14/01/2024
Guest Er Sundor Reviews
Prankishore Net Cafe & Travels
# অরণ্যের ডাকে।
# ভ্রমন কাহিনী।
#সুদেষ্ণামুখার্জী। 🙏
ভ্রমনের নেশা বড্ড সাংঘাতিক, একবার যে এই নেশায় মজেছে সেই জানে।
আমাদের যখন এই নেশা চাপে তখন আর কোনো
বাধা আটকাতে পারে না।
এইবার যেমন দেড় মাস আগে ইচ্ছে হলো বেড়াতে যেতে হবে। ইচ্ছে হলো রাজস্থান যাব।অনেক দিনের প্রোগ্ৰাম তাই ট্যুর কোম্পানির সাথে যাব ঠিক করেছিলাম, কিন্তু গিয়ে দেখি,”ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই।”অতএব বিকল্পের খোঁজে Dooars যাওয়া স্থীর হলো।
খোঁজ মিলল, শ্রী প্রানকিশোর দাসের, অল্প বয়সী ভদ্র সুন্দর একটি ছেলে।আমাদের ট্যুর এরেঞ্জ করে দিয়েছিল,ওর মাধ্যমেই আমাদের রিসোর্ট ,গাড়ি এমন কি ‘হলং বাংলো ‘বুকিং,তাছাড়া সাফারি, সব নিঁখুতভাবে সাজিয়ে দিয়েছিল।
আমাদের একটুও অসুবিধা হয়নি, আবার উপহার হিসেবে চা পাতা দিয়েছে।ওর পরামর্শেই আমাদের
ভুটান কোচবিহারটাও ছুঁয়ে আসা গেছে।
সব তো জোগাড় হোলো কিন্তু কোনো ট্রেনের টিকিট নেই , ঐযে নেশা চেপেছে যেতেই হবে।
ফ্লাইটে যাওয়া আসা। ডিসেম্বরের ঠান্ডায় ভোরের ফ্লাইটে চেপে বসলাম।(যদিও তেমন ঠান্ডা আর কোথায়?) সাড়ে ছটায় ফ্লাইট ছেড়ে পঞ্চাশ মিনিটের মাথায় বাগডোগরা।
আর প্লেন থেকে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন! আহা মন আনন্দে ভরে গেল!
লাগেজ কালেক্ট করে বেরিয়ে এসে দেখা আমাদের এ কদিনের সঙ্গী চালক কাম গাইড সুকুমার বর্মনের সাথে।এর কথা একটু আলাদা ভাবে বলতেই হয় কারণ এর জন্যে আমাদের এবারের ঘোরা মসৃণ ভাবে হয়েছে তাই শুধু না,প্লানের বাইরেও অনেক জায়গা দেখেছি ঘুরেছি। শুধু তাই নয় সজাগ সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে আমাদের সুবিধা অসুবিধার দিকে। ধন্যবাদ আরও একবার প্রানকিশোর কে এমন একজনকে সাথে দেবার জন্য।
আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল মূর্তি, দুপাশের চোখ জুড়ানো সবুজ চা বাগান, ক্লান্ত চোখের আরাম দিচ্ছিল।প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার জার্নি সেরে পৌঁছে গেলাম ,”Land of Elephant.” Resort এ।
প্রসঙ্গত বলে রাখি আমি কোনো ব্লগার নই,কাজেই আমি কোনো Resort এর প্রমোশন ও করছি না, শুধু আমার অভিজ্ঞতা, ভালো লাগাটাই
ভাগ করে নিচ্ছি।
এই ট্যুরে আমি চারটি আলাদা জায়গায় ছিলাম তার মধ্যে সেরা লেগেছে এই রিসোর্টটা, প্রথমেই চোখ জুড়িয়ে গেল ফুলের বাগান আর পেছনেই জঙ্গল, বেশ বড় সাইজের সাজানো সুন্দর ঘর এবং পরিচ্ছন্ন এবং সর্ব সুবিধা যুক্ত টয়লেট।
মন ভালো হয়ে গেল।
আলাপ হলো রিসর্টের কর্ণধার সোদপুর থেকে আসা দুই বন্ধু দেবকুমার দে আর দেবব্রত বিশ্বাস।(দেবু আর মোহর) সদা সতর্ক দৃষ্টি অতিথিদের দিকে আর ভীষণ আলাপি।কত গল্প যে আমরা করেছি।
রবি আর পুঁচকে দুটো হাসি মুখের ছোট ছেলে দেখাশোনা করে চলেছে একটুও বিরক্তি নেই।
রাতে ফ্লাক্সে চা,গরম জলটাও গুছিয়ে দিয়েছে।
ওদের কাছেই শুনলাম জঙ্গলের বেঁচে থাকার লড়াই,হাতি কিভাবে ফসল নষ্ট করে,প্রান যায় প্রতি বছর কত লোকের। তবুও কিন্তু জঙ্গলের প্রানীদের উপর ওদের অভিযোগ নেই ওরা দোষ দেয় নিজেদের।
সবচেয়ে ভালো চা এখানেই খেয়েছি আর যতবার চেয়েছি ততবার পেয়েছি ,কি যে ভালো রান্না করেন এখানের কুক ! এখনো মুখে লেগে আছে।
দুটোদিনের স্মৃতি অমলিন থাকবে।
সুকুমার বলল বেড়াতে এসে ঘরে বসে থেকে কি করবেন ,তার থেকে চলুন আজকে মূর্তির আশেপাশের জায়গাগুলো দেখে নিই সেইমতো লাঞ্চ সেরে নিয়ে আমরা দেখে নিলাম Samsing tea estate,Laligoras view point, Rocky Island. তারপর ফিরে গরম গরম চা সাথে তেলেভাজা খেয়ে রেস্ট, রাতে যত্ন করে রুটি চিকেন বেগুন ভাজা মিষ্টি দিয়ে ডিনার সেরে ঘুম।
পরদিন আমাদের সাড়ে ছটায় জিপ সাফারি বুক করা ছিল, রিসোর্টে গাড়ি চলে এলো ঠিক পৌনে ছয়টায় ,আমাদের নিয়ে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের গাড়ি ছুটে চলল অন্ধকারের বুক চিরে, ভোরের আলো ফুটিফুটি করছে, জঙ্গল, চা বাগান,ময়ূরের
কেকাধ্বনি আর অস়ংখ্য পাখির কলকাকলিতে ঘুম ভাঙছে অরণ্যের।
প্রবেশ পথে এক এক করে জিপ এসে দাঁড়ালো, ঠিক সাড়ে ছটায় যাত্রা শুরু হোলো।এ ট্রিপে আমাদের হরিন আর অস়ংখ্য ময়ূরের দেখা মিললেও আর কিছু দেখতে পাইনি কিন্তু ভোরের শিশির ভেজা জঙ্গলের ঘোরার অনুভূতিই আলাদা।
Dooars এর বুক চিরে অস়ংখ্য নদী বয়ে গেছে, মূর্তি, তিস্তা, তোর্সা,জলঢাকা,কালাচিনি,হলং
সব নদীর সাথেই সাক্ষাৎ হয়েছে কিন্তু কোন নদী কোন পথের বাঁকে দেখা দিয়েছে তা মনে রাখতে পারিনি,এ আমার অক্ষমতা। তবে এ শীতে সব নদী শীর্ণ কায়া কিন্তু স্বচ্ছ সলিলা, এতো স্বচ্ছ যে জলের নিচের পাথর ও পরিষ্কার দেখা যায়।
যাইহোক সাফারি সেরে এসে আমরা স্নান সেরে ব্রেকফাস্ট করে নিয়ে চললাম লাভার উদ্দেশ্যে।
এটা আমাদের প্লানে ছিল না, সুকুমার পরামর্শ দিল এতো কাছে যখন দেখেই নিন।লাভা মনস্ট্রি ভীষণ সুন্দর, আশেপাশের ভিউ তো চোখ জুড়ানো, আরও কয়েকটি জায়গা দেখে লাঞ্চ সেরে বিকেলে ফিরলাম। পরদিন এই সুন্দর জায়গাটা এই সুন্দর মানুষদের ছেড়ে যেতে হবে ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেল।
পরদিন সকালে মূর্তি ছেড়ে আমরা রওনা দিলাম জলদাপাড়ার উদ্দেশ্য। ভালো থেকো তোমরা,
সবাই, অনেক অতিথির ভীড়ে আমাদের হয়ত তোমরা ভুলে যাবে কিন্তু তোমাদের আতিথেয়তা আমার মনে থাকবে।
জলদাপাড়ায় আমরা ছিলাম “অরণ্যের দিনরাত্রি” রিসোর্টে যার একদম পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে হলং নদী আর সামনে জঙ্গল, পুরো সার্থক নাম। এখানকার ওনার শ্রী নীলোৎপল বসু অসম্ভব ভদ্র একজন মানুষ এবং ভীষণ যত্নবান ,বাড়ি কিন্তু শ্রীরামপুর, কে বলে বাঙালি ব্যবসা করে না?গিয়ে দেখে আসুন বাঙালি সব ক্ষেত্রেই নিজের সাক্ষর কেমন রাখছে,ওখানে লক্ষ্মী দি আর বুদ্ধদা স্বামী স্ত্রী দুজনে অতিথিদের দেখাশোনা করেন হাসিমুখে।নতুন রিসোর্ট কাজেই কিছু ত্রুটি হয়ে যায় ঐটুকু বাদ দিলে মন ভরে যাবে পরিবেশে।
ঐদিন বিকেল সাড়ে তিনটের জিপ সাফারি ছিল বেশ কটা স্পট ছিল তার মধ্যে ছিল হলং বাংলো
আর একদম শেষে ছিল আদিবাসী নৃত্য, স্থানীয় বোরো জাতির নাচ গান এবং তাদের নিজস্ব বাদ্য
সহযোগে,বেশ মনোরম।মন একটু খারাপ ছিল কারণ যাবার সময় ঐ হরিন আর ময়ূর ছাড়া আর
কিছু দেখতে পাইনি কিন্তু অন্ধকার চিরে ফেরার সময় প্রথম গন্ডারের দেখা পেলাম।
মন খুশ!আর অন্ধকারের জঙ্গলের আলাদা মেজাজ সেটাও অনুভব করতে হয়।
পরদিন আমাদের সারাদিনের প্রোগ্রাম ছিল, সকালে ব্রেকফাস্ট সেরেই বেরিয়ে পড়লাম, সোজা গেলাম কোচবিহারের মদন মোহন মন্দিরে।
অসাধারণ লাগলো, মাঝখানে মদন মোহন বিরাজ
করছেন আর দুপাশে আরো দেব দেবী রয়েছেন।
সাদা সুন্দর মন্দির। কোনো পান্ডা পুরোহিতের জুলুম নেই, নেই কোনো অযথা ভীড়। দেব দর্শন সেরে এবার গেলাম রাজ দর্শনে, অর্থাৎ কোচবিহারের রাজবাড়ীতে, কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দেখতে থাকলাম।কি বিশাল রাজপ্রাসাদ!যেন
চোখের সম্মুখে দেখতে পেলাম,সেই বৈভব,লোক
লস্কর,গমগম করছে রাজপ্রাসাদ।
কালের নিয়মে আজ তারা কোথায় হারিয়ে গেছে!
স্থানীয় লোকজন বললেন এই পরিবারের আজ আর কেউ নেই।
কিছুটা অংশ মিউজিয়াম করে রাখা আছে। বাকি বন্ধ। তবে খুব সুন্দর বাগান, পুরোটাই পরিচ্ছন্ন সাজানো গোছানো।
ওখানেই দেখে নিলাম বানেশ্বর শিব মন্দির,যার প্রধান আকর্ষণ ছিল পুকুরে কাছিম ছাড়া রয়েছে।
কোচবিহার দেখা শেষ করে গাড়ি ছুটে চলল জয়ন্তীর উদ্দেশ্য, আমরা প্রথমে গেলাম রাজাভাত খাওয়া, ওখানে একটা ফরেস্ট মিউজিয়াম আছে।
ছোট্ট কিন্তু বেশ সুন্দর। সেটা দেখে নিয়ে।
এগিয়ে চললাম ,সুকুমার সব বর্ণনা দিচ্ছিল কিন্তু জঙ্গলের দৃশ্যে মুগ্ধ হয়ে ছিলাম, সঠিকভাবে মনে নেই পরপর কি কি ছিল।
বক্সা জঙ্গলের ভেতর একটা কারাগারে নাকি নেতাজিকে 🙏 বন্দী করে রাখা হয়েছিল। সেটা ট্রেক করে যেতে হয়, সময়াভাবে আর পায়ের সমস্যার জন্য যেতে পারিনি ,কিন্তু ভ্যাগ্যিস যাইনি!গেলে দূর্দান্ত দৃশ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে যেতাম।
জয়ন্তীর দিকে যখন যাচ্ছি তখন প্রায় দশ বারোটা হাতির দল রাস্তা পার হলো।দলে ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাও ছিল। সবচেয়ে বড় হাতিটা সবাই কে পার করে দিয়ে একদম শেষে পার হোলো, ঠিক যেন বাড়ির কর্তা।
অবশেষে আমরা জয়ন্তীতে নদীর ধারে পৌঁছে গেলাম, ওখানেও জিপ সাফারি হয়, শুকনো নদীর ওপর দিয়ে ওপারে নিয়ে গিয়ে ঘুরিয়ে আনে। আমরা এটা আর গেলাম না,প্রবল খিদে পেয়েছিল তাই লাঞ্চ করে নিয়ে একটু রেস্ট নিয়ে চললাম,“ সিকিয়া ঝোড়া”
আগেই বলেছিলাম সুকুমারের জন্যে আমরা অনেক বেশি আর দূর্দান্ত জায়গা দেখেছি,এই “সিকিয়া ঝোড়া “ কিন্তু আমাদের প্লানের বাইরে
ওর পরামর্শেই ঘোরা ,যারা ঘুরতে যাবেন তারা অবশ্যই এই জায়গায় যাবেন।
একটা অগভীর কচুরিপানা ভর্তি নদী জঙ্গলের বুক চিরে চলছে আর আমরা চলেছি লগি টানা নৌকায় ,একদম প্রায় গা ঘেঁষে ঘন জঙ্গল ,পাশ দিয়ে যে খাঁড়ি গুলো মূল নদীতে এসে মিশেছে,তার ভেতরে দৃষ্টি যায় না, গভীর অন্ধকার।
অদ্ভুত রোমাঞ্চকর এই নৌকা যাত্রা।
অস্তমিত সূর্য কে সাক্ষী রেখে হোটেলে ফিরলাম আঁধার নেমেছে তখন।
পরদিন “ হলং বাংলো”। সকাল নটায় বের হলাম যদিও সাড়ে এগারোটার আগে এন্ট্রি দেবে না কিন্তু আগে গেলে আগে পাবে এই নিয়ম তাই সকাল সকাল গিয়ে লাইন দেওয়া, সাড়ে এগারোটায় এন্ট্রি নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পৌঁছে গেলাম হলং নদীর ধারে হলং বাংলো,এই জায়গাটার ঐতিহ্য গরিমার একটা ব্যাপার আছে।
লনের সামনে দিয়ে বয়ে চলেছে হলং নদী ইলেকট্রিক ব্যারা দিয়ে ঘেরা তার ঠিক উল্টো দিকে খানিকটা খোলা জায়গা স্লট পিট ,লবণ দেওয়া থাকে, জঙ্গল থেকে জন্তুরা আসে লবণ খেতে। আমরা ছয় সাতটা গন্ডার, সম্বর আর অস়ংখ্য ময়ূরের দেখা পেলাম। আমরা গোটা দিনটা আর কোথাও যাইনি সেদিন, উপভোগ করেছি অনুভব করেছি বন্য প্রান।
পরদিন সকালে হাতির পিঠে সাফারি, এটা অবশ্যই করবেন ,বন জঙ্গল ঠেলে হাতির এগিয়ে যাওয়া দূর্দান্ত!! ঈগল দেখা গেল আর গন্ডার।
ফিরে এসে হলং কে বিদায় জানিয়ে আমরা চললাম ভুটানের উদ্দেশ্যে ।
ভুটান যেতে আধার কার্ড আর ভোটার কার্ডের অরজিনাল লাগবে।গাড়ি ছেড়ে পায়ে হেঁটে ইমিগ্রেশনের লাইন পেরিয়ে যেতে হবে আর গাড়ি আলাদা যাবে।
দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে আমরা ফুন্টশলিং প্রবেশ করলাম। ভীষণ সুন্দর ভুটান, ওখানে রাস্তায় কেউ গাড়ির হর্ন বাজায় না,জেব্রা ক্রসিং দিয়েই কেবল মানুষ রাস্তা পার করে, মানুষ পার হলে গাড়ি থেমে যায়। রাস্তায় কেউ ময়লা ফেলে না।
ওখানে দুটো মনস্ট্রি আর একটা ঝুলন্ত ব্রিজ দেখলাম,এই টুকু দেখার পারমিশন দেয়, বাকিটা দেখতে গেলে আলাদা পারমিট করাতে হয়।
আবার এক নিয়মে হেঁটে ইমিগ্রেশনের দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে ভারতে আসা। এপারে এসে লাঞ্চ করে আমাদের এই ট্রিপের শেষ আশ্রয় ‘জলদাপাড়া জঙ্গল ইকো রিসোর্ট ‘ দূর্দান্ত !কারণ একদম চা বাগানের ভেতরে, না আছে চারিপাশে কোনো বাড়ি ,না আছে কোনো হোটেল, অনেকটা জায়গা নিয়ে বাগান, ছোট্ট পার্ক ফুল বাগান নিয়ে রিসোর্টটা।
সব ভালো কিন্তু টয়লেট পরিষ্কার কিন্তু এতো দূর্গন্ধ কেন কে জানে?বলেও কোনো লাভ হোলো না,যাইহোক আমরা ওখানে একরাত ই ছিলাম তাই কাটিয়ে দিলাম, পরদিন এগারোটার মধ্যে চেকআউট করে বাগডোগরার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়লাম।
সুকুমারের কথা দিয়ে শেষ করি, সুকুমার এতো ভালো জঙ্গলের যেখানে প্লাস্টিকের প্যাকেট দেখেছে কুড়িয়ে গাড়িতে রেখেছে কারণ যাতে কোনো জন্তু খেয়ে না ফেলে ,তাতে প্রানীগুলোর প্রান যেতেও পারে।বোট রাইডের সময় ও আমরা নদী থেকে জলের বোতল তুলে নৌকায় নিয়ে ফিরেছি। আসুন আমরা ছোটছোট কিছু জিনিষ মেনে চলি তাহলেই কিন্তু চারিদিক পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে।
এই যে আমরা হাতির হানায় মানুষের প্রান যেতে দেখি বা অনেক ক্ষতি হতে দেখি,সে প্রসঙ্গে সুকুমার খুব সুন্দর কথা বলেছে,” এই জঙ্গল হচ্ছে ওদের বাড়ি আমরা ওদের বাড়ি তে এসে সব এলোমেলো করে দিচ্ছি, আমাদের বাড়িতে এসে কোনো লোক যদি সব লন্ডভন্ড করে দেয় আমরা যেমন প্রতিরোধ করব ওরাও ঠিক সেটাই করে। ওদের কোনো দোষ নেই। ওদের বিরক্ত না করলে ওরাও কোনো ক্ষতি করে না।”
কত সুন্দর মূল্যবোধ!
ভালো থাকুক প্রকৃতির মাঝে ওরা সবাই।
কিছু ভালো জিনিসের সাথে কিছু খারাপ নজরে এসেছে, ভালো বলতে প্রচুর নতুন গাছ লাগানো হয়েছে সেগুলো সুন্দর বেড়ে উঠছে।
জঙ্গলে এতো রিসোর্ট কেন তৈরি হচ্ছে কে জানে?এতে বনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবার সমূহ সম্ভাবনা। যেটুকু জানলাম ওখানের বাসিন্দাদের কাছে। চিকিৎসা,স্যুয়ারেজ,গার্বেজ ফেলার প্রপার এরেঞ্জমেন্ট এবং অবশ্যই পানীয় জলের সঠিক বন্দোবস্তের অভাব রয়েছে।
আশাকরি আগামীদিনে এগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।
*****************************************