20/02/2023
অন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
কাপ্তাই লেকে আয়েশী নৌ-ভ্রমণের জন্য বিলাশবহুল হাউজবোট কাপ্তাই ক্রুজ।
অন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
Happy New Year 2023
রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পর্যটন জেলা।আয়তনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা রাঙ্গামাটি। প্রাচীনকালে এ জেলায় প্রচুর পরিমান কার্পাস তুলা পাওয়া যেতো, যার নামানুসারে কার্পাসমহলই ছিল এ জেলার প্রাচীন নাম। বর্তমানে এখানকার প্রাকৃতিক রূপ-বৈচিত্র্যে খ্যাতি পেয়েছে ‘রূপের রানী’ হিসেবে। পাহাড়, নদী ও লেকবেষ্টিত একটি বৈচিত্রময় জনপদ যেখানে চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বোম, খুমি, খেয়াং, চাক্, পাংখোয়া, লুসাই, সুজে সাওতাল , রাখাইন সর্বোপরি বাঙ্গালীসহ ১৪টি জনগোষ্ঠির বসবাস। উল্লেখ্য এখানে কিছ অসমীয়া ও গুর্খা সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে।
১১ হাজার বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই কৃত্রিম হ্রদ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড়। সেখানে চোখে পড়ে ছোট-বড় পাহাড়, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা, ঝরনা আর পানির সঙ্গে সবুজের মিতালী। একদিকে পাহাড়ে আছে যেমন বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্ভার, তেমনই লেকের অ থৈ জলে আছে বহু প্রজাতির মাছ ও অফুরন্ত জীববৈচিত্র্য। লেকের চারপাশের পরিবেশ, ছোট ছোট দ্বীপ, নানাবিধ পাখি ও জল কেন্দ্রিক মানুষের জীবনযাত্রা আপনাকে মুগ্ধ করবে প্রতি মূহুর্তে।
রাঙ্গামাটির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতমঃ কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ে, কর্ণফুলী হ্রদ, পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, শুকনাছড়া ঝর্ণা, ধুপপানি ঝর্ণা, মুপ্পোছড়া ঝর্ণা, পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকো ভিলেজ, রাইংখ্যং পুকুর, রাজবন বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার রাজবাড়ি, কর্ণফুল পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার, সাজেক ভ্যালী, ন-কাবা ছড়া ঝর্ণা, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, কাট্টলী বিল, তিনটিলা বনবিহার।
(ছবিঃ আজিজুর রহমান তানভীর ভাই)
পঞ্চাশ দশকের মাঝামাঝি সময়ে কাপ্তাই।
এই ছবিটি কাপ্তাই বাঁধ তৈরী হওয়ার আগে তোলা ।
রাঙামাটিতে রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কাগজ কল - কর্ণফুলী পেপার মিল
===========================
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাগজের কল ‘কর্ণফুলী পেপার মিলস’ (কেপিএম)। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী নদীর তীরে ৪৪২.৩ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত মিলটি ১৯৫৩ সাল থেকে উৎপাদন শুরু করে। পার্বত্য অঞ্চল থেকে সংগৃহীত বাঁশ, গাছ ও অন্যান্য কাঁচামাল দিয়ে মণ্ড তৈরি করে সেই মণ্ড থেকে কাগজ উৎপাদন করা হয়।
১৯৫৩ সালে তদানীন্তন পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক রাঙামাটি জেলা কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী পেপার মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। কর্ণফুলি পেপার মিলটি শিল্প আইনের অধীনে নিবন্ধিত প্রথম কাগজশিল্প যা ত্রিশ হাজার শ্রমিক নিয়ে এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাগজ-কল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। মিলটি আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানি, সুইডেন এবং ইতালির সহযোগিতায় ও বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্যমাত্রা ছিল বার্ষিক ৩০,০০০ মেঃ টন কাগজ উৎপাদন। ১৯৫৩ সালের ১৬ই অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। শুরুতে ব্যবস্থাপনা ত্রুটি থাকায় ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সরকার দাউদ গ্রুপের নিকট কোম্পানিটি বিক্রি করে দেয়। যারা এটির আধুনিকায়নের কাজ করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা মিলটি অধিগ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) মিল পরিচালনার দায়িত্ব পায়।
১৯৭২-৭৩ এবং ১৯৭৯-৮০ অর্থবছরের মধ্যবর্তী সময়ে প্রতিবছর গড়ে ১৬ কোটি টাকা লোকসান হতে থাকে। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে সরকার এই কারখানা সমস্যা শনাক্তের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই সূত্রে ১৯৭৯-৮০ খ্রিষ্টাব্দে ২৪ কোটি টাকার একটি পুনর্গঠন পরিকল্পনা অনুমোদন করে। এ কাজের জন্য ভারত, সুইডেন, আমেরিকা এবং জাপান থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে কারখানাটি পূর্ণোদ্যোমে কাগজ উৎপাদনে সক্ষম হয়ে উঠে। তবে অব্যবস্থাপনার কারণে বর্তমানে কারখানাটি পূর্ণোদ্যোমে কাগজ উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে সরকারকে প্রতিবৎসর লোকসান গুনতে হচ্ছে।
ঝুলন্ত সেতু - সিম্বল অফ রাঙ্গামাটি
বাংলাদেশের এমন কোন ব্যক্তি নাই যিনি এই সেতুর ছবি দেখেন নি। রাঙ্গামাটি জেলার পরিচিতিতে এই সেতুর ভূমিকা সর্বাধিক। সেতুটার মূল আকর্ষণ এর অবস্থান এর জন্য। চারপাশের দৃশ্য আর মনোরম পরিবেশই একে এত আকর্ষণীয় করে রেখেছে। সেতুটি ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ একটি ঝুলন্ত সেতু।
এই সেতুকে ঘিরে রাঙ্গামাটি শহরের শেষপ্রান্তে কর্ণফুলী হ্রদের কোল ঘেঁষে ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে গড়ে উঠেছে ‘পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স’। এখানে রয়েছে মনোরম ‘পর্যটন মোটেল’। উল্লেখ্য, পর্যটন মোটেল এলাকা ‘ডিয়ার পার্ক’ নামেই সমধিক পরিচিত। মোটেল এলাকা থেকে দৃশ্যমান হ্রদের বিস্তীর্ণ জলরাশি আর দূরের নীল উঁচু-নীচু পাহাড়ের সারি এখানে তৈরি করেছে এক নৈসর্গিক আবহ।
কাপ্তাই হ্রদের ইতিহাস:
পার্বত্য চট্টগ্রামকে মূলত কয়েকটি নদীর উপত্যকায় ভাগ করা যেতে পারে। এর মধ্যে আছে চেঙ্গি, মৈনি, কাসালং, রানখিয়াং আর সাঙ্গু নদী। সাঙ্গু বাদে বাকি সবগুলোই কর্ণফুলীর শাখা।
কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯০৬ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে। ১৯২৩ সালে চালানো হয় জরিপ এবং বেশ কয়েকবার স্থান পরিবর্তনের পর ১৯৫১ সালে প্রকৌশলী খাজা আজিমউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল বাঁধের স্থানটি চুড়ান্ত করে। এই বাঁধের কাজে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার তৎকালীন পাকিস্তানকে অর্থ সহায়তা দিতে রাজি হয়। বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদার কোম্পানি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের ‘উটাহ ইন্ট্যারন্যাশনাল ইনকর্পোরেশন’ নামক প্রতিষ্ঠানকে। ১৯৫৭ সালের অক্টোবর মাসে বাঁধ নির্মাণের মূল কাজ শুরু হয়।
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল প্রক্রিয়াই হলো নদী কিংবা জলের গতিপথে বাঁধ দিয়ে প্রথমে পানি জমা করা হয়। এরপর জমা হওয়া বিপুল পরিমাণ পানিকে নির্দিষ্ট চ্যানেলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। এতে জমা হওয়া পানির বিভব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে পাওয়া যায় বিদ্যুৎ। কোনো ধরনের কার্বন নিঃসরণ না করেই পাওয়া যায় পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ।
এই লক্ষ্যেই সব যাচাই বাছাই শেষে কাপ্তাইতে ৬৭০.৬৫ মিটার লম্বা আর ৪৫.৭ মিটার উঁচু বাঁধ দেওয়া হয়। হ্রদটি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই থেকে উত্তর দিকে মারিশ্যা এবং মাইচছড়ি পর্যন্ত প্রায় ৯০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি নির্মাণে মোট খরচ হয় ৪.৯ কোটি রুপি। ১৯৬২ সালের ৩০ মার্চ যখন এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়, তখন এর বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট ছিলো দুটি, প্রতিটির সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা ছিলো চল্লিশ মেগাওয়াট করে। তাই শুরুতে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ ছিলো ৮০ মেগাওয়াট। বর্তমানে এর ৫টি বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট এবং মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ ২৩০ মেগাওয়াট।
যদিও কাপ্তাই হ্রদের কারণে ৫৪ হাজার একর কৃষি জমি ডুবে যায় যা ঐ এলাকার মোট কৃষি জমির ৪০ শতাংশ। কিন্তু এই জলাধারের কারণে সৃষ্ট বিদ্যুৎ,মৎসখাত ও পর্যটন শিল্প এই অঞ্চলে অর্থনীতির গতিপথ বদলে দিয়েছে। রাঙামাটির কাছাকাছি বান্দরবানের পাহাড় এবং কক্সবাজারের সমুদ্র থাকার কারণে যে ধরণের পর্যটন শিল্প গড়ে উঠার কথাটা তা না হলেও, সাম্প্রতিককালে পর্যটন খাতে প্রচুর অবকাঠামো তৌরি হচ্ছে । সব আবহাওয়ায় ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করার মতো যে কয়েকটি স্থান দেশে রয়েছে তার মাঝে কাপ্তাইয়ের পাহাড় ও হ্রদের নৈসর্গিক রূপ অন্যতম ।
Kaptai Lake
Rangamati
4500
Be the first to know and let us send you an email when Kaptai Cruise posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.
Send a message to Kaptai Cruise:
Rangamati Tourist Boat/Launch Service
Reserve BazarRangamati Tourist Boat Service And Tour Guide
Rangamati Sadar