20/02/2021
২০২১ বরণ ও ২০২০-এর বিদায়কে ঘিরে কক্সবাজারে এসেছিলেন বিপুল সংখ্যক পর্যটক। তারপর থেকে সৈকতে তেমন একটা লোকসমাগম ছিল না। কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে এসেছেন কয়েক লাখ পর্যটক। এতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই বিশ্বের দীর্ঘতম এই সৈকতে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই আগাম বুকিং হয়ে আছে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল-রিসোর্টের সবগুলোই। এসব হোটেল-রিসোর্টে দেড় লাখ মানুষের রাত যাপনের সুযোগ থাকলেও বাকি পর্যটকরা রাতে কোথায় থাকবেন তা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশের টিম। মোতায়েন রাখা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে পর্যটন স্পটগুলো। ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত সাধারণ চিকিৎসা ও খাবার পানির ব্যবস্থা রয়েছে সৈকতে।
ঢাকার উত্তরা থেকে আসা পর্যটক আমিন উদ্দিন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন কোথাও যাওয়া হয়নি। তাই টানা বন্ধ পেয়ে বাড়ির সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। এত লোকসমাগম হবে, কল্পনাও করতে পারিনি।’
হোটেল হোয়াইট অর্কিডের মহাব্যবস্থাপক রিয়াদ ইফতেকার বলেন, ‘শীত মৌসুম শেষ হয়েছে। ফাগুনের শুরুতে টানা তিনদিনের ছুটি পেয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে। সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের সবই আগাম বুকিং হয়ে গেছে।’
কলাতলীর মোহাম্মদীয়া গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হোটেল-মোটেলে যে পরিমাণ ধারণ ক্ষমতা, তার চেয়ে লোকসমাগম অনেক বেশি বলে মনে হচ্ছে। রুম বুকিং করে যারা এসেছেন, তারা ছাড়া বাকিরা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। কারণ দেড় লক্ষাধিক মানুষের থাকার ব্যবস্থা থাকলেও কক্সবাজারে ৪-৫ লাখ পর্যটকের আগমন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, ‘কক্সবাজারে প্রচুর লোকজন এসেছে। আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রোধে চেষ্টা চালাচ্ছি। যে কোনো ধরনের হয়রানি রোধে জেলা প্রশাসনের দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালত হোটেল-মোটেল জোনে টহলে রয়েছে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘পর্যটক নিরাপত্তায় সৈকত ও আশপাশে পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে পর্যটকদের নিরাপত্তায়। সৈকতে বীচ বাইক নিয়েও রয়েছে টহল। রয়েছে ৩টি বেসরকারি লাইফ গার্ড সংস্থার অর্ধশতাধিক প্রশিক্ষিত লাইফগার্ড কর্মী। কন্ট্রোল রুম, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ পুরো সৈকত পুলিশের নজরদারির আওতায় রয়েছে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের সেবা দিতে প্রশাসন সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকে। সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্যকেন্দ্র। পর্যটকদের করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সর্বদা সচেতনতামূলক মাইকিং ও প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।’
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবসময় সর্তকাবস্থায় রয়েছে পুলিশ। পর্যটকদের হয়রানি রোধে, পোষাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকে এবং পর্যটক বেশেও পুলিশের নারী সদস্যরা সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
২০২১ বরণ ও ২০২০-এর বিদায়কে ঘিরে কক্সবাজারে এসেছিলেন বিপুল সংখ্যক পর্যটক। তারপর থেকে সৈকতে তেমন একটা লোকসমাগম ছিল...