17/12/2023
অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য কত টাকার প্রয়োজন?
আমরা এডুকেশন কন্সাল্ট্যান্টরা মোটাদাগে এই কথা শুনে অভ্যস্ত যে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে অনেক টাকা বা ডলার লাগে। আমি আজকে এটা এনালাইসিস করার চেস্টা করবো, ব্যাপারটা আসলে কতটা সত্য বা যুক্তি সঙ্গত।
এখানে একটা ব্যাপার প্রানিধানযোগ্য, যে সমস্ত কন্সাল্ট্যান্ট বা এজেন্টরা অস্ট্রেলিয়ায় সীমিত কাজ করে অভ্যস্ত এটা অনেকটা তাদেরই প্রচারনা। কারন আমরা যদি একই মানের বেশ কিছু দেশের ইউনিভার্সিটি পর্যালোচনা করি, তাহলে এটা দেখা যাবে যে, একি মানের ইউনিভার্সিটি গুলির টিউশন ফি প্রায় একি রকম হয়ে থাকে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানী, নরওয়ের কিছু পাব্লিক ইউনিভার্সিটির টিউশন ফি যথেষ্টই কম বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফ্রী। কিন্তু আপনি যদি একটি ইউনিভার্সিটির সাথে একটি ভোকেশনাল বা এসোসিয়েট ডিগ্রী প্রভাইডারকে একি পাল্লায় মাপেন তাহলে কখনই তা যুক্তি সঙ্গত হবে না।
আরেকটা ব্যাপার আমার যথেষ্ট পরিমান দৃষ্টি আকর্ষন করেছে, তা হচ্ছে বড় বড় কন্স্যাল্টিং ফার্ম গুলির শানশওকত বা ফাইভ স্টার হোটেলে আয়োজিত একক শিক্ষা মেলা। ব্যবসাটা এখন এত বড় হয়ে গেছে যে বড় কন্স্যাল্ট্যন্টরা এখন কোটি টাকা ইনভেস্ট করে একেকটা শিক্ষা মেলার আয়োজন করে শিক্ষার্থিদের মধ্যে এক ধরনের আকর্ষন তৈরি করে ফেলেছে। যার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থিরা যথেষ্ট পরিমান যাচাই বাছাই না করে, শুধু বাহ্যিক শানশওকত এ উদবুদ্ধ হয়ে কোর্স ও প্রভাইডার সিলেক্ট করছে, এক্ষেত্রেও যে সমস্ত এক্সিকিউটিভরা তাদের সহযোগিতা করছে তাদের অধিকাংশরই এই বিষয়ে যথেষ্ট পরিমান ধারনাই নাই, যদিও ওই শিক্ষার্থিদের ভিসা হচ্ছে কিন্তু ওই শিক্ষার্থীদের ওই সমস্ত দেশে গিয়ে আবার প্রভাইডার এবং কোর্স পরিবর্তন এর ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে যার জন্য ওই শিক্ষার্থিদেরকে কোর্স পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত সেমিসটার বা অতিরিক্ত বছরের জন্য ভিসা রিনিউ বাবদ অতিরিক্ত ডলার খরচ করতে হচ্ছে যা একজন অভিজ্ঞ কন্স্যাল্ট্যান্ট এর সহযোগীতা নিলে হয়ত হতো না। এমনকি একজন অভিজ্ঞ কন্স্যাল্ট্যান্ট যেমন ভবিষ্যত অনুধাবন করে সঠিক কোর্স সিলেক্ট করার মাধ্যমে উক্ত শিক্ষার্থিকে ভবিষ্যত অভিবাসন পাওয়ার জন্য একধরনের প্রিপার করেই দেন আগে ভাগে। আমি একটা সময়কে ইঙ্গিত করছি যখন অস্ট্রেলিয়ায় কোন শিক্ষার্থি যাওয়া মানেই ছিল একাউন্টিং এর কোন কোর্স এ যাওয়া, এখন অবস্থা এমন হয়েছে যারা একাউন্টিং এ মেজর করেছেন বা করছেন তাদের অভিবাসন পাওয়াটা অনিসচিত হয়ে গেছে একাউন্টিং এ ডিগ্রি ধারিদের সঙ্খ্যা অতিরিক্ত পরিমানে বেড়ে যাওয়ার কারনে।
এখন আসি মুল প্রসঙ্গে, অস্ট্রেলিয়ায় পড়ার খরচ নিয়ে, এবং কিভাবে প্ল্যান করে খরচ কমানো যায়ঃ
অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যেতে চাইলে, প্রথম এক বছরের খরচ আপনার স্পন্সর এর হাতে থাকতে হবে, কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য, এর কম সময় হলেও ফান্ড দেখানো যাবে, কিন্তু সেইক্ষেত্রে ফান্ড এর সোর্স দেখাতে হবে। এখানে স্পনসর বলতে বুঝানো হচ্ছে – বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, ও নানা-নানি একক ও যৌথ ভাবে ফান্ড দেখাতে পারবেন। আপন চাচা-মামা-ফুফু-খালা টোটাল ফান্ড এর ৫০% এর কম দেখাতে পারবেন, যদি বাবা-মা জীবিত থাকেন। নিজে বা স্পাউস স্পন্সর হতে পারবেন, সেক্ষেত্রে বর্তমান চাকুরি বা ব্যবসা ব্যতিত ফিক্সড আয় থাকতে হবে, যা বাংলাদেশ পরিত্যাগ করলেও কন্টিনিউ থাকবে।
আসুন এখন আমরা মোটামুটি কম খরচ এবং ভাল মানের একটা
ইউনিভার্সিটিতে পড়তে কত টাকা ফান্ড দেখাতে হবে তা ব্যাখ্যা করিঃ
রেফারেন্স হিসাবে, Bachelor of Computer Science (Cyber Security), ৩ বছরের প্রোগ্রাম, University of Wollongong, সিডনি ও উলংগং ক্যাম্পাস। বর্তমানে ৩০% স্কলারশীপ অফার চলছে ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সেসন এর জন্য। অন্যান্য ইউনিভার্সিটির কোর্স ও এইভাবেই ক্যাল্কুলেট করা সম্ভব।
কোর্স ফিঃ 36,672 AUD/Year, after 30% Scholarship Tuition Fee would be 25,670 AUD/Year
ফান্ড রিকোয়ারমেন্টঃ
কোর্স ফি (১ বছর) – ২৫,৬৭০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৩০% স্কলারশিপ ধরে)
থাকা-খাওয়া (১ বছর) – ২৪,৫০৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (১ জন এর জন্য, গভঃ কর্তিক নির্ধারিত)
মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স – ১,৮০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ৩ বছরের জন্য – একজন)
ট্রাভেল – ২,০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (১ জন এর জন্য, গভঃ কর্তিক নির্ধারিত)
সর্বোমোট – ৫৩,৯৭৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, আজকের হিসাবে (১৭/১২/২০২৩) আসবে বাংলাদেশী টাকায় – প্রায় ৪০ লাখ এর মতো।
অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা ম্যানেজ করে দেখাতে চান, যদিও ভিসা হউয়ার রেকর্ড আছে, তবুও আমি অনুতসাহিত করবো, ব্যাংক এর সাথে কোন রকম অনিয়মিত কন্টাকট এ যাওয়ার ব্যাপারে।
যাওয়া বাবদ একজন স্টুডেন্ট এর সাকুল্য খরচ হতে পারেঃ
টিউশন ফি ডিপসিট – ১২,৮৩৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার
মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স – ১,৮০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার
ভিসা ফি – ৭১০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার
ওয়ান ওয়ে ট্রাভেল – ১,২০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার
সর্বোমোট – ১৬,৫৪৫ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, আজকের হিসাবে (১৭/১২/২০২৩) আসবে বাংলাদেশী টাকায় – প্রায় ১২.২৫-১২.৭৫ লাখ এর মতো। এখানে ইউনিভার্সিটি ডর্ম এর এডভান্স পে বা হাত খরচের জন্য যে এক্সট্রা টাকা বা ডলার লাগবে তা ধরা হয় নাই, সুধু মাত্র যে খরচ গুলি মাস্ট সেগুলিই কন্সিডার করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার মিনিমাম আওয়ারলি ওয়েজ বা ঘন্টা প্রতি বেতন হচ্ছে – ২৩.২৩ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, এবং একজন শিক্ষার্থি কোর্স চলাকালিন সময়ে সাধারণত প্রতি ২ সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা জব করতে পারে, আর ইউনিভার্সিটি ব্রেক (সামার ভ্যাকেশন ও অন্যান্য ভ্যাকেশন এ) এর সময়ে একজন শিক্ষার্থি আনলিমিটেড ঘন্টা কাজ করার অনুমতি পেয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়ায় একজন শিক্ষার্থিকে আলাদা ভাবে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য এপ্লাই করতে হয় না, এটা ভিসার সাথেই ইনক্লুডেড থাকে।
লেখাটাকে আর দির্ঘায়িত করছি না, যারা অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ-শিক্ষা, ভিজিটর, ইমিগ্রেশন বা নন-ইমিগ্রেশন ভিসার ব্যাপারে আগ্রহী, নিম্নের কন্টাক্ট এ যোগাযোগ করে, একটা ফ্রী কন্স্যাল্টেশন এর জন্য এপয়েন্টমেন্ট নিতে পারেনঃ
Uniallies Immigration and Education Services
Address: House # 519/A (Old), 43 (New), (1st Floor), Road # 1
(Mollick Villa) Dhanmondi, Dhaka - 1205, Bangladesh
(Besides Beximco BEL Tower)
Cell Phone + Whatsapp: +8801817568727
Web: https://www.uniallies.com
Email: [email protected]