23/07/2020
টিনটিনীয় উপলব্ধি সিরিজ - একটি Finding ফেলু নিবেদন
উপলব্ধি ২ - ড্রাগন ও ছিন্নমস্তা
------------------------------------------
ফেলুবাবু বললেন আজকাল যেমন ওয়েব সিরিজের ট্রেলার, টিজার বেরোয় দর্শকের মনে সুড়সুড়ি দেওয়ার জন্য তেমনি লেখার শুরুতে পাঠকদের একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিতে। তা আমার ধারণা এই প্রশ্নটা শুনে বেশির ভাগ পাঠকই মাথা চুলকাবেন .. তবুও
ফেলুবাবুর কথা, তাই জুড়ে দিলাম, বলুন তো দেখি পুন্ডরীক, কোকোনদ আর ইন্দীবর মানে কি?
ভনিতা ছেড়ে আসল কথায় আসি, ল্যান্ড অফ ব্ল্যাক গোল্ড পড়বার পর থেকে, এই বুড়ো বয়সে টিনটিনের গল্প ভালো লাগছে শুনে, তপেশ ভাই ফুল সেট পাঠিয়ে দিয়েছে আমায় ক্যুরিয়ার করে l
তারই একখানা নিয়ে সবে পাতা ওল্টাতে আরম্ভ করেছি, আর প্রথম ছবিটাই যাকে বলে উফ্... টিনটিন কি শেষমেষ আমাদের এই উত্তর কলকাতাতেও ঘুরে গ্যাছে নাকি মশাই। একটা মন্দিরের ছবি, দেখেতো আমার মনে হল রাজা দিনেন্দ্র স্ট্রিটের জৈন মন্দিরের আদলে আঁকা, এ্যাথেনিয়ামের তুলসী বাবু যখন কলকাতায় থাকতেন ( রিটায়ারমেন্টের পরে তো উনি গোঁসাইপুরে চলে যান) তখন গড়পাড় থেকে প্রায়ই হেঁটে হেঁটে যেতাম ওনার বাসায় ওই চা আর বেগুনি সহযোগে আড্ডার জন্য .. , তা ওই মন্দিরটা পেরিয়েই যেতে হতো তো... বইতে অবশ্য দেখছি জায়গাটার একটা অদ্ভূত নাম দিয়েছেন হার্জ সাহেব... গায়েপাজামা, ( আমি ভ্যাঙ্কুয়ারের ভ্যাম্পায়ার নাম দিলেই ফেলুবাবুর যতো সমস্যা অথচ দেখুন হার্জ সাহেবের নামকরণের স্টাইল ) ওখানকার মহারাজার অতিথি হয়ে রয়েছে টিনটিন l ফেলুবাবু অবশ্য ফোনে বললেন জৈন টেম্পেলগুলোর আর্কিটেক্চারের কিছু কমন ফিচার আছে, আর তাই হয়তো বইয়ের ছবি একই রকম লাগছে। ফেলুবাবু যাই বলুন না কেন, আমি বলছি আপনাদের.. দিস ইজ হাইলি সাসপিসাস... আমার বিশ্বাস হার্জ সাহেব এসেছিলেন আমাদের এই উত্তর কলকাতায়, আপনারা নিজেরাই পারলে দেখুন না ছবি গুলো (হ্যাঁ মশাই জানি এই লকডাউনের মধ্যে, রাজা দিনেন্দ্র স্ট্রিটে যাওয়া মুস্কিল, আর তাই তো Finding ফেলু টিমের ছেলে ছোকরারা ছবি জোগাড় করে এনেছে) ।
পাতা ওলটাতে ওলটাতে চোখ আটকে গ্যালো একটা ছোট্ট ছবিতে। একটা জাহাজের ছবি, টিনটিন উঠবে ওই জাহাজে.. কিমআশ্চর্যম জাহাজের নাম কিনা S S Ranchi , ছবিটা চোখের কাছে এনে দেখলাম হ্যাঁ ঠিকই দেখছি, গন্তব্য বোমবাই! আর সেই জাহাজ ছাড়ার পরেই টিনটিন পড়ল বোমবেটেদের খপ্পরে l বুঝুন ব্যাপারটা.. আমার তো ক্যামন একটা ইয়ে.. মানে ওই আর কি... তা রাঁচির কথায় মনে পড়লো সেবার আমরা থ্রি মাস্কেটিয়ার্স রাঁচির অ্যাম্বার হোটেলে এক রাত কাটিয়ে তারপর গেছিলাম হাজারিবাগ... তারপর তো সেই ছিন্নমস্তা নিয়ে... আপনারা সে খবর ভালো করেই জানেন l কিন্তু বলছি মশাই এ আমার কল্পনা শক্তি না টেলিপ্যাথি, রাঁচির থেকে ছিন্নমস্তার কথা মাথায় যেই এলো ওমনি দেখছি টিনটিনর বইতে ইয়া বড়ো এক তরওয়াল দিয়ে এক বিচ্ছু টিনটিনের মস্তকটাই ছিন্ন করার চেষ্টা করছে, বলে কিনা 'I only have to cut your head off!'... তা টিনটিনেরওতো মগজাস্ত্র ফেলুবাবুর মতোই তীক্ষ্ম, আর কাজেই ছিন্ন মস্তক করা কি এতই সোজা।
আমি তো এদিকে টিনটিন আর আমাদের অ্যাডভেঞ্চারের মিল বের করার খেলায় মেতে উঠেছি, ফ্ল্যাশব্যাকে মনে পড়লো আমাদের কাহিনীর মহেশ চৌধুরীর সংকেতের সাহায্যে কথা বলার অভ্যাস, ওনার ডায়েরির নানান হেঁয়ালি সমাধান করেই তো ফেলুবাবু সেবার কেল্লাফতে করলেন। আর কি কাকতালিও ব্যাপার... গল্পের টিনটিন ও কিন্তু সংকেত উদ্ধার করেই খোঁজ পেয়ে গ্যালো সাংঘাইয়ের কুখ্যাত আফিঙের আড্ডা l
কি এইবারে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন কোন বইটা দেখছি আমি, হে হে ঠিকই ধরেছেন দ্যা ব্লু লোটাস্... তাহলে এই বারে ঝটপট বলে ফেলুন দেখি ফেলুবাবুর দেওয়া ট্রেলারের প্রশ্নখানা।
আর একটা কথা বলে আজকের মতো শেষ করি, আমি কিন্তু আরো কয়েকটা অদ্ভূত মিল খুঁজে পেলাম আমাদের ছিন্নমস্তা অভিযান আর টিনটিনের ইন্দীবর-এ... এই দেখেছেন ছি ছি মুখ ফসকে.. বলেই ফেললাম l
ঠিক আছে আর কোনো কথা নয়.. বাকি মিল গুলো খুঁজে পেলে জানাবেন আমাকে... আর একটা প্রশ্ন ওই যে জাহাজের নামের শুরুতে S S, ওইটা কি কিছু জানেন.. খোঁজ পেলে একটু প্লিজ জানাবেন.. সব কিছু কি আর ওনাকে জিজ্ঞেস করা যায়?
আর কোনও প্রশ্ন নয়। খালি একটা কথা, তপেশ ভাই বলছিল ছিন্নমস্তা নাকি ওয়েব সিরিজ হচ্ছে, তা কবে দেখাবে জানেন নাকি আপনারা? ইশ দেখেছেন আবার প্রশ্ন করে ফেললাম.. ছি ছি.. তবে কি জানেন ফেলুবাবু কে নিয়ে প্রশ্ন করাই যায়, কি বলেন আপনারা?