06/10/2023
ঢাকা থেকে হজ্বের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর পরে একের পর এক ধাপ সমুহ-
ওমরাহ্ -
♦ মক্কায় প্রবেশ করলে আপনাকে ওমরাহ্ করতে হবে।
✔ হজের ফ্লাইট-এর নির্দিষ্ট সময়ের ১২/১৪ ঘন্টা আগে হজ্ব ক্যাম্প এ রিপোর্ট করতে হয়। এই সময়টা বিশাল লাইন এ দাঁড়িয়ে ব্যাগ চেকিং, পেপার চেক করা, এরপর বড় ব্যাগ গুলো আপনার
এয়ারলাইনস রেখে দিবে।
✔ ছোট হ্যান্ড ব্যাগ সহ আপনাকে বাসে করে এয়ারপোর্টে নিয়ে যাবে। সেখানে ইমিগ্রেশন এর কাজ শেষ করে ফ্লাইট এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
♦♦ হজ ক্যাম্প এবং এয়ারপোর্টের এই ১২/১৪ ঘন্টা সময় আপনার হ্যান্ডব্যাগ যা থাকা দরকার :
✔শুকনা খাবার - কেক, বিস্কিট, খেজুর, বাদাম।
★★ (হজ্ব যাত্রী এয়ারপোর্ট এর খাবার কেনার দোকানে যেতে পারবেন না। )
✔ যাদের ডায়াবেটিক আছে, অবশ্যই জরুরী ওষুধ, ইনশুলিন সাথে রাখবেন।
✔ পানি,স্যালাইন- (প্লেন এ বসার ৪০/৫০মিনিট পর পানি পাবেন। তাই, ১২/১৪ ঘন্টার হিসাবে পানি সাথে নিতে পারেন।)
✔ মেডিসিন - ৩দিন এর জরুরী মেডিসিন (প্রেসার, ডায়াবেটিক), ইনহেলার নিজের সাথেই রাখবেন।
✔ ট্রাভেল পিলো ক্লান্ত হলে যাতে চেয়ারে বসে একটু ঘুমাতে পারেন। এই পিলো আপনার ৪০দিনের পুরো সফরে অনেক কাজে লাগবে।)
✔ পাতলা জায়নামাজ, তাইমুম এর মাটি,
✔ টয়লেট পেপার (এয়ারপোর্ট এর বাথরুম এ নাও থাকতে পারে) ,
✔ গন্ধছাড়া সাবান (এহরাম অবস্থায় হাত দোয়ার জন্য),
✔এক সেট কাপড় (প্রয়োজনে হলে)
♦♦প্লেনে করে জেদ্দা এয়ারপোর্ট এ পৌছালেনঃ
✔ প্লেন থেকে নামার পর ইমিগ্রেশন এ কাজ শেষ করে, লাগেজ খুজে নিতে হবে। (ঢাকা থেকে এয়ারপোর্টে রওনা দেওয়ার পূর্বে লাগেজে অবশ্যই আপনার নাম, পাসপোর্ট নাম্বার ও জরুরী কন্টাক্ট নাম্বার উপরে লিখে রাখবেন।)
✔ এরপর আপানকে পাঠিয়ে দিবে "হজ্ব প্লাজায়"। এখানে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে (১০মিনিট থেকে ২ঘন্টা)। বেশিও সময় লাগতে পারে। এই সময় সৌদি সিম সংগ্রহ করতে পারেন। এক পাসপোর্ট দুটো সিম নেয়ে যায়।
✔ হজ্ব প্লাজাতে টয়লেট থাকবে; তবে টয়লেট এ টিস্যু বা হ্যান্ডওয়াস অনেক সময় থাকে না।
✔টয়লেট এ পানি থাকবে, তবে এটা একটি পাইপ এর মত। কল খুললে, বুঝে ঊঠার আগেই আপনি গোসল হয়ে যাবেন।তাই, সাবধান এ পানির পাইপ খুলবেন।
✔ নামাজ এর জায়গা থাকবে। নামাজ এর ওয়াক্ত হলে নামাজ পড়ে নিতে পারবেন।
✔ আপনার লাগেজ মোয়াল্লেম এর সাহায্যে- বাংলাদেশি সাহায্যকর্মিরা নিয়ে নিবে। এই লাগেজ আপনাকে হোটেলে পোঁছে দিবে।
♥♥ এই সময় অনেকই পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেন, বা ভাষা না বুঝে অন্য দলের কাউকে পাসপোর্ট দিয়ে ফেলেন।
♥♥ শুধুমাত্র আপনার হজ্বের গাইডকেই/মোয়াল্লেমকেই পাসপোর্ট জমা দিবেন।
✔ আপনার দলের সাথে বাসে উঠবেন। বাস আপনাকে হোটেল এ নামিয়ে দিবে।
✔ হোটেলের এন্ট্রেস এ সবার লাগেজ রাখা থাকবে।আপনার ব্যাগ খুজে নিজেকে রুমে নিয়ে রাখতে হবে।
✔ ক্লান্ত থাকলে খাবার খেয়ে, বিশ্রাম করর নিন।তারপর ওমরাহ এর জন্য ক্বাবার দিকে রওনা করুন।
♦ দুপুরে অনেক রোদ থাকে। " মাগরিব এর পর থেকে ফজর পর্যন্ত " তাওয়াফ এর উত্তম সময়। তবে ওই সময়টা অনেক ভীর থাকে। সেক্ষেত্রে আসর সালাতের পরে সূর্যের তেজ কমে এলে উমরাহ করতে হারামের দিকে যাওয়া উত্তম।
♥♥ওমরাহ্ ঃ♥♥
ধরে নিচ্ছি আপনি ওমরাহ্ এর সকল নিয়ম যানেন। তাই এই সময় অন্য আর কি লাগবে সেটা বলে দিচ্ছি।
♦♦ তাওয়াফ - এর সময় যা লাগবেঃ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
✔ ৭ দানার তসবি। (বাইতুল মোকারম এ পাবেন।) তবে আঙুলে কাউন্ট করা উত্তম।
✔ ২ ফিতার কাধের একটা ব্যাগ।(অবশ্যই নিবেন)
✔ মাটির ঢ্যালা- তাওয়ার এর মাঝে ওজু ভেংগে গেলে, যেনো তাড়াতাড়ি তাইমুম করতে পারেন।
✔এখানে জুতা পরা যাবেনা। মহিলারা মোজা (এন্টি স্লিপ) পরতে পারেন।
✔ রোদ থাকলে ছাতা, সানগ্লাস নিয়ে নিবেন।
✔ **জুতা রাখার জন্য পিঠের ব্যাগ।
✔ **খালি পানির বোতল- ওখানে জমজম পানি পাবেন।হোটেলে খাবার জন্য বোতল ভরে নিয়ে আসবেন। (অবশ্যই নিবেন)
✔ **শুকনা খাবার - খেজুর, বিস্কিট,চকলেট (অনেকেই হাটাহাটি করে ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পরেন।)
✔সায়ী - সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে ৭বার চক্কর দেয়াকে সায়ী বলে।
✔ যেখানে সায়ী করবেন, পুরো পাহাড় এসি করা আর সেখানে ফ্লোরটাও পাথরের। তাই, ফ্লোর এতোটাই ঠান্ডা থাকে যে খালি পায়ে হাটা একটু কষ্ট। মহিলারা এন্টিস্লিপ মোজা পরতে পারেন।
✔ পানির বোতল,খাবার সাথে রাখবেন।
✔ চুল কেটে গোসল এর পর আপনি এহরাম মুক্ত হলেন।
উমরাহর পরের দিন
সম্মানিত হজ্জযাত্রীগন মক্কায় মসজিদ আল-হারামে পুরুষ মহিলা একই গেট দিয়ে ঢুকতে পারবেন, আর ভিতরে বা বাইরে নামাজের স্থান আলাদা করা আছে; পুরুষ মহিলা একসাথে নামাজ আদায় নিষেধ৷
মাতাফে তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহিমের পিছনে অবশ্য জায়গার অভাবে অনেকেই এলোমেলো ভাবে দুই রাকাত নফল পড়েন; এখানে একটু সতর্ক থাকবেন৷
মদিনায় মসজিদে নববীতে পুরুষ মহিলা আলাদা গেট, একসাথে মসজিদে প্রবেশ করতে পারবেন না৷ আলাদা আলাদা নামাজের ব্যবস্থা ভিতরে বাইরে৷
হারিয়ে যাওয়ার ভয় পাবেন না, কে কোথায় নামাজ পড়বেন তা আগের থেকে ঠিক করে রাখতে পারেন, গেট নাম্বার চিহ্নিত করে রাখতে পারেন, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখতে পারেন, অথবা নামাজ শেষে একটা নির্দিষ্ট যায়গায় একত্রিত হবেন বা ফিরে আসবেন, হোটেলের নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বারসহ হোটেলের বিজনেস কার্ড সাথে রাখতে পারেন৷ প্রথম দুই একদিন সমস্যা হতে পারে, তারপর ঠিক হয়ে যাবে৷
আগের বছর সরকারি ভাবে হজ্জ গাইড/সাহায্যকারী/সহায়তাকারীদের মক্কা মদিনায় মিনা আরাফাত মুজদালিফায় রাস্তায় রাস্তায় দেখা যেতো, এই বছর কম সংখ্যক সহায়তাকারী যাচ্ছেন সরকারি হজ্জ টিমে৷ হারিয়ে গেলে উনাদের সহযোগিতা নিতে পারেন৷
পুরো মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রান খুলে আল্লাহর কাছে দোআ করবেন ৷ হজ্বের পুরো সফরে ধৈর্যশীল এবং সহনশীল হবেন, আল্লাহ আমার এবং আপনাদের হজ্বকে কবুল করুন।