24/10/2022
SAN H-100
১৯৩৯ সাল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু আগে থেকেই পোল্যান্ড অটোমোটিভ শিল্পে সমৃদ্ধ, কিন্তু যুদ্ধের দামামা বাজার সাথে সাথে তা থমকে যায়....
প্রতিটি গাড়ি কারখানাই তাদের স্বাভাবিক গাড়ি তৈরীর কার্যক্রম বন্ধ করে পরিণত হয় যুদ্ধের সরঞ্জাম যোগানদাতা হিসেবে, বিশেষত সামরিক যান তৈরী হয় প্রধান কাজ...
১৯৪৫ সালে শেষ হয় বিশ্বের ইতিহাসে বিভৎসতম সেই যুদ্ধের, পোল্যান্ডের সীমানা পাল্টে যায়...পোল্যান্ডে সোভিয়েত ইউনিয়ানের প্রভাব পাকাপোক্ত হয়, কমিউনিস্ট সরকার গঠিত হয়...
যুদ্ধবিধ্বস্ত পোল্যান্ডের তখন গাড়ি দরকার, প্রচুর গাড়ি দরকার...
ক্যাপিটালিস্ট দেশগুলো থেকে গাড়ি আমদানি নিরুৎসাহিত করতে আরোপ করা হয় বিশালমাত্রার কর, ফলে নিজেদের গাড়ি নিজেদেরই তৈরী করা বাদে পোল্যান্ডের হাতে কোন দ্বিতীয় পথ ছিলো না
নতুন গাড়ি তৈরী করতে প্রয়োজন নতুন নক্সা, নতুন পার্টস...যার জন্য প্রয়োজন প্রচুর অর্থ ও সময়, যা সরকারের হাতে ছিলো না...তাই যুদ্ধে ব্যাবহৃত যন্ত্রাংশ ব্যাবহার করেই গাড়ি তৈরীর চেষ্টা করা হয়.,
এমন প্রেক্ষাপট থেকে ১৯৪৮ সালে প্রথম মডেল S-20 নিয়ে জন্ম হয় STAR TRUCKS এর, মূলত মিলিটারি গ্রেড গারি তৈরী করলেও তাদের ট্রাক বেসামরিক কাজেও ব্যাবহৃত হতো...
প্রসঙ্গত, এই STAR TRUCKS নামের সাথে ইংরেজি শব্দ STAR এর কোন সম্পর্ক হয়,মধ্য পোল্যান্ডে যে শহরটিতে কারখানা ছিলো তাদের, তার প্রথম পাঁচটি অক্ষর থেকে STAR নামটি এসেছে,পোলিশরা STARA বলে ডাকে...
বিশাল যাত্রী পরিবহনের চাহিদা পূরণে জন্ম নেয় AUTOBUS নামে একটি সংস্থার, যাদের প্রথম কারখানা ছিলো পোল্যান্ডের দক্ষিণে Sana নদীর তীরে, Sanoka শহরে, সেখান থেকে তাদের SAN ব্রান্ডের নামটি আসে...
১৯৫১ সালে তারা তাদের প্রথম বাসটি নিয়ে কাজ শুরু করে...নিজস্ব ইঞ্জিন ও ট্রান্সমিশন তৈরীর ব্যাবস্থা না থাকায় তারা STAR TRUCKS থেকেই ইঞ্জিন-ট্রান্সমিশনসহ বহু যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা শুরু করে....
তখন STAR TRUCKS এরও সবচেয়ে শক্তিশালী ইঞ্জিন ছিলো S-42,কিন্তু সেটারও পাওয়ার আউটপুট ছিলো মাত্র ৮৫ হর্সপাওয়ার!
এদিকে তাদের লক্ষ্য ছিলে ৪৩ আসনের একটি বাস তৈরী, সেই অল্প ক্ষমতার S-42 ইঞ্জিন ব্যাবহার করেই...যে সমাধান তারা বের করে,তাকে আজকের যুগে "মনোকক শ্যাসি" বলা হয়...
এরকম বাসে আমাদের পরিচিত শক্তপোক্ত চেসিস ফ্রেম থাকে না,বরং বডিফ্রেমই বডির ওজন ত ধরে রাখেই...তারসাথে ইঞ্জিন ট্রান্সমিশন, সাসপেনশান, এক্সেলসহ প্রতিটি পার্টসই বডির সাথেই সংযুক্ত হয় চেসিস ফ্রেমের বদলে...
এরকম "Self-Supporting Body" এর জন্য তাদের বাসের ওজন নেমে আসে মাত্র ৪,৭৭০ কেজিতে...
১৯৫৫ সালে প্রটোটাইপ তৈরীর পর ১৯৫৭ সালের অক্টোবরে প্রথম মডেলের প্রোডাকশন বাস বের হয়, যার মডেল নেম হয় H-01
এর দুটো ভার্সন ছিলো,H-01A ও H-01B
H-01A ছিলো ৪৩ আসনের,যার আটটি আসন ছিলো করিডোরে ফোল্ডিং সিট হিসেবে...এটি ইন্টারসিটি এপ্লিকেশনের জন্য বাজারে আসে..
H-01B ছিলো ৩৩ আসনের,কিন্তু এর আসল যাত্রীধারণ ক্ষমতা ছিলো ৫০...ওঠা-নামার সুবিধার্থে ২টি ২পার্টের নিউমেটিক কলাপ্সিবল গেইট ব্যাবহার হয়েছিলো, আর্বান এপ্লিকেশন বা সিটিকোচ হিসেবে ব্যাবহারের জন্য এটি তৈরী হয়...
সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপারটা ছিলো গিয়ারবক্স পজিশনটা...যেহেতু বডি ছিলো সেল্ফ সাপোর্টিং মনোকক শ্যাসির...তাই ওজনের সুষম বন্টনটা নক্সার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো...
তাই STAR S-21 থেকে নেওয় H-01 এর ৫ স্পিড ম্যানুয়াল গিয়াবক্সটিকে ইঞ্জিনের সাথে সামনে স্থাপনের পরিবর্তে দুচাকার মাঝ বরাবর স্থাপন করা হয়,এবং ইঞ্জিনের সাথে থাকা ক্লাচড্রাইভ থেকে মোশন গিয়ারবক্সে ট্রান্সফার করার জন্য একটি প্রপেলার শ্যাফট যোগ করা হয় ইঞ্জিন ও গিয়ারবক্সের মাঝে,দ্বিতীয় প্রপেলার শ্যাফট রয়ে যায় গিয়ারবক্স ও পেছনের এক্সেলের ডিফারেন্সিয়ালের মাঝে...
১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ পর্যন্ত সর্বমোট ৪,৪৪৯ ইউনিট H-01 তৈরী হয় (A ও B মিলিয়ে)
১৯৬১ সালে আসে SAN এর দ্বিতীয় মডেল H-25A
H-01 কে সহজে চেনা যেত সামনে এর ৩ পার্ট উইন্ডশিল্ডের জন্য...
কিন্তু এর পরের মডেলে SAN ৩ পার্ট উইন্ড শিল্ডের বদলে সিঙ্গেল পার্ট উইন্ডশিল্ড ব্যাবহার করে সামনে...মাঝে একটি রিএনফোর্সমেন্ট বার সহ...মডেলটির নাম দেয় তারা S-25
নতুন মডেলটিতে STAR TRUCKS এর ৯৫ হর্সপাওয়ার এর S-247 ডিজেল ইঞ্জিন ব্যাবহৃত হয়....
বডিও আরেকটু শক্তপোক্ত করার চেষ্টা করা হয়
১৯৬২ সালে H-25 এর আর্বান ভার্সন H-25B আসে,১৯৬৪ সালে H-25 বিলুপ্ত হয়ে আসে H-27 যাতে S-53 SI ইঞ্জিন ব্যাবহৃত হয়,সহজভাষায় পেট্রোল ইঞ্জিন...
এটি খুব একটা সফলতা পায় নি, SI ইঞ্জিন মোটেও ডিজেল ইঞ্জিনের মতো রাফ এন্ড টাফ ছিলো না তখন...একটা বাসের জন্য যেটা খুব দরকারী...
তবে গুরুত্বপূর্ন পরিবর্তন আসে জানালায়..
পোল্যান্ড শীতপ্রধান দেশ হওয়ায় ওখানকার বাসগুলোর জানালা দেখতে আমাদের দেশের বাসের চেয়ে অনেকটা আলাদা....
শীতপ্রধান দেশগুলোর বাসের জানালার নিচের দিকের বেশিরভাগটা খোলা যায় না...শুধু ওপরের দিকে একটু অংশ খোলা যায়...
H-01 ও H-25 এ এই ছোট অংশটুকু কব্জা দিয়ে উপরের দিকে খোলা যেত, H-27 এ কব্জার বদলে স্লাইডিং জানালা ব্যাবহৃত হয় ঐ ছোট অংশের জন্য...
H-01, H-25 এর মতোই H-27 এরও ইন্টারকোচ ভার্সন A এবং আর্বান ভার্সন B এভেইলেবল ছিলো...
তিনটি মডেলেই ছিলো Self Supporting Body, ফলে তিনটি মডেলেরই একটি সাধারণ সমস্যা ছিলো...বডির লো-ডিউরেবিলিটি...
বাসগুলো সময়ের থেকে একটু বেশিই এগিয়ে ছিলো, সেল্ফ সাপোর্টিং বডির জন্য বডি স্ট্রাকচার এ বাড়তি চাপ এসে পড়তো...
যখন মেটালের উপর চাপ বাড়ে তখন একরকম করোসান বা ধাতুক্ষয় দেখা দেয়, যাকে বলা হয় "স্ট্রেস করোসান"
SAN এর তিনটি মডেলই স্ট্রেস করোসানে ভুগছিলো...তখনো এই করোসানরোধী অধিক শক্তিশালী স্টিল পোল্যান্ডে আসেনি..
অচিরেই SAN বুঝতে পারে তাদের রিভিশন করা দরকার...তারা পরবর্তীতে বাড়তি ফ্রেম তৈরী করে স্ট্রাকচারের উপর চাপ কমাতে, কিন্তু তা কাজ করছিলো না...
SAN অবশেষে বুঝতে পারে তাদের এই সেল্ফ সাপোর্টিং বডি কনসেপ্ট থেকে বের হয়ে আসতেই হবে...তাদের নতুন করে শুরু করতে হবে,গোড়া থেকে ভাবতে হবে।
SAN তখন বুঝতে পারলো মনোকক শ্যাসি তথা সেল্ফ সাপোর্টিং বডি নিয়ে টিকে থাকা ক্রমশ মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। .অপরপক্ষে প্রতিপক্ষ JELCZ তাদের Ogorek' (Cucumber) Bus নিয়ে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ভালো ডিউরেবিলিটির জন্য…
SAN ও তাই কনভেনশনাল ফ্রেম চ্যাসিসে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিলো, বিলুপ্ত হলো H-01, H-25 ও H-27...নতুন মডেলের নাম হলো H-100, ১৯৬৬ সালে প্রথম ইন্টারসিটি ভার্সন H-100A আসে...১৯৬৭ সালের জুলাই থেকে শুরু হয় ম্যাস প্রোডাকশান...পরে আর্বান ভার্সন H-100B ও আসে...
SAN এর শুরুর দিকে সেল্ফ সাপোর্টিং বডিতে যেতে বাধ্য হতে হয়েছিলো সেসময়ে সুলভ S-42 ইঞ্জিনের লো-আউটপুটে (৮৫ হর্সপাওয়ার) অধিক যাত্রীধারণ ক্ষমতার বাস তৈরীর উদ্দেশ্যে...কিন্তু ১৯৬৬ সালের মাঝে SAN এর হাতে অপেক্ষাকৃত উচ্চ পাওয়ার আউটপুটের S-530 ডিজেল ইঞ্জিন ও S-247 গ্যাসোলিন ইঞ্জিন চলে এসেছিলো...
S-530 ডিজেল ইঞ্জিন ছিলো 6,231 সিসির স্ট্রেইট সিক্স সিলিন্ডার ন্যাচারালি এস্পিরেটেড কম্বাশ্চন ইগনিশন ইঞ্জিন যার পাওয়ার আউটপুট ছিলো 73.6 কিলোওয়াট, 100 হর্সপাওয়ার এর একটু কম...
S-247 সেল্ফ ইগনিশন ইঞ্জিন ছিলো অপেক্ষাকৃত ছোট সাইজের 4,678 সিসির স্ট্রেইট সিক্স ন্যাচারালি এস্পিরেটেড ইঞ্জিন, পাওয়ার আউটপুট ছিলো 77.3 কিলোওয়াট, 105 হর্সপাওয়ার এর মতো প্রায়...
পেট্রোল ইঞ্জিনের ইন্টারসিটি ও আর্বান ভার্সন কে যথাক্রমে H-100.1 A ও H-100.1 B মডেলে ইন্ডিকেট করা হতো...
ট্রান্সমিশনে ছিলো ৫ স্পিডের গিয়ারবক্স যা এসেছিলো STAR TRUCKS S-28 থেকে...চতুর্থ গিয়ার ছিলো স্ট্রেইট-ড্রাইভ ১.০০:১ রেশিও,পঞ্চম গিয়ার ছিলো ওভারড্রাইভ...H-01, H-25 ও H-27 এর মতোই H-100 এরও গিয়ারবক্স ছিলো বাসের মাঝের দিকে...ইঞ্জিন সামনের দিকে থাকা সত্ত্বেও....
ব্রেকিং এ ছিলো নিউমেটিক এসিসটেড হাইড্রোলিক ব্রেকিং সিস্টেম,৪০০ মিলিমিটার ডায়ার ব্রেকড্রাম ছিলো প্রতিটি চাকাতেই...অক্সিলিয়ারি ব্রেক হিসেবে ছিলো মেকানিক্যাল বেল্ট ব্রেক যা মিড-পজিশনড গিয়ারবক্সের সাথে ছিলো....
ইঞ্জিনের সাথে ফ্লাইহুইলে ছিলো সিঙ্গেলপ্লেট ড্রাই ক্লাচ, তারপর প্রথম প্রপেলার শ্যাফট, তারপর গিয়ারবক্স, তারপর অক্সিলারি মেকানিক্যাল বেল্ট ব্রেক, তারপর সেকেন্ড প্রপেলার শ্যাফট...শেষে ডিফারেন্সিয়াল...
সাসপেনশানে ছিলো প্যারাবলিক লিফ স্প্রিং সাসপেনশান, দুটি এক্সেলেই...প্রথম এক্সেলে ছিলো টেলিস্কোপিক শক এবজর্বার, কিন্তু রিয়ার এক্সেলে ছিলো আরেক সস্তা ধরণের রাবার স্প্রিং শক এবজর্বার, রিভেটেড চেসিস ফ্রেম আসে Magrius 2 CV 110 নামের এক বাস থেকে...
বডিওয়ার্কে প্রথম যে জিনিসটি লক্ষ্যণীয় তা হলো প্রতিপক্ষ JELCZ এর Ogorek' (Cucumber Bus) এর মতো এন্টিকরোসিভ প্রাইমার লেয়ারের বদলে শুধু এক লেয়ার আলকাতরা ছিলো...আবারো সস্তা কিন্তু টেকসই প্রযুক্তির ব্যাবহার লক্ষণীয়...
যদিও বডি বিল্ডিং এর ফান্ডামেন্টাল লেভেলে H-100 এর সাথে H-01, H-25 ও H-27 এর অমিল ছিলো রিভেটেড ফ্রেমের জন্য...কিন্তু H-100 এ অনেক এলিমেন্ট ক্যারি করা হয়েছে পূর্বতন বাসগুলো থেকে...
যেমন : H-01 এর মিডল গিয়ারবক্স পজিশন, H-25 এর সিঙ্গেল পার্ট সিঙেল বার রিএনফোর্স ফ্রন্ট উইন্ডশিল্ড...H-27 এর সিঙ্গেল পার্ট সিঙ্গেল বার রিএনফোর্সড রিয়ার উইন্ডশিল্ড,স্লাইড ওপেনিংসহ উইন্টার উইন্ডো,ছাদে সামনে ও পেছনে দুটো গ্লাস লাগানো ভেন্টিলেশন ওপেনিং ছিলো, এছাড়া আরো কিছু এলিমেন্ট ছিলো আউটসোর্সড করা...
হেডলাইট, বডির সাইডে লাগানো ইন্ডিকেটর,স্টিয়ারিং এসেছিলো STAR TRUCKS S-25 থেকে, গজ ক্লাস্টারের মিটারগুলো, ফ্রন্ট ইন্ডিকেটর ও ব্যাক লাইট মডিউল এসেছিলো Warszawa 203/204/223/224 সিরিজের Car এ ব্যাবহৃত কম্পোনেন্ট থেকে(Warazawa হলো পোল্যান্ডের রাজধানী)...
এই কম্পোনেন্ট আউটসোর্সিং এবং লোকস্ট কিন্তু ডিউরেবল ইঞ্জিনিয়ারিং ছিলো কমিউনিজম যুগের অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রির বড় একটা ট্রেন্ড, SAN H-100A তে যাত্রী ধারনক্ষমতা ছিলো ৩৩টি(চাইলে ৪১ সিটেরও অপশন ছিলো যদি ফোল্ডিং সিট নেওয়া হতো)... H-100B তে সর্বমোট যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৬২ হলেও সিট ছিলো ২১ টি(১৯টি যাত্রীর জন্য,২টি সার্ভিস স্টাফদের জন্য)...দুটো দরজাই ছিলো টুপার্ট নিউমেটিক...H-100A এর মতো সিঙ্গেল পার্ট ম্যানুয়াল না...
H-100A তে বাসের পেছনে ও ডান সাইডে ছিলো সর্বমোট ৩টি ল্যাগেজ বক্স, ছাদে ছিলো ১২০ কেজি ধারণক্ষমতার ক্যারিয়ার, ভেতরে ছিলো বাংকার...এই তিনটি ফিচার H-100B তে ছিলো অনুপস্থিত, দুটো বাসেই যেটা কম ছিলো তা হলে বাম পাশে, তথা ড্রাইভার এর সাইডে তৃতীয় ও চতুর্থ জানালা বরাবর যথাক্রমে ব্যাটারী বক্স ও হিটার এর জন্য জেনারেটর বক্স,যাকে পোলিশ ভাষায় বলে Webasto...জেনারেটরটিও ছিলো ডিজেল চালিত...
দুটো বাসেরই ওভারঅল লেন্থ ছিলো ৮৭৭০মিলিমিটার(৯ মিটারের কিছু কম,৩০ ফিটের মতো)...হুইলবেস ছিলো ৪৫৩০ মিলিমিটার, H-100A এর উচ্চতা ছিলো ৩০৫০ মিলিমিটার, ওজন ছিলো ৬০০০ কেজি(Gross Vehicle Weight-GVW), কিন্তু বাংকার না থাকার কারণে H-100B এর উচ্চতা ছিলো ২৮৮০ মিলিমিটার এবং ওজন ছিলো ৫৭০০ কেজি...
১৯৬৭ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত সর্বমোট ২৩,৭৭০ ইউনিট H-100 তৈরী হয়েছিলো যার মাঝে ১৭,৮৯৭ ইউনিটই আর্বান ভার্সন H-100B...যেখানে SAN ব্রান্ডে তৈরী সর্বোমোট বাসই ছিলো ৩২,০০০ এর মতো...নির্দ্বিধায় SAN H-100 ই ছিলো SAN এর সবচেয়ে সফল প্রোডাক্ট, ১৯৭৪ সালে SAN ব্রান্ডটিকে বিলুপ্ত করে AUTOBUS, জন্মনেয় AUTOSUN ব্রান্ড...H-100 বিলুপ্ত হয়ে আসে H-9 এবং ১৯৭৪ সালেই রুয়েটে(তৎকালীন রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ) সেই বিখ্যাত বাসটি আসে পোল্যান্ড সরকারের সৌজন্যতায়,মূলত SAN H-100A ছিলো সেটি...আমরাও ভাগীদার হয়ে যাই ইতিহাসের।
এই বাসটিকে সমালোচকরা কমিউনিস্ট যুগে তৈরী সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন বাস বলে অভিহিত করেন...আমার নিজের মতেও বাসটি খুবই সুন্দর...এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্বও যে কম নয়.
যেকোন মূল্যে আমাদের উচিৎ এই মূল্যবান ও ঐতিহাসিক বাসটিকে সংরক্ষণ করা...শুধু এই বাসটিই নয়, সবরকম ঐতিহাসিক যানবাহন ও স্থাপনা রক্ষার্থে আমাদের সচেতন হতে হবে...নতুবা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শোনানোর মতো কোন গল্প আমাদের কাছে অবশিষ্ট রইবে না।
এই বাসটি রাখা আছে রুয়েটের আর্কিটেকচার বিল্ডিংয়ের সামনে।
আর্টিকেলটি লিখেছিলেনঃ Nazmul Haque ভাই