26/05/2022
টাঙ্গাইলে ঘুরে বেড়ানো
টান শব্দের অর্থ হলো উচু আর আইল হলো জমির আইল বা সীমানা।
এই দুটো শব্দ মিলে টাঙ্গাইল শব্দের উৎপত্তি। কিন্তু ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত
ব্রিটিশ মানচিত্রে এ সম্পূর্ণ অঞ্চলকেই আটিয়া বা আতিয়া বলে দেখানো হয়েছে।
১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে মহকুমা সদর দপ্তর আটিয়া থেকে টাঙ্গাইলে স্থানান্তর করা হলো
এই নামটি পরিচিতি লাভ করে। টাঙ্গাইলে বিছ্চিন্নভাবে ঐতিহাসিক
বিভিন্ন স্থান রয়েছে। যেগুলোতে ঘুরে মানুষ তাদের ভাবুক বিনোদন
এমনকি বাংলা ইতিহাস ঐতিহ্যকে অনুসন্ধান করতে পারবে। এ মাটিতে
শায়িত আছেন হযরত শাহান শাহ বাবা আহমদ কাশমিরী (রা.)। এই জেলার
সন্তান মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। টাঙ্গাইলের তাঁতের
শাড়ী ও পোড়াবাড়ীর চমচমের কথা কে না জানে।
টাঙ্গাইলের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো আতিয়া মসজিদ,
মধুপুর জাতীয় উদ্যান, যমুনা সেতু, আদম কাশ্মিরী-এর মাজার, সাগরদীঘি,
গুপ্তবৃন্ধাবন, পাকুটিয়া আশ্রম, মহেড়া জমিদারবাড়ি/পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার,
মাওলানা ভাসানীর মাজার, পাকুল্লা মসজিদ, নাগরপুর জমিদারবাড়ি, উপেন্দ্র
সরোবর, গয়হাটার মঠ, পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি, পীরগাছা রাবারবাগান,
ভূঞাপুরের নীলকুঠি, শিয়ালকোল বন্দর, ধনবাড়ী মসজিদ , বাসুলিয়া, রায়বাড়ী,
এলেঙ্গা রিসোর্ট ও ঐতিহ্যবাহী পোড়াবাড়ি।
ঐতিহাসিক আতিয়া জামে মসজিদ
মুঘল আমলের তৈরি আতিয়া জামে মসজিদ। টাঙ্গাইল শহর থেকে প্রায় আট
কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দূরত্বে লৌহজং নামক নদীর তীরবর্তী । পূর্ব- পশ্চিমে
এই মসজিদের আয়তন দৈর্ঘ্য ৬৯ ফুট এবং প্রস্থ ৪০ ফুট। মিনারগুলো অলঙ্কৃত ও
গম্বুজের আকৃতি সম্পন্ন। প্রবেশ পথের উপরাংশ প্রায় গোল গম্ভুজের আর
দরজাগুলো কাঠের তৈরী। মসজিদের প্রবেশ পথের কাছে অলঙ্করণযুক্ত একটি
শিলালিপি রয়েছে। লিপির তথ্য অনুযায়ী ১০১৮ হিজরি তথা ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দে
বায়েজিদ খান পন্নীর পুত্র সাঈদ খান পন্নী পীর আলী শাহান শাহ বাবা কাশ্মীরির
সম্মানে এই মসজিদ নির্মাণ করেন এবং ১৬০৯ খ্রি. এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
বাবা কাশ্মিরীর মৃত্যু ১৬১৩ সাল। ১৫৯৮ সালে জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে আলী
শাহান শাহ্ বাবা আদম কাশ্মিরীকে আতিয়া পরগণা দান করা হয়। আতিয়া শব্দের
অর্থও দান। বাবা কাশ্মিরী তিনি নিজের ব্যয়ের জন্য রাজকোষ থেকে সামান্য
কিছু অর্থ গ্রহণ করে অবশিষ্ট অর্থ জনকল্যাণে দান করতেন। তাঁর আমলে উৎকৃষ্ট
শ্রেণীর কাগজ তৈরি হতো আতিয়াতে। এখানেই তার মাঝার রয়েছে।
পরীর দালান:
হেমনগরের জমিদার হেম চন্দ্র চৌধুরীর পিতা কালিবাবু চৌধুরী সূর্যাস্ত আইনের
আওতায় শিমুলিয়া পরগণার জমিদারি কিনে নেন। কালিবাবু চৌধুরির বড় ছেলে
হেম চন্দ্র চৌধুরি জমিদারি দেখা-শোনার দায়িত্ব পান। তিনি গোপালপুর
উপজেলার সুবর্ণখালী নামক গ্রামে দ্বিতীয় বাড়ী নির্মাণ করে জমিদারী প্রাসাদ
বানান। প্রমত্তা নদী যমুনার ভাঙ্গনে সুবর্ণখালি গ্রাম বিলীন হতে থাকলে তিনি
শিমলা পাড়া গ্রামে ১৮৮০ থেকে ৯০ সালের দিকে রাজপ্রাসাদ তৈরি করেন।
এটি স্থানীয় জনগণের কাছে পরীর দালান হিসেবে খ্যাত।ভবনের চূড়ায় দু’টি
রাজসিক পরীর অলঙ্করণ রয়েছে। হয়তো এ কারণেই নাম হয়েছে পরীর দালান।
প্রাচীর ঘেরা ভবনের শানবাঁধানো ঘাটসহ পুকুর, দু’টি খোলা মাঠ এবং দশটি
পাসা কুয়া আছে। এই ভবনের ভেতর বিভিন্ন সাইজের ২৫টি কক্ষ আছে।
দোতালা এ আবাসিক ভবন সামনের দিক থেকে দেখতে তিনটি অংশে বিভক্ত। এই
পরীর দালানের অনতিদূরে আরো রয়েছে ৭টি সুরম্য ভবন ।
সাগরদীঘি ও বইন্যা দিঘী:
বাংলাদেশের টাংগাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কি.মি. পূর্বে
সাগরদীঘি রয়েছে। এখানে ১২.৮০ একর জমির উপর দীঘিটি খনন করেন
স্থানীয় পাল বংশীয় সাগর রাজা। এই দিঘির পশ্চিমপাড়ে শান বাঁধানো ঘাটলার
ধ্বংসাবশেষ এখনও লক্ষ করা যায় যা সাগর রাজার বাসস্থান বলে ধারণা করা
হয়। এখানকার পূর্ব নাম ছিলো লোহানী। সাগরদীঘি থেকে সামান্য দক্ষিণে এর
চেয়েও প্রকান্ড এক দীঘি আছে যার আয়তন হবে ২৫ একর জার নাম বইন্যদীঘি ।
সাগর রাজার পুত্র বনরাজ পাল এটি খনন করেছিলেন।
গুপ্ত বিন্দাবন
ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে ৩০ কিমি পূর্বে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া
উপজেলার সীমানা বরাবর গুপ্তবৃন্দাবন গ্রাম। প্রতিবছর চৈত্র মাসের ১২ তারিখ
এখানে একটি কালো তমাল গাছকে কেন্দ্র করে বারুনি মেলায় গ্রামজুড়ে বসে
জমজমাট আসর। সে মোতাবেক ইংরেজী তারিখ পড়ে ২৬। এতো
আশপাশে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভক্ত ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটে । এই তমাল
গাছটিকে নিয়ে যেমন নানা কল্পকথা প্রচলিত আছে তেমনি এটিরে বয়স
নিয়ে রয়েছে নানা মত। কারো মতে ৩শ কারো মতে ৭শ বছর এটির
বয়স। এ গাছের উত্তর পাশে অবস্থিত রাধাগোবিন্দ মন্দির।
জনশ্রুতি আছে, শ্রীকৃষ্ণ রাধাকে নিয়ে এই তমাল গাছের ডালে অভিসারে মিলিত
হতেন। এখানে কাছাকাছি থাকার ব্যবস্থা না থাকলেও সাগরদীঘিতে
এলজিইডির একটি রেস্ট হাউজ আছে।
পাকুল্লা মসজিদ
টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার থানার পাকুল্লায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের এক পাশে
মির্জাপুরের উত্তরে পাকুল্লা বাজারের পশ্চিমে মসজিদটির অবস্থান।
আয়তাকৃতির পাকুল্লা মসজিদটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট। বাইরে থেকে মসজিদটির
পরিমাপ ১৪.৭৭ মিটার × ৫.৮৫ মিটার। এর দেয়াল ১.২৫ মিটার প্রশস্ত। কোনো
শিলালিপি না পেলেও নির্মাণ শৈলী অনুযায় বলা যায় এটা মুঘল আমলের
কৃতি। পাকুল্লা মসজিদের অভ্যন্তরভাগ আড়াআড়ি খাঁজ খিলান দ্বারা ৩ ভাগে
বিভক্ত, ভাগগুলো সমান নয়। পশ্চিম দেয়ালের মূল ম্বির ছাড়াও দুটি
প্রতিরুপ রয়েছে দুপাশে। আছে।
মসজিদের সম্মুখে তিনটি প্রবেশ পথ আয়তাকৃতির প্যানেলের মধ্যে স্থাপিত এবং
উপরে তিনটি গম্বুজ। চারকোণে চারটি অষ্টভুজাকৃতির পার্শ্ব বুরুজ ছাদের উপর
পর্যন্ত উঠে গেছে। মসজিদের উভয় দিকে একটি করে দোচালা কুড়ে ঘরের মতো
ইট ও পলেস্তরায় নির্মিত কক্ষ রয়েছে। দুটি কক্ষেই মসজিদের অভ্যন্তর ভাগ থেকে
ঢোকার দরজা রয়েছে। পূর্ব দিক থেকেও কক্ষ দুটিতে প্রবেশপথ আছে।
উপেন্দ্র সরোবর
জেলার নাগরপুরে এই জলাশয় অবস্থিত্। প্রজাদের জল কষ্ট মোচনের লক্ষ্যে
জমিদার রায় বাহাদুর ১৩৬৮ সালে বিহার থেকে বিশেষজ্ঞ এনে মোট ১১ একর
জায়গায় সুদৃশ্য এই দিঘি খনন করেন। জনগনের সুবিধার্থে দিঘির চারদিকে
সুপ্রসস্ত ১২টি ঘাটলা এবং এখানে সারা বছর স্বচ্ছ পানি নিশ্চিত করার জন্যে ৬টি
সুগভীর ইন্দারা (কুয়া) খনন করা হয়। এছাড়া নৈসর্গিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যে
দিঘির চারপাশে লাগানো হয় খেজুর গাছ। টাংগাইল শহর হতে সিএনজি যোগে
নাগরপুর উপেন্দ্র সরোবরে যাওয়া যায়।
মধূপুর জাতীয় উদ্যান
মধুপুর বনে সবুজে ঘেরা বাংলার এক অনন্য রুপ। চীরশ্যামলিমাময়
অরণ্যের প্রাকৃতিক দৃশ্য ও পরিবেশ নৈসর্গিক এক আবহ তৈরী করে রাখে।
ইট বিছানা রাস্তায় জনসাধারণ চলাচলে ব্যবস্থা করা হয়েছে। পথের
দুপাশে সবুজ বনের ছায়া আর বনজুঢ়ো পাখির কুজন। যেকোনো
মানুষের ভাবুক মনকে জাগিয়ে তুলবে।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের আয়তন ২০,৮৪০ একর। এ বনের গাছের মধ্যে
রয়েছে, শাল, বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বথ, বট সর্পগন্ধা,
শতমূলী, জয়না, বিধা, আজুকি/ হারগাজা, বেহুলা ইত্যাদি। আছে বিভিন্ন
প্রজাতির পাহাড়ী আলু, শটি; আছে নাম না জানা বিচিত্র ধরণের লতা-গুল্ম।
দর্শনীয় প্রাণীদের মধ্যে আছে অসংখ্য বানর, হনুমান, আছে নানান জাতের পাখ-
পাখালি, হরিণ, বন বিড়াল, বনমোরগ, বাগডাসা ইত্যাদি। বনের ঠিক মাঝখানে
আছে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র।
প্রধান ফটকের পাশেই মধুপুর জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ অফিস, এখান থেকে
অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়। তাছাড়া আরও একটু সামনে ২৫ মাইল নামক
স্থানে গিয়ে ডানদিকে প্রায় ১০ কিঃ মিঃ গেলে দোখলা রেঞ্জ অফিস এবং দোখলা
রেস্ট হাউজ-এর অবস্থান। জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ময়মনসিংহ বন বিভাগের
রসুলপুর রেঞ্জ কার্যালয় অবস্থিত। এখানে আছে জলই রেস্ট হাউজ ও মহুয়া
কটেজ।
ধনবাড়ি মসজিদ
এক সময় ধনপতি সিংহ নামে এক জমিদারের নামে এর নাম ধনবাড়ি । মুঘল
সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলের মুঘল সেনাপতি ইস্কান্দার খান ও তার ভাই মনোয়ার
খান এ স্হানের জমিদার ছিলেন। তাদের নির্মিত মসজিদটি ছাড়াও এই দুই
ভাইয়ের কবর দেখতে পাবেন ধনবাড়িতে। নওয়াববাড়িও দেখবেন এই
ধনবাড়ি নওয়াব বাড়ির দৃষ্টিন্দন স্হাপত্যগুলোর মধ্যে রয়েছে নওয়াব মঞ্জিল,
নওয়াব প্যালেস, নওয়াব শাহ মসজিদ, অন্দর মহল, বিশাল দীঘি, মিউজিয়াম,
নানা রকম ফুলের বাগান। নওয়াব মঞ্জিলটি ছিল নওয়াব সাহেবের প্রাচীন আবাস
কক্ষ। কারুকার্য খচিত এই ভবনটির ভিতরে নবাবী আমলের আসবাবপত্র
রয়েছে।
ঢাকার মহাখালী থেকে বিনিময় পরিবহনে সরাসরি ধনবাড়ি যাওয়া যায়।
কদিম হামজানি মসজিদ
বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলায় কদিম হামজানি নামক গ্রামে
অবস্থিত। এই মসজিদের পাশেই রয়েছে আওয়ামী মুসলিম লীগ এর প্রতিষ্ঠাতা
শামসুল হক এর সমাধি।
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাঝার
মাওলানা ভাষানী (১২ ডিসেম্বর ১৮৮০ - ১৭ নভেম্বর ১৯৭৬) ছিলেন
বিংশশতকে ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের
নায়ক, তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে “মজলুম জননেতা” হিসাবে সমধিক
পরিচিত। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে
অন্যতম।
পোড়াবাড়ী ও চমচম
পোড়াবাড়ি হলো ছোট্ট একটি গ্রামের নাম। টাঙ্গাইল শহর থেকে প্রায় ৬
কিলোমিটার দূরের পথ। ছোট্ট শান্ত এই গ্রামকে ঘিরেই চমচমের সৃষ্টি।
মিষ্টির রাজা বলে খ্যাত পোড়াবাড়ির চমচমের স্বাদ আর স্বাতন্ত্রের ও এর জুড়ি
মেলাভার। এই সুস্বাদু ও লোভনীয় চমচম মিষ্টি টাঙ্গাইলের অন্যতম একটি
ঐতিহ্য। মূলত বৃটিশ আমল থেকে অবিভক্ত ভারতবর্ষসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
পোড়াবাড়ির চমচম টাঙ্গাইলকে ব্যাপক পরিচিতি করেছে। মিষ্টি জগতে
অপ্রতিদ্বন্দ্বী চমচমের বৈশিষ্ট্যে অতি চমত্কার। কারণ এর ভিতরের অংশ থাকে
রসালো ও নরম। লালচে পোড়া ইটের রংয়ের এই সুস্বাদু চমচমের উপরিভাগে
চিনির গুড়ো কোষ থাকে কড়া মিষ্টিতে কানায় কানায় ভরা।
যারা চমচম এবং তৈরীর সঙ্গে জড়িত তাদেরকেই হালই বলা হয়। হালই ছাড়াও
এই গ্রামের ঘোষ আর পাল বংশের লোকেরা বংশানুক্রমে মিষ্টি তৈরীর সঙ্গে
জড়িয়ে আছেন যুগ যুগ ধরে। পোড়াবাড়ি বাজার থেকে একটু পশ্চিমেই ধলেশ্বরী
নদী।
বাসাইলের চাপড়া বিল বা বাসুলিয়া
বাসাইল উপজেলার মধ্যে অন্যতম সুন্দর একটি স্থান বাসুলিয়া। দিগন্ত বিস্তৃত ধান
ক্ষেত, চির সবুজের সমারোহ, বর্ষার জলরাশি, চাপড়া বিলের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের
অন্যতম উপাদান। বাসাইল বাজার থেকে নলুয়া সড়ক ধরে মাত্র দুই কিলোমিটার
পরে চাপড়া বিল্। বর্ষায় যখন প্লাবিত হয় চাপড়া বিলের উভয় দিক, তখন
অপূর্ব রূপ ধারণ করে । বর্ষাকলে উৎসাহী ও উদ্যোগী ব্যক্তিগণ সুদৃশ্য দেশী
নৌকা এবং ইঞ্জিন বোট নিয়ে হাজির হন বাসুলিয়ায়। মূল সড়ক থেকে সামান্য
দূরে দেখা যায় পৌরাণিক কাহিনী সমৃদ্ধ চাপড়া বিলের হিজল গাছ। ভরা বর্ষায়
পূর্ণিমা রাতের জল-জোছনায় উদ্ভাসিত চাপড়া বিলের মায়াময়ী, মোহময়ী
হাতছানি উপেক্ষা করা কঠিন।
এলেঙ্গা রিসোর্ট:
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গা এলাকায় ২০০৮ সালে এলেঙ্গা
রিসোর্ট যাত্রা শুরু করে। এই রিসোর্টের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী। এলেঙ্গা
রিসোর্ট ব্যক্তি উদ্যোগে ১৫৬.৬৫ হেক্টর জায়গার উপর এর অবস্থান।
এখানে রয়েছে রেস্তোরাঁসহ পাঁচটি ভিআইপি এসি স্যুট , আছে ১০টি এসি ডিলাক্স
স্যুট, ১৬টি নন এসি কক্ষ, পাঁচটি পিকনিক স্পট, সভাকক্ষ, ছোট যাদুঘর ও
প্রশিক্ষণ কক্ষ। খেলাধুলার জন্য রয়েছে ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস, ক্যারাম, টেবিল
টেনিস, ব্যাডমিন্টন কোট। ছোটদের বিনোদনের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে কিডস
রুম। আছে ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা ও হেলথ ক্লাব। বিভিন্ন ধরনের দেশি খাবারের
পাশাপাশি রয়েছে চীনা, ভারতীয় ও কন্টিনেন্টাল খাবার। নৌ ভ্রমণের জন্য রয়েছে
ট্রলার, দেশিনৌকা ও স্পিডবোড। এছাড়া রিসোর্টের নিজস্ব গাড়িতে বেড়ানো যায়
করটিয়া জমিদারবাড়ি, মধুপুরের গড় আর ধনবাড়ির জমিদারবাড়ি।
________________________________________