Travelogue of Abdul Kahar

Travelogue of Abdul Kahar Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Travelogue of Abdul Kahar, Tourist Information Center, Dhanmondi, Dhaka.
(1)

পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠীতে অবস্থিত শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী 'ছারছীনা দরবার শরীফ' এবং বাংলার আল আজহার খ্যাত...
19/03/2024

পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠীতে অবস্থিত শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী 'ছারছীনা দরবার শরীফ' এবং বাংলার আল আজহার খ্যাত
আধ্যাত্মিক শিক্ষাকেন্দ্র 'ছারছিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা'। আমার এলাকা ও আত্মীয়স্বজন প্রায় সবাই শর্ষীনার মুরীদ বা ভক্ত হওয়ার সুবাদে একাধিকবার ছারছীনা দরবার শরীফে যাওয়া হয়েছে। সেই যায়গা থেকে এই দরবার সম্পর্কে যা ধারণা ও জানি বা জেনেছি তাই জানাবো আজকের লেখায়।

আমাদের যারা শহরে থাকে এবং জেনারেল পড়ুয়ারা দরবারের নাম শুনলেই মনে হয় এটি একটা শিরকি কারবার এবং ভন্ডামীর যায়গা। কেননা বহিপীর, লালসালু পড়ে এবং দেওয়ানবাগ, কুতুববাগ ও গোলাপশাহ মাজার দেখে কিংবা মাইজভান্ডারি, আটরশি ইত্যাদি দরবার সম্পর্কে শুনে এমন ধারণা পোষণ করা স্বাভাবিক।

কিন্তু ছারছীনা দরবার শরিফ সম্পূর্ণ শিরক ও রাজনীতিমুক্ত থেকে আল্লাহর পবিত্র কোরআন এবং মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ প্রচার করে ব্যক্তিজীবনে সেগুলোর অনুশীলনে মুসলমানদের উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে আসছে। দরবারটি ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য হক্কানি দরবার হিসেবে বাংলাদেশ সহ ইসলামি বিশ্বে সুপরিচিতি অর্জন করেছে। আপনারা চাইলে প্রতিবছর ২৯,৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর এবং ১২,১৩ ও ১৪ ই মার্চ মাসে দরবারের মাহফিলে যেতে পারেন। এই মাহফিলে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়ে থাকে। মাহফিলে ইসলামি আকিদা, আমল ও সাম্প্রতিক বিষয় সম্পর্কে ওয়াজ করা হয়।

১৯১৫ সালে বিখ্যাত পীর আল্লামা শাহসূফী নেছারুদ্দীন আহমদ (রহ.) এই ছারছীনা দারুসসুন্নাত আলিয়া বা কামিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃত টাইটেল (কামিল) মাদরাসা। এই মাদরাসা ফলাফলের দিক থেকে সর্বদাই দেশের শীর্ষ স্থান দখল করে থাকে। এই মাদরাসা থেকে এ পর্যন্ত ৩০০ ছাত্র এর বেশি বোর্ডস্ট্যান্ড করেছে। এছাড়াও এই মাদরাসা নীতি-নৈতিকতা ও আক্বীদার উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্যেও সারা দেশে বিখ্যাত। ছারছীনা দরবার ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে সাড়ে চার হাজার দিনি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে।

সংক্ষেপে ছারছীনা দরবার গড়ে উঠার ইতিহাস তুলে ধরছি। আমর জানি, সমুদ্র তীরবর্তী দেশ হওয়ায় বাংলাদেশে আগমন ঘটেছে বনিক মুসলিম প্রচারকদের। আর মুসলিম শাসনের পথ বেয়ে আগমন করেছেন আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী অনেক আউলিয়ায়েকেরাম। তাঁদের পরশ ছোঁয়ায় ও আধ্যাত্মিক শক্তির কাছে নতি স্বীকার করে এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় দলে দলে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করার ফলে দেশটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে পরিণত হয়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ১৭৫৭ইং সনে পলাশী প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হওয়ায় দেশটি ইংরেজ বেনিয়াদের দখলে চলে যায়।যার ফলে বিধর্মীদের জাগরণ ও মুসলমানদের নিগৃহীত হওয়ার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা হয়ে যায়।

ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ ভাগ। বাংলার মুসলমানদের করুণ অবস্থা। মুসলমানদের জাতীয় অনুভূতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ নিভু নিভু অবস্থায় বিলীন হওয়ার পথে। সারা বাংলা বিশেষ করে এর দক্ষিণাঞ্চল ছিল অজ্ঞানতার তিমিরে আচ্ছন্ন।ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবে নিজস্ব তাহজীব -তামদ্দুন ছেড়ে দিয়ে মুসলমানরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল বিজাতীয় আচার-ব্যবহার, চাল-চলন ও পোশাক -পরিচ্ছদে। নামের আগে শ্রী ব্যবহার করা, লুঙ্গীর বদলে ধুতি পরিধান করা, টুপির বদলে মাথায় টিকি রাখা, মেয়েদের সিঁথিতে সিঁদুর ব্যবহার করা, কপালে লাল টিপ লাগানো, পূজাপার্বণে মুসলমানদের অংশগ্রহণ করা, তিথিলগ্ন, দিকশূল পালন এবং দেবদেবীর নামে মানত করার মত বহু ইসলাম গর্হিত কাজসহ শিরক ও বিদয়াত বাংলার ঘরে ঘরে সে সময় সংক্রামক ব্যাধির ন্যায় ছড়িয়ে পড়েছিল। মুসলিম জাতীয় জীবনে নেমে এসেছিল ধর্মীয় চেতনা ও নৈতিক মূল্যবোধের এক চরম বিপর্যয়। এমনি এক সংকট সন্ধিক্ষণে বাংলার এক অজানা অচেনা নিভৃত পল্লী ছারছীনাতে বর্ষিত হল আল্লাহর রহমতের অমিয়ধারা।দীনের আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে ১৮৭৩ সালে ধরায় চলে আসলেন এক পুণ্যবান তাপস, যুগশ্রেষ্ঠ সমাজ সংস্কারক, মুজাদ্দিদে জামান কুত্বুল আলম হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী নেছারুদ্দীন আহমদ (রহঃ)।

নেছারউদ্দীন আহমদ হুগলী মোহসিনীয়া মাদ্রাসায় পড়ার সময় ১৮৯৫ সালে ফুরফুরা শরীফের পীর আবুবকর সিদ্দিকীর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন। বাইয়াত গ্রহণের পরে তিনি ইসলাম প্রচারে ১৯০৫ সালে নেছারুদ্দিন নিজ বাড়িতে মুসাফিরখানা হিসাবে একটি গোলপাতার দোচালা ঘর নির্মাণ করেন। তিনি বরিশাল অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ইসলাম প্রচার করতেন ও সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণের চেষ্টা করতেন। তিনি জনসাধারণকে সচেতন করতেন ও নৈতিক উপদেশ দিতেন, এছাড়াও তিনি এই খানকায় তরিকার ছবক, তালিম-তরবিয়াত, ঈমান-আকিদাসহ ইসলামের মৌলিক রীতিনীতি বিষয়াদি শিক্ষা দিতেন। এভাবেই এই প্রতিষ্ঠানটি একসময় ছারছিনা মাদ্রাসা নামে পরিচিতি লাভ করে। দরবার শরীফের বর্তমান পীর মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ।

লেখক : Abdul Kahhar

 #রমজানের_প্রথম_জুমায়_বায়তুল_মোকাররমে_একদিন৩য় তারাবি পড়ার সময় হঠাৎ মনে হলো রমজানের প্রথম শুক্রবারের দিন-রাত বায়তুল মোকার...
16/03/2024

#রমজানের_প্রথম_জুমায়_বায়তুল_মোকাররমে_একদিন

৩য় তারাবি পড়ার সময় হঠাৎ মনে হলো রমজানের প্রথম শুক্রবারের দিন-রাত বায়তুল মোকাররম মসজিদে কাটালে কেমন হয়! তো যেমন চিন্তা তেমন কাজ শুক্রবার সকালবেলা চলে গেলাম বায়তুল মোকাররমে। প্রথমেই বাইতুল মোকাররমের দক্ষিণ চত্বরে রমজান মাসব্যাপী চলমান ইসলামী বইমেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখলাম এবং 'আর রাহীকুল মাখতূম' বইটি কিনলাম।

এরপর মসজিদে প্রবেশ করে আজানের পূর্বে এক হুজুরের এবং আজানের পরে ঈমাম হুজুরের আলোচনা শুনি ও সালাত আদায় করি। নামাজের পরে মসজিদের দক্ষিণ পাশে রমজান উপলক্ষে আয়োজিত মাসব্যাপী পবিত্র কুরআনের তাফসীর মাহফিলে বসি। কিছুখন আলোচনা শুনে মসজিদে গিয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে সীরাতের বইটি আসর অবধি পড়ি।

আসরের সালাতের পড়ে রমজানের মাসলা মাসায়েল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তালিমে বসি। এটি শেষ করে মসজিদের পূর্ব পাশে মাসব্যাপী আয়োজিত ইফতারে অংশগ্রহণ করি। পূর্বে সরকার কর্তৃক ইফতার দিলেও এবছরে দেখলাম 'বসুন্ধরা গ্রুপ' মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ করছে। তো ইফতারের পূর্বের সময়টা সীরাত পড়ে ও দোয়ায় কাটলো।

মাগরিবের সালাতের পরে কিছুখন বিশ্রাম এবং আজকের তারাবীহর সালাতে কুরআনের বার্তার অংশটা ও সীরাত পড়লাম। আমি মূলত বাইতুল মোকাররমের তারাবীর সালাতের জন্যেই অধীর আগ্রহে ছিলাম। অতঃপর এশা ও ধীর স্থির ভাবে সুললিত কন্ঠে তৃপ্তিসহকারে তারাবীর সালাত আদায় করলাম।

সবশেষে ইতেকাফের নিয়তে প্রায় বারো ঘন্টার মতো মসজিদে কাটিয়ে হৃদয়ের প্রশান্তি, আত্মার পবিত্রতা ও চিত্তের কোমলতার অনুভূতি নিয়ে বাসায় ফিরলাম। (আলহামদুলিল্লাহ)

দেখে যারে মাইজভান্ডারে,দেখে যারে...হইতাছে হরেক রকম পাগলের খেলা,বাবা তোমার দরবারে সব পাগলের মেলা।।দীর্ঘদিনের ইচ্ছে থেকে গ...
13/03/2024

দেখে যারে মাইজভান্ডারে,দেখে যারে...
হইতাছে হরেক রকম পাগলের খেলা,
বাবা তোমার দরবারে সব পাগলের মেলা।।

দীর্ঘদিনের ইচ্ছে থেকে গতমাসে ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার দরবারে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো। এই দরবারে শায়িত সুফি সাধক মরহুম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী সম্পর্কে যা জানতে পারি তা হলো তিনি হাদিস, তাফসির, ফিকহ, মন্তেক, হিকমত, বালাগত, উছুল, আকায়েদ, ফিলছফা, ফারায়েজ সহ যাবতীয় বিষয়ে অভিজ্ঞ ছিলেন।আরবী, উর্দু, বাংলা ও ফারসি ভাষায়ও তিনি পারদর্শী ছিলেন। তৎকালীন সময়ে ওয়ায়েজ এবং বক্তা হিসাবেও না কি তার খ্যাতি ছিল।

এর অল্প কিছু দিন পরই আহমদ উল্লাহ হযরত বড়পীর সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানীর বংশধর ও উক্ত তরিকার খেলাফত প্রাপ্ত সৈয়দ আবু শাহামা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী নিকট বায়েত গ্রহণের মাধ্যমে বেলায়ত অর্জন করে তিনি আধ্যাত্মিক জীবন যাপনে আত্ম নিয়োগ করেন। এরপর তার পীরের
নির্দেশে ১৮৫৭ সালে নিজ গ্রাম মাইজভান্ডারে ফিরে আসেন।

আধ্যাত্মিক সাধক ও দোয়া প্রত্যাশীদের ভীড়ে তার বাসগৃহ আধ্যাত্মিক দরবারে পরিণত হয় ও লোক সমাজে পরিচিতি পায় কাদেরিয়া ত্বরিকার "মাইজভান্ডার দরবার শরীফ" হিসেবে। এরপর ধীরে ধীরে দেশজুড়ে ভক্তবৃন্দ বাড়তে থাকে এবং তার হাতে মুরীদ হয় হাজারো মুসলিম।

৮০ বছর বয়সে ২৩ জানুয়ারি ১৯০৬ সালে এই মহান সুফি সাধক মৃত্যু বরণ করলেও তাঁর উত্তরসূরী ও অন্যান্যরা খেলাফতের মাধ্যমে এখনও আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারীর সুফি তরীকার দীক্ষা সমাজে মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছেন এবং উক্ত ধারা অব্যাহৃত রাখছেন।বর্তমানেন দেশজুড়ে এ দরবারের ভক্ত বৃন্দ লক্ষ লক্ষ।প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসকল ভক্তবৃন্দের আনাগোনা মুখরিত হয়ে থাকে এ দরবার।

পরিতাপের বিষয় এ দরবারে মহিলা পুরুষের একই সাথে মাজারে প্রাঙ্গনে চলাফেরা,মরমী গান বাজনা সহ মাজারে সিজদা দেওয়ার মতো শিরকি ও নানান ধরনের বিদায়াতি কাজ হয়ে থাকে। তবে মজারের সৌন্দর্য,খানা-পিনা তবারক খাওয়ানো ও থাকার ব্যবস্থা এসককল মেহমানদারি এবং হরেক রকম বাবার পাগলের মেলা বেশ ভালোই উপভোগ করেছি।

আপনারাও চাইলে শুধুমাত্র এই মহান সুফি সাধক এর মাজার জিয়ারত করতে এবং বৈচিত্র্যময় এ দরবারে ঘুরে আসতে পারেন। কিন্তু এ দরবারের মুরীদ কিংবা ভক্ত হতে নয়। যার প্রধান কারণ এই দরবারের সাথে বেশ কিছু শিরকি ব্যাপার জড়িত আছে।

লেখক : আঃ কাহ্হার(সিয়াম)

পদ্মা সেতু নির্মাণের পূর্বে আমরা মূলত রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট দিয়েই চলাচল করতাম। উপভোগ করতাম বাংলাদেশের দু...
28/02/2024

পদ্মা সেতু নির্মাণের পূর্বে আমরা মূলত রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট দিয়েই চলাচল করতাম। উপভোগ করতাম বাংলাদেশের দুটি বড় নদী পদ্মা ও যমুনার মিলনস্থলের অপরূপ সৌন্দর্য। আর যাতায়াত পথে দুপুর গড়ালে এখানকার বিখ্যাত পদ্মার ইলিশ দিয়ে মধ্যহৃভোজ মিস করতাম না। কিন্তু কখনও রাজবাড়ী জেলা শহরের দিকে যাওয়া হয় নি। আর আগে কখনই যাওয়া হয় নি এমন নতুন জেলা পরখ করে দেখা আমায় অন্যরকম রোমাঞ্চিত করে। তাই ঘুরে এলাম ' #পদ্মা_কন্যা_খ্যাত_রাজবাড়ী' জেলা থেকে।

রাজবাড়ী যাবো আর সেখানকার অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন প্রায় দেড়শত বছরের পুরনো প্রাচীন ঐতিহাসিক ' #রাজবাড়ী_সরকারি_উচ্চ_বিদ্যালয়ের #লাল_ভবন' দেখতে যাবো না তা কি হয়। সংক্ষেপে আমার জানা এই লাল ভবনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আপনাদের শেয়ার করি। যতটুকু জানা গেছে তা হলো, এটি গোয়ালন্দ মহকুমার বাণীবহ এস্টেটের বাণীবহের জমিদার গিরিজা শংকর মজুমদার ভবনটিকে কাঁচারী ঘর হিসেবে ব্যবহার করতেন। তিনি ১৮৯২ সালে এই ভবনে গোয়ালন্দ মডেল হাই স্কুল নামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটি রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিত। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ঐতিহাসিক এই লাল ভবনকে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংরক্ষণের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

ঐতিহাসিক লালভবন ঘুরে খানিকটা কৌতুহল নিয়েই যাই রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামে অবস্থিত #জামাই_পাগলের_মাজার শরিফে। মজারে গিয়ে সেখানে প্রধান খাদিম হিসেবে দেখতে পাই এক মহিলাকে। যাকে মাজারে আগত সবাই ভক্তি ও শ্রদ্ধা করে থাকে। আমরা যাওয়ায় আপ্যায়ন করে এবং বেশ আন্তরিকতা দেখায়। তারপর এই মাজারে শায়িত ব্যক্তি সম্পর্কে জানার এক পর্যায়ে তাদের মারিফতের নামে ভন্ডামির মনোভাব বুঝতে পারি। তারা শারিয়ত অপেক্ষা অনেক ক্ষেত্রে মারিফতকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তো এই নিয়ে আমি শরিয়তের পক্ষে এবং তিনি মারিফতের ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে প্রায় চার ঘন্টা আলোচনা চলে।

যেসকল বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা হয় তা লেখার শেষে সংক্ষেপে বলবো। তার আগে এই মাজারে শায়িত জামাই পাগলের কাহিনি শুনাই। ধারণা করা হয় ১৯৬০ সালের দিকে নেংটি পরিহিত এক ব্যক্তি বর্তমান মাজার প্রাঙ্গণের শেওরা গাছের নিচে অবস্থান নেন। তাঁর নামে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা প্রচলিত আছে। কথিত আছে, পাবনা জেলায় এক ধনী ব্যক্তি তার বোবা মেয়েকে গ্রামের এক পাগলের সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের রাত শেষ হতেই বোবা মেয়ে কথা বলতে শুরু করেন। কিন্তু সেই পাগল জামাইকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। অবশেষে তারা রাজবাড়ী জেলার আলাদিপুরে তাঁর সন্ধান পেলেও তিনি আর সংসারে ফিরে যায়নি। এই ঘটনার পর থেকে জামাই পাগল নাম সবার মুখে ছড়িয়ে পড়ে।

জানা যায়, জামাই পাগল যখন আলাদীপুরে আসেন তখন এখানে অনেক মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছিল তখন তিনি সকলকে সারিয়ে তোলেন। ধীরে ধীরে মানুষজন বিভিন্ন বিপদমুক্তির আর্জি নিয়ে তাঁর কাছে আসতে থাকেন। তাকে কেউ কিছু বললে তিনি একই কথার পুনরাবৃত্তি করতেন এবং তাঁর উছিলায় মানুষের সমস্যার সমাধান হতো। জামাই পাগলের মৃত্যুর পর এক আগন্তুক সৎকারের সমস্ত ব্যবস্থা করেন এবং এখানে একটি মাজার গড়ে তোলা হয়। এরপর নুর বাকের শাহ নামের এক ভক্ত এখানে অবস্থান নেন। নুর বাকের শাহেরর মৃত্যুর পর গৌরী পাগলী মাজারটি দেখাশুনা করতেন। বর্তমানে এক মহিলা মাজারের দেখাশোনা করেন।

এবার আসি দীর্ঘ চার ঘন্টা মাজারের ঐ মহিলার সাথে আলোচনার বিষয়বস্তুর সারসংক্ষেপে। তাদের মারিফত নিয়ে যেসকল ভ্রান্ত ধারণা ছিলো আমি আমার জানা থেকে তার উত্তর দিয়ে শরিয়তের বিধানগুলো কুরআন ও হাদিসের আলোকে বুঝানোর চেষ্টা করি। যখন সে বুঝতে পারে আমি কুরআন ও সুন্নাহর শরিয়তের ব্যাপারে কঠোর তখন তিনি মারিফতের ভ্রান্ত ব্যাপারগুলো সরাসরি না বলি ইঙ্গিতে বলছিলো। তাঁর কথার মূল বিষয়বস্তু মানুষ ধর্মই বড়ো, আর অন্তরের পরিশুদ্ধি বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেখানে শরিয়তের বাহ্যিক দিকগুলো তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ।

মহিলাদের অন্তরের পর্দাই মূখ্য বাহ্যিক পর্দা অতটা গুরুত্বপূর্ণ না, অন্তর থেকে আল্লাহকে খুঁজে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরির অসীম স্তরে পৌঁছাতে পারলে নিয়মের সালাত অন্যান্য ইবাদত এর দরকার হয় না এমন সব মারিফতের নামে ভ্রান্ত আকিদা তাঁদের। তাঁরা লালনের মতো বিশ্বাস করেন যে সকল মানুষের মাঝে বাস করে এক মনের মানুষ। আর সেই মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায় আত্মসাধনার মাধ্যমে। সেই মনের মানুষের সন্ধান মেলে এবং স্রষ্টাকে পাওয়া যায় পার্থিব দেহ সাধনার ভেতর দিয়ে দেহোত্তর জগতে পৌঁছানোর মাধ্যমে।

তো আমি এটাই বুঝিয়েছি নানাভাবে যে আল্লাহকে ভালোবাসা ও পাওয়ার পথ সবথেকে ভালো জানেন তাঁর সবথেকে প্রিয় রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) । তো
তিনি যেভাবে বলেছেন সেভাবে আল্লাহকে পাওয়া ও সম্পর্ক তৈরি সহজ না কি আপনার উদ্ভট মারিফত দ্বারা। এরপর কিছু হাদিস তুলে ধরে এবং সাহাবি ও হক্কানি আল্লাহর ওলীদের জীবন কেমন ছিলো তা থেকে বুঝানোর চেষ্টা করি যে আপনারা মারিফতের নামে ভন্ডামি করছেন। ইসলাম কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে সুস্পষ্ট এখানে গোপন বলতে কিছু নেই।

এভাবে দীর্ঘ কয়েকঘন্টা তার সাথে আলোচনা করে তাদের ভন্ডামির ব্যাপারটা ক্লিয়ার হই এবং যথাসম্ভব যতটুকু কুরআন ও হাদিস জানি তা থেকে বুঝানোর চেষ্টা করি। হয়তো তাঁরা তাদের মতেই অটল থাকবে। তবুও এমন টাইপের মানুষের মনোভাব, কুসংস্কার ও গোড়ামি আমায় কৌতুহলী করে তোলে এই সম্পর্কে জানার এবং তাদের ভ্রান্ত ধারণা খন্ডনের জন্যে আরও জ্ঞান অর্জনের তাড়না অনুভব করি। ভ্রমণের পথে এমন সব বৈচিত্র্যময় মানুষের সাথে মেশা, তাদের সম্পর্কে জানার এইসকল অভিজ্ঞতাও আমার ভ্রমণের উদ্দেশ্যের অন্যতম একটা অংশ।

ইচ্ছে ছিলো রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদি গ্রামে অবস্থিত মীর মশাররফ হোসেনের সমাধি এবং তাঁর স্মৃতিকেন্দ্রে যাওয়ার। কিন্তু সরকারি ছুটির দিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় গড়ে তুলা এই স্মৃতিকেন্দ্র বন্ধ থাকায় আর যাওয়া হয় নি।

সবশেষ বলবো, রাজবাড়ী জেলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, কুসংস্কারাচ্ছন্ন মাজার দেখা এবং সেখানকার মানুষের সহিত মেশা ও জানা সবমিলিয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি সফল জেলা ট্যুর সম্পন্ন করি।

সমুদ্র ভালো লাগে না এমন মানুষ বিরল। কেতাবি ভাষা আর আমাদের অধিকাংশদের পরিচিত কক্সবাজার, কুয়াকাটা আর চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ...
20/02/2024

সমুদ্র ভালো লাগে না এমন মানুষ বিরল। কেতাবি ভাষা আর আমাদের অধিকাংশদের পরিচিত কক্সবাজার, কুয়াকাটা আর চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এই তিনটি সমুদ্র সৈকত। কিন্তু প্রকৃতি বাংলার মাটিকে এতো কার্পণ্যভরে সাজায়নি। এই তিনটি ছাড়াও আরও প্রায় বারোটির মতো সমুদ্র সৈকত স্পট রয়েছে।এর মধ্যে অন্যতম সমুদ্র সৈকত হলো গুলিয়াখালী।

সদ্য অনার্সে পা রাখা অবস্থায় বই মেলায় একমাস জব করে তার সেলারি পেয়ে গিয়েছিলাম চট্টগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্পটগুলো ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। আর এ ট্যুরের মূল টার্গেট ছিলো সীতাকুণ্ড উপজেলার স্পটগুলো।প্রথম দিনে চন্দ্রনাথ পাহাড়, দ্বিতীয় দিনে মীরসরাই উপজেলার মহামায়া লেক এবং খৈয়াছড়া ঝরণা ঘুরে সীতাকুণ্ড সদরে আবাসিক হোটেলে এক রাত থেকো গুলিয়াখালী যাই। এটি সীতাকুণ্ড বাসস্ট্যান্ড থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে লোকাল সিএনজিতে করে যেতে হয়। স্থানীয় মানুষদের কাছে এই সৈকত মুরাদপুর বীচ নামেও পরিচিত।

সিএনজি থেকে নেমে সুবিশাল মাঠ মিনিট দশের মধ্যে পেরিয়ে পা রাখি সবুজ গালিচার বিস্তীর্ণ ঘাসে। সবুজ ঘাসের সমারোহ দেখে যে কারও মনে হবে কেউ হয়তোবা এখানে সবুজ রঙের কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে।এই সবুজ কার্পেটের মাঝ দিয়ে এঁকে বেঁকে গেছে সরু নালা। নালাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে ভরে উঠে।
অন্যদিকে কেওড়া বন দেখতে পেলাম। যার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল যেন দেখা যায়।

সব মিলিয়ে,সৈকত জুড়ে সবুজ গালিচার বিস্তীর্ণ ঘাস এবং কেওড়া বনের অপরূপ প্রকৃতি ও গঠনগত দিক নিঃসন্দেহে এটি অন্যান্য সমুদ্র সৈকত থেকে করেছে সম্পূর্ণ আলাদা। আর আমরাও এই সবুজ ঘাসের কার্পেটে বসে আর কেওড়া গাছের মাঝে নিজেদের কিছু পিক নিতে বিলম্ব করলাম না।তারপর সমুদ্রের তীর ঘেঁষে সবুজ ঘাসের উপর বসে যখন অথৈ মিতালি ছোট ছোট ঢেউ আর দিগন্ত জোড়া জলরাশির দেখলাম তখন মুগ্ধতা এবং ভালোলাগা যেন বহুগুণ বেড়ে গেলো। একটু পর উঠে গিয়ে পানিতে পা ভিজাই।

এখানে কুয়াকাটা, কক্সবাজার এর মতো বালুকনায় বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়া এবং তীরে ঘেঁষে সমুদ্রের দিকে হাঁটা না গেলেও সবুজ ঘাসের মাঝে বেঁকে যাওয়া সরু নালায় জোয়ারের পানি আসার দৃশ্যটা চমৎকার লেগেছে এবং তাতে পা ভিজাতেও অন্যরকম এক নব অনুভূতি কাজ করেছিলো। গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতে সৌন্দর্যের তুলনায় মানুষের আনাগোনা তুলনামূলক কম হওয়ায় এখানকার পরিবেশটাও ছিলো বেশ শান্তশিষ্ট।

সবুজ বিস্তৃত কার্পেট,ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের মতো কেওড়া গাছ এরই সাথে অথৈ জলরাশি,পাখি,ঢেউ আর বাতাসের মিতালীর মাঝে হেডফোনে 'ওরে নীল দরিয়া,অামায় দেরে দে ভাসাইয়া' গানটি শুনতে শুনতে যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম অনিন্দ্য সুন্দর গুলিয়াখালি সী বিচের অপরূপ মুগ্ধতায় ভরা প্রকৃতির মাঝে।

সবশেষে বলবো, আপনিও যদি ভ্রমণপিপাসু হয়ে থাকেন কিংবা চট্টগ্রামে ঘুরতে আসা পরে তাহলে অবশ্যই গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে না গেলেই নয়। আর যখন আসবেন তখন আমাদের গুলিয়াখালী ট্যুরের অপূর্ণ দুটি জিনিস মিস করবেন না।তা হলো-
১)জেলেদের বোটে দরদাম করে সমুদ্রের ঘুরে আসা।
আমাদের যা সময়ের সল্পতার কারণে যাওয়া হয় নি।

২) আর অনেকজন বন্ধুরা একসাথে মিলে গেলে অবশ্যই সাথে করে একটা ফুটবল নিয়ে আসবেন।কেননা অপরূপ সুন্দর্যের মাঝে সবুজ ঘাসে এক ম্যাচ ফুটবল খেলে সমুদ্রে গোসল করাটা মিস করবার নয়।তবে গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান হলেই হবে।
তাহলে আমার কাছে মনে হয় গুলিয়াখালী ট্যুরটা যথাযথ পূর্ণতা পাবে।

#গুলিয়াখালী_বীচে_যাবার_উপায়
যেহেতু এই বীচ সীতাকুণ্ডে তাই দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে প্রথমে আসতে হবে সীতাকুণ্ডে। বিভিন্ন উপায়ে ঢাকা বা চট্রগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ডে আসতে পারবেন।
ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম গামী যে কোন বাসে করেই যেতে পারবেন সীতাকুন্ড। এসি ও নন এসি এইসব বাসের ভাড়া ৪২০-১২০০ টাকা। প্রয়োজন হলে বাসের সুপারভাইজার কে আগেই বলে রাখবেন সীতাকুন্ড নামিয়ে দিতে। আর যদি একদম সাশ্রয়ী খরচে যেতে চান তাহলে ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড মেইল ট্রেনে করে জনপ্রতি ১২০ টাকা ভাড়া সীতাকুণ্ড আসতে পারেন।

এছাড়া চট্রগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ড যেতে চাইলে চট্রগ্রামের অলংকার মোড়, এঁকে খান মোড়, কদমতলী থেকে সীতাকুণ্ড যাবার বাস ও মেক্সি পাওয়া যায়। পছন্দ মতো জায়গা থেকে চলে আসতে পারবেন সীতাকুণ্ড বাজারে।

এরপর সীতাকুন্ডের বাস স্ট্যান্ড ব্রীজের নিচ থেকে সরাসরি সিএনজি/অটো নিয়ে গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত জনপ্রতি অটো ভাড়া নিবে ৩০ টাকা, আর অটো রিজার্ভ নিয়ে যেতে চাইলে ভাড়া লাগবে ১৫০-২০০ টাকা। ভাড়ার পরিমাণ অবশ্যই দরদাম করে ঠিক করবেন। সীতাকুণ্ড ফিরে আসার জন্যে আগে থেকেই সিএনজি চালকের নাম্বার নিয়ে রাখতে পারেন। অথবা যাওয়া আসা সহ রিজার্ভ করে নিতে পারেন। সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফিরে আসার সময় সিএনজি/অটো পাওয়া যায় না।

লেখক: Abdul Kahhar (Md. Siam)

একদা গিয়েছিলাম বাংলাদেশের তৃতীয় পর্যটকপ্রিয় সৈকত পতেঙ্গায়। পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতেঙ্গা সৈকত এর আধুনিক ও বিশ্বমানের...
31/01/2024

একদা গিয়েছিলাম বাংলাদেশের তৃতীয় পর্যটকপ্রিয় সৈকত পতেঙ্গায়। পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতেঙ্গা সৈকত এর আধুনিক ও বিশ্বমানের দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা আমায় মুগ্ধ করেছে।

কর্ণফুলী নদী ও সাগরের মোহনায় অবস্থিত পতেঙ্গা সৈকতের বিস্তীর্ণ জলরাশিতে অস্তায়মান সূর্যের বিগলিত লালিমার প্রতিফলন দেখে আর বিধৌত বিশুদ্ধ বাতাসে বুক ভরে প্রশ্বাস টেনে মুহূর্তেই সকল ক্লান্তি উবে গিয়ে মনে সতেজতা অনুভব করি।

চট্টগ্রাম বন্দরের জন্যে অপেক্ষমান সারি সারি ছোট বড় জাহাজ এইখানের পরিবেশে ভিন্নতা নিয়ে আসে। আর সমুদ্রের এই সব মনোরম দৃশ্য বসে বসে উপভোগ করতে রয়েছে রং বেরঙের সারি সারি কংক্রিকেটের বেঞ্চি।

পতেঙ্গায় রয়েছে স্পীড-বোটে চড়ে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। সমুদ্র তীরে ঘুরে বেড়ানোর জন্যে আছে সী বাইক ও ঘোড়া। কেনাকাটার জন্যে আছে বার্মিজ মার্কেট। খাওয়া দাওয়ার জন্যে আছে হরেক রকক মজাদার স্ট্রিট ফুড।মোটকথা আপনার টাকা খরচের জন্যে রয়েছে হরেকরকম মাধ্যম।

বিশেষত রাতে, কর্ণফুলী নদী আর বঙ্গোপসাগরের মিলনমোহনায় রঙবেড়ঙের লাইটিং এ ফুটে ওঠে এক অন্যরকম সৌন্দর্য। তাই মধ্যরাত পর্যন্ত পর্যটকেরা ঘুরে বেড়ান নেভাল একাডেমি সংলগ্ন এই বিচে।

সর্বোপরি চট্রগ্রাম শহরের কাছেই পতেঙ্গা সৈকত হওয়ায় যাতায়াতও সহজ। তাই আপনি কম সময়ে এবং কম খরচেই এই সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করে আসতে পারেন। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে পতেঙ্গা বিচ এর সৌন্দর্য বেশ ভালো লাগলেও এখানকার আধুনিক কৃত্রিম সাজসজ্জায় পকৃতি ছোঁয়া খুব কমই উপলব্ধি করেছি। তার উপর দর্শনার্থীদেরও উপচে পড়া ভিড় থাকায় শান্তশিষ্ট পরিবেশ পাওয়া দুষ্কর। তাই ছুটির দিনে এখানে না আসাই ভালো।

#বিশেষ_সতর্কতা:

পতেঙ্গায় যারা নতুন যাবেন তারা অন্তত দুটো ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।
• প্রথমত, #ফটোগ্রাফার এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। কারণ এক একজন ফটোগ্রাফার যেন আপনার পকেটের টাকা চুষে নিতে ওত পেতে থাকে। আপনি চাইবেন দশ বিশটা ছবি তুলতে কিন্তু দেখবেন অল্প সময়ে কয়েকশত পিক তোলা হয়ে গেছে। এরপর যখন সেগুলো কম্পিউটার থেকে বাছাই করতে যাবেন তখন রকেট গতিতে আপনায় কোন রকম দেখিয়ে পিকগুলো আপনার মেমোরিতে দিয়ে যে সংখ্যাটা বলবে তা সত্যিই অপ্রত্যাশিত।

তখন তাদের সাথে বার্গেডিং করেও লাভ হয় না।কেননা এদের ব্যাবহার যেমন খারাপ তেমনি আক্রমনাত্নক। সবশেষে পিকগুলো যখন নিজ ডিভাইসে দেখবেন তখন একই পিক কয়েকটা এবং যেটা কাটতে বলছেন সেটাও দেখবেন দিয়ে দিছে। তো এদের ফাঁদ থেকে সাবধান থাকবেন। আমরাও এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছি,তো সে অভিজ্ঞতা থেকেই বললাম।

• দ্বিতীয়ত এখানকার #স্ট্রিট_ফুড খাওয়ার আগে দামটা জেনে নিবেন কেননা খাওয়ার পর দেখতে পারেন আপনার ধারণার থেকে বেশি দাম।

#পতেঙ্গা_যাওয়ার_উপায়

পতেঙ্গা যেতে চাইলে প্রথমে আপনাকে চট্টগ্রাম আসতেই হবে। চট্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট থেকে পতেঙ্গা ১৪ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত। চট্টগ্রাম শহর নিজস্ব গাড়ি, সিএনজি বা লোকাল বাসে করে পতেঙ্গা যেতে পারবেন। চট্টগ্রাম শহর থেকে যেতে সময় লাগবে এক ঘন্টার মত। সিএনজি দিয়ে গেলে ভাড়া নিবে ২৫০-২৮০ টাকার মত।

বাসে যেতে চাইলে বেশ কিছু জায়গা থেকে সী বীচ গামী বাস লোকাল পাওয়া যায়, তার মধ্যে নিউমার্কেট, রেল স্টেশন রোড, বহাদ্দারহাট, লালখান বাজার মোড়, জিইসি মোড় এবং চক বাজার মোড় থেকে বাস পাবেন।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের সামনে থেকে যেতে চাইলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে ৬ নং বাস পাবেন। তবে জিজ্ঞেস করে নিবেন সী বীচ পর্যন্ত যাবে কিনা। যদি বাস ফ্রিপোর্ট বা কাঠগড় পর্যন্ত যায় তাহলেও যেতে পারেন। সেখানে থেকে নেমে ইজিবাইকে করে বীচে যেতে পারবেন।

লেখক: Abdul Kahhar

জানুয়ারির ঠান্ডা আবহাওয়ায় খুব একটা ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে না। রোদের তাপমাত্রাও বেশ সহনীয় সবমিলিয়ে ভ্রমণের জন্য এমন আদর...
24/01/2024

জানুয়ারির ঠান্ডা আবহাওয়ায় খুব একটা ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে না। রোদের তাপমাত্রাও বেশ সহনীয় সবমিলিয়ে ভ্রমণের জন্য এমন আদর্শ সময়ে সমুদ্র তীরবর্তী প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা থেকে দুই বন্ধু ঘুরে আসি। আমাদের বাড়ি নিকটবর্তী জেলা পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় হওয়ায় সকালে যাত্রা শুরু করে দুপুরের পূর্বেই তালতলী গিয়ে পৌঁছাই।

প্রথমে তালতলী উপজেলা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে সোনাকাটা ইউনিয়নে সুন্দরবনের একাংশের বিশাল বনভূমি নিয়ে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য টেংরাগিরি ইকোপার্কে যাই। এটি সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল, যা দিনে দুইবার জোয়ার ভাটায় প্লাবিত হয়।

এটি বাংলাদেশের সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের একটি হওয়ায় ১১ টাকা টিকেট কিনে ভিতরে প্রবেশ করি। সরু ইটের রাস্তা আর কিছুদূর পরপর ছোট ছোট পুল আর দু-পাশে বিলুপ্তি প্রজাতির অসংখ্য সারি সারি গাছগাছালির সবুজ সমারোহ এর ভিতর দিয়ে পথ চলতে চলতে পাখির কলকাকলি শোনা সবমিলিয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার সে এক অনন্য প্রশান্তি অনুভব করি।

মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে বন বিভাগের রেস্ট হাউজ ও পিকনিক কর্নার। এই ইকোপার্কে একটি কুমির প্রজনন কেন্দ্র ছাড়াও হরিণ, শূকুর, চিতা বাঘ, অজগর, বানর, শজারু ও বন বিড়ালের মতো বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর থাকলেও হরিণ আর বানর ছাড়া আর কিছু দেখতে পাইনি।টেংরাগিরি বনের গহীন অরণ্য পেরিয়ে যখন সোনাকাটা সমুদ্র সৈকতের তটরেখায় পৌঁছাই তখন মুগ্ধতা বহুগুণ বেড়ে যায়।

বেলা বাজে প্রায় তিনটা পরবর্তী গন্তব্য নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়ায় অবস্থিত শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত।গুগল ম্যাপে দেখে মনে হলো শুভ সন্ধ্যা সৈকতে সোনাকাটা থেকে পশ্চিমে ঘন্টাখানে হাঁটলেই হয়তো পৌঁছে যাবো।তাই দুই বন্ধু মিলে একটু ঝুঁকি নিয়েই হাঁটা শুরু করলাম।

আধ ঘন্টা হাঁটার পর দেখি ছোট একটা খাল। কাঁধে ব্যাগ ও পকেটে মোবাইল নিয়ে তা পার হওয়া সম্ভব নয় বলে থমকে দাঁড়াই।কিন্ত উপায় পেয়ে গেলাম,ওপারে ছোট ডিঙি নৌকার মাঝিকে দেখতে পেয়ে সাহয্য চাইলাম।কিন্তু মাঝি মামা ব্যাস্ত থাকায় আমাদের পার করতে না এসে নৌকা ঠেলে দিয়ে চালিয়ে আসতে আসতে বললো। তাও আমি নৌকা চালাতে না পারায় ছোট খাল পার হতেও বেশ বেগ পেতে হলো।

খাল পেরিয়ে হাঁটতে গিয়ে টের পেলাম নরম কাঁদা যাতে হাঁটু সমান গেড়ে যাচ্ছিলাম।তো কিছুদূর প্যান্টে কাঁদা মাখামাখির পর শক্ত বালু পেয়ে কিছুদূর হাঁটতেই দেখি বড় একটা খাল।এবার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও জেলে মাঝিদের দেখা পেলাম না। যা-ও দু-একজন পেলাম চিৎকার করে সাহায্য চাওয়া সত্ত্বেও আমাদের না নিয়ে চলে গেলো।

অবশেষে এক জেলে মামা আমাদেরকে নিতে এলো।কিন্তু আমাদের সাহায্য করতে এসে সে পড়লো মহা বিপদে।তা হলো তাদের বোড ভাটা থাকায় বালুচড়ে বেজে গেছে।তারপর তাদের সাথে মিলে মিনিট বিশে ঠেলাঠেলি করে অর্ধেক পানিতে ভিজে অনেক কষ্টে বালুচড় থেকে বোডটিকে মুক্ত করে শহরে ফিরি।

তখন বাজে সাড়ে চারটার মতো আমাদের এখনও শুভ সন্ধ্যা বীচে যাওয়া বাকি। তাড়াতাড়ি হাত পা ধুয়ে ভিজে প্যান্ট পড়েই মোটরসাইকেল ভাড়া করে সোজা শুভ সন্ধ্যা সৈকতে চলে আসি। তখন প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও আমরা শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রের বুকে লাল কুসুম সূর্য অস্ত যাওয়া মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করি।

প্রকৃতি ও গঠনগত দিক থেকে এটি অন্যান্য সমুদ্র সৈকত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এর একদিকে দিগন্ত জোড়া সমুদ্রের জলরাশি,অন্যদিকে ঝাউ বন আর সমুদ্র পাড়ের নানা আলপনায় অলংকৃত বিস্তৃর্ণ বালুকণায় যখন সূর্য অস্ত যায় তখন সমুদ্রের পানি আর পাড়ের বালি স্বর্ণালী আলোয় ঝিলমিল করছিলো।সবমিলিয়ে শুভসন্ধ্যার সমুদ্র সৈকতের চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক শোভা আমার মতো মুগ্ধ করবে যে কাউকে।

তাই বারবার দক্ষিণবঙ্গের কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে না গিয়ে শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত এসেও একবার ঘুরে যেতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে।

লেখক:আঃ কাহ্হার(সিয়াম)

ফটোগ্রাফার: আরিফ রহমান

একটানা কয়েকমাস পাহাড়, সমুদ্র আর ঝর্ণায় ট্যুর দেওয়ার ফলে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক কোন যায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্যে মন আনচা...
16/01/2024

একটানা কয়েকমাস পাহাড়, সমুদ্র আর ঝর্ণায় ট্যুর দেওয়ার ফলে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক কোন যায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্যে মন আনচান করছিলো। তাই ঘুরে এলাম প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বুকে লালন করে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকার কাছাকাছি মানিকগঞ্জ জেলার বালিয়াটি জমিদার বাড়ি থেকে।

আমরা শুক্রবারে ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে সোজা সাটুরিয়া গামী এস বি লিংক পরিবহণে আড়াই ঘন্টাই পৌঁছে যাই সাটুরিয়া জিরো পয়েন্টে। সেখান থেকে এক কিলো পথ মিনিট দশে হেঁটেই জমিদার বাড়ি যাই। জমিদার বাড়ির সামনেই দেখতে পাই একটি বড় পুকুর। সেটির ঐপাড় গিয়ে বাড়িটির প্রবেশ ফটকের দুই পাশে স্থাপিত দুটি সিংহের মূর্তি আর সম্মুখভাগে সুদৃশ্যভাবে দাঁড়িয়ে থাকা চারটি বিশাল প্রাসাদ একসাথে দেখি আর ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দী করি।

তারপর ৩০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করি। সমস্ত জমিদার চত্বর উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং জমিদার বাড়ির মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই সুপ্রশস্ত সবুজের ঢাকা আঙ্গিনা চোখে পড়ে।আঙ্গিনায় গড়ে তোলা হয়েছে সুন্দর ফুলের বাগান। আঙ্গিনার পরেই পাশাপাশি চারটি বহুতল ভবনগুলোর পেছনেই আছে আরও তিনটি প্রাসাদতুল্য ইমারত। এর পিছনে রয়েছে সুন্দর একটি পুকুর।

এখানে মোট সাতটি প্রাসাদের প্রায় ২০০ টি কক্ষেই সুনিপুণ কারুকাজ রয়েছে। চুন-সুরকি, লোহার পাত আর কাদামাটিতে নির্মিত ভবনগুলোর প্রতিটি দেয়াল প্রায় ২০ ইঞ্চি পুরু। যার পরতে পরতে রয়েছে সৌন্দর্যের ছোঁয়া। অনন্য নির্মাণ কৌশল আর কারুকার্য পূর্ণ বালিয়াটি জমিদার বাড়ী তৎকালীন জমিদারদের অভিজাত্যকেই ফুটিয়ে তোলে।

একদিকে জমিদার বাড়ির শানশওকত আর চাকচিক্যের প্রসাদগুলো মাথা উঁচিয়ে জানান দিচ্ছে তার জৌলুসময় অতীতের আখ্যান। অন্যদিকে এখানকার রকমারি দেশী-বিদেশী ফুলের সমারোহ ও সুশোভন বাহারি পাতাবাহার দ্বারা পরিবেষ্টিত ফুলের বাগান। সবমিলিয়ে আমায় একবার নয় বারবার এই সৌন্দর্য দেখার হাতছানি দিয়ে আমন্ত্রণ জানায়। তাছাড়া এখানকার সৌম্য-শান্ত কোলাহলমুক্ত পরিবেশ আমায় দিয়েছে এক অন্যরকম ভ্রমণের অনুভূতি।

#

এবার আপনাদের কাছে বালিয়াটি জমিদার বাড়ির #সংক্ষিপ্ত_ইতিহাস তুলে ধরি। ইতিহাস থেকে জানা গেছে আনুমানিক ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে বালিয়াটি জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয়। বালিয়াটি জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জনৈক গোবিন্দ রাম সাহা। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি লবণের বণিক ছিলেন। জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকারের মধ্যে কিশোরীলাল রায় চৌধুরী, রায়বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর পিতা এবং যার নামানুসারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়। বালিয়াটির জমিদাররা উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে শুরু করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বছর বহুকীর্তি রেখে গেছেন যা জেলার পুরাকীর্তিকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে।

৫ দশমিক ৮৮ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বালিয়াটি জমিদার বাড়িটি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের মাধ্যমে সংরক্ষণ ও পরিচালনা করা হচ্ছে। আর জমিদার বাড়ির কেন্দ্রীয় ব্লকে রংমহল খ্যাত ভবনে যাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছে। বালিয়াটি প্যালেস নামেও পরিচিত এই জমিদার বাড়ি।

#

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি #পরিদর্শনের_সময়:
গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) বালিয়াটি সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং শীতকালে (অক্টোবর থেকে মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। প্রতি রবিবার পূর্ণ দিবস ও সোমবার অর্ধ দিবস ছাড়াও সকল সরকারি ছুটির দিন বালিয়াটি জমিদার বাড়ি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকে।

লেখক : Abdul Kahhar (Siam Ahmed)

বাস্তময় যান্ত্রিক শহরে একদিন সময় নিয়ে রিফ্রেশমেন্টের জন্যে সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম ঢাকার ভিতরে কেরানীগঞ্জের অসাধারণ সুন...
09/01/2024

বাস্তময় যান্ত্রিক শহরে একদিন সময় নিয়ে
রিফ্রেশমেন্টের জন্যে সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম ঢাকার ভিতরে কেরানীগঞ্জের অসাধারণ সুন্দর তিনটি দর্শনীয় স্থানের উদ্দেশ্যে। যেখানে দেখা মিলে নদী, নৌকা, কাশফুল, ঐতিহাসিক মসজিদ, বিশাল মাঠ, ইট ভাটাসহ খোলামেলা চমৎকার পরিবেশের।

তাই চাইলে আপনারাও পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে এক দিন বা বিকেল কাটাতে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার অদূরেই কেরানীগঞ্জে। তো কোথায় কি যাবেন এবং কি কি দেখতে পাবেন? তা নিয়েই আমার আজকের ভ্রমণ ডায়েরি।

সাতসকালে বেড় হয়ে প্রথমেই ছুটে যাই
কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী #দোলেশ্বর_হানাফিয়া_জামে_মসজিদে। প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর অপূর্ব নিদর্শনের মসজিদটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বহু ইতিহাস আর ঘটনার সাক্ষী। মসজিদের কারুকার্য ও সৌন্দর্য বেশ ভালো লাগে।

অবাক হয়ে যাই যখন জানি,এই মসজিদ ২০২১ সালে ইউনেসকো এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস ফর কালচারাল হেরিটেজ কনজারভেশনে ছয়টি দেশের নয়টি স্থাপনা এর মধ্যে ‘অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ ক্যাটাগরিতে ইউনেসকোর স্বীকৃতি পেয়েছে।

মুসল্লি সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পুরনো মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয় নতুন আরেকটি মসজিদ। সেটির নকশাও বেশ সুন্দর।আর পুরনো মসজিদটি এখন লাইব্রেরি এবং মক্তবে রূপান্তরিত হয়েছে।
(এই মসজিদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ছবির ক্যাপশনে)

এরপর যাই,
#কেরানীগঞ্জে_সাউথ_টাউন_মসজিদে।

কেরানীগঞ্জের সাউথ টাউন আবাসিক প্রকল্পের মধ্যে অবস্থিত সাউথ টাউন মসজিদ। চারপাশে কাঁশফুলে ঘেরা খোলামেলা জায়গার মাথা উঁচু করে নিজ সৌন্দর্য নিয়ে রাজপ্রাসাদের মতো দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদটির নান্দনিক গঠন আর অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী মুগ্ধ করবে যে কাউকে।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের কর্ণধার মোস্তফা কামাল মঈনুদ্দিনের উদ্যোগে আধা বিঘা জমিতে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ২ বছর সময় লেগেছে মসজিদটি নির্মাণ করতে। এতে প্রধান ফটক আছে ৩টি। দুই পাশে আছে আরও ২টি দরজা। আর চারপাশে প্রচুর জানালা তৈরি করে পর্যাপ্ত আলো প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমরা নান্দনিক এই মসজিদে অল্প কয়েকজন মুসল্লি মিলে যোহরের নামাজ আদায় করি।চারপাশের আবাসন প্রকল্পটিতে এখনো সেভাবে জনবসতি গড়ে না ওঠায় মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা অনেক কম হলেও একতলা এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় সাড়ে ৬০০ লোক জামাতে নামাজ পড়া যায়।

নামাজের পর বিশ্রাম নিতে একটু শুয়ে পড়ি আর তখন দু’স্তরের জানালার ফাঁক দিয়ে গলে আসা প্রকৃতির আলো ও হিমশীতল বাতাসে গভীর ঘুমে নিমজ্জিত হয়ে যাই। পরে মুয়াজ্জিনের ডাকে উঠে পড়ি। স্থপতির নন্দনভাবনার শৈলী ফুটে আছে গম্বুজের ভেতরের অংশেও। সবমিলিয়ে ভেতরের চমৎকার এক পরিবেশে সত্যিই চোখ জুড়িয়ে যায়।

প্রকৃতির মাঝে নান্দনিক মসজিদে চমৎকার কিছু সময় কাটিয়ে রয়না দেই সারিঘাটের উদ্দেশ্যে আর পথিমধ্যে সেরে নেই মধ্যাহ্নভোজ।

#
কেরানীগঞ্জ উপজেলায় বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রোজেক্টের পেছনের একটি সুন্দরতম স্থান হলো #সারিঘাট।

খাল-বিল আর গাছপালার গ্রামীণ পরিবেশ আর শরৎকালের বিস্তীর্ণ কাশবন সব মিলিয়ে এখানে অন্য রকম এক প্রশান্তি পাই।

সারিঘাটে রয়েছে কায়াকিং ও নৌকায় ভ্রমণের সুযোগ। তাই আমরা প্রথমেই দুজনে দরদাম করে একশো টাকায় প্রায় একঘন্টা নৌকা চালাই।খালের একপাশে কড়ইগাছ অন্যপাশে কাশবন আর শেষ বিকেলে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় কায়াকিং করার মুহূর্ত বেশ উপভোগ করেছি।

এরপর এখানে একইসঙ্গে থাকা কিছু অস্থায়ী খাবারের দোকান থেকে কিছু খেয়ে নেই। সূর্য তখন গোধূলি লগ্নে হেলে পড়েছে তখন সাইকেল চালিয়ে কাশবনের ভিতরে প্রকৃতির মাঝে যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম। সন্ধ্যা নেমে এলে একটু উঁচু টিলায় বসে বিস্তৃর্ণ খোলা মাঠ, কাশবন আর সূর্যাস্তের রক্তিম আভা সব মিলিয়ে অন্য রকম এক প্রশান্তি লাগছিলো।
তখন, #জীবন_সত্যিই_সুন্দর

#যেভাবে_যাবেন

➡️ দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ : ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে পোস্তগোলা ব্রিজ এসে, এখান থেকে ২০ টাকা অটো ভাড়ায় সহজেই যেতে পারবেন দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ কমপ্লেক্স দেখতে।

➡️ সাউথ টাউনে : ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে উঠে রাজেন্দ্রপুর যেতে হবে। রাজেন্দ্রপুরের নতুন কারাগারের একটু পরে হাতের ডান দিকেই সাউথ টাউন প্রকল্প। এই আবাসন প্রকল্পের প্রধান ফটক থেকে ৮-১০ মিনিট হেঁটে ভেতরে ঢুকতেই দূর থেকে চোখে পড়বে এই মসজিদ।

➡️ সারিঘাট : ঢাকার যে কোনো স্থান থেকে কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ বাস স্ট্যান্ডে যাবেন। কিংবা পোস্তগোলা ব্রিজের কেরানীগঞ্জ প্রান্তে গিয়ে ব্রিজের গোড়া থেকেই রিকশা নিতে পারেন। ৪০-৫০ টাকা ভাড়ায় সারিঘাট পৌঁছে যাবেন। কাশবনে যেতে চাইলে সারিঘাটের শেষ দিক দিয়ে হেঁটে যেতে পারেন। আর যদি তাড়াহুড়া থাকে তবে নৌকায় পার হতে পারবেন।

লেখক : আঃ কাহ্হার (সিয়াম)

ঢাকা হতে সঙ্গীহীন মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত প্রায় ৩৫০ বছরের বেশি পুরনো মোঘল স্থাপত্য ইদ্রাকপুর কেল্লা দেখতে গিয়ে যখন ...
28/12/2023

ঢাকা হতে সঙ্গীহীন মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত প্রায় ৩৫০ বছরের বেশি পুরনো মোঘল স্থাপত্য ইদ্রাকপুর কেল্লা দেখতে গিয়ে যখন বন্ধ পাই তখন কেমন লাগে!

ইদ্রাকপুর দুর্গে দায়িত্বরতদের আমার পাশাপাশি আরও এক নববিবাহিত দম্পতি খুব অনুরোধ করে কিন্তু কাজ হলো না। ঢাকা হতে মুন্সিগঞ্জে শুধুমাত্র এই কেল্লা দেখতে এসে ফিরে যাওয়াটা হতাশাজনক। কিন্তু একপর্যায়ে নিজের থেকেও বেশি খারাপ লাগে নবদম্পতিতকে ভিতরে প্রবেশ করতে না দেওয়ায়।

কারণ এই নবদম্পতি কেল্লার ভিতরে ফটোসেশান করবে বলে বর তার কনেকে পার্লার থেকে প্রায় হজার দশে টাকা দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে সাথে করে ঢাকা হতে ক্যামেরাম্যান ভাড়া করে এনেছে। আশেপাশে ফটোশুটের জন্যে তেমন ভালো কোন স্থানও নেই। যার ফলে তারা কতৃপক্ষকে অনেক টাকাও অফার করে কিন্তু কোন কাজ হয় নি।

নবদম্পতিসহ অন্যান্য দর্শনার্থীরা একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরে গেলেও আমি দমে গেলাম না। ভিতরে সাদা স্কুল ড্রেস পরিহিত কিছু পোলাপান দেখলাম। ওরা নিশ্চয়ই কোনা গোপন পথ দিয়ে ঢুকেছে। তাই আমিও সেই পথ খুঁজার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কূলকিনারা পাচ্ছিলাম না।

অতঃপর কিছু স্কুল ড্রেস পরিহিত টিকটকার পোলাপান পেলাম। ওদেরকে কথা বলে নিশ্চিত হই যে আমি ভিতরে স্কুল ড্রেস পরিহিত যে পোলাপান দেখেছি এরা তারাই। এরপর ভিতরে প্রবেশের পথ জানতে চাইলে ওরা ভিতরে ঢুকার সুড়ঙ্গের পথ বলে দেয়। কিন্তু একাকী ঢুকা নিরাপদ মনে করলাম না।

যার ফলে ওদের সাথে কিছুখন কথা বলে একটা ভালো সম্পর্ক করলাম। যাকে বলে ভাও করা। এরপর ওরা আমায় দেয়ালের ছোট্ট একটা ফুটো দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করায়। সুউচ্চ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এই কেল্লার ভিতরে প্রবেশের পর এর প্রত্যেক কোণে বৃত্তাকার বেষ্টনী, দুর্গের একমাত্র খিলানাকার দরজা এবং পূর্ব দিকের মূল প্রাচীর দেয়ালের মাঝামাঝি একটি গোলাকার মঞ্চ দেখতে পাই।

এছাড়াও শত্রুর উদ্দেশ্যে গোলা নিক্ষেপের জন্য প্রাচীরের গায়ে প্রতিটি দুর্গেই অসংখ্য ফোঁকর রয়েছে। যা দূর থেকে শত্রুর চলাচল পর্যবেক্ষণের জন্য এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ষোড়শ শতকের তৎকালিন বাংলার সুবাদারদের কেল্লা রক্ষার এমন অভাবনীয় রণকৌশল দেখে অভিভূত হই।

এভাবেই কায়দা করে বন্ধ থাকা ইদ্রাকপুর দুর্গের প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন ও সৌন্দর্য উপভোগ করে পরিতৃপ্তি নিয়ে ফিরে আসি। যা সম্ভব হয় ঐ ছেলেগুলোর আন্তরিক সহায়তায়। এবার আসুন আপনাদেরকে সংক্ষেপে ইদ্রাকপুর কেল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরি।

ইদ্রাকপুর কেল্লাটি ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালিন বাংলার সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ইছামতি নদীর তীরে ইদ্রাকপুর নামক স্থানে এই কেল্লাটি নির্মাণ করেন। ৮২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৭২ মিটার প্রস্থের ইটের তৈরি ইদ্রাকপুর কেল্লাটি মগ জলদস্যু এবং পর্তুগিজদের হাত থেকে রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হয়। লোকমুখে প্রচলিত আছে ঢাকার লালবাগ কেল্লা থেকে ইদ্রাকপুর কেল্লা পর্যন্ত একটি সুড়ঙ্গ ছিল।

ইদ্রাকপুর কেল্লার ৩ কিলোমিটারের মধ্যে চারটি (ধলেশ্বরী, ইছামতী, মেঘনা এবং শীতলক্ষা) নদীর অবস্থান। ১৯০৯ সালে মোঘল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন ইদ্রাকপুর কেল্লাকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তির মর্যাদা দেয়া হয়। প্রাচীর ঘেরা এই গোলাকার দূর্গটি এলাকায় এস.ডি.ও কুঠি হিসাবে পরিচিত।

ধারণা করা হয় ইদ্রাকপুর কেল্লাটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৬৫৮ সালে এবং ১৬৬০ সালে তা শেষ হয়। দুই ভাগে বিভক্ত কেল্লার প্রাচীরের উত্তরপাশে কামান বসানোর তিনটি মঞ্চ রয়েছে। ১৮৪৫ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ইদ্রাকপুর দূর্গ মহকুমা প্রশাসনের বাস ভবন হিসাবে ব্যবহৃত হত। বর্তমানে এটি সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। রাজধানী ঢাকার কাছে এবং দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসার সুবিধার জন্য ভ্রমণপিয়াসীদের কাছে ইদ্রাকপুরের জনপ্রিয়তা ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

➡️ যেভাবে যাবেন
মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের পুরাতন কোর্ট অফিসের কাছে ইদ্রাকপুর কেল্লা অবস্থান। রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান থেকে উৎসব বা বন্ধন বাসে ৫৫ টাকা ভাড়ায় নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া আসবেন। সেখান থেকে সিনজিতে ৫০ টাকা ভাড়ায় মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর এসে জনপ্রতি ১০ টাকা অটোরিক্সা ভাড়া এবং ২০-২৫ টাকা রিক্সা ভাড়ায় ইদ্রাকপুর কেল্লায় আসা যায়।

Abdul Kahhar

Address

Dhanmondi
Dhaka

Telephone

+8801311481514

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Travelogue of Abdul Kahar posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Travelogue of Abdul Kahar:

Videos

Share


Other Tourist Information Centers in Dhaka

Show All