01/10/2024
“ আল্লাহর প্রিয় বান্দারা!
এই ঘটনা শুধু একটি পত্রিকার ঔদ্ধত্য আর বেয়াদবির নয়, বরং এটা তাদের সারা দেশ, তাদের সকল পত্রিকা, রাণী, প্রধানমন্ত্রী সবার।
তাে এরপর আর কি?
আর কিসের জন্য আমরা বসে আছি?
এই পেটমােটা আরব সরকারগুলাে তাদের নেতা ও রাজাদের নিয়ে আত্মঅহংকার করে।
অথচ মানবজাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানকে নিয়ে এদের কোনাে আত্মসম্মানবােধ নেই!
কি মনে করেন আপনি?
যদি এদের একটা আরব রাজার ছবিও এভাবে আঁকা হতাে?
কিংবা এই নেতাগুলাের ছবি?
আমি এর উত্তর আপনাদের উপর ছেড়ে দিলাম।
ইয়া উম্মাতে মুহাম্মদি!
ইয়া উম্মতে মুহাম্মদি!
হে উম্মাহ!
আদমের শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা!
তােমাদের নবীর সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে, আর তােমরা করছােটা কি!
তােমরা দুধ খাওয়া ছেড়ে দেবে?
নিডাে, ডেনিশ লুপার্কের মাখন?
তােমরা কি কেবল এতটুকু করতে পারাে?
তাহলে শােন, সত্যবাদীদের আবেগময় গল্প শােনঃ
হুদায়বিয়া সন্ধির দিনে, কুরাইশেরা উরওয়াহ বিন মাসউদকে পাঠালাে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আলাপ-আলােচনা করার জন্যে।
সে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললাে,
- ‘কুরাইশরা বাঘের চামড়া পড়ে বসে আছে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর শপথ করে বলছে, তুমি জোর খাটিয়ে মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না।’
সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আরাে ভয় দেখালাে,
‘ওয়াল্লাহি!
একবারের জন্যে কি নিজের অবস্থা চিন্তা করে দেখেছাে?
আজকে যারা তােমার সঙ্গে আছে, এরা যে কালকে তােমাকে ছেড়ে দেবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে?
তখন তােমার কী হবে চিন্তা করেছাে?’
আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাশেই ছিলেন।
তিনি উত্তর করলেন,
‘লাতের ( মুশরিকদের কল্পিত নারী দেবী ) ঝুলন্ত চামড়া চুষতে থাক!
আমরা তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব?’
( সহিহ বুখারি )
উরওয়াহ অবাক হয়ে জানতে চাইল,
‘হে মুহাম্মদ!
এই লােকটি কে?’
তিনি জবাবে বললেন,
‘( আমার আব্বা - আম্মা তাঁর জন্যে কুরবান হােক ) তিনি হচ্ছেন কুহাফার পুত্র আস - সিদ্দিক!’
এরপর পাপাচারী উরওয়াহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাড়ি মােবারক ধরে টান দেওয়ার জন্যে হাত বাড়াল।
মুগীরা বিন শুবাহ রাদিয়াল্লাহ তখন পাশে দাঁড়ানাে, তিনি আপাদমস্তক লােহার বর্ম পড়েছিলেন। কেবল তাঁর দুটি চোখ দেখা যাচ্ছিলাে।
যখন ঐ পাপাচারী হাত সামনে বাড়ালাে, তখন মুগীরা রাদিয়াল্লাহু আনহু তরবারির খাপ দিয়ে তার হাতে আঘাত করলেন, আর তাকে শুনিয়ে দিলেন -
‘তাের হাত সামলে রাখ, আল্লাহর রাসূলের দাড়ির থেকে তাের হাত সামলে রাখ, নইলে এই হাত আর তাের শরীরে ফেরৎ যাবে না।’
উরওয়াহ বললাে,
‘আরে মর তুমি!
তােমার এতাে ক্ষিপ্ত হওয়ার আর রেগে যাবার কারণ কি?’
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাঁসি দিলেন।
তখন উরওয়াহ বললো,
‘হে মুহাম্মাদ!
এ আবার কে?’
তিনি ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বললেন,
‘সে তােমার আপন ভাইয়ের ছেলে , মুগীরা বিন শুবাহ।’
কোনাে সম্পর্ক নাই!
কোনাে গােত্রপ্রীতি নাই!
তৎকালীন আরবসমাজ, যারা একজন লােকের জন্যও গােত্রে গােত্রে মারামারি করতাে, যুদ্ধ করতাে সেখানে এ এক অকল্পনীয় ব্যাপার!
তিনি এমন ওযু করে অভ্যস্ত ছিলেন না, যখন সাহাবিরা তাঁর ওযুর গড়িয়ে পড়া পানি ছুঁয়ে নিজেদের শরীরে মাখার জন্য প্রায় ঠেলাঠেলি, মারামারি করার উপক্রম হতো। সেই পানি তারা নিজের মুখে ও শরীরে মাখতেন।
তাঁর একটি চুল কিংবা দাড়ি যদি ছিড়ে পড়তাে, তবে তা মাটিতে পড়ার আগে সাহাবাদের হাতের উপর পড়তাে।
হুদায়বিয়ার দিনে বােঝাপড়া করতে এসে উরওয়াহ এই দৃশ্যগুলাে দেখে গেলাে।
সে কুরাইশদের কাছে ফিরে গিয়ে কি বলেছিলাে?
সে বললাে,
‘আমি খসরু ( কিসরা ) কে তার নিজের প্রাসাদে দেখেছি। আরও দেখেছি সিজার এবং নাজ্জাসীকেও। তাদের নিজ নিজ রাজত্বে।
ওয়াল্লাহি!
আমি এমন কোনাে ঘটনা দেখিনি, যেমনটা দেখেছি মুহাম্মদের ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) সাথীদের মাঝে।
আমি এমন এক জাতিকে দেখেছি, যারা কস্মিনকালেও তাঁকে অমান্য করে না।
কাজেই এই লােকদের সঙ্গে কি আচরণ করবে, আর কি সিদ্ধান্ত নেবে তা তােমরা ভালাে করে ভেবে দেখো।’
এই ছিলাে তাঁদের আত্মসম্মানবােধ!
এই ছিলাে তাদের মর্যাদার অনুভূতি।
আজকে কোথায় আমাদের আত্মসম্মান?
আমরা সেই সুন্নাহ থেকে কত দূরে সরে আছি?
কোথায় সেই হেদায়েতের পথ?
তাঁর শিক্ষাকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ কোথায় করছি আমরা? ”
- শাইখ খালিদ আর রাশিদ ফাক্কাল্লাহু আসরহ
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও মানহায প্রচারের উদ্দেশ্যে সালফে সালেহীনদের মহা মূল্যবান মনিমুক্তার অনুবাদ সমূহের সম্ভার। { ব.....