16/05/2018
বেশ কিছু দিন আগের কথা। একজন আমায় বলল, "এগুলা কী রাখসো? তোমায় কাটতে বলছিলাম না? দাড়িতে তোমায় ভাল লাগে না। আগেই ত কত ভাল লাগতো!"
- তাহলে কি দাড়ি রাখব না?
: রাইখো! বাট পরে। এখন না।
- আচ্ছা বলো তো, এই পৃথিবীর সবচাইতে HANDSOME পুরুষ কে ছিল?
: কেন? হযরত মুহাম্মাদ ﷺ
- তাঁর তো দাড়ি ছিল।
সেদিনের কথোপকথন মোটামুটি এখানেই শেষ। ভাই-বোনদের জ্ঞাতার্থে একটা বিষয় বলে রাখি। রাসূলুল্লাহর ﷺ দাড়ি ছিল বিধায়ই যে তিনি হ্যান্ডসাম ছিলেন, ব্যাপারটি ঠিক এমন নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাই তাঁকে এই সৌন্দর্য দান করেছিলেন, এতে রাসূলের ﷺ কোনো ক্রেডিট নেই। ব্যাপারটা হল, যখনই আপনি রাসূলের ﷺ সুন্নাহকে ভালোবেসে দাড়ি রাখবেন- তখন অবশ্যই আপনাকে হ্যান্ডসাম দেখাবে। না, সৃষ্টির চোখে নয়; আপনার স্রষ্টার চোখে। মানুষের এইসব ঠুনকো প্রশংসার কি দু’ পয়সার মূল্য আছে যদি আল্লাহ তা’আলার নিকট আমরা সম্মানিত, প্রশংসিত না হতে পারি? হতে পারে কাল হাশরের ময়দানে কঠিন সময়ে এই দাড়ির প্রতি ভালোবাসার কারণেই রাসূল ﷺ আমাদের জন্য শাফা’আত করবেন, আমাদের হাইজে কাউসারের পানি পান করাবেন! ভাবুন তো, রাসূলের সামনে আপনি উপস্থিত হলেন আর আপনার চকচকে গাল থেকে আফটার শেইভের কড়া ঘ্রাণ বের হচ্ছে। দৃশ্যটা খুব সুখকর নয় তাইনা?
এ তো গেলো খুচরো কথা, এবার আসল কথায় আসি। দাড়ি নিয়ে বক্তব্য দেওয়া আমার উদ্দেশ্য না। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি তা হল- আপনি কি আপনার আশেপাশের এমন একজন মুসলিম (Lip Servicing Muslim হলেও চলবে) ভাই বা বোন খুঁজে বের করতে পারবেন যে বলবে আল্লাহর রাসূলের ﷺ দাড়ি ছিল না? যে বলবে আল্লাহর রাসূল ﷺ ক্লিন শেইভড ছিলেন বা ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি রাখতেন? পাবেন না, একজনও পাবেন না! তাহলে কেন আমাদের এসব ভাইয়েরা দাড়িকে অপছন্দ করে? কেন বোনেরা দাড়িকে ‘ক্ষ্যত’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর কটাক্ষ করে?
ব্যপারটা হল- কোনো বিষয় জানা, আর হৃদয়ে ধারণ করা এক জিনিস নয়। এমন কোনো মুসলিমের সাথে কি আপনার পরিচয় আছে, যে জানেনা না যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরজ??? নিশ্চয় নেই। কারণ আমাদের সোসাইটিতে এরকম মানুষ আদৌ নেই। তাহলে প্রবলেমটা কোথায়??? কেন সবাই জানার পরও মসজিদে উপস্থিত হতে গাফিলতি করছে??? আগেই বলা হয়েছে- কোনো বিষয় জানা, আর হৃদয়ে ধারণ করা এক জিনিস নয়। আমরা যদি ইসলামকে ভেতর থেকে FEEL করতাম, অন্তর দিয়ে ভালোবাসতে পারতাম- তবে আমাদের এহেন অবস্থা হত না!
দীর্ঘ প্রতিক্ষিত রমাদান আমাদের দ্বারপ্রান্তে আলহামদুলিল্লাহ্! এই রমাদানকে কাজে লাগান ইসলামের এই হারিয়ে যাওয়া স্পিরিটটা রিভাইব করতে। রমাদানে মাশা-আল্লাহ চারিদিকে সাজ সাজ রব পড়ে যায়, যেন ইবাদাতের মহোৎসব চলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, এই ইবাদাত ক্রমেই একটা রিচুয়ালের রূপ পরিগ্রহ করছে! ব্যাপারটা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। আমরা জানিনা আগামী রমাদান পর্যন্ত বেঁচে থাকবো কিনা! জানিনা আদৌ এই রমাদানটাই বা সম্পন্ন করতে পারব কিনা! তাই সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করুন। যারা এই লেখাটি পড়ছেন, তাদের কাছে দ্বীনি ভাই হিসেবে সবিনয় অনুরোধ থাকবে, আসুন রমাদানটাকে SPIRITUAL মাস হিসেবে নেই, RITUAL হিসেবে নয়। ওয়ামা তাওফিক্বি ইল্লা বিল্লাহ। ওয়ামা ’আলাইনা ইল্লাল বালাগ!
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
"দাওয়াহ" - পেজ থেকে সংগৃহীত! (আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)
(Y) শেয়ার করুন, বন্ধুদের সাথে ইন শা আল্লাহ !
_
#ওহী (Seeking The Way To Jannah)