23/09/2021
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কম্পিউটার ম্যালওয়্যারে বাংলাদেশেও ব্যক্তিগত কম্পিউটার আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
র্যানসমওয়্যার এমন একটি ম্যালওয়্যার যা ব্যবহারকারী বা কোন প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে প্রবেশ করে সেই ব্যাবহারকারীর বা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারের সব ডেটা এনক্রিপ্ট করে দেয়, যা পরবর্তীতে আর ব্যবহার যোগ্য থাকে না। কিছুটা লক করার মতো হলেও এরচেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর। ডেটা এনক্রিপ্টেড হওয়ার পর ভিকটিমের কাছে বিট কয়েনের মাধ্যমে টাকা চাওয়া হয় যাকে বলা হয় র্যানসাম-পে। হ্যাকারদের সাধারণত ম্যাসেজ থাকে যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দেন তবেই আপনার ডাটা ডিক্রিপ্ট বা আনলক করা হবে, অন্যথায় ডাটা আর ফেরত পাবেন না।
সাধারণত কম্পিউটার ব্যবহারকারী যদি কোনও স্প্যাম ইমেইল থেকে কোনও সন্দেহজনক ওয়েবসাইট অথবা অ্যাটাচ ডকুমেন্টে ক্লিক করেন, তবে র্যানসমওয়্যার আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে আক্রান্ত কম্পিউটারের ফাইলে প্রবেশ করা যাবে না। ফাইলে ঢুকতে অর্থ দাবি করা হচ্ছে। র্যানসমওয়্যার ম্যালওয়ারটি নেটওয়ার্কে যুক্ত অন্য উইন্ডোজ সিস্টেম স্ক্যান করে এবং যে সিস্টেমে এমএস ১৭-০১০ প্যাচ দেওয়া নেই সেই সিস্টেমকেও সংক্রমিত করে।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ডেটা রেগুলার ব্যাকআপ নেওয়া এবং নিরাপদে অন্য স্থানে সংরক্ষণ করা। উইন্ডোজ সিস্টেমে এমএস ১৭-০১০ প্যাচ হালনাগাদ করা। সব সময় উইন্ডোজ আপডেট রাখা এবং অপরিচিত কিংবা সন্দেহজনক ওয়েবসাইটে ক্লিক না করা।
র্যানসমওয়্যারে কম্পিউটার আক্রান্ত হলে দেখা যাবে কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভের সব ফাইল এনক্রিপ্ট হয়ে গেছে এবং সেটি খুলতে অর্থ দাবি করা হচ্ছে। এজন্য,উইন্ডোজ সিস্টেম আপটেড রাখা এবং সিকিউরিটি সফটওয়্যার ব্যবহার করা নিরাপদ। একইসঙ্গে অপরিচিত মেইলে সংযুক্ত ফাইল খোলা ও ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের ব্যাকআপ রাখলে ঝুঁকিমুক্ত থাকা সম্ভব।
র্যানসামওয়্যার রোধে করণীয়:
১। জরুরি ডাটা ব্যাকআপ রাখা। যাতে করে র্যানসমওয়্যার অ্যাটাক হলে ডিভাইসের সব ডাটা মুছে ফেলে ডাটা পুনরুদ্ধার করা যায়। সেটা হতে পারে ক্লাউড ব্যাকআপ বা অন্য আলাদা ড্রাইভ যেটি সবসময় কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকে না।
২। ক্র্যাক করা সফটওয়্যার ব্যবহার না করা।
৩। অপারেটিং সিস্টেমসহ অ্যান্টিভাইরাস ও সফটওয়্যার সবসময় আপডেট রাখা।
৪। অথেনটিক সোর্সের বাইরে থেকে আসা স্প্যাম মেইল ওপেন করা যাবে না, পাশাপাশি নতুন প্রাপ্ত মেইলগুলোর ইমেইল অ্যাড্রেস যাচাই করতে হবে।
৫। অ্যাডাল্ট ও পর্ণ সাইট ভিজিট করা যাবে না। উল্টাপাল্টা অ্যাড লিঙ্ক ক্লিক করা যাবে না।
৬। অ্যান্টিভাইরাসের রিয়েল টাইম প্রোটেকশন ও অ্যাকসেস কনট্রোল সার্ভিসটি সবসময় সচল রাখা।
৭। সি-ড্রাইভসহ প্রতিটা ড্রাইভের সিস্টেম প্রোটেকশন অন রাখতে হবে।
৮। র্যানসমওয়্যার আক্রান্ত ডিভাইসটিকে নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন (আইসোলেট) রাখতে হবে, যাতে করে অন্য ডিভাইসে ছড়িয়ে না পরে।
৯। পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করা যাবে না, যদি জরুরি কাজে করতেই হয় তবে ভিপিএন কানেক্ট করে ব্যবহার করুন।
১০। কর্পোরেট কোম্পানি ও ব্যবসার জন্য ফায়ারওয়্যাল, ফাইল ও মেইল সার্ভার স্ক্যানার ব্যবহার করুন।
১১। যেকোন ইউএসবি ডিভাইস কম্পিউটারে সংযুক্ত করা যাবে না।
১২। বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোথাও থেকে কিছু ডাউনলোড করা যাবে না।
সর্বোপরি, নিজে সচেতন থাকা ও অন্যকে সচেতন করার মাধ্যমে যেকোনোধরনের সাইবার ঝুঁকি থেকে অনেকাংশেই নিরাপদ থাকতে পারবেন।
আপনি যদি ইতোমধ্যে র্যানসমওয়্যারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে করণীয়:
১। https://id-ransomware.malwarehunterteam.com/ সাইটটি ভিজিট করে চেক করুন যে আপনি কোন র্যানসমওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন।
২। কোন র্যানসমওয়্যারের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন তা সনাক্ত হওয়ার পর সে অনুযায়ী রেকমেন্ডেড ডিক্রিপ্টার ডাউনলোড করুন। যদি অফলাইন Key ব্যবহার করা হয় তা হলে সহজেই ফাইল ডিক্রিপ্ট করা সম্ভব না হলে নয়।
৩। তাই ফাইল ব্যকআপ নিয়মিত করুন এবং সচেতন হোন।
ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন। নিরাপদে থাকবেন।
- মুক্তাদির। এএ ঢাকা নেটওয়ার্ক।
Upload a ransom note and/or sample encrypted file to identify the ransomware that has encrypted your data.