لبى من عن يمينه أو عن شماله من حجر أو شجر أو مدر حتى تنقطع الأرض من هاهنا إلى هاهنا.

যে কোনো মুসলমান তালবিয়া পাঠ করল, তার তালবিয়া পাঠের অনুসরণে তার ডান ও বামের বৃক্ষরাজি সবকিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করে, যতক্ষণ না যমীন তার এদিক তথা ডান ও বাম পার্শ্ব হতে ধ্বংস হয়ে যায়। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮২৮; সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৯২১; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৬৩৪; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৯৮; সুনানে কুবরা, বাইহাকী, ৫/৪৩

খাল্লাদ ইবনে যায়েদ, তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

أتاني جبريل فأمرني أن أمر أصحابي أن يرفعوا أصواتهم بالإهلال والتلبية.

আমার নিকট জিব্রীল আ. আগমন করে এ মর্মে আদেশ করেছেন, আমি যেন আমার সাহাবীদের হুকুম করি যে, তারা তালবিয়া পাঠ করার সময় যেন উচ্চস্বরে পাঠ করে। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১৬৫৫৭; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮২৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯২২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৬২৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৮০২; তবারানী, হাদীস : ৫১৭৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৯৪

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

أمرني جبريل برفع الصوت في الإهلال، فإنه من شعار الحج.

জিব্রীল আমাকে উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠের আদেশ করেছেন। কেননা তা হজ্বের নিদর্শন। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮৩১৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৬৩০

যায়েদ ইবনে খালেদ রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

جاءني جبريل فقال : يا محمد مر أصحابك فليرفعوا أصواتهم بالتلبية، فإنها من شعار الحج.

জিব্রীল আ. এসে আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনার সাহাবীদের হুকুম করেন, তারা যেন তালবিয়া পাঠ করার সময় উচ্চস্বরে পাঠ করে। কেননা তা হজ্বের নিদর্শন। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২১৬৭৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯২৩; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৬২৮; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৮০৩; তবারানী কাবীর, হাদীস : ৫১৭০; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৬৯৫

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

ما أهل ومهل قط إلا بشر، ولا كبر مكبر قط إلا بشر، قيل يا رسول الله صلى الله عليه وسلم بالجنة؟ قال : نعم.

যে কোনো ব্যক্তি তালবিয়া পাঠ করলেই তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয় এবং যে কোনো ব্যক্তি তাকবীর বললেই তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জান্নাতের (সুসংবাদ দেওয়া হয়)? তিনি বললেন, হ্যাঁ।-তবারানী আউসাত, হাদীস :৭৯৪৩; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ৫৩৭১

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোনো ব্যক্তি তালবিয়া পাঠ করে, সে দিনই (সূর্যাস্তের সাথে সাথে) তার গুনাহ মাফ হয়ে যায়।-শুয়াবুল ঈমান বায়হাকী, হাদীস : ৪০২৯

১০. বাইতুল্লাহ তাওয়াফের ফযীলত

ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

من طاف أسبوعا يحصيه وصلى ركعتين كان له كعدل رقبة قال وسمعته يقول : ما رفع رجل قدما ولا وضعها إلا كتب له عشر حسنات وحط عنه عشر سئيات ورفع له عشر درجات.

যে ব্যক্তি যথাযথভাবে সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত সালাত আদায় করে তার একটি গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব হয়। তাওয়াফের প্রতি কদমে আল্লাহ তার একটি করে গুনাহ মাফ করেন, একটি করে নেকী লেখেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৪৪৬২; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৫৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭৫৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৮৪২; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ৫৬৮৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস : ১২৮০৬

মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

من طاف اسبوعا لا يلغو فيه كان كعدل رقبة يعتقها.

যে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবে, তাতে কোনো ধরনের অনর্থক কাজ করবে না, তবে তার একটি গোলাম আযাদ করার সমপরিমাণ সওয়াব হবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস : ১২৮০৭; তবারানী, হাদীস : ৮৪৫; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ৫৫০৪

ইবনে আববাস রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

ينزل الله كل يوم على حجاج بيته الحرام عشرين ومائة رحمة : ستين للطائفين وأربعين للمصلين وعشرين للناظرين.

আল্লাহ তাআলা বায়তুল্লাহর হজ্বকারীদের উপর প্রতিদিন একশত বিশটি রহমত নাযিল করেন, তার ষাটটি তাওয়াফকারীদের জন্য, চল্লিশটি মুসল্লীদের জন্য এবং বিশটি দর্শকদের জন্য।-শুয়াবুল ঈমান বায়হাকী, হাদীস : ৪০৫১; তারগীব ১৭৮৬

১১. হাজরে আসওয়াদ ও রূকনে ইয়ামানী স্পর্শ করার ফযীলত

ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেন-

سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : إن مسحهما كفارة للخطايا.

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, হাজরে আসওয়াদ ও রূকনে ইয়ামানীর স্পর্শ পাপসমূহকে মুছে দেয়।-সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৫৯; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৫৭০১; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭২৯; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৮৪২

ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

والله ليبعثه الله يوم القيامة له عينان يبصر بهما، ولسان ينطق به ويشهد على من استلمه بحق.

অবশ্যই আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন হাজরে আসওয়াদকে উঠাবেন। তার দুটি চোখ থাকবে, যা দিয়ে সে দেখতে পাবে। একটি জিহবা বা মুখ থাকবে, যা দিয়ে সে কথা বলবে এবং যারা তাকে যথার্থভাবে স্পর্শ করেছে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৯৬১; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২১৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৭০৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭২৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯৪৪; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ১৭২৩

ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজরে আসওয়াদ হল জান্নাতের পাথর, তা দুধের চাইতেও বেশি সাদা ছিল, কিন্তু আদমসন্তানের গুনাহ একে কালো করে দিয়েছে। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮৭৭; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭৩০; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৯২৫

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হাজরে আসওয়াদ বরকের চাইতে সাদা ছিল, কিন্তু শিরকপন্থীদের পাপ তাকে কালো বানিয়ে ফেলেছে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৭৯৫; শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৪০৩৪

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

إن الركن والمقام ياقوتان من ياقوت الجنة طمس الله نورهما ولولم يطمس نورهما لأضاء تاما بين المشرق والمغرب.

হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবারাহীমী জান্নাতের দুটি ইয়াকুত পাথর। এ দুটির জ্যোতি আল্লাহ তাআলা নিস্প্রভ করে দিয়েছেন। তিনি যদি এ দুটির জ্যোতি নিস্প্রভ না করতেন, তাহলে তা পূর্ব-পশ্চিমের মাঝে যা কিছু আছে সব আলোকিত করে দিতো। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭০০০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৭১০; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৮৭৮; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৭৩২; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ১৭০২

ইয়াওমে আরাফার ফযীলত

অব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, নবী করীম সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إن الله عز وجل يباهي ملائكته عتيبة عرفة بأهل، فيقول : انظروا إلى عبادي أتوني شعثا غبرا.

আরাফার অধিবাসীদের ব্যাপারে আল্লাহ ত

06/12/2024

"আস-সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু" (ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ)।

আপনার উপর আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হউক। এবং আল্লাহর করুণা ও তাঁর নেয়ামতসমূহ বর্ষিত হোক")।

Assalamu Alaikum Wa Rahmatullahi Wabarkatuhu

May God's peace be upon you. And may God's mercy and blessings be upon him").

সুরা বাকারা ২৬১ ২৬২
যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের উপমা একটি বীজের মত, যা সাতটি শীষ উৎপাদন করে, প্রত্যেক শীষে একশ শস্যদানা। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছে বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন। আর আল্লাহ সর্বব্যাপী প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।(১)

PRINCE MOHAMMAD QUASHEM FOUNDATION & ARDWA ISLAMIC SCHOOL

06/12/2024

কোরআনে যাদের সফল বলা হয়েছে
ভোগ-বিলাসই হবে আখেরাতের কঠিন যন্ত্রণার কারণ। পক্ষান্তরে সঠিক পথে চলতে গিয়ে দুনিয়ার দুঃখ-কষ্টই হবে আখেরাতের সঞ্চয় ও সফলতার উপায়। তাহলে সফল কারা? এ প্রশ্নের উত্তরে মহান আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে ঘোষণা করেছেন-

فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ

‘সুতরাং যাকে (জাহান্নামের) আগুন থেকে দূরে রাখা হবে এবং বেহেশতৈ প্রবেশ করানো হবে; সেই হবে সফলকাম।’

এটি একটি আয়াতের মধ্যাংশ। আয়াতের শুরুতে আল্লাহ মানুষের উদ্দেশ্যে বলেছেন- ‘প্রত্যেক জীবই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। প্রত্যেককেই পরকালে (তাদের কর্ম অনুযায়ী) পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে।’

আর আয়াতের শেষাংশে মানুষকে সতর্ক করে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন- ‘আর দুনিয়ার জীবন ভোগের সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

মানুষ যাতে সফলতার পথে হাটে। নিজেকে সফল করতে চায়। সে জন্য আল্লাহ তাআলা মানুষকে সতর্ক ও উৎসাহ দিতেই কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি এভাবে তুলে ধরেন-

کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ اُجُوۡرَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ

‘জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর কেয়ামতের দিনই তোমাদের কর্মফল পূর্ণমাত্রায় দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে (জাহান্নামের) আগুন থেকে দূরে রাখা হবে এবং বেহেশতে প্রবেশ করানো হবে; সেই হবে সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগের সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)

আয়াতের শিক্ষা

এই আয়াতে কারিমায় মহান আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছেন। আর এর সঙ্গে সফলতার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। তাহলো-

প্রথমত : মৃত্যু এমন এক ধ্রুব সত্য বিষয় যে, তা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার কো পথ নেই।

দ্বিতীয়ত : দুনিয়াতে মানুষ ভাল ও মন্দ যে যা-ই করুক না কেন, তাকে পরকালে তার কর্মের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে।

তৃতীয়ত : প্রকৃত সফলতা সেই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে- ‘যে দুনিয়াতে থাকাকালীন স্বীয় প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করে নিয়েছে এবং যার ফল স্বরূপ তাকে জাহান্নাম থেকে দূর করে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

চতুর্থত : দুনিয়ার (চাকচিক্যময়) জীবন ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ধোঁকা থেকে যে নিজেকে বাঁচিয়ে নিতে পারবে, সেই হবে সৌভাগ্যবান। আর যে এই ধোঁকার জালে ফেঁসে যাবে, সেই হবে ব্যর্থ ও হতভাগা।

দুনিয়াতে এমন কোনো মানুষ পাওয়া যাবে না; যে সফলতা চায় না। এ সফলতা একেকজন একেক দৃষ্টিকোণ থেকে নির্ধারণ করে। যেমন-

> কেউ দুনিয়ার প্রচুর সম্পদ, নারী, গাড়ী-বাড়ী, ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপত্তি ইত্যাদির মাধ্যমে নির্ধারণ করে।

> কেউ আবার সুস্বাস্থ্যকে নির্ধারণ করে।

> কেউ আবার পরকালের সফলতায় নিজেকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।

কিন্তু প্রকৃত সফলতা কিসে?

বিষয়টি আল্লাহ তাআলা চমৎকার ভাবে এ আয়াতে তুলে ধরেছেন-

فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ

‘সুতরাং যাকে (জাহান্নামের) আগুন থেকে দূরে রাখা হবে এবং বেহেশতে প্রবেশ করানো হবে; সেই হবে সফলকাম।’

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতে এক বেত পরিমান জায়গা দুনিয়া ও তাতে যা আছে তার থেকে উত্তম’- তারপর তিনি উপরোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করলেন।’ (তিরমিজি)

সুতরাং আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমের তিন সুরায় চিন্তাশীল মানুষের জন্য সফলতা লাভে সতর্ক করতে ঘোষণা করেন-

১. کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوۡنَ اُجُوۡرَکُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ

‘জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর কেয়ামতের দিনই তোমাদের কর্মফল পূর্ণমাত্রায় দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে (জাহান্নামের) আগুন থেকে দূরে রাখা হবে এবং বেহেশতে প্রবেশ করানো হবে; সেই হবে সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগের সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)

২. کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ؕ وَ نَبۡلُوۡکُمۡ بِالشَّرِّ وَ الۡخَیۡرِ فِتۡنَۃً ؕ وَ اِلَیۡنَا تُرۡجَعُوۡنَ

‘জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা বিশেষভাবে পরীক্ষা করে থাকি। আর আমার কাছে তোমরা ফিরে আসতে হবে।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৩৫)

কে সফল হবে আর কে ব্যর্থ হবে এ আয়াতে মানুষকে পরীক্ষা করার সে বিষয়টি ওঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে পরীক্ষা করবেন-

> কখনো দুঃখ-দুর্দশা দিয়ে;

> কখনো পার্থিব সুখ-শান্তি দিয়ে;

> কখনো সুস্বাস্থ্য ও প্রশস্ততা দিয়ে;

> কখনো অসুস্থতা ও সংকীর্ণতা দিয়ে;

> কখনো ধনবসম্পদ ও বিলাস-সামগ্রী দিয়ে;

> কখনো দারিদ্রতা ও অভাব দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। যারা এসব ক্ষেত্রে সফল হয়ে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত নিশ্চিত করতে পারেন। তারাই হলেন সফল।

৩. মানুষের জন্য সফলতা ছাড়া বিকল্প কিছু চিন্তা করার সুযোগ নেই। কারণ সবাইকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে। বিচার-জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ۟ ثُمَّ اِلَیۡنَا تُرۡجَعُوۡنَ

‘প্রত্যেক আত্মাই মরণের স্বাদ গ্রহণ করবে; এরপর তোমরা আমারই কাছে ফিরে আসবে।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৫৭)

মনে রাখতে হবে

যেহেতু সব প্রাণীকে মৃত্যুবরণ করতে হবে, দুনিয়ার নির্ধারিত সময় শেষে সবাইকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে; তাই পরকালের সফলতা লাভে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে মত্ত না হয়ে আল্লাহর বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করার বিকল্প নেই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাত দানের মাধ্যমে প্রকৃত সফলতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Address

325A/2 South Jatrabari
Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Imam Jalaly Al Haramain Hajj Kafela posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Imam Jalaly Al Haramain Hajj Kafela:

Videos

Share

Category