সেথা ঈদের চাঁদে লেখা
মোহাম্মদের ‘মীম’-এর রেখা,
সুরুযেরই বাতি জ্বেলে’ পড়ে রেজোয়ান।।
খোদার আরশ লুকিয়ে আছে ঐ কোরআনের মাঝে,
খোঁজে ফকির-দরবেশ সেই আরশ সকাল-সাঁঝে।
খোদার দীদার চাস রে, যদি
পড় এ কোরআন নিরবধি;
খোদার নুরের রওশনীতে রাঙ রে দেহ-প্রাণ।।
নাহি সাচ্চাই সিদ্দিকের,
উমরের নাহি সে ত্যাগ আর,
নাহি সে বেলালের ঈমান,
নাহি আলীর জুলফিকর,
নাহি আর সে জেহাদ লাগি বীর শহীদান।।
নাহি আর বাজুতে কুওত্,
নাহি খালেদ মুসা তারেক,
নাহি বাদশাহী তখত্ তাউস
ফকির আজ দুনিয়ার মালেক,
ইসলাম কেতাবে শুধু, মুসলিম গোরস্থান।।
আনো আলীর শৌর্য, হোসেনের ত্যাগ,
ওমরের মতো কর্মানুরাগ,
খালেদের মতো সব অসান্য
ভেঙে করো একাকার।।
ইসলামে নাই ছোট বড় আর
আশরাফ আতরাফ,
এই ভেদ জ্ঞান নিষ্ঠুর হাতে
করো মিসমার সাফ।
চাকর সৃজিতে চাকুরী করিতে
ইসলাম আসে নাই পৃথিবীতে?
মরিবে ক্ষুধায় কেহ নিরন্ন,
কারো ঘরে রবে অঢেল অন্ন-
এ জুলুম সহে নি ক ইসলাম,
সহিবে না আজও আর।।
বিশ্ব তখনও ছিল গো স্বপ্নে, বিশ্বের বনমালী
আপনাতে ছিল আপনি মগন। তখনও বিশ্ব-ডালি
ভরিয়া ওঠেনি শস্যে কুসুমে ; তখনও গগন-থালা
পূর্ণ করেনি চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারকার মালা।
আপন জ্যোতির সুধায় বিভোর আপনি জ্যোতির্ময়
একাকী আছিল – ছিল এ নিখিল শূন্যে শূন্যে লয়।
অপ্রকাশ সে মহিমার মাঝে জাগেনি প্রকাশ-ব্যথা,
ছিল নাকো সুখ দুখ আনন্দে সৃষ্টির আকুলতা।
ছিল না বাগান, ছিল বনমালী! – সহসা জাগিল সাধ,
আপনারে লয়ে খেলিতে বিধির, আপনি সাধিতে বাদ।
অটল মহিমা-গিরি-গুহা-ত্যজি– কে বুঝিবে তাঁর লীলা–
বাহিরিয়া এল সৃষ্টি প্রকাশ নির্ঝর গতিশীলা।
ক্ষিতি-অপ-তেজ-মরুৎ-ব্যোমের সৃজিয়া সে লীলা রাজ,
ভাবিল সৃজিবে পুতুলখেলার মানুষ সৃষ্ট-মাঝ।
চলিতে লাগিল কত ভাঙাগড়া সে মহাশিশুর মনে,
মানুষ হইবে রসিক ভ্রমর, সৃষ্টির ফুলবনে।
আদিম মানব ‘আদমে’ সৃজিয়া এক মুঠা মাটি দিয়া
বলিলেন, ‘যাও, করো খেলা ওই ধরার আঙনে গিয়া!’
সৃজিয়া
নামাজ পড়েছ, পড়েছ কোরান, রোজাও রেখেছ জানি,
হায় তোতাপাখি! শক্তি দিতে কি পেরেছ একটুখানি?
ফল বহিয়াছ, পাওনিকো রস, হায় রে ফলের ঝুড়ি,
লক্ষ বছর ঝরনায় ডুবে রস পায় নাকো নুড়ি!
আল্লা-তত্ত্ব জেনেছ কি, যিনি সর্বশক্তিমান?
শক্তি পেল না জীবনে যে জন, সে নহে মুসলমান!
ইমান! ইমান! বলো রাতদিন, ইমান কি এত সোজা?
ইমানদার হইয়া কি কেহ বহে শয়তানি বোঝা?
শোনো মিথ্যুক! এই দুনিয়ায় পূর্ণ যার ইমান,
শক্তিধর সে টলাইতে পারে ইঙ্গিতে আশমান!
আল্লার নাম লইয়াছ শুধু, বোঝোনিকো আল্লারে।
নিজ যে অন্ধ সে কি অন্যেরে আলোকে লইতে পারে?
নিজে যে স্বাধীন হইল না সে স্বাধীনতা দেবে কাকে?
মধু দেবে সে কি মানুষ, যাহার মধু নাই মৌচাকে?
ধূলির ধরা বেহেশ্তে আজ,
জয় করিলো দিলরে লাজ
আজকে খুশির ঢল নেমেছে,
আজকে খুশির ঢল নেমেছে,
ধূসর সাহারায়..
(শুরু করিলাম) লয়ে নাম আল্লার
করুণা ও দয়া যাঁর অশেষ অপার।
সকলই বিশ্বের স্বামী আল্লার মহিমা,
করুণা কৃপার যাঁর নাই নাই সীমা।
বিচার-দিনের বিভু! কেবল তোমারই
আরাধনা করি আর শক্তি ভিক্ষা করি।
সহজ সরল পথে মোদেরে চালাও,
যাদেরে বিলাও দয়া সে পথ দেখাও।
অভিশপ্ত আর পথভ্রষ্ট যারা, প্রভু,
তাহাদের পথে যেন চালায়ো না কভু।
অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি দরুদ প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ দরুদ ও সালাম পেশ করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমার কাছে অতি উত্তম হবে ওই ব্যক্তি, যে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে। (তিরমিজি)
মহানবী (সা.) আরো বলেন, জমিনে আল্লাহর একদল বিচরণশীল ফেরেশতা রয়েছে, যারা আমার উম্মতের সালাম আমার কাছে পৌঁছিয়ে দেয় (নাসায়ি ও দারেমি)
তিনি আরো বলেন, আমার প্রতি কেউ দরুদ পাঠ করলে আমি তার উত্তর দিই। (আবু দাউদ, বায়হাকি)