17/02/2023
🖋️তৃতীয় পর্ব।
আজকের গল্প জোড়বাংলা কেষ্টরায় মন্দির, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া।🛕🛕
📌শ্যামরায় মন্দির দেখার পর ৩ বন্ধু মিলে আবার বসে পড়লাম টোটো তে, লালমাটি পথ ধরে এগিয়ে চলাম আমাদের পরের গন্তব্য। এতোক্ষণে সূর্য্য আমাদের মাথাএ। মিনিট ৫এক মধ্যে আমরা এসেপড়লাম আরেক কারুকার্যে নিদর্শন সামনে। অপুরূপ এই কারুকার্য আপনার মন স্পর্শ করবেই। যদিও অধিকাংশ নিদর্শণ আজ সংরক্ষণ অভাবে নস্ট প্রায়। প্রসঙ্গত বলে রাখি এই মন্দির গুলো তে ভিডিওগ্রাফি করা নিষিদ্ধ। আমরা টোটো থেকে নেমে প্রবেশ করলাম মন্দির এ। প্রবেশ সময় আপনাকে টিকিট টা গার্ড শায়েব কে দেখাতে হবে, এই দখেছেন কী ভুলো মন আমার আপনাদের তো বলা হয় নি, রাসমন্দির প্রবেশ সময় আপনাদের একটা টিকিট করে নিতে হবে ২৫ টাকা মূল্যের বিনিময়ে, যা দিয়ে আপনারা ৩টি স্পট ঘুরতে পারবেন। ৩ বন্ধু মিলে ঘুরতে লাগলাম আর সাথে চলল আড্ডা, হাসি আর মজা। আসলেও কর্মসূত্রে আজকাল আর রোজ দেখা হয় না, অথচ বছর ৩ আগে এমন একটা দিন ছিলো না যেদিন আমরা দেখা করি নি, কিন্তু আজ হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপচ্যাট আর ভিডিও কল একমাত্র ভরসা। সমস্ত লোকেশন আপনরা গাইড পেয়ে যাবেন, স্বল্প মুল্য বিনিময় ওনারা আপনাদের ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে ধরবেন।
📌গঠন বৈচিত্রে ও উৎকৃষ্ট পোড়ামাটির আলংকারিক কারুকার্যে বিষ্ণুপুরের কেষ্টরায় মন্দিরটি বিখ্যাত। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, দক্ষিণ মুখী মন্দিরটি 'জোড়বাংলা' শৈলীর। দুটি 'দোচালা' বা 'এক বাংলা' পাশাপাশি জোড়া থাকলে বলা হয় জোড়বাংলা। এতে মন্দিরের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়। এই স্থায়িত্বকে আরও দৃঢ় করার জন্য আলোচ্য জোড়বাংলা মন্দিরের উপরে একটি চারচালা 'রত্ন' বসানো হয়েছে।
📌মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ১১.৮ মিটার, প্রস্থে ১১.৭ মিটার ও উচ্চতায় প্রায় ১০.৭ মিটার। বীর হাম্বীরের পুত্র রঘুনাথ সিংহ ৯৬১ মল্লাব্দে ( ১৬৫৫ খ্রীষ্টাব্দে ) এটির প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে উল্লেখ্য, বঙ্গাব্দের চেয়ে মল্লাব্দ ১০১ বছর কম।
📌পোড়ামাটির অলংকরণ বাইরের চারিদিকের দেওয়ালের সর্বত্র ও দালানের দেওয়াল এবং ছাদের নিম্নতলেও ব্যবহৃত হয়েছে। শুধু প্রাচুর্যই নয়, কারিগরি উৎকর্ষেও এ ভাস্কর্যগুলি খুবই উচ্চাঙ্গের। কৃষ্ণলীলা, রামায়ন-মহাভারতের কাহিনী, পৌরাণিক উপাখ্যান, হিন্দু দেবলোকের অজস্র চিত্র ছাড়াও বন্য প্রাণী, শিকার দৃশ্য এবং স্থল ও নৌযুদ্ধের ভাস্কর্যও এখানে ব্যবহৃত হয়েছে। মন্দিরের দক্ষিণ দিকে কৃষ্ণলীলা ও পশ্চিম দেওয়ালে আছে রামকথা। রামজন্ম থেকে আরাম্ভ করে তারাকাবধ এবং রামের বিবাহ। পশ্চিমের দেওয়ালে ভয়ঙ্কর দেবীযুদ্ধের নিচে আছে গনেশজননী। অষ্টমাতৃকা মূর্তিও চিত্রিত হয়েছে। পর্তুগিজ যুদ্ধও যেমন চিত্রিত হয়েছে , তেমনিই মোঘল-সামন্তদের আভিজাত্য ও বিলাস ব্যসনও চিত্রিত হয়েছে। মন্দিরে কোন বিগ্রহ নেই।
📌মন্দিরটি ঘোরার পর শুরু হোলো আমাদের ফটো সেশন।ক্যামেরা বন্দি করলাম বেশকিছু সুন্দর মুহূর্ত।
📌এই সুন্দর জায়গা গুলি রক্ষা করার দায়বদ্ধতা আমাদের সকলএর।
🖋️আজকের গল্প এই পর্য্যন্ত আবার দেখা হবে পরের পর্বে। ভালো লাগলে লাইক এন্ড শেয়ার করবেন। ভুল ত্রুটি
মার্জনীয়।
শুভরাত্রি। ❤️
…to be continued
Travel with Raktim