20/02/2023
আগামী ২০ শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ খ্রীঃ সোমবার সারাদেশে জাতীয় ভিটামিন এপ্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালিত হইবে। উক্ত ক্যাম্পেইন চলাকালীন নিকটস্থ ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে/ক্যাম্পেইন কেন্দ্রে আপানার শিশুকে নিয়ে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো নিশ্চিত করুন।
মনে রাখবেন, ভিটামিন এ শুধুমাত্র শিশুদেরকে অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে রক্ষা করে তাই নয়, ভিটামিন এ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল ও জটিলতা কমায় এবং শিশুমৃত্যুর ঝুকি কমায়।
তাই বাংলাদেশে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পুষ্টিসেবা, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্টান বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে থাকে।
★★ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্যঃ 👇
✅ ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগের প্রাদুর্ভাব এক শতাংশের নিচে কমিয়ে আনা এবং তা অব্যাহত রাখা।
✅ ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপুষ্টিজনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করা
★★ ক্যাম্পেইনের লক্ষমাত্রাঃ 👇
✅ ৯০ শতাংশের বেশি যাদের বয়স ১২-৫৯ মাস, তাদের প্রতি ছয় মাস অন্তর বছরে দুইবার একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এ (দুইলক্ষ আই ইউ) ক্যাপসুল খাওয়ানো।
✅ ৯০ শতাংশের বেশি যাদের বয়স ৬-১১ মাস, তাদের প্রতি ছয় মাস অন্তর বছরে দুইবার একটি করে নীল রঙের ভিটামিন এ একলক্ষ আই ইউ) ক্যাপসুল খাওয়ানো।
ভিটামিন এ এর বার্তা সমুহঃ
✅ ভিটামিন এ অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল কমায় এবং শিশুমৃত্যুর ঝুকি কমায়।
✅ জেরোফথ্যালমিয়া, দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া, হাম ও মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ান।
✅ জাতীয় ভিটামিন এপ্লাস ক্যাম্পেইন এর দিন আপনার ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে নিকটস্থ ক্যাম্পেইন কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো নিশ্চিত করুন।
✅ যদি কোন শিশু গত ৪ মাসের মধ্যে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়ে থাকে তবে সেই শিশুকে ক্যাম্পেইনে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
✅ ভিটামিন এ ক্যাপসুল ভরাপেটে খাওয়ানো ভাল।
✅ ভিটামিন এ ক্যাপসুল শিশুর জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।
✅ মনে রাখবেন, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন দেশের যে কোন ক্যাম্পেইন কেন্দ্র থেকে আপনার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে পারবেন।
✅ ভ্রমনে থাকাকালীন সময়েও আপনি রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে অবস্থিত ক্যাম্পেইন কেন্দ্র থেকে আপনার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে পারবেন।
★★ ক্যাম্পেইনের পুষ্টি বার্তাসমুহঃ 👇
📢 জন্মের পরপরই শিশুকে শালদুধ সহ মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করুন।
📢 জন্মর প্রথম ৬ মাস ( ১৮০ দিন) শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ান। এ বয়সে পানি, মধু, চিনি বা মিস্রির পানি ইত্যাদি শিশুকে খাওয়ানো যাবে না।
📢 শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ান।
📢 মায়ের এবং শিশুর পুষ্টির জন্য গর্ভবতি ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমানে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ প্রাণীজ খাবার (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, কলিজা ইত্যাদি) ও উদ্ভিজ্জ খাবার ( হলুদ ফলমূল ও রঙিন শাক-সবজি) খেতে দিন।
📢 পরিবারের রান্নায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার করুন।
ভিটামিন এ এর উৎস
📢 প্রাণীজ উৎসঃ মায়ের দুধ বিশেষ করে শাল দুধ, ডিম, দুধ, কলিজা, মাছ বিশেষ করে মলা মাছ, মাংস ইত্যাদি।
উদ্ভিজ্জ উৎসঃ
📢 গাঢ় রঙের শাক সবজি যেমন মিষ্টি আলু, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক, কচুশাক, পুঁইশাক, পালংশাক ইত্যাদি
📢 হলুদ ফলমূল যেমন পাকা আম, পাকা পেঁপে, পাকা কাঁঠাল, খেজুর ইত্যাদি।
★★ ক্যাম্পেইনে যাদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না👇
❌ ৬ মাসের কম বয়সী শিশু
❌ ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশু
❌ ৪ মাসের মধ্যে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল প্রাপ্ত শিশু
❌ অসুস্থ শিশু
★★ ক্যাম্পেইনে যে সকল সতর্কতা মেনে চলতে হবে।👇
✅ ভিটামিন এ ক্যাপসুল অবশ্যই প্রশিক্ষিত মাঠকর্মী/এনজিওকর্মী/স্বেচ্ছাসেবি দ্বারা খাওয়াতে হবে। কোন অবস্থাতেই অভিভাবক/ শিশুর হাতে ভিটামিন এ ক্যাপসুল দেওয়া যাবে না।
✅ কান্নারত অবস্থায় কিংবা জোর করে শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
✅ ক্যাপসুলের মুখ কেটে শুধুমাত্র ক্যাপসুলের ভিতরের তরল ভিটামিন টুকু শিশুকে খাওয়াতে হবে। কোন অবস্থাতেই আস্ত বা খোসাসহ ভিটামিন এ শিশুকে খাওয়ানো যাবে না।
✅ ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর পর একটি নির্দিষ্ট স্থানে ক্যাপসুলের খোসাটি রাখতে হবে।
💗💗 আপনার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ান, শিশুমৃত্যুর ঝুকি কমান।💗💗