17/05/2024
প্রাচীন শহর পানাম নগর
পানাম নগর নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওতে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর।
দ্বাদশ শতাব্দীর শুরুতে, সোনারগাঁও মধ্যযুগের প্রথম দিকে প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে; যখন বাংলার প্রাচীন রাজধানী বিক্রমপুর তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। ১৩ শতকের শেষ বছরগুলিতে এই এলাকায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে সোনারগাঁও বাংলার রাজধানী হয়ে ওঠে এবং সুপরিচিত হয়ে ওঠে। ১৭ শতকের প্রথম দিকে মুঘলদের দ্বারা এই এলাকা শাষনের আগ পর্যন্ত, যখন রাজধানী, ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়, তখন পর্যন্ত এটি বিভিন্ন পরিবর্তনের সাথে এই বিশিষ্টতা উপভোগ করতে থাকে। যদিও রাজধানীর মর্যাদা হারাবার পরেও, সোনারগাঁও ১৮ শতকের শেষ অবধি তার বিশিষ্টতা অব্যাহত রাখে।
১৮ শতকের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় সোনারগাঁও মসলিন ও সুতি কাপড়ের একটি বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। এটি অনুমান করা হয় যে পানাম এবং এর আশেপাশে প্রায় ১৪০০ হিন্দু ও মুসলিম তাঁতি পরিবার ছিল। সেই সময়ে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মসলিন এবং অন্যান্য সুতি কাপড় কেনার জন্য পানামে তাদের কারখানা স্থাপন করে। সেসময়, কলকাতা থেকে ধনী হিন্দু বণিকদের একটি দল, একটি পুরানো ধ্বংসপ্রাপ্ত বসতিতে এই এলাকায় একটি ছোট জনপদ গড়ে তুলতে শুরু করে। এভাবে পানাম নগরের নতুন জনপদ গড়ে ওঠে। পানাম নগরের বিদ্যমান ভবনটিতে ১৯ শতকের থেকে ২০ শতকের প্রথম দিকে হিন্দু বণিকদের বসবাস ছিল। শহরটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত উন্নয়ন অব্যহতি রাখে যা পরবর্তী সময়ে পর্যন্ত উন্নতি লাভ করতে থাকে।
পানাম সড়কের উত্তর পাশে ৩১টি আর দক্ষিণ পাশে ২১টি বাড়ি রয়েছে। বাড়িগুলোর অধিকাংশই আয়তাকার, উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত, উচ্চতা একতলা থেকে তিনতলা। বাড়িগুলোর স্থাপত্যে ঔপনিবেশিকতা ছাড়াও মোঘল, গ্রিক এবং গান্ধারা স্থাপত্যশৈলীর সাথে স্থানীয় কারিগরদের শিল্পকুশলতার অপূর্ব সংমিশ্রণ দেখা যায়।
বর্তমানে সরকারিভাবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে রেখে নাম নগরের (সোনারগাঁ) প্রাচীন স্থাপত্য অবকাঠামো সংস্কার-সংরক্ষণ নামে একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। যেটি ২০ টাকা সমমূল্যর টিকেটের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে।
ক্রেডিটঃ উইকিপিডিয়া, স্নাতক অধ্যয়নের একটি থিসিস, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বিভাগ, ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টার ও ডেইলি সান