দলছুট ট্রাভেল

দলছুট ট্রাভেল Let us travel
(1)

ঈদ মানে খুশিঈদ মানে আনন্দভুলে যাই দুঃখ ব্যাথাভুলে যাই ক্ষোভ দ্বন্দআত্ম-শুদ্ধি সংযম চর্চাথাকুক শুধু জারিঅল্পে তুষ্ট আর আত...
21/04/2023

ঈদ মানে খুশি
ঈদ মানে আনন্দ
ভুলে যাই দুঃখ ব্যাথা
ভুলে যাই ক্ষোভ দ্বন্দ

আত্ম-শুদ্ধি সংযম চর্চা
থাকুক শুধু জারি
অল্পে তুষ্ট আর আত্ম-তৃপ্ত
যেন সর্বদা থাকতে পারি

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা!

নববর্ষের ডাক-একটা ঝড় আসুকসব শংকা উড়ে যাক একটা নতুন সূর্য উঠুকদিক নতুনের ডাকছুটুক বাতাস জোরেযাক উড়ে সব কষ্টপুরানো ব্যর্থত...
14/04/2023

নববর্ষের ডাক-

একটা ঝড় আসুক
সব শংকা উড়ে যাক
একটা নতুন সূর্য উঠুক
দিক নতুনের ডাক

ছুটুক বাতাস জোরে
যাক উড়ে সব কষ্ট
পুরানো ব্যর্থতা-শোক
ভেসে যাক হোক নষ্ট

আশার আলো জ্বেলে
আরো বৈশাখ আসুক
একদিন নয় পুরো বছরটাই
প্রাপ্তির আনন্দে ভাসুক

25/03/2023
20/02/2023

একুশ মানে

একুশ মানে জেগে উঠা
একুশ মানে চেতনা
একুশ মানে শোক
একুশ মানে বেদনা

একুশ মানে উদ্দীপনা
একুশ মানে শক্তি
একুশ মানে স্বাধীনতা
একুশ মানে মুক্তি

একুশ মানে দায়বদ্ধতা
একুশ মানে রক্ত ঋণ
একুশ মানে শপথ নেয়া
ছিনিয়ে আনবো আলোর দিন

একুশ মানে একটি জাতি
একুশ মানে ভালবাসা
একুশ মানে নতুন সূর্য
একুশ মানে নতুন আশা

একুশ মানে অনেক চাওয়া
মায়ের ভাষা ছিনিয়ে নেয়া
একুশ মানে মায়ের মুখে
মায়ের ভাষা ফিরিয়ে দেয়া

একুশ মানে দূর করা
জমাট ঘোর অমানিশা
একুশে মানে যে করে হোক
আনবো নতুন আলোর দিশা

একুশ মানে সালাম বরকত
একুশ মানে জব্বার রফিক
একুশ মানে রক্ত দান
একুশ মানে নতুন দিক

একুশ মানে অধিকার
একুশ মানে ফুল ফোটা
একুশ মানে বিদ্রোহ
একুশ মানে বুকের পাটা

একুশ মানে জেগে উঠা
একুশ মানে জেগে থাকা
একুশ মানে স্বপ্ন নির্মাণ
একুশ মানে স্বপ্ন আাঁকা

মামনী,আজকে আমরা গল্প করবো সুন্দরবন ভ্রমন নিয়ে।সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। তুমি কি জানো ম্যানগ্রোভ বন কি? আচ্...
11/09/2022

মামনী,
আজকে আমরা গল্প করবো সুন্দরবন ভ্রমন নিয়ে।
সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। তুমি কি জানো ম্যানগ্রোভ বন কি? আচ্ছা থাক। তুমি পরে কখনো জেনে নিও ম্যানগ্রোভ বনের বিষয়ে বিস্তারিত। তোমার সাথে গল্প করার উদ্দেশ্য তো জ্ঞান বিতরন করা নয়। আমরা বরং
ম্যানগ্রোভ বনে আমাদের ভ্রমনের গল্পটা করি।
আমরা হটাত করে খুলনা গিয়েছিলাম। কোন কাজ না। এমনিতে ঘুরতে।আমি এর আগে কখনো খুলনা যাই নি। তাই ভাবলাম খুলনায় একটু ঢু মেরে আসি। তো খুলনায় যখন আসলাম তখন সুন্দরবনে সাথে তোেএকটু দেখা না করলেই নয়। তাই একদিন সকাল বেলা বের হলাম সুন্দরবনের সাথে দেখা করতে।
মংলার একটা ঘাট থেকে মাঝারী একটা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় শুরু হলো সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা। কিছুক্ষনের মধ্যেই নদীর এই পার হতে ঐ পারে পৌঁছুতেই আমার মনে হলো সুন্দরবন শুরু হয়ে গেলো। আমাদের গাইডের ভাষ্য মতে কাগজে কলমে যদিও সুন্দরবন শুরু করমজল নামক জায়গা থেকে। কিন্তু, প্রকৃতি কি আর কাগজকলম মেনে চলে। নদীর ঐ পাড় থেকে আমি দিব্যি দেখতে পেলাম কেওড়া গাছ, সুন্দরী গাছ, গোল পাতাসহ অন্যান্য গাছ যেগুলো সুন্দরবন ছাড়া অন্য কোথাও এতো বেশী দেখা যায় না।
কয়েকটা শুশুককেও দেখলাম আপন মনে খেলা করছে নদীর পানিতে। নাম গোলপাতা হলেও গোলপাতা দেখতে একটুও গোল নয় বরং নারকেল গাছের পাতার মতো দেখতে সেটা এতোদিন শুনেছি। এই বার চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন হলো। গোল পাতার ফলও দেখলাম। দেখতে কিছুটা আরবদেশের খেঁজুরের মতো। আবার ধরেও লম্বা লম্বা থোকায়। গোল পাতার রসও নাকি নেয়া যায় এবং সেখান থেকে গুড়ও নাকি হয়। এর পরে তোমাকে নিয়ে যখন আসবো ইনশা আল্লাহ তখন অবশ্যই গোলপাতার ফল, রস, গুড় এগুলো সব চেখে দেখার চেষ্টা করবো।
আরেকটা মজার গাছ হলো কেওড়া গাছ। সুন্দরবনে এই গাছগুলো অনেক বেশী দেখা যায়। এই গাজের বৈশিষ্ট্য হলো এই গাছের শেকড়গুলো মূল গাছের চারপাশ দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত মাটি ফুড়ে উপরে উঠে আসে। এটাকে বলা হয় শ্বাস মূল। এই শেকড়গৃুলো বেশ ধারালো। সুন্দরবনে হাটতে গেলে জুতো থাকলেও খুব মুশকিলে পড়া লাগে এই শ্বাস মূলের কারণে। এগুলো বেশ সূচালো এবং ধারালো। তুমি যদি বেখায় হও তাহলে পায়ে লেগে বেশ ব্যাথা লাগতে পারে। তাই সুন্দরবনে চলাচল করার সময় বেশ সাবধানে থাকতে হয়।
আমি অবশ্য এই শ্বাসমুলসহ কেওড়া বনে হাটার সময় যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয় সেটার প্রশিক্ষণ পেয়ে গিয়েছিলাম নোয়াখালির হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে। নিঝূম দ্বীপেও কেওড়া বন আছে আর আমরা সেখানে হরিন দেখার জন্য কেওড়া বনের অনেক ভেতর পর্যন্ত গিয়েছিলাম। আমাদের সাথে কয়েকজনের তো অসাবধানতার কারণে কেওড়ারে শ্বাসমুলের সাথে পা কেটেও গিয়েছিলো। তোমাকে অন্য আরেকদিন নিঝুমদ্বীপে বেড়াতে যাওয়ার গল্প বরবো।
সুন্দরবনের গল্পে ফিরে আসি। আমরা বেশ কিছুক্ষণ অলিখিত বা আন-অফিসিয়াল সুন্দরবন দেখতে দেখতে চলে আসলাম অফিসিয়াল সুন্দরবনের শুরু যেখান থেকে সেই করমজলে। এখানে একটি পর্যটন কেন্দ্র আছে। যেখানে কুমির চাষ হয়। অনেকগুলো হরিন রাখা আছে। কয়েক রকম প্রাণি স্টাফ করে রাখা আছে। এখানে সবচেয়ে ভয়ংকর হলো গাছে গাছে অসংখ্য বানর। এবং ওদের র্টার্গেট হলো পর্যটকদের হাতির জিনিসপত্র। হোক সেটা খাবার, অথবা ক্যামেরা অথবা ব্যাগ। তাই এখানে আসলে প্রথমে কিছুক্ষণ বেশ সতর্ক থাকা প্রয়োজন বানর থেকে। একটা বানর ছোট একটা বাচ্চা থেকে চিপ কেড়ে নিতে গিয়ে বাচ্চাটাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে রক্তাক্ত পর্যন্ত করে দিয়েছে।
যাই হোক, এখানে পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য একটা উচু পায়ে হাটা পথ আছে। যেটা ধরে তুমি নিরাপদে করমজলের পাশের ভেতরকার প্রাকৃতিক বনে ঘুরে আসতে পারো। সেই পথের গল্প একটু পরেই বলছি তার আগে বলে নিই মজার লাল পা যুক্ত কাঁকড়ার কথা। আমরা করমজলের প্রবেশ পথ পার হয়ে একটু ভেতরের দিকে খালের পাড়ে একটু দাড়ালাম। এখানে খালের তীরে বেলে মাটিতে শত শত লাল পা যুক্ত ছোট ছোট কাকড়ার বসত বাড়ি। ওরা হটাত করে মাথা তুলে দেখে কেউ আছে কিনা। যদি না থাকে, তাহলে পিল পিল করে অনেকগুলো কাকড়া বের হয়ে আপন মনে ঘুড়ে বেড়ায়। আর যদি কোন প্রাণীর, বিশেষ করে মানুষের উপস্থিতি টের পায় তখন অবিশ্বাস্য দ্রুতি গতিতে গর্তে ঢুকে যায়। ছোট লাল কাকড়া বা ছোট কালো কাকড়া কক্সবাজার সৈকতেও দেখা যায়। এখানকার কাকড়াগুলো সেই লাল কাকড়াগুলোর তুলনায় বেশ খানিকটা বড়। এবং এগুলোর সবচেয়ে দর্শনীয় অংশ অংশে এগুলোর লাল বড় বড় দাঁড়া।
কাঁকড়া দেখা শেষে আমরা উঁচু পথ ধরে বনের ভেতরে ঢুকলাম। পথটা উচুঁ কেন জানো? জোয়ারের সময় পানি ঢুকে সুন্দরবনে। তাই বনের মাটি বেশ কাদা কাদা। তাছাড়া কেওড়ার শ্বাসমূল এবং অন্যান্য গাছের শেকড় বাকড় দিয়ে বনের ভেতরে চলাচল বেশ অসুবিধাজনক। তাই এই উচুঁ প্লাটফর্মেরর উপর দিয়ে হাটতে হাটতে বনের ভেতরে হাটলে বনের প্রকৃতিকে উপভোগ করা যায়। না হয় চলার পথের খেয়াল রাখতে রাখতে বনের প্রকৃতি আর উপভোগ করা হয় না। অবশ্য বনের বিভিন্ন রকম ছোট বড় প্রাণীর সংস্পর্শ এড়ানোও একটা কারণ।
এই প্লাটফর্মের উপর দিয়ে হাটতে হাটতে জঙ্গলে ঢুকে যেন আমরা একটা অন্য জগতে প্রবেশ করলাম। বনটা বেশ নির্জন। নাম না জানা বিভিন্ন পোকার ডাক ছাড়া কোন শব্দ নেই। মাঝে মাঝে দূর থেকে বানরের একটা চেচামেচির শব্দ ভেসে আসছিলো। বনের ভেতরটা ছায়ায় ছায়ায় কেমন রহস্যময়। আমার তো দুই একবার মনে হলো যদি একটা বাঘ হটাত সামনে হলে আসে তাহলে কি উপায় হবে? অবশ্য আমাদের নিরাপত্তার জন্য বন্দুকধারী দুইজন গার্ড ছিলো পর্যটকদের সারির শুরুতে একজন এবং শেষে একজন।
হাটতে হাটতে আমরা চলে এসেছিলাম ওয়াচ টাওয়ারের কাছে। একটা ৪তলা সমান উচু টাওয়ার তৈরী করা হয়েছে উপরে উঠে প্রকৃতিকে আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য। এই লেখার সাথে যে ছবিটা আছে সেটা সেই ওয়াচ টাওয়ার থেকে সুন্দরবনের করমজল এলাকার ছবি।
মামনী, ওয়াচ টাওয়ার থেকে সুন্দরবন দেখা যে কি উপভোগ্য এটা তুমি যখন সুন্দরবন যাবে তখন নিজেই দেখতে পাবে। আমারতো ইচ্ছে করছিলো আমি অনেকক্ষণ পর্যন্ত শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য দেখি। যেদিকে তাকাও ঝকঝকে সুন্দর সবুজ। রোদের আলোয় যেন ঝলমল করছে চারপাশ। দূরে নদী দেখা যাচ্ছে। নদী থেকে সাপের মতো একেবেকে সবুজের ভেতরে ঢুকে যাওয়া খাল। নদী এবং খালের ঘোলা পানি। অদ্ভুত এক নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য। সাথী পর্যটকদের সবাই আমার মতো প্রকৃতি পাগল না হওয়ায় এই পাগলকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ছেড়ে আবার ফেরার পথ ধরতে হলো।
করমজল থেকে ফেরার সময় আমি যেন আবিষ্ট হয়ে ভাবছিলাম স্রষ্টা এতো যত্ন করে এতো সুন্দর এই পৃথিবীটা বানালো আমাদের জন্য। আমরা নানান সীমাবদ্ধতার অযুহাতে এই সব সৌন্দর্য্যের ছিটেফোটাে উপভোগ করতে তো পারি-ই না, বরং যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকৃতিকে ধ্বংস করার এবং নষ্ট করার অনেক রকম চেষ্টা কখনো থামাই না।
এই বেরসিক কথাগুলো এই কারণে বললাম যে, বনে আসা যাওয়ার পথে আমাদের মতোই কোন কোন পর্যটক চিপস, বিস্কিট, ড্রিংকস, পানি খেয়ে সেগুলোর খালি প্যাকেট ও বোতল বনে, খালে, নদীতে অকৃপন এবং উদারভাবে দান করে আসে। আর অকাতরে গাছ কাটার কথা না হয় বাদ রাখলাম।
মনটাই খারাপ হয়ে গেলো সুন্দর প্রকৃতির এমনভাবে দুর্দশাগ্রস্থ হতে দেখে। আমরা কবে যে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার চেষ্টা করবো সেটা আমরা নিজেরাই বোধ হয় জানি না। জানবো কেমন করে, আমরা যে কি আত্ম-বিধংসী কাজে নিয়োজিতো আছি সেই উপলব্ধিটুকুওতো আমাদের নেই। তাই আমরা প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসি না। উপভোগের অযুহাতে প্রকৃতি ধ্বংস করতে আসি।
ধন্যবাদ মা। আমাকে অনেকখানি সময় দেয়ার জন্য।

সাজেকের গল্প-৩মামনী,আজকে আমরা গল্প করবো সাজেক থেকে ঢাকায় ফেরা নিয়ে। এমনিতে সাজেক থেকে ঢাকায় ফেরায় কোন এ্যাডভেঞ্চার থাকার...
08/09/2022

সাজেকের গল্প-৩
মামনী,
আজকে আমরা গল্প করবো সাজেক থেকে ঢাকায় ফেরা নিয়ে। এমনিতে সাজেক থেকে ঢাকায় ফেরায় কোন এ্যাডভেঞ্চার থাকার কথা নেয়। কিন্তু ঐ যে, আমার যাওয়ার সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমাদের এইবারের ভ্রমনে আমরা সুযোগ পেলেই একটু এ্যাডভেঞ্চার যোগ করার চেষ্টা করবো।
সাধারনত, কেউ সাজেক বেড়াতে গেলে চাঁদের গাড়ি বা অটো রিজার্ভ করে যাতায়াত করে। অর্থাৎ যাওয়ার জন্য যে গাড়িটা নেয় সেই গাড়িটা রেখে দিয়ে আবার সেই গাড়িতেই ফিরে আসে। কিন্তু আমরা আসার সময় যে গাড়িতে করে এসেছিলাম সেটা ছেড়ে দিয়েছিলাম এ্যাডভেঞ্চার করবো এই উদ্দেশ্যে মাথায় রেখে।
এমনিতে রাতে বৃষ্টি হওয়াতে সকালটা বেশ ঝকঝকে এবং স্নিগ্ধ লাগছিলো। যেহেতু আমাদেরকে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে হবে। সেই রাঙ্গামাটির শেষ প্রান্ত সাজেক থেকে বাংলাদেশের মাঝামাঝি রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত। এবং কীভাবে যাবো সেই বিষয়ে কোন ধারণা বা অভিজ্ঞতাও কোনটাই নেই। তাই সকাল সকাল কংলাক ছেড়ে রুইলুই এর উদ্দেশ্যে বের হলাম। পরিকল্পনা হচ্ছে, স্থানীয় মানুষদের যাতাযাতের জন্য যে গাড়ি ব্যবহার করে সেই গাড়িতে করে স্থানীয় মানুষদের সাথে গল্প করতে করতে খাগড়াছড়ি যাবো।
কিন্তু, সাজেক থেকে কোন লোকাল গাড়ি তো খাগড়াছড়ি যায় না। প্রথমে যেতে হবে বাঘাইছড়ি। সেখান থেকে দীঘিনালা। সেখান থেকে খাগড়াছড়ি। ভ্রমনের রুটের বিবরন শুনে প্রথমে একটু হকচকিয়ে গেলেও যা আছে কপালে বলে লোকাল গাড়িতে স্থানীয়দের সাথে ঠাসাঠাসি করে বসে পড়লাম। অবশ্য যেহেতু কংলাক থেকে নাস্তা না করে বের হয়ে ছিলাম তাই রুইলুই পাড়াতে খুব মজার একটা খিচুড়ি দিয়ে নাস্তা করলাম। খিচুড়ির সাথে ছিলো ডিম, পেঁয়াজের ভর্তা এবং আচার।
যাত্রার শুরুতেই এ্যাডভেঞ্চারের মজা বাড়ানোর জন্য প্রকৃতি তার অবদান রাখা শুরু করলো। নামলো ঝুম বৃষ্টি। তাড়াতাড়ি, ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেয়া হলো চাঁদের গাড়ির ছাঁদ এবং চারপাশ। যার ফলে আমাদের মনে হতে লাগলো যে, আমরা একটি সামরিক যানে গোপান কোন মিশনে চলছি সবাই মিলে। চারপাশ এবং উপরটা ঢেকে দেয়াতে ভেতরেটা বেশ অন্ধকার। কেউ কেউ কাউকে ভালো করে দেখতে পাচ্ছে না। কেউ কেউ ফিসফিস করে করে কথা বলেছে। বাইরে এবং ত্রিপলের উপর ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে। গাড়িটা ঘোঁ ঘোঁ শব্দ করতে করতে পাহাড়ি পথ চলছে। কখনো উঠছে কখনো নামছে।
বেশ কিছুক্ষণ এমন করে চলার পর বৃষ্টি থামলো। ত্রিপল সরলো। আমরা আবার চারপাশের সুন্দর বৈচিত্রপূর্ণ প্রকৃতি দেখার সুযোগ পেলাম। এখানে মজার বিষয়হলো। এক পশলা বৃষ্টির পর প্রকৃতি যেন আরো সতেজ, ঝলমলে আর সুন্দর হয়ে উঠেছে। সকাল গড়িয়ে দুপুরের দিকে যাচ্ছে। রোদের তেজ বাড়ছে। গাছের সবুজ পাতাগুলো উজ্জ্বল আলোকে ঝকমক করছে।
গাড়ির ভেতরেও আরেক মজা। গাড়িতে নানান ধরণের মানুষের মেলা। কেউ সাজেকের স্থানীয় বাঘাইহাট যাচ্ছে সবজি বিক্রি করতে। কেউ আত্মীয়ের বাড়ী এসেছিলেন সপরিবারে বেড়াতে। এখন ব্যাগ ভর্তি তরিতরকারি উপহার নিয়ে ফেরত যাচ্ছেন। স্থানীয় কেউ কেউ, বিশেষ করে পাহাড়ী কয়েকজন আধুনিক পোশাক পড়া তরুন, ঢাকায় বা চট্টগ্রাম যাবেন বলে উঠেছেন। বোধহয় সেখানে পড়ালেখা করেন। আমাদের মতো এ্যাডভেঞ্চারিস্ট কয়েকজন পর্যটকও আছেন দেখলাম। বয়স বেশ কম তাদের। এই বারো রকম মানুষের তেরো রকম গল্প গুজবে পুরো গাড়ি সরব হয়ে রইলো পুরোটা পথ।
দেখতে দেখতে বাঘাইহাট চলে আসলো। সময় হলো আমাদের গাড়ি পরিবর্তনের। অবশ্য বাঘাইহাট থেকেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের সরাসরি গাড়ি আছে। কিন্তু, সেগুলো অনেকক্ষন পরে ছাড়বে। আর তাছাড়া আমারা আরেকটু এ্যাডভেঞ্চার করার জন্য দীঘিনালা যাওয়ার আরেকটি গাড়িতে উঠে বসলাম। এই গাড়িতেও অবশ্য একই পরিবেশ একই ধরণের গল্প। তাই নতুন করে আর কিছু তোমাকে বলছি না।
দীঘিনালায় এসে আমাদের আবার গাড়ি পবিবর্তন করতে হলো। এর মধ্যে বাঘাইহাটে এবং দীঘিনালার, বিশেষ করে দীথিনালার বিশাল এবং বৈচিত্রপূর্ণ কাঁচাবাজারটা একটু সময় নিয়ে ঘুরে দেখতে খুব লোভ লাগছিলো। কিন্তু, যেহেতু আমাদের অনেক দূর যেতে হবে এবং দুপুর প্রায় হয় হয়। তাই লোভ সামলে দীঘিনালা থেকে খাগড়াছড়ির লোকাল গাড়িতে গিয়ে উঠলাম। এবার অবশ্য একটি ডিজেল চালিত অটোতে শেয়ারে উঠেছিলাম। তাই অল্প কয়েকজন সহযাত্রী থাকাতে যাত্রাপথের আর তেমন কোন বিচিত্র অভিজ্ঞতা হলো না। সাদামাটা একটি যাত্রায় প্রকৃতি দেখতে দেখতে খাগড়াছড়ি এসে পৌঁছালাম।
খাগড়াছড়ি পৌঁছে প্রথমেই ঢাকার বাসের টিকিট করে বের হলাম দুপুরের খাবারের খোঁজে। শেষ পর্যন্ত পছন্দ করলাম একটি চাকমা খাবার দোকান। দোতলা রেষ্টুরেন্টটি খুব সুন্দর। বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে ডেকোরেশন করা। খুব সুন্দর পরিবেশ। খাবারগুলোতে বেশ মজার এবং বৈচিত্রপূর্ণ। সমতলের খাবার এবং পাহাড়ীদের খাবারে আমার একটা পার্থক্য খুব চোখে লাগলো। আমরা সমতলের মানুষরা, হয়তো আমার পরিচিতদের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য, খাবার একটু বেশী সেদ্ধ করি এবং অনেক বেশী মশলা ব্যবহার করি। পাহাড়ীরা তুলনামূলক কম সেদ্ধ এবং কম মশলাদার খাবার খায়। আমাদের কাছে কিন্তু তাদের খাবারটা বেশ স্বাস্থ্যকর এবং মজার মনে হয়েছে।
যাই হোক, খাওয়া শেষ করে আমরা বাসে উঠলাম। একটা লক্কর ঝক্কর মার্কা বাস। যাবে খুলনা পর্যন্ত। মাঝে আমাদের ঢাকা নামিয়ে দেবে। ফেরার পথের বেশ খানিকটা পথ খুব খারাপ ছিলো। তবে খাগড়াছড়ি থেকে ফেনী নদী পর্যন্ত পাহাড়ী রাস্তাটা অনেক সুন্দর ছিলো। রাস্তার পাশে একটা চা বাগানও ছিলো। চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার রাস্তাটা একরকম সুন্দর ছিলো। যেটা সমতল থেকে ক্রমশ পাহাড়ে উঠা। খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকায় ফেরার রাস্তাটা ছিলো অন্য রকম। এই রাস্তায় আমি আগে এসেছি এমনটা মনে পড়ে না । অন্তত: দিনের বেলায় আসিনি এটা নিশ্চিত।
এই বিষয়টা আলাদা করে বলছি এই কারণে যে, এই বার নিয়ে ৩ বার খাগড়াছড়ি গিয়ে আসলাম। প্রথমবার গেলাম বান্দরবান থেকে রাঙ্গামাটি হয়ে- কিছুটা দিনে কিছুটা সন্ধায়। ফিরলাম রেগুলার খাগড়াছড়ি ঢাকা রুটে-রাতের বেলা। দ্বিতীয়বার ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি রেগুলার রুটেই যাতায়াত করলাম- যেহেতু যাত্রার সময়টা রাত ছিলো পথের প্রকৃতি দেখার বা উপভেঅগ করার সুযোগ পাইনি। এই বার চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি গেলাম দিনের বেলা সেটা বোধহয় রেগুলার রুট ছিলো। কিন্তু ফেরার সময় যে রুটটাতে ফিরলাম সেটা যে অন্য আরেকটা পথ ছিলো সেটা নিশ্চিত। এই বিষয়টা আমি বেশ উপভোগ করেছি। একই যায়গায় যাওয়া এবং আসার জন্য ৩টা ভিন্ন ভিন্ন পথ। এটা খুবই বৈচিত্রপূর্ণ একটা অভিজ্ঞতা। কারণ, পথগুলো ভিন্ন মানে পথের পাশের প্রকৃতির চেহারাও ভিন্ন এবং সৌন্দর্য্যও অন্য রকম। একই জায়গাতে যেতে আসতে যদি তিন রকম প্রকৃতি দেখার সুযোগ পাওয়া যায় এর চেয়ে মজার আর উপভোগ্য ব্যাপার আর কি হতে পারে। অবশ্য ৩বারে যাওয়ার ভ্রমন সঙ্গীরাও মোটামুটি ভিন্ন ছিলো। এটাও একটা মাজার বিষয়।
মামনী, তোমার সাথে ইনশা আল্লাহ কমপক্ষে আরো একবার যাবো খাগড়াছড়ি, হয়তো সাজেকও। বাবা-মেয়ের ভ্রমনটা আশা করি অন্য রকম মজার এবং খুব উপভোগ্য হবে।
অনেক সময় নিয়ে আমার সাথে গল্প করার জন্য তোমাকে ানেক অনেক ধন্যবাদ।

ভার্চুয়াল মেয়ের সাথে সাজেকের গল্প-2মামনী,আমরা যখন সাজেকে পৌঁছাই তখন দুপুর। আমাদের অটো-টা একদম কনলাক পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছ...
07/09/2022

ভার্চুয়াল মেয়ের সাথে সাজেকের গল্প-2

মামনী,

আমরা যখন সাজেকে পৌঁছাই তখন দুপুর। আমাদের অটো-টা একদম কনলাক পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছে দিয়েছিলো। ৩ বছর আগে আমি একবার সাজেক এসেছিলাম। তখন সেই সময় সাথে অনেক লটবহর থাকার কারণে এবং আমাদের অটো আমাদেরকে কংলাক থেকে অনেক দূরে নামিয়ে দেওয়ায় কংলাকে উঠতে অনেক সময় লেগেছিলো এবং আমার অনেক কষ্টও হয়েছিলো। তুমিতো জানো তোমার বাবা তত চালাক চতুর মানুষ নয়। আগেরবারের কষ্ট থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং চিরন্তন প্রবাদ (তাই বোকা শেখে ঠেকে ) কে সত্যি করে এবার একদম হালকা একটা পিঠের ব্যাগ নিয়ে এসছি এবং তরতর করে খাড়া কংলাক পাহাড়ে উঠে গেলাম অল্প সময়ে কোন রকম কষ্ট ছাড়াই।তবে, এবারও সেই রিজোর্টাতেই উঠলাম যেটাতে এর আগেরবার উঠেছিলাম।

মামনী, এই লেখার সাথের ছবিটা একটু খেয়াল কর। ঐ দূরে রিজোর্ট থেকে মিজোরামের পাহাড়গুলো দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ের সাথে লেগে থাকা মেঘগুলো খুব ভালো দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু, আমরা শহরের আকাশে শরৎকালে সাদা মেঘকে যেমন আকাশের এখানে সেখানে লেগে থাকতে দেখি; যদিও আমরা বৈশাখ মাসে গিয়েছিলাম মেঘগুলো সেই শরতকালের মেঘের মতোই মিজোরামের পাহাড়ে তুলোর মতো লেগে লেগে ছিলো। মনে হচ্ছিল পাহাড়ের সবুজের গাড়ে যেন সাদা শিমুল তুলো লেগে আছে।

মামনী, রিজোর্ট-টাতে আমরা ছাড়া আর রিজোর্টের কেয়ারটেকার ছাড়া চতুর্থ কোন প্রাণী ছিলো না। ওহ! ভুল বললাম। একটা তক্ষক ছিলো এবং কয়েকটা কবুতর ছিলো। আমি আগে কখনো তক্ষকের ডাক শুনিনি। তক্ষকের ডাক অনেক জোরে আর একটু অদ্ভুত রকমের। কেমন যেন ভারী গলার কোন মানুষের গলা থেকে বের হওয়া শব্দের মতো। তাই হটাত করে যখন একটা বেশ জোড়ালো অপরিচিত অদ্ভুত একটা শব্দ শুনেছিলাম, তখন বেশ হকচকিয়ে গিয়েছিলাম। এটা আবার কিসের শব্দ! তাছাড়া সকাল সন্ধা কবুতরগুলোর বাগবাকুম বাগবাকুম শব্দে মেতে ছিলো পুরো রিজোর্ট। এগুলোর সাথে একটা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের মতো ঝিঁঝিঁ পোকার গান এবং রির্জোটের পাশের বাড়ির পালিত দুইটা শুকরের
থেমে থেমে ঘোঁত ঘোঁত শব্দ বেশ উপভোগ করেছি। সন্ধার পর মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়েছি একটা অচেনা প্রাণীর বিকট এবং অদ্ভুত পিলে চমকানো একটা আওয়াজে।

আর একটা জিনিস খুব উপভোগ করেছি সেটা হলো রিজোর্ট থেকে মিজোরামের দূর পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে থাকা। ছবিতে যে দু’টো বারান্দা দেখতে পাচ্ছো সেগুলো রুমের সাথে লাগানো। রুমের দড়জাগুলো এমনভাবে তৈরী যে, চাইলে পুরো রুমের সামনেটা খুলে ভাজ করে এক পাশে জড়ো করে রাখা যায়। যার ফলে বিছানায় শুয়ে শুয়ে আকাশ, পাহাড় আর মেঘ দেখার একটা অপূর্ব সৌন্দর্য্য। তছাড়াও দুই রুমের মাঝে প্লাটফর্মের মতো দেখতেেএকটা উঁচু অংশ ছিলো যেখানে সকাল সন্ধা বসে থাকলে মনে হতো যেন শুণ্যের উপর বসে আকাশ দেখছি।আমি এই ছবিটা সেই প্লাটফর্মে দাড়িয়েই তুলেছি।

মামনী, হিসেব করলে মোট ৪ দিন ছিলাম সাজেকে।

১ম দিন তো দুপুরে এসে পৌঁছালাম। সেদিন বিকেল আর সন্ধা রিজোর্টের বারান্দা আর প্লাটফর্ম থেকে অন্য কোথাও যাইনি ডায়নিং টেবিলে খেতে যাওয়া ছাড়া।

২য় দিন বিকেল পর্যন্ত সারাদিন একই রকম। বিকেলে কংলাক পাহাড়টা তোমার ফুপিকে একটু ঘুরিয়ে দেখলাম। পাহাড়ী কলা, বাঁশের ভেতরে করে চা, ইত্যাদি খেলাম। একটা মজার ব্যাপার হলো ২বার গিয়েও আমার কংলাকের ২ প্রান্ত এবং মিজোরামের পাহাড়গুলো দেখা হয়েছে। কিন্তু কংলাকের সর্বোচ্চ চূড়া বলতে একটা জায়গা আছে সেখানটাতে আমার এখনও যাওয়া হয় নি। রাতে আমরা অন্য আর একটা রির্জোর্টে বাঁশ কোরল দিয়ে রাতের খাবার খেলাম। সেদিন আবার সন্ধার পর অনেক বৃষ্টি হয়েছে। আমরা দুই-ভাই বোন ছাতা মাথায় দিয়ে পা টিপে টিপে আমরা কংলাকে যে প্রান্তে ছিলাম তার উল্টো প্রান্তে গিয়েছি বাশ কোড়ল দিয়ে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য।

৩য় দিন সকালে আমাদের রিজোর্ট কংলাকের যে প্রান্তে সেই প্রান্তের একদম শেষে একটা অসম্ভব সুন্দর জায়গা আছে যেখান থেকে ২৭০ ডিগ্রি দেখা যায়। কি অদ্ভুত একটা সুন্দর একটা জায়গা। আমরা একটা পাহাড়ের শেষ প্রান্তে। সেখান থেকে ধাপে পাহাড়টা নেমে গেছে মাটিতে। আবার তার সামনে থেকে ধাপে ধাপে উঠেছে আরেকটা পাহাড়। সেই পাহাড়ের বাম পাশে একই রকম খাঁজকাটা আবার আরেকটা পাহাড়। ডান পাশে একই রকম খাঁজকাটা আবার আরেকটা পাহাড়।
পাহাড়ের গাড়ে এই চওড়া ধাপগুলো মানুষের করা না প্রাকৃতিক ঠিক বুঝতে পারলাম না। কারণ, ধাপগুলোতে জুমের ক্ষেত, আর দূরে দূরে বিচ্ছিন্ন কয়েকটা গাছ ছাড়া আর কিছুই নেই। আর ধাপগেুলো যে একদম সমতর তাও না। আবার খাড়া পাহাড়ের মতোও না। আবার প্রাকৃতিক যে পাহাড়ের ঢাল তেমনও না। কেমন যেন একটু অদ্ভুত। কিন্তু অনেক সুন্দর। আর একটা মজার বিষয় হলো বাতাস। কাছেই বাঁশ ঝাড় ছিলো আর ছিলো অবিরত অল্প জোড়ালো একটা বাতাসের ধারা । তাই বাশেঁর পাতায় বাতাসের যে ঝিরঝির যে শব্দ সেটা যেন আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে আমাকে আমার ছোট বেলায় আমার গ্রামের বাড়ির বাশঁ ঝাড়ে পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় যে বাতাস আর ঝিরঝির শব্দ সেই সময়ে। যদিও আমার গ্রামের বাড়ি ছিলো সমতলে। কিন্তু বাশঁ পাতায় বাতাস লেগে সেই মিষ্টি ঝিরঝির শব্দে অনেকক্ষণ বুঁদ হয়ে ছিলাম।

৩য় দিন বিকেলে কংলাক থেকে নেমে একটু রুইলুই পাড়া দিকে গিয়েছিলাম। মূলত নতুন হ্যালিপ্যাড পর্যন্ত। সেখানে একটা মজার খাবার খেলাম বাঁশ কোড়লের ভেতরে চিকেন কীমা দেয়া একটা খাবার। এছাড়া খেলাম পাহাড়ী লিচু। আর দেখলাম বিচিত্র সব পাহাড়ি শাক সবজি। যার অনেক কিছুই সমতলের শাক সবজির সাথে মেলে কিন্তু কিছু অপরিচিত শাক সবজিও দেখলাম। সময়ের স্বল্পতার জন্য নাম জানা হলো না সেগুলোর। যেহেতু পুরো পথটা আস্তে ধীরে হেটে হেটে গিয়েছিলাম তাই সন্ধে হয়ে যাবে ভেবে কিছুক্ষণ হ্যালিপ্যাডে বসে লিচু খেয়ে চলে আসলাম কংলাকে।

৩টা দিন সময় কোন দিক দিয়ে চলে গেছে টের ই পাই নি। সকাল হওয়ার পর দুপুর হয়েছে. সন্ধা নেমেছে। আলোর পরিবর্তন, কবুতরের বাকবাকুম, তক্ষক- শুকরের ডাকাডাকি, আর সন্ধার পর সেই অচেনা প্রানীর পিলে চমকানো শব্দ আর মেঘ দেখতে দেখতেই সময় শেষ হয়ে গেলো। পরের দিন সকালে আমরা বাসায় ফেরার পালা।

মামনী, সেই গল্প করবো আগামী পর্বে। আশা করি তুমি উপভোগ করেছো আমাদের বেড়ানোর গল্পটা।

মামনী,বেড়ানো একটা দারুন মজার ব্যাপার। প্রতিদিনের জীবনের ব্যস্ততা, হৈ চৈ, শব্দ দূষণ, প্রতিদিন একই কাজ এই সব থেকে কয়েকটা দ...
05/09/2022

মামনী,
বেড়ানো একটা দারুন মজার ব্যাপার। প্রতিদিনের জীবনের ব্যস্ততা, হৈ চৈ, শব্দ দূষণ, প্রতিদিন একই কাজ এই সব থেকে কয়েকটা দিন এসব থেকে দূরে কোথাও কয়েকদিনের জন্য পালিয়ে থাকাটা বেশ মজার।
রাঙ্গামাটির সাজেক বেড়ানোর জন্য খুব মজার একটা জায়গা। এখানে চাইলে তুমি চুপচাপ একটা কটেজে বসে বসে মেঘ, শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ দেখতে যেমন মজা পেতে পারো। তেমনি পাহাড়ের বৈচিত্রপূর্ণ খাবার, সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন রকম মানুষ দেখার এবং তাদের সাথে মেশারও আরেক রকম মজা।
তোমার ফুপির সাথে আমার অনেক বেড়ানো হয়। আর তোমার ফুপির সাথে বেড়াতে যাওয়ার মজাটা হলো, আমি যেমন একটু এ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করি। তোমার ফুপিও এ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করে। যার ফলে, আমার আর তোমার ফুপির বেড়াতে যাওয়া মানে শুধু অলস সময় কাটানো নয়। বরং বৈচিত্রের সন্ধানে নানান রকম এ্যাডভেঞ্চার করা।
সাজেকের গল্প আমরা করবো ৩ পর্বে। আজকে ১ম পর্বে আমরা গল্প করবো সাজেক পৌঁছানো পর্যন্ত। এর পরে ২য় পর্বে সাজেকে কাটানো ৩ দিনের গল্প। তারপর শেষ পর্বে সাজেক থেকে বাসায় ফেরার গল্প।
তাহলে প্রথম পর্বের গল্প শুরু করা যাক। ২০২২ সালের এপ্রিলের শেষে তোমার ফুপি আর আমি সাজেকে বেড়াতে গেলাম ৩ দিনের জন্য। শুরুতেই এ্যাডভেঞ্চার। কোন একটা কারণে, বাসা থেকে বের হতে একটু দেরী হয়েছিলো। আমরা প্রায় চলন্ত ট্রেনে দৌড়ে দৌড়ে উঠেছিলাম। ট্রেনে আমরা গিয়েছিলাম চট্টগ্রাম পর্যন্ত।
খুব সকালে, যাকে বলে কাক ডাকা ভোর, ট্রেন থেকে নেমে আমাদের এ্যাডভেঞ্চার
আবার শুরু। আমরা যেহেতু আগে কখনো চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি বাসে যাইনি। আমাদের সেই সাত সকালে খুঁজতে হয়েছে খাগড়াছড়ি যাওয়ার বাস ষ্ট্যান্ড এবং সেখানে যাওয়ার উপায়। একটা মানুষও ছিলো না জিঙ্গাসা করার জন্য। যাই হোক, খাগড়াছড়ির বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে টিকেট করে আমরা পথের পাশের একটা চারপাশ খোলা খাবার দোকান থেকে পরোটা, ডিম, ডাল ভাজি কিনে বাসে উঠে বসলাম।
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার রাস্তাটা অসম্ভব সুন্দর একটা রাস্তা। সেকাল বেলা পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তায় চারপাশের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যাওয়ার মজা তোমার একবার পাওয়া দরকার। চারপাশে শুধু সবুজ আর সবুজ । আর যেহেতু পুরো রাস্তাচাই আঁকাবাঁকা তোমার চোখ কখনও একই রকম দৃশ্য দেখে ক্লান্ত হবে না। বাস একটু এগুলেই তুমি যা দেখবে তা পেছনে দেখে আসোনি। পুরো রাস্তাটাই এমন।
এভাবে পাহাড়ের সৌন্দর্য্য দেখে চলতে চলতে আমরা পৌঁঁছে গেলাম খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ির শাপলা মোড় থেকে সাজেকে যাওয়ার জন্য একটা ডিজেল চালিত অটো নিলাম। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার পথে আমাদেরে একটা চ্যালেঞ্জ ছিলো যথাসময়ে বাঘাইছড়ি আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করা। এবং নির্ধারিত সময়টা ছিলো সকাল ১১টা। যেহেত্র আমাদের খাগড়াছড়ি পৌঁছাতে পৌছাতেই প্রায় ১০টা বেজে গিয়েছিলো।
অটোতে করে সেই যাত্রাটা ছিলো একটা রোলার কোষ্টার চড়ার অভিজ্ঞতার মতো। আমরা খুব উৎকন্ঠিত ছিলাম আমরা যথাসময়ে পৌঁছাতে পারবো কীনা সেটা নিয়ে। তবে যাত্রাটা সৌভাগ্যক্রমে যুকিমুক্ত ছিলো। কারণ, রাস্তায় সেই সময়টাতে তেমন কোন গাড়ি ছিলো না। আর আমাদের ড্রাইভার ভাই ছিলেন অসাধারণ দক্ষ, আন্তরিক এবং মজার একজন মানুষ।
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি আসার রাস্তা এবং খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার রাস্তায় একটা বৈচিত্রপূর্ণ অমিল আছে। চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি আসার পথে প্রথমে সমতল তারপর ধীরে ধীরে ছোট ছোট পাহাড় টিলা অতিক্রম করে আমরা খাগড়াছড়িতে পৌঁছেছিলাম।
আর খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার পথে। প্রথমে একটু পাহাড় - টিলা। তারপর প্রায় সমতল কিছু যায়গা। তারপর বাঘাইছড়ি থেকে শুরু উঁচুনিচু পাহাড়ী পথে যাত্রা। তবে এই ক্ষেত্রেও তোমার চোখ কখনও ক্লান্ত হবে না পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে। কারণ তোমার চোখ কখনও একই দৃশ্য দেখবে না। উচুঁতে ওঠার সময় এক রকম সুন্দর। উঁচু থেকে নামার সময় আরেক রকম সুন্দর। মোড় ঘুরলেই নতুন দৃশ্যপট।
সাজেক যাওয়ার পথে আরেকটা মজার ব্যাপার হলো। পাহাড়ের ছোট ছোট বাচ্চারা রাস্তার পাশ থেকে হাত নেড়ে তোমাকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানাবে। মিষ্টি মিষ্টি ছোট ছোট বাবুগুলো যখন হাসি মুখে হাত নাড়তে থাকে তখন ইচ্ছে করে গাড়ি থেকে নেমে ওদের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটাই। কিন্তু যেহেতু যাওয়ার পথে একটু তাড়া এবং সীমাবদ্ধতা থাকে - এভাবে নামাটা রীতিসম্মত নয়।
তাছাড়া ওরা বোধহয় এভাবে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়েই আনন্দ পায়। নেমে গল্প করতে গেলে বিব্রত হতে পারে। দুই কারণে, অনঅভ্যস্ততার জন্য এবং পরষ্পরের ভাষা না বোঝার কারণে।
যাই হোক। আমরা পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চলে এলাম সরাসরি সাজেকের কংলাক পাহাড়ের পাদদেশে। তারপর পাহাড়ে উঠে একটা রিসোর্ট খুঁজে উঠে পড়লাম। তারপর কি কি হলো সেটার গল্প করবো পরের পর্বে।
তোমাকে ধন্যবাদ সময় নিয়ে আমার সাজেক ভ্রমনের গল্প শোনার জন্য।

Positive Life Orientation Workshop is designed to help you to discover:- your roles as a human being- set goals (ultimat...
09/06/2022

Positive Life Orientation Workshop is designed to help you to discover:
- your roles as a human being
- set goals (ultimate, long term, mid term, short term)
- identify your resources and limitations as a human being and
- formulate strategies to realize the dreams of your life
The workshop will be moderated by
ABM Mizanur Rahman
Founder and Coordinator
Positive Bangladesh Initiatives
Please fill up the form below to participate in the workshop

এই কর্মশালাগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য কোন রকম ফি দেয়ার প্রয়োজন হবে না। কর্মশালাগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তবে আপনাক...

please come forward to save human lives. kindly fill up the google form:https://forms.gle/Zhi9fVFPFeLKowEUA
07/02/2022

please come forward to save human lives. kindly fill up the google form:
https://forms.gle/Zhi9fVFPFeLKowEUA

We are building a national blood donors database, you may provide your information and/or other blood donors' information We would include the information in google groups of blood donors according to their blood group

01/01/2022

শুভ খ্রীষ্টিয় নববর্ষ

ভুলগুলো সব ফুল হয়ে যাক
কষ্টগুলো মেঘ
মেঘগুলোকে সরিয়ে দিক
ভালবাসা, আবেগ
উঠেছে যে নতুন সূর্য
নতুন বছর এলো
নতুন করে শুরু করার
সুযোগ এসে গেলো
সুখস্মৃতি সঙ্গে থাকুক
অনুপ্রেরণা হয়ে
তিক্তগুলো শিক্ষা হয়ে
ভান্ডারে ডাক রয়ে
নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাই
নতুন শব্দ ছন্দে
নেতিবাচকতা এড়িয়ে চলি
না জড়াই দ্বন্দে
আশাবাদিতায় বুক বাঁধি
সবাই মিলে আজ
নতুন বছরটা চমতকার কাটুক
নিয়ে আনন্দ কাজ
সূর্যটাও বলছে দেখো
দিয়ে জোরে ডাক
2022 সবার জন্য
খুব চমতকার যাক

Discovering Self Worth-Online Free and Open Workshop* Be yourself* Know your own value* Pathway to increasing self-estee...
05/12/2021

Discovering Self Worth-Online Free and Open Workshop
* Be yourself
* Know your own value
* Pathway to increasing self-esteem /self-confidence and self-respect
Volunteer Resource Person
Zohora Parveen
Clinical Psychologist
Moderated by:
ABM Mizanur Rahman
Founder and Coordinator
Positive Bangladesh

To participate fill up the form
https://forms.gle/HabUDwEhpUejfpTZA

এই কর্মশালাগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য কোন রকম ফি দেয়ার প্রয়োজন হবে না। কর্মশালাগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তবে আপনাক...

04/12/2020

দলছুট ট্রাভেল's cover photo

02/12/2020

দলছুট ট্রাভেল

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when দলছুট ট্রাভেল posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share


Other Dhaka travel agencies

Show All