Radiance Hajj Umrah Group

  • Home
  • Radiance Hajj Umrah Group

Radiance Hajj Umrah Group By the grace of almighty Allah (swt) Radiance Hajj & Umrah Group is the best Hajj Umrah agency in Dh

জীবনের মূল একটি টার্গেট রাখুন আল্লাহর ঘরের জিয়ারাহ! আমার সামর্থ্য দূর্বল হলেও আমার রবের ভান্ডার অপরিসীম। যতদিন যেতে পারছ...
29/10/2022

জীবনের মূল একটি টার্গেট রাখুন আল্লাহর ঘরের জিয়ারাহ! আমার সামর্থ্য দূর্বল হলেও আমার রবের ভান্ডার অপরিসীম। যতদিন যেতে পারছিনা ততদিন যাবার নিয়্যাতের কারনে সাওয়াবটুকু বোনাস!!

হজে বয়সের বাধা থাকছে না, যেতে পারবেন ১ লাখ ৩০ হাজার।আগামী বছর পূর্ণ পরিসরে হজ হবে জানিয়ে ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হ...
05/10/2022

হজে বয়সের বাধা থাকছে না, যেতে পারবেন ১ লাখ ৩০ হাজার।

আগামী বছর পূর্ণ পরিসরে হজ হবে জানিয়ে ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, হজে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ হজে যেতে পারবেন।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে তার সঙ্গে রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের (আরআরএফ) নব-নির্বাচিত কমিটির নেতাদের সাক্ষাৎকালে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত হজে বাংলাদেশ থেকে অনেক কম মানুষ হজ করতে পেরেছেন। আগামী হজ কেমন হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে আমাদের যতটুকু আনঅফিসিয়াল কথা হয়েছে, সেই অনুযায়ী তাদের বিষয়ে যতটুকু জেনেছি, এবার হয়তো পূর্ণ হজই হবে ইনশাআল্লাহ। গত বছর আমাদের যেটা হয়েছিল সেটা হয়তো নাও হতে পারে। এবার হয়তো রেশিও হিসেবে আমরা যতটুকু পাওয়ার ততটুকু পাব। আর ৬৫ বছরের বিধিনিষেধের বিষয়টিও এবার নাও থাকতে পারে। আমরা এ জিনিসটা ইতোমধ্যে তাদের কাছে জানতে পেরেছি। এটা (৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা হজ পালনে বাধা না থাকা) যদি হয়, তাহলে আমাদের সিরিয়াল মেইনটেইন করে সহজে হয়ে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর ১০ হাজার (৬৫ বছরের বেশি বয়সী) ব্যক্তি হজে যেতে পারেননি। এর মধ্যে ৭ হাজার রিপ্লেস করেছেন তারা সবাই। আর বাকি ৩ হাজার আমরা ইচ্ছামতো...যিনি গেছেন তাকে ব্যবস্থা করে দিতে পেরেছি। আগামী বছর এ সিস্টেম চালু হলে কারও কোনো আবদান রক্ষা করার সুযোগ আমাদের থাকবে না। তখন পুরো সিরিয়াল মেইনটেইন করতে হবে। আমাদের জন্য সেটা ভালো।
ফরিদুল হক খান বলেন, হয়তো এখনও আগামী বছর হজে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। হয়তো ১০ দিন পর সেটা থাকবে না। ১২ হাজার পার হয়েছে। সরকারিভাবে হয়তো সর্বোচ্চ ১৫ হাজার পেতে পারি।

29/09/2022
Radiance Global Network is seeking a full time Graphic Designer!Send your cv to radianceglobalnetwork@gmail.com
28/09/2022

Radiance Global Network is seeking a full time Graphic Designer!
Send your cv to [email protected]

পবিত্র হজ্জ পালনের সময় সকল প্রকার ছবি, সেলফি তোলা শিরকঃ আল মাসউদি সৌদি মুফতিবেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে যে, পবিত্র হজ্...
25/09/2022

পবিত্র হজ্জ পালনের সময় সকল প্রকার ছবি, সেলফি তোলা শিরকঃ আল মাসউদি সৌদি মুফতি
বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে যে, পবিত্র হজ্জের সময় বিভিন্ন ইবাদতি আনুষ্ঠানিকতার সময় অনেকেই সেলফি তোলায় ব্যস্ত থাকেন। বিষয়টি নিয়ে গত বছর সৌদি আরব থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ওইসব লেখায় বলা হয়েছিল, পবিত্র হজ্জ পালন করতে আসা কিছু মানুষের আচরণ দেখলে মনে হয় তারা আনন্দ ভ্রমণে এসেছেন নাউযুবিল্লাহ। পবিত্র হজ্জের সফরেও তারা খ্যাতনামা বিভিন্ন ব্যক্তিদের দেখে তাদের সঙ্গে ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেন। এমনকি পবিত্র কাবাঘরের সামনে পর্যন্ত সেলফি তোলা খুবই পরিচিত ও সাধারণ একটি দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!!!
বিষয়টি আবারও সামনে এলো একটি ফতোয়াকে কেন্দ্র করে। ফতোয়াটি প্রদান করেছেন মসজিদুল হারামের দারুল ইফতার সদস্য ও ইসলামি আইনশাস্ত্রের অধ্যাপক মুহম্মদ আল মাসউদি। ওই ফতোয়ায় তিনি বলেছেন, পবিত্র কাবা ঘরে সেলফি তোলা শিরক।
তিনি বিবৃতিতে বলেন, পবিত্র হজ্জব্রত অবস্থায় যদি কেউ ছবি তুলে প্রকাশ করে তাহলে সেটা হবে রিয়া (লোক দেখানো ইবাদত)। আর রিয়া শিরকের সমতুল্য।

অধ্যাপক মাসউদির মতে, যে সব ব্যক্তি পবিত্র হজ্জ পালন করতে এসে পবিত্র মক্কা নগরীর বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা পালনের স্থানসমূহে এসে নিজেদের হজ্জের ছবি তুলেন ও বিভিন্ন গণযোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। সত্যিকার অর্থে তাদের এ কাজ রিয়াতে পরিণত হয়।

মসজিদুল হারামের দারুল ইফতার সদস্য আরও বলেন, সে সব ব্যক্তি পবিত্র হজ্জ পালন করতে এসে নিজের ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তারা পবিত্র হজ্জের পাশাপাশি অন্য আরেকটি কাজে নিয়োজিত হন। এর ফলে তারা স্বাধীনভাবে, একাগ্রচিত্তে ইবাদত করতে পারেন না। আর এ ছবি যখন সামাজিক নেটওয়ার্কে প্রকাশ করেন, তখন সেটা রিয়াতে পরিণত হয়। আর রিয়া সর্বাবস্থায় হারাম। আর পবিত্র হজ্জের সময় সকল প্রকার হারাম কাজ নিষিদ্ধ, কারন মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ

[الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَّعْلُومَاتٌ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللّهُ وَتَزَوَّدُواْ فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى وَاتَّقُونِ يَا أُوْلِي الأَلْبَابِ]

অর্থাৎ: পবিত্র হজ্জ্বের জন্য নির্ধারিত কয়েকটি মাস আছে। এসব মাসে যে লোক পবিত্র হজ্জ্বের পরিপূর্ণ নিয়ত করবে, তার জন্য স্ত্রী সহবাস জায়েজ নয়। জায়েজ নয় কোনো ফাসেকি কাজ করা এবং ঝাগড়া-বিবাদ করাও পবিত্র হজ্জ্বের সেই সময় জায়েজ নয়। আর তোমরা যাকিছু সৎকাজ কর, মহান আল্লাহ পাক তিনি তো তা জানেন। আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে নাও। নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার ভয় (তাকওয়া)। আর আমার ভয়(তাকওয়া অবলম্বন) করতে থাকো, হে জ্ঞানী লোকেরা! তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় কোন পাপ নেই।

18/09/2022
সংক্ষিপ্তভাবে উমরা আদায়ের পদ্ধতি :১. উমরাকারী যখন মীকাতে পৌঁছবে তখন তার জন্য মুস্তাহাব হলো গোসল করা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছ...
08/09/2022

সংক্ষিপ্তভাবে উমরা আদায়ের পদ্ধতি :
১. উমরাকারী যখন মীকাতে পৌঁছবে তখন তার জন্য মুস্তাহাব হলো গোসল করা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া; অনুরূপভাবে উমরা আদায়কারী মহিলাও গোসল করবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হবে, যদিও এ সময় তার হায়েয বা নিফাস থাকে। হায়েয বা নিফাসওয়ালী মহিলা ইহরাম বাঁধতে পারবে, তবে সে তার হায়েয বা নিফাস থেকে পবিত্র হওয়া ও গোসল না করা পর্যন্ত বায়তুল্লাহ’র তাওয়াফ করবে না।

ইহরামের পূর্বে উমরা পালনকারী পুরুষ গায়ে সুগন্ধি লাগাবে, তবে তার ইহরামের কাপড়ে নয়। যদি মীকাতে পৌঁছার পর গোসল করা সম্ভব না হলে তাতে দোষের কিছু নেই।

মনে রাখবেন ইহরামের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সালাত নেই। তবে কোনো ফরয বা নফল সালাতের পরে ইহরাম হওয়া উত্তম। যদি সম্ভব হয় তবে তা করা যেতে পারে, নতুবা সেটাকে বাধ্যতামূলক মনে করা যাবে না।

২. পুরুষগণ সকল প্রকার সেলাইযুক্ত কাপড় (যেমন জামা, পাজামা, গেঞ্জী ইত্যাদি যা পোশাকের আকারে তৈরি তা) পরিধান থেকে বিরত থাকবে। একটি লুঙ্গি ও চাদর পরিধান করবে, তার মাথা খোলা রাখবে। আর পুরুষের ইহরামের কাপড় দু’টি সাদা ও পরিষ্কার হওয়া মুস্তাহাব।
তবে মহিলা তার সাধারণ পোশাকেই ইহরাম বাঁধবে, লক্ষ্য রাখবে যাতে কোনো প্রকার চাকচিক্য ও প্রসিদ্ধি লাভ করে এমন পোশাক যেন না হয়।
৩. তারপর উমরার কাজে ঢুকার জন্য মনে মনে নিয়ত (দৃঢ় সংকল্প) করবে, আর মুখে উচ্চারণ করে বলবে,
لَبَّيْكَ عُمْرَةً
“লাব্বাইকা ‘উমরাতান”
অর্থাৎ, আমি উমরা আদায়ের জন্য আপনার দরবারে উপস্থিত হলাম।
অথবা বলবে:
اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ عُمْرَةً
“আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা ‘উমরাতান”
অর্থাৎ, হে আল্লাহ আমি উমরা আদায়ের জন্য আপনার দরবারে উপস্থিত হলাম।
৪. অন্য কারো জন্য উমরা করতে চাইলে (যদি আপনি পূর্বে আপনার উমরা আদায় করে থাকেন তবে) উচ্চারণ করবেন:
اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ عُمْرَةً مِنْ فُلانٍ
‘‘আল্লাহুম্মা লাববাইকা ‘উমরাতান মিন পুলান’’
অর্থাৎ, হে আল্লাহ আমি অমুকের (তার নাম ধরে) পক্ষ হতে উমরা পালনের জন্য হাজির।

৫. যদি মুহরিম ব্যক্তি ভয় করে যে, সে রুগ্ন অথবা শত্রুর ভয়ের কারণে উমরা করতে সামর্থ্য হবে না, তবে তার জন্য ইহরামের সময় শর্ত করে নেওয়া জায়েয। সে বলতে পারবে,
«فِإِنْ حَبَسَنِيْ حَابِسٌ فَمَحَلِّيْ حَيْثُ حَبَسْتَنِيْ»
“ফায়িন হাবাসানি হাবিসুন ফামাহাল্লি হাইছু হাবাস্তানী”
অর্থাৎ, যদি কোনো বাধাদানকারী আমাকে বাঁধা দেয়, তাহলে যেখানে আমি বাধাগ্রস্ত হবো সেখানেই হালাল হয়ে যাবো।
মহিলা সাহাবী দ্বুবা‘আহ বিনতে যুবাইর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমি হজ করতে চাই তবে রোগাক্রান্ত হয়ে যাওয়ার ভয় করছি, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন,
«حجي واشترطي أن محلي حيث حبستني»
“হজ করতে শুরু কর এবং শর্ত করে নাও এবং বলো, যদি কোনো বাধাদানকারী আমাকে বাধা দেয়, তাহলে যেখানে আমি বাধাগ্রস্থ হবো সেখানেই হালাল হয়ে যাবো।”

৬. তারপর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর তালবিয়া পাঠ করবেন, আর তা হলো,
«لَبَّيْكَ اللّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لَا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لَا شَرِيْكَ لَكَ»
(লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি‘মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারীকা লাক।)
অর্থাৎ, উমরার জন্য আমি আপনার দরবারে হাজির। হে আল্লাহ! আমি আপনার দরবারে হাজির, আমি আপনার দ্বারে উপস্থিত, আপনার কোনো অংশীদার নেই, আপনার দরবারে উপস্থিত হয়েছি। সর্বপ্রকার প্রশংসা ও নি‘আমতের সামগ্রী তোমারই, তোমারই রাজত্ব, তোমার কোনো অংশীদার নেই।
উল্লিখিত দো‘আ ইহরাম পালনকারী পুরুষগণ জোরে জোরে উচ্চারণ করবে, আর স্ত্রী লোকেরা চুপে চুপে বলবে। অতঃপর অধিক মাত্রায় তালবিয়া পড়বে এবং দো‘আ, যিকির-ইস্তেগফার করবে।

৭. পবিত্র মক্কায় পৌঁছার পর সম্ভব হলে গোসল করবেন, এ গোসল সুন্নাত। সেটি আপনার আবাসস্থল হোটেলেও হতে পারে।

৮. তারপর মসজিদে হারামে ঢুকার সময়ে ডান পা দিয়ে ঢুকবেন এবং মসজিদে ঢুকার দো‘আ পড়বেন, তা হলো,
«بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلى رَسُوْلِ اللهِ، أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ، اللَّهُمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ»
(বিসমিল্লাহ ওয়াস্‌সালাতু ওয়াস্‌সালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহ, আউযুবিল্লাহিল আযীম ওয়া বিওয়াজহিহিল কারীম ওয়া সুলতানিহিল কাদীম মিনাশ শায়তানির রাজীম। আল্লাহুম্মাফতাহ্ লি আবওয়াবা রাহমাতিক।)
অর্থাৎ, আল্লাহর নামে, আর তার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ওপর দুরূদ পাঠ করছি, আমি বিতাড়িত শয়তান হতে মহান আল্লাহর কাছে তাঁর সম্মানিত চেহারার এবং তাঁর অনাদি ক্ষমতার অসীলায় আশ্রয় প্রার্থনা করছি, হে আল্লাহ! আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের দ্বারসমূহ উন্মুক্ত করে দিন।

৯. তারপর যখন কা‘বার কাছে পৌঁছবেন তখনি তালবিয়া পাঠ বন্ধ করে দিবেন। এরপর যদি তাওয়াফ শুরু করতে চান তবে হাজারে আসওয়াদ বরাবর যাবেন। হাজারে আসওয়াদের কাছে যাওয়ার পর তার দিকে ফিরবেন, সম্ভব হলে ডান হাত দিয়ে তা স্পর্শ করবেন এবং চুমু খাবেন, তবে ভীড় করে মানুষকে কষ্ট দিবেন না। হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করার সময়ে বলবেন,
بِسْمِ اللهِ، وَاللهُ أَكْبَرُ
(বিসমিল্লাহে ওয়াল্লাহু আকবার)
অথবা বলবেন,
اللهُ أَكْبَرُ
(আল্লাহু আকবার)
যদি হাজরে আসওয়াদ চুমু দেওয়া কষ্টকর হয় তাহলে হাত অথবা লাঠি দিয়ে স্পর্শ করার পর যে বস্তু দিয়ে স্পর্শ করেছেন তাতে চুমু খাবেন, আর যদি স্পর্শ করা কষ্টকর হয় তবে হাজারে আসওয়াদের দিকে হাত বা হাতে থাকা কিছু দিয়ে ইশারা করবেন এবং বলবেন,
اللهُ أَكْبَرُ
(আল্লাহু আকবার)
তবে এ অবস্থায় হাত অথবা যা দ্বারা ইঙ্গিত করেছেন তাতে চুমু খাবেন না।
মনে রাখবেন, তাওয়াফ শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো: ছোট-বড় সর্বপ্রকার নাপাকী হতে পবিত্র থাকা; কেননা তাওয়াফ সালাতের মতো, শুধুমাত্র তাওয়াফের সময় কথা বলার অনুমতি আছে।

১০. তাওয়াফ করার সময় আল্লাহর ঘর কা‘বাকে বাম পার্শ্বে রাখবেন এবং সাত চক্কর কা‘বার চারদিকে তাওয়াফ করবেন। ইচ্ছা করলে পায়ে হেঁটে, কিংবা বাহনে চড়ে তাওয়াফ করতে পারেন। যখন রুকনে ইয়ামানীর কাছে আসবেন তখন যদি সম্ভব হয় তা ডান হাতে স্পর্শ করবেন। কিন্তু রুকনে ইয়ামানীকে চুমু খাবেন না। যদি রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করা সম্ভব না হয় তবে তা ছেড়ে সামনে চলে যাবেন এবং তাওয়াফ করতে থাকবেন, কোনো প্রকার ইশারা বা তাকবীর দিবেন না; কেননা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে তা বর্ণিত হয়নি। কিন্তু হাজারে আসওয়াদের নিকট যখনই পৌঁছবেন তখনি তা স্পর্শ করবেন এবং চুমু খাবেন এবং তাকবির বলবেন, (যেমনটি পূর্বে বর্ণিত হয়েছে), যদি স্পর্শ করা সম্ভব না হয় তবে সে দিকে ইশারা করবেন এবং তাকবীর বলবেন।
এ তাওয়াফে পুরুষদের জন্য সুন্নাত হলো এদতেবা‘ করা, অর্থাৎ গায়ের চাদরের মধ্যভাগকে ডান বোগলের নিচ দিয়ে দু’পার্শ্বকে বাম কাঁধের উপর রাখা।

তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করাও পুরুষদের জন্য সুন্নাত। রমল হলো ছোট ছোট পদক্ষেপে দ্রুত হাঁটা।
তাওয়াফকালীন সময়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দো‘আ বা যিকির নেই, প্রত্যেক চক্করেই ইচ্ছা মতো শরী‘আতসম্মত যিকির ও দো‘আ পাঠ করা মুস্তাহাব। তবে তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করেই রুকনে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে নিম্নলিখিত দো‘আ সম্বলিত আয়াতটি পড়া সুন্নাত:
﴿رَبَّنا آتِنا فِي الدُّنْيا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنا عَذابَ النَّارِ﴾ [البقرة:201]
(রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়াফিল আখিরাতে হাসানাতাঁও ওয়া ক্বিনা ‘আযাবান-নার)
অর্থাৎ, হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ায় কল্যাণ দান করুন এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান করুন। জাহান্নামের আগুন থেকে আমাদের রক্ষা করুন। [সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ২০১]
সম্ভব হলে তাকবীর সহ হাজারে আসওয়াদকে স্পর্শ করা ও চুমু দেওয়ার মাধ্যমে সপ্তম চক্কর শেষ করবেন, কিন্তু সম্ভব না হলে পূর্বের মতো শুধু ইশারা এবং তাকবীর পড়লেই যথেষ্ট।

তাওয়াফ শেষে গায়ের চাদর ভালো করে পরিধান করে নিবেন, অর্থাৎ কাঁধে এবং বুকে কাপড় দিয়ে নিবেন। ইদতেবা‘ অবস্থায় থাকবেন না। তারপর সম্ভব হলে মাকামে ইবরাহীমের পিছনে কিছুটা দূরে হলেও দু’ রাকাত সালাত পড়বেন। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তবে মসজিদের যে জায়গায় সম্ভব সেখানেই সালাত পড়বেন। প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে قُلْ يا أَيُّهَا الْكافِرُونَ (সূরা কাফিরূন) এবং দ্বিতীয় রাকাতে قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (সূরা ইখলাস) পড়া উত্তম। অন্য কোনো সূরা পাঠ করলেও কোনো দোষ নেই। এ দু’রাকাত সালাতের পর যদি হাজারে আসওয়াদ চুমু দেওয়া সম্ভব হয় তবে তা করবেন।

১১. তারপর সম্ভব হলে যমযমের পানি পান করবেন। সম্ভব হলে যত ইচ্ছা তত খাবেন।

১২. তারপর সাফা পাহাড়ের দিকে যাবেন, যাওয়ার সময় আল্লাহর এ বাণী পাঠ করবেন,
﴿إِنَّ الصَّفا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعائِرِ اللَّهِ﴾ [البقرة:158]
(ইন্নাচ্ছাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শা‘আ-ইরিল্লাহ)
অর্থাৎ, নিশ্চয় সাফা এবং মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত। [সূরা আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ১৫৮]

১৩. অতঃপর সাফা পাহাড়ের উপর আরোহণ করবেন অথবা এর নিচে দাঁড়াবেন, তবে সম্ভব হলে পাহাড়ের কিয়দংশে উঠা উত্তম। এরপর পবিত্র কা‘বাকে সামনে রেখে প্রার্থনাকারীর ন্যায় দু’ হাত উর্ধ্বে তুলে আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করে তিনবার তাকবীর পড়ুন (আল্লাহু আকবার বলুন)। তিনবার করে দো‘আ করা সুন্নাত। অতঃপর তিনবার নিম্নোক্ত দো‘আ পড়ুন:
«لاَ إِلهَ إِلا اللهَ وَحْدَه لا شَرِيْكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَه الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْر لا إِلهَ إِلا الله وَحْدَه أَنْجَزَ وَعْدَه وَنَصَر عَبْدَه وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَه»
(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, আনজাযা ওয়া‘দাহু, ওয়া নাছারা আবদাহু, ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু।)

অর্থাৎ, একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোনো মাবূদ নেই। তাঁর কোনো শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান। একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই। তিনি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে বিজয় দিয়েছেন এবং তিনি একাই শত্রুকে পরাজিত করেছেন।

এই দো‘আর কিয়দংশ পড়লেও কোনো দোষ নেই। তবে যেহেতু শরী‘আতে এখানে বেশি বেশি দো‘আ করার কথা বলা হয়েছে সেহেতু সকল প্রকার দো‘আই এখানে করতে পারেন।
১৪. অতঃপর সাফা হতে নেমে মারওয়ার দিকে যাবেন। যাওয়ার সময় পুরুষগণ দু’ সবুজ আলোর মধ্যবর্তী স্থানে দ্রুত চলবেন, এ দ্রুত চলাকে সা‘ঈ বলা হয়। এ সময় যদি নিম্নোক্ত দো‘আটি পড়েন তবে তা উত্তম,
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ إِنَّكَ أَنْتَ الْأَعَزُّ الْأَكْرَمُ
“আল্লাহুম্মাগফির ওয়ারহাম, ইন্নাকা আনতাল আ‘য়ায্যুল আকরাম”
অর্থাৎ, হে আল্লাহ! ক্ষমা ও দয়া করুন, নিশ্চয় আপনিই অতীব পরাক্রমশালী ও সম্মানিত।

সা‘ঈ এর আগে ও পরে স্বাভাবিকভাবে চলবেন। মহিলাগণ কোথাও দ্রুত চলবেন না; কারণ মহিলাগণ পর্দা করবেন, আর দ্রুত হাঁটার কারণে তাদের পর্দা লঙ্ঘন হয়।

১৫. এরপর যখন মারওয়া পাহাড়ের কাছে যাবেন, তখন তার উপর আরোহণ করবেন অথবা নিচে দাঁড়াবেন এবং আল্লাহর প্রশংসা জ্ঞাপন করবেন এবং সাফায় যেমনটি করেছেন এখানেও তেমনটি করবেন। অর্থাৎ, মারওয়ার উপরে উঠার পরে কা‘বা শরীফকে সামনে রেখে প্রার্থনাকারীর ন্যায় দু’ হাত উর্ধ্বে তুলে আল্লাহ্ তা‘আলা তা‘আলার প্রশংসা করে তিনবার (আল্লাহু আকবার) তাকবীর উচ্চারণ করবেন। অতঃপর তিনবার নিম্নোক্ত দো‘আ পড়বেন :
«لاَ إِلهَ إِلا اللهَ وَحْدَه لا شَرِيْكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَه الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْر لا إِلهَ إِلا الله وَحْدَه أَنْجَزَ وَعْدَه وَنَصَر عَبْدَه وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَه»
(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, আনজাযা ওয়া‘দাহু, ওয়া নাছারা আবদাহু, ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু।)

অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোনো মাবুদ নেই। তাঁর কোনো শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান। একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই। তিনি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাঁর বান্দাকে বিজয় দিয়েছেন এবং তিনি একাই শত্রুকে পরাজিত করেছেন।

সাফার মতো মারওয়াও বেশি বেশি করে দো‘আ করার স্থান। সকল প্রকার দো‘আই এখানে করতে পারেন।
তবে এখানে পাহাড়ে উঠার সময় পূর্বে বর্ণিত সাফা পাহাড়ে উঠার আগের কুরআনের আয়াতটুকু পাঠ করবেন না; কেননা কুরআনের আয়াতটুকু রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করে শুধুমাত্র সাফা পাহাড়ে উঠার আগে পড়তে হয়।

১৬. তারপর মারওয়া থেকে নামবেন এবং যেখানে স্বাভাবিকভাবে হাঁটার সেখানে স্বাভাবিকভাবে হাঁটবেন, আর যেখানে দ্রুত চলার সেখানে দ্রুত চলবেন। এভাবে সাফা পাহাড়ে পৌঁছবেন। এভাবে সাতবার সা‘ঈ করবেন। সাফা থেকে মারওয়া যাওয়া এক চক্কর, আবার মারওয়া থেকে সাফা পাহাড়ে আসা আরেক চক্কর ধর্তব্য হবে।

১৭. তাওয়াফের মতো যদি কেউ কোনো কিছুর উপর উঠে সা‘ঈ করে তবে তাতেও দোষ নেই, বিশেষ করে যখন তার প্রয়োজন হবে।
১৮. তাওয়াফের মতো সা‘ঈর জন্যও কোনো নির্দিষ্ট ওয়াজিব যিকির নেই। বরং যেকোনো যিকির, দো‘আ ও কুরআন তিলাওয়াতের যা তার জন্য সহজসাধ্য হবে তা-ই পাঠ করতে পারবেন। তবে এ সকল ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যেসব যিকির ও দো‘আ সাব্যস্ত রয়েছে, তার প্রতি লক্ষ্য রাখা মুস্তাহাব।

১৯. অনুরূপভাবে সকল প্রকার নাপাকী হতে পবিত্র হওয়াও মুস্তাহাব। তবে যদি কেউ অপবিত্র অবস্থায়ও সা‘ঈ করে তার সা‘ঈ শুদ্ধ হবে, কোনো অসুবিধা নেই।

২০. সা‘ঈ পূর্ণ করে মাথার চুল হলক করবেন (কামাবেন) অথবা ছোট করে ছেঁটে নিবেন। তবে কামানো উত্তম। যদি হজের আগে আপনি মক্কা এসে থাকেন এবং হজের বেশি দিন বাকী না থাকে তবে উত্তম হলো উমরার পর চুল ছোট করে ছাঁটা; যাতে হজের ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার সময় হলক করতে পারেন।

খেয়াল রাখবেন, আপনার চুল কাটা বা ছাঁটা যা-ই- করেন না কেন সম্পূর্ণ মাথা থেকে হতে হবে। সামান্য কিছু কাটলে বা ছাঁটলে হবে না। এটা শুধু পুরুষদের ক্ষেত্রে ।

মহিলাগণ তাদের চুল একত্র করে চুলের অগ্রভাগ থেকে এক আঙুলের অগ্রভাগ পরিমাণ কাটবেন। এভাবে আপনার উমরা পূর্ণ হয়ে যাবে এবং ইহরামের কারণে ইতোপূর্বে যা হারাম ছিল, এক্ষণে তা হালাল হয়ে যাবে।
ল্লাহ! হে সত্য মা‘বূদ!’।

বদলি হজ্জে কাকে পাঠানো যাবে?কোনো ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হওয়ার পর সে যদি বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসামর্থ্যতা বা স্বাস্থ্যগত ...
08/09/2022

বদলি হজ্জে কাকে পাঠানো যাবে?
কোনো ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হওয়ার পর সে যদি বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসামর্থ্যতা বা স্বাস্থ্যগত অক্ষমতার কারণে হজ্জ সম্পাদনে অক্ষম হন কিংবা হজ্জ আদায় করার আগেই মারা যান তবে উভয় অবস্থায় অন্যের মাধ্যমে হজ্জ করানো জায়েয। শরীয়তের পরিভাষায় একে বদলি হজ্জ বলা হয়। কেমন ব্যক্তিকে বদলি হজ্জে পাঠানো যাবে তা নিম্নে প্রদত্ত হলো-

১। হানাফি মাজহাব অনুযায়ী যে ব্যক্তি এখনো নিজের হজ্জ করেনি, সে-ও কারো পক্ষ থেকে বদলি হজ্জ করতে পারবে, তবে মাকরুহ হবে।–আপকে মাসায়েল : ৪/৬৯

২। যে ব্যক্তি এখনো নিজের হজ্জ করেনি, তাকে হজ্জে পাঠানো মাকরুহে তানযিহী অর্থাৎ অনুত্তম। তার পরও যদি হজ্জে যায়, তাহলে বদলি হজ্জ আদায় হয়ে যাবে। অতএব, এমন মানুষকে পাঠানো উচিত, যে একবার হজ্জ করেছে। চাই সে ধনী হোক বা দরিদ্র। এ বিষয়ে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য নেই। –আপকে মাসায়েল: ৪/৭৬; ফাতাওয়া দারুল উলুম: ৬/৫৭৩; কিতাবুল ফিকহ: ১/১৩২২

26/08/2022

জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ আজ পবিত্র উমরাহ শেষ করে কিছু ভিডিও পাঠিয়েছেন যার ২টি ভিডিও শেয়ার করলাম।
জাযাকাল্লাহু খায়রান

হজ্জ আদায়ের পদ্ধতিঃআলহামদুলিল্লাহ। হজ্জ একটি উত্তম ও মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। এটি ইসলামের পঞ্চখুঁটির অন্যতম। যে ইসলাম দিয়ে আ...
25/08/2022

হজ্জ আদায়ের পদ্ধতিঃ

আলহামদুলিল্লাহ। হজ্জ একটি উত্তম ও মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। এটি ইসলামের পঞ্চখুঁটির অন্যতম। যে ইসলাম দিয়ে আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছেন। যে খুঁটিগুলো ব্যতীত কোন ব্যক্তির দ্বীনদারি পূর্ণতা পেতে পারে না।
যে কোন ইবাদত দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হতে হলে ও ইবাদত কবুল হতে হলে দুইটি বিষয় আবশ্যক:

এক. আল্লাহর জন্য মুখলিস বা একনিষ্ঠ হওয়া। অর্থাৎ সে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের কল্যাণকে উদ্দেশ্য করা; প্রদর্শনেচ্ছা, প্রচারপ্রিয়তার উদ্দেশ্যেনা করা অথবা অন্য কোন দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে না-করা।

দুই. কথা ও কাজে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ জানা ছাড়া তাঁকে অনুসরণ করা সম্ভব নয়। সুতরাং যে ব্যক্তি হজ্জ পালনের মাধ্যমে অথবা অন্যকোন ইবাদত পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চায় তার কর্তব্য হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ জেনে নেয়া। নিম্নে আমরা সুন্নাহ মোতাবেক হজ্জ আদায় করার পদ্ধতি সংক্ষেপে তুলে ধরব।

হজ্জের প্রকারভেদ:

হজ্জ তিন প্রকার: তামাত্তু, ইফরাদ ও ক্বিরান।

তামাত্তু হজ্জ: হজ্জের মাস সমূহে (হজ্জের মাস হচ্ছে- শাওয়াল, জ্বিলক্বদ, জ্বিলহজ্জ দেখুন আল-শারহুল মুমতি ৭/৬২) এককভাবে উমরার ইহরামবাঁধা, মক্কায় পৌঁছে তওয়াফ করা, উমরার সায়ী করা, মাথা মুণ্ডন করা অথবা চুল ছাটাই করে উমরা থেকে হালাল হয়ে যাওয়া। এরপর তারবিয়ার দিন অর্থাৎ ৮ জ্বিলহজ্জ এককভাবে হজ্জের ইহরাম বাঁধা এবং হজ্জের যাবতীয় কার্যাবলী শেষ করা। অতএব, তামাত্তু হজ্জকারী পরিপূর্ণ একটি উমরা পালন করেন এবং পরিপূর্ণ একটি হজ্জ পালন করেন।

ইফরাদ হজ্জ: এককভাবে হজ্জের ইহরাম বাঁধা, মক্কায় পৌঁছে তাওয়াফে কুদুম করা, হজ্জের সায়ী করা, মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট না করে তথা ইহরাম থেকে হালাল না হয়ে ইহরাম অবস্থায় থেকে যাওয়া এবং ঈদের দিন জমরা আকাবাতে কংকর নিক্ষেপের পর ইহরাম থেকে হালাল হওয়া। আর যদি হজ্জের সায়ীকে হজ্জের তওয়াফের পরে আদায় করতে চায় সেটাতেও কোন অসুবিধা নেই।

ক্বিরান হজ্জ: উমরা ও হজ্জের জন্য একত্রে ইহরাম বাঁধা অথবা প্রথমে উমরার ইহরাম বাঁধা এরপর তওয়াফ শুরু করার আগে হজ্জকে উমরার সাথে সম্পৃক্ত করা (অর্থাৎ তওয়াফ ও সায়ীকে হজ্জ ও উমরার সায়ী হিসেবে নিয়ত করা)। ক্বিরান হজ্জকারীর আমলগুলো ইফরাদ হজ্জকারীর আমলের মত। তবে ক্বিরান হজ্জকারীর উপর হাদি আছে; ইফরাদ হজ্জকারীর উপর হাদি নেই। হজ্জের প্রকারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে- তামাত্তু হজ্জ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে এই হজ্জ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এই হজ্জ আদায় করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। এমনকি যদি কেউ ক্বিরান হজ্জ বা ইফরাদ হজ্জের নিয়ত করে ফেলে তিনি তার ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিবর্তন করে হালাল হয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। যাতে করে সে ব্যক্তি তামাত্তু হজ্জ পালনকারী হতে পারেন। এমনকি সেটা তাওয়াফে কুদুম ও সায়ীর পরও হতে পারে। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি তাঁর বিদায়ী হজ্বে তওয়াফ ও সায়ী করার পর তাঁর সাহাবীগণকে নির্দেশ দেন- তোমাদের মধ্যে যার যার সাথে হাদি নেই সে যেন তার ইহরামকে উমরার ইহরামে পরিবর্তন করে মাথার চুল ছোট করে হালাল হয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন: আমি যদি হাদি না নিয়ে আসতাম তাহলে তোমাদেরকে যে নির্দেশ দিচ্ছি আমিও সেটা পালন করতাম।

ইহরাম: ইহরামের সুন্নতগুলো যেমন- গোসল করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, নামায পড়া ইত্যাদি উল্লেখ্য। ইহরামের আগে সে সুন্নতগুলো পালন করতে হবে। এরপর নামায শেষ করার পর অথবা নিজ বাহনে আরোহণ করার পর ইহরাম বাঁধবে। যদি তামাত্তু হজ্জকারী হয় তাহলে বলবে:

لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ بِعُمْرَةٍ

লাব্বাইকাল্লাহুম্মা বি উমরাতিন (অর্থ- হে আল্লাহ! উমরাকারী হিসেবে আপনার দরবারে হাজির)।

আর যদি ক্বিরান হজ্জ আদায়কারী হয় তাহলে বলবে:

لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ بِحَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ

লাব্বাইকাল্লাহুম্মা বি হাজ্জাতিন ওয়া উমরাতিন (হে আল্লাহ! হজ্জ ও উমরাকারী হিসেবে আপনার দরবারে হাজির)

আর যদি ইফরাদ হজ্জকারী হয় তাহলে বলবে:

لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ حَجًّا

লাব্বাইকাল্লাহুম্মা হাজ্জান (হে আল্লাহ! হজ্জকারী হিসেবে আপনার দরবারে হাজির)।

এরপর বলবেন: اللهم هذه حجة لا رياء فيها ولا سمعة আল্লাহুম্মা হাযিহি হাজ্জাতুন লা রিয়াআ ফি-হা ওয়ালা সুমআ (হে আল্লাহ! এ হজ্জকে এমন হজ্জ হিসেবে কবুল করুন যার মধ্যে লৌকিকতা ও প্রচারপ্রিয়তা নেই)। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে তালবিয়া পড়েছেন সেভাবে তালবিয়া পড়বে। সেই তালবিয়া হচ্ছে-

لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ ، لَبَّيْكَ لا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لا شَرِيكَ لَكَ

লাব্বাইকাল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা শারিকা লাক।

(অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আপনার দরবারে হাজির। আমি আপনার দরবারে হাজির। আমি আপনার দরবারে হাজির। আপনি নিরঙ্কুশ। আমি আপনার দরবারে হাজির। নিশ্চয় যাবতীয় প্রশংসা, যাবতীয় নেয়ামত আপনার-ই জন্য এবং রাজত্ব আপনার-ই জন্য। আপনি নিরঙ্কুশ।)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও একটি তালবিয়া পড়তেন সেটা হচ্ছে-

لَبَّيْكَ إِلَهَ الْحَقِّ

লাব্বাইকা ইলাহাল হাক্ব (অর্থ- ওগো সত্য উপাস্য! আপনার দরবারে হাজির)।

ইবনে উমর (রাঃ) আরেকটু বাড়িয়ে বলতেন:

لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ بِيَدَيْكَ وَالرَّغْبَاءُ إِلَيْكَ وَالْعَمَلُ

লাব্বাইকা ওয়া সাদাইক। ওয়াল খাইরু বি ইয়াদাইক। ওয়ার রাগবাউ ইলাইকা ওয়াল আমাল। (অর্থ- আমি আপনার দরবারে হাজির, আমি আপনার সৌজন্যে উপস্থিত। কল্যাণ আপনার-ই হাতে। আকাঙ্ক্ষা ও আমল আপনার প্রতি নিবেদিত)। পুরুষেরা উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়বে।আর নারীরা এভাবে পড়বে যেন পাশের লোক শুনতে পায়। যদি পাশে বেগানা পুরুষ থাকে তাহলে গোপনে তালবিয়া পড়বেন।

ইহরামকারী যদি কোন প্রতিবন্ধকতার আশংকা করেন যেমন রোগ, শত্রু বা গ্রেফতার ইত্যাদি তাহলে ইহরামকালে শর্ত করে নেয়া ভাল। ইহরামকালে তিনি বলবেন:

إِنْ حَبَسَنِيْ حَابِسٌ فَمَحِلِّيْ حَيْثُ حَبَسْتَنِيْ

ইন হাবাসানি হাবেস ফা মাহিল্লি হাইসু হাবাসতানি (অর্থ- যদি কোন প্রতিবন্ধকতা – যেমন রোগ, বিলম্ব ইত্যাদি আমার হজ্জ পালনে- বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে আমি যেখানে প্রতিবন্ধকতার শিকার হই সেখানে ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাব)। কেননা দুবাআ বিনতে যুবাইর (রাঃ) অসুস্থ থাকায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহরাম করাকালে তাকে শর্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন: “তুমি যে শর্ত করেছ সেটা তোমার রবের নিকট গ্রহণযোগ্য।”[সহিহ বুখারি (৫০৮৯) ও সহিহ মুসলিম (১২০৭)] যদি ইহরামকারী শর্ত করে থাকে এবং নুসুক পালনে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় তাহলে সে ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাবে। এতে করে তার উপর অন্য কোন দায়িত্ব আসবে না। আর যদি প্রতিবন্ধকতার কোন আশংকা না থাকে তাহলে শর্ত না করাই বাঞ্ছনীয়। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শর্ত করেননি এবং সাধারণভাবে সবাইকে শর্ত করার নির্দেশও দেননি। দুবাআ বিনতে যুবাইর (রাঃ) অসুস্থ থাকায় তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ইহরামকারীর উচিত অধিক তালবিয়া পাঠ করা। বিশেষতঃ সময় ও অবস্থার পরিবর্তন গুলোতে। যেমন উঁচুতে উঠার সময়। নীচুতে নামার সময়। রাত বা দিনের আগমনকালে। তালবিয়া পাঠের পর আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত প্রার্থনা করা এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত।

উমরার ইহরামের ক্ষেত্রে ইহরামের শুরু থেকে তওয়াফ শুরু করার আগ পর্যন্ত তালবিয়া পড়ার বিধান রয়েছে। আর হজ্জের ক্ষেত্রে ইহরাম করার পর হতে ঈদের দিন জমরা আকাবাতে কংকর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পড়ার বিধান।

মক্কায় প্রবেশের জন্য গোসল: মক্কার কাছাকাছি পৌঁছলে সম্ভব হলে মক্কায় প্রবেশের জন্য গোসল করে নিবে। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা প্রবেশের সময় গোসল করেছিলেন। [সহিহ মুসলিম (১২৫৯)]

এরপর মসজিদে হারামে প্রবেশের সময় ডান পা আগে দিবে এবং বলবে:

بِسْمِ اللهِ والصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ الَّلهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوْبِيْ وافْتَحْ لِى أَبْوَابَ رَحْمَتِكَأَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

(অর্থ- আল্লাহর নামে শুরু করছি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। হে আল্লাহ! আমার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিন। আমার জন্য আপনার রহমতের দুয়ারগুলো খুলে দিন। আমি বিতাড়িত শয়তান হতে মহান আল্লাহর কাছে তাঁর মহান চেহারার মাধ্যমে, তাঁর অনাদি রাজত্বের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।)

এরপর তওয়াফ শুরু করার জন্য হাজারে আসওয়াদের দিকে এগিয়ে যাবে।

তওয়াফের পর ও তওয়াফের দুই রাকাত নফল নামাযের পর মাসআ (সায়ী করার স্থান) এর দিকে এগিয়ে যাবে এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝখানে সায়ী (প্রদক্ষিণ) করবে।

তামাত্তু হজ্জকারী উমরার সায়ী করবেন। আর ইফরাদ ও ক্বিরান হজ্জকারী হজ্জের সায়ী করবেন এবং ইচ্ছা করলে সায়ীটি হজ্জের ফরজ তওয়াফের পরেও আদায় করতে পারেন।

মাথা মুণ্ডন করা বা চুল ছোট করা:

তামাত্তু হজ্জকারী যখন সায়ীর সাত চক্কর শেষ করবেন তখন তিনি পুরুষ হলে মাথা মুণ্ডন করতে পারেন অথবা চুল ছোট করতে পারেন। যদি মাথা মুণ্ডন করলে মাথার সর্বাংশমুণ্ডন করতে হবে। অনুরূপভাবে চুল ছোট করলেও মাথার সর্বাংশের চুল ছোট করতে হবে। চুল ছোট করার চেয়ে মাথা মুণ্ডন করা উত্তম। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাথা মুণ্ডনকারীদের জন্য তিনবার দুআ করেছেন। আর চুল ছোটকারীদের জন্য একবার দুআ করেছেন।[সহিহ মুসলিম (১৩০৩)]
তবে হজ্জের সময় যদি অতি নিকটবর্তী হয় এবং নতুন চুল গজাবার মত সময় না থাকে তাহলে চুল ছোট করা উত্তম; যাতে হজ্জের সময় মাথা মুণ্ডন করতে পারেন। দলিল হচ্ছে- বিদায় হজ্জকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে উমরার জন্য মাথার চুল ছোট করার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ তাঁরা জ্বিলহজ্জ মাসের ৪ তারিখ সকাল বেলায় মক্কা পৌঁছেছিলেন। আর নারীরা আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ চুল কেটে নিবে। এর মাধ্যমে তামাত্তু হজ্জকারীর উমরার কাজ শেষ হলো এবং তামাত্তু হজ্জকারী সম্পূর্ণরূপে হালাল হয়ে গেলেন। অর্থাৎ হালাল অবস্থায় একজন মানুষ যা যা করতে পারে (যেমন- সেলাইকৃত পোশাক পরা, সুগন্ধি লাগানো, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি) এখন তামাত্তু হজ্জকারীও সেসব পারবেন।

পক্ষান্তরে ইফরাদ ও ক্বিরান হজ্জকারী মাথা মুণ্ডন করবেন না; কিংবা মাথার চুল ছোট করবেন না; তারা ইহরাম থেকে হালাল হবেন না। বরং ইহরাম অবস্থায় থাকবেন এবং ঈদের দিন জমরা আকাবাতে কংকর নিক্ষেপ করার পর মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাটাই এর মাধ্যমে হালাল হবেন।

তারবিয়ার দিন তথা জ্বিলহজ্জের ৮ তারিখে তামাত্তু হজ্জকারী মক্কায় তার অবস্থানস্থল থেকে ইহরাম বাঁধবে। উমরার ইহরামকালে যা যা করা মুস্তাহাব ছিল হজ্জের ইহরামের সময়ও তা তা করা (যেমন- গোসল, সুগন্ধি লাগানো, নামায ইত্যাদি) মুস্তাহাব। এই ইহরামের সময় হজ্জের নিয়ত করবেন, তালবিয়া পড়বেন এবং মুখে বলবেন: لبيك اللهم حجاً(হে আল্লাহ! হজ্জকারী হিসেবে আপনার দরবারে হাজির)। যদি হজ্জ সমাপ্তকরণে কোন প্রতিবন্ধকতার আশংকা করে তবে শর্ত করে নিবে। وإن حبسني حابس فمحلي حيث حبستني(অর্থ- যদি কোন প্রতিবন্ধকতা আমাকে আটক করে তাহলে আমি যেখানে আটক হই সেখানে হালাল হয়ে যাব)। আর যদি এমন কোন আশংকা না থাকে তাহলে শর্ত করবে না। হাজ্বীর জন্য মুস্তাহাব হলো ঈদের দিন জমরা আকাবাতে কংকর নিক্ষেপের পূর্ব পর্যন্ত উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা।

মীনায় গমন:

এরপর মীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। সেখানে পৌঁছে জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামায কসর (৪ রাকাতের স্থলে ২ রাকাত) করে ঠিক ঠিক ওয়াক্তে আদায় করবে। দলিল হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মীনাতে নামাযগুলো কসর করতেন; কিন্তু একত্রে আদায় করতেন না।

কসর: ৪রাকাত বিশিষ্ট নামাযগুলো ২ রাকাত করে আদায় করা। মক্কাবাসী এবং অন্য সকলে মীনা, আরাফা ও মুজদালিফাতে নামাজ কসর করবেন। দলিল হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজ্জ আদায়কালে লোকদের নিয়ে নামায আদায় করতেন। তাঁর সাথে মক্কাবাসীরাও ছিল। কিন্তু তিনি তাদেরকে পরিপূর্ণ নামায পড়ার নির্দেশ দেননি। যদি তা ফরজ হতো তাহলে তিনি তাদেরকে সে নির্দেশ দিতেন যেভাবে মক্কা বিজয়ের বছর নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মক্কার দালানকোঠা প্রসারিত হতে হতে মীনা মক্কার অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। যেন মীনা মক্কারই একটি মহল্লা। তাই মক্কাবাসীরা সেখানে কসর করবে না।

আরাফায় গমন:

আরাফার দিন সূর্যোদয়ের পর মীনা থেকে আরাফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবে। সম্ভব হলে জোহরের পূর্ব পর্যন্ত নামিরাতে অবস্থান করবে (নামিরা হচ্ছে- আরাফার সম্মুখভাগের একটি স্থান)। আর যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে কোন অসুবিধা নেই। কারণ নামিরাতে অবস্থান করা সুন্নত; ওয়াজিব নয়। সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ার পর (অর্থাৎ জোহরের ওয়াক্ত হওয়ার পর) জোহর ও আসর উভয় নামায একত্রে জোহরের ওয়াক্তে দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করে নিবে; ঠিক যেভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদায় করেছিলেন যাতে করে আরাফার মাঠে লম্বা সময় অবস্থান করে দুআ করতে পারেন। নামাযের পর আল্লাহর যিকির ও দুআতে মশগুল হবে।
আল্লাহর কাছে রোনাজারি করবে, দু হাত তুলে কিবলামুখি হয়ে যা ইচ্ছা দুআ করবে। যদি কিবলামুখি হতে গিয়ে জাবালে আরাফা পিছনে পড়ে যায় কোন অসুবিধা নেই। যেহেতু দুআর ক্ষেত্রে সুন্নত হচ্ছে- কিবলামুখি হওয়া; পাহাড়মুখি হওয়া নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাহাড়ের নিকটে অবস্থান করেছেন এবং বলেছেন: “আমি এখানে অবস্থান করলাম; আরাফার ময়দানের সর্বাংশ অবস্থান স্থল।”সেই মহান দিনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাহাড়ের নিকটে অবস্থান করেছেন এবং বলেছেন: “আমি এখানে অবস্থান করলাম; আরাফার ময়দানের সর্বাংশ অবস্থান স্থল।”সেই মহান দিনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে দুআটি সবচেয়ে বেশি করেছেন সেটা হচ্ছে-

لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ ، وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহুলা শরিকা লাহ। লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু। ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদির। (অর্থ- এক আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। তিনি নিরঙ্কুশ। রাজত্ব তাঁর-ই জন্য। প্রশংসা তাঁর-ই জন্য। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান)। যদি কিছুটা একগেঁয়েমি এসে যায় এবং সঙ্গি-সাথীদের কথাবার্তা বলে কিছুটা সতেজ হতে চায় তাহলে ভাল কথা বলবে এবং ভাল কোন বই পড়বে। বিশেষতঃ আল্লাহ তাআলার বদান্যতা, তাঁর মহান অনুগ্রহ বিষয়ক কোন বই পড়বে। যাতে সে মহান দিনে আল্লাহর প্রতি আশার দিকটা ভারী থাকে। এরপর পুনরায় আল্লাহর কাছে রোনাজারি ও দুআতে ফিরে আসবে এবং দিনের শেষভাগকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট হবে। কেননা সবচেয়ে উত্তম দুআ হচ্ছে- আরাফা দিবসের দুআ।

মুজদালিফাতে গমনঃ

সূর্য ডোবার পরে মুজদালিফাতে গমন করবে। মুজদালিফাতে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামায এক আযান দুই ইকামতে আদায় করবে। যদি এই আশংকা হয় যে, মুজদালিফাতে পৌঁছতে পৌঁছতে মধ্যরাত পার হয়ে যাবে সেক্ষেত্রে রাস্তায় নামায আদায় করে নিবে। কারণ নামাযকে মধ্যরাতের বেশি বিলম্ব করে পড়া জায়েয হবে না। মুজদালিফাতে এসে রাত্রি যাপন করবে। ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পরবিলম্ব না করে এক আযান ও এক ইকামতে ফজরের নামায পড়ে নিবে। এরপর আল-মাশআর আল-হারামের দিকে এগিয়ে যাবে (বর্তমানে মুজদালিফাতে মসজিদটি যে স্থানে রয়েছে এটি সেই জায়গা)। সেখানে গিয়ে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দিবে, আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করবে তথা তাকবীর বলবে এবং ইসফার (ইসফার মানে- সূর্যোদয়ের আগে পূবদিক ফর্সা হয়ে উঠা) হওয়া পর্যন্ত যা খুশি দুআ করবে। যদি আল-মাশআর আল-হারামে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে নিজ স্থানে অবস্থান করে দুআ করবে। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “আমি এ স্থানে অবস্থান করলাম। জাম্মতথা গোটা মুজদালিফাই অবস্থানস্থল। ”হাত উঁচু করে কিবলামুখি হয়ে দুআ ও যিকির করবে।

মীনায় গমণঃ

সূর্যোদয়ের পূর্বে আকাশ ভালভাবে ফর্সা হয়ে উঠলে মীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবে। ওয়াদি মুহাসসার (মুজদালিফা ও মীনার মধ্যবর্তী একটি উপত্যকা) দ্রুত পার হবে। মীনায় পৌঁছে অপেক্ষাকৃত মক্কার নিকটবর্তী‘আকাবা’ নামক জমরাতে একটির পর একটি করে মোট ৭টি কংকর নিক্ষেপ করবে। প্রতিটি কংকরের আকার হবে প্রায় ছোলার সম-পরিমান। প্রতিটি কংকর নিক্ষেপের সাথে তাকবীর বলবে। জমরা আকাবাতে কংকর নিক্ষেপ করার সুন্নত পদ্ধতি হলো- জমরাকে সামনে রাখবে, মক্কাকে বামে রাখবে এবং মীনাকে ডানে রাখবে। কংকর নিক্ষেপ সম্পন্ন করার পর হাদি যবেহ করবে। এরপর পুরুষ হলে মাথা মুণ্ডন করবে অথবা মাথার চুল ছোট করবে। আর মহিলা হলে আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ চুল কাটবে। (এর মাধ্যমে ইহরাম থেকে প্রাথমিক হালাল অর্জিত হবে; অর্থাৎ এ হালাল হওয়ার মাধ্যমে স্ত্রী সহবাস ছাড়া আর সবকিছু হাজী সাহেবের জন্য হালাল হলো।) এরপর মক্কা গমন করে হজ্জের তওয়াফ ও সায়ী করবে। (এর মাধ্যমে হাজী সাহেব দ্বিতীয় হালাল হবে। এ হালালের মাধ্যমে ইহরামের কারণে যা কিছু হারাম হয়েছিল সবকিছু হাজীর জন্য হালাল হবে)। কংকর নিক্ষেপ ও মাথা মুণ্ডনের পর তওয়াফ করার জন্য মক্কায় যেতে চাইলে সুন্নত হচ্ছে- সুগন্ধি লাগানো। দলিল হচ্ছে আয়েশা (রাঃ) এর হাদিস “আমি ইহরাম করার আগে ইহরামের জন্য এবং হালাল হওয়ার পর তওয়াফের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সুগন্ধি লাগিয়ে দিতাম।” [সহিহ বুখারি (১৫৩৯) ও সহিহ মুসলিম (১১৮৯)]।
এরপর তওয়াফ ও সায়ী করার পর মীনাতে ফিরে আসবে। জ্বিলহজ্জের একাদশ ও দ্বাদশ রজনী মীনাতে কাটাবে এবং সে দু’দিন সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ার পর তিনটি জমরাতে কংকর নিক্ষেপ করবে। উত্তম হচ্ছে- কংকর নিক্ষেপের জন্য হেঁটে যাওয়া। বাহনে চড়ে গেলেও অসুবিধা নেই। প্রথমে প্রথম জমরাতে এক এক করে পরপর ৭টি কংকর নিক্ষেপ করবে। এই জমরাটি মক্কা থেকে অপেক্ষাকৃত দূরে ও মসজিদে খাইফের নিকটে। প্রতিটি কংকর নিক্ষেপকালে তাকবীর বলবে। এরপর একটু অগ্রসর হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যা ইচ্ছা দুআ করবে। যদি দীর্ঘ সময় দাঁড়ানো ও দুআ করা কারো জন্য কষ্টকর হয় তাহলে সাধ্যানুযায়ী অল্প সময়ের জন্য হলেও দুআ করবে; যেন সুন্নত পালন হয়। এরপর মধ্যবর্তী জমরাতে একের পর এক মোট ৭টি কংকর নিক্ষেপ করবে। প্রতিটি কংকরের সাথে তাকবীর বলবে। এরপর সামান্য বামে সরে গিয়ে কিবলামুখি হয়ে দাঁড়াবে এবং হাত উঁচু করে সম্ভব হলে লম্বা সময় ধরে দুআ করবে। লম্বা সময় দুআ করা সম্ভব না হলে সামান্য সময়ের জন্য হলেও দাঁড়িয়ে দুআ করবে। এই দুআটি ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। যেহেতু এটি সুন্নত। অনেক মানুষ না জানার কারণে অথবা অবহেলা করে এ সুন্নতটি ছেড়ে দেয়। কখনো কোন সুন্নত যদি অপ্রচলিত হয়ে পড়ে তখন সে সুন্নতের উপর আমল করা ও মানুষের মাঝে এর প্রসার করাঅধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। যেন এ সুন্নতটি একেবারে মিটে না যায়।

এরপর জমরা আকাবাতে একের পর এক মোট ৭টি কংকর নিক্ষেপ করবে। প্রতিটি কংকর নিক্ষেপের সাথে তাকবীর বলবে। এই জমরাতে কংকর নিক্ষেপ করার পর দাঁড়াবে না ও দুআ করবে না। এভাবে ১২ই জ্বিলহজ্জ ৩টি জমরাতে কংকর নিক্ষেপ করার পর ইচ্ছা করলে দেরী না করে সেদিনই মীনা ত্যাগ করে চলে আসতে পারে। আর চাইলে ১৩ই জ্বিলহজ্জ রাত্রি মীনাতে অবস্থান করে পরদিন সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ার পর ৩টি জমরাতে কংকর নিক্ষেপ করে মীনা ত্যাগ করতে পারে। একদিন দেরী করে মীনা ত্যাগ করাটা উত্তম; তবে ওয়াজিব নয়। কিন্তু ১২ ই জ্বিলহজ্জ সূর্যোদয়ের সময়েও কেউ যদি মীনাতে অবস্থান করে তাহলে তার জন্য ১৩ ই জ্বিলহজ্জ রাত্রি মীনাতে কাটানো ও পরদিন ৩টি জমরাতে কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। তবে মীনাতে সূর্য ডুবে যাওয়া যদি তার এখতিয়ারের বাইরের কোন কারণে হয় যেমন কেউ তাবু ত্যাগ করে গাড়ীতে চড়েছে কিন্তু রাস্তায় জ্যাম বা এ জাতীয় কোন কারণে আটকা পড়ে যায় তাহলে ১৩ তারিখ পর্যন্ত দেরি করা তার উপর ওয়াজিব হবে না। কারণ এ বিলম্বটা তার এখতিয়ারভুক্ত নয়। অতঃপর যখন মক্কা ত্যাগ করে নিজ দেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছা করবে তখন বিদায়ী তওয়াফ না করে মক্কা ত্যাগ করবে না। দলিল হচ্ছে- “তোমাদের কেউ প্রস্থান করবে নাযতক্ষণ না সে শেষ কাজ বায়তুল্লাহতে (তওয়াফ) না করে।”[সহিহ মুসলিম (১৩২৭)] অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে- “লোকদেরকে আদেশ করা হয়েছে- তাদের সর্বশেষ আমল যেন হয় বায়তুল্লাহতে (তওয়াফ)। তবে হায়েযগ্রস্ত নারীকে এ ব্যাপারে ছাড় দেয়া হয়েছে।”[সহিহ বুখারি (১৭৫৫) ও সহিহ মুসলিম (১৩২৮)] হায়েয ও নিফাসগ্রস্ত নারীদের উপর বিদায়ী তওয়াফ নেই এবং তাদের জন্য মসজিদে হারামের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় জানানোটাও উচিত নয়। কারণ এ ধরনের পদ্ধতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত হয়নি। যখন দেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছা করবে তখন হাজী সাহেবের সর্বশেষ কাজ হবে তওয়াফ। যদি বিদায়ী তওয়াফ করার পর সঙ্গিদের অপেক্ষা করতে হয় অথবা মালপত্র বাহনে উঠানোর জন্য অপেক্ষা করতে হয় অথবা পথের সম্বল হিসেবে কিছু কিনতে হয় এতে কোন অসুবিধা নেই। এর জন্য পুনরায় তওয়াফ করতে হবে না। তবে যদি সফর বিলম্বের নিয়ত করতে হয় (উদাহরণতঃ সফর ছিল দিনের পূর্বাহ্ণে এবং বিদায়ী তওয়াফ করে নিয়েছে কিন্তু পরে যদি সফর দিনের অপরাহ্ণে) করতে হয় তাহলে পুনরায় বিদায়ী তওয়াফ করে নেয়া ওয়াজিব; যাতে সর্বশেষ আমলটা তওয়াফ হয়। হজ্জ বা উমরার ইহরাম বাঁধার পর ইহরাম কারীর উপর নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ওয়াজিবঃ

১. ইসলামী যাবতীয় অনুশাসন পরিপূর্ণভাবে মেনে চলা। যেমন- ঠিক সময়ে নামাযগুলো আদায় করা।

২. আল্লাহ যা যা নিষেধ করেছেন যেমন পাপ কথা, পাপ কাজ ও অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকা। দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণী: “অতএব, এই মাসসমূহে যে ব্যক্তি নিজের উপর হজ্জকে আবশ্যক করে নিল তার জন্য হজ্বে অশ্লীল ও পাপ কাজ এবং ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয়।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯৭]

৩. পবিত্র স্থানগুলোর ভিতরে অথবা বাইরে কথা বা কাজের মাধ্যমে মুসলমানকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা।

৪. ইহরামঅবস্থায় যা যা নিষিদ্ধ সেগুলো থেকে বিরত থাকা:

ক. চুল বা নখ না কাটা।তবে কাঁটা বা এ জাতীয় কিছু তুলে ফেললে রক্ত বের হলেও গুনাহ হবে না।

খ. ইহরাম বাঁধার পর শরীরে, পরিধেয় পোশাকেবা খাবার-দাবারে সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। সুগন্ধিযুক্ত সাবান ব্যবহার করবে না। তবে ইহরামের আগে ব্যবহারকৃত সুগন্ধির কোন আলামত যদি থেকে যায় এতে কোন অসুবিধা নেই।

গ. শিকার করবে না।

ঘ. স্ত্রী সহবাস করবে না।

ঙ. উত্তেজনাসহ স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরবে না, চুমু খাবে না বা এ জাতীয় কিছু করবে না।

চ. নিজে বিয়ের চুক্তি করবে না অথবা অন্য কারো বিয়ের আকদ পড়াবে না অথবা কোন নারীকে নিজের জন্য অথবা অন্য কারো জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিবে না।

ছ. হাতমোজা পরবে না। তবে কোন ন্যাকড়া দিয়ে হাত পেঁচালে গুনাহ হবে না।

এই সাতটি নিষিদ্ধ কাজের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ে সমান। তবে বিশেষভাবে পুরুষের জন্য কাজগুলো হচ্ছে-

-এঁটে থাকা কোন কিছু দিয়ে মাথা ঢাকবে না। তবে ছাতা দিয়ে, গাড়ীর ছাদের আড়ালে, তাবুর আড়ালে ছায়া নিতে অথবা মাথায় বোঝা বহন করতে কোন দোষ নেই।

-সেলাইকৃত জামা, পাগড়ী, টুপি, পায়জামা, মোজা পরা যাবে না। তবে লুঙ্গি না পেলে পায়জামা পরবে। জুতা না পেলে মোজা পরবে।

-ইতিপূর্বে উল্লেখিত পোশাকগুলোর স্থলাভিষিক্ত কোন পোশাকও পরা যাবে না। যেমন- জুব্বা, ক্যাপ, টুপি, গেঞ্জি ইত্যাদি।

-জুতা, আংটি, চশমা, হেডফোন ইত্যাদি পরা যাবে। হাতে ঘড়ি পরা যাবে, গলায় হার পরা যাবে। টাকা-পয়সা রাখার জন্য বেল্ট পরা যাবে।

-সুগন্ধিহীন কিছু দিয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া যাবে। মাথা ও শরীর ধোয়া যাবে ও চুলকানো যাবে। এতে করে অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন চুল পড়ে গেলে তাতে কোন দোষ নেই।

নারীরা নেকাব পরবে না। নেকাব হচ্ছে- এমন কাপড় যা দিয়ে নারীরা তাদের মুখ ঢেকে রাখে; শুধু চোখ দুটি দেখা যায়। নারীদের জন্য সুন্নত হচ্ছে- মুখ ঢেকে রাখা। তবে যদি বেগানা পুরুষদের দৃষ্টি পড়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে ইহরাম অবস্থায় অথবা ইহরামের বাইরে মুখ ঢেকে রাখা ওয়াজিব।

রেডিয়েন্স হজ্ব ও ওমরা গ্রুপের তত্ত্বাবধানে কেউ যেতে চাইলে যোগাযোগ করুন।

অফিসঃ ৪৪, প্রবাল হাউজিং, ৩য় তলা, রিংরোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা- ১২০৭।
মোবাইলঃ ০১৭৯৯১২২৭২২, ০১৯৬০৫১৫৬০৮

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Radiance Hajj Umrah Group posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Travel Agency?

Share