30/04/2024
★৫৮ সেকেন্ডের গল্প (২৩)★
>>মনে আছে ১৮৪১ ও ১৮৫৬ সালে চীনে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আফিম যুদ্ধ হয়েছিল। চীনের তরুণদের আফিম খাইয়ে বুদঃ বানিয়ে দেশ শাসন করেছে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেন ও জাপান। আফগানিস্তানে আফিম চাষে উপনিবেশবাদীদের অবদান। এজন্য ভুগতে হয়েছে আফগানিদের। এই চাষ যাতে বন্ধ না হয় তার চেষ্টাও চলেছিল অবিরত। কিন্তু এখন নেই। ১৯৭৩ সালে আফগানিস্তানের বাদশাহ জহির শাহ এর বিরুদ্ধে এক প্রাসাদ চক্রান্ত হলো। নেতৃত্ব দিলেন তারই ভগ্নি পতি দাউদ খান মজলিস। তিনি রাশিয়ার কমিউনিস্ট শাসনের অনুসারী ছিলেন।
>>আফগান বাদশাহ জহির শাহ ও সম্রাজ্ঞী, ব্রিটিশ আমন্ত্রণে লন্ডনে গেলেন। রাতে এক অনুষ্ঠানে হঠাৎ লাইট বন্ধ করে সম্রাজ্ঞীর চরিত্রে কালিমা লেপন করা হলো। পরদিন বিমানে শাহ পরিবার আফগান রওনা হলেন। কিন্তু বিমানটি কথিত চক্রান্তে কাবুলে নামতে দেওয়া হলো না। বাদশাহ ফিরে গেলেন। ক্ষমতা দখল করলেন দাউদ খান মজলিস। হাফিজুল্লাহ আমিন হলেন প্রেসিডেন্ট। পরবর্তীতে রাশিয়ার আফগান চুক্তির অংশ হিসেবে ১৯৭৯ সালে ২৪ ডিসেম্বর রাশিয়া আফগানিস্তানে ২৮০ টি সাজোয়া যান, এয়ার ক্রাফট, তিন ডিভিশনে মোট ২৫ হাজার ৫০০ জন সৈন্য মধ্যরাতে প্রবেশ করে। দুনিয়ার মানুষ নতুন সংবাদ শুনলেন।
>>ফল উল্টো হল, রাশিয়ার কনফেডারেশন রাষ্ট্রগুলো বেরিয়ে যাওয়ার আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু যুদ্ধ শুরু করা যত সহজ বন্ধ করা তত কঠিন। অবশেষে ১৫ই মার্চ ১৯৮৮ থেকে ১৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ সালে রাশিয়া কোন শর্ত ছাড়াই আফগানিস্তান ত্যাগ করে।
>>এই ভুল যুদ্ধে জড়িয়ে রাশিয়াকে ১৯৯০ সালে কনফেডারেশন ভুক্ত ১৫ টি দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়। ১৯৯৪ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকার সমর্থনে তালেবান গড়ে ওঠে। নেতৃত্ব দেন ওসামা বিন লাদেন। রাশিয়া বিদায় নেয় কিন্তু ধীরে ধীরে স্থলাভিষিক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এই যুদ্ধে আমেরিকার তিন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, ২০০০ সৈন্য নিহত এবং ২৫০০ আহত হন। এই ষড়যন্ত্রে ইরানের সাদ্দাম সহ অনেককে জড়িত করে ধ্বংস করলেও হেরে যান যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের নিকট। নিঃশর্ত চুক্তিতে অবশেষে আফগানিস্তান ত্যাগ করে। দুনিয়ার তালেবান বিরোধীরা ভেবেছিল ওরা ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে। না উল্টো হল। ওরা নতুন ইতিহাস গড়লো। বিশ্বের দ্রুততম শক্তিশালী অর্থনীতির বুনিয়াদ গড়ে তুলেছে। বিদায় নিয়েছে দেশ থেকে আফিম ও পশ্চিমাদের নিষিদ্ধ পানীয়।
>>এবার ফিলিস্তিনিদের কি হবে? এখানেও উল্টো বাতাস বইতে শুরু করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে ইসরাইলের সাথে অবৈধ চুক্তি হামাসের এক ধাক্কায় কুপোকাত। সাথে যোগ দিল সিরিয়া, লেবানন ও ইরান। এগিয়ে আসছে তুরস্ক, কাতার, ইয়েমেন এবং সমস্ত ভুল পথে পরিচালিত রাষ্ট্রগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি। অপেক্ষা করুন ইনশাল্লাহ ফিলিস্তিনিদের আকাশে নতুন চাঁদ উঠব