26/10/2023
সুপ্ত আগ্নেয়গিরীর প্রচন্ড বিষ্ফোরনের আগেই শুভবুদ্ধির উদয় হোক...
ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হেফাজতের জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের বক্তব্যের মূল কয়েকটি অংশ...
আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন- যদি ক্ষমতার গদি টিকিয়ে রাখতে চান, অনতিবিলম্বে কারাবন্দী উলামায়ে কেরামকে মুক্তি দিন।
আল্লামা খলিল আহমদ কাসেমী বলেন, আমাদের দাবিগুলো সরকার যত দ্রুত মেনে নিবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল। তিনি সতর্ক করে বলেন, অবিলম্বে এই দাবি মেনে না নিলে দেশের কোটি কোটি তাওহিদী জনতার ক্ষোভ ফুঁসে ওঠলে তার সম্পূর্ণ দায় সরকারকেই নিতে হবে ।
আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে প্রমাণতি হয়েছে স্বাধীনতার পর শাপলা চত্বরে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড আপনারা চালিয়েছেন। এর বিচার দেশের মাটিতে হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের কী অপরাধ? রমজান মাসে ইফতারের আগে এমনকি ইতিকাফে বসা অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছেন। আমাদের ফাঁসির সেলে ও কারাগারে রাখা হয়েছে। এ দেশের কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে একজন আলেমও জড়িত নন। অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নিন। নচেত কীভাবে আঙুল বাঁকা করতে হয় হেফাজতে ইসলাম তা জানে। নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি না দিলে সরকার পালানোর পথ পাবে না।
মুফতী সাখাওয়াত হোসাইন রাজী বলেন- হেফাজতের এক লক্ষ আলেম স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি দিলে সরকার ২৪ ঘন্টার ভেতরে কারাবন্দী আলেমদের মুক্তি দিতে বাধ্য হবে।
আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেন, মামুনুল হক দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম। তিনি একজন মজলুম জননেতা। অবিলম্বে তাকেসহ হেফাজতের সব নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে কাদিয়ানিদের অপতৎপরতা বন্ধ, অমুসলিম ঘোষণা ও নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে হেফাজতের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আল্লামা আবদুল হামিদ মধুপুরী বলেন, এই শেখ হাসিনার সরকার কানেও শোনে না, চোখেও দেখে না। এটা বধির সরকার। এদেরকে সরাতে মুগুর লাগবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতে হবে। প্রয়োজনে গুলি খাবো তবুও আপস করব না।
আল্লামা নাজমুল হোসাইন কাসেমী বলেন, এই সরকারের আমলে আমাদের অনেক আলেম গায়েবি ও বায়বীয় মামলার আসামি। পাপিয়া ও পরী মণিরা কারাগারে ডান্ডাবেড়ি খায়না। আর মামুনুল হক ও মুনির হুসাইন কাসেমি ডান্ডাবেড়ি খায়। এই সরকার টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সমস্ত মুসলমানদের ডান্ডাবেড়ি পরিয়েছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে পরবর্তী কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত থাকুন।
আল্লামা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, নির্বাচনের আগে আলেমদের মুক্তি না দিলে নির্বাচনে তার জবাব দেওয়া হবে। আলেমদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আল্লামা মীর ইদ্রিস নদভী বলেন, দ্বীন কায়েমের জন্য হেফাজতে ইসলাম ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু এই সরকার আলেমদের মুক্তি দেওয়ার নামে কথা রাখেননি। তাদের আর হোমিও চিকিৎসা দিয়ে লাভ নেই, তাদের এলোপ্যাথি চিকিৎসা দিতে হবে। আলেমরা কাপড়ের টুপির বদলে লোহার টুপি পড়তে প্রস্তুত। আলেমদের মুক্তি না দিলে আগামী নির্বাচনে খবর আছে।
সদ্য কারামুক্ত নেতা মুফতী নূর হোসাইন নূরানি বলেন, আল্লাহ যদি কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন তাহলে কিন্তু বংশে বাতি দেওয়ার কেউ থাকবে না। অবিলম্বে মাওলানা মামুনুল হককে মুক্তি দিতে হবে।
আল্লামা গাজী ইয়াকুব ওসমানী বলেন, সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে হেফাজত যদি আবার শাপলা চত্বরে যায়, আপনারা পালানোর পথ পাবেন না।
মামুনুল হকের বড়ছেলে হাফেজ জিমামুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম যে আয়োজন করেছে সেজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
অন্য বক্তারা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মামলাবাজ ও জালেম। তারা আলেমদের নিয়ে প্রতারণা করছে। ইসরাইলের কারাগার ও বাংলাদেশের কারাগারের কোনো পার্থক্য নেই। সেখানে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের গুলি করে মারা হচ্ছে। বাংলাদেশের আলেমদের কারাগারে নিক্ষেপ করছে। আলেমদের নিয়ে টালবাহানা করলে আলেমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত আছে।
অতএব আলেমদের মুক্তি নিয়ে মুনাফেকি বন্ধ করুন। আগামী নির্বাচনে ফ্যাক্টর হবে মাওলানা মামুনুল হক। তাদের পক্ষে যারাই থাকবেন তাদের বিজয় সন্নিকটে ইনশাআল্লাহ। তারা অবিলম্বে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রয়োজনে সময় বেঁধে দিন। এই সময়ের মধ্যেই মুক্তি না দিলে কিসের নির্বাচন কিসের কী? হেফাজতে ইসলাম যা করার তাই করবে।
তারা আরও বলেন, আলেমদের মুক্তি না দিয়ে ভোটের জন্য জনগণের কাছে যাবেন না। হেফাজতে ইসলামকে সরানো যাবে না। বরং ওই সরকার (ইমরান এইচ সরকার) সরে গেছে। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম রয়ে গেছে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হোক।
তারা বলেন, ফিলিস্তিন ইসইস্যুতে সংসদে বিল পাস করুন। প্রয়োজনে হেফাজতের মাধ্যমে এক কোটি মুজাহিদ ফিলিস্তিন যেতে প্রস্তুত। এক্ষেত্রে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের দাবি জানান বক্তারা।
মুহাম্মাদ আসাদ উল্লাহ