14/05/2016
ইতিহাস থেকে বলি, দিল্লির সুলতান তখন মোগলরা। সম্রাট বাবর, আকবর, জাহাঙ্গীর...। দিল্লি তো মরুময়। গ্রীষ্মের দাবদাহে দিল্লি হলো জ্বলন্ত আগুনের কুণ্ডলি। মোগল শাহীর মসনদ তখন ফুটন্ত কড়াই। তাই তাঁরা অবকাশ অন্বেষণ করতেন সে সময়। কাশ্মীর ছিল মোগল বাদশাহদের অবকাশযাপনেরই প্রমোদবাগান। এখনো যদি যান কাশ্মীরে দেখে আসতে পারবেন বিখ্যাত মোগল বাগানগুলো।
চশমাশাহী, পরিমহল, শালিমার, নিশাত, ভেরি নাগ, আচ্ছাবাল ইত্যাদি। উপলব্ধি করতে পারবেন পর্বতের ঢাল বেয়ে নামা পানির প্রবাহকে কীভাবে সুসজ্জিত করেছিল মোগলরা। মূলত গ্রীষ্মকালের অবকাশযাপনের জন্যই মোগল বাদশাহরা আকৃষ্ট হয়েছিল কাশ্মীরের প্রতি। মোগল বাদশাহ জাহাঙ্গীর কাশ্মীরকে প্রথম তুলনা করেছিলেন স্বর্গের সঙ্গে। তাঁর আকুল আকাঙ্ক্ষা ছিল কাশ্মীরের তৃণভূমিতে মৃত্যুবরণ করার। তিনি ফার্সি ভাষায় বলেছিলেন, ‘আগার ফেরদৌস বে-রোহী যামীন আস্ত্। হামীন আস্ত্, হামীন আস্ত্, হামীন আস্ত্। যদি পৃথিবীতে কোনো বেহেশত থেকে থাকে, তাহলে তা এখানে, এখানে, এখানে।
হিমালয়ান পর্বতমালার দুটি রেঞ্জের মধ্যবর্তী একটি উপত্যকা মূলত কাশ্মীর। ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ আর ৩২ কিলোমিটার প্রস্থের এ উপত্যকার একপাশে হিমালয়ের মাঝারি পর্বতমালা (Middle Himalayans), অন্য পাশে সুউচ্চ পর্বতমালা (Greater Himalayans)। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে ঝিলাম (জেহলাম) নদী। দক্ষিণে অনন্তনাগ (স্থানীয়ভাবে বলে ইসলামাবাদ), সোপিয়ান, কুলগাম ও পুলওয়ামা; মধ্যখানে বাডগাম ও গ্যান্ডারবাল ও শ্রীনগর এবং উত্তরে বারামুলা, বান্ডিপুরা ও কপুওয়ারা। এই দশটি প্রশাসনিক জেলায় বিভক্ত এ উপত্যকা। ভৌগোলিকভাবে তিন ভাগে ভাগ করা হয়, সেন্ট্রাল, নর্থ ও সাউথ। পুরো জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীরের মোট জনসংখ্যা এক কোটি ২৫ লাখ। কাশ্মীর উপত্যকার জনসংখ্যা প্রায় ৫৩ লাখ।
যেভাবে যাবেন কাশ্মীরে
কাশ্মীর যেতে হলে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক বিমানে প্রথম যেতে হবে দিল্লি ইন্ধিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। অথবা ঢাকা থেকে কলকাতা। পরে সেখান থেকে ডোমেস্টিক বিমানে জম্মু অথবা শ্রীনগর বিমানবন্দরে যাওয়া যাবে। কলকাতা থেকে সরাসরি শ্রীনগরে কোনো ফ্লাইট নেই। তাই, দিল্লি হয়ে যেতে হয়। তবে, ঢাকা-কলকাতা-দিল্লি-শ্রীনগর এই ভাবে ভেঙে ভেঙে গেলে খরচ কম হয় তুলনামূলকভাবে। এ ছাড়া অন্তত এক মাস আগে টিকেট বরাদ্দ করে রাখতে পারলে কম খরচেই বিমানে সফর করা সম্ভব।
শ্রীনগর বিমানবন্দরে অবতরণের আগেই জানালা দিয়ে চোখে পড়বে পর্বতের চূড়ায় চিকচিক করা সাদা তুষার। মনে হবে যেন অগণিত টিনের চালে রৌদ্রের বিকিরণ। কলকাতা বা দিল্লি থেকে বাস বা ট্রেনযোগে যাওয়া যায়। কলকাতার ট্রেন ৪১-৪৫ ঘণ্টায় আপনাকে নামিয়ে দিতে পারে জম্মুতে। জম্মু থেকে মাত্র ২৫ মিনিট বিমানে উড়ে যেতে পারেন শ্রীনগর। সেখানে দেখবেন আরো নিকট থেকে তুষারের মুকুট পরানো পর্বতরাজি। পর্বতের গায়ে তুষারের আচ্ছাদন আর তুলার বলের মতো মেঘের মধ্যে কোলাকুলি-গলাগলি দেখতে পাবেন।
তবে, শীতকালে জম্মু থেকে কাশ্মীরে যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ থাকার সম্ভাবনা প্রবল। জওহর টানেল। একমাত্র যোগাযোগের রাস্তা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে চার হাজার ফুটের বেশি উঁচুতে পর্বতের বুক ফুঁড়ে নির্মিত সুদীর্ঘ সুড়ঙ্গ। মার্চ-এপ্রিল মাসে প্রায়ই বৃষ্টি হয় কাশ্মীরে/হিমালয়ে। তখনো ওই রাস্তা হয়ে যায় বন্ধ। কারণ, ভূমিধ্স। অর্থাৎ ভূ-পথে একমাত্র যোগাযোগের রাস্তাটি বারোমাসি নয়। মাঝেমধ্যেই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেলে কাশ্মীর হয়ে পড়ে বন্দি, অবরুদ্ধ। আরেকটি রাস্তা আছে, যেটি বারো মাস যোগাযোগের উপযোগী। সেটি হলো শ্রীনগর-মোজাফফরাবাদ রোড। সেই পথ চালু থাকলে সড়কপথে কাশ্মীর যুক্ত হতে পারে, মক্কা, মদিনা, তেহরান পর্যন্ত। মাত্র ১২০০ কিলোমিটার পেরিয়ে সেপথে কাশ্মীরের পণ্য, শাল-শুকনো ফল, গিয়ে উঠতে পারে করাচি বন্দরের জাহাজে। ছড়িয়ে পড়তে পারে পৃথিবীর দেশে দেশে সহজেই। সে পথে এখন জনতার যাতায়াত নিষিদ্ধ, নিয়ন্ত্রিত। কারণ মোজাফফরাবাদ এখন পাকিস্তানের অধীনে।
সেই সড়কের মধ্যখানে স্থাপিত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের লাইন অব কন্ট্রোল। একপাশে ভারতীয় সৈন্য, অন্যপাশে পাকিস্তানের। এধার তুম, ওধার হাম। সুতরাং, আপনাকে কাশ্মীর যেতে হবে হয় আকাশপথে, নয়তো পর্বত মাড়িয়ে প্রকৃতির করুণার ওপর ভরসা করে, জওহর টানেল অতিক্রম করে। আকাশ কিংবা স্থল যেপথেই যেতে চান না কেন, সবার আগে নিয়ে নিন ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ট্যুরিস্ট ভিসা।
এবার স্থলপথে কাশ্মীর যেতে খরচের (টাকা) একটা সম্ভাব্য হিসাব দেওয়া যাক
ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে ১৮০০-২০০০ টাকা খরচ হবে গ্রিনলাইন, সোহাগ কিংবা শ্যামলীর এসি বাসে। এ ছাড়া খরচ কমানোর আরেকটি উপায় আছে। তা হলো, দেশের অভ্যন্তরীণ বাসে সীমান্ত পর্যন্ত যান। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের লোকাল বাস বা ট্রেনযোগে পৌঁছে যান কলকাতায়। যেমন, যদি হরিদাসপুর (বেনাপোল-পেট্রাপোল) সীমান্ত দিয়ে পার হতে চান তাহলে শুরুতে সাতক্ষীরার বাসে পৌঁছান নাভারন মোড় পর্যন্ত। নাভারন থেকে অটোরিকশায় বেনাপোল পৌঁছাতে খরচ হবে মাত্র ২০ টাকা। সীমান্তে দুই দেশের ইমিগ্রেশন পেরিয়ে আরেকটি অটোরিকশায় ২০ রুপি নেবে বনগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত। বনগাঁও থেকে কলকাতার ট্রেন পাওয়া যায় প্রায় প্রতি ঘণ্টায়ই। টিকেট হবে ২০-৩০ রুপি।
সীমান্ত পেরিয়েই আপনার হাতের টাকাগুলোকে বদলে নিতে হবে রুপিতে। সেক্ষেত্রে বুদ্ধিমানের কাজ হবে, আগে থেকেই অনলাইনে রুপি ও টাকার মূল্যমান জেনে নেওয়া। যে যানবাহনেই যান না কেন, সীমান্ত পেরোতে হবে পায়ে হেঁটেই। আর সীমান্তে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে আপনাকে দিতে হবে ৫০০ টাকা বিদেশ ভ্রমণ ট্যাক্স।
কলকাতায় পৌঁছে একটু বিশ্রাম নিন। তারপর সন্ধ্যার দিকেই সাধারণত ছাড়ে জম্মুর উদ্দেশে ট্রেন। জম্মু-তাওবি এক্সপ্রেস। তবে নিশ্চিত থাকুন! যখন তখন আসন পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ভারতীয় রেলস্টেশনে বিদেশিদের জন্য কোটা থাকে।
সেখানে সৌভাগ্যক্রমে আসন পেয়েও যেতে পারেন। বুদ্ধিমানের কাজ হবে, আগে থেকেই কলকাতায় কোনো বন্ধুর মাধ্যমে টিকেট কেটে রাখা। এ ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে কোনো ট্যুরিস্ট গাইডও। কলকাতা থেকে জম্মুর ট্রেন ভাড়া সাধারণ স্লিপিং ক্লাসে ৮০০-৯০০ রুপি। আর এসি ক্লাসে তার মূল্য ১৬০০-১৭০০ রুপি। জম্মু পৌঁছাতে লাগতে পারে ৩৭ থেকে ৪৪ ঘণ্টা। সেখানে নেমেই দেখা যাবে শ্রীনগরের উদ্দেশে মিনিবাস ও মাইক্রোবাসগুলো। ভাড়া হবে জনপ্রতি ৭০০-৮০০ টাকা। যাত্রাপথ বড়জোর ৮-১০ ঘণ্টার। শ্রীনগরে হোটেল প্রায় সব সময়ই পাওয়া যায়। ডাল গেট এলাকার হোটেলগুলোই সবচেয়ে সুবিধার পর্যটকদের জন্য। দুই বেডের কক্ষের ভাড়া হতে পারে মৌসুমভেদে ১২০০-১৫০০ রুপি। চাইলে দুই বেডের কক্ষে তিনজনও থাকা সম্ভব।
গাইড নেবেন কীভাবে
সাধারণত বাংলাদেশ থেকে যারা বেড়াতে যায় তারা কলকাতা থেকে কিংবা ঢাকা থেকে গাইড/ট্যুরিস্ট এজেন্ট নিয়ে থাকেন। ঢাকায় গাইডরা ভিসা প্রসেসিংয়ে সহায়তা করতে পারে। কলকাতার গাইডের একমাত্র কাজ হয়, ট্রেনের টিকেট বুকিং করা। বাকি কোনো কাজেই গাইডের প্রয়োজন হয় না কলকাতায়। সাধারণত, কলকাতা থেকে একজন গাইড পুরোপথ সঙ্গে যায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, খুব কম লোকই পাওয়া যায় যারা কাশ্মীরি সমাজের বিষয়ে আপনাকে গভীর একটি ধারণা দিতে পারবে। সবচেয়ে ভালো হয় কোনো কাশ্মীরির সহায়তা নিলে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আগে থেকেই যোগাযোগ করলে কাশ্মীর থেকেও ওরা কেটে রাখতে পারবে আপনার ট্রেনের টিকেট।
ফেসবুকের মাধ্যমেও যোগাযোগ করতে পারেন ফ্রিল্যান্স গাইডের সঙ্গেও। যেমন মিরাজ উদদীন, যিনি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সম্পর্কের ওপর এমএ, তাঁর ফেসবুক পেজের (https://www.facebook.com/cw.kashmir/timeline ) মাধ্যমে শুরু করেছে বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণসহায়তার কাজ। তাঁর এই পেজের নাম কানেক্ট দ্য ওয়ার্ল্ড। এ ছাড়া গুগল সার্চ আপনাকে দেবে অন্য প্রায় সব তথ্য। তা ছাড়া এনটিভি অনলাইনে প্রকাশিত কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থান ও মৌসুমের ওপর আলাদা আলাদা ফিচারগুলোতে যাওয়ার আগে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। যেমন আপেল বনের দেশে, ঝিলাম নদের মূলে, টিউলিপের বাগানে একদিন, কাশ্মীরের পেহেলগামে একদিন, এনটিভি অনলাইনের বর্ষপূর্তি ও কাশ্মীর অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।
কখন যাবেন কাশ্মীর
কাশ্মীর মূলত অল ওয়েদার ট্যুরিস্ট এরিয়া। আবহাওয়া ও ভৌগোলিক দিক থেকে কাশ্মীরের মৌসুম চারটি। গ্রীষ্ম (জুন, জুলাই, আগস্ট), শরৎ (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর), শীত (ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি) ও বসন্ত (মার্চ, এপ্রিল, মে)। পর্যটনের ভাষায় মৌসুমগুলোকে বলা হয়, গ্রিনভ্যালি, ফ্রুট ভ্যালি, আর ফ্লাওয়ার ভ্যালি। চার মৌসুমে কাশ্মীরের চার রূপ। তবে শীতে কাশ্মীর ভ্রমণ করতে হলে আপনাকে রাখতে হবে বাড়তি প্রস্তুতি। গরম কাপড়, গ্লাভস, বুট সেখানে আবশ্যক। যারা স্থলপথে যেতে চান, মার্চ, এপ্রিল ও ডিসেম্বর-জানুয়ারি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ মধ্যপথে রাস্তা বন্ধ হলে আপনাকে ফিরে আসতে হতে পারে।
কতদিন, কোথায় বেড়াবেন
ঢাকা থেকে কাশ্মীর বেড়াতে হলে অন্তত ৯-১০ দিন সময় নিন। চার-পাঁচদিন যাবে পথে পথে। বাকি সময়টুকু বেড়িয়ে নিন মনের মতো করে। দেখে নিন, প্রকৃতির একান্ত কাছে বাস করা মানুষের জীবনাচরণ। সাধারণত, বিভিন্ন প্যাকেজের অধীনে পর্যটকদের নেওয়া হয়, পেহেলগাম, গুলমার্গ, সোনোমার্গ আর শ্রীনগরের ডাল লেকের চারপাশে অবস্থিত মোগল গার্ডেন ও হজরতবাল মসজিদ। কিন্তু এসবের বাইরে দুধপত্রী, কোকরনাগ, ডাকসুম কিংবা সিনথেনটপের সৌন্দর্য আসলে আরো মুগ্ধকর। আহারবালের জলপ্রপাতটিও অনন্য এক গন্তব্য। বাডগাম জেলার চারার-এ-শরীফে যাওয়ার রাস্তাটিতে না গেলে হিমালয়ের রূপ উপলব্ধি করা আমার মনে হয় অসম্ভব।
সেখান থেকে আরো ওপরে গেলে দেখা মেলে দুধগঙ্গার। উত্তরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম স্বাদুপানির লেকের নাম উলার লেক। গ্যান্ডারবালে আরেকটি ছোট্ট লেকের নাম মানসবাল। পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে মানসবালের দৃশ্য তো হতবাক হওয়ার মতো। আর শিক্ষিত, সচেতন মানুষদের অবশ্যই বলব, কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি না দেখে ফিরবেন না।
যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখবেন
১. কাশ্মীরে বর্ষাকাল বলে আলাদা মৌসুম নেই। তবে যেকোনো মুহূর্তে হতে পারে বৃষ্টি। সুতরাং ছাতা রাখুন সঙ্গে।
২. ভুলে গেলে চলবে না, কাশ্মীর একটি ‘সীমিত মাত্রার যুদ্ধক্ষেত্র’ (লো-ইনটেনসিটি ওয়ার জোন)। যেকোনো মুহূর্তে সেখানে হতে পারে কারফিউ কিংবা বনধ বা হরতাল। এসব কারণে আপনার সফরের মধ্যপথে দু-একদিন মাটি হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
৩. সন্ধ্যা ৮টার পর হোটেলের বাইরে অযথা ঘোরাফেরার বিষয়ে অবলম্বন করুন বিশেষ সতর্কতা। আর হ্যাঁ, সঙ্গে রাখুন পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। আশ্বস্ত হওয়ার বিষয় হচ্ছে, অন্যান্য পর্যটন এলাকার মতো গলাকাটা মূল্য কিংবা সেবার নামে প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা কাশ্মীরে কম।
কী ভাবছেন। কাশ্মীর যেতে অনেক খরচ, ঝক্কি-ঝামেলা অনেক? ভূ-স্বর্গ বেড়াতে যাবেন, একটু ঝক্কি-ঝামেলা তো পোহাতেই হবে। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা এড়িয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে আপনার কাশ্মীর ভ্রমণ নিশ্চিত করার পথটুকু বাতলে দিচ্ছি। তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক কাশ্মীর আসলে কী। এটি তো সাধারণ জ্ঞান, কাশ্মীর হলো ভূ-স্বর্গ। কাশ্মীর থেকে আসার পর প্রতিনিয়তই মানুষের প্রশ্ন, কী এমন জিনিস আছে যার কারণে কাশ্মীর পৃথিবীর স্বর্গ হয়ে উঠল? কিন্তু কাশ্মীরের সৌন্দর্য কল্পনাতীত নয়। বরং একটু চেষ্টাতেই দেখে আসা সম্ভব। এ হলো স্বচ্ছ-সবুজ মনোরম প্রকৃতির সৌন্দর্য। পর্বতের চূড়ায় উঠে আচমকা আবিষ্কৃত হওয়া অপার, অনাবিল সৌন্দর্য। পাহাড়ের পাশ দিয়ে প্রবাহিত জলপ্রপাতের সৌন্দর্য। ঘরের কিনার ঘেঁষে বয়ে চলা কিলবিল জলরাশির সৌন্দর্য। কালো পর্বতের কোলঘেঁষা সবুজ গাছের সারি, তার ওপরে নীল আকাশ আর নিচে তার প্রতিবিম্ব ধরা বিলের জল, মৌসুমি ফুল-ফল-প্রকৃতি; তার সঙ্গে দিন ও রাতে চাঁদ-সুরুজের আলো-আঁধারির খেলা। এই আর কম কিসে? একান্ত শান্ত, নিষ্কলুষ প্রকৃতির সঙ্গে একাকার হওয়ার চেয়ে সুন্দর, মহান, মনোরম দৃশ্য কী বা হতে পারে? এ জন্যই কাশ্মীর ভূ-স্বর