30/07/2023
ছবিগুলো শ্রীপুর,শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি),বারিক্কা টিলা ও টাঙ্গুয়ার হাওড়ে আমার হাতে তোলা।।
সত্যি বলতে ভ্রমন কিংবা কাজে এজেন্সির চেয়ে নিজে উদ্যমী হয়ে মাঠে নামুন পরিপূর্ণ আনন্দে ভ্রমণ কিংবা কাজ সম্পন্ন হবে।
একদিকে ব্যয় হবে কম ভ্রমণ হবে বেশী,ইচ্ছেমতো প্রকৃতির স্পর্শে পূর্ণ স্বাধীনতায়।।
ট্যাকেরঘাটে ভ্রমনের এ সময়টা মূখ্য,যদি কেও ভ্রমণে যেতে চান কিন্তু ভালভাবে রাস্তাঘাট চিনেন না বলে সংশয় তাহলে লিখাটি বিস্তারিত পড়ুন-
ময়মনসিংহ থেকে সকাল ০৮ টার মাঝে নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে রওনা দিন-
সিএনজি ভাড়া-১০০
বাস ভাড়া-৭০
নেত্রকোনা পারলার/ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে গাড়ি আপনাকে নামিয়ে দিবে।
বাসস্ট্যান্ড থেকে অটো রিক্সা যোগে চলে যাবেন রাজুর বাজার মোড়ে,ভাড়া পড়বে ২০ টাকা।
রাজু’র বাজার মোড় থেকেই কলমাকান্দা সিএনজি স্টেশন থেকে সিএনজিতে চলে যাবেন কলমাকান্দা।
সিএনজি ভাড়া ১২০।
বাস ও মটর বাইকেও যেতে পারেন।
সেখান থেকে অটোরিকশায় করে যাবেন পুবের বাজার,ইটের ভাটা সংলগ্ন ট্যাকেরঘাট ট্রলার ঘাটে।
প্রতিদিন ১ টি ট্রলার ছেড়ে যায় তাই সময় নিয়ে আপনার গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রতিদিন দুপুর ১ টায় ট্রলার ছাড়বে ফলে আপনাকে ১২ টা কিংবা ১২.৩০ এর মাঝে ঘাটে থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
কলমাকান্দা থেকে ট্যাকেরঘাট ট্রলার ভাড়া ২০০ টাকা।
বলে রাখা ভাল,ট্রলারটি লোকাল হওয়ায় ২০,২৫ টি ঘাটে থামবে।যদিও ১/২ ঘন্টা বেশী লাগবে কিন্তু আপনি পর্যটক হিসেবে অতিরিক্ত আনন্দ ও সুন্দর স্থানগুলো অবলোকনের স্বাদ পাবেন।
যা অন্য কোনভাবেই সম্ভবপর নয়।।
কলমাকান্দা ঘাট থেকেই স্পষ্ট মেঘালয় দৃশ্যমান।
বিশরপাশা,জয়পুর,শ্রীপুর,নতুনবাজার এরকম অনেক সুন্দর সুন্দর স্থান আপনার চোখে ভাসবে।
জয়পুর থেকে শ্রীপুর পুরো পথটিতে টাঙ্গুয়ার হাওরের বিশাল জলরাশি আপনাকে সমুদ্র ভ্রমণের আনন্দে ভাসাবে।
মেঘালয় আর টাঙ্গুয়ার হাওরের মিলন মেলার সবচেয়ে ভালো সময় বিকাল ৫ টায়।
আর আপনার ট্রলার ঠিক এ সময়টাতে বিশেষ পথটুকু পাড়ি দিবে।
সন্ধা ৬.৩০ কিংবা ৭ টায় আপনি ট্যাকেরঘাটে নামবেন,এটাই শেষ ঘাট।।
এরপর জনপ্রতি ২০/৩০ টাকা দিয়ে বড়ছড়া বাজারে চলে যাবেন।
কিংবা ক্লান্ত না হলে প্রায় ১ কিলোমিটার হেঁটে যাবেন।
যাত্রা পথে দেশের প্রথম ট্যাকেরঘাট চুনা পাথর খনি প্রকল্প,শহীদ সিরাজ লেক( নীলাদ্রি লেক),মেঘালয়ের পাদদেশ চোখের দৃষ্টিতে অপরূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলবে।
বড়ছড়াতে কয়েকটি হোটেল আছে,তারমাঝে হোটেল নীলাদ্রি বেশ সুন্দর ও আন্তরিক।
৫০০,১০০০ এর মাঝে আপনি ভাল মানের রুম পেয়ে যাবেন।
রুম থেকে রাতে সোডিয়াম লাইটের আলোতে ভেসে থাকা মেঘালয়ের দৃশ্য, ঘন মেঘ বিশিষ্ট দৃশ্য, পাথর ভাঙ্গার দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন।
রাতে,সকালে ও দুপুরে বড়ছড়া শামীম ভাইয়ের হোটেলে খেতে পারবেন।
খুব ভালো সার্ভিস ও ফ্রেশ খাবার পাবেন।
সকালের নাস্তায়-৩০/৫০ টাকা
দুপুরে খাবার অনুযায়ী ৭০/১০০/১৫০/২০০ এর মাঝে খেতে পারবেন,রাতের বেলার খাবারও একই পর্যায়ের।।
পরদিন চেষ্টা করবেন ভোর ৭ টায় নাস্তা করে শিমুল বাগান,যাদুকাটা নদী,বারিক্কা টিলা,রাজৈই ঝর্ণা,সাদা পাথর দেখা শেষ করে সরাসরি চলে যাবেন লাকমাছড়াতে।মানে নীলাদ্রিতে থামবেন না।
লাকমাছড়া শেষ করে নীলাদ্রিতে এসে গোসল করতে পারেন।
অবশ্যই মনে রাখতে হবে ভাল সাঁতার না জানলে নীলাদ্রিতে লাফ জাফ করা আপনার বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে।
নীলাদ্রির গভীরতা অনেক বেশী।।
তবে কোমড় কিংবা বুক পানিতে গোসল করাটা স্বাভাবিক।।
এরপর ২.৩০ এ দুপুরের খাবার খাবেন,হোটেলে হালকা বিশ্রাম করবেন।
৪ টা থে ৬/৭ টা কিংবা তারও বেশী সময় নীলাদ্রীর পাড়ে আপনি সময় ব্যয় করুন,এখানে কয়েকটি সবুজ টিলা রয়েছে এগুলো নীলাদ্রির পাড় ঘেঁষেই অবস্থান।।
এরপর বড়ছড়াতে রাতের খাবার খেয়ে ব্যাগ ঘুছিয়ে ঘুম দিন।।
ভোর ৫ টা ৩০/৪৫ এ ঘুম থেকে উঠে হোটেল ছাড়ুন ভোর ৬ টার মাঝেই।
নিচে এসে ট্যাকেরঘাট ট্রলার ঘাট,যেখানে আপনি নেমেছিলেন সেখানে পৌঁছান।
ঠিক ৭ টায় ট্রলার ছাড়বে।
১ টি কলমাকান্দা আরেকটি মোহনগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে।।
ময়মনসিংহ টু কলমাকান্দা রাস্তা অনেক ভাল হওয়ায় এ রাস্তাটি ব্যবহারে আমি পরামর্শ দিব।
১২.৩০ এ কলমাকান্দা রুটের ট্রলার আপনাকে নামিয়ে দিবে ফলে কলমাকান্দায় দুপুরের খাবার খেয়ে চন্দ্রডিঙ্গা,পাঁচগাঁও টুরিস্ট প্লেস অনায়াসে ঘুরে এসে ৭/৮ টার মাঝে ময়মনসিংহে ফিরতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
যদি ট্রেন এ সময় মত টিকেট পান তাহলে মোহনগঞ্জ রুট ব্যবহার করতে পারেন যারা ঢাকা থেকে আসবেন।
আপনি কে বা কি করেন সেটা বড় কথা নয়,
কোনক্রমেই পরিবেশ নস্ট করবেন না,
স্থানীয় কালচারকে সম্মান করবেন,
আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করার ইচ্ছা মনে পোষণ করবেন না।।
সময়কে প্রাধান্য দিয়ে ইচ্ছে মতো প্রকৃতি উপভোগ করবেন,
সাথে পানি ও শুকনো খাবার রাখতে পারেন,
অবশ্যই সাথে বড় দেখে একটি ছাতা রাখবেন।।
তাহলে প্রকৃতি আর সৌন্দর্য আপনার চতুর্মূখী আনন্দে ভাসাবে।
লিখাঃ এম এ ওয়ারেছ বাবু (ভ্রমণ পিপাসুদের একজন)
১৮/১৯ বার ট্যাকেরঘাটে চতুর্মূখী স্থান দিয়ে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আছে সকল ঋতু কেন্দ্রীক।
গ্রীষ্ম কালে হাওড়ের মাঝ দিয়ে বাইক চালিয়ে অসম্ভব একটি ভ্রমণ,
শীত,বর্ষা,গ্রীষ্মে পাঁচগাঁও,মহিশখলা,বাগলী হয়ে ভ্রমণ,
সিলেট, সুনামগঞ্জ দিয়ে ভ্রমণ,
মধ্যনগর থেকে ট্রলার স্পীড বোটে ভ্রমণ,
মোহনগঞ্জ থেকে ট্রলারে ভ্রমন।।
স্থানীয়দের সাথে একটা সুবিশাল আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়েছে যা আমার ভ্রমণকে আরো সুবিশাল করেছে।।
ট্যাকেরঘাটে ভ্রমণে কোনরূপ বিভ্রান্তি কিংবা সমস্যা হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
গাইডলাইন কিংবা সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।।
ভ্রমণ শেষ করে ময়মনসিংহে এসে City Lab এ এসে চা,নাস্তা করে যাবেন।
হয়তো ভালো একটা আড্ডা হবে।।
যোগাযোগ করার প্রয়োজন হলে ভিজিট করুন-
www.waresbabu.com এ।।
City Adventure Travel's Admin Panel
বিঃদ্রঃ লিখা ও ছবি কেও ব্যবহার করলে লেখক ও ছবি শিকারীর নাম কিংবা ম্যানশন করে দিবেন এটা যাচিত ভদ্রতা।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।।