17/06/2023
আপনি যদি আমেরিকা যেতে আগ্রহী হোন বা আমেরিকা যদি আপনার স্বপ্নের দেশ হয়ে থাকে তাহলে এই লেখাটি কেবলই আপনার জন্য। আমরা সাধারণত আমেরিকান ভিসার কথা শুনলেই ভয় পেয়ে যাই, ভয় পেয়ে আর চেষ্টাই করি না। অথচ বাস্তবতা হলো , অন্যান্য দেশের ভিসার তুলনায় আমেরিকান টুরিস্ট ভিসা পাওয়া টা অনেক সহজ। ভয় পাওয়ার মানসিকতা থেকে বের হয়ে আপনাকে সঠিক উপায়ে চেষ্টা করতে হবে, তাহলেই আপনার ভিসা পাওয়ার সফলতা আসবে ইনশাআল্লাহ।
🔷 সর্বপ্রথম বলে নেই আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা আসলে কাদের জন্য? আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা কারা রাখে? এই বিষয়টি আমাদের পরিষ্কার হওয়া বেশ জরুরী। আমেরিকার মতো একটি দেশে যাওয়ার জন্য আপনার অবশ্যই পার্শ্ববর্তী এবং ভালো কিছু দেশ ট্রাভেল থাকাটা জরুরী। কোনো দেশ ট্রাভেল না করেই আপনি আমেরিকায় ঘুরতে চলে যাবেন এটির কোনো যৌক্তিকতা হতে পারে না৷ এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে কি সাদা পাসপোর্ট অথবা শুধু ইন্ডিয়া ভিজিটে আমেরিকার ভিসা হয় না? আপনি অনেক গুলো দেশ ট্রাভেল করলেই আমেরিকার ভিসা পেয়ে যাবেন ব্যাপারটা এমন নয়, আপনাকে সঠিক পলিসিটা জানতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষে সাদা পাসপোর্টেও আমেরিকার ভিসা হয়ে থাকে। আপনার যদি নিজ পরিবারের কেও অর্থাৎ বাবা-মা, ভাই-বোন, ছেলে মেয়ে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কেও আমেরিকাতে থাকে তাহলে আপনি সাদা পাসপোর্টেও আমেরিকার ভিসা পাবেন। এছাড়াও যাদের বয়স একটু বেশি এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো তারা যদি আত্মবিশ্বাস এর সাথে ইন্টারভিউ দিতে পারে তাহলে সেসকল ব্যাক্তিরাও সাদা পাসপোর্টে আমেরিকার ভিসা পেতে পারে।
🔷 টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে ইনভাইটেশন এর কোনো প্রয়োজন আছে কি? আমাদের উত্তর হলো না। টুরিস্ট ভিসার জন্যে ইনভাইটেশন প্রয়োজন নেই। কেও যদি আমেরিকাতে কোনো কনফারেন্স বা সেমিনার অথবা কোনো মেলায় যোগদান করতে চান সেক্ষেত্রে ইনভাইটেশন এর প্রয়োজন আছে। এছাড়া শুধুমাত্র ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইনভাইটেশন এর কোনো প্রয়োজন নেই।
🔷 এবার আসি ডকুমেন্টস এর বিষয়ে। আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা সম্পুর্ণ ইন্টারভিউ নির্ভর একটি ভিসা৷ আমেরিকার টুরিস্ট ভিসার জন্য ডকুমেন্টস নিয়ে চিম্তা করার কোনোই প্রয়োজন নেই। তবে হ্যাঁ, ডকুমেন্টস খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি কিনা আপনি আমেরিকার মেডিকাল/স্টুডেন্ট/বিজনেস ভিসার জন্য এপ্লাই করে থাকেন। এসকল ভিসার ক্ষের্তে এম্বাসি আপনার কাছে নানা প্রকার ডকুমেন্টস দেখতে চেতে পারে তবে টুরিস্ট ভিসার জন্য কোনো প্রকার ডকুমেন্ট এম্বাসি সচরাচর দেখতে চায় না।
🔷 আবার অনেকেই মনে করেন আমেরিকার ভিসা কন্ট্রাক্ট এ করা যায়। ব্যাপারটা একদমই ভুল। আমেরিকার ভিসা কন্ট্রাকে হয় না, ভুলেও এই কন্ট্রাকে এ যাবেন না, কারণ আমেরিকান এম্বাসির সাথে কারও লিংক বা লবিং থাকার কোন প্রশ্নই আসে না। কেউ যদি বলে থাকে আমেরিকা এম্বাসির সাথে লিংক আছে, তার মানে তিনি আপনাকে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।
🔷 এবার আপনাদের আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা প্রসেস এর ব্যাপারে একটি স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমেরিকান টুরিস্ট ভিসা সাধারণতো ৫ বছরের মাল্টিপোল ভিসা হয়ে থাকে অর্থাৎ ৫ বছরের মধ্যে আপনি যতবার খুশি আমেরিকায় যাতায়াত করতে পারবেন। এই ভিসাটি মূলতো ২ টা জিনিস এর উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে।
১. DS -160 ফর্ম অর্থাৎ এপ্লিকেশন ফর্ম এর উপর।
২. ছোট একটি ইন্টারভিউ এর উপর।
নির্ভুল ভাবে DS-160 ফর্ম ফিলাপ করে যদি আপনি আত্মবিশ্বাস এর সাথে ইন্টারভিউতে কন্সুলার অফিসারকে এটা বিশ্বাস করাতে পারেন যে আপনার আমেরিকা যাওয়ার যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ আছে এবং আপনি আমেরিকায় যাবেন এবং ফিরে আসবেন, তাহলেই আপনার ভিসা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
ইন্টারভিউ বাংলাদেশে সাধারণতো দুই ভাষায় হয়ে থাকে, বাংলা এবং ইংরেজী। আপনি চাইলে বাংলাতেও ইন্টারভিউ দিতে পারবেন। ইন্টারভিউ সাধারণতো ২ থেকে ১০ মিনিটের হয়ে থাকে। আপনি আমেরিকা যাওয়ার যোগ্য সেটা এম্বাসিকে কি করে বুঝাবেন? সেটা বুঝাবেন আপনার এপ্লিকেশন ফর্ম এর মাধ্যমে অর্থাৎ Ds-160 এর ফর্ম এর মাধ্যমে। আমেরিকান এম্বাসির একটি অনলাইন ফর্ম আছে যার নাম DS-160 ফর্ম। এই এপ্লিকেশন ফর্ম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই ফর্ম এর উপর আপনার ভিসা অনেকাংশ নির্ভর করে। তাই অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা ফর্মটি পূরণ করা উচিত। মূলত এই ফর্মটি আপনার ভিসা পাওয়ার পূর্ব শর্ত হিসাবে বিবেচিত হয়। আপনি বলতে পারেন ৫০% চান্স নির্ভর করে এই DS-160 ফর্ম এর উপর, বাকি ৫০% নির্ভর করে আপনার ইন্টারভিউ এর উপর। এই দুইটির সঠিক সফল কম্বিনেশন ই আপনার ভিসা পাওয়া চান্স নিশ্চিত করবে ইনশাআল্লাহ। বেশিরভাগ মানুষ যে ভুলটা বেশি করে থাকে সেটা হলো, DS 160 অদক্ষ কাওকে দ্বারা পূরণ করে ইন্টারভিউতে চলে যায়, এতে করে হয়তো কিছু টাকা বেঁচে যায় তবে ফলাফল হয় ভিসা রিজেকশন। আবার অনেকেই ভিসা পেয়েছেন তাঁদের থেকে ইন্টারভিউ এর গাইডলাইন নিয়ে ইন্টারভিউ ফেইস করতে চলে যায়, অথচ তার প্রোফাইল এবং উনার প্রোফাইল কিন্তু ভিন্ন। না এটা কখনই করবেন না আপনাকে আপনার প্রোফাইল অনুযায়ী ইন্টারভিউ এর গাইডলাইন নিতে হবে। মনে রাখবেন অল্প বিদ্যাভয়ঙ্কর জিনিস। ওষুধ এর দোকানদার আপনাকে পরামর্শ দিতে পারে, কিন্তু মনে রাখবেন তিনি কিন্তু ডাক্তার না। অনেকেই বলেন ভাই DS 160 কি আসলেই এতো জটিল কিছু? যেহেতু আমেরিকার মতো একটি দেশ সারাপৃথিবী থেকে এই ফর্ম এর উপর ভিত্তি করে ভিসা ইস্যু করে থাকে তাহলে আপনি নিজেই চিন্তা করুন এই ফর্ম কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আশাকরি উত্তর পেয়ে গেছেন। অর্থাৎ আপনি যদি ইন্টারকানটেক্টেড তথ্য দিয়ে চমৎকার ভাবে একটা কমপ্লিট DS 160 ফর্ম পুরুন করতে পারেন তাহলেই ইনশাআল্লাহ আপনি ভিসা পাবেন। কারণ ইন্টারভিউ এর আগে এই ফর্ম এর উপর স্টাডি করেই সাধারণতো আপনার ভিসা ইস্যু করে থাকে। আর ইন্টারভিউতো হয় মাত্র ২ থেকে ৫ মিনিট, এই সময় এর মধ্যে আপনাকে আর কি বা যাচাই বাঁচাই করার থাকে। তাই অদক্ষ লোক দ্বারা ফর্ম ফিলাপ করলে আপনার ভিসা হওয়ার থেকে না হওয়ার সম্ভানাই বেশি থাকে। আরও একটা জিনিস মনে রাখবেন DS-160 ফর্ম এর তথ্য এবং আপনার ইন্টারভিউ এর তথ্য এই দুই এর মধ্যে চমৎকার ও শৈল্পিক একটা মিল থাকতে হবে।
নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস তৈরী করুন, সঠিক গাইড লাইন ফলো করুন, সঠিক তথ্য দিয়ে DS-160 ফর্ম ফিলাপ করুন, ইন্টারভিউ এর জন্য প্রস্তুতি নিন ইনশাআল্লাহ আপনার ভিসা কেউ আটকাতে পারবে না।
🔷 কিছু প্রশ্ন যা ক্লাইন্ট আমাদের সচরাচর করে থাকেন, সেগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছি।
১. আমেরিকার ভিসার জন্য কতো টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হবে?
উত্তরঃ যেতেতু আমেরিকার এম্বাসি ডকুমেন্টস দেখে না তাই ব্যাংক ব্যালেন্স তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ নয় তবে আপনি যতটুকু টাকা আমেরিকা ঘুরে আসার জন্য প্রয়োজন ততটুকু টাকা ব্যাংকে রেখে দিতে পারেন।
২. হোটেল বুকিং, প্লেনের টিকেট বুকিং এর কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা?
উত্তরঃ ভিসা পাওয়ার আগে পর্যন্ত এসব হোটেল বুকিং, প্লেনের টিকেট বুকিং এর কোনো প্রয়োজন নেই। এগুলা ভিসা পাওয়ার পর প্রয়োজন হয়।
৩. NOC/GO লাগবে কিনা?
উত্তরঃ ইন্টারভিউ এর সময় কন্সুলার অফিসার কখনই NOC/GO দেখতে চায় না তবে ইমিগ্রেশন পার হবার সময় ইমিগ্রেশন অফিসার NOC/GO দেখতে চাইতেও পারে।
৪. পিটিশন/ইমিগ্রেন্ট ফাইল এপ্লাই করা থাকলে টুরিস্ট ভিসায় এপ্লাই করা যায় কিনা?
উত্তরঃ অবশ্যই এপ্লাই করা যায়। একটি ইমিগ্রেন্ট ফাইল প্রসেস হতে ১০-১৫ বছর এর মতো সময় লাগে, এর মধ্যে আপনি চাইলে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
৫. এপ্লাই করলে ইন্টারভিউ ডেট কবে পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ বর্তমানে আমেরিকার টুরিস্ট ভিসার ইন্টারভিউ ডেট প্রায় ১ বছর পর পাওয়া যাচ্ছে। আমরা রিশিডিউল করে ইন্টারভিউ ডেট ৪ মাসের মধ্যে করে দিয়ে থাকি।
আরও অনেক প্রশ্ন থাকে যার সব উত্তর দেয়া পোস্টে সম্ভব নয়।
আমেরিকার টুরিস্ট ভিসার এম্বাসি ফী ১৬০$ ডলার যা বাংলাদেশ এর টাকায় কনভার্ট করলে আসে ১৭,৬০০ টাকা। এই টাকা শুধুমাত্র EBL অর্থাৎ ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড এ জমা দিতে হয়। এম্বাসি ফী জমা দিয়ে আপনাকে ইন্টারভিউ এর জন্য ডেট নিতে হবে।
🔷 এম্বাসি ফী জমা দেয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন।
১. পাসপোর্টের স্কেন কপি
২. ১টি ফোন নাম্বার
৩. ১টি ইমেইল আইডি
🔷 এপ্লিকেশন করার জন্য যা যা প্রয়োজন
১. ছবি ২×২ সাইজ সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড (ল্যাব কপি)
২. আপনার মা -বাবার তথ্য
৩. আপনার শিক্ষাগত সকল তথ্য
৪. আমেরিকায় যদি আপনার পরিচিত কেও থেকে থাকে তার তথ্য।
৫. স্বামী বা স্ত্রীর তথ্য
৬. ব্যবসা/চাকরি জনিত সকল তথ্য
৭. পূর্ববর্তী ট্রাভেল হিস্ট্রি
৮. কোনো সংস্থায় জড়িত থাকলে সেই সংস্থার নাম
🔷 আমরা আপনাকে যে সকল সেবা দিয়ে থাকবোঃ
১. আপনার DS-160 ফর্ম সঠিক ও চমৎকার ভাবে পূরণ করে দিবো।
২. আপনার ইন্টারভিউ ডেট রিশিডিউল এর মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে আসবো।
২. আপনাকে ইন্টারভিউ এর সম্পুর্ণ গাইডলাইন দিয়ে দিবো।
৩. ইন্টারভিউ এর জন্য যে সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন তা আমরা গুছিয়ে দিবো।
🔷 আমরা আমেরিকার যেসব ভিসা প্রসেসিং করে থাকিঃ
১. ভিজিট ভিসা (B1/B2)
২. বিজনেস ভিসা (B1)
৩. ড্রপ বক্সের মাধ্যমে ভিসা রিনিউ।
আমাদের ফোন নাম্বারঃ (ফোন করার সময় সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত)
+880 19 0911 2560
+880 19 0911 2564
+880 19 1374 2699
(আমরা সাধারণত ফোন কলের অনেক প্রেসার এ থাকি, যদি ফোন এ আমাদের কে না পান তবে সরাসরি অফিস এ আসার অনুরোধ রইলো, আমাদের অফিস আওয়ার সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা)
খুব দ্রুত রেসপন্স পেতে সরাসরি ফোন করুন অথবা whatsapp এ knock করুন।
📧 Mail: [email protected]
TALON CORPORATION LTD
HOUSE 11 B Road 130, Gulshan 1 Dhaka .
Or
🏢 আমাদের ঠিকানাঃ মতিঝিল চায়না টাউন লিফটের ১৯, ঢাকা, ১০০০.