09/08/2017
বর্তমান সময়ের হালের ক্রেজ #মেঘালয়, #শিলং, #চেরাপুঞ্জি, #সোনাংপেডাং গ্রাম ঘুরে আসলাম জনপ্রতি মাত্র ৫০০০ রুপি/ (৫০০০*১.২৮) ৬৪০০ টাকায়।
*টুর সদস্য সংখ্যা অবশ্যই ০৪ জন হতে হবে।
*নিচের খরচের বর্ননায় ই-টোকেন, ভিসা ভি, ট্র্যাভেল ট্যাক্স, তামাবিল বর্ডারে যাওয়া-আসার খরচ include না।
আমরা ৪ বন্ধু গতো ২৮ জুন তামাবিল বর্ডার দিয়ে ভারতে প্রবেশ করি দুপুর ১২ টার দিকে। তবে আমরা খুব ভোরেই তামাবিল পৌছে যাই, কিন্তু আমাদের ট্রাভেল ট্যাক্স না দিয়ে যাওয়ার কারনে ১৫০০ টাকা ঘুষ আর ৩ ঘন্টা সময় নষ্ট হয়।
যাইহোক, ১২ টায় ভারত প্রবেশ করার পর ১০ মিনিটেই মধ্যেই ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ হয়ে যায়, শুধু ডলার সাথে না থাকার কারনে ভারতিয় পুলিশ আমাদের ১০ মিনিট আটকিয়ে রাখে, পরে একটু রিকুয়েস্ট করাতে ছেড়ে দেয়। আপনারা যারা যাবেন, অবশ্যই ডলার সাথে নিয়ে যাবেন।
জনপ্রতি ৫০০০ রুপির খরচ টা এখান থেকেই শুরু।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্রগ্রাম থেকে ট্রেন বা বাস এ সিলেট
ঐখান থেকে তামাবিল
Friday
১ম দিন আপনারা ঘুরবেন ডাওকি ব্রিজ, ওমক্রাম ঝরনা, বোরহিল ঝরনা(পাইন্তমাই ঝরনা) মাওলিং ভিলেজ, লিভিং রুট ব্রিজ, এর নিচে ১টি ঝরনাও আছে আর শিলং শহর।
তামাবিল বর্ডারেই অনেক ট্যাক্সি দারিয়ে থাকে, সুজুকি কার, কোথায় কোথায় যাবেন বলে ভাড়া ঠিক করে নিন, ভাড়া ২৫০০ থেকে ২৭০০ রুপি; আমাদের ২৭০০ রুপি পরেছে। চাইলে হুসাইন নামে এই ড্রাইভার কে আগে থেকেই ঠিক করে রাখতে পারেন, নাম্বার- +91 9863072266; রিন্টু পাল- +919402504004, লোক ভালো, বর্ডারে গাড়ি নিয়ে দারিয়ে থাকবে। কমেন্ট এ গাড়ি, ড্রাইভারের ছবি দেওয়া হলো।
ট্যাক্সি নিয়ে এবার যাত্রা শুরু করুন, যাত্রা পথেই দেখতে পাবেন ডাওকি বাজার, ডাওকি ব্রিজ। ও হে, ডাওকি বাজারে দাড়িয়ে দিদির দোকান থেকে ডলার-টাকা ভাংতি করে রুপি করিয়ে নিন, দিদি ভালো রেট দেয়। এর কিছু দূর পর পেয়ে যাবেন ওমক্রাম ঝরনা। তার কিছুদূর পর পাবেন বোরহিল ঝরনা। এরপর ঘন্টা খানিক যাবার পর পৌছাবেন মাওলিন ভিলেজ। এখানেই সেই লিভিং রুট ব্রিজ। জন প্রতি ১০ রুপি দিয়ে টিকেট করে সিরি ধরে নিচে নামতে থাকুন, পেয়ে যাবেন লিভিং রুট ব্রিজ। লিভিং রুট ব্রিজের নিচ দিয়েই বয়ে গেছে ১ টি ঝরনা, একটু নিচের দিকে গেলেই আরো ভালো ভাবে ঝরনা টি দেখতে পারবেন।
ঝরনা, ব্রিজ দেখে উপরে উঠে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। ভেজিটেবল অথবা মুরগি দিয়ে ভাত খেয়ে নিন। ভাত খেয়ে এবার শিলং এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করুন, পথে পাহারি আকা-বাকা রাস্তা আর মেঘের খেলা দেখে আপনি মুগ্ধ হবেন, ড্রাইভার কে আগেই বলে রাখবেন উচু পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি দার করিয়ে যেন আপনাদের মেঘ উড়ে যাওয়া দেখায়। মেঘ- পাহাড় দেখে আবার শিলং এর পথে যাএা শুরু করুন। সন্ধের মধ্যে পৌছে যাবেন শিলং।
এবার হোটেলে উঠার পালা। আমরা ছিলাম হোটেল HillStar এ। কমেন্ট এ হোটেলের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দেওয়া হলো। ৪ জনের রুমের ভাড়া ১৩৬০ রুপি। আমরা শিলং শহরে লেট করে যাবার কারনে ৪ জনের রুম টি ফাকা পাইনি, আমাদের ২২০০ রুপি দিয়ে ৬ জনের রুম নিতে হয়েছিলো। পরের দিন ২ জনের ক্যাপাসিটির ২ টি রুম নিয়ে ছিলাম, ভাড়া ৭৫০ রুপি করে। হোটেল টি খুব ভালো বলবো না, কিন্তু চীপে থাকার জন্য ভালো; শুধু ওয়াই ফাই সুবিধে নেই।
রাত ৮ টা মধ্যে রাতের খাবার খেতে যাবেন, কারন শিলং শহরে ৮ টার পর সব বন্ধ হয়ে যায়।
Saturday
২য় দিন- এই দিন যাবেন চেরাপুঞ্জি, দেখতে পাবেন সেভেন সিস্টার ফলস, নোহকলিকাই ফলস, ডাবল ডেকার লিভিং রুট ব্রিজ, ইকো পার্ক, মৌসুমি গুহা, ওয়াহ কাবা ফলস।
খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে শিলং এর ষ্ট্রীট ফুড দিয়ে নাসতা করে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যান চেরাপুঞ্জির দিকে, এইদিন গাড়ি ভাড়া নিবে ২০০০ রুপি। ওয়াহ কাবা ফলস দেখতে জনপ্রতি ০৫ রুপি টিকেট লাগবে, নোহকলিকাই ফলস দেখতে জনপ্রতি ২০ রুপি আর মৌসুমি গুহা দেখতে জনপ্রতি ২০ রুপির টিকেট লাগবে। ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকলে আরো ১০ রুপি গুনতে হবে এবং গাড়ি পার্কিং চার্জ ২০ রুপি।
সেভেন সিস্টার ফলস আর নোহকলিকাহ ফলস দিনের অধিকাংশ সময় মেঘে ঢাকা থাকে, মেঘ দেখে নিরাস হয়ে ফিরে যাবেন না, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন, মেঘ একটা সময় হুট করেই সরে যাবে আর দেখতে পাবেন সেই ঝরনা!
দুপুরে মৌসুমি গুহা দেখে ওই খানেই খেয়ে নিন, খরচ হবে জনপ্রতি ৮০-১২০ রুপি।
সন্ধার মধ্যে সব ঘুরে ফিরে চলে আসুন শিলং শহরে, কিছু কেনার থাকলে ৮ টার মধ্যে কিনে নিন।
Sunday
৩য় দিন- এই দিন দেখবেন ওয়ার্ড'স লেক, অল সেইনটস চার্চ, মদিনা মসজিদ, এলিফেনট ফলস, সোনাংপেডাং।
সকালে খেয়ে হোটেলে থেকে চেক- আউট করে ট্যাক্সি নিয়ে বের হয়ে পরুন। এই দিন রাতে থাকবেন সোনাংপেডাং এ। ও, এলিফেনট ফলস দেখতে গুনতে হবে জনপ্রতি ২০ রুপি।
দুপুরে পথে কোথাও অথবা ডাওকি বাজারে খেয়ে নিন, খরচ ৮০-১২০ রুপি।
সব ঘুরে সোনাংপেডাং এ যেতে যেতে বিকেল হবে। সোনেংপেডাং এ মানভার কটেজ এ থাকতে পারেন, ভাড়া ১০০০-১৫০০ রুপি, ফোন নাম্বার- +91 9615762788, কমেন্ট এ কটেজের নাম্বার দেয়া হলো। বিকেলে সোনাংপেডাং এর সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর শীতল পানিতে গোসল করে নিন। রাতে কটেজেই খেয়ে নিন, খরচ হবে ৮০-১০০ রুপি।
Monday
পরের দিন সকালে কটেজের কাছেই দোকান আছে, বুট-খিচুরি, চা খেয়ে নিন, খরচ হবে ২০-৩০ রুপি।
এরপর সোনাংপেডাং এর আসে-পাশে ২ টি ঝুলন্ত ব্রিজ, পাহাড়, নদী দেখে সময় কাটান।
এরপর ১টি গাড়ি ঠিক করুন ক্রাং সুরি ফলস হয়ে ডাওকি বর্ডার, ভাড়া নিবে ১১০০ রুপি। কটেজ মালিক কে বললেই গাড়ি ঠিক করে দিবে। ক্রাং সুরা ফলস যেতে সময় লাগবে ২ ঘন্টা। ফলস দেখতে খরচ হবে জনপ্রতি ২০ রুপি।
ফলস দেখে ৩-৪ টার দিকে চলে আসুন ডাওকি বাজারে,দুপুরের খাবার খেতে খরচ হবে ১০০-১২০ রুপি। বিকেল ৫ টার মধ্যে বর্ডার পার হয়ে চলে আসুন বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ Arrival শীল দেবার জন্য আবার আপনার কাছ থেকে ১০০-২০০ টাকা ঘুষ খাবে।
সোমবার রাতে বাস বা ট্রেন চট্রগ্রাম এবং মঙ্গল বার সবার অফিস করতে পারবে।
৪ জন ৮ জন ১২ জন
#এবার আসি টোটাল খরচের কথায়- তিন দিনের হোটেল ভাড়া: ১৩৫০+১৩৫০+১৫০০= ৪২০০ রুপি। ট্যাক্সি ভাড়া চার দিনের: ২৭০০+২০০০+৩০০০+১১০০= ৮৮০০ রুপি।
৪ দিনের ট্যাক্সি ভাড়া আর হোটেল ভাড়া টোটাল- ১৩০০০ রুপি, বাকি ৭০০০ রুপির মধ্যে চার দিনের খাওয়া, ঘোরা, লোকেশন ইন্ট্রি টিকেট এইসবে খরচ করুন, চাইলে আরো কম খরচ করতে পারবেন।
বি:দ্র:- আমার বাংলা বানানে কোথাও ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
কৃতজ্ঞতা
Farid Sarker Sajeeb