22/05/2023
নিদ্রার চর
নিদ্রা চর নামটি শুনলেই প্রথমেই আপনার মনে হতে পারে,এখানকার লোকজন গুলো কেবল ঘুমিয়ে দিন রাত কাটিয়ে থাকে, তেমনটা ভাববেন না, কোন এক গল্পে পড়েছিলাম এমন একটি দেশ ছিল, যেখানে মানুষ নিদ্রা স্বপ্নে বিভোর থাকতো, সে দেশের মানুষ গুলো ঘুমের ঘোরে হাঁটতে থাকে ।
গ্রামে মৃতদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েছে। গোড়ায় শুধু কতিপয় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাই আত্মহত্যা করেছিলেন। কিন্তু ক্রমে রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটল, সংক্রমণ ছড়াল মহামারির মত। রোগের লক্ষণ? ঘুমন্ত অবস্থায় ঘুরে বেড়ানো। চারিদিকে নিদ্রাচর মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
গ্রামের মানুষ যদিও এখনও মন শক্ত করে চোখ খোলা রেখে রাস্তায় হাঁটছে, দেখে বোঝা যায় তারা থেকেও নেই। তারা কথা ছুঁড়ে দেয় শূন্যে। অচিরেই রাস্তা ভরে যায় বিভ্রান্তচিত্ত জনগণে যাঁরা সকলেই মৃত্যুচিন্তায় আচ্ছন্ন। এই বিকারগ্রস্ত, প্রলাপী মানুষেরা সকলে চলেছে কাজে, হয়ত আসন্ন ঝড়ঝঞ্ঝার ভবিষ্যৎবাণী শুনে চাষের ক্ষেতে ছুটছে ফসল তুলতে অথবা প্রতিদ্বন্দ্বী কোনও নাপিতের চুল কাটার সেলুনে ডাকাতি করতে। জীবনের দৈনিক ঘটনা প্রবাহ এখনও তাঁদের উদ্বিগ্ন করলেও বোঝা যায় যে “জাগ্রত অবস্থায় তাঁরা যা করতে পারতেন না, তাই যেন স্বপ্নের বশে সম্ভব হচ্ছে”।
ঔপন্যাসিক ইয়াং লিয়াংকে-র (Yan Lianke) সাম্প্রতিক অনূদিত উপন্যাস ‘যেদিন সূর্য গেল অস্তাচলে’-র গল্প। ইয়াং লিয়াং এর গল্পের বাস্তবতা এভাবেই লিখেছেন তার গল্পে।
আমার গল্পে নিদ্রাচরের মানুষ গুলো একেবারে ভিন্ন তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে মাছ শিকার করে।তারা ঘুময়ের ঘোরে স্বপ্ন দেখেন না, তারা বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তাঁরা জেগে স্বপ্ন দেখেন না। নিদ্রা চরের কিশোর,বালক-বালিকা, যুবক- যুবতী, বয়স্ক বৃদ্ধ - বৃদ্ধি সবাই তাদের আপন কাজে ব্যস্ত।
আপনি যদি নিদ্রা ভ্রমনে যান আপনার কাছে প্রথমেই মনে হতে পারে, আপনি চিটাগাং এর গুলিয়াখালি চলে আসছেন । দেখতে ঠিক গুলিয়াখালির মত তবে ভিন্নতা আছে অনেক, এখানকার মানুষ মাছ এবং কাঁকড়া শিকারের ব্যস্তায় মগ্ন থাকেন। নিদ্রার বেলাভূমি এক মনোরম রোমান্সোকর দৃশ্যপট। যেখানে বড় গাছেরা কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ,দেখলে মনে হবে যেন কত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার স্বাক্ষী হয়েছে তাঁরা। সাগরের ঢেউ খেলে নিজ আনন্দে, পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে নিদ্রা হারিয়ে যাবে, ঘাসের ফাঁকে ফাঁকে শাঁস গুলো হাতের আঙুলগুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
যেভাবে আসতে পারেন নিদ্রা চরে।
দুই ভাবে যেতে পারেন , ঢাকা সায়দাবাদ থেকে বাসে করে বরগুনা সদরে, সেখান থেকে বাইকে করে নিদ্রা চরে চলে যেতে পারেন , বাইকে জন প্রতি ৩০০ করে নিবে, এছাড় নিজের প্রাইভেট কার করে যেতে পারেন।
নতুন জায়গায় নতুন অনুভূতি