24/08/2024
উদ্ধারকারীদের জন্য সতর্কতাঃ
১। আপনাকে সাতার জানতে হবে, নতুবা যাবেন না, এটা সুইমিং পুল না।
২। সেইফটি হেভি এডাল্ট লাইফ জ্যাকেট পরে যাবেন, যাতে আপনার ওয়েট অনুযায়ী ভেসে থাকতে পারেন।
৩। নৌকা,ট্রলার ও স্পিডবোট চালানোর জন্য অভিজ্ঞ চালকদের নিয়ে যাবেন যাতে তীব্র স্রোতের গতি কন্ট্রোল করতে পারেন। অনভিজ্ঞ কাউকে নিয়ে গেলে দুর্ঘটনা নিশ্চিত।
৪। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফুয়েল নিয়ে যাবেন। বন্যা দুর্গত এলাকায় আপনি ফুয়েল কিনতে পাবেন না।
৫। নিজেদের জন্য পর্যাপ্ত শুকনা খাবার ও পানি,স্যালাইন সাথে রাখবেন।
৬। যেই এলাকায় উদ্ধারে যাবেন সেখানের একজন স্থানীয় লোক সাথে নিয়ে যাবেন নতুবা আপনি হারিয়ে যেতে পারেন।
৭। স্পিডবোট, নৌকা কিংবা ট্রলারের সাইজ অনুযায়ী একটা দলে সর্বনিম্ন ৪ জন এবং সর্বোচ্চ ৮ জনের বেশি যাবেন না। বিষয়টাকে কোনভাবে এডভেঞ্চার কিংবা ট্যুর মনে কইরেন না।
৮। টর্চ লাইট ও মোটা দড়ি সাথে রাখবেন, প্রয়োজন হতে পারে।
উপরের বিষয়গুলো আপনাদের সক্ষমতার বাইরে থাকলে আপনারা উদ্ধার কাজে যাবেন না, শেষে আপনাদের উদ্ধারে আরেক দলকে যেতে হবে।
ত্রাণসামগ্রী বিতরণকারীদের জন্য সতর্কতাঃ
১। সামান্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বন্যা দুর্গত এলাকায় আপনাদের সরাসরি না যাওয়াই উত্তম। আপনার ত্রাণ সামগ্রী নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন।
২। ছোট পিকআপ ভ্যান নিয়ে যাবেন না, জায়গা মতো পৌছাতে পারবেন না। মাঝারি কিংবা বড় সাইজের পিকআপ/ট্রাক ব্যবহার করুন। গতকাল ফেনীতে দেখেছি অনেক গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তায় যানজট আরও তীব্র হয়েছে এগুলোর কারণে।
৩। ত্রাণ কার্যক্রমে শখে কেউ যাবেন না। রাস্তায় আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হবে, পাশাপাশি অযথা টাকা অপচয়। আপনার জার্নির টাকাটা ত্রাণ কাজে দিয়ে দেন। এটাই হবে আপনার সত্যিকারের সহযোগিতা।
৪। ত্রাণ বিতরণকারীরা নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা আগে থেকেই করে যাবেন, বন্যা দুর্গত এলাকায় কিছুই পাবেন না। একফোঁটা খাবারের পানিও না। গতকাল এমনও দেখেছি ত্রাণ বিতরণকারীরাই শেষে ত্রাণের সন্ধান করেছে।
৫। অন্যান্য এলাকার খবর জানি না। ফেনী এলাকায় বিদুৎ নেই, ইন্টারনেট বন্ধ। মোবাইল নেটওয়ার্কও কখনো পায়,কখনো পায় না। ত্রাণ দেওয়ার নামে ফুটেজ খাইতে কিংবা লাইভ করার চিন্তাভাবনা নিয়ে কেউ এখানে আইসেন না।
গতকাল ফেনীর বন্যা দুর্গত এলাকায় মহাসড়কে আটকা ছিলাম প্রায় ২০ ঘন্টা। বাস্তবতা যতটুকু দেখেছি তার অল্প বিস্তর তুলে ধরলাম।
ফেনী এলাকায় মহাসড়কে আটকা পড়া হাজার হাজার যাত্রী বন্যার্তদের থেকেও বেশি কষ্টে আছে। খাবার নাই, মোবাইলে চার্জ নাই, নেট নাই,যোগাযোগের অন্য কোন মাধ্যম নাই,ফিরে যাওয়ার পথ নাই,ওয়াশরুমের ব্যবস্থা নাই। বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের অবস্থা খুবই ভয়াবহ।