19/11/2024
🐅সুন্দরবন ভ্রমন সংক্রান্ত তথ্য:
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ সুন্দরবন ভ্রমন বিমুখ। সুন্দরবন সম্পর্কে তাদের বিরূপ ধারনা আছে। সঠিক তথ্য না থাকার কারনে অনেকেই ফ্যামেলি নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমন করতে চান না। সুন্দরবন ভ্রমন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছু তথ্য শেয়ার করা হল।
🇧🇩বাংলাদেশের বিষ্ময় সুন্দরবন! পৃথিবীর সব থেকে বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম। রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত।
🏖️ কি ভাবে আসবেন? সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহীদের প্রথমত খুলনা আসতে হবে।
বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে বাসে করে খুলনা আসার সব রুট আছে। কিছু কিছু জেলা থেকে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগও আছে। খুলনা হতে আপনি খুব সহজেই সুন্দরবন ভ্রমন করতে পারবেন। এছাড়াও সাতক্ষীরা থেকে কিছু সংখ্যক টুরিস্ট সুন্দরবন ভ্রমণ করে। একমাত্র লঞ্চ বা শিপে করে সুন্দরবন ভ্রমণ করা যায়।
🏖️ শিপ ছাড়ার সময়?
ভ্রমণের আগের দিন রাত ১২টায় ঢাকা থেকে বাসে রওনা দিয়ে ভোর ৫টায় খুলনায় রয়েলের মোড় বাস কাউন্টারে পৌঁছানো। সেখান থেকে লোকাল ট্রান্সপোর্টে (ব্যাটারি চালিত অটো, খরচ ৫ জনের জন্য রিজার্ভ ১০০৳) মাত্র পাঁচ মিনিটের দূরত্বে জেলখানা ঘাট কিংবা চার নম্বর লঞ্চঘাটে গাইড রিসিভ করে শীপে নিয়ে যাবে। শিপ ছাড়বে প্রথম দিন সকাল ৬টায়। সুন্দরবন ভ্রমণে শেষের দিন বিকাল ৪টায় শিপ খুলনা পৌঁছাবে এবং বিকেল ৫টায় বাসে রওনা দিয়ে রাত ৯ টায় ঢাকা পৌঁছানো। রাতের ট্রেনেও ঢাকা খুলনা যাতায়াত করা যায়।
🏖️ কখন ভ্রমনের উপযোগী সময়?
সেপ্টেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত হলো সুন্দরবনের মূল সিজন। বছরের প্রায় সময়ই আপনি সুন্দরবন ভ্রমন করতে পারবেন শুধু জুন, জুলাই ও আগষ্ট এই তিন মাস সুন্দরবন ভ্রমন করতে পারবেন না। বন্যপ্রাণীর বিডিং এই সময়টাতে বন বিভাগ থেকে তিন মাসের যে কোন ভ্রমন, মাছ ধরা, মধু সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ।
🏖️ প্যাকেজ সমূহ?
খুলনা থেকে শিপে সুন্দরবনে প্রতি সপ্তাহে ২বার শুক্র থেকে রবি অথবা সোম থেকে বুধ ৩ দিন এবং ২ রাতের ভ্রমণ করা যায়। সুন্দরবনের সাধারণত দুই ধরনের প্যাকেজ বিদ্যমান। কর্পোরেট প্যাকেজ অথবা ফ্যমিলি প্যাকেজ। কর্পোরেট প্যাকেজে যেকোনো প্রতিষ্ঠান/গ্রুপ শিপ রিজার্ভ করে নির্দিষ্ট তারিখে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন।
ফ্যমিলি প্যাকেজে যেকোনো পরিবার কিংবা নূন্যতম দুইজন হলে শিপের ডিক্লেয়ার করা নির্দিষ্ট তারিখে অন্যান্য ফ্যামিলির সাথে ভ্রমণ করতে পারবে। উভয় প্যাকেজে ভ্রমণ করতে চাইলে টুরিস্টদের অগ্রিম বুকিং করতে হয়। কার্যক্ষেত্রে ভালো তারিখসমূহ ০৩-১২ মাস পূর্বেই বুকিং হয়ে যায়।
🏖️ খরচ?
সুন্দরবন ভ্রমনের খরচ নির্ভর করে জাহাজের মান, ফ্যাসেলিটি ও তাদের সার্ভিস এর উপরে। (খুলনা - সুন্দরবন - খুলনা) তিন দিন ও দুই রাত এর প্যাকেজে আপনি ৭,৫০০ টাকা থেকে ২২,০০০ টাকার ভিতরে থাকা খাওয়া সহ ভ্রমন করতে পারবেন। মূলত: শিপের মান,ফ্যাসেলিটিস, খাবার ও সার্ভিসের উপরেই ট্যুরের প্রাইজটা নির্ধারিত হয়ে থাকে।
🏖️ থাকা ও খাওয়া?
প্রতিটা ট্যুরিষ্ট শিপেই কেবিন ব্যবস্থা আছে থাকার জন্য এবং যাবতীয় খাওয়া খরচ, সকল সার্ভিস ও ভ্রমন পারমিট সব ওই প্যাকেজের ভিতরেই অন্তরভুক্ত। তিন দিনের ব্রেকফাষ্ট - লাঞ্চ - ডিনার ও স্নাক্স চা কফি সবই পাবেন।
🏖️ নিরাপত্তা?
আসলে অনেকের বিরূপ একটা ধারনা আছে সুন্দরবন ভ্রমনের নিরাপত্তা নিয়ে। ব্যাপারটা যদিও অনেক স্বাভাবিক। আমাদের এক কথা সুন্দরবন ট্যুরিষ্টদের জন্য ১০০% নিরাপদ যায়গা। প্রতিটি শিপেই নিরাপত্তার জন্য ফরেষ্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে আর্মস গার্ড দিয়ে দেয়। এছাড়াও VHF এর মাধ্যমে প্রতিটা জাহাজ কোষ্টগার্ড, নেভী ও অন্যান্য জাহাজের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করতে পারে এবং জাহাজের গাইড ও ক্রু'রা সব সময় টুরিস্টদের নিরাপত্তার বিষয় টা খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
🌿 সুন্দরবনের প্রতিটা ট্যুরই একটু সময় নিয়ে করতে হয় এবং খরচটাও বেশি হয়ে থাকে কারন বাংলাদেশের অন্যতম লাক্সারি ট্যুর গুলোর ভিতরে সুন্দরবন ট্যুর একটি। এই ট্যুরে এক সাথেই পাবেন অনেক গুলো ফিল। নদী, সমুদ্র, প্রকৃতি ও বন্য জীবন।
🐅সুন্দরবন ভ্রমন প্লান:
🌿 সুন্দরবন ভ্রমনে আকর্ষণীয় স্পট -১
(হাড়বাড়ীয়া অথবা আনদ্ধারমানিক ফরেষ্ট স্টেশন ও ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র)।
খুলনা বা মোংলা থেকে ট্যুর শুরু করার পরে প্রথম যে স্পটটিতে আমরা ভ্রমন করি সেটি “হাড়বাড়ীয়া অথবা আনদ্ধারমানিক”। এটি একটি ইকো ট্যুরিজম স্পট। পশুর নদীর কোল ঘেষে এটির অবস্থান। এখানে আছে বন্যপ্রানীদের পানি পান করার জন্য মিষ্টি পানির পুকুর। পানযোগ্য পানির জন্য এখানেও ঘুরে বেড়ায় বাঘ, হরিন, শুকর ও বানর সহ সুন্দরবনের অনেক প্রানী। আছে বন ও বন্যপ্রানী পর্যবেক্ষেনের জন্য একটি ওয়াচ টাওয়ার। এখানে ট্যুরিষ্ট হাঁটার জন্য আছে প্রায় পৌনে ১.৮ কিলোমিটারের ট্রেইল। টুরিষ্টরা এই ট্রেইলের উপর দিয়ে হেঁটে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করেন। গহীন বন ও শরীর ছমছমে পরিবেশ হাড়বাড়ীয়াকে এনে দিয়ে দিয়েছে ভিন্ন এক পরিচিতি।
খুলনা বা মোংলা থেকে ১ দিনেই ঘুরে আসা যায় এই স্পটটিতে। ঘন জঙ্গল আর সুন্দর ক্যানেলের জন্য জায়গাটি সবার কাছেই ভালো লাগে।
🌿 সুন্দরবন ভ্রমনে আকর্ষণীয় স্পট -২ (কটকা)
হাড়বাড়ীয়া ভ্রমনের শেষ করে পশুর নদী হয়ে ও শ্যালা নদী দিয়ে হরিনটানা, হরমল খাল, পাতাকাটা ও বেতমোড় গাং হয়ে হেমরা খাল বা সাগরের মোহনা দিয়ে চলে আসতে হবে সাগরের কোল ঘেষে অবস্থিত কটকা অভায়ারন্য....
কটকা অভায়ারন্য যাকে আমরা সুন্দরবনের সুন্দরী বলে ডাকি। হয়তো এটাও কম হয়ে যাবে। সুন্দরবন ভ্রমনের মেইন স্পটটিই কটকা অভায়ারন্য। সুন্দরবনের যতগুলো ট্যুর স্পট আছে সব থেকে সাজানো এবং সুন্দর।
কটকা ফরেষ্ট ষ্টেশনের দক্ষিণে বঙ্গোবসাগর। আর সাগর কোল ঘেষেই কটকা আভায়ারন্যটি। এটি শরনখোলা রেঞ্জ, বাগেরহাট এর ভিতরে পড়েছে।কটকা এমন একটি ট্যুরিষ্ট ডেস্টিনেশন যেখানে সারাদিন সময় কাটালেও মনে হয় শেষ হবে না।
প্রথমত আসি কটকা ফরেষ্ট অফিস পারের কথায়। সমুদ্রের কুল ঘেষে এই ফরেষ্ট অফিসটি। এখানে বন বিভাগের লোকজন থাকে বন সুরক্ষা করার জন্য। আছে পুরাতন ও নতুন মিলিয়ে দুটি সরকারী গেষ্ট হাউজ। আর ট্রাকিং করার অন্যতম সুন্দর জায়গা এটি। এখানে আছে তিনটি টাইগার টিলা যেখানে বাঘেরা শিকার ধরে এনে খায়। এই তিনটিলা ট্রাকিং করতে হবে গহীন গরান বনের ভিতর দিয়ে।
কটকা নদীর ওপারে আছে ট্রাকিং করার বড় জায়গা। ট্রলার থেকেই নেমে আগে আসতে হবে কটকা ওয়াচটাওয়ারের দিকে। ৪০ ফুট উচু ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে টাইগার পয়েন্টের মাঠ ও বন পর্যবেক্ষণ করা যায় খুব ভালো ভাবেই। এখানে টাইগার পয়েন্টের মাঠ দিয়ে তিন কিলোমিটার হেটে যাওয়া যায় কটকার বিখ্যাত বাদামতলা বীচে। এই রুটটি আবার দুই ভাবে করা যায়। বনের ভিতর দিয়ে হেটেও যাওয়া যায়। তবে সাধারনত এডভেঞ্চার পাগল মানুষেরা বনের পথটি ব্যবহার করতে চায় সব সময়।।
প্রচুর হরিন, বানর, শুকোর, সজারু দেখা যায় এখানে। এবং বিখ্যাত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এর বিচরনও কটকাতে বেশি।
ছোট ছোট খালের সমাহার, একদিকে সমুদ্র ও প্রানীকুলের সমাহার ও ঘন বন কটকাকে এনে দিয়েছে অন্য এক পরিচিতি। যারা সুন্দরবন দেখতে চান তাদের অবশ্যই কটকা অভায়ারন্য ভ্রমন করা উচিৎ। কারন কটকা না দেখলে আপনার সুন্দরবন দেখাই হবেনা। কটকাতে শুধু মাত্র টেলিটক এর নেটওয়ার্ক রয়েছে।
🌿 সুন্দরবন ভ্রমনে আকর্ষণীয় স্পট -৩ (কচিখালী ও ডিমেরচর)
কটকার বাদামতলা/ জামতলা বীচ থেকে এসেই সরাসরি জাহাজ রওনা করবে কচিখালির উদ্দেশ্যে। ছিটা কটকার/ বড় কটকার সরু আঁকাবাঁকা খাল হয়ে সুপতি নদী দিয়ে চলে যাবে কচিখালীতে। কচিখালী সুন্দরবনের অন্যতম একটি অভায়রন্য। এটিও বাগেরহাটের শরনখোলা রেজ্ঞ এর আওতার ভিতরে পড়েছে। এখানে ফরেষ্ট ও কোষ্টগার্ড এর দুটিরই স্টেশন আছে। আছে খনন করা মিষ্টি পানির পুকুর। পরিকল্পিত বিভিন্ন ফলের গাছও রোপন করেছে বন বিভাগ। আছে নামাজ পড়ার জন্য ছোট্ট একটি মসজিদ। কচিখালী এক মায়াবী বন। ফরেষ্ট ক্যাম্প পার হলেই বনের আগে আছে বিশাল মাঠ যেখানে বছরের অধিকাংশ সময় থাকে পানিতে তলিয়ে। বড় বড় ছন বনে আসলেই অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকে। বিশেষ করে বাঘ মামা বাদেও বড় দাঁত ওয়ালা বন্য শুকর ও বিশাল অজগর সাপ। এ ছাড়া বিষধর সাপ তো আছেই। শীতের মৌসুমে পর্যটক আনাগোনার কারনে বন বিভাগ বিশাল ছন বনের মাঠটি একে বারে পরিস্কার করে দেয়। কচিখালির মাঠে দাড়িয়েই দেখা যায় শত শত হরিন ও বানর।
এরপরে আমরা কচিখালীর সরু ক্যানেল ক্রুজিং করতে করতে চলে যায় নদীর ওপারে দাড়ানো ডিমের চরে। ডিমের চর একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ যেটা এখন পুরোটাই ঘন বনে ছেয়ে গিয়েছে। ডিমের চরেও ইদানিং (২০১৯ সাল থেকে) বড় সড় হরিন ও বাঘ মামার আনাগোনা বেশ বেড়েছে। বঙ্গপোসাগরের কোল ঘেষে আছে বিশাল একটি বালুর বীচ। এখানের পানি বেশ পরিস্কার হওয়ার কারনে অনেকেই সমূদ্র স্নান করে থাকে। এখানেই উপভোগ করতে পারবেন আপনার সুন্দর বিকেল ও সূর্য়ান্ত দেখা। সুন্দরবনের কচিখালী ও ডিমের চর ট্যুরিষ্টদের জন্য এক অনন্য ভ্রমন স্পটে পরিচিতি পেয়েছে।
🌿 সুন্দরবন ভ্রমনে আকর্ষণীয় স্পট -৪ (হিরন পয়েন্ট ও দুবলা)
হিরণ পয়েন্ট, সুন্দরবনের দক্ষিণাংশের একটি সংরক্ষিত অভয়ারণ্য। এর আরেক নাম নীলকমল। প্রমত্তা কুঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরে, খুলনা রেঞ্জে এর অবস্থান। হিরণ পয়েন্ট ইউনেস্কো ঘোষিত অন্যতম একটি বিশ্ব ঐতিহ্য। হিরণ পয়েন্ট একটি অভয়ারণ্য হওয়ায় এই স্থান অনেক বাঘ, হরিণ, বানর, পাখি এবং সরিসৃপের নিরাপদ আবসস্থল। সুন্দরবন এলাকায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখার অন্যতম একটি স্থান হলো এই হিরণ পয়েন্ট। এখানে দেখা পাওয়া যায় চিত্রা হরিণ, বন্য শুকরের; পাখিদের মধ্যে আছে সাদা বুক মাছরাঙা, হলুদ বুক মাছরাঙা, কালোমাথা মাছরাঙা, লার্জ এগ্রেট, কাঁদা খোঁচা, ধ্যানী বক প্রভৃতি। এছাড়া আছে প্রচুর কাঁকড়ার আবাস। আর আছে রঙ-বেরঙের প্রজাপতি। হিরণ পয়েন্ট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে কেওড়াসুঠিতে রয়েছে একটি ওয়াচ টাওয়ার।
দুবলারচর সুন্দরবনের দক্ষিণে, কটকার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একটি দ্বীপ যা চর নামে শুটকি পল্লী, হিন্দুধর্মের পূণ্যস্নান, রাসমেলার জন্য পরিচিত। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে এটি একটি বিচ্ছিন্ন চর। এই চরের মোট আয়তন ৮১ বর্গমাইল। আলোরকোল, হলদিখালি, কবরখালি, মাঝেরকিল্লা, অফিসকিল্লা, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয় এবং মেহের আলির চর নিয়ে দুবলার চর গঠিত। দুবলার চরে শুধু মাত্র টেলিটক এর নেটওয়ার্ক রয়েছে।
🌿 সুন্দরবন ভ্রমনে আকর্ষণীয় স্পট -৫ (করমজল) সরকারীভাবে পরিচালতি একমাত্র লবন পানির কুমির ও বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ (বাটাগুড় বাল্কা) প্রজনন কেন্দ্র। এটি বানিশান্তা ইউনিয়ন সংলগ্ন সুন্দরবনে অবস্থিত। এখানে পর্যটক সরাসরি পূর্বানুমতি ছাড়া যেকোন সময় সুন্দরবন সম্পর্কে সম্মক ধারনা ও জ্ঞান লাভ করতে পারেন। প্রাকৃতিক পরিবেশে চিত্রল হরিণ, বানর ও কুমির দেখার সুযোগ রয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরীন চিত্র অবলোকনের জন্য দেড় কিলোমিটার কাঠের ট্রিল আছে। উপরের চিত্র দেখার জন্য ৪৫ ফুট উচু একটি আরসিসি টাওয়ার আছে। জলজ প্রাণী সম্পর্কে জানার জন্য ডলপিন ডিসপ্লে, চিত্রল হরিণের চামড়া, বাঘের কঙ্কাল, কুমিরের ডিম, বিবিধ শ্রেণীর উদ্ভিদ চেনার জন্য আঞ্চলিক, প্রচলিত ও বৈজ্ঞানিক নামের নেমপ্লেট, সুন্দরবনের মানচিত্র, ৩টি বড় কুমির যথাক্রমে রোমিও (পুরুষ), জুলিয়েট ও পিলপিল (নারী) রয়েছে। দায়িত্বপ্র্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার তত্বাবধানে এই মুহুর্তে ২১৭টি বিভিন্ন বয়স ও আকারের কুমির রয়েছে। ২ মিটার দৈর্ঘ্য হলে কুমিরের বাচ্ছা নদীতে অবমুক্ত করা হয়। পর্যটক ওঠা নামার জন্য রয়েছে ২টি সুদৃশ্য আধুনিক ঘাট।
দাকোপ উপজেলা সদর থেকে করমজলের দুরত্ব ৩০ কি:মি:, জেলা শহর থেকে ৫৫ কি:মি:। এখানে নৌপথ ও সড়ক পথে সহজেই ভ্রমন করা যায়। তাছাড়া রাত্রিযাপন করার জন্য নিকস্থ রিসোর্ট রয়েছে। স্বল্প খরচে প্রকৃতির এই লীলাভূমি খুব সহজেই ভ্রমন করা যায়।
ভ্রমণ স্পটসমূহ : রুট ১
🔸আন্দার মানিক🔸জামতলা সী-বীচ
🔸কটকা অভয়ারণ্য🔸টাইগার টিলা
🔸কচিখালি🔸ডিমের চর 🔸টাইগার পয়েন্ট
🔸করমজল 🔸ক্যানেল ক্রুজিং
ভ্রমণ স্পটসমূহ : রুট ২
🔸আন্দার মানিক🔸জামতলা সী-বীচ
🔸কটকা অভয়ারণ্য🔸টাইগার টিলা
🔸হিরন পয়েন্ট🔸দুবলার চর
🔸করমজল 🔸ক্যানেল ক্রুজিং
💢ভ্রমণ পরিকল্পনা:
িন:
সকাল ৬:০০ খুলনা জেলখানা/ ৪নং ঘাট থেকে গাইড আপনাকে রিসিভ করে শীপে নিয়ে যাবে, পশুর নদী ধরে জাহাজ চলবে আন্দার মানিক/হাড়বাড়িয়ার উদ্দেশ্যে।মর্নিং স্নাক্স ও লাঞ্চেরপর যাবো "আন্দার মানিক/হাড়বাড়িয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রে । আগে পিছে গান ম্যান রেখেসারিবদ্ধভাবে যাবো নির্ধারিত ফুট ট্রেইল ধরে। মিষ্টি পানির পুকুর পার হয়ে ঢুকবো গভীর বনে৷ দুপাশে থাকবে ঘন শ্বাসমূল যুক্ত ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ। সুন্দরী, গোলপাতা,গেওয়া গাছ এই বনে বেশী। প্রচুর হরিণের পায়ের ছাপ এবং নিশ্চুপ থাকলে হরিণের পাল দেখা যাবে।কাকড়ার পাল ছুটে লুকাবে আপনার চলার শব্দে। প্রায় ১ মাইল ট্রেইল ঘুরে জাহাজে ফিরে আসবো। জাহাজে ফিরে বিকালের নাস্তা। জাহাজ চলবে সাগরের মোহনায় অবস্থিত "কটকা অভয়ারণ্যে”র উদ্দেশে।
িন:
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে দেশী নৌকায় ক্যানেল ক্রুজিং এবং চুপ থেকে বনের নিস্তব্ধতা উপভোগ করবো৷ সেখান থেকে টাইগার ট্রি'র ঝোপ,হরিণের বিচরণের মাঠ এবং গভীর বন পেরিয়ে আড়াই কিলো দূরের জামতলা সী বীচে যাবো। উপভোগ করবো বাংলাদেশের দুই গর্ব "সুন্দরবন" এবং 'বঙ্গপোসাগর " এর মিলন স্থান। এরপরে যাবো কটকা অফিস পারে টাইগার টিলার উদ্দেশ্যে, কাঁদা,শ্বাস মূল আর ভয়ংকর গড়ান বন পেরিয়ে টাইগার টিলার অবস্থান।যাওয়ার পথে খুব কাছ থেকে হরিণের পাল দেখা যাবে। এরপর ফিরবো জাহাজে৷ জাহাজ যাবে "কচিখালি" অথবা হিরন পয়েন্টের উদ্দেশ্যে। "কচিখালিতে" গা,ছমছমে ছন বনের ভিতর দিয়ে হাঁটবো। হরিণের পাল মাথা উচু করে আপনাকে দেখেই ছুটে পালাবে এবং আপনি বুঝবেন কেনো এখানকে বাঘের ডাইনিং বলা হয়। ছমছমে অনুভবে ফিরবো শীপে। শীপে করে যাবো ডিমের চর।অসাধারণ সুন্দর এ সী বীচে থাকবো সন্ধার পর পর্যন্ত। অথবা "হিরন পয়েন্ট" এবং "দুবলার চর" দেখবো, তারপর ফিরবো জাহাজে। জাহাজ চলবে করমজলের উদ্দেশ্যে।
িনঃ
করমজলে নোনা পানির বাংলাদেশের একমাত্র কুমির প্রজনন কেন্দ্র। ছোট বড় কুমির, বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির কচ্ছপ, বানর, মায়াবী হরিণসহ বন্যপ্রাণী দেখে জাহাজে ফিরে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা।
সুন্দরবন ভ্রমণের করনীয় :
🌿জঙ্গলে, উজ্জল রঙ্গের কাপড় ( যা অনেক দূর থেকে চোখে পড়ে ) পরিহার করা। হালকা রঙের এবং ঢিলে ঢালা ফুল স্লিব পোশাক পরা।
🌿 জঙ্গলে কোন প্রকার সুগন্ধি ব্যবহার না করা।
🌿জঙ্গলে ভ্রমনে পিছনে বেল্ট আছে এবং পানিতে ভিজলে নষ্ট হবে না এমন সেন্ডেল / কেডস সাথে নিতে হবে। সু/ হাই হিল নিবেন না।
🌿 ট্যুরে লাগেজের সাইজ ছোট হওয়াই ভালো।
🌿জঙ্গলে উচ্চ স্বরে কথা বলা যাবে না এবং খুব প্রয়োজন না হলে কথা না বলেই ট্রাকিং করতে হবে।
🌿 পানি অপচয় না করা এবং খাবার পানি অন্য কোন কাজে ব্যবহার না করা।
🌿জঙ্গলে নামার পর সু-শৃক্ষল ভাবে হাটতে হবে এবং কোন অবস্থাতে দল ছুট হওয়া যাবে না।
🌿গাছের ডাল, পাতা বা লতায় হাত দেওয়া বা ছেড়া যাবে না।
🌿পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না। যেমন: পলিথিন বা প্যাকেজিং বস্তু যত্রতত্র ফেলা যাবে না।
🌿গাইড এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের নির্দেশনা মেনে চলা।
✔️সাথে কিকি রাখতে হবে: প্রয়োজনীয় ঔষধ, টুথ ব্রাশ ও পেস্ট, ক্যাপ,সান গ্লাস, সানস্ক্রিন লোশন, সাবান,শ্যাম্পু, রেইন কোর্ট বা ছাতা, ব্যাক্তিগত টাওয়াল এবং অভ্যাসের সামগ্রী।
⭕বি.দ্রঃ বনের গভীরে কিছু যায়গায় শুধু টেলিটক সিম মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে।
🌿 সুন্দরবন আমাদের অহংকার। সুন্দরবন ভ্রমণে আপনি আমন্ত্রিত!
💐যে কোন তথ্য জানার জন্য যোগাযোগ করুন
DISCOVER 𝗦𝗨𝗡𝗗𝗔𝗥𝗕𝗔𝗡
📱বুকিং হট লাইন 01314-478557
Email: [email protected]
🏢 Khulna office: H # 713, Mohammad Nagor main road, Gollamari, Khulna
🏢Dhaka office: H # 131, Flat-4C, Eskaton Plaza, New Eskaton Road, Romna, Dhaka.