17/11/2021
#ঘুড়িফিরি কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন ঃ পৃথিবীর ৩য় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্ঘা কাঞ্চনজঙ্ঘা চূঁড়া তেঁতুলিয়া থেকে দেখা যায়, এটা বিশ্বাস করতাম না, আজ নিজে দেখার পর বিশ্বাস করতে হলো। তেঁতুলিয়া রিসোর্ট থেকে স্পষ্ট দেখা গেল, উপভোগ করলাম খুব ভাল লাগার একটি মূহুর্ত। দূর্বল ক্যামরায় ভাল ছবি নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জেনে রাখা ভালঃ বাংলাবান্ধা হতে নেপালের দূরত্ব ৬১ কি:মি:, এভারেষ্ট চূড়া ৭৫ কি:মি:, ভূটান ৬৪ কি:মি:, চিন ২০০ কি:মি:, ভারতের দারজিলিং ৫৪ কি:মি:, ভারতের শিলিগুড়ী ৮ কি:মি:,
কাঞ্চনজঙ্ঘা ১০ কি:মি:।
উচ্চতায় পৃথিবীর তৃতীয়, যার উচ্চতা ২৮১৬৯ ফুট। হিমালয় পর্বতের ৫ টি শৃঙ্গের মধ্যে উচ্চতায় মাউন্ট এভারেস্ট প্রথম ও এইটি দ্বিতীয়। নেপাল ও সিকিমের সীমান্তবর্তীতে এইটি অবস্থিত। কাঞ্চনজঙ্ঘা নামকরণ হয়েছে নেপালী ভাষা " কাং চেং জেং গা " থেকে, যার অর্থ ঈশ্বরের পাঁচ ভান্ডার, এখানে হিমালয়ের পাঁচটি শৃঙ্গকে বুঝানো হয়েছে।
১৮৫২ সালের আগে এইটিকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বলা হতো। জয়ী ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড নামে দুইজন ব্রিটিশ পর্বত আরোহী সর্ব প্রথম ১৮৫৫ সালের ২৫ মে কাঞ্চনজঙ্ঘা গমন করেন। আরো কিছু পুনঃনিরীক্ষণ করার পর ১৮৫৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় যে কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বরফের মজুদ আছে উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরুতে। এই দুই মেরুর কথা যদি বাদ দেই তাহলে সবচেয়ে বেশি বরফ ধারণ করে রেখেছে হিমালয় পর্বতমালা। আর এই হিমালয়ের সবচেয়ে বড় পর্বতশৃঙ্গ হচ্ছে মাউন্ট এভারেস্ট। আর “মাউন্ট এভারেস্টের” পরেই যে শৃঙ্গটির নাম আসবে সেটি হচ্ছে “কাঞ্চনজঙ্ঘা”।
কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় রূপ যে কাউকে সত্যিই মোহিত করতে বাধ্য। কারন, সূর্যের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাতে থাকে এর রূপ। প্রথমে টুকটুকে লাল, হঠাৎ সেই লাল পাল্টে হয়ে যায় কমলা রঙ, তারপর হলুদ, সবশেষে সাদা। এভাবে চলতেই থাকে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা সামিট করতে হলে আপনাকে যেতে হবে নেপাল কিংবা ভারতের সিকিম। ভারতের দার্জিলিং থেকে শুরু হয় এক্সপিডিশন। আপনি যদি কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় আরোহন করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রায় ২০০০০-২৫০০০ ডলারের উপরে খরচ করতে হবে যা বাংলাদেশি টাকায় দ্বারায় ২১ লক্ষ টাকার উপরে।
টাইগার হিলের চিত্তাকর্ষক সূর্যোদয় দেখার জন্য প্রতিবছর হাজারো পর্যটক এখানে আসা যাওয়া করেন। এছাড়াও বরফে ঢাকা মোহনীয় কাঞ্চনজঙ্ঘার রয়েছে চমকপ্রদ ইতিহাস ও নানান উপকথা।
এছাড়াও আপনি যদি দূর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে চলে যেতে পারেন দার্জিলিং এর টাইগার হিল এ যেখানকার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৮ হাজার ৪৮২ ফুট।
তবে আশাব্যঞ্জক কথা হচ্ছে এটা যে, কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখতে আপনাকে দেশ না ছাড়লেও হবে। প্রতিবছর অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের সীমান্তে বাংলাবান্ধা থেকেই এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। অর্থাৎ আকাশে যখন মেঘ থাকেনা, আবার কুয়াশা পড়াও শুরু হয়নি, ঠিক সেই সময়ে।
তেঁতুলিয়ায় মহানন্দা নদীর তীরে সরকারি রিসোর্ট থেকে স্পষ্ট দেখা যায়।
কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরুপ সৌন্দর্যকে ধারন করতে অক্টোবর কিংবা নভেম্বরের যেকোন দিন চলে যেতে পারেন পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলায়।
আর ইতিমধ্যে যদি গিয়ে থাকেন তাহলে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন।
🖍️গোলাম আজম
সহকারী শিক্ষক
মোলামগাড়ীহাট গার্লস হাইস্কুল,
কালাই, জয়পুরহাট।
১৫/১০/২০২১