![❄️সারপাস ট্রেক❄️♥️♥️ভারতের অ্যাডভেঞ্চারাস স্নোট্রেকগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হিমাচল প্রদেশের কাসোল পার্বতী ভ্যালির সরপাস ...](https://img4.travelagents10.com/834/950/479622978349500.jpg)
04/07/2024
❄️সারপাস ট্রেক❄️♥️♥️
ভারতের অ্যাডভেঞ্চারাস স্নোট্রেকগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হিমাচল প্রদেশের কাসোল পার্বতী ভ্যালির সরপাস ট্রেক। YHAI প্রতি বছর মে মাস জুড়ে এই ট্রেকিং প্রোগ্রামের পরিচালনা করে থাকে।এছাড়া অনেক প্রাইভেট অর্গানাইজেশন ও এই ট্রেক করিয়ে থাকে। মে মাস হচ্ছে এই ট্রেকের সবচেয়ে আদর্শ সময়।প্রত্যেক ট্রেকের একটি difficulty লেভেল থাকে।সেই অনুযায়ী এটা মধ্যম থেকে কঠিন মানের ট্রেক।
এই বছর মে মাসে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল YHAI পরিচালিত এই সারপাস ট্রেকে যোগদান করার।সেই অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে share করছি।।ভালো লাগলে লাইক share এবং পেজ টাকে লাইক করার অনুরোধ রইলো।
YHAI পরিচালিত এই ট্রেক শুরু হয় হিমাচল প্রদেশের কুলু ডিস্ট্রিক্ট এর কাসোল থেকে যা সাম্প্রতিককালে ইসরায়েলি পর্যটকদের ভিড়ের জন্য ভারতে খুবই ফেমাস হয়েছে। তো সর্বপ্রথম কাসোল যেতে গেলে আপনাদের প্রথম যেতে হবে চন্ডিগড়। হাওড়া থেকে চন্ডিগড় যাওয়ার ডাইরেক্ট ট্রেন হচ্ছে নেতাজি এক্সপ্রেস যা পূর্বে কালকা মেল বলে পরিচিত ছিলো। এছাড়া আপনারা রাজধানী এক্সপ্রেস এ করে গেলে দিল্লী পৌঁছে সেখান থেকে চন্ডিগড় এর জন্য অনেক ট্রেন পেয়ে যাবেন। চন্ডিগড় পৌঁছানোর পর সরকারি বাসস্ট্যান্ডে যাবেন এবং সেখান থেকে বাস পেয়ে যাবেন কুলু মানালির জন্য। এই কুলু মানালি গামী বাসে ভুনতার পৌঁছে আপনাদের কাসোল যাবার বাস ধরতে হবে। কাসোলের একদম কাছে মণিকরণ বলে একটি gurudwara আছে যেখানে একটি প্রাচীন শিবমন্দির আছে এবং একটি উষ্ণ পস্রবন আছে। সেখানে ইউথ হোস্টেলের ক্যাম্প করা হয়েছিল এবারে। এখানে আপনাদের প্রথম দিন রিপোর্ট করতে হবে।
ইয়ুথ হোস্টেলের অন্যান্য প্রোগ্রামের মত এখানেও প্রথমদিন এক্লেমাটাইজেশন প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আমরা যখন সমতল থেকে অতিরিক্ত উচ্চতায় যাই তো হঠাৎ করে অনেকটা হাইট গেইন করলে আমাদের অনেক ধরনের শরীর সমস্যা দেখা যায়। এইগুলোকে এড়ানোর জন্য কিছুক্ষণ রেস্ট করতে করতে যাওয়া হয়। এই প্রসেসকে বলে এক্লেমাটাইজেশন।তো ট্রেকিং এর দ্বিতীয় দিনে কিছু এক্সারসাইজ এবং এক্লেমাটাইজেশন ওয়াক করানো হয় এবং এই দিন আপনারা কাসোলের আশপাশ ঘুরে দেখতে পারেন। মানিকরণের উচ্চতা সমুদ্রতল থেকে 5500 ফুটের মতো।
দিন 3: কাসোল থেকে 9 কিলোমিটার মতো ট্রেক করে পৌঁছাতে হবে গ্রহন গ্রাম। উচ্চতা সমুদ্রতল থেকে 7700 ফুটের মতো।সময় লাগবে প্রায় 5-6 ঘণ্টা।কানাভর অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে ট্রেক করে পৌঁছাবেন গ্রহণ গ্রামে যা ছবির মত সুন্দর এবং এতটাই শান্ত এবং স্নিগ্ধ যে আপনি এই জায়গার প্রেমে পড়তে বাধ্য। রাস্তায় রডোডেনড্রন ফুল ফুটে থাকতে দেখবেন।
দিন 4: ট্রেকিং এর পরবর্তী দিনে গ্রহন গ্রাম থেকে ট্রেক করে পরবর্তী ক্যাম্প মিনথাচ পৌঁছাতে হবে যা 11500 ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।এই পথে দেখতে পাবেন উঁচু উঁচু বরফে ঢাকা শৃঙ্গ এবং জঙ্গল।
দিন 5: ট্রেকিং এর এই দিনে মিনথাচ থেকে ট্রেক করে পরবর্তী বেস ক্যাম্প নাগারু যেতে হবে যা 12500 ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। লিংখাট ক্যাম শেষ করার পরই মোটামুটি গাছপালা শেষ হয়ে যাবে এবং বরফ শুরু হয়ে যাবে। তো বরফের উপর দিয়ে কিছু জায়গা দড়ি ধরে হেঁটে আপনাদের পৌঁছুতে হবে নাগারুতে। যেহেতু নাগারু ১২ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এবং এখানে ওয়েদার খুবই বাজে থাকে। চারিদিকে দেখবেন শুধু বরফ এবং অনেক সময় তুষারপাত হয়। ওয়েদার খুবই খারাপ থাকে তো এখানে ক্যাম্পিং একটু কষ্টকর। তবে চারিদিকে সাদা বরফের চাদরে ঢাকা উপত্যকা দেখতে আপনাদের খুবই ভালো লাগবে।
দিন 6: এই দিনটি ট্রেকিং এর সবচেয়ে কঠিন দিন। ভোরবেলা অন্ধকার থাকতে থাকতে হেডটর্চ জ্বালিয়ে বরফের উপর ট্রেক করে নাগারু থেকে সারপাস টপে পৌঁছাবেন এবং দেখবেন অপূর্ব সূর্যোদয়।। সারপাসের অর্থ হচ্ছে জমাট বাধা হ্রদ।এর উচ্চতা 13500 ফুট মতো। এখান থেকে বরফে স্লাইডিং করে নামতে হবে এবং আবার ট্রেক করে উঠতে হবে বিস্কেরি টপে যার উচ্চতা 13800 ফুটের মতো।। সেখান থেকে বরফে স্লাইডিং করে এবং তারপর আবার ট্রেক করে পৌঁছাবে বিস্কেরি ক্যাম্প যা 11000 ফুটের মতো উচ্চতায়।এখানে ক্যাম্প সাইট ছবির মত সুন্দর। ঝর্ণা বরফের পাহাড় সব দেখতে পাবেন।
দিন 7: ট্রেকের অন্তিম দিনে বিস্কেরি ক্যাম্প থেকে বর্শেনি গ্রাম হয়ে কাসোল ফেরত আসতে হবে। যেমনি আপনারা ক্যাম্প থেকে নামা শুরু করবেন দেখবেন জঙ্গল শুরু হয়ে যাবে এবং জঙ্গলের রাস্তা ধরে সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে বার্শেনি গ্রাম হয়ে ফিরে আসবেন কাসোল।
তো যারা অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় এবং প্রথম বরফের ট্রেক করতে চান তারা অবশ্যই সরপাস ট্রেকিং যাবেন। তবে এই ট্রেকিংয়ে যাওয়ার জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করবেন যেমন প্রচুর ঠান্ডা থাকে তাই উপযুক্ত গরম কাপড় নিয়ে যাবেন এবং বরফের স্লাইডিং করার সময় বা বরফে হাঁটার সময় খুব সাবধানে হাঁটবেন এবং বরফ থেকে অনেক সময় কোল্ডবার্ন হয় সেখান থেকে বাঁচবেন। প্রচুর আলোর রিফ্লেকশন হয় তাই চোখ বাঁচাতে সানগ্লাস ব্যবহার করবেন এবং এখানে uv ইনডেক্স খুব হাই সেই জন্য ত্বক বাঁচাতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।