24/09/2024
আচ্ছা, আপনারা কি নিজের সাথে সময় কাটাতে ভালবাসেন?
একাকীত্ব, টক্সিক সম্পর্কের কারণে কেউ সাথে থাকার পরও ভীষণ একা লাগা, সবার ভীড়ে একা হয়ে যাওয়া, কেউ আপনাকে বুঝতে পারেনা এমনটা মনে হওয়া- এসব নিয়ে কত মানুষ আমাকে পাতার পর পাতা লিখেছে, আমার কাছে সেটার হিসেব নেই।
আচ্ছা, অন্য কারো কথা বাদ দিন।
আপনি নিজে নিজেকে কতটা বোঝেন, ভেবে ঠিকঠাক বলুন তো?
অন্য কারো কথা বাদ দিন, আপনি নিজেকে নিজে কতটা পছন্দ করেন বলুন তো? আয়নায় নিজেকে দেখে কি আপনার ভালবাসা জাগে?
যদি এসব প্রশ্নের উত্তর না হয়, তবে আমি বলবো, আপনি নিজেই নিজেকে ভালবাসার যোগ্য মনে না করলে, আপনাকে ভালবাসার যোগ্য মনে করার এ দায়ভার পৃথিবী'র আর কেউ নিয়ে রাখেনি।
আমি জানিনা, কেন একাকীত্ব ব্যপারটাকে এত মন খারাপের, এত ভয়ংকর কোন ব্যপার, বা এত নেগেটিভ ভাবে দেখা হয়।
আমি একাকীত্ব রীতিমত এনজয় করি, জানেন?
নিজের মত থাকতে আমার যে কি ভীষণ ভাল লাগে!
নিজের সঙ্গটা নিজের কাছে ভাল লাগতে হবে তো!
নিজে নিজে ঘুরতে বের হওয়া, নিজেকে ট্রিট দেওয়া, নিজের জন্য উপহার কেনা, নিজেকে যত্নে রাখা সবই করতে হবে-
তবেই তো নিজের সাথে বন্ডিং টা তৈরি হবে।
মানুষ সামাজিক জীব, পারিবারিক জীব- কিন্তু যখন এই সমাজ বা পারিবার থেকেই মানুষের জীবনের বড় বড় ট্রমাগুলো তৈরি হয়, হাজার এফোর্ট দেবার পরও অবহেলা পেতে পেতে ভেতরে শূণ্যতা তৈরি হয় তখন আসলে নিজের ভাল থাকাটা মানুষের নিজেরই বুঝে নিতে হয়।
সারাদিন অন্য মানুষের অপ্রয়োজনীয় ট্রমাটাইজিং কথা আর সমালোচনা, টক্সিক পার্টনারের উদাসীনতা, খারাপ ব্যবহার - এসবের মধ্যে থেকে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজের সাথে থাকাটা আমার কাছে অনেক বেশি সুখকর। লজিকাল। শান্তিপূর্ণ।
আর নিজের সঙ্গ এনজয় করার প্রসেসটা শুরু করা মোটেও কঠিন কিছু নয়।
প্রতিদিন সকালে জানালা খুলে সোজা হয়ে বসবেন, সকালের নরম রোদ, আলো, বাতাস যেন মুখে লাগে, গায়ে হাত পায়ে লাগে। চোখ বন্ধ করে আস্তে আস্তে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিবেন, আর ছাড়বেন।
আর মনে মনে আপনি নিজেকে নিয়ে যা ভাবেন, যা কিছু করতে চান, নিজেকে যে অবস্থানে দেখতে চান সেগুলো তে ফোকাস করবেন। বারবার বলবেন, আমি পারবো, আমাকে পারতেই হবে। আমি ভেঙে পড়বোনা, কখনওই।
তারপর দিনের শুরু করবেন দুই গ্লাস পানি আর এক কাপ চা/কফি দিয়ে। চিনি ছাড়া হলে ভাল।
দেখবেন শরীর ঝরঝরে লাগছে।
কখনও কখনও একা হাটতে বের হয়ে যাবেন।
সবকিছুর জন্য টাকা লাগেনা জানেন?
হাটতে হাটতে মানুষ দেখবেন, বিভিন্ন রাস্তা, অচেনা ফুল, ঝিরিঝিরি সবুজ পাতা। কোথাও নিরিবিলি পেলে বসে পড়বেন। হাতে অল্পসল্প টাকা থাকলে ফুচকা বা চটপটি খাবেন।
নিজের সঙ্গ এনজয় করতে শিখুন।
That will make you stronger.
মানুষ শুধু টাকা ইনকাম করলেই সেল্ফ ইনডিপেন্ডেন্ট হয়না, বরং নিজের খেয়াল নিজে যেদিন থেকে রাখা শেখে সেটাই ট্রু সেল্ফ ইনডিপেন্ডিন্স। যখন আপনি জানবেন আপনার জন্য আপনিই যথেষ্ট- no one can beat you.
নিজেকে ভাল রাখা একদম নিজের হাতে। অনেকে চারপাশের মানুষের দোষ দেয়। আমি বলি, আমি নিজেকে এতটাই ওদের থেকে উদাসীন আর ডিফোকাসড করে ফেলেছি যে আমার কিছু গায়ে লাগা দূরে থাকুক, চোখে দেখতেও পাইনা, শুনতেও পাইনা।
কাছের বন্ধু বান্ধব থাকলে তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন নিয়মিত। সবসময় নিজের প্রব্লেম বলতে হবে তা নয় কিন্তু। হালকা গল্প,আড্ডা এসব কিন্তু মন থেকে সমস্যাগুলোর কষ্ট কমিয়ে দেয়।
আর হ্যা, এই ছোট ছোট কাজ গুলো একদিনে আপনাদের জীবনে বিশাল পরিবর্তন আনবেনা। এর মধ্যে আপনারা আবারও ভেঙে পড়বেন, আবারও সবকিছু এলোমেলো হবে- কিন্তু ভেঙে পরার পর আবারও শুরু করতে পারার মানসিকতা থাকতে হবে।
তিন মাস পরে দেখবেন জীবনে একটা ছন্দ এসেছে। ছয়মাস পরে আপনি নিজের জীবনে ডিসিপ্লিন দেখতে পাবেন। আরও নিজে নিজে করা যায় এমন অনেক আইডিয়া পাবেন।
আমি শুধু শুরুটা ধরিয়ে দেবার চেষ্টা করলাম। Start with yourself.
And most importantly, NEVER give up on yourself.
নিজেকে ভাল রাখা খুব সহজ, যদি নিজের সুখ অন্য কারো মুখাপেক্ষী না হয়। নিজের সুখের কন্ট্রোল নিজের হাতে রাখবেন।
এই ছোট্ট জীবনে এটুকু বুঝেছি, ভাল সঙ্গী পাওয়া, এমন মানুষ, এমন পরিবার পাওয়া যে বা যারা আপনার সত্যি সত্যি কদর করে, এটা সাত কপালের ভাগ্য করে পাওয়া যায়।
সবাই পায়না।
অতএব নিজেকে ভাল রাখতে শিখুন।
ভাল থাকবেন। ❤️
copyed by apu