Al-Arafah Hajj & Umrah

  • Home
  • Al-Arafah Hajj & Umrah

Al-Arafah Hajj & Umrah Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Al-Arafah Hajj & Umrah, Travel Company, .

Our objective:Prime objective of this venture is to make a organization or institution who will guide the potential Hajjis for performing the Hajj in accordance with the rules & regulation of Islam.This organization will serve the hajjis with best effort.

04/06/2024


বাইতুল্লাহর দিকে নজর করে হেদায়েত, বরকত, আমন ও রিযকে হালাল লাভের অনুভূতি লালন করা দরকার
মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

বাইতুল্লাহর মুসাফিরদের বুকে নিয়ে পাঁচ দিন আগে প্রথম বিমান ঢাকার আকাশে উড়েছে। হজ্বের আবেগ হজ্বের মওসুম ঢাকার বাতাসে। নিজের দুর্গন্ধ, নিজের দুর্ভাগ্যের মধ্যেও বিভিন্ন জায়গায় বাইতুল্লাহর মুসাফিরদের চোখভেজা, দিলভেজা হালের কথা শোনা যায়। তখনই মনে জাগে, কাছাকাছি বসি কোনো বরেণ্য আহলে ইলম-আহলে দিল মুহাক্কিক আলেমে দ্বীনের। তাঁর শফকত, মহববত ও প্রশ্রয়ের কারণেই ৩০ আগস্ট দুপুরে সোনালী সে সুযোগটি হাতে আসে। তাঁর সঙ্গে হযরতপুর যাওয়ার ঘণ্টা দেড়েকের সফরে আমার কিছু জিজ্ঞাসা আর কিছু অজ্ঞতা তুলে ধরি তাঁর সামনে। তিনি হৃদয় খুলে প্রশান্তিদায়ক ভঙ্গিতে উত্তরগুলো দেন। সে প্রশ্ন-উত্তরের একটি নির্যাস হজ্বের সফরের তৈয়ারে নিমগ্ন হাজ্বী সাহেবদের খেদমতে পেশ করা হলো। সামনের কোনো সুযোগে ইনশা-আল্লাহ এ প্রশ্নোত্তরের আরো বিস্তৃত বিবরণ আয়োজনের চেষ্টা থাকবে।

জানতে চাইলাম তাঁর কাছে, বাইতুল্লাহ শরীফের দিকে তাকিয়ে থাকা অবস্থায় বান্দার দিলে কেমন অনুভূতি থাকা দরকার?

তিনি প্রথমে আয়াতে কারীমা তেলাওয়াত করলেন। সূরা আলে ইমরানের ৯৬ ও ৯৭ নম্বর আয়াত। এরপর চারটি শব্দ বললেন, বাইতুল্লাহর দিকে নজর করে বিশেষভাবে হিদায়েত, বরকত, আমন ও রিযকে হালাল লাভের অনুভূতি লালন করা দরকার এবং একই সঙ্গে এ অনুভূতিটির দুআও হবে নিজের জন্য, নিজের নিকটজন, পরিবার ও পুরো উম্মতের জন্য। সূরা আলে ইমরানের ৯৬ ও ৯৭, সূরা কাসাসের ৫৭ আয়াতে এবং সূরা কুরাইশে বাইতুল্লাহর এ সিফাতগুলোর কথাই বর্ণিত হয়েছে।

টেক্সিক্যাব তখন পল্লবীর পিঠ (মিল্কভিটার রাস্তা) ধরে মিরপুর-২-এর দিকে। জমে থাকা একটি প্রশ্ন উচ্চারণ করলাম। বাইতুল্লাহ শরীফের প্রতি বান্দার এই যে তীব্র মহববত ও ইশক, আবেগময় ভালবাসা, এর হাকীকত বা সমীচীন ব্যাখ্যা কী?’

ধীরস্থীর প্রশান্ত ভঙ্গিতে তিনি বললেন, মুহিব ও মাহবুব (প্রেমিক ও প্রেমময়) যদি ভিন্ন জিনস হয় তাহলে মহববতের প্রকাশ কঠিন হয়ে যায়। বিশেষত মাহবুব যদি হয় খালেক আর মুহিব যদি হয় মাখলুক তাহলে তো এই দুরূহতা আরও প্রকট হয়ে উঠে। তখন মাহবুবের প্রতি মুহিবের মহববত প্রকাশের উপযোগী কিছু ক্ষেত্রের প্রয়োজন হয়ে যায়। বাইতুল্লাহ শরীফ বান্দার মহববত প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। বাইতুল্লাহকে আল্লাহ তাআলা তার তাজাল্লির মারকায বানিয়েছেন। তাই বাইতুল্লাহর প্রতি বান্দার ওয়ালিহানা মহববত মূলত আল্লাহর জন্যই বান্দার মহববতের প্রকাশ।

মদীনা শরীফে মসজিদে নববী এবং রওযা শরীফের কাছাকাছি আদব বজায় রাখার কিছু কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে কিছুটা বিমর্ষ হয়ে গেলেন তিনি।

বললেন, আওয়াজ উঁচু করা হয়। আয়াতে কারীমায় তো এ বিষয়ে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা আছে। না-মুনাসিব আর অত্যন্ত বেয়াদবিপূর্ণ আচরণও করা হয়। ছবি তোলা, শোরগোল করা। মদীনায় গেলে এসব দেখে খুব কষ্ট হয়। রওযা শরীফের আদব হচ্ছে সুন্দরভাবে সালাত ও সালাম পেশ করা। আর দুআ আল্লাহ তাআলার কাছে করা। রওযা শরীফের জালের ফাঁক দিয়ে উঁকি-ঝুকি দেওয়ার চেষ্টা একদমই না করা চাই।

কোনো উম্মত যদি রওযার সামনে থাকা অবস্থায় এই কল্পনা করে যে, পর্দার ওই পাশে নবীজী শুয়ে আছেন, আমি তাঁর সামনে উপস্থিত হয়েছি। তিনি আমার সালাত ও সালাম শুনছেন। এ চিন্তা করে সালাম পেশ করে এবং নিজের অনুভূতিকে জাগ্রত করে তাহলে সেটি কি সঠিক হবে?’

মুহূর্তেই এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, সঠিক। কোনো সমস্যা নেই। নবীগণের বরযখি হায়াত খুব শক্তিশালী, ‘আল আম্বিয়াউ আহইয়াউন ফী কুবূরিহিম’

তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, হারামাইনে দিল তৈরির জন্য যদি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের কষ্ট-সহিষ্ণুতা ও ত্যাগ-তিতিক্ষার ইতিহাসের ঘটনাগুলো স্মরণ করা হয় আর কল্পনা করা হয় সেটি কি অনুমোদনযোগ্য?’

তিনি স্মিত হাসিমুখে উত্তর দিলেন, এটি উত্তম আমল। এমনটি করতে কোনো অসুবিধা নেই।

তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, শোনা যায়, হজ্বের মূল সময় যিলহজ্বের ৮ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত, ভিড় ইত্যাদির কারণে কোনো কোনো সময় ঝগড়া-কলহ সৃষ্টি হয়। পারস্পরিক ছাড়ের মনোভাবও কমে যায় কারো কারো মধ্যে। এ পরিস্থিতির সংশোধনে কিংবা এ জাতীয় প্রবণতা থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য কী করা চাই?

তিনি বললেন, যার ব্যাপারে মনে রাগ আসতে চাইবে বা ছাড় না দেয়ার অনুভূতি আসবে তার ব্যাপারে এই চিন্তা করা যে, তিনি তো আল্লাহর মেহমান। আমি জানি না, হয়তো তার মেহমানি আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি কবুল হয়ে আছে। সুতরাং তার প্রতি আমার সম্মান ও রেআয়াত বজায় রাখা উচিত।

জিজ্ঞাসা ছিল, বিভিন্নজনের কাছে শুনেছি, হজ্বের সফরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একশ্রেণীর মানুষের অসতর্কতার কারণে পর্দা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা তৈরি হয়। এটা থেকে বেঁচে থাকার উপায় কী হতে পারে?

এ জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি বলেন, আগের চেয়ে এখন জায়গার প্রশস্ততা বাড়ানোর কারণে এ সমস্যা অনেক কমে গেছে। এরপরও অনিচ্ছাকৃতভাবে পর্দার মাসআলায় কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ঘটে গেলে হারামাইনের বরকতে সেখানে তার কোনো বদ প্রভাব পড়ে না। তবে চিন্তা ও কাজে না-মুনাসিব কোনো কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে ইস্তেগফার, তাআউউয ও লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা... উচ্চারণের আমল করা চাই।

টেক্সিক্যাব তখন মিরপুর-১ নম্বর থেকে টেকনিক্যাল মোড়ের দিক বাঁক নিয়েছে। দ্বিধা ঝেড়ে প্রশ্নটি করেই ফেললাম, প্রতিবছর আপনি কেন হজ্বের সফরে যান না?’

প্রশ্নের উত্তরে একটু যেন দিধাগ্রস্ত হলেন তিনি। একটু স্মিত হাসলেন। বললেন, প্রতি বছর হজ্বের সফরে যাওয়া আসলে প্রফেসর হযরত এবং তাঁর মতো তবকার মানুষের কাজ। যারা প্রতিবছরই তীব্র আগ্রহ ধরে রাখতে পারেন এবং কিছু হাসিলও করতে পারেন। আমাদের মতো দুর্বলদের জন্য প্রতিবছর হজ্বে না গিয়ে দু-তিন বছর ওয়াকফা (বিরতি) দেয়া উচিত। বাইতুল্লাহ শরীফে উপস্থিত হওয়ার আগ্রহ বৃদ্ধির জন্যই এই ওয়াকফা দেয়া দরকার।

আলোচনার এক প্রসঙ্গে বললেন, নবীজীর প্রতি তাঁর উম্মতির পরিচ্ছন্ন মহববতের বিভিন্ন উপমা তো অতীতেও রয়েছে। আর মদীনা শরীফে থাকাকালে সাধারণভাবে সবচেয়ে বেশি করার মত আমল হচ্ছে, বেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করা’।

একসময় গাবতলী, আমিনবাজার, বলিয়ারপুর হয়ে গাড়িটি হেমায়েতপুরের কাছাকাছি চলে এল। একটু পর আমাদের নামতে হবে। হজ্বের মওসুমে তার হৃদয়জাত কথাগুলো ওই দুপুরে আমার হৃদয়ের ভেতরে একটি সফেদ আকাশ তৈরি করে দিল। আলহামদু লিল্লাহ।

04/06/2024

হজ্ব : সবরের পাঠশালা
মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ

الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَعْلُومَاتٌ فَمَنْ فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوقَ وَلَا جِدَالَ فِي الْحَجِّ وَمَا تَفْعَلُوا مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللَّهُ وَتَزَوَّدُوا فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى وَاتَّقُونِ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ

হজ্বের মৌসুমে আমরা এ আয়াতের উপর আলোচনা শুনে থাকি। আল্লাহ তাআলা এই আয়াতে ইরশাদ করেন, হজ্বের রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু মাস । এ মাসগুলোতে যারা নিজেদের উপর হজ্বকে অপরিহার্য করবে তাদের কর্তব্য, সকল অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা। সকল গোনাহ ও পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং সব ধরণের ঝগড়া-বিবাদ থেকে মুক্ত থাকা।

আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে যে কয় মাসের কথা বলেছেন তা শুরু হয়েছে । মাস কয়টি হচ্ছে শাওয়াল, যিলকদ, যিলহজ্বব। যদিও হজ্বের মূল কাজ হয় যিলহজ্ব মাসে। কিন্তু এর সময় শুরু হয়ে যায় শাওয়াল থেকেই। তাই এ তিন মাসকে বলা হয় হজ্বের মাস।

যারা হজ্ব করতে ইচ্ছুক তাদের গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য, হজ্বের মাসায়েল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। মাসায়েল ভালোভাবে জেনে ও বুঝে না নিলে নানা ধরনের ভুল-ভ্রামিত্মর আশংকা থাকে। এমনকি কখনো কখনো এমন এমন ভুলও হয় যে, আমলটিই বরবাদ হয়ে যায়। এ কারণে যে কোনো ইবাদত বা আমলের আগে সে সংক্রামত্ম মৌলিক মাসায়েল জেনে নেওয়া খুব প্রয়োজন।

এখন হজ্বেবর মওসুম। মসজিদে মসজিদে হজ্বেবর আলোচনা হবে। এ সব আলোচনা ও প্রশিক্ষণে কি শুধু যারা এ বছর হজ্বে যাবেন তাদেরই উপকার, না অন্যদেরও উপকার? সবারই উপকার, সবারই প্রয়োজন। যারা হজ্বে যাচ্ছেন হজ্বের মাসায়েল জানা তাদের জন্যে বেশী জরুরি, কিন্তু যারা যাচ্ছেন না তাদের জন্যেও উপকারী। এটা দ্বীনী ইলম শিক্ষা করার শামিল। সুতরাং দ্বীনী ইলম শেখার যে ফযীলত রয়েছে, তা হাসিল হবে ইনশাআল্লাহ।

এ জন্য এ মওসুমে বিজ্ঞ হক্কানী আলিমগণ হজ্বের যে প্রশিÿণ দেবেন তাতে যাদের এ বছর হজ্বে যাওয়া হচ্ছে না তারাও শামিল হতে পারি।

দ্বিতীয় কর্তব্য, হজ্বের শিক্ষা ও তাৎপর্য সম্পর্কে জানা এবং হজ্বের বিধি-বিধানের মধ্যে যে আখলাকী ও চারিত্রিক শিক্ষা আছে তা অর্জনের চেষ্টা করা। হজ্ব সম্পর্কিত আয়াত ও হাদীসগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়া হলে দেখা যাবে, হজ্বের মধ্যে অনেক আখলাকি শিক্ষা আছে। এটি ইসলামের সকল ইবাদতের বৈশিষ্ট্য । সালাত বলুন, সওম বলুন, যাকাত বলুন, হজ্ব বলুন সব কিছুতেই রয়েছে অনেক আখলাকি শিক্ষা । আমরা সওমের আলোচনা শুনেছি। সওমের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে অনেক বড় আখলাকি শিক্ষা দিয়েছেন। রাসূলুলস্নাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

من لم يدع قول الزور و العمل به فليس للله حاجة في أن يدع طعامه و شرابه

‘যে ব্যক্তি রোযা রেখে মিথ্যা কথা এবং মিথ্যা কর্ম (অর্থাৎ অসৎ কর্ম) পরিত্যাগ করতে পারে না, তার পানাহার ত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০৩

কত কঠিন কথা! সওমের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই নৈতিক ও চারিত্রিক শিক্ষাই দান করেছেন। যদি আমরা সওমের মাধ্যমে এই শিক্ষা অর্জন করতে না পারি তাহলে রমযানের ফরয আদায় হলেও রমযানের পূর্ণাঙ্গ ফায়দা ও ফযীলত হাসিল হবে না। ঠিক তেমনি হজ্বের বিষয়টি । আমরা যদি হজ্বের আহকাম ও বিধানাবলী এবং এর শিক্ষা ও তাৎপর্য নিয়ে চিমত্মা করি তাহলে দেখতে পাব, হজ্বের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে অনেক গুণ ও যোগ্যতার অধিকারী করতে চেয়েছেন। আমরা যদি সেসকল গুণ ও যোগ্যতা অর্জন করতে চাই এবং সেজন্যে চেষ্টা-সাধনা চালিয়ে যাই তাহলে আল্লাহর তাওফীকে আমরা সে সকল গুণ ও বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ ।

হজ্বের অনেক বড় শিক্ষা হল সবরের শিক্ষা। হজ্বে খুব বেশী প্রয়োজন হয় সবরের। যেহেতু হজ্বের সফর দীর্ঘ হয়ে থাকে এবং হজ্বের সফরে এমন অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় যা অমত্মরে ক্রোধের জন্ম দেয় তাই সবরের প্রয়োজন হয়। সবরের মাধ্যমে এসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। উপরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে তিনটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। ১. কোনো অশ্লীল কথা ও কাজে লিপ্ত হবে না। ২. কোনো গুনাহ ও পাপাচারে লিপ্ত হবে না। ৩. কারো সাথে কোনো ঝগড়া-বিবাদ করবে না।

তিন ÿÿত্রেই প্রচুর সবরের প্রয়োজন। আলিমগণ সবরের যে মৌলিক তিনটি ÿÿত্র নির্দেশ করেছেন এর একটি হচ্ছে الصبر عن المعاصى গুনাহ থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। এই সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণ সবরের অনেক বড় প্রকার। সুতরাং অশস্নীল কথা, কাজ ও পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার জন্য সবর ও সংযমের খুব প্রয়োজন। মনে করম্নন, মাহে রমযানে একমাস যে সংযমের অনুশীলন হয়েছে হজ্বের সফরে আমার-আপনার ব্যবহারিক পরীÿা হয়ে যাবে। হজ্ব-ওমরার সফরে বিশেষভাবে পরীÿা হয় পর্দার ও দৃষ্টির। এ দুই ÿÿত্রে খুব সতর্ক থাকা উচিত। তৃতীয় বিষয় ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত না হওয়া। ঝগড়া ইসলামের দৃষ্টিতে বড় নিন্দনীয়। কোনো ভদ্র মানুষ কখনো ঝগড়া করতে পারে না। আর এটা সব সময়ের বিধান। রাসূলুলস্নাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

من ترك الكذب و هو باطل بني له في ربض الجنة، و من ترك المراء و هو محق بني له في وسطها ومن حسن خلقه بني له في أعلاها

‘যে মিথ্যা ত্যাগ করে, যা বাতিল ও ত্যাগ করারই বিষয় তার জন্য জান্নাতের প্রামেত্ম ঘর নির্মাণ করা হয়। আর যে ন্যায়ের উপর থেকেও ঝগড়া ত্যাগ করে তার জন্যে জান্নাতের মধ্যখানে একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। আর যে তার আখলাক চরিত্রকে সুন্দর করে জান্নাতের উঁচু স্থানে তার জন্যে ঘর নির্মাণ করা হয়।’ -জামে তিরমিযি, হাদীস ১৯৯৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৫১

ঝগড়া না করার নির্দেশ ইসলামে সবসময়ের । তবে হজ্বেবর সময় এ নির্দেশটি আরো গুরুত্বের সাথে দেওয়া হয়েছে। কারণ হজ্বেবর সময় ঝগড়া বিবাদের অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটা কুরআন মাজিদের এক অনুপম উপস্থাপন-রীতি। যে জিনিসের বেশী প্রয়োজন কুরআন মাজিদ তা বিশেষভাবে উল্লেখ করে। মাতা-পিতা যখন বার্ধক্যে উপনীত হন তখন কুরআন মাজিদ তাদের সাথে নম্র আচরণের কথা বলেছে।

إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

মাতা-পিতা উভয়ে অথবা তাদের কোনো একজন যদি তোমার সামনে বার্ধক্যে উপনীত হয় তখন তাদেরকে সামান্যতম কষ্টদায়ক কথাও বলো না। তাদেরকে ধমক দিও না। তাদের সাথে উত্তম ও নম্র কথা বল । (সূরা বানী ইসরাইল ১৭ : ২৩)

এই যে পিতা-মাতার সাথে নম্র আচরণ করার, তাদেরকে ধমক না দেওয়ারও তাদের সামনে বিরক্তি প্রকাশ না করার বিধান এ কি শুধু পিতা-মাতা বৃদ্ধ হয়ে গেলেই প্রযোজ্য, না সব সময়ের জন্যে প্রযোজ্য? অবশ্যই সব সময়ের জন্যে প্রযোজ্য। কিন্তু মাতা-পিতার সাথে সমত্মানের দুর্ব্যবহারের আশংকা বেশী হয়ে থাকে তাদের বার্ধক্যের সময়। তাই এ অবস্থায় যেন সমত্মান মা-বাবাকে কষ্ট না দেয় সে জন্যে কুরআন বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছে।

হজ্বেবর মধ্যে ঝগড়া না করার নির্দেশের বিষয়টিও তেমনি। কারণ হজ্বেবর সফরে এমন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকে যাতে ঝগড়া হওয়া স্বাভাবিক। এ জন্যে কুরআন মাজিদ হজ্বেবর সফরে ঝগড়া থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ বিশেষভাবে দিয়েছে। তুমি তো আল্লাহর ঘরের মেহমান । তুমি বাইতুল্লাহর মুসাফির। আল্লাহর ঘরের মেহমানের জন্যে কি সাজে কারো সাথে ঝগড়া করা? যদি কোনো মুসলিম কুরআনের এ নির্দেশ পালন করার জন্যে প্রতিজ্ঞা করে, আমাকে যত কষ্ট দেওয়া হোক, আমার সাথে যত দুর্ব্যবহারই করা হোক, আমার সাথে যত ওয়াদাখেলাফি করা হোক-কুরআন যখন বলেছে, হজ্বেবর মধ্যে কোনো ঝগড়া নেই সুতরাং আমি কারো সাথে ঝগড়া করব না। যদি কোনো মুসলিম এ প্রতিজ্ঞা করে তাহলে হজ্বেবর মাধ্যমে যে ধৈর্য ও সহনশীলতা এবং সবর ও সংযমের গুণ তার অর্জিত হবে তার কি কোনো তুলনা হতে পারে?

কুরআন এভাবেই আমাদেরকে নম্র ভদ্র ও সুশীল করে গড়ে তুলতে চায়। আমরা চাইলে কুরআন থেকে সুন্দর আখলাক ও মহৎ চরিত্রের শিক্ষা লাভ করতে পারি।

হজ্বেবর সফরের আরেক অনুষঙ্গ হচ্ছে আল্লাহর মুহববত নিয়ে সফর করা। এখন তো সফর অনেক সহজ হয়ে গেছে। আগের যুগে সফর অনেক কঠিন ছিল। পথ অনেক দীর্ঘ ও দুর্গম ছিল। মানুষ এক মাস দু মাস তিন মাসের পথ পাড়ি দিয়ে আসত বায়তুল্লাহর যিয়ারতের জন্যে। একমাত্র আল্লাহ তাআলার মুহববত ও ভালোবাসা তাদেরকে এত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে উদ্বু্দ্ধ করত। তো আমরাও যখন সফর করব তখন আল্লাহর মুহাববত ও ভালবাসা, আল্লাহর প্রতি সমর্পণ ও উৎসর্গের প্রেরণা নিয়ে সফর করব। তাহলে আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক সৃষ্টি হবে। তাআল্লুক মাআল্লাহর মত সম্পদ লাভ করতে পারব।

এক বুযুর্গের ঘটনা। তিনি বলেন, আমি একবার আল্লাহর ঘর তওয়াফ করছি এমন সময় একজন মধ্যবয়েসী লোকের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয় । তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কোথা থেকে এসেছ? আমি বললাম, খোরাসান থেকে এসেছি। তিনি বললেন খোরাসান এখান থেকে কয় মাসের দূরত্বে অবস্থিত? আমি বললাম, তিন মাসের দূরত্বে । তিনি বললেন, তোমরা তো তাহলে বায়তুল্লাহর পড়শি! তোমরা দুতিন মাস সফর করেই বায়তুল্লায় পৌঁছে যাও! আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কত দূর থেকে এসেছেন? তিনি বললেন, আমি পাঁচ বছরের পথ অতিক্রম করে এসেছি। আমি যখন রওয়ানা হয়েছি তখন আমি ছিলাম যুবক। আমার দাড়ি কাঁচা ছিল। মক্কায় পৌঁছতে পৌঁছতে আমার দাড়িতে পাক ধরেছে। আমি বললাম-

والله هذه محبة صادقة وطاعة جميلة

আল্লাহর কসম! এ তো সত্যিকারের আনুগত্য। সত্যিকারের প্রেম। তখন তিনি দুটি পংক্তি আবৃত্তি করলেন

زر من هويت وان شطت بك الدار + وحال من دونه حجب واستار

ولا يمنعك بعد عن زيارته + ان المحب لمن يهواه زوار

তুমি যাকে ভালোবাস তার সাথে সাক্ষাৎ করতে যাও । যদিও সাক্ষাতের পথে থাকে অনেক বাধা ও প্রতিবন্ধকতা। পথের দূরত্ব যেন তোমাকে সাক্ষাৎ থেকে বিরত না রাখে। কারণ যে যাকে ভালোবাসে সে বেশি বেশি তার সাÿাৎ করে।

যদি সত্যিকারের ভালোবাসা না থাকে, ইশক না থাকে তাহলে পথের প্রতিবন্ধকতা শুধু বাড়তে থাকে, নানা টালবাহানা ও অজুহাত ভীড় করতে থাকে। আর যদি সত্যিকারের আগ্রহ থাকে, সত্যিকারের ভালোবাসা থাকে তাহলে বাধার বিন্ধ্যাচলও দূর হয়ে যায়।

এরপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্বেবর কত ফযীলত বর্ণনা করেছেন।

এক হাদীসে রাসূলুলস্নাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

الغازي في سبيل الله والحاج والمعتمر وفد الله دعاهم فأجابوه وسألوه فأعطاهم
আল্লাহর পথে জিহাদকারী এবং আল্লাহর জন্যে হজ্ব ও ওমরা আদায়কারী হচ্ছে আল্লাহর প্রতিনিধি। আল্লাহ তাদের ডেকেছেন এবং তারা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছে আর তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছে এবং আললাহ সে প্রার্থনা কবুল করেছেন। এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, যারা ওমরা ও হজ্ব আদায় করার তাওফীকপ্রাপ্ত হয়েছেন আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের কত মর্যাদা! তারা আল্লাহর মেহমান। আলস্নাহ অবশ্যই তাঁর মেহমানদের ইকরাম করবেন। তিনিই তো দিয়েছেন মেহমানের ইকরাম করার বিধান। আরেক হাদীসে রাসূলুলস্নাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

العمرة إلى العمرة كفارة لما بينهما و الحج المبرور ليس له جزاء إلا الجنة

‘এক ওমরা থেকে অন্য ওমরা মাঝের গুনাহসমূহের জন্যে কাফফারা স্বরূপ আর ‘হজ্বেব মাবরুর’-এর একমাত্র প্রতিদান হল জান্নাত।’ সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩৪৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭৭৩

যার হজ্ব মাকবুল হবে আল্লাহ তাআলা তার জন্যে জান্নাতের ফায়সালা করে রেখেছেন।

অন্য হাদীসে রাসূলুলস্নাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

تابعوا بين الحج و العمرة ؛ فإنهما ينفيان الفقر و الذنوب، كما ينفي الكير خبث الحديد و الذهب و الفضة، و ليس للحجة المبرورة ثواب إلا الجنة

তোমরা হজব ও ওমরা বারবার কর। কারণ ওমরা ও হজ্বের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পাপ ও দারিদ্র এমনভাবে দূর করে দেন যেমনভাবে হাপর লোহার মরিচাকে দূর করে দেয়।

অনেকে ভয় করে, এত টাকা খরচ হবে! অথচ রাসূলুলস্নাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্যে যদি কেউ এ খরচ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তার ধনসম্পদে এত বরকত দান করবেন যে, তার দারিদ্র দূর হয়ে যাবে।

অনেকে ভয় পায়, হজ্ব করলে তো আর গোনাহ করা যাবে না। হজ্ব করলে তো দাড়ি কাটা যাবে না। অথচ আমার এখন দাড়ি রাখার বয়স হয়নি! যেন হজ্ব করার আগ পর্যমত্ম গোনাহ করা জায়েয! দাড়ি কাটা জায়েয!! (নাউযুবিলস্নাহ) এগুলো শয়তানের ধোঁকা । হজ্ব থেকে আসার পর আল্লাহ যদি গোনাহ থেকে বাঁচার তাওফীক দান করেন তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা আছে গোনাহ থেকে বাঁচতে ! মৃত্যু কখন এসে যায়, মালাকুল মউত কখন হাজির হয়ে যায় তা কি কেউ বলতে পারে?

কারো উপর যদি হজ্ব ফরয হয় আর সে হজ্ব না করে তাহলে তার জন্যে এটা অনেক বড় আশংকার বিষয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ

যার হজ্ব করার সামর্থ্য আছে তার জন্যে বায়তুল্লাহর হজ্ব করা অপরিহার্য, ফরয । যারা কুফরী করে মনে রেখ , আল্লাহ তাআলা জগতবাসী থেকে বেনিয়ায, অমুখাপেক্ষী।’ (সূরা আলে ইমরান ৩ : ৯৭)

এখানে ‘‘কাফারা’’ শব্দের ব্যবহার অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। এটা হল কর্মগত কুফরী। সামর্থ্য থাকার পরও হজ্বব না করা আল্লাহ পাকের এমন অবাধ্যতা যাকে আল্লাহ কুফরী শব্দের মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন।

04/06/2024


মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنْظُرْ نَفْسٌ مَا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ.

তাকওয়ার অর্থ হল, অন্তরে আল্লাহর ভয় ও ভালবাসা নিয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহর সামনে একদিন দাঁড়াতে হবে এবং সকল কর্মকাণ্ডের হিসাব দিতে হবে- এই ভয়ে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর হুকুম মোতাবেক জীবনকে পরিচালিত করা। শুধু ভয় করার নাম তাকওয়া নয়। ভয়ের সাথে সাথে ভয়ের আছারাত ও ফলাফলও জীবনে প্রকাশ পেতে হবে।

তো এখানে আল্লাহ তাআলা প্রথমে তাকওয়া অর্জনের কথা বলেছেন। তারপর বলেছেন, প্রত্যেক মানুষ যেন অবশ্যই ভেবে দেখে আগামীকালের জন্যে সে কী জমা করেছে। এই দুনিয়ার জীবনটা হল আজকের দিন। আর আগামীকাল হল, মৃত্যুর পর। কিয়ামতের ভয়াবহতা এত বেশী হবে যে, দুনিয়ার জীবনটাকে মনে হবে এক সকাল বা এক বিকাল, বা তার চেয়েও কম।

এক আরব কবি বলেন-

أذان المرأ حين الطفل يأتي + وتأ خير الصلاة إلى الممات

دليل أن محياه يسير + كما بين الأذان و الصلاة

দুনিয়ার জীবন হল আযান ও ইকামতের পর নামায শুরু হতে যে সময়টুকু তার সমান। দেখ, জন্মের পরপরই তো তোমার জীবনের আযান-একামত হয়ে গেল। এখন নামাজ হওয়া বাকী। সেই নামাজ হবে তোমার মৃত্যুর পর। এই আযান ও নামাজের মাঝের সময়টুকু তোমার জীবন।

তো এই আয়াতে বলা হয়েছে, আখেরাতের জীবনের জন্যে কী পাঠিয়েছি তা যেন চিন্তা করি। একে ‘মুহাসাবা’ বলে। ইসলাম বিভিন্ন আমল ফরয করেছে। ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরয কাজ হল, এই ‘মুহাসাবা’। আমার কী করা দরকার ছিল, আমি কী করেছি? আমার কী করার কথা ছিল না, কিন্তু কতটুকু বেঁচে থেকেছি? নিজের কাছ থেকে নিজে এই হিসাব নেওয়া। যদি নেক কাজ করে



থাকি তাহলে আল্লাহর শোকর আদায় করা। আর যদি গুনাহের কাজ হয়ে থাকে তাহলে ইস্তেগফার করা। গুনাহের কাজ থেকে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে আসার চেষ্টা করা। যদি অনেক গুনাহের কাজ হয় এবং সবগুলো একসাথে পরিত্যাগ করা সম্ভব না হয় তাহলে কিছু কিছু করে পর্যায়ক্রমে গুনাহের কাজ থেকে বেরিয়ে আসা। এভাবে ঈমানী হালত এবং আমলী হালতের খোঁজ-খবর নেওয়া। এই খোঁজ-খবর নেওয়াটা ফরজ।

ঈমানী হালত এবং আমলী হালতের খোঁজ-খবর না নেওয়া অনেক বড় গুনাহ। এটা হল নিজের অবস্থার খোঁজ-খবর নেওয়া। যদি আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেওয়া ফরয হয়ে থাকে তাহলে নিজের খোঁজ-খবর নেওয়া তো আরো বড় ফরয।

এখানে প্রথমে বলা হয়েছে, গুনাহ থেকে বাঁচতে। বাহ্যত গুনাহ থেকে বাঁচা কোনো ইবাদত নয়। কিন্তু আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সবচেয়ে বড় ইবাদত।

اتق المحارم تكن أعبد الناس

তুমি হারাম থেকে বাঁচ, তুমি হবে সবচেয়ে বড় ইবাদতগুজার। -জামে তিরমিযী, হাদীস নং ২৩০৫)

আমাদের কাছে নেক কাজের কোনো আকৃতি নেই। নামায, রোযা, হজ্ব যাকাত ইত্যাদি কোনো নেক কাজেরই কোনো আকৃতি আমাদের সামনে নেই। কিন্তু আল্লাহর কাছে প্রতিটি নেক কাজেরই একটি আকৃতি আছে। কিয়ামতের ময়দানে মানুষ সে আকৃতিসহ তাদের কৃতকর্মগুলো দেখতে পাবে। ছোট বড় সবকিছুই দেখতে পাবে। কুরআন মাজীদে আল্লাহ বলেছেন-

وَوُضِعَ الْكِتَابُ فَتَرَى الْمُجْرِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا فِيهِ وَيَقُولُونَ يَا وَيْلَتَنَا مَالِ هَذَا الْكِتَابِ لَا يُغَادِرُ صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً إِلَّا أَحْصَاهَا وَوَجَدُوا مَا عَمِلُوا حَاضِرًا وَلَا يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا

‘এবং উপস্থিত করা হবে আমলনামা এবং ওতে যা আছে তার কারণে অপরাধিদের দেখবে আতংকগ্রস্ত এবং ওরা বলবে, হায়, দুর্ভোগ আমাদের! এ কেমন গ্রন্থ! এ তো দেখছি ছোটবড় কিছুই বাদ রাখেনি। সব লিখে রেখেছে। তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। তোমার রব কারো প্রতি যুলুম করেন না।’ -সূরা কাহফ ১৮:৪৯

তো মানুষ যে আমল করে সব আল্লাহর কাছে জমা হতে থাকে। গুনাহ থেকে বাঁচা, আল্লাহকে ভয় করা এগুলো সবচেয়ে বড় নেক কাজ। সুতরাং এগুলোও আল্লাহর কাছে জমা হতে থাকে। আল্লাহর কাছে প্রত্যেকের জন্যে একটি একাউন্ট খোলা আছে। এই একাউন্টে যা জমা হয়, তা বাড়তে থাকে। পৃথিবীতে যে নেক কাজ হয় তা কখনো বিফলে যায় না, বরং আল্লাহ তা সযত্নে তুলে রাখেন।

আমার এ সকল কথা বলার উদ্দেশ্য, একটি বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। সম্ভবত যারা হজ্বে গিয়েছিলেন, তারা সকলেই ফিরে এসেছেন। এখন আবার আরেক হজ্বের সময় হতে দীর্ঘ সময় বাকী। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়কে কেউ যেন দীর্ঘ মনে না করি। যাদের উপর হজ্ব ফরয হয়েছে, আমরা যেন আজ থেকেই আগামী হজ্বের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। কারণ হজ্বের জন্যে অনেক প্রস্তুতি দরকার হয়। অনেক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার প্রয়োজন হয়। এ সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে করতেই সময় চলে যাবে।

আমরা আমাদের দুনিয়াবী কাজে তো অনেক আগ থেকেই প্রস্তুতি শুরু করি। আমাদের এক উস্তায একবার এক ভদ্রলোকের কাছে গিয়েছিলেন তাকে একটি দ্বীনী কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যে। ভদ্রলোক জবাব দিলেন, ‘এখন সময় নেই। আমি খুব ব্যসত্ম। ছয় মাস পরে আমার মেয়ের বিয়ে। আপনি পরে দেখা করেন।’ তো ভদ্রলোক মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ছয় মাস আগ থেকেই। সুতরাং আল্লাহর ঘরের যিয়ারতের উদ্দেশ্যে যদি প্রস্তুতি নেওয়া হয় দশ মাস আগ থেকে তাহলে কি খুব আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া হয়! মনে রাখবেন, হজ্ব না করা যেমন গুনাহ তেমনি হজ্ব করতে দেরী করাও গুনাহ। হজ্ব করতে দেরী করার অর্থ, যেন আল্লাহ আপনাকে ডাকছেন, বান্দা ! আমি তোমাকে ধনসম্পদ দিয়েছি, শক্তি-সামর্থ্য দিয়েছি। তুমি আমার ঘরটা একবার এসে দেখে যাও।

বান্দা জবাব দিল, ‘সরি আল্লাহ! আমার এখন সময় নেই।’ আল্লাহর সাথে এর চেয়ে বেআদবী আর কী হতে পারে!

কত মানুষ আল্লাহর ঘর দেখার জন্য কত কান্নাকাটি করে! আর আল্লাহ তোমাকে সামর্থ্য দিলেন, শক্তি দিলেন, আর তুমি কিনা বল, আল্লাহ, আমার সময় নেই!

আমি উপরের কথাগুলো মূলত এ দিকে সকলের মনোযোগ আকর্ষণের জন্যে বলেছি। আপনারা আপনাদের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনের কাছেও এ বার্তা পৌঁছে দেবেন। আল্লাহ তাআলা আমল করার তাওফীক দান করুন।

04/06/2024

হজ্ব-উমরার আমলসমূহ : মর্তবা ও ফযীলত
মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ফাহাদ

মুমিন বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ এই যে, তিনি তাকে এমন কিছু ইবাদত দান করেছেন, যার মাধ্যমে বান্দা রূহানী তারাক্কী, কলবের সুকুন ও প্রশান্তি এবং দুনিয়া-আখেরাতের খায়ের ও কল্যাণ লাভ করে থাকে। এসবেরই একটি হল হজ্ব। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে বাইতুল্লাহ্র হজ্ব করার নির্দেশ দিয়েছেন, যেন এর মাধ্যমে তারা গুনাহ থেকে পাকসাফ হয় এবং জান্নাতে উচ্চ মর্তবা ও মাকাম লাভ করে।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الحُجَّاجُ وَالْعُمَّارُ وَفْدُ اللهِ، إِنْ دَعَوْهُ أَجَابَهُمْ، وَإِنِ اسْتَغْفَرُوهُ غَفَرَ لَهُمْ.

আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ্ব ও উমরাকারী হল আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহ্ও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২৮৯৩

অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

হজ্ব ও উমরাকারীগণ আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়েছে আর আল্লাহ্ও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস ১৬৬১

নিম্নে হজ্ব ও উমরার কিছু ফযীলত উল্লেখ করা হল। যেন এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহী হতে পারি।

হজ্বের ফযীলত

আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

مَنْ حَجَّ لِلهِ فَلَمْ يَرْفُثْ، وَلَمْ يَفْسُقْ، رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّه.

যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্ব করল এবং অশ্লীল কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত থাকল, সে ঐ দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ্ব থেকে ফিরে আসবে, যেদিন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৫২১

অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন-

سُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: إِيمَانٌ بِاللهِ وَرَسُولِهِ قِيلَ: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: جِهَادٌ فِي سَبِيلِ اللهِ قِيلَ: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: حَجٌّ مَبْرُور.

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন। জিজ্ঞাসা করা হল, এর পর কোনটি? বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। বলা হল, এরপর? তিনি বললেন, মাবরূর হজ্ব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৫১৯

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
.. والحَجُّ الْمَبْرُوْرُ لَيْسَ لَه جَزَاءٌ إِلا الْجَنَّةُ.
..মাবরূর হজ্বের প্রতিদান কেবল জান্নাত। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭৭৩

আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

ثلَاثَةٌ فِي ضَمَانِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، رَجُلٌ خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ إِلَى مَسْجِدٍ مِنْ مَسَاجِدِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَرَجُلٌ خَرَجَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَرَجُلٌ خَرَجَ حَاجًّا.

আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। যথা :

১. যে ব্যক্তি আল্লাহর কোনো মসজিদের উদ্দেশে বের হয়।

২. যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয়।

৩. যে ব্যক্তি হজ্বের উদ্দেশে বের হয়। -মুসনাদে হুমাইদী, হাদীস ১১২১

দুর্বলদের জিহাদ হল হজ্ব

উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الْحَجُّ جِهَادُ كُلِّ ضَعِيفٍ.

হজ্ব হল প্রত্যেক দুর্বলের জিহাদ। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২৯০২

মহিলাদের হজ্ব করার ফযীলত

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। তাহলে আমরা (নারীরা) কি জিহাদ করব না? উত্তরে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

لاَ، لكِنَّ أَفْضَلَ الجِهَادِ حَجٌّ مَبْرُورٌ.

না; তোমাদের জন্য উত্তম জিহাদ হল মাবরূর হজ্ব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৫০২

উমরার ফযীলত

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

العُمْرَةُ إلى العُمْرَةِ كَفّارَةٌ لِما بيْنَهُما، والحَجُّ المَبْرُورُ لَيسَ لَه جَزَاءٌ إلا الجَنَّة.

এক উমরা অন্য উমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সকল কিছুর কাফফারা। আর মাবরূর হজ্বের একমাত্র প্রতিদান জান্নাত। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৭২৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৪৯

হজ্বে খরচ করার ফযীলত

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! লোকেরা তো দুইটি ইবাদত নিয়ে ফিরে যাচ্ছে আর আমি শুধু একটি নিয়ে ফিরব? তখন তাঁকে বলা হল-

انْتَظِرِي، فَإِذَا طَهُرْتِ، فَاخْرُجِي إِلَى التَّنْعِيمِ، فَأَهِلِّي ثُمَّ ائْتِينَا بِمَكَانِ كَذَا، وَلَكِنَّهَا عَلَى قَدْرِ نَفَقَتِكِ أَوْ نَصَبِكِ.

অপেক্ষা কর। যখন তুমি পবিত্র হবে তখন তানঈমে যাবে এবং (উমরার) ইহরাম বাঁধবে। এরপর অমুক স্থানে যাও। অবশ্য এসবের প্রতিদান হবে তোমার ব্যয় ও কষ্ট অনুযায়ী। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৭৮৭

অন্য বর্ণনায় তিনি আরো বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উমরার সময় বললেন-

إِنَّمَا أَجْرُكِ فِي عُمْرَتِكِ عَلَى قَدْرِ نَفَقَتِكِ.

তোমার ব্যয় অনুপাতে উমরার প্রতিদান দেওয়া হবে। -মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ১৭৭৭ (১৭৩৪)

হজ্ব-সফরের ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

مَا يَرْفَعُ إِبِلُ الْحَاجِّ رِجْلًا وَلَا يَضَعُ يَدًا إِلَّا كَتَبَ اللهُ لَهُ بِهَا حَسَنَةً، أَوْ مَحَى عَنْهُ سَيِّئَةً، أَوْ رَفَعَه بِهَا دَرَجَةً.

আল্লাহ তাআলা হজ্ব আদায়কারীর উটনীর প্রতি কদমে একটি নেকী লেখেন কিংবা একটি গুনাহ মুছে দেন। অথবা একটি মর্তবা বুলন্দ করেন। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৮৮৭; শুআবুল ঈমান, বাইহাকী, হাদীস ৩৮২১

তালবিয়া পাঠের ফযীলত

সাহ্ল ইবনে সা‘দ আসসায়েদী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَا مِنْ مُلَبٍّ يُلَبِّي، إِلَّا لَبَّى مَا عَنْ يَمِينِه وَشِمَالِه، مِنْ حَجَرٍ، أَوْ شَجَرٍ، أَوْ مَدَرٍ، حَتَّى تَنْقَطِعَ الْأَرْضُ، مِنْ هَاهُنَا وَهَاهُنَا.

কেউ যখন তালবিয়া পাঠ করে তখন তার ডানে ও বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সকল গাছপালা, মাটি-পাথর তালবিয়া পাঠ করতে থাকে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৮২৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২৯২১

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
.. وَمَا مِنْ مُؤْمِنٍ يَظِلُّ يَوْمَه مُحْرِمًا إِلا غَابَتْ الشَّمْسُ بِذُنُوْبِه، وَمَا مِنْ مُؤْمِنٍ يُلَبِّيْ لِلهِ بِالْحَجِّ إِلا شَهِدَ لَه مَا عَلى يَمِيْنِه وَشِمَالِه إِلى مُنْقَطَعِ الأرْضِ.

কোনো মুমিন যখন ইহরামের হালতে দিন কাটাবে তখন সূর্য তার সকল গুনাহ নিয়ে অস্ত যাবে। আর কোনো মুমিন যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ্বের তালবিয়া পাঠ করবে তখন তার ডানে-বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সবকিছু তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৮১০

আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَا أَهَلَّ مُهِلٌّ قَطُّ إِلَّا بُشِّرَ، وَلَا كَبَّرَ مُكَبِّرٌ قَطُّ إِلَّا بُشِّرَ. قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، بِالْجَنَّةِ؟ قَالَ: نَعَمْ.

কেউ তালবিয়া পাঠ করলে তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয়। এবং কেউ তাকবীর বললে তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জান্নাতের সুসংবাদ? উত্তরে নবীজী বললেন, হাঁ। -আলমু‘জামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৭৭৭৯

মক্কা মুকাররমার ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আদী ইবনে হামরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ‘হাযওয়ারা’ নামক স্থানে ছিলেন তখন তাকে উটের উপর সওয়ার অবস্থায় বলতে শুনেছি-

وَاللهِ إِنَّكِ، لَخَيْرُ أَرْضِ اللهِ، وَأَحَبُّ أَرْضِ اللهِ إِلَيَّ، وَاللهِ لَوْلَا أَنِّي أُخْرِجْتُ مِنْكِ، مَا خَرَجْتُ.

আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই তুমি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ যমীন আর আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহর কসম! যদি আমাকে তোমার (বুক) থেকে চলে যেতে বাধ্য না করা হত, তাহলে আমি কখনো যেতাম না। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩১০৮

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন-

إن هذا البلد حرمه الله يوم خلق السماوات والأرض، فهو حرام بحرمة الله إلى يوم القيامة.

নিশ্চয়ই আসমান-যমীন সৃষ্টির দিনই আল্লাহ এই যমীনকে সম্মানিত করেছেন। সুতরাং কিয়ামত পর্যন্ত তা সম্মানিত।...। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৫৩

মসজিদে হারামে নামায আদায়ের ফযীলত

আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

لَا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلَاثَةِ مَسَاجِدَ: مَسْجِدِي هَذَا، وَمَسْجِدِ الْحَرَامِ، وَمَسْجِدِ الْأَقْصَى.

শুধু তিনটি মসজিদের উদ্দেশে সফর করা যায়। যথা : আমার এই মসজিদ (মসজিদে নববী), মসজিদে হারাম ও মসজিদে আকসা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৯৭

জাবির রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

صَلَاةٌ فِي مَسْجِدِي أَفْضَلُ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيمَا سِوَاهُ، إِلَّا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ.

আমার এই মসজিদের একটি নামায অন্য মসজিদে হাজার নামায থেকেও উত্তম। তবে মসজিদে হারাম ছাড়া। কেননা, মসজিদে হারামে একটি নামায অন্য মসজিদের এক লক্ষ নামাযের চেয়ে উত্তম। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৪৬৪৬

বাইতুল্লাহ তাওয়াফের ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَنْ طَافَ بِالْبَيْتِ، وصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، كَانَ كَعِتْقِ رَقَبَةٍ.

কেউ বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করলে এবং দুই রাকাত নামায আদায় করলে একটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব পাবে। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২৯৫৬

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الطواف حول البيت مثل الصلاة، إلا أنكم تتكلمون فيه، فمن تكلم فيه فلا يتكلمن إلا بخير.

বাইতুল্লাহ্র তাওয়াফ হচ্ছে নামাযের মতো। তবে এতে তোমরা কথা বলতে পার। সুতরাং এ সময় যে কথা বলবে সে যেন শুধু উত্তম কথাই বলে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৯৬০

হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়ার ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-

إِنَّ مَسْحَهُمَا كَفَّارَةٌ لِلْخَطَايَا.

এই রোকন দুটির (হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানী) স্পর্শ গুনাহসমূহকে মুছে দেয়। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৯৫৯

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

لَيَأْتِيَنَّ هَذَا الْحَجَرُ، يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَهُ عَيْنَانِ يُبْصِرُ بِهِمَا، وَلِسَانٌ يَنْطِقُ بِهِ، يَشْهَدُ عَلَى مَنْ يَسْتَلِمُهُ بِحَقٍّ.

কিয়ামতের দিন এই পাথর এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তার দুটি চোখ থাকবে, যা দ্বারা সে দেখবে এবং জিহ্বা থাকবে, যা দ্বারা সে কথা বলবে। সে ঐ ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষ্য দেবে যে তাকে সঠিক পন্থায় ইসতিলাম করে। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ২৯৪৪

সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈর ফযীলত

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

اِنَّ الصَّفَا وَ الْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآىِٕرِ اللهِ.

নিশ্চয়ই সাফা-মারওয়া আল্লাহর দুটি নিদর্শন। -সূরা বাকারা (০২) : ১৫৮

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

وأمّا طوافُكَ بالصَّفا والمروةِ؛ كعِتْقِ سبعينَ رقبةً.

আর সাফা-মারওয়ায় তোমার সায়ী সত্তর জন দাস মুক্ত করার সমান। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস ৬১৭৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৮৮৭

আরাফায় উকূফের ফযীলত

আয়েশা রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

ما من يوم أكثر من أن يعتق الله فيه عبدا من النار، من يوم عرفة، وإنه ليدنو، ثم يباهي بهم الملائكة، فيقول: ما أراد هؤلاء؟

আরাফার দিনে আল্লাহ তাআলা সর্বাধিক সংখ্যক বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। এদিন তিনি তাদের নিকটবর্তী হন। এরপর ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে করে বলেন, এরা কী চায়? -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৪৮

আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

إِنَّ اللهَ يُبَاهِي بِأَهْلِ عَرَفَاتٍ مَلَائِكَةَ أَهْلِ السَّمَاءِ، فَيَقُولُ: انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي هَؤُلَاءِ انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي جَاءُونِي شُعْثًا غُبْرًا.

আরাফায় অবস্থানকারী সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলেন, আমার এইসব বান্দাদের দেখ, কেমন উষ্কখুষ্ক চুল ও ধুলোমলিন বদনে আমার নিকট এসেছে। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৩৮৫২; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ২৮৩৯

আরাফার দিনে দুআর ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

خَيْرُ الدُّعَاءِ دُعَاءُ يَوْمِ عَرَفَةَ، وَخَيْرُ مَا قُلْتُ أَنَا وَالنَّبِيُّونَ مِنْ قَبْلِي: لَا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.

আরাফা দিবসের দুআ হল শ্রেষ্ঠ দুআ। আর আমি ও আমার পূর্ববর্তী নবীগণ যা বলেছেন তার সর্বশ্রেষ্ঠ হল-

لَا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه، لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.

-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৫৮৫

জামরায় রমীর ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

إِذَا رَمَيْتَ الْجِمَارَ كَانَ لَكَ نُوْرًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

তুমি জামরায় রমী করলে তা তোমার জন্য কিয়ামতের দিন নূর হবে। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস ৬১৭৭

হাদী নিয়ে যাওয়া ও কুরবানী করার ফযীলত

আবু বকর সিদ্দীক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, উত্তম হজ্ব কী? তিনি বললেন-

العَجُّ وَالثَّجُّ.

উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠ করা এবং পশু কুরবানী করা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৮২৭

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা.-এর সূত্রে এক দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

أَمَّا نَحْرُكَ فَمَدْخُوْرٌ لَكَ عِنْدَ رَبِّكَ.
..আর তুমি কুরবানী করলে তা তোমার প্রতিপালকের নিকট সঞ্চিত থাকবে। -মুসনাদে বাযযার, হাদীস ৬১৭৭

হজ্ব থেকে হালাল হওয়ার জন্য হলক ও চুল কাটার ফযীলত

আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُحَلِّقِينَ، قَالُوا: وَلِلْمُقَصِّرِينَ، قَالَ: اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُحَلِّقِينَ، قَالُوا: وَلِلْمُقَصِّرِينَ، قَالَهَا ثَلاَثًا، قَالَ: وَلِلْمُقَصِّرِينَ.

হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যারা চুল কাটবে তাদের? তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম আবার আরয করলেন, যারা চুল কাটবে তাদের? তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম তৃতীয়বার আরয করলে তিনি বললেন, আর যারা চুল কাটবে তাদেরকেও। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৭২৮

হজ্বে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণকারীর ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি ইহরাম অবস্থায় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলেন। হঠাৎ সওয়ারী থেকে পড়ে তার মৃত্যু হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ، وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْهِ، وَلَا تُخَمِّرُوا رَأْسَهُ، فَإِنَّ اللهَ يَبْعَثُه يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُلَبِّيًا.

তোমরা তাকে বড়ই পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও এবং তার কাপড়দুটি দিয়েই তাকে কাফন পরাও। তবে তার মাথা ও চেহারা ঢাকবে না। কেননা, কিয়ামতের দিন সে তালবিয়া পাঠ করতে করতে উঠবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২০৬

ছোটদেরকে হজ্ব করানোর ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাওয়াহা নামক স্থানে (কিছু লোকের সাথে) সাক্ষাৎ হলে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কারা? তারা বলল, মুসলিম। এরপর তারা জিজ্ঞাসা করল, আপনি কে? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল। তখন তাঁর নিকট একজন মহিলা (একটি ছোট বাচ্চার দিকে ইশারা করে) বলল, এর জন্য কি হজ্ব আছে? তিনি বললেন-

نعم، ولك أجر.

হাঁ। আর তুমি এর প্রতিদান পাবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৯৪

হাজ্বীদেরকে পানি পান করানো ও তাদের খেদমতের ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার স্থানে এসে পান করাতে বললেন।

তখন আব্বাস রা. বললেন, হে ফযল! তোমার মায়ের নিকট গিয়ে তার কাছ থেকে পানীয় নিয়ে এস।

এরপর তিনি বললেন, আমাকে পান করাও।

তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! লোকেরা এর ভেতরে হাত প্রবেশ করিয়ে থাকে।

তিনি বললেন, আমাকে পান করাও। এরপর তিনি তা থেকে পান করলেন। অতঃপর তিনি যমযমের নিকট এলেন। লোকেরা সেখানে পান করাচ্ছিল ও কাজ করছিল।

তিনি বললেন, তোমরা কাজ করতে থাক। কেননা, তোমরা নেক কাজই করছ। এরপর তিনি ইরশাদ করলেন-

لَوْلاَ أَنْ تُغْلَبُوا لَنَزَلْتُ، حَتَّى أَضَعَ الحَبْلَ عَلَى هذِه.

যদি এ আশঙ্কা না হত যে, লোকেরা তোমাদের থেকে এ কাজ ছিনিয়ে নেবে, তাহলে আমি নেমে আসতাম আর রশি এর ওপর (অর্থাৎ কাঁধের ওপর) রাখতাম। তিনি হাত দ্বারা কাঁধের দিকে ইশারা করলেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৬৩৪

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হজ্বের পরিপূর্ণ ফযীলত ও বরকত দান করুন- আমীন।

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Al-Arafah Hajj & Umrah posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Travel Agency?

Share