10/03/2024
🇭🇺 মধ্য ইউরোপের শেংগেন(Schengen) ভুক্ত একটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হাঙ্গেরি, যার বুকচিরে বয়ে গেছে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী দানিউব।
❏ হাঙ্গেরির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর হলো বুদাপেস্ট, যা দানিউব নদীর উভয় তীরে অবস্থিত। শহরটি পূর্ব-মধ্য ইউরোপের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।হাঙ্গেরি মোটামুটি সমৃদ্ধ দেশ। হাঙ্গেরিতে রয়েছে উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ও সার্বজনীন চিকিৎসাব্যবস্থা।
❏ বাংলাদেশের নাগরিকদের হাঙ্গেরিতে যেতে ভিসার দরকার হয়। বাংলাদেশের নাগরিকরা যেসব ভিসায় হাঙ্গেরিতে যেতে পারেন - স্টাডি ভিসা , ওয়ার্ক ভিসা , বিজনেস ভিসা, ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম ভিসা ইত্যাদি। আজকে আমরা জানব হাঙ্গেরির ওয়ার্ক(কাজের) ভিসা সম্পর্কে
❏ হাঙ্গেরিতে কেন যাবেন?
♦ হাঙ্গেরি ইউরোপের শেংগেন ভুক্ত একটি দেশ। হাঙ্গেরিতে নির্দিষ্ট সময়(১০ থেকে ১২ মাস) কাজ করার পর আপনি ইউরোপের অন্যান্য দেশে শর্তসাপেক্ষে সহজেই যেতে পারবেন।
♦ হাঙ্গেরিতে তিন মাসের মধ্যেই আপনি টিআরসি (টেম্পোরারি রেসিডেন্ট কার্ড পাবেন)।
♦ হাঙ্গেরিতে ৮ বছর থাকার পর আপনি পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি এবং নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
♦ আপনার স্পাউজক (হাজব্যান্ড/ওয়াইফ) এবং সন্তানদের ফ্যামিলি ভিসায় হাঙ্গেরি নিয়ে যেতে পারবেন।
হাঙ্গেরির জীবন যাত্রার মান উন্নত, এছাড়া দেশটি নিরাপদ ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল।
❏ হাঙ্গেরিতে কোন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে?
হাঙ্গেরিতে বাংলাদেশিদের জন্য মূলত বিভিন্ন ধরনের ব্লু-কলার জবের সুযোগ রয়েছে। যেসব সেক্টরে ব্লু-কলার জবের সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- কন্সট্রাকশন, অটোমোবাইল ফ্যাক্টরি, ফুড প্রসেসিং ফ্যাক্টরি, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, ইলেক্ট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডিং, এগ্রিকালচার, লজিস্টিকস (ট্রাক ড্রাইভিং/ওয়ারহাউজ), প্রোডাকশন (সিএনসি), মেইন্টেনেস এন্ড ক্লিনিং ইত্যাদি।
❏ হাঙ্গেরিতে বেতন কত?
হাঙ্গেরিতে ২০২৩ সালে এভারেজ গ্রস স্যালারি ৩ লাখ ৭৪ হাজার ফরিন্ট। যেটা বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। ট্যাক্স পে করার পর নেট স্যালারি ৩ লাখ ৪ হাজার ফরিন্ট ( ৯৩ হাজার টাকা )
অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে স্যালারি কম বেশি হতে পারে।
❏ হাঙ্গেরিতে কত ঘণ্টা কাজ করতে হয়?
হাঙ্গেরিয়ান আইন অনুযায়ী আপনাকে প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে । প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৫ দিন । আপনি চাইলে হাঙ্গেরিতে ওভারটাইমও কাজ করতে পারবেন। এর জন্য অতিরিক্ত স্যালারি পাবেন।
❏ হাঙ্গেরির ভিসার প্রসেস কিভাবে হয়?
হাঙ্গেরিতে ভিসার প্রসেসের জন্য আপনাকে প্রথমে একটি কোম্পানি খুঁজে বের করতে হবে। তাদের কাছে আপনার সিভি জমা দেয়ার পর, তারা যদি আপনাকে চাকুরীতে নিতে রাজি হয় , তাহলে আপনার পাসপোর্ট ও ছবি দিতে হবে।
এরপর হাঙ্গেরিয়ান কোম্পানি লোকাল ইমিগ্রেশন অফিসে ওয়ার্ক ফোর্স লেটার (ইগাজোলাস) এর জন্য আবেদন করবে। এরপর ওয়ার্ক ফোর্স লেটার , জব কন্ট্রাক্ট পেপার, একোডোমেশন পেপার সহ ভিসার জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপনাকে পাঠাবে।
হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ফোর্স লেটারের মেয়াদ থাকে ২ মাস, ২ মাস পর তা আবার ২ মাসের জন্য একবার রিনিউ করা যায়। এই ৪ মাসের ভিতরেই ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ আপনাকে বাংলাদেশে অবস্থিত হাঙ্গেরিয়ান এমব্যাসিতে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।
এপয়েন্টমেন্টের দিন পাসপোর্ট সহ সকল ডকুমেন্টস নিয়ে আপনাকে এমব্যাসিতে উপস্থিত হতে হবে। সেখানে একটি ইন্টার্ভিউ নেওয়া হয়। ইন্টার্ভিউতে খুব ব্যাসিক কিছু প্রশ্ন করা হয়। আপনি চাইলে ইংরেজি অথবা বাংলাতে ইন্টার্ভিউ ফেইস করতে পারবেন।
❏ হাঙ্গেরির ওয়ার্ক ফোর্স লেটার ও অন্যান্য ডকুমেন্টস আসতে কতদিন লাগে?
কোম্পানি ভেদে ওয়ার্ক ফোর্স লেটার ও অন্যান্য ডকুমেন্টস আসতে সর্বনিম্ন ১৫ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৩/৪ মাস পর্যন্ত লাগতে পারে।
❏ এমব্যাসি ফেইসের পর ভিসার ডিসিশন/স্ট্যাম্পিং আসতে কতদিন লাগে?
ভিসার ডিসিশন আসতে এমব্যাসি ফেইস করার পর ৬০ থেকে ১০০ কর্মদিবস লাগতে পারে অর্থাৎ ২ থেকে ৩ মাস ১০ দিন।
❏ হাঙ্গেরির ভিসা রেশিও কেমন ?
হাঙ্গেরির ভিসা রেশিও সম্পর্কে ভেরিফাইড/অফিসিয়াল কোন তথ্য নেই। তবে বিগত দিনে ভিসা প্রাপ্তদের সংখ্যা পর্যালোচনা করে দেখে গেছে, কোম্পানি প্রোফাইল যদি ভালো হয়ে তাহলে ভিসা প্রাপ্তির সম্ভাবনা ৯৫% এর চেয়েও বেশি ।
❏ হাঙ্গেরির ভিসার জন্য কি ইন্ডিয়া যেতে হবে?
হাঙ্গেরির ভিসার জন্য ইন্ডিয়া যাওয়ার দরকার নেই। হাঙ্গেরি এম্বব্যাসীর ঢাকা অফিসের মাধ্যমেই ভিসার আবেদন করা যাবে।