Bangladesh RockZ

Bangladesh RockZ We see a positive Bangladesh. We love people who stands out and put our beloved BD on top of all. We salute to you! You people ROCKZ!

12/09/2022
12/09/2022

✨বিচারকের দেহের ত্বক জীবিত অবস্থায় তুলে নেয়ার আদেশ!

🟣 খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সালে পারসিক সম্রাট ক্যাম্বাইসিস ২য় এর সময় সিসামনেস নামে একজন রাজকীয় বিচারক ছিলেন। তিনি ঘুষের বিনিময়ে অন্যায্য রায় প্রদান করতেন। রাজার কাছে অভিযোগ যায়, তদন্তে বিচারকের অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাজা বিচারকের দেহের ত্বক জীবিত অবস্থায় তুলে নেয়ার আদেশ দেন। তারপর প্রধান বিচারক কে হবেন সে বিষয়ে ওই ঘুষখোর বিচারকের মতামত চান রাজা। লোভী বিচারক নিজ পুত্র ওতানেস এর নাম প্রস্তাব করেন। রাজা মহোদয় ওতানেসকে প্রধান বিচারক নিয়োগ দেন। ছেলে ওতানেস প্রধান বিচারক হয়ে আদেশ দিলেন পিতা সিসামনেসের চামড়া প্রধান বিচারকের আসনে ব্যবহৃত হবে। ছেলে ওতানেস দীর্ঘদিন সুনামের সাথে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি প্রতিনিয়ত স্মরণ রাখতেন তার পিতার চামড়া দিয়ে তৈরী আসনে তিনি বসে রায় লিখছেন।

◾হজরত উমর (রা:) এর শাসনামলে কাজী শুরায়হের আদালতে স্বয়ং খলিফা ওমরের বিরুদ্ধে সাওয়ারীর (এক জাতীয় যানবাহন) ক্ষতি সম্পর্কে এক ব্যক্তি বিচার প্রার্থনা করে। বিচারটি ছিল- খলিফা ওমর সাওয়ারিটি নিয়ে তা অপরকে আরোহণ করতে দিয়েছিলেন। এতে সাওয়ারিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিচারক উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে রায় দিলেন। রায় খলিফা উমরের বিরুদ্ধে চলে যায়। অর্ধ জাহানের খলিফার বিরুদ্ধে রায়! যার নাম শুনলে সিংহহৃদয় পুরুষদের অন্তরও কেঁপে উঠতো। কিন্তু ইনসাফ ও ন্যায়ের মূর্ত প্রতীক হজরত উমর এ বিচারের রায় মেনে নিতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেননি। বরং অম্লান বদনে রায় মেনে বাদির দাবি অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন।

নির্ভীক বিচারের রায়ের ফলশ্রুতিতে হজরত উমর তাঁকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন। ৭৫ বছর পর্যন্ত তিনি কুফার বিচারপতির আসন অলঙ্কৃত করেছিলেন। যা ছিল সৎ সাহসিকতার নগদ প্রাপ্তি।
সংগৃহিত

Asolei😜
10/09/2022

Asolei😜

:D

বৃটিশ কালো অধ্যায়ের সমাপ্তি হল কি?
09/09/2022

বৃটিশ কালো অধ্যায়ের সমাপ্তি হল কি?

08/09/2022

IQ Test

08/09/2022

রাডার আবিস্কার হবার পূর্বে এভাবেই শত্রুপক্ষের বিমান উপস্থিতি পর্যবেক্ষন করা হত।

This is how enemy aircraft were detected before the invention of radars

■  কিছু কথাসোনায় সোহাগা আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের আনাচে কানাচে, ঝোপ জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মুক্তো মানিক। কিন্তু অতিব দ...
02/09/2022

■ কিছু কথা
সোনায় সোহাগা আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের আনাচে কানাচে, ঝোপ জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মুক্তো মানিক। কিন্তু অতিব দুঃখের বিষয় এই যে আমারা আজও সেই মুক্তো মানিক চিনতেই পারিনি। আমরা এগুলোকে পা দিয়ে মাড়িয়ে চলে যাই,তারপরও ভেবে দেখিনি, জেনেও দেখিনি কোন উপকারে আসবে কিনা। রাস্তার ধারে, পুকুরের পাড়ে,বনে বাগানে হাজারো উপকারী গাছপালা, লতাপাতা আছে যা আমাদের প্রাকৃতিক সুরক্ষার দেয় , পাশাপাশি অনেক সুবিধাও দিয়ে থাকে। আজ আপনাদের জানাবো এমনই এক উপকারী গাছের কথা।
■ রিফুজি লতা'র পরিচয়
বাংলা নাম রিফুজি লতা বা আসামি লতা। বৈজ্ঞানিক নাম Mikania micantha । আসামলতা, কইয়া লতা, বুচিলতা, তরুলতা, রিফুজি লতা, শঙ্খুনি লতা, ইত্যাদি নামে এটাকে ডাকা হয়। এই লতা অতি বৃদ্ধিপ্রবল, একবার বেড়ে উঠবার সুযোগ পেলে বিপুলভাবে ছড়িয়ে পড়ে, জড়িয়ে ধরে অন্য গাছের শাখা-প্রশাখা।
রিফুজি লতা বনে-জঙ্গলে, পতিত জমিতে বা পথের পাশে যেখানে ফোটে সে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হতেই থাকে। রিফুজি লতার কোন ধরনের যত্ন না নিলেও চলে,এটি একবার বেয়ে গেলে আর সহজে মরে না।
■ রিফুজি লতা'র ঔষধী গুনাগুন
* প্রসাবে জ্বলাপোড়ায় নিয়মিত পাতার রস খেলে সমস্যা কেটে যাবে।
* লিভারের যে কোন সমস্যায় এই পাতার রস অনেক উপকার করে।
* চোখ লাল হয়ে গেলে এই পাতার রস খেলে সমস্যা কেটে যাবে।
* পাকস্থলীর প্রদাহ হলে আদার সাথে তিনটি পাতা চিবিয়ে খেয়ে নিন।
* এই পাতার রস নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
* শরীরের কাটা ছেঁড়ায় এ লতার পাতা পিষে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে তিন থেকে চার ঘন্টা বেধে রাখুন, জোড়া লেগে যাবে।
* বসন্ত বা হাম হয়েছে যাদের, তারা রিফুজি পাতা পিষে রস পানির সাথে মিশিয়ে পু্রো শরীর ধুয়ে ফেলুন।
* রক্ত দূষিত হলে ৭দিন প্রতি সকালে খালি পেটে আধা-কাপ পাতার রস এক চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে খাবেন।
* পেটে গ্যাস, এসিডিটি হলেই আধা-কাপ রিফুজি পাতার রস খেয়ে নিন, সেরে যাবে।
* বিষাক্ত পোকা-মাকড় কাঁমড় দিলেই রিফুজি পাতার রস দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, সেই সাথে পাতা পিষে লাগিয়ে রাখুন।
* চুলকানী, একজিমা, দাদ হলে এই পাতার রস দিয়ে ধুয়ে রস লাগাতে থাকেন দেখবেন সেরে যাবে।
* এই পাতার রস কাচা হলুদের সাথে মিশিয়ে শরীরে লাগালে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং শরীরে দাগ দুর হয়।
* মূখে মেসতা হলে হলুদের সাথে লেবুর রস ও এই পাতার রস মিশিয়ে লাগান সেরে যাবে।

প্রতি বছরপনেরোই আগস্টের পরের দিন পাগলটাকে দেখা যায় এ গলিতে ও গলিতে , এ রাস্তায় ও রাস্তায় , এ মোড়ে ও মোড়ে , ডাস্টবিন...
31/08/2022

প্রতি বছর
পনেরোই আগস্টের পরের দিন পাগলটাকে দেখা যায় এ গলিতে ও গলিতে , এ রাস্তায় ও রাস্তায় , এ মোড়ে ও মোড়ে , ডাস্টবিনের পাশে ,নর্দমার ধারে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চষে বেড়ায় শহরের এ কানা থেকে সে কানা, কাঁধে বস্তা নিয়ে ।
সকালবেলা কৌতুহল বশে জিজ্ঞাসা করেছিলাম,
"তোমার নাম কী?"
বলেছিল , "ক্ষুদিরাম" ।
দুপুরে দেখলাম পোষ্ট অফিসের সামনে , ডাস্টবিনে হাত ঢুকিয়ে কী সব খুঁজছে , বললাম ,
"কী খুঁজছ ক্ষুদিরাম?"
উত্তর দিল, "আমি ক্ষুদিরাম নই , প্রফুল্ল চাকী।"
অবাক হলাম ।
বিকালে আবার দেখা , বললাম,
"প্রফুল্ল চাকী চা খাবে?"
ও বলল , "আমার নাম কানাইলাল" ।
এবার বিস্ময়।
সন্ধের মুখে বড় রাস্তার মোড়ে জটলা দেখে থমকে দাঁড়ালাম। জিজ্ঞাসা করলাম ,
"কী হয়েছে?"
ভীড়ের থেকে একজন বলল, "একটা চোর ধরা পড়েছে।"
ভীড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম , ল্যাম্প পোষ্টে বাঁধা সকালের ক্ষুদিরাম দুপুরের প্রফুল্ল চাকী বিকালের কানাইলাল।
পাশে মাল বোঝাই বস্তা, যা ছিল সকালে খালি।
একজন বলল ,ঐ বস্তায় আছে চুরি করা জিনিস ।
খটকা লাগল ,জিজ্ঞাসা করলাম ,
"চুরি করেছ?"
ও নির্বিকার, কোনো উত্তর দিল না।
আমি বস্তার মুখের বাঁধন খুলে মাটিতে ঢেলে দিলাম , বেরোল ছেঁড়া , ফাটা ,দুমড়ানো ,মোচড়ানো, প্লাস্টিকের ও কাগজের যত জাতীয় পতাকা । রাস্তা , ডাস্টবিন , নর্দমা থেকে কুড়িয়ে ভরেছে বস্তায় ।
মুহূর্তে ভীড় হল অদৃশ্য, .চোখ ভরা জল নিয়ে বাঁধন খুলে দিলাম পাগলের। আমার মুখের দিকে তাকাল একবার, তারপর মৃদুস্বরে বলল,
"যেন কেউ পা দিয়ে মাড়িয়ে না যায় তাই ...."
তারপর আবার পতাকা গুলো বস্তায় ভরে নিয়ে চলে গেল দূর থেকে দূরে ।
আমি দাঁড়িয়ে রইলাম স্থানুর মতো অপার বিস্ময় আর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ।

#সংগ্রহীত

30/08/2022

#বাংলার প্রথম নারী, "নওয়াব" তিনি হলেন,
"নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী" যিনি ব্রিটিশদের দেওয়া, "বেগম" উপাধি গ্রহণ করেননি। শেষ পর্যন্ত নওয়াব উপাধি দিতে বাধ্য হয়েছে এই নারীকে!

১৫ বছর বয়সী কিশোরীর শরীর জুড়ে ছিল রূপ-লাবণ্যের ঢেউ।
টানা টানা চোখ, হরিণীর মতই সদা চঞ্চল। বাবা ছিলেন কুমিল্লা অঞ্চলের (তৎকালীন ত্রিপুরা) পশ্চিম গাঁওয়ের (বর্তমান লাকসাম) বিরাট জমিদার।
#অল্প বয়সেই কিশোরীর বিয়ের প্রস্তাব আসে ভাউকসারের জমিদার গাজী মোহাম্মদ চৌধুরীর কাছ থেকে।
পশ্চিম গাঁও জমিদারির কাজে এসে তিনি কিশোরীকে দেখে পছন্দ করেন। পরে বিয়ে হয়। ফুটফুটে দুটি মেয়েও হয়। তখন তিনি পরিপূর্ণ যুবতী।

#বিয়ের ১৭ বছর পর জানতে পারেন, তার স্বামীর আরেকটি বউ আছে। বিষয়টি তাঁর আত্মসম্মানে লাগে। তিনি প্রতারিত বোধ করেন। স্বামীকে স্পষ্টত জানিয়ে দেন, সতীনের সঙ্গে ঘর করার জন্য জন্ম হয়নি তার। তিনি স্বামীর বাড়িতে আর ফিরে যাবেন না।
#এরই মধ্যে বাবা মারা যাওয়ায় তিনি নিলেন পৈতৃক জমিদারির দায়িত্ব।
এ নিয়ে তার কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু এক সময় বাবার সান্নিধ্যে কাজ শেখা তার মজ্জাগতই ছিল। তিনি সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগান সফলভাবে। সারাদেশে তিনি ছিলেন একমাত্র মহিলা জমিদার।

#তখন ত্রিপুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন মি. ডগলাস। একদিন তিনি খেয়াল করলেন ত্রিপুরা অঞ্চল শিক্ষা ও উন্নয়ন খাত ভীষণ অবহেলিত। তিনি এই খাতে অর্থ বরাদ্দ চান ব্রিটিশ সরকারের কাছে। কিন্তু, সেই অর্থ নির্ধারিত সময়ে আসছে না। ডগলাস সাহেব চিন্তিত হলেন। সিদ্ধান্ত নিয়ে ডগলাস স্থানীয় ১০জন জমিদারের কাছে ঋণ হিসাবে ১০ হাজার টাকা করে ১ লাখ টাকা চাইলেন।
কিন্তু কেউই এত অল্প সুদে অর্থ দিতে রাজি হলেন না। একে একে সব আশা যখন শেষ হয়ে গেল তখন হঠাৎ একদিন এই নারী জমিদারের নায়েব, পুটুলি ভর্তি নগদ ১ লাখ টাকা নিয়ে এসে ডগলাসের হাতে দিলেন।

#ডগলাস খুব আনন্দিত এবং নিশ্চিন্ত হলেন।
তিনি কাল বিলম্ব না করে নায়েবের সাথেই রওনা হয়ে জমিদারের বাড়িতে গেলেন ঋণের চুক্তি করতে।
কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটকে বিস্মিত করে জমিদার নারীটি বললেন -
"আমি কাউকে ঋণ দিই না। আপনার পরিকল্পনা জনহিতকর। এটা নিশ্চিত হয়েই এই টাকা ত্রিপুরার কল্যাণে আমি দান করলাম।"
ডগলাস কৃতজ্ঞচিত্তে ফিরে গেলেন এবং জানলেন যে এই নারী জমিদার জনকল্যাণ মূলক অসংখ্য কাজ করেছেন এবং প্রতিনিয়ত করে চলেছেন।

#ডগলাস এইসব কথা জানিয়ে ইংল্যান্ডে মহারানী ভিক্টোরিয়াকে পত্র পাঠালেন। রাণী ভিক্টোরিয়া এই জমিদারকে "বেগম" উপাধি দিলেন। কিন্তু জমিদার এই উপাধি প্রত্যাখ্যান করলেন। কারণ অন্য জমিদারদের যেখানে 'নওয়াব' উপাধি দেয়া হয় সেখানে তাকে কেন 'বেগম' উপাধি দেয়া হবে? উপাধির কোন জেন্ডার থাকা উচিৎ নয়।

#ভিক্টোরিয়া এই প্রত্যাখানের খবর পেয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে ত্রিপুরায় পাঠালেন। তদন্ত কমিটি এসে নানা বিষয়ে তদন্ত করে একদিন সেই তেজী নারী জমিদার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে দেখেন, জমিদার হাতিতে চড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কোথাও কোন কাজে যাবেন তাই!
সেখানে তাকে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছুতে হবে।
তদন্ত কমিটি জমিদারের কাছে সময় চাইলে জমিদার বললেন - "আমি পূর্বনির্ধারিত কাজে যাচ্ছি, এখন আপনাদের সময় দেয়া সম্ভব নয়।" কথা আর না বাড়িয়ে সময়নিষ্ঠ জমিদার তাঁর কাজে রওনা হয়ে গেলেন।
#ব্রিটিশ তদন্ত কমিটি হতবাক হয়ে গেল নেটিভ এই জমিদারের সময়ানুবর্তীতা, তেজস্বী মনেভাব ও অহংকার দেখে! এবং তারা ফিরে গিয়ে রানী ভিক্টোরিয়াকে সব কথা জানালেন।

#এইবার রানী ভিক্টোরিয়া আর ভুল করলেন না। প্রবল ব্যক্তিত্বময়ী এই জমিদারকে "নওয়াব" উপাধি দিলেন।
১৮৮৯ সালে ব্রিটিশ সরকার পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা ব্যয় করে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে কুমিল্লায় এই জমিদারকে সম্বর্ধনা দিলেন। তিনি হলেন বাংলার প্রথম নারী "নওয়াব"। 👉তাঁর নাম নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী।
#তিনি কেবল জনহিতকর কাজই করেননি, নারী শিক্ষা, নারী উন্নয়ন মূলক অসংখ্য কাজ করেছেন। ছিলেন সুশিক্ষিত, চারটি ভাষা জানতেন। ছিলেন একজন সুসাহিত্যিকও।
সংগৃহীত।

চুলের মুঠি ধরে উঠোনে এনে রামদায়ের এক কোপে গলা কেটে ফেলে -স্মরণ -     বাংলাদেশের প্রথম নারী শহীদ               কবি মেহেরু...
24/08/2022

চুলের মুঠি ধরে উঠোনে এনে রামদায়ের এক কোপে গলা কেটে ফেলে -

স্মরণ -

বাংলাদেশের প্রথম নারী শহীদ
কবি মেহেরুন্নেসা
---------------------------------------------------
কবি মেহেরুন্নেসার জন্ম ১৯৪২ সালের ২০ আগস্ট কলকাতার খিদিরপুরে।

মেহেরুন্নেসার কবি প্রতিভার প্রকাশ ঘটে খুব ছোট বেলায়।

১৯৫২ সালে মাত্র দশ বছর বয়স থেকেই অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দেন তার খুরধার লেখনীর মাধ্যমে এবং জায়গা করে নেন সংগ্রাম, ইত্তেফাক, দৈনিক পাকিস্তান, অনন্যা, কাফেলা, বেগম, যুগের দাবিসহ তৎকালীন প্রায় সকল পত্রিকায়।

মাত্র দশ বছর বয়সে ১৯৫২ সালে তার ‘চাষী’ কবিতা সংবাদ এর ‘খেলাঘর’ পাতায় প্রকাশিত হয়। তিনি বড়দের জন্য লেখা শুরু করেন ১৯৫৪ সালে ‘কাফেলা’ পত্রিকার মাধ্যমে।

কবি মেহেরুন্নেসার রুচি, ব্যক্তিত্ব, সৌন্দর্য ও কবিতা সমান্তরাল। তার কর্ম, বিশ্বাস এবং বিবক্ষাই তার কবিতা।

প্রথমে তার কবিতায় ফররুখ আহমদের প্রভাব, ইসলামী ভাবধারা, আরবী-ফার্সী শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। জাগে মখলুখ জাগে ফুল পাখি জেগেছে স্বর্ণ সুরুজ ইত্যাদি।

তার বেশিরভাগ কবিতা প্রকাশিত হয় ‘বেগম’ পত্রিকায়। বেগম পত্রিকার সম্পাদক নূরজাহান বেগমের পরামর্শে তিনি স্বদেশ, প্রেম ও প্রকৃতি বিষয়ে আরবী-ফার্সী শব্দের ব্যবহার বর্জন করে কবিতা লিখতে শুরু করেন।

তিনি রানু আপা নামে ‘পাকিস্তানি খবর’ এর মহিলা মহল পাতার সম্পাদনা করতেন। কবি হিসেবে তিনি ছিলেন সত্যিকার কবিতাকর্মী।

খুব আত্মবিশ্বাস ও সাহসিকতা, তার কবি প্রতিভা আদায় করে নিয়েছিল কবি সুফিয়া কামালের স্নেহ আনুকূল্য।

১৯৬১ সালে যোগ দেন ফিলিপস রেডিও কোম্পানিতে। এছাড়া তিনি ইউএসআইএস লাইব্রেরিতেও অনুলিখনের কাজ নিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য যে, সে সময় ফিলিপস ইংরেজি ও উর্দুতে মুখপত্র ছাপাত, কবি মেহেরুন্নেসার চেষ্টায় বাংলা ভাষায় রচিত পত্রিকাও প্রকাশে বাধ্য হয় ফিলিপস কর্তৃপক্ষ।

কবিতার প্রতি ভালবাসা, বাংলা সাহিত্যের প্রতি অকৃত্রিম আকর্ষণ তাকে সাহিত্য চর্চা থেকে দূরে থাকতে দেয়নি।

'রানু আপা' ছদ্মনামে রাজনৈতিক প্রবন্ধ লিখেছেন ৬৯ এর আইয়ুববিরোধী উত্তাল গণআন্দোলনে।

নিজের চেষ্টায় তিনি মিরপুরের ৬ নং সেকশনে, ডি ব্লকের ৮ নং বাড়িটি বাবার নামে বরাদ্দ পান।

১৯৬৩ সালে কবি মেহেরুন্নেসা সপরিবারে বসবাসের জন্য ওই বাড়িতে ওঠেন। ১৯৬৫ সাল থেকে তারা থাকতে শুরু করেন মিরপুরে। সে সময় মিরপুর ছিল বিহারী অধ্যুষিত এলাকা।

বাঙালি পরিবার বিহারীদের তুলনায় নগণ্য। এর কিছু দিনের মধ্যে তার বাবা অসুখে পড়েন। তখন তাকে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হয় পরিবারের জন্য।

৭১ এ বিহারী অধ্যুষিত মিরপুরে কবি কাজী রোজীর (প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য) নেতৃত্বে এ্যাকশন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সক্রিয় সদস্য ছিলেন কবি মেহেরুন্নেসা।

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে লেখক সংগ্রাম শিবির আয়োজিত বিপ্লবী কবিতা পাঠের আসরে হাসান হাফিজুর রহমান, আহসান হাবীব, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, আলাউদ্দিন আল আজাদ, হুমায়ুন কবিরসহ অন্য কবিদের সঙ্গে স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশ নেন মেহেরুন্নেসা।

এ আসরে সভাপতিত্ব করেছিলেন ড. আহমদ শরীফ। সেই অনুষ্ঠানে তিনি 'জনতা জেগেছে' কবিতাটি আবৃত্তি করেন।

বিহারী অধ্যুষিত মিরপুরে তিনি ও তার পরিবার অনেক আগে থেকেই চিহ্নিত হয়ে ছিলেন মুক্তিকামী বাঙালি হিসেবে।

২৭ মার্চ এলো, দুদিন আগেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তখন একতরফা গণহত্যা শুরু হয়ে গিয়েছিল।

কবি মেহেরুন্নেসা বিহারীদের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে, তার দুই ভাই মিরপুর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য রফিক ও টুটুলকে নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ডাকা কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ২৩ মার্চ সকাল ১০টায় মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লক, ১২ নম্বর রোডে নিজ বাড়িতে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন।

এবং ওইদিন বেগম পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তার লেখা শেষ কবিতা (তাকে মারার মাত্র তিন দিন পূর্বে)। আর এই অপরাধে কাদের মোল্লার নির্দেশে ২৭ মার্চ তার মা, দুই ভাই ও তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার সময় তার বয়স হয়েছিল ঊনত্রিশ বছর।

মেহেরুন্নেসার ছোট দুই ভাইয়ের কাটা মাথা দিয়ে ফুটবল খেলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী মিরপুরের আলী আহাম্মদের ভাষ্য মতে কবি মেহেরুন্নেসাকে চুলের মুঠি ধরে উঠোনে এনে রামদায়ের এক কোপে গলা কেটে ফেলে।

মেহেরুন্নেসার কাটা মাথার বেণী করা চুল ফ্যানের সঙ্গে ঝুঁলিয়ে ফ্যান ছেড়ে দেয়া হয়। উল্লাস করা হয় কাটা মস্তকের রক্ত ছিটিয়ে। এভাবেই কবি মেহেরুন্নেসা হন স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মহিলা কবি।

মিরপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে তার নাম চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। কিন্তু এই মহান কবির বাংলাদেশে এক বোন ছাড়া কোন আত্মীয় নেই এবং তার বোন মোমেনা বেগম রক্ষণশীল পরিবারের গৃহবধূ হওয়ায় মেহেরুন্নেসাকে নিয়ে আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই করা হয়নি।

তথ্যসূত্রঃ 'দৈনিক জনকণ্ঠ'
২৭ মার্চ ২০০৯
কৃতজ্ঞতা, মেসবা খান

যেই দেশে বিসিএসের মত একটা ফালতু মুখুস্থ বিদ্যা সিস্টেমে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয় সেই দেশে এমন দূর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।কারন...
21/08/2022

যেই দেশে বিসিএসের মত একটা ফালতু মুখুস্থ বিদ্যা সিস্টেমে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয় সেই দেশে এমন দূর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
কারন, এখানে চাকুরী পাওয়ার জন্য ইঞ্জিনিয়াররা মুখস্থ করে আসে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম তারিখ, মৃত্যু তারিখ, পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি, কয় বস্তা সিমেন্ট লেগেছে সেতু নির্মাণে এসব আজগুবি প্রশ্নের।

→অথচ, তাকে প্রশ্ন করা উচিত ছিলোঃ

🔸 ৫২ টন ওজনের একটি লোড সরাতে কত টন ক্যাপাসিটির ক্রেন ব্যাবহার করতে হবে?

🔹 উক্ত ক্রেনের পিক পয়েন্ট হতে লোড সেগ পয়েন্টের ডিসট্যান্স কত হতে হবে? ক্যালকুলেশন করে দেখান।

→তাকে প্রশ্ন করা উচিত ছিলো,

জনবহুল এলাকায় এ ধরনের ভারী ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার পূর্বে কি ধরনের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে?

© collected

অনেক বছর আগের ঘটনা, একবার এক চাষি তার বাড়ির উঠোনে বসে বিশ্রাম করছিলেন। এমন সময় তার একমাত্র ছেলে ছুটে আসে এবং বাবাকে খবর ...
09/08/2022

অনেক বছর আগের ঘটনা, একবার এক চাষি তার বাড়ির উঠোনে বসে বিশ্রাম করছিলেন। এমন সময় তার একমাত্র ছেলে ছুটে আসে এবং বাবাকে খবর দেয়, যে রাস্তার ধারের পুকুরে একটি ছেলে ডুবে যাচ্ছে।

শুনে চাষী তৎক্ষণাৎ পুকুরের কাছে পৌঁছায়। গিয়ে দেখে তার ছেলের বয়সী একটি ছেলে জলে হাবুডুবু খাচ্ছে। পোশাক পরিচ্ছদ দেখে কোন শহরের ধনীর দুলাল বলে মনে হচ্ছে।

সাথে বেশ কিছু বন্ধু বান্ধব থাকলেও তারা সাঁতার না জানায় পারে দাঁড়িয়ে বন্ধুর সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে। চাষী আর একমুহূর্ত সময় নষ্ট না কোরে জলে ঝাপিয়ে পরে এবং ছেলেটিকে উদ্ধার করেন।

এই ঘটনার দিন দুয়েক পর হঠাৎ একদিন গ্রামের পথে ধুলো উড়িয়ে এক ঘোড়ায় টানা সুসজ্জিত গাড়ি, আগু পিছু অস্ত্রধারী অশ্বারোহী নিয়ে চাষীর বাড়ির সামনে এসে থামলো।

চাষী কিছুটা ভয় পেয়েছিল বৈকি। এরপর গাড়ি থেকে যে ব্যক্তি নেমে এলেন তার ব্যক্তিত্ব তার ঐশ্বর্যের পরিচয় বহন করে কিন্তু তার মুখের স্মিত হাসি চাষীকে কিছুটা আস্বস্ত করেন। তিনি স্মিত হেসে বলেন,

--- "আপনি সেই মহানুভব যিনি আমার একমাত্র ছেলের জীবন বাঁচিয়ে ছিলেন?" কৃষক মৃদু হেসে বললেন,

--- "আজ্ঞে হ্যা।" সেই ব্যক্তি এরপর গরিব চাষীর হাত ধরে অশ্রু সজল চোখে বলেন,

--- "আপনার ঋণ আমি শোধ করতে পারবো না। তবু বলুন আমি আপনার জন্য কি করতে পারি?" চাষী প্রথমে কিছু নিতে রাজি হয় না, শেষ মেষ অনেক অনুরোধের পর বলেন,

--- "দেখুন আমার সেই ক্ষমতা নেই যে আমার ছেলেকে ভালো স্কুলে পড়াই। তাই যদি আপনি ওর একটা ভালো স্কুলে পড়ার ব্যবস্থা করদেন তাহলেই আমি চির কৃতজ্ঞ থাকবো আপনার কাছে।" এই শুনে সেই ভদ্রলোক হেসে বললেন,

--- "ঠিক আছে এই যদি আপনার ইচ্ছা হয় তবে আজ থেকে আপনার ছেলে আমার ছেলের সাথে একসাথে পড়াশুনো করবে, এবং ওকে আমি আমার বাড়িতে রেখে পড়াবো।"

এরপর অনেক বছর কেটে গেছে। চাষীর ছেলে আর ধনী দুলালের বন্ধুত্ব সময়ের সাথে আরো গভীর হয়েছে। দুজনেই অত্যন্ত মেধাবী, যদিও দুজনের পছন্দ ছিল সম্পূর্ন আলাদা।ধনীর দুলালের আকর্ষণ রাজনীতি, আর তার বন্ধুর চিকিৎসা বিজ্ঞান।

স্নাতক হবার পর একজন মন দেয় অণুজীব নিয়ে গবেষণায়, আর একজন রাজনীতিতে।গবেষক বন্ধুর এক একটা গবেষণা পত্র যখন চিকিৎসা দুনিয়ায় আলোড়ন ফেলছে। তখন আর এক বন্ধুর নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা আকৃষ্ট করছে ইংল্যান্ডের যুব সমাজকে।

এর মধ্যেই সেই রাজনীতিবিদ বন্ধু এক গভীর অসুখে আক্রান্ত হয়। অনেক বড় বড় চিকিৎসক যখন ব্যর্থ হয় ফিরে যায়, তখন সেই গবেষক বন্ধু এগিয়ে আসে।

দিন রাত এক করে নিজের তৈরি ওষুধে চিকিৎসা করতে থাকেন নিজের বন্ধুর। এবং সম্পূর্ন সুস্থ করে তোলেন নিজের প্রাণাধিক প্রিয় বন্ধুকে। কারণ তাকে ছাড়া তো আধুনিক বিশ্বের ইতিহাস লেখাই অসম্পূর্ন থাকতো

জানেন এই দুজন কে? সেই চাষীর ছেলে হলেন বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানী, পেনিলিসিলিনের আবিস্কারক স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং। আর তার বন্ধুটি হলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল।

বন্ধুত্বের কোনো শেষ নেই। বন্ধুত্ব, ঈশ্বরের এক অমূল্য সৃষ্টি। ওদের ছাড়া জীবন সত্যিই খুব অসম্পূর্ণ। এই পোস্টটা আমাদের গ্রুপের সমস্ত বন্ধুদের উৎসর্গ করলাম ।
(সসংগৃহীত)

মনে জায়গা করে নেওয়া একটি সুর্য্যাস্ত...ভৈরব নদী, ফুলতলা, খুলনা।
22/07/2022

মনে জায়গা করে নেওয়া একটি সুর্য্যাস্ত...

ভৈরব নদী, ফুলতলা, খুলনা।

বিশ্বকে কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছিল ওমায়রা, দিয়ে গিয়েছিল ইতিহাসের সবথেকে মর্মান্তিক ছবিটি১৯৮৫ সালের ১৩ নভেম্বর। কলম্বিয়ার মফঃস...
12/07/2022

বিশ্বকে কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছিল ওমায়রা, দিয়ে গিয়েছিল ইতিহাসের সবথেকে মর্মান্তিক ছবিটি
১৯৮৫ সালের ১৩ নভেম্বর। কলম্বিয়ার মফঃস্বল শহর আর্মেরোর (Armero) আকাশ সকাল থেকেই ছিল মেঘলা। ঝেঁপে বৃষ্টি আসছিল মাঝে মাঝে। তখন বিকেল চারটে। বাবা আলভেরো ও ভাই আলভেইরোর সঙ্গে জমি থেকে তুলে আনা ধান গোলায় তুলছিল তেরো বছরের ফুটফুটে বালিকা ওমায়রা স্যাঞ্চেজ (Omayra Sánchez)। মা মারিয়া আলেইডা গিয়েছিলেন বাড়ি থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে থাকা কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায়। সেখানে তিনি নার্সের কাজ করেন।
হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে ভেসে এসেছিল ‘গুম’ ‘গুম’ আওয়াজ। চমকে উঠেছিল ওমায়রা। মেঘ ডাকার আওয়াজ ভেবে আবার মন দিয়েছিল কাজে। সব ধান গোলায় তুলে বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে বাড়িতে ফিরে এসেছিল ওমায়রা। কাকিমা মারিয়া আডেলার সঙ্গে রাতের খাবার তৈরির তোড়জোড় শুরু করেছিল।
যে শব্দকে মেঘের আওয়াজ ভেবেছিল ওমায়রা, আসলে সেটি ৭৯ বছর পর জেগে ওঠা নেভাডো ডেল রুইজ আগ্নেয়গিরির ( ১৭৫০০ ফুট) আড়মোড়া ভাঙার আওয়াজ। যে আগ্নেয়গিরিকে স্থানীয়রা চেনেন ‘ঘুমন্ত সিংহ’ নামে। ১৯৮৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসেও একবার উশখুশ করে উঠেছিল নেভাডো ডেল রুইজ আগ্নেয়গিরি। কলম্বিয়ার ইন্সটিটিউট অফ মাইনিং অ্যান্ড জিওলজি অক্টোবর মাসেই বানিয়ে দিয়েছিল আসন্ন ভয়াবহ বিপর্যয়ের একটি ম্যাপ। সেই ম্যাপে বলাও হয়েছিল সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছে ওমায়রাদের আর্মেরো শহর। কান দেয়নি কলম্বিয়া সরকার।
ঘড়িতে তখন রাত ৯.০৯
বিকট আওয়াজে কেঁপে উঠেছিল আশেপাশের প্রায় একশো কিলোমিটার এলাকা। এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল আর্মেরো শহর থেকে মাত্র ৪৮ কিলোমিটার দূরে থাকা নেভাডো ডেল রুইজের তুষারাচ্ছাদিত চূড়া। আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে বেরিয়ে এসেছিল উত্তপ্ত লাভার স্রোত। লাল ছাইয়ে ঢেকে গিয়েছিল আকাশ।
ফুটন্ত লাভার উত্তাপে গলে গিয়েছিল আগ্নেয়গিরির চুড়ায় থাকা বরফ ও পাদদেশে থাকা হিমবাহগুলি। বিশাল জলরাশি তিনটে সর্বগ্রাসী ঢেউ তুলে, ঘন্টায় বাইশ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলেছিল গুয়ালি নদীর খাত ধরে। সঙ্গে নিয়ে চলেছিল হাজার হাজার বোল্ডার, পাথর, গাছ ও কাদা। ঢেউগুলি ছুটে চলেছিল চোদ্দটি জনপদের দিকে। প্রথম ও সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আক্রমণটি হেনেছিল সামনে থাকা আর্মেরো শহরের ওপর।
কোটি কোটি টন কাদা, গাছ ও পাথর নিয়ে আসা প্রথম ঢেউটি, আঘাত হানার তিরিশ মিনিট আগেই অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল আর্মেরো। শহরবাসীদের কানে আসছিল রক্তজল করে দেওয়া কিছু আওয়াজ। কিন্তু কী হচ্ছে, কেউ কিছু বুঝতে পারছিল না। তাই টর্চ নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছিল হাজার হাজার মানুষ। বাবা, ভাই ও কাকিমার সঙ্গে বাড়ির ছাদে উঠে পড়েছিল ওমায়রা। অন্ধকারে জোনাকির মত ছোটাছুটি করতে থাকা টর্চগুলি ছাড়া অন্য কিছু নজরে আসছিল না ওমায়রার।
হঠাৎ একই সঙ্গে নিভে গিয়েছিল কয়েক হাজার টর্চ। আর্ত চিৎকার ভেসে এসেছিল চারদিক থেকে। শহরবাসীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই, আর্মেরোকে আঘাত করেছিল পাথর, গাছের গুঁড়ি বয়ে আনা কাদার প্রথম ঢেউটি। ওমায়রাদের বাড়ির ছাদের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুড়ি ফুট উচ্চতার ঢেউটি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ওমায়রার বাবা ও ভাইকে।
ভেঙে পড়া ছাদের বিম ও লোহার কাঠামোয় আটকে গিয়েছিল ওমায়রা ও কাকিমা আলেইডা। ওমায়রাকে বুকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন কাকিমা। কিন্তু কাদার ঢেউ ক্রমশ গিলে নিতে শুরু করেছিল কাকিমাকে। কাদার স্রোতের নিচে তলিয়ে যেতে যেতে দুই হাত দিয়ে কাকিমা ধরে ফেলেছিলেন ওমায়রার পা দু’টি। ঘটনার আকস্মিকতায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল ওমায়রা।
বৃষ্টি শুরু হয়েছিল আবার। বৃষ্টির ছাট গায়ে লাগায় জ্ঞান ফিরে এসেছিল ওমায়রার। সে বুঝতে পেরেছিল, থিকথিকে কাদার মধ্যে গলা অবধি ডুবে আছে। কাদার নিচে কোথাও আটকে গিয়েছে হাত পা। চারদিকে থেকে ভেসে আসছিল আর্তনাদ। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে সে সব আর্তনাদও আর শোনা যাচ্ছিল না। বিধ্বস্ত আর্মেরোর বুকে নেমে এসেছিল শ্মশানের নীরবতা। সত্যিই আর্মেরো তখন মৃত্যুপুরী। কাদার নিচে শেষ ঘুমে ঘুমিয়ে পড়েছিল প্রায় পঁচিশ হাজার আর্মেরোবাসী।
কাদার ওপর জমতে শুরু করেছিল বৃষ্টির জল। সেই ছুঁয়েছিল গলা অবধি কাদায় গেঁথে থাকা ওমায়রার চিবুক। পাগলের মত চিৎকার করতে শুরু করেছিল ওমায়রা, “ও বাবা তুমি কোথায়?”,”ভাইরে তুই কই?”,”কাকিমা তুমি কোথায়? আমাকে বাঁচাও আমি যে তলিয়ে যাচ্ছি কাকিমা।” একসময় জল উঠে এসেছিল ওমায়রার নাকের কাছাকাছি। দুঃসাহসী ওমায়রা প্রায় অবিশ্বাস্যভাবে ডান হাতটা কাদা ও জঞ্জালের ভেতর থেকে মুক্ত করে নিয়েছিল। ডান হাত দিয়ে জঞ্জাল আঁকড়ে ভেসে থাকার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল রাতভর। নির্মম রাত এগিয়ে চলেছিল এক আশা জাগানিয়া ভোরের দিকে।
১৪ নভেম্বর,১৯৮৫
দুর্ঘটনার প্রায় দশ ঘন্টা পরে এসেছিল রেডক্রসের উদ্ধারকারী দল। উদ্ধারের কাজে হাত লাগিয়েছিল, বেঁচে যাওয়া স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে। গোটা আর্মেরো জুড়ে ছড়িয়ে ছিল কাদায় গেঁথে যাওয়া হতভাগ্য শহরবাসীদের শব। উদ্ধারকারী দলের গলার আওয়াজ পেয়ে, দেহের সর্বশক্তি একত্রিত করে ওমায়রা চিৎকার করে উঠেছিল, “আমাকে বাঁচাও”,”আমাকে বাঁচাও”।
মৃতের স্তুপে বালিকার গলার আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠছিলেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর দলটির এক সদস্য দেখতে পেয়েছিলেন ওমায়রাকে। হাত ধরে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। প্রবল যন্ত্রণায় আর্ত চিৎকার করে উঠেছিল ওমায়রা। উদ্ধারকারীরা বুঝতে পেরেছিলেন, ওমেইরার পা আটকে গিয়েছে কাদার নিচে।
সারাটা দিন ধরে ওমায়রাকে ঘিরে থাকা কাদা, পাথর, কাঠ, টালি ও কংক্রিটের ভাঙা টুকরো সরিয়েছিলেন উদ্ধারকারীরা। মুক্ত করে ফেলেছিলেন ওমায়রার বাম হাত ও কোমর। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও মুক্ত করা যায়নি পা দুটিকে। দেখা দিয়েছিল আর এক বিপত্তি। ওমায়রার চারপাশ থেকে জঞ্জাল সরানো মাত্রই গর্তটি ভরে যেতে শুরু করেছিল চারদিক থেকে ধেয়ে আসা জলে। আবার জলের নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করেছিল ওমায়রা। তাকে ভাসিয়ে রাখার জন্য বুকের নিচে পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাতাস ভরা টিউব। সামনে রাখা হয়েছিল লম্বা একটি ডাল। যাতে সে ডালটি ধরে ভেসে থাকতে পারে।
১৫ নভেম্বর, ১৯৮৫
দুর্ঘটনার ছত্রিশ ঘন্টা পর এক ডুবরী জলের নিচে গিয়েছিলেন। দেখেছিলেন এক শিউরে দেওয়া দৃশ্য। গলা অবধি জলে হাঁটু মুড়ে বসে আছে ওমায়রা। তার দুটি পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ পিষে দিয়েছে কংক্রিটের একটি বিম। পিষে যাওয়া পা দুটি চেপে ধরে আছেন এক মৃতা মহিলা (কাকিমা)। দ্রুত উঠে এসেছিল আতঙ্কিত ডুবরী।
ওয়াকি টকির মাধ্যমে উদ্ধারকারী দলটি বার বার একটি পাম্প ও গ্যাসকাটার পাঠানোর আবেদন জানিয়েছিল কলম্বিয়া সরকারের কাছে। কারণ বেলচা, স্ট্রেচার, গাঁইতি ছাড়া অন্য কোনও সরঞ্জাম ছিল না তাদের কাছে। হেলিকপ্টারে ঝুলিয়ে একটি বুলডোজার পাঠানোর আবেদনও করেছিল তারা। যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে আর্মেরোতে সেনা নামানোর কথাও বলেছিল উদ্ধারকারী দলটি। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি অমানবিক কলম্বিয়া সরকার। কারণ কলম্বিয়ার সেনারা তখন এম-নাইন্টিন গেরিলাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছিল রাজধানী বোগাটার আশেপাশে।
জারি হয়েছিল মৃত্যু পরোয়ানা
সব রকম চেষ্টা করেও ওমায়রাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়া রেড ক্রস নিয়েছিল এক অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্ত। কাদার নিচে আটকে থাকা ওমায়রার পা দুটি অপারেশনের মাধ্যমে বাদ দিয়ে ওমেইরাকে তুলে আনা হবে। প্রায় একঘন্টা ধরে আলোচনা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তারপর উদ্ধারকারী দলের নেতাকে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, কাদা জলের নিচে গিয়ে এই অপারেশন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া অপারেশন করলে নারকীয় যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে বালিকাটিকে।অপারেশন করে বাঁচানো যাবে না ওমায়রাকে। বিষাক্ত জলের কারণে গ্যাংগ্রিন হবেই।
তার থেকে বরং ওমায়রাকে উপহার দেওয়া হোক স্বাভাবিক মৃত্যু। পঞ্চাশ ঘন্টারও বেশি এক গলা কাদায় দাঁড়িয়ে আছে ফুটফুটে মেয়েটি। অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করেছে তার শরীরের তাপমাত্রা। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। প্রকৃতি নিজেই ব্যথাহীন মৃত্যু উপহার দেবে ওমায়রাকে। এই মর্মান্তিক সিদ্ধান্তই মেনে নিয়েছিলেন সবাই। যদিও তাঁরা জানতেন এক নির্মম ও যন্ত্রণাময় মৃত্যুই উপহার পেতে চলেছে ওমায়রা।
ওমায়রা জানত না তার মৃত্যু পরোয়ানায় সই হয়ে গিয়েছে। তাই বুঝি সে একবুক বাঁচার আশা নিয়ে গল্প শুরু করেছিল কলম্বিয়ার সাংবাদিক সান্টা মারিয়া বাররাগানের সঙ্গে। ওমেইরার পাশে সান্টা মারিয়া ঠায় বসেছিলেন, সেই ১৪ তারিখ সকাল থেকেই। তেরো বছরের বালিকাটির টিকে থাকার লড়াই দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলেন। টানা দুই দিন ধরে ওমেইরার সাথে গল্প করে, বালিকাটিকে অন্যমনস্ক রাখার চেষ্টা করে চলেছিলেন। মারিয়ার কাছে ওমায়রা খেতে চেয়েছিল মিষ্টি ও সফট ড্রিঙ্কস। অনেক দূর থেকে খাবার দুটি জোগাড় করে এনেছিলেন মারিয়া। মিটিয়েছিলেন ওমায়রার শেষ ইচ্ছা। এরই মাঝে ওমায়রার একটি ইন্টারভিউও নিয়েছিলেন সান্টা মারিয়া। যে ইন্টারভিউ থেকে বিশ্ব জেনেছিল ১৩ নভেম্বরের ভয়াবহ সেই রাতের কথা।
মৃত্যুকূপে জীবনের গান গাইছিল ওমায়রা (Omayra Sanchez)
গলা অবধি ডুবে থাকা ওমায়রা মারিয়াকে শুনিয়েছিল বেশ কয়েকটি গান। যে গানগুলি সে শিখেছিল তার মায়ের কাছে। সূর্য ওঠার গান, সবুজ মাঠে সোনার ফসল ফলানোর গান। চোখে জল চলে আসছিল মারিয়ার। তখনও বাঁচার আশা নিয়ে লড়তে থাকা ওমায়রা জানত না, তার জীবন সূর্য চিরতরে নিভিয়ে দিতে চলেছে তারই দেশের অমানবিক সরকার। নির্মম মৃত্যুর দিকে তাকে এক পা এক পা করে এগিয়ে দিচ্ছে বিবেকহীন সমাজ।
ফরাসি চিত্রসাংবাদিক ফ্র্যাঙ্ক ফোর্নিয়ার এসেছিলেন বোগোটায়। পাঁচ ঘন্টা গাড়ি চালিয়ে, আড়াই ঘন্টা পায়ে হেঁটে ওমায়রার কাছে পৌঁছেছিলেন, ১৫ নভেম্বর রাতে। শক্তিশালী টর্চের আলো ফেলে রাখা হয়েছিল ওমায়রার ওপর। সবাইকে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করছিল ওমায়রা। সবাই তার পাশ থেকে সরে গেলে সে একটু ঘুমাতে পারবে।
সেদিন মাঝরাত থেকেই ভুল বকতে শুরু করেছিল ওমায়রা। জড়ানো গলায় সে বলেছিল, “দু’দিন আমি স্কুলে যাইনি। আমায় স্কুলে দিয়ে এসো। নাহলে অঙ্ক পরীক্ষা দিতে পারব না। একটা বছর নষ্ট হবে আমার।” ওমায়রার কথা শুনে, দূরে সরে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মারিয়া। সবাই আবার ঘিরে ধরেছিল ওমায়রাকে। কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন। কেউ কেউ চুমু খাচ্ছিলেন জলে ভিজে কাগজের মত সাদা হয়ে যাওয়া ঠাণ্ডা হাত দুটিতে।
মুক্তি মুক্তি মুক্তি
১৬ তারিখ সকাল থেকেই ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছিল ওমায়রা। হারিয়েছিল কথা বলার শক্তি। তবু বাঁচার আশা ছাড়েনি। তাই বুঝি বার বার ডান হাতটা এগিয়ে দিচ্ছিল মারিয়ার দিকে। যেন সে বলতে চাইছিল, শেষবারের মত আমায় টেনে তোলার চেষ্টা করো না। মারিয়া লক্ষ্য করেছিলেন, ওমায়রার টানা টানা চোখ দুটিতে রক্ত জমতে শুরু করেছে। মুখের রঙ দ্রুত কালচে বাদামী হতে শুরু করেছে।
ওমায়রার জীবনের অন্তিম মুহূর্তগুলি ক্যামেরায় ধরে রাখছিলেন চিত্রসাংবাদিক ফ্র্যাঙ্ক ফোর্নিয়ার। আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাটি অমানবিক মনে হতে পারে। কিন্তু বর্বর কলম্বিয়া সরকারের মুখোশ খুলে দেওয়ার জন্য ক্যামেরা ছাড়া আর কোনও অস্ত্র ছিল না ফোর্নিয়ারের কাছে।
বেলা তখন দশটা। ওমায়রার মাথা পিছন দিকে হেলে গিয়েছিল। বড় বড় শ্বাস নিচ্ছিল ওমায়রা। রক্ত জমা চোখ দুটো ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসছিল অসীম ক্লান্তিতে। সর্বশক্তি একত্রিত করে মৃত্যুকূপ থেকে শেষবারের মত বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল ওমায়রা। শেষবারের মত চোখ খুলে, সুন্দর এই পৃথিবীটাকে দেখে নিতে চেয়েছিল। ওমায়রার শেষ চাউনিও ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন ফোর্নিয়ার। যে চাউনিতে ছিল অপরিসীম ঘৃণা।
এরপর কোঁকড়া কালো চুলে ভর্তি ওমায়রার মাথাটা ডুবে গিয়েছিল জলের ভেতর। কেবল নাক মুখ ও একটি চোখ দেখা যাচ্ছিল ওপর থেকে। তখন ঘড়িতে সকাল ১০.০৫। শেষ হয়েছিল দুঃসাহসী ওমায়রার টানা ষাট ঘণ্টার লড়াই। অমানুষিক যন্ত্রণা নিয়ে নিজেকে চিরতরে মুক্ত করে নিয়েছিল সে। ওমায়রা স্যাঞ্চেজের নিথর শরীর ঢেকে দেওয়া হয়েছিল নীল সাদা চাদর দিয়ে।
ফ্র্যাঙ্ক ফোর্নিয়ারের তোলা ওমায়রার শেষ ছবিটি দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল বিশ্ব। কলম্বিয়ার রাস্তায় রাস্তায় লক্ষ লক্ষ মানুষ তুলে ধরেছিলেন প্ল্যাকার্ড। সেগুলিতে লেখাছিল, “আগ্নেয়গিরি নয়, পঁচিশ হাজার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে অপদার্থ সরকার।”
ফুটফুটে ওমায়রা চির শান্তির দেশে চলে গিয়েছে সাইত্রিশ বছর আগে। কিন্তু জানেনকি, আজও সে উড়ে বেড়ায় পরিত্যক্ত আর্মেরো শহরের আনাচে কানাচে। ঝোপে ঝাড়ে। পরীর মত ডানা মেলে। হ্যাঁ কথাটা সত্যি। ২০২০ সালে পরিত্যক্ত আর্মেরো শহরে পাওয়া গিয়েছিল নতুন এক ঝিঁঝিপোকার প্রজাতি। ওমায়রাকে চিরকালের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে, বিজ্ঞানীরা প্রজাতিটির নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন ওমায়রার নাম। নতুন প্রজাতিটির নাম রাখা হয়েছিল ‘গিগাগ্রিলাস ওমায়রাই‘। আজও হয়ত প্রতি সন্ধ্যায়, পরিত্যক্ত আর্মেরো শহরে, রাতজাগা ঝিঁঝিপোকা হয়ে, কান্না ভেজা গলায় ওমেইরা চিৎকার করে চলেছে,”ও বাবা তুমি কোথায়?”,”ভাইরে তুই কই?”,”কাকিমা তুমি কোথায়? আমাকে বাঁচাও আমি যে তলিয়ে যাচ্ছি কাকিমা।”

✍️রূপাঞ্জন গোস্বামী

ভদ্রলোকের নাম 'রেমন্ড জোন্ডু'। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান বিচারপতি। ক'দিন আগে এ পদে নিয়োগের জন্য তাঁর একটি ইন্টারভিউ হয়...
06/07/2022

ভদ্রলোকের নাম 'রেমন্ড জোন্ডু'। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান বিচারপতি। ক'দিন আগে এ পদে নিয়োগের জন্য তাঁর একটি ইন্টারভিউ হয়, সেখানে তিনি নিজের জীবনের একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন .........

রেমন্ড (পরে বিচারপতি) যখন কলেজ শেষ করেন, তখন তাঁর পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার অবস্থা। কারণ বাড়িতে আয় করার মতো কেউ নেই। একমাত্র উপার্জনকারী মায়ের রোজগারও বছর দুয়েক আগে বন্ধ হয়ে গেছে। পড়ালেখার খরচ তো দূরের কথা, খাওয়া খরচ জোগাড় করাও মায়ের পক্ষে সম্ভব নয়।

তরুণ রেমন্ড দুয়ারে দুয়ারে কড়া নাড়লেন, কেউ সাড়া দিল না বরং সবাই তাঁকে বললো, পড়ার চিন্তা বাদ দিয়ে কোন কাজ খুঁজে নাও। আগে ফ্যামিলি বাঁচাও। কিন্তু রেমন্ড জোন্ডু কারো কথায় থেমে যাওয়ার পাত্র নন। স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ভবিষ্যত প্রধান বিচারপতির জন্ম হয়নি। কোথাও সাহায্য না পেয়ে তিনি হাত পাতলেন বাজারের এক অপরিচিত ভারতীয় মুদি দোকানদারের কাছে। ভদ্রলোকের নাম মুসা।

মুদি দোকানী অপরিচিত যুবকের সমস্যা শুনলেন। তারপর কোন যাচাই বাছাইয়ে না গিয়ে শুধু জিজ্ঞেস করলেন, তুমি পড়তে চাও? তার জন্য টাকা দরকার?
হ্যাঁ , আমি পড়তে চাই- চোখে অন্ধকার নিয়ে রেমন্ড উত্তর দিলেন। মুদি দোকানী বললেন, ঠিক আছে, আমি সাহায্য করবো।

তবে আমি নগদ টাকা দিতে পারবো না। তোমার মাকে বলবে, তিনি যেন প্রতি মাসে একদিন আমার দোকানে এসে তাঁর যা যা লাগে সব নিয়ে যান। আমি হিসেব রাখবো, পরে তুমি দাঁড়িয়ে গেলে শোধ করে দেবে।
পড়ালেখা শেষ করে যেদিন রেমন্ড জোন্ডু নিজ পায়ে দাঁড়ালেন, সেদিন তিনি দোকানী মুসা সাহেবের কাছে গেলেন।

বললেন, আপনার ঋণ শোধ করার সামর্থ্য আমার হয়েছে। আমি কিভাবে তা শোধ করবো? বাজারের সামান্য দোকানদার তখন জগতের সেরা উত্তরটি দিলেন--

"Just do to others , what I have done to you"--- অর্থাৎ "আমি তোমার জন্য যা করেছি, তুমি অন্যদের জন্য তাই করো"। শেষ কথাগুলো বলার সময় ইন্টাভিউ বোর্ডেই রেমন্ড আবেগাপ্লুত হয়ে চোখের পানি মুছলেন।

আমাদের আশেপাশে এমন বহু 'রেমন্ড' আছেন। আছেন জনাব মুছার চেয়ে হাজারও বিত্তশালী ব্যক্তি। আমরা কি পারিনা এই ধরণের 'রেমন্ড'দের পাশে দাঁড়িয়ে জনাব মুছার মতো গর্বিত হতে?

( বিদেশী পত্রিকা থেকে অনূদিত )

(সংগৃহিত)

Address

Kazipara
1216

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Bangladesh RockZ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Nearby travel agencies


Other Kazipara travel agencies

Show All