L A Visa Processing Center

  • Home
  • L A Visa Processing Center

L A Visa Processing Center All Countries Visa Process

কি অদ্ভুত তাই না! প্রথমে যেই মানুষটাই ভালোবাসতে শেখায়,বিশ্বাস করতে শেখায়,কখনো ছেড়ে যাবে না বলে, কখনো পরিবর্তন হবে না দিন...
28/06/2023

কি অদ্ভুত তাই না!
প্রথমে যেই মানুষটাই ভালোবাসতে শেখায়,
বিশ্বাস করতে শেখায়,কখনো ছেড়ে যাবে না বলে,
কখনো পরিবর্তন হবে না দিনশেষে তারাই,
একা করে দিয়ে চলে যায় 😔

10/06/2023

মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি বিছানায় আমার পাশে শুয়ে এক নগ্ন নারীমূর্তি! আমার গা ঘেঁষে শুয়ে ঘুমিয়ে আছে। মেয়েটির গায়ে একটা সুতো পর্যন্ত নেই। সবুজ ডিম লাইটের আবছা আলোয় দেখতে পেলাম তাকে। শরীরটা যতটা না কামনাদায়ক, তার চাইতে কয়েকগুণ বেশি মায়াবী তার মুখটা। কিছু একটা আছে ওই মুখটায়। যার কারণে কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছি না।
এখন শীতকাল। বছরের বারো মাস চব্বিশ ঘণ্টাই শোবার ঘরের জানালা খুলে রাখার অভ্যাস আমার। জানালাটা বিছানা বরাবর। হু হু করে বাতাস আসছে সেদিক থেকে। লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকার পরেও গায়ে হিম ধরে গেল আমার।
এমন ঠান্ডায় মেয়েটা কি করে নগ্ন দেহে শুয়ে আছে!
আসল ভাবনা বাদ দিয়ে কখন ইতি-উতি ভাবতে শুরু করেছি খেয়ালই করিনি। খেয়াল করতেই গা থেকে লেপ ফেলে দিয়ে একপ্রকার লাফিয়ে বিছানার অপরপ্রান্তে চলে এলাম। সাথে সাথেই মেয়েটা জেগে গেল। আমার ফেলে দেয়া লেপ টেনে সে নিজের গায়ে লেপ্টে নিল। তারপর আমার দিকে সরে আসতে আসতে বলল, 'কী হয়েছে আহান? দূরে চিলে গেলে কেন?'
কথাটা বলেই সে একদম আমার কাছে চলে এল। তারপর আমার হাতটা তার মাথায় রেখে আহ্লাদী স্বরে বলল, 'আদর করে দাও!'
আমি ঘোরগ্রস্তের মতো তার মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম। সে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল।
এরপর আমার আর কিছু মনে নেই। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি!
সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গলো দেখলাম বিছানায় আমি একা শুয়ে। মেয়েটা নেই! সারা ঘর, সারা বাড়ি জুড়ে তাকে খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু কোথাও খুঁজে পেলাম না তাকে। কোত্থাও নেই সে! তাহলে কি আমি স্বপ্ন দেখেছি? আমার ভ্রম ছিল মেয়েটা?
নাহ! এটা কি করে হতে পারে! স্বপ্ন কখনো এত রঙ্গিন এত জীবন্ত হয়!
মা টেবিলে খাবার সাজাচ্ছিল। আমাকে এ ঘর ছেড়ে ও ঘরে ছোটাছুটি করতে দেখে বলল, 'মিথিকে খুঁজছিস? ও তো আমার ঘরে।'

মিথি আমার পোষা বিড়াল। ছ'মাস আগে ওকে আমি রাস্তায় কুড়িয়ে পাই। নর্দমার পাশে শুয়ে ছিল। ওমন ময়লার স্তূপের মধ্যে সাদা ধবধবে বিড়ালটা নজর কেড়েছিল আমার। তাই ওকে কাছে ডাকি। ডাকতেই দৌড়ে চলে আসে। কেন যেন হঠাৎ অচেনা প্রাণীটির জন্যে আমার মায়া লেগে যায়। কোলে করে বাসায় নিয়ে আসি। বাসায় আনার এক সপ্তাহের মধ্যেই ও বাড়ির সকলের মন জয় করে নেয়। অবশ্য বাড়িতে আমরা তিনজন মাত্র মানুষ৷ মা, আমি আর আমার ছোটো বোন অহনা।
হঠাৎই ঘড়ির দিকে চোখ পরল আমার। সর্বনাশ! সাড়ে আটটা বাজে! নয়টায় অফিস আমার। যেতে সময় লাগে চল্লিশ মিনিট। ফ্রেশ হব কখন! খাব কখন! আর যাব কখন! আর জ্যাম থাকলে তো কথাই নেই। এই ঢাকার রাস্তায় জ্যাম থাকবে না তা কি হয় কখনো?
একপ্রকার দৌড়ে বাথরুমে চলে গেলাম। হাত-মুখ ধুয়ে বেরিয়ে শার্ট-প্যান্ট পরে টাইটা বাঁধতে বাঁধতে ড্রয়িংরুমে চলে এলাম। মা খেতে ডাকল। আমি মায়ের ডাক অগ্রাহ্য করে দরজা খুলে বেরোতে নিতেই মা পেছন থেকে আমার শার্ট টেনে ধরলো। বলল, 'না খেয়ে কোথায় যাচ্ছিস? অল্প কিছু মুখে দিয়ে যা।'

আমি মায়ের হাত ধরে বললাম, 'মা প্লিজ! আজকের মতো ছাড় দাও! অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে আমার।'

মা আমার কথার কোনোরকম পাত্তা না দিয়ে জোর করে টেবিলে নিয়ে বসাল। স্যান্ডউইচের বাটিটা আমার দিকে এগিয়ে দিল। আমি এক পিস স্যান্ডউইচ হাতে নিয়ে 'মা আসি' বলে বেরিয়ে এলাম। গন্তব্য বাস-স্টেশন।

সারাদিন অফিসে কাজের চাপে গত রাতের ঘটনাটা বেমালুম ভুলে গেলাম। অফিস থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে একবার কলিংবেল চাপতেই মা দরজা খুলে দিল। ঘরে ঢুকতেই দেখি মিহি সোফায় শুয়ে। আমার দিকে চোখ পরতেই দৌড়ে আমার কাছে চলে এল। আমার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে মিউ মিউ করতে লাগলো। যার মানে হচ্ছে 'আমাকে কোলে নাও।'
ওকে কোলে তুলে নিলাম। মা চেঁচিয়ে উঠল। 'যা ফ্রেশ হয়ে খেতে বস। পরে আহ্লাদীকে কোলে নিয়ে বসে থাকিস।'
মায়ের কথায় আমি মিথিকে নামিয়ে দিতে চাইলাম। কিন্তু মিথি নামতে চাইল না। উলটে আমাকে খামচে ধরে রইল। আমি পুনরায় ওকে কোলে তুলে নিলাম। ও নিশ্চিন্তমনে আমার কোলে শুয়ে মৃদু মিউ ধ্বনি তুলল। আমার বুকে মাথা ঘষতে লাগল। যার মানে 'সকালে আমাকে আদর না করে কোথায় চলে গিয়েছিলে? এখন আদর করে দাও।'
আমি ওর দিকে তাকিয়ে 'স্যরি' বললাম। ও প্রতুত্যরে বলল, 'মিউ!'
মা ঠিকই বলে। আহ্লাদী একটা!

রাত এগারোটা। বিছানায় এসে শুয়েছি আধ ঘন্টা হলো। ঘুম আসছে না। কেন জানিনা আজ একা শুতে মন সায় দিচ্ছে না। তাই ভাবলাম মিথিকে নিয়ে আসি। ও নিশ্চয়ই মায়ের ঘরে। ওর ঘুমোনোর স্থানের কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। কখনো আমার সঙ্গে, কখনো মায়ের সঙ্গে তো কখনো অহনার সঙ্গে ঘুমোয়।

মিথিকে নিয়ে এসে শুতেই আমার ঘুমে চোখ ভার হয়ে এল। ঘুমিয়ে পরলাম তখুনি।

গতকালকের মতোই ঠিক মাঝরাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। আমার মনে হল বুকের কাছটায় কেউ জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে। মিথিই হবে। রাতে তো মায়ের কাছ থেকে আমিই ওকে নিয়ে এসেছিলাম। আমার গায়ের ওপর থেকে আলতো করে লেপ সরিয়ে নিতেই আমি শিউরে উঠলাম। মিথি নয়! গতকাল রাতের সেই মেয়েটি! আমার বুকের ওপর মাথা রেখে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে। সেদিনের মতোই নগ্ন দেহে!
আমি এক ধাক্কায় আমার বুকের ওপর থেকে ওর মাথাটা সরিয়ে দিলাম। শরীর ঢাকার জন্য লেপ ছুড়ে মারলাম ওর ওপর।
মেয়েটি আমার আচরণে কোনো ভ্রুক্ষেপ করল না। গলা পর্যন্ত লেপ টেনে নিয়ে শুয়ে পরল। কিন্তু ঘুমোলো না। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল আমার দিকে।
আমি হন্তদন্ত হয়ে বিছানা ছেড়ে নামলাম। সুইচ চেপে আলো জ্বালালাম। অকস্মাৎ কড়া আলো চোখে পরতেই মেয়েটি চোখ বন্ধ করে ফেলল। পরক্ষণেই আবার খুলে ফেলল। আমার দিকে তাকিয়ে সেই আদুরে স্বরে বলল, 'ঘুমোবো আহান। আলো নেভাও!'

ওর কথা আমার কান পর্যন্ত পৌছালেও মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌছাতে পারল না। কারণ আমার মস্তিষ্ক জুড়ে ছিল অন্যকিছু। আমি একদৃষ্টিতে চেয়ে রইলাম মেয়েটির মুখায়বে। এত রূপ, এত সৌন্দর্য, এত মায়া কারো চেহারায় থাকতে পারে! আমি ক্রমশ মোহগ্রস্ত হয়ে পরতে লাগলাম। এ মেয়ে কিছুতেই সাধারণ নারী হতে পারে না! কিছুতেই নাহ!!

তারপরের দিন সকাল বেলা মায়ের ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙ্গলো। ঘুম ভাঙ্গতেই দেখলাম আমি মেঝেতে শুয়ে আছি। মা বারবার জিজ্ঞাসা করতে লাগল এই ঠান্ডায় আমি মেঝেতে কেন? মাথা-টাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম না কি!
মায়ের মাথা থেকে দুঃশ্চিন্তা দূর করার জন্য মিথ্যে বললাম। 'রাতে এত ঘুম পেয়েছিল না মা। মেঝেতে বসে মোবাইলে গেমস খেলছিলাম। কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছি। '

মা রেগে গেল। বলল, ' তুই কি বাচ্চা ছেলে আহান?তোর কি কোনো কান্ড জ্ঞান নেই? এই ঠান্ডার মধ্যে তুই মেঝেতে বসে গেমস খেলবি কেন? ঘরে কি বসার জিনিসের অভাব পরেছে?'

'উফফ মা। ভুল হয়ে গেছে। চেঁচামেচি করো না তো!'

মা আমাকে সাবধান করার ভঙ্গিতে বলল, 'আর কখনো যেন মেঝেতে শুতে, বসতে না দেখি!'
তারপর আবার বলল, ' আটটা বেজে গেছে। যা জলদি হাত-মুখ ধুয়ে খেতে আয়। নাহয় পরে দেখব দেরি হয়ে যাচ্ছে বলে না খেয়েই বেরিয়ে পড়েছিস।'

মা চলে যাবার পর আমি গতকাল রাতের ঘটনাটা স্মরণ করতে লাগলাম। গতরাতের ঘটনাটাও কি স্বপ্ন ছিল? একই স্বপ্ন দু'দিন দেখা। এটা কি সম্ভব!
যদি স্বপ্নই হয় তাহলে আমি মেঝেতে এলাম কি করে! নাহ! গতরাতে এবং তার আগের রাতে যা ঘটেছিল সব বাস্তবই ছিল। স্বপ্ন স্মৃতিতে এত স্পষ্ট হয়ে কিছুতেই থাকতে পারে না। স্বীদ্ধান্ত নিলাম। আজকের রাতে কি ঘটবে সেটা আমি ডিসাইড করব। ওই মেয়েটা নয়। মনে মনে ওকে হাতেনাতে ধরার সমস্ত পরিকল্পনা করে ফেললাম। তাতে যদি আমার ইজ্জতের ফালুদা হয় তো হোক।

আজকে অফিসের কাজ ঠিকমতোন করতে পারলাম না। সেজন্য দু'বার বসের ঝাড়িও খেলাম। তবুও কোনো কাজেই মন বসছে না। একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছে মনের ভেতর। আচ্ছা আমি কি আমার পরিকল্পনায় সফল হবো? মন বলল, হবি। মস্তিষ্ক বলল, আজ তোর ইজ্জতের ফালুদা না আইসক্রিম হবে।
দেখি কোনটা সঠিক হয়। মন না কি মস্তিষ্ক!

অবশেষে রাত এল। শোবার আগে মা'কে, অহনাকে বলে এলাম দরজা খুলে ঘুমাতে। মোবাইলে ঠিক রাত দুটো বাজে এলার্ম সেট করে নিলাম। তারপর ঘুমিয়ে পরলাম।

রাত দুটোয় এলার্মের শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। বিছানার অপর পাশে তাকাতেই আমার মুখে হাসির রেখা ফুটল। এইতো! মেয়েটা আজো আমার পাশে শুয়ে। আমার ঘুম হারাম করে নিজে কেমন নিশ্চিন্ত মনে ঘুমুচ্ছে দেখো! দাড়াও রহস্যময়ী। আজ তোমার রহস্য উদঘাটন করবোই!

চলবে...

ক্লিওপেট্রা
পর্ব- ০১
লেখা: ত্রয়ী আনআমতা

(পরের পর্ব দেবো কি না তা সম্পূর্ণ পাঠকের উপর নির্ভর করছে। পাঠকের রেসপন্স পেলেই তবে গল্পটা কন্টিনিউ করব।)

09/06/2023

আমি দেখেছি প্রেমিক প্রেমিকাদের বিচ্ছেদ আবার শিল্পী দের বিচ্ছেদ!!
কাওকে ভালবাসতে গেলে যেমন এক বুক সমুদ্র নিয়ে ভালবাসতে হয়।ঠিক তেমনি একটা মূর্তি তৈরি করলেও তার থেকে বেশি নিজের সবকিছু উজাড় করে দিতে হয়।
::🎉 একটা খরের বান্ডিল থেকে তৈরি করে খরের কঙ্কাল, তারপর আস্তে আস্তে মন-প্রাণ ভালোবাসা নিজের সবটুকু দিয়ে এক সুন্দর প্রতিমা।নিজেদের খাওয়া-দাওয়া সব ভুলে ভালো বাসে ভীষণ ভাবে ভালবাসে। এ ভালোবাসা খুব অন্যরকম খুব গাঢ় ও মজবুত।
ভালোবাসা জীবনের এক অন্যরকম রূপ দেয়, জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় অন্য এক বাকে।
প্রতিমার পুজো শেষে সবাই আনন্দ ফুর্তি করে যখন প্রতিমাকে নিরঞ্জনের পথে নিয়ে যায় একরাশ জলের সামনে, তখন শিল্পীদের মন ভাঙ্গে। এক বুক সমুদ্র তখন নেমে আসে তাদের চোখের প্রতিটি ধারায়।
তারা অসহায়ত্বের মতো বুক চাপ রায়।মন কাদে, চোখ বেয়ে ছল ছল করে জল নামে, আটকে রাখার কোনো ক্ষমতা থাকেনা বা উপায় থাকেনা।তবু কিছু করার থাকে না ঠিক অসুস্থ রোগী যেমন হসপিটালের বেডে শুয়ে থাকে হাত পা নাড়তে পারে না ঠিক সে রকমই অবস্থা,,বা নিরুপায় ও বলতে পারো!
এসবের পরেও তারা আবার উঠে দাঁড়ায় শক্ত করে নিজের মন! আবার তৈরি করে অন্য প্রতিমা আবার মন ভাঙ্গে আবার বিচ্ছেদ হয়। এইভাবে যেন অভ্যেসে মিশে গেছে সব!
আমাদের প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিচ্ছেদে আমরা এতটাই ভেঙে পরি যে শক্ত হয়ে উঠে দাঁড়ানোর মত ক্ষমতা থাকেনা।নেতিয়ে পরি, ক্লান্ত হয়ে পরি, আমাদের এই সময় দরকার পড়ে খুব ভালো এক বন্ধুর যে ভীষণভাবে আমাকে সাপোর্ট করবে, এগুলো থেকে টেনে বের করে এনে আমাকে পুনরায় উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।
কিন্তু শিল্পীরা প্রতিবার ভাঙ্গে প্রতিমুহূর্তে ভাঙ্গে আবার নিজেরাই উঠে দাঁড়ায়, এদের ক্ষমতা ভীষণরকম উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা।
তেমনি তুমিও, পারবে নিজের জীবনের দায়িত্ব গুলো নিজেই নিতে শেখো, নিজের শখ পূরণ, স্বপ্নপূরণ নিজেই মেটাতে শেখো নিজেকে "ভালোবাসো ,"তুমিও পারবে ঠিক এমন ভাবে শক্তিশালী উঠে দাঁড়াতে,।।
অ নু প মা🙏
📸- riya

কাল আপনার বিয়ে আর আপনি এই মাঝরাতে আমার রুমে কেন এসেছেন ঈশান ভাই?'গায়ে হলুদ শেষে শুতেই কিছুসময় পর দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ শু...
09/06/2023

কাল আপনার বিয়ে আর আপনি এই মাঝরাতে আমার রুমে কেন এসেছেন ঈশান ভাই?'
গায়ে হলুদ শেষে শুতেই কিছুসময় পর দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ শুনে গায়ে কোনোমতেই উড়না পেঁচিয়ে ঘুমু ঘুমু চোখে মৃত্তিকা দরজা খুলে এতো রাতে ঈশানকে দেখে চমকে গিয়ে উক্ত কথাগুলো বলে উঠল।
মৃত্তিকার কথায় ঈশানের মাঝে কোনো হেলদোল দেখা দিল না। সে মৃত্তিকার কথার কোনো উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন-বোধ মনে করল না। ঈশান মৃত্তিকাকে পাশ কাটিয়ে মৃত্তিকার রুমে ঢুকে যাওয়ার সময় মৃত্তিকা তার পথ আটকে দিয়ে বলে উঠল,
-'আপনি আমার রুমে কেন আসছেন?'
ঈশান প্রথমে মৃত্তিকার প্রশ্নের জবাব দিতে চায়নি কিন্তু মৃত্তিকার এভাবে পথ আটকে ধরাতে বাধ্য হয়ে কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুলতেই সে মৃত্তিকার গায়ে ঢলে পড়ল। ঈশানের হঠাৎ পড়ে যাওয়াতে মৃত্তিকা তাল সামলাতে না পেরে পড়তে পড়তে পাশের দেয়ালটা ধরে কোনোমতেই বাঁচলো। মৃত্তিকা হঠাৎ আথকে উঠল কারণ ঈশানের গায়ে অনেক জ্বর। এই এতটুকু সময়ে জ্বর কোথ থেকে এলো তা মৃত্তিকা ভেবে উঠতে পারলো না। রাতেও তো ঠিক ছিল না কি ঈশানের জ্বর উঠাতে জ্ঞান হারিয়ে সে মৃত্তিকার রুমে এসে গেছে। বাসাভর্তী মেহমান। কারো চোখে এটা পড়লে নিশ্চিত তুলকালাম হয়ে যাবে। এই ভেবে মৃত্তিকা ঈশানের শরীরটা টানতে নিলেই তার ভার সহ্য করতে পারলো না। সে কোনোমতেই টেনে নিয়ে তার ব্যাডে ঈশানকে বসিয়ে দিতেই ঈশান শুয়ে গেল। মৃত্তিকা ঐভাবেই মেঝেতে বসে ঈশানের উদ্দেশ্যে বলল,
-'আপনার হঠাৎ এতো জ্বর কীভাবে এলো ঈশান ভাই?'
ঈশান পাশ ফিরে মৃত্তিকার মুখের দিকে তাকিয়ে মলিন হাসলো। চোখে তার জল চিকচিক করছে। মৃত্তিকা মনে করলো হয়ত জ্বরের ঘোরে কষ্ট পাচ্ছে, তার মায়া হলো ভীষণ।
-' একটু অপেক্ষা করুন আমি ওষুধ আনি।' এই বলে মৃত্তিকা উঠতে নিলেই ঈশান শোয়া অবস্থায় মৃত্তিকার হাত ধরে ফেলে। মৃত্তিকা ঈশানের এমন বাচ্চামো স্বভাব দেখে হেসে দিয়ে বলে উঠল,
-'ঐতো এই আলমারি থেকেই নিব ওষুধ। ছাড়ুন।' বলে আলমারির কাছে গিয়ে ওষুধ নিলো। মেডিকেলের ছাত্রী হওয়াই টুকটাক অনেক ওষুধ মৃত্তিকা তার কাছে রাখে। যেকোনো সময় লাগে ভেবে।
মৃত্তিকা পানি এনে ঈশানকে একটু তুলে খাইয়ে দিতেই ঈশান আবার শুয়ে গেল। এবার মৃত্তিকার হুশ এলো। ঈশানকে এইবার ওষুধ খাইয়ে দেওয়ার পর পরই ওর রুমে পাঠিয়ে দিতে হবে ভেবে মৃত্তিকা ঈশানকে ডেকে উঠল,
-'ঈশান ভাই? উঠুন, আপনি আপনার রুমে যান।'
-'শোন,আমায় ডিসটার্ব করিস না। আমার ভীষণ মাথা ব্যথা করছে। পারলে একটু টিপে দেয়। তোর ইচ্ছে হলে তুই বোনের রুমে গিয়ে ঘুমা।' বলেই এক হাত চোখের উপর রেখে পেছন ফিরে শুয়ে পড়ল।
ঈশান চোখ বন্ধ করে ফেলল। এরপরও মৃত্তিকা অনেক্ষন বকবক করলো কিন্তু ঈশানের গভীর নিঃশ্বাসের শব্দ শুনে সে এগিয়ে হাত দিয়ে বুঝতে পারলো মানুষটা ঘুমিয়ে পড়েছে।
মৃত্তিকা নিভৃতে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলল। সে এখন কী করবে! আজ ঈশান ভাইয়ের গায়ে হলুদ ছিল। যার ফলে সম্পূর্ণ বাসা মেহমানে ভরপুর। হলুদ শেষে সবাই যার যার ভরাদ্দকৃত রুমে চলে গিয়েছে বিশ্রাম নেয়ার জন্য।
সে বেরিয়ে যেতে নিলেই মোবাইলের কথা মনে পড়তেই আবার ফিরে আসলো। কিন্তু তার মোবাইল নেওয়া আর হলো না। ঈশান ভাইয়ের এতো বড়ো শরীরের নিচে তার বেচারি মোবাইল-খানা চাপা পড়ে গেছে। উনাকে সরানো দায়। আদিবের সাথে কথা না বললে নিশ্চিত ছেলেটা ভীষণ কষ্ট পাবে। এইজন্যই ছেলেটা ঈশান ভাইয়ের বিয়েতেও আসতে দিতে চায়নি। আচ্ছা থাক, একরাতেরই ব্যাপার তো। কাল সকালে উঠেই রাগ পড়ে যাবে। এখন একমাত্র ভরসা হলো রিনি। ঈশান ভাইয়ের বোন। ওর কাছেই থাকতে যেতে হবে। এতো রাতে অন্য কারো রুমে গেলে একটার পর একটা প্রশ্ন করতেই থাকবে। মৃত্তিকা অগত্যা বাধ্য হয়ে ঈশানের দিকে আরেকবার তাকিয়ে তার গায়ের উপর লেপ টেনে দিয়ে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেল।
রিনির রুমে গিয়ে অনেকবার শব্দ করার পরেও মেয়েটা দরজা খুলেনি। হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছে। শেষবারের মতো আবারো জোরে দরজা ধাক্কা দিতেই রিনি ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলল। এরপর মৃত্তিকা সব খুলে বলতেই রিনি একবার ভাইকে গিয়ে দেখে এসে শুয়ে পড়লো মৃত্তিকার সাথে।
সারারাত মৃত্তিকার চোখে ঘুম এলো না আদিবের জন্য। ছেলেটা মৃত্তিকাকে ফোন দিয়ে না পেলে নিশ্চিত পাগলের মতো করবে। মৃত্তিকার আদিবের চিন্তায় আর ঘুম এলো না। ছেলেটা একটু পাগলাটে স্বভাবের। মৃত্তিকার জন্য মনপ্রাণ সব দিয়ে ফেলবে। এমনকি নিজের ক্ষতি করতেও ছাড়ে না, এজন্যই এসব থেকে রক্ষা করার জন্য মৃত্তিকা আদিবের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিল। রিনির মোবাইল থেকে আদিবের মোবাইলে কল দেওয়ার পরেও কল ধরলো না। শেষের সময় আদিবের মোবাইল বন্ধ শোনালো। হয়ত রাগে অভিমানে মোবাইল বন্ধ করে ফেলেছে। এই ছেলেটাও না! সবসময় মৃত্তিকাকে চিন্তায় ফেলে রাখবে। এতো কেন ভালোবাসে তা মৃত্তিকা ভেবে পায় না।
রাতের নিস্তব্ধতা কেটে গিয়ে সকালের সূর্যের কিরণের ছড়াছড়ি সম্পূর্ণ বিয়েবাড়িতে। বিয়ে বাড়ির ছোট ছোট বাচ্চাদের হইচই এর মধ্যে এক তিক্ততাপূর্ণ হইচই মিলিত হলো। যেটার কোনো অস্তিত্বও নেই সেটাই সবাই চাপিয়ে দিতে চাইছে ঈশান-মৃত্তিকার ঘাড়ের উপর। ড্রয়ইংয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে মৃত্তিকা। অপমানে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না সে। শেষমেষ এমন অপবাদ পাবে তা সে কোনোদিন কল্পনাতেও আনেনি। সম্পূর্ণ মেহমানরা মৃত্তিকাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। অপমান আর লজ্জায় মৃত্তিকা মাথা তুলতে পারছে না। পাশেই রিনি দাঁড়িয়ে সবাইকে বোঝাতে ব্যস্ত কিন্তু কেউই রিনির কথা মাথায় তুলছে না কারণ এই বাসায় মৃত্তিকা যতবার আসতো ততবারই রিনির সাথেই সবসময় থাকতো সে যার ফলে সবাই ভাবছে রিনি মিথ্যে বলে মৃত্তিকাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। ঈশান এখনো ঘুম থেকে উঠেনি। এর ভেতরেই সবাই যার যার মতামত দিয়ে ফেলেছে। ড্রয়ইং রুমের এক কোনায় মৃত্তিকার মা রুমি আহমেদ তার একটা মাত্র অস্তিত্ব মৃত্তিকাকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি জানেন, তার মেয়ে এমন নই। তার পুরোপুরি বিশ্বাস আছে তার মেয়ে এমন কিছু ভুলেও করবে না কিন্তু এখানে তার কথা কেউ বিশ্বাস করার মতো নেই। এতদিনের আশ্রয়স্থল তার বড়ো ভাই ঈশানের বাবা লুৎফর আহমেদও বিশ্বাস করে নিচ্ছে যে তার বোনের মেয়ে এমন। এসব ভাবতেই রুমি আহমেদ ডুকরে কেঁদে উঠল, তার এতদিনের ভরসা স্থলও বোধহয় হারানোর পথে।
মৃত্তিকার এখন নিজেকে একটা পুতুল বৈ আর কিছু মনে হচ্ছে না, কেউই তার কথা শুনতে চাচ্ছে না। শেষবারের মতো বাড়ির সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলো ঈশান-মৃত্তিকার বিয়ে দিবে। এই কথাটা কানে যেতেই মৃত্তিকা চমকে মাথা তুললো। এটা কিছুতেই হতে পারে না। তার আর আদিবের সম্পর্ক আছে। মৃত্তিকার কিছু হলে আদিব নিজেকে নিজে শেষ করে দিবে আর তার চেয়ে বড়ো কথা মৃত্তিকা- আদিব এঁকে অপরকে ভীষণভাবে ভালোবাসে।
মৃত্তিকার এখন সকালে ওই রুমে যাওয়াটা নিতান্তই বোকামি মনে হচ্ছে। সম্পূর্ণ রাত আদিবের চিন্তায় ঘুম না আসাতে ভোর ফুটতেই সে চুপিচুপি ওই রুমে মোবাইল আনার উদ্দেশ্যে গিয়েছিল। রুমে গিয়ে তখনও ঈশানকে ঘুমানো অবস্থায় দেখেছিলো। মৃত্তিকা চুপিচুপি মোবাইল নিয়ে রুম থেকে বের হতে নিতেই ঈশানের চাচি আরশীর মা দেখে ফেলে। যার ফলে মুহূর্তের মধ্যে পুরো বাসার মানুষ এক জায়গায় হয়। ঈশানদের পরিবার যৌথ হওয়াই সবাই এক বাসায়ই থাকে। যার কারণে আজ ঘটনাটা সবার বিপরীতে চলে গেল।
মৃত্তিকার এতো সব ভাবনার মাঝে ঈশানের হবু বউ অর্থাৎ ঈশানের চাচাতো বোন মৃত্তিকার সামনে এসে দাঁড়ালো।
-'তোমার নূন্যতম লজ্জাও করেনি? আরেকজনের হবু বরের সাথে একই রুমে রাত কাটাতে? ছি! কথাটা বলতে আমার মুখে বাঁধছে। এতো চরিত্রহীন ভাবিনি আমি তোমায় মৃত্তিকা।'
-'আ,, আপু! আমার কথাটা প্লিজ একবার শু...'
মৃত্তিকা কিছু বলতে নিতেই ঈশানের হবু বউ আরশি হাত উঁচু করে থামিয়ে দিল। আরশি মৃত্তিকার চরিত্র নিয়ে কথা বলতেই মৃত্তিকার চোখ দিয়ে অঝোরে ধারায় অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। আরশি মৃত্তিকাকে চুপ থাকতে দেখে আরো কিছু বলে সুযোগ বুঝে থাপ্পড় মারার উদ্দেশ্যে হাত তুলতেই ঈশান এসে ধরে হাতটা ছুড়ে মারলো। ঈশানের চোখ মুহূর্তের মধ্যে লাল আঁকার ধারণ করলো। সে ভাবেনি পানি এতদূর গড়াবে!
#রঙিন_রোদ
#নাজমুন_বৃষ্টি
Mitu Chowdhury
#পর্ব_১

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when L A Visa Processing Center posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Videos
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Travel Agency?

Share