22/01/2023
স্বনামধন্য সঙ্গীত পরিচালক খন্দকার নুরুল আলম এর আজ ৮ম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।
খন্দকার নুরুল আলম একজন স্বনামধন্য বাংলাদেশী সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার। তিনি কণ্ঠশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রবেশ করলেও জনপ্রিয়তা লাভ করেন সঙ্গীত পরিচালনায়। দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে পরিচালনা করেছেন ছয়শতাধিক গান। চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য তিনবার বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়াও সঙ্গীতে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন।
খন্দকার নুরুল আলম ১৯৩৯ সালের ১৭ আগস্ট ভারতের আসামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নেসারউদ্দিন খন্দকার ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও মা ফাতেমা খাতুন। তার ছেলেবেলা কাটে আসামের গোয়ালপাড়ায়। ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়ে ১৯৫৪ সালে ঢাকায় এসে ভর্তি হন জগন্নাথ কলেজে। এরপর অধ্যয়ন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে। এখানে পড়াকালীন তার সুর ও সঙ্গীতে আগ্রহ জন্মে এবং তার সঙ্গীত প্রতিভার কথা ছড়িয়ে পড়ে।
খন্দকার নুরুল আলম তার কর্মজীবনের শুরু থেকে আছেন বাংলাদেশ বেতারের সাথে। ১৯৫৯ সালে বেতার আয়োজিত "নব মঞ্জুরী" নামক অনুষ্ঠান প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন। এতে অংশগ্রহন করেন সাবিনা ইয়াসমিন, শাহনাজ রহমতুল্লাহর মত শিশুশিল্পীরা। পরের বছর ১৯৬০ সালে তিনি গ্রামোফোন কোম্পানি হিজ মাস্টার্স ভয়েসে যোগ দেন। সেখান থেকে তৎকালীন নামকরা কণ্ঠশিল্পীদের গান বের হয়। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সুচনালগ্ন থেকেই আছেন। তার পরিচালিত "সুরবিতান" অনুষ্ঠানটি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল।
নুরুল আলম চলচ্চিত্রাঙ্গনে আসেন অগ্নিপরীক্ষা চলচ্চিত্রে "জীবন নদীর জোয়ার ভাটা" গানে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে। তার চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা শুরু হয় উর্দু চলচ্চিত্র দিয়ে। বাংলা চলচ্চিত্রে সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা শুরু করেন ১৯৬৮ সালে অন্তরঙ্গ ও যে আগুনে পুড়ি দিয়ে। যে আগুনে পুড়ি চলচ্চিত্রের "চোখ যে মনের কথা বলে" গানটি সে সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
চলচ্চিত্রের গান ছাড়াও নুরুল আলম আধুনিক গান, ফোক গান, দেশের গান, ও বিখ্যাত কিছু কবিতায় সুরারোপ করেছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় ক্রীড়া সঙ্গীত, স্কাউট মার্চ সঙ্গীত, আনসার-ভিডিপি দলের সঙ্গীত, রোটারি ক্লাবের বাংলা ও ইংরেজি উভয় গানের সুর করেন। গীত রচনা এবং গানের স্বরলিপি ও স্টাফ নোটেশন করার কাজও করেছেন নুরুল আলম।
খন্দকার নুরুল আলম ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের কিশোয়ার সুলতানার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই সন্তান। মেয়ে আমানি খন্দকার ও ছেলে আবীর খন্দকার।
তিনি ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি পরলোক গমন করেন।