07/10/2022
সুন্দরবন ভ্রমণ
আমরা মূলত যাব সুন্দরবন এর চাঁদপাঁই রেঞ্জের দক্ষিন চিলা গ্রামে। সেখানের বনের পাশে গড়ে ওঠা বাদাবন ইকো কটেজে আমাদের আপাতত ঘাটি। আর তাই মংলা পৌছেই আমাদের প্রথম কাজ পশুর নদী পাড়ি দেয়া। এ ক্ষেত্রে জন প্রতি ৫ টাকা নৌকা ভাড়া আর ১ টাকা ঘাটের টোল প্রদান করে নদী পার হলাম। যেতে হবে আরো পথ। তাই দামাদামি করে ২২০ টাকায় একটি অটো রিজার্ভ নিলাম। প্রায় ১২ কিলো পথ পাড়ি দিয়ে এবার আমাদের বৈদ্যমারী যাবার পালা, সেখানেই আছে বাদাবন এর ধার ঘেষা আমাদের কটেজ। সুন্দরবনকে এখানের স্থানীয়রা মূলত বাদাবন বলেই ডাকে। চিংড়ির ঘের ঘেরা গ্রামীন ব্যাপক ন্যাচারাল বিউটি গিলতে গিলতে আমাদের ছুটে চলা দক্ষিন চিলা পথে।
প্রায় ৩০ মিনিট পথ চলার পর অতঃপর আমরা এসে পৌছুলাম দক্ষিন চিলায়। বেশ গহীনে এই গ্রাম হলেও আধুনিক জীবন যাত্রায় অনেক কিছুর ছোঁয়া পাবেন এখানে। এখানে আছে বিদ্যুৎ আছে, আছে মোবাইলের ফোরজি নেটওয়ার্ক ।
ঘরে বসে সুন্দরবনের পাক-পাখালির ডাক। পায়ে হেঁটে সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ। নিরাপত্তার সঙ্গে নিশিযাপন। মানসম্মত খাবার গ্রহণ। সেই সাথে স্বল্প খরচে লোকালয় থেকে খুব কাছে ভ্রমণ করেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন উপভোগের সুযোগ। এই সব কিছুই এক সাথে পেতেই মূলত আমরা ছুটে এসেছি এই বাদাবনে। স্থানীয় গ্রামীন পিছিয়ে পড়া জনগনের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও পর্যটন বিকাশের স্বার্থে স্থানীয় কিছু এনজিও এর সহায়তায় কমিউনিটি ইকো ট্যুরিজম এর অংশ হিসেবে ২০১৮ সালে চাঁদপাঁই ফরেস্ট রেঞ্জের আওয়ায় গড়ে তোলা হয়েছিল এই অসাধারণ বাদাবন ইকো কটেজটি।
কটেজে প্রবেশ পথের শুরুতেই পড়বে পুকুর আর তার পাড়ে রিসিপশন ও ডাইনিং এরিয়া। পুকুরের উপরেও রয়েছে বসে আড্ডা দেবার মতন সুন্দর ব্যবস্থা। যদি চান তবে মাছ ও মারার সুযোগ আছে পুকুরে কিংবা চিংড়ি ঘেরে। প্রথমে ওয়েলকাম ড্রিংক্স হিসেবে লেবুর শরবত প্রদান করা হলো আমাদের। কটেজের গাছের টাটকা লেবু দিয়ে তৈরি সাথে সুন্দর উপস্থাপনা। শুরুতেই মন ভাল করে দেবে আপনাদের। এদের রিসিপশন ও ডাইনিং রুমটির ও কিছু বিশেষত্ব আছে। এখানে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো সুন্দরী গাছের কংকাল দিয়েই তৈরি তাদের বসার সোফা। সেই সাথে প্রায় শত বর্ষী কিছু টালি ব্যবহার করা হয়েছে ছাদ তৈরীতে।
এবার পালা আমাদের রুম বুঝে নেয়ার। টিম ঘুরুঞ্চি আমাদের ঘুরাঘুরি হয় খানিকটা রিল্যাক্স এ। এবারো তার ব্যাতিক্রম নয়। প্রায় পুরো কটেজটিই আমাদের দখলে এবার। যদিও আমরা মাত্র ৬ জন এ যাত্রায় বেরিয়েছি এই বাংলার রুপ গিলতে।
চিংড়ি ঘেরের উপর, সম্পূর্ণ ইকো ফ্রেন্ডলি ইকুইপমেন্ট দিয়েই বানানো দুটো কটেজ। যার একটির নাম শুশুক, আরেকটা ইরাবতী। মূলত দুটো কটেজের নামই ডলফিনের দুটি প্রজাতীর নামে। উপরে গোলপাতার ছাদ৷ তার ভেতরে বাঁশ, বেত আর কাঠ দিয়ে তৈরি এই অসাধারণ স্থাপনা। প্রতিটি কটেজেই আছে দুটো করে ডাবল ফ্লোরিং বেড। আর পর্যাপ্ত ফ্যান। সেই সাথে আছে পর্যাপ্ত চার্জিং এত ব্যবস্থা। সেই সাথে আছে হাই কমোড ও লো কমোড উভয় ব্যবস্থা যুক্ত দুটো ওয়াশরুম।
এসেই ফ্রেস হতেই, চলে আসলো আমাদের জন্য দেশি স্থানীয় ফল। কটেজের গাছের আমড়া মাখানো। যার উপস্থাপন ও আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
সব থেকে আকর্ষণীয় এই কটেজ গুলো রুমের বাইরের বারান্দায় থাকা আড্ডা দেবার সিটিং এরিয়াটি। ফ্রেন্ডস বা ফ্যামিলি নিয়ে বসে ঘেরের সৌন্দর্য , কিংবা বিকালের সূর্যাস্ত অথবা রাতের তারাভরা আকাশ সকল কিছুই উপভোগ করতে পাবেন এখানে। সেই সাথে এখানে আপনার কটেজের সাথেই বাধা থাকে একটি নৌকা। ইচ্ছে হলেই বেরিয়ে পড়তে পারেন ঘেরে। চালাতে পারেন আনলিমিটেড নৌকা।
এ কটেজে এলে বনের আশপাশের সহজ-সরল মানুষের জীবন-যাত্রা সম্পর্কে জানতে পারবেন যেমন, তেমনি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, বিশ্বাস, ধর্ম, প্রথা জানতে পারবেন। কিভাবে সহ-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তারা বনরক্ষায় কাজ করছে, তা দেখার সাথে সাথে, রাত্রে তাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উপভোগ করতে পারবেন এখানে।
ইতিমধ্যে আমাদের দুপুরের খাবারের ডাক পড়েছে, এ যাত্রায় দুপুরের খাবারের আয়োজন হিসেবে আছে ঘেরের চিংড়ি, আছে দেশি মুরগির মাংস, আলু ভর্তা, ভারি ডাল, স্থানীয় বিষ মুক্ত অর্গানিক সবজি, সাথে স্থানীয় অসাধারণ স্বাদের মিস্টি দই। নানান সময় নানান রিসোর্ট বা কটেজে দল বেধে ঘুরলেই খানিকটা ব্যাতিক্রম এ যাত্রায়। এই প্রথম গ্রুপের প্রতিটা সদস্যই মুগ্ধ খাবারের স্বাদে। খাবার খেয়ে এবার খানিক বিশ্রাম নেবার পালা। এখানে ঘেরের সাথে লাগোয়া আছে হ্যামক, আছে বিচ চেয়ার। সেগুলোতে বসে বা শুইয়ে কাটিয়ে দেয়া সম্ভব পুরো একটা বেলা। কিন্তু আমাদের হাতে সময় কম। কারন বিকেল হলেই বেড়িয়ে পড়বো ক্যানেল ক্রুজিং এ।
বিকেল ৫ টা ছুই ছুই, ছোট দিনের বেলা এখন তাই বেড়িয়ে পরলাম লিটন ভাই সাথে আমরা। মোঃ লিটন জমাদ্দার ভাইয়ের মূলত স্বপ্নের প্রজেক্ট এই বাদাবন ইকো কটেজ। তিনি একজন প্রশিক্ষিত ট্যুর গাইড ও। মাত্র ৫ মিনিট এর পথ হেটেই আমরা ঢুকে পরলাম সুন্দরবন এর চাঁদপাঁই রেঞ্জের বৈদ্যমারী বন বিট অফিসে। এখান থেকেই মূলত সংরক্ষিত বন এর শুরু। আমাদের ভাগ্য কিছুটা খারাপ কারন এখন চলছে ভাটা। জোয়ার আসবে গভীর রাতে। আর তাই নৌকা নিয়ে ক্যানেল ক্রুজিং আর কপালে নেই এই যাত্রায়। তাই পায়ে হেটেই ঢুকে পড়লাম আমরা সুন্দর এর ভেতরে সেই সাথে লিটন ভাই এর কাছ থেকে শুনতে থাকলাম বাঘ নিয়ে তাদের নানান বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা। যদি চান সেগুলো শুনতে বিস্তারিত সব দেখতে তবে Biskut Pagla ইউটিউব চ্যানেলের ম্যানগ্রোভে মাতামাতি সিরিজের ২য় পর্ব দেখতে ভুলবেন না। বন এর খানিক ভেতরে ঢুকতেই প্রথমেই দেখা পেলাম এক বন বিড়ালের পায়ের ছাপ যা পেরিয়ে একটু সামনেই একটি বট গাছ, এই গাছের একটা বিশেষত্ব আছে, এই গাছের গোড়াতে মুসলিম মৌয়াল বা বাউয়ালরা কালু গাজীর নামে সিন্নি মানত করে।
আধ্যাত্মিক কালু গাজীর প্রসঙ্গ যখন উঠে তখন সুন্দরবনের মানুষ জানায় তারা কালু গাজীকে সাধক ও দরবেশ মনে করে এবং দাবী করে যে তিনি বনে হারিয়ে যাওয়া মানুষকে পথ দেখিয়ে লোকালয়ে নিয়ে আসতেন, বাঘের মুখ থেকে বাঁচাতেন, বন্য শুকরের কবল থেকে উদ্ধার করতেন। তারা এটাও বলে, তাকে চাইলেই দেখা যায় না, তার ঘর বাড়ী কেউ দেখেনি তবে বিপদে পড়া মানুষকে তিনি উদ্ধার করতেন। সাত আট বছর আগে চার যুবক এক বাঘের কবলে পরে, বাঘ তাদের উপর ঝাপিয়ে পরার ঠিক আগে কোথা থেকে যেন কালু গাজী এসে হাজির হন এবং যুবকদের বলেন 'আমার পেছনে দাড়া', এরপর তিনি এক অপলকে তাকিয়ে থাকেন বাঘের চোখের দিকে, এক সময় বাঘ পিছু হটে যায়; তিনি তারপর যুবকদের লোকালয়ে পৌছিয়ে দেন কিন্তু যুবকরা তাকে ধন্যবাদ দেবার আগে সন্ধ্যা -আলোয় মিলিয়ে যান। তাকে বহুদিন দেখা যায় না তবে সন্ধ্যে নামার সময় বা বিশাল ঝড় উঠার আগে কাকে যেন এখনো দেখা যায় সেজদা দিচ্ছে; স্থানীয়রা ধারনা করে নেয় কালু গাজী নামাজ পরছেন।
কালু গাজীকে সুন্দরবন এর হিন্দু - মুসলিম উভয় সম্প্রদায় বিশ্বাস করে ও মেনে চলে। কালু গাজীর মতন হিন্দু সম্প্রদায় আরেকজনের পূজা করেন তিনি- বন বিবি। কালু গাজীর মানতের গাছ পেরিয়ে দল বল ছেড়ে কাঁদা মারিয়ে আমি আরো গহীনে ঢুকে পরলাম বন বিবির পূজা হবার গাছের সন্ধানে। খানিক ভিতরে মৃত প্রায় আরেক বট গাছ। আর সেই গাছের গোড়াতেই হয় মূলত বন বিবির পূজা।
বনবিবি হলেন বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত সুন্দরবন অঞ্চলে মৎস্যজীবী, মধু-সংগ্রহকারী ও কাঠুরিয়া জনগোষ্ঠীর দ্বারা পূজিত এক লৌকিক দেবী তথা পিরানি। উক্ত জনগোষ্ঠীর মানুষেরা বাঘের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বনবিবির পূজা করে। বনবিবি, বনদেবী, বনদুর্গা, ব্যাঘ্রদেবী বা বণচণ্ডী নামেও পরিচিত। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের সুন্দরবন অঞ্চলেই হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বাঘের হাত থেকে রক্ষা পেতে বনবিবির পূজা করেন।
ইতিহাস গ্রন্থের তথ্য অনুযায়ী, ১৫০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ সুন্দরবন এলাকায় দক্ষিণরায়, বণিক ধোনাই ও মোনাই এবং গাজীর অস্তিত্বের কথা জানা যায়। বনবিবি ছিলেন ইব্রাহিম (মতান্তরে বেরাহিম) নামে এক আরবের কন্যা। ইব্রাহিমের স্ত্রী গুলাল বিবি সতীনের প্ররোচনায় সুন্দরবনে পরিত্যক্ত হলে সেখানেই বনবিবির জন্ম হয়। কথিত আছে, গুলাল বিবি মদিনা এবং ইব্রাহিম মক্কা হতে আগত ছিলেন।
সুন্দরবনের এই অঞ্চলে বনবিবিকে নিয়ে একটি কিংবদন্তি প্রচলিত আছে,
এক সওদাগরের দুই সুন্দরী স্ত্রী ছিলেন। ছোটো বউয়ের চক্রান্তে সন্তানসম্ভবা বড়ো বউ গুলালবিবি সুন্দরবনে নির্বাসিতা হন। কয়েকদিন পর সেখানেই যমজ পুত্র-কন্যার জন্ম দিয়ে তার মৃত্যু হয়। সদ্যোজাত শিশু দু'টির কান্না শুনে বনের বাঘ, কুমির, হরিণ, অজগর, বানর সবাই ছুটে আসে। তারাই দুই ভাইবোনকে লালনপালন করে বড়ো করে তোলে। ছেলেটি বড়ো হয়ে বাঘের রাজা এবং মেয়েটি বনবিবি নামে পরিচিত হয়। স্থানীয় বিশ্বাসে এই বনবিবি হলেন মানুষের রক্ষাকর্ত্রী। তারা মনে করেন, বনের বাওয়ালি-মৌয়ালেরা বাঘের মুখে পড়লে বনবিবির নাম স্মরণ করে মন্ত্র পড়ে আর সঙ্গে সঙ্গে বাঘও দৌড়ে পালিয়ে যায়। অদ্যাবধি স্থানীয় মানুষ বনে কাজে যাওয়ার আগে তাই বনবিবির পূজা করে।
প্রতি বছর মাঘ-ফাল্গুন মাস নাগাদ বনবিবির বাৎসরিক পূজা হয়। এই পূজায় ব্রাহ্মণেরা পৌরোহিত্য করেন না, করেন নিম্নবর্ণীয় হিন্দুরা। বনবিবির পূজায় নিরামিষ নৈবেদ্য নিবেদনের রীতি আছে, বলি হয় না। কখনও বা তাঁর নামে জীবন্ত মুরগি ছেড়ে দেওয়া হয়। দেবীর পূজায় মন্ত্রতন্ত্রের কোনও বিধি নেই, নামাজের কলমা পড়ে ভক্তদের জন্য ‘দোয়াদরিত মাঙা’ হয়। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই এখানে পূজা-হাজত দেন ও ‘দোয়াদরিত’ প্রার্থনা করেন। দুটি ভিন্ন ধর্ম যেন মিলেমিশে গেছে সুন্দরবন এর এসে বনবিবি ও কালু গাজীর মাঝেই।
চাঁদপাঁই রেঞ্জের এই এরিয়াতে বাঘের আনাগোনা একটু বেশিই। কাঁদা মারিয়ে আমরা পথ চলছি এমন সময় জানা গেল বৈদ্যমারীর টহল ফাঁড়ির দক্ষিনে তাজা বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে৷ পথ ঘুরে সাঁকো পেরিয়ে বনের কোল ঘেষা পথ ধরে ছুটলাম আমরা। খাল পেরিয়ে খানিক গহীনে ঢুকার মুখেই বাঘের পায়ের ছাপ। অভিজ্ঞ জনরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বললো এই বাঘের পায়ের ছাপ কয়েকঘন্টা আগের। কারন এখনও জোয়ার আসেনি। জোয়ার আসলে ছাপ মুছে যেত কিংবা একটা পলি অন্তত পড়তো ছাপের উপরে। কিন্তু এই ছাপে কোন পলি নেই। পায়ের ছাপ ধরে আরেকটু আগাতেই দেখি ছাপ চলে গেছে বনের আরো গহীনে। এই পথে প্রবেশ একদমি নিষেধ। তাই ফিরতী পথ ধরলাম। লিটন ভাই এর সাথে গল্প করতে করতে শুনছিলাম তার অভিজ্ঞতার কথা, নিজ চোখে বাঘ দেখা কিংবা বাঘে ধরা মানুষ এর বিভৎস লাশ উদ্ধার এর কথা। বৈদ্যমারির এই স্থানের পূর্বে সেই শরনখোলা রেঞ্জ আর দক্ষিনে চাঁদপাই রেঞ্জ সুন্দরবনের। ঘুরে ফিরে সন্ধ্যা হতে চললো যখন তখন ফিরলাম আমরা কটেজে। ফ্রেস ট্রেস হয়েই দেখি সন্ধ্যার স্ন্যাকস হিসেবে হাজির গরম গরম পিঁয়াজু আর ধোঁয়া উঠা গরম চা। সুন্দর করে পরিবেশন করা যে খাবার স্বাদের সাথে সাথে রুপেও আপনাকে মুগ্ধ করবে। সন্ধ্যার অসাধারণ নীলচেলাল আকাশের নিচে ঘেরের ধারে সিটিং এরিয়াতে বসে চা খেতে খেতে হারিয়ে যাবেন অসাধারণ অনুভুতি মাঝে সেই গ্যারান্টি এ যাত্রায় আমি দিতে পারি।
সন্ধ্যার পর টিম ঘুরুঞ্চি আমরা আড্ডা গল্প গানে পার করলাম সেই সাথে করলাম মাছ ধরার বৃথা চেস্টা। কেউ কেউ আবার রাতের আধারেই নৌকা নিয়ে নেমে পড়লাম ঘেরে। অসাধারণ রাত অসাধারণ অনুভূতি। এদিকে শুরু হয়ে গেছে আমাদের বার-বি-কিউ এর আয়োজন। চিকেন সাথে সাথে স্থানীয় কাঁকড়া, পরাটা আর কোল্ড ড্রিংক্স এর আয়োজন ছিল ডিনারে। ডিনার করে পুকুরের উপর বসে চললো আমাদের আড্ডা। কখনো পুকুরের উপর কখনো হ্যামকে ঝুলে গান, কখনো বা কটেজের বারান্দায় বসে টিম ঘুরুঞ্চি আগের ট্রিপ গুলোর মজার মজার স্মৃতি চারন ও দুস্টামি। আর তাই করতে করতে হয়ে এলো গভীর রাত। এবার যে ঘুমাতে যাবার পালা। কারন উঠতে হবে অনেক সকালে, বেড়িয়ে পড়তে হবে সুন্দরবন এর আরো গহীনে হারিয়ে যাবার জন্য। চলবে.....