Mahdee Overseas H/L # 381

Mahdee Overseas H/L # 381 Hajj, umrah, Travel & Tourism
(7)

পরের উপকার করা ভালো কিন্তু নিজেকে পথে বসিয়ে নয় ।
05/12/2023

পরের উপকার করা ভালো কিন্তু নিজেকে পথে বসিয়ে নয় ।

Tesla
04/12/2023

Tesla

❛❛যখন দেখবে কলকাতার দাদারা আমার প্রশংসা করছে,তখন বুঝে নেবে যে আমি আমার দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছি।❜❜- শেরে-ই বাংলা এ কে ফজল...
04/12/2023

❛❛যখন দেখবে কলকাতার দাদারা আমার প্রশংসা করছে,তখন বুঝে নেবে যে আমি আমার দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছি।❜❜- শেরে-ই বাংলা এ কে ফজলুল হক

বিভক্তি যেন আমাদের সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাড়িয়েছে । ছোট থেকে বড়, পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাজনীতি সমাজে...
01/12/2023

বিভক্তি যেন আমাদের সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাড়িয়েছে । ছোট থেকে বড়, পরিবার থেকে সমাজ, সমাজ থেকে রাজনীতি সমাজের সর্বস্তরে আজ শুধু বিভক্তি আর বিভক্তি ।

সমাজের কোথাও আজ ঐক্য নেই, কোথাও ঐক্যের কোনো ডাক নেই বা ঐক্যের পক্ষে কোনো জোরালো প্রচেষ্টাও নেই । বরং উল্টোভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের পর্যায় থেকে বিভক্তির ডাক, বিভক্তির বিষবাষ্প, হিংসা, জিজ্ঞাংসা, উস্কানির বাণী ছড়ানো হয় । বিভক্তিকে আজ শক্তি হিসেবে গণনা করা হয় এবং নানাভাবে বিভক্তিকে জিইয়ে রাখার জন্য সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করা হচ্ছে ।

একদিকে নিজেকে, নিজের ব্যক্তিত্ব, দলমত, আদর্শকে বড় করে দেখা হয় । অন্যদিকে অন্যকে হেয় করা, ছোটো করা, অন্যকে মিথ্যা প্রতিপন্য করা, অন্যের দোষ ধরা ও দোষ খুঁজে বেড়ানোর মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে বিভক্তির বীজ বপন করা হচ্ছে । আর সমাজের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের পর্যায় থেকে যখন এমন বিভক্তির সংস্কৃতিকে লালন-পালন করা হয় তখন তা সমাজের সকল পর্যায়ে দাবানলের মতোন ছড়িয়ে পড়ে । যা রাষ্ট্রের জন্য কখনোই কল্যান বয়ে আনবে না ।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় নেতৃত্বে থেকেও ব্যক্তিবিশেষের অন্তরে লালিত হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণার আগুন যখন না নিভিয়ে তা আরো লালন-পালন করা হয় তখন তা প্রকৃত অর্থেই সমাজে দাবানলের মতন ছড়িয়ে পড়ে পুরো সমাজকে বিভক্ত ও টুকরো-টুকরো করে জালিয়ে, পুড়িয়ে ছারখার করে ফেলে ।আজকে আমাদের সমাজে কোথায় বিভক্তি নেই ? একেবারে রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে রাজনীতি, সমাজ, অফিস-আদালত, শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থব্যবস্থা, পরিবার, এমনকি ভাই-বোন, ভাই-ভাই, বোন-বোন, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সকল পর্যায়ে আজ শুধু বিভক্তি আর বিভক্তি ।

আজকে মসজিদে যখন জোহরের নামাজ পড়ছিলাম তখন নামাজ শেষ হতেই মসজিদের বাইরে থেকে তুমুল শোরগোল শুরু হয়ে গেলো । আমরা সুন্নত পড়ছি এই সময়ের মধ্যে শোরগোলের আওয়াজ না কমে ক্রমে তা আরো বেড়েই চলতে লাগলো । যখন মসজিদ থেকে বের হলাম তখনো অসংখ্য মানুষ সেখানে জমা হয়ে আছে এবং হৈচৈ চলছেই । পরে শুনলাম মসজিদের সামনে হোন্ডা রাখা নিয়ে গন্ডগোলের সুত্রুপাত । কিছু মানুষ থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু কোনো পক্ষই কারো কথা শুনছে না বরং শোরগোল করেই চলছে । অথচ তখনও মসজিদে নামাজ চলছে কিন্তু যারা মসজিদের বাইরে তারা নামাজের প্রতি, মসজিদের প্রতি কোনো সম্মান না দেখিয়ে শোরগোল করেই চলছে । তখন চিন্তা করলাম আসলে আমাদের সমাজে এখন এমন যোগ্য ব্যক্তির সংখা কমে গেছে যারা কোনো সমস্যাকে, কোনো বিভক্তিকে বন্ধ করতে বা রোধ করতে পারে বরং এমন অযোগ্য লোকের সংখাই বেড়ে গেছে যারা সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং কোনো বিভক্তিকে বন্ধ না করে বরং তা আরো উসকে দিতে পারে ।

এটি একটি ছোট ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলেও ধারাবাহিকভাবে আমরা জানি কিভাবে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও শক্তিগুলো আজ চরমভাবে বিভক্ত । তারা প্রতিনিয়ত তাদের সর্বোচ্চ শক্তি, মেধা ও যোগ্যতা ব্যবহার করে অন্যদলের ক্ষতি ও ধ্বংসের জন্য এবং একদল যখন ক্ষমতায় যায় তখন তারা দলীয় শক্তির ঊর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে অন্য দলমতের উপর নিয়মতান্ত্রিক ও ধারাবাহিকভাবে জুলুম-নির্যাতন করে । তাদের প্রতিটি বক্তব্য, প্রতিটি কর্মসূচী, প্রতিটি পরিকল্পনা থাকে অন্যের ক্ষতিবৃদ্ধির জন্য । সমাজের এই পচন রাষ্ট্রের মাথা থেকে শুরু করে একসময় সারা শরীরে ও সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে পড়বে । তাই আমরা দেখতে পাই কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, কিভাবে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য এমনকি নিছক খেলার মাঠের খেলোয়াড়রা পর্যন্ত আজ দলবাজি, রাজনীতি ও ষড়যন্ত্রের খেলায় লিপ্ত থেকে অন্যের ক্ষতি করতে চায় তারপ্রতি অন্তরে লালিত হিংসা, বিদ্ধেস ও কুটিলতা থেকে ।

অথচ আল্লাহর দেয়া দ্বীন ইসলাম আমাদের সম্পূর্ণ বিপরীত শিক্ষা দেয় । জাতিবাদ, বর্ণবাদ নামক নানারকম বিভক্তির বদলে সবাইকে মিলেমিশে থাকতে বলে । হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সবাইকে ভালোবাসতে বলে । সবাইকে ভাইভাই হয়ে থাকতে বলে । পরিবারে ও সমাজে বেশি বেশি সালামের প্রচলন করতে বলে । বেশি বেশি দান-সদকা ও মেহমানদারীর কথা বলে । আত্মীয়-স্বজনের খোঁজখবর রাখতে বলে । অন্যের প্রতি সহনশীল আচরণ করতে বলে । প্রার্থীর হাত ফিরিয়ে দিতে নিষেধ করে । মানুষের মাঝে বিরোধ মীমাংসা করে দিতে বলে । তিনদিনের বেশি কারো সাথে কথা বন্ধ রাখতে নিষেধ করে । অন্যের প্রতি জুলুম, কুৎসা, গীবত, নামীমা, পরনিন্দা, পরচর্চা করতে নিষেধ করে । অন্যকে নিয়ে উপহাস, গালমন্দ করতে নিষেধ করে । অন্যের অধিকার হরণ করতে নিষেধ করে । এসবই হলো দ্বীনইসলামের শিক্ষা ।

আমরা জানি বিশ্বনবী মুহাম্মদ ﷺ এর আবির্ভাবের আগে মক্কার সমাজ কিভাবে বিভক্ত ছিল । তখন বিভক্তি ও গোত্রবাদই ছিল সমাজে বেঁচে থাকার একমাত্র শক্তি । তখন এক গোত্র আরেক গোত্রের সাথে যুগের পর যুগ তুচ্ছ সব কারণে বিরোধে ও যুদ্ধে লিপ্ত থাকতো । বিভক্তির কারণে সমাজে মারামারী, রক্তপণ, যুদ্ধ, কুৎসা রটনা, কুৎসার মাধ্যমে সাহিত্য রচনা করা এগুলোই ছিলো বেচে থাকার শক্তি ও প্রেরণা । কেউ যদি অন্যের প্রতি প্রতিশোধ নিতে না পারতো তবে তার জীবনটাই বৃথা মনে করা হতো আর যারা তেমনটা পারতো তারা সমাজে গৌরব ও সন্মানের আসীনে অধিষ্ঠিত হতো । আর ইসলামের ভাষায় এগুলোই ছিলো জাহিলিয়াত ও অজ্ঞতাপূর্ণ সমাজ ।

মহানবী মুহাম্মদ ﷺ সেই জাহিলিয়াতের সমাজে আল্লাহর নাজিল করা বাণী দিয়ে, তাঁর পবিত্র ও উত্তম চরিত্র দিয়ে, তাঁর সুন্দর-সুললিত ভাষা দিয়ে, তাঁর ভালোবাসা দিয়ে, তাঁর মানবিক গুণাবলী দিয়ে প্রথমে মদীনার বিভক্ত আউস-খাজরাজকে গোত্রকে একত্রিত করলেন, তারপর মক্কা বিজয়ের পরে মক্কা ও মদিনার মানুষের বিভক্ত অন্তরগুলোকে জুড়ে দিলেন, বিভক্ত গোত্রবাদ ভেঙে একটি আদর্শপূর্ণ সমাজ ও সভ্যতা তৈরী করলেন, সেই সভ্যতা থেকে একটি একক উম্মাহ তৈরী করলেন । পূর্বে যারা একে অন্যের প্রতি যুদ্ধ করতো তাদেরকে পরস্পর ভাই-ভাই হিসেবে বৃহত্তর উম্মাহ তৈরি করলেন এবং সেই এক উম্মাহর বাণী সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে দিলেন ।

এই জন্যই মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ ﷺকে বলা হয় রাহমাতুল্লিল আলামিন বা সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য রহমত, কারণ তিনিই একমাত্র মানবজাতিকে সকল প্রকার বিভক্তি ও জুলুমের বদলে ঐক্যবদ্ধ ও ন্যায়-ইনসাফের সমাজ করতে পেরেছিলেন মহান আল্লাহর বাণীর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ।

আর আজকে যখনই আমরা আল্লাহর হুকুমের বাইরে গিয়ে মানব তৈরি তন্ত্রমন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও পুঁজিবাদ কায়েম করেছি, ব্যক্তি পুজা করেছি, গোত্রবাদ কায়েম করেছি, নীতি-আদর্শ বিহীন দলকানা রাজনীতিতে ডুবে থেকেছি তখনই সমাজে বিভক্তি ও জুলুম আবারো চরম আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এবং জাহিলিয়াতের রাস্তা প্রশস্ত হয়ে জমিন ছাড়িয়ে আজ আকাশ-বাতাস পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে ।

আল্লাহ আমাদের তার হুকুম ও নবীর সুন্নাহর বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজ থেকে সকল প্রকার বিভক্তি ও জাহিলিয়াত দূর করার তৌফিক দান করুন এবং বিভক্ত অন্তরগুলোকে জুড়ে দিয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি দান করুন, আমীন ।
Shameem Sayedee শামীম সাঈদী

তাহলে কি দেশ প্রমিকের সংজ্ঞা হচ্ছে ভারত সাপোর্ট করা ?
26/11/2023

তাহলে কি দেশ প্রমিকের সংজ্ঞা হচ্ছে ভারত সাপোর্ট করা ?

Copy: Shameem Sayedee শামীম সাঈদী ইসলাম বিশ্বজনীন এক ‍চিরন্তন ও শাশ্বত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা । ইসলামে রয়েছে নারীর সম্মা...
25/11/2023

Copy: Shameem Sayedee শামীম সাঈদী
ইসলাম বিশ্বজনীন এক ‍চিরন্তন ও শাশ্বত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা । ইসলামে রয়েছে নারীর সম্মান, মর্যাদা ও সকল অধিকারের স্বীকৃতি, রয়েছে তাদের সতীত্ব সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক কর্মসূচী । তাদের সম্মান, মর্যাদা ও সতীত্ব অক্ষুন্ন রাখতেই ইসলাম তাদের উপর আরোপ করেছে হিজাব বা পর্দা পালনের বিধান ।

মূলত ‘হিজাব বা পর্দা’ নারীর সৌন্দর্য ও মর্যাদার প্রতীক । নারীর সতীত্ব ও ইজ্জত-আবরুর রক্ষাকবচ । নারী-পুরুষ উভয়ের চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার অতি সহজ ও কার্যকর উপায় ।
এ বিধান অনুসরণের মাধ্যমে হৃদয়-মনের পবিত্রতা অর্জন করা সম্ভব । এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা বলেনঃ এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারন । (সূরা আহযাব: ৫৩)

ইসলাম পর্দা পালনের যে বিধান আরোপ করেছে তা মূলত অশ্লীলতা ও ব্যভিচার নিরসনের লক্ষ্যে এবং সামাজিক অনিষ্টতা ও ফেতনা-ফাসাদ থেকে বাঁচার নিমিত্তেই করেছে । নারীদের প্রতি কোনো প্রকার অবিচার কিংবা বৈষম্য সৃষ্টির জন্য করেনি ।
বরং তাদের পবিত্রতা ও সতীত্ব রক্ষার্থেই তাদের উপর এ বিধানের পূর্ণ অনুসরণ অপরিহার্য করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
‘আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে ।’ (সূরা আহযাব: ৩৩)

এ জন্য পর্দা-বিধান ইসলামী শরীয়তের পক্ষ থেকে সাধারণভাবে সমাজ-ব্যবস্থার এবং বিশেষভাবে উম্মতের নারীদের জন্য অনেক বড় ইহসান । এ বিধানটি মূলত ইসলামী শরীয়তের যথার্থতা, পূর্ণাঙ্গতা ও সর্বকালের জন্য অমোঘ বিধান হওয়ার এক প্রচ্ছন্ন দলিল ।

মানবসমাজকে পবিত্র ও পঙ্কিলতামুক্ত রাখতে পর্দা বিধানের কোনো বিকল্প নেই । বিশেষ করে বর্তমান সমাজের যুবক ও তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা ও নারীজাতির নিরাপত্তার জন্য পর্দা-বিধানের পূর্ণ অনুসরণ এখন সময়ের দাবি ।

★পর্দা-পরিচিতি: ‘পর্দা’ শব্দটি মূলত ফার্সী । যার আরবী প্রতিশব্দ ‘হিজাব’। পর্দা বা হিজাবের বাংলা অর্থ- আবৃত করা, ঢেকে রাখা, আবরণ, আড়াল, অন্তরায়, আচ্ছাদান, বস্ত্রাদি দ্বারা সৌন্দর্য ঢেকে নেয়া, আবৃত করা বা গোপন করা ইত্যাদি ।

ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, নারী-পুরুষ উভয়ের চারিত্রিক পবিত্রতা অর্জনের নিমিত্তে উভয়ের মাঝে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত যে আড়াল বা আবরণ রয়েছে তাকে পর্দা বলা হয় ।

আবার কেউ কেউ বলেন, নারী তার বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ রূপলাবণ্য ও সৌর্ন্দয পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে আড়ালে রাখার যে বিশেষ ব্যবস্থা ইসলাম প্রণয়ন করেছে তাকে পর্দা বলা হয় ।

মূলত হিজাব বা পর্দা অর্থ শুধু পোশাকের আবরণই নয়, বরং সামগ্রিক একটি সমাজ ব্যবস্থা, যাতে নারী-পুরুষের মধ্যে অপবিত্র ও অবৈধ সম্পর্ক এবং নারীর প্রতি পুরুষের অত্যাচারী আচরণ রোধের বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে ।

★পর্দার বিধান: পর্দা ইসলামের সার্বক্ষণিক পালনীয় অপরিহার্য বিধান। কোরআন-সুন্নাহর অকাট্য দলীল প্রমাণাদির ভিত্তিতে নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি বিধানাবলীর মতো সুস্পষ্ট এক ফরয বিধান ।

আল্লাহ তায়ালাই এ বিধানের প্রবর্তক । এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
‘যখন তোমরা তাদের নিকট কিছু চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে । এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ’। (সূরা আহযাব: ৫৩)

এ বিধানের প্রতি পূর্ণ সমর্পিত থাকাই ঈমানের দাবি । এ বিধানকে হালকা মনে করা কিংবা এ বিধানকে অমান্য করার কোনো অবকাশ নেই । কেননা ইসলামী শরীয়তের সুস্পষ্ট বিধানের বিরোধিতা করার অধিকার কারো নেই ।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ ۗ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِينًا
‘আল্লাহ এবং তার রাসূল কোনো বিষয়ের নির্দেশ দিলে কোনো মু’মিন পুরুষ কিংবা কোনো মু’মিন নারীর জন্য সে বিষয় অমান্য করার কোনো অধিকার থাকে না। আর যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করে সে অবশ্যই প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট।’ (সূরা আহযাব: ৩৬)

★পর্দার গুরুত্ব: পর্দার গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
হে নবী ! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয় । এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে । ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না । আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু । (সূরা আহযাব: ৫৯)
এ আয়াতে পর্দার সঙ্গে চলাফেরা করার গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে যে, পর্দার সহিত চলাফেরা করলে সবাই বুঝতে পারবে তারা শরীফ ও চরিত্রবতী নারী । ফলে পর্দানশীন নারীদেরকে কেউ উত্যক্ত করার সাহস করবে না ।

প্রকৃতপক্ষে যারা পর্দাহীনভাবে চলাফেরা করে অধিকাংশ সময় তারাই ইভটিজিং ও ধর্ষণসহ নানা রকমের নির্যাতনের সম্মুখীন হয় এবং রাস্তাঘাটে তারাই বেশি ঝামেলার শিকার হয় । তাই নারীর সতীত্ব ও ইজ্জত-আবরু রক্ষার্থে পর্দার গুরুত্ব অপরিসীম ।

হাদীস শরীফেও পর্দার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে মহানবী রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু । যখন সে পর্দাহীন হয়ে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায় । (তিরমিযী: ১১৭৩)

অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আলী (রা.) বর্ণনা করেন, একদা তিনি বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকটে ছিলেন । তখন আখেরীনবী রাসুলুল্লাহ ﷺ সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম বিষয় কোনটি ? তারা চুপ হয়ে গেলেন । (কেউ বলতে পারলেন না)
অতপর আমি ফিরে এসে ফাতেমা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম বিষয় কোনটি ? তিনি বললেনঃ কোনো পরপুরুষ তাকে দেখবে না (অর্থাৎ নারী পর্দাবৃত থাকবে)। তারপর আমি ঐ বিষয়টি রাসুলে আকরাম ﷺ এর নিকট উল্লেখ করলাম । তিনি বললেনঃ নিশ্চয় ফাতেমা আমার অংশ, সে সত্য বলেছে)। (মুসনাদুল বাযযার: ৫২৬)
এতে পর্দার গুরুত্ব পরিস্ফূটিত হয় । আর পারিপার্শ্বিকতার বিবেচনায় বিবেকের দাবীও তাই । এছাড়াও পরিপুর্ন পর্দা পালনের মাধ্যমে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় ও সম্মানিত হতে পারে ।

কেননা হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা পর্দানশীনদের ভালোবাসেন । পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছেঃ
‘তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন ও সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন।’ (সূরা হুজুরাত: ১৩)

প্রকৃত অর্থে তাকওয়া সম্পন্ন বা মুত্তাকী হলো ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর নির্দেশসমূহ মেনে চলে । আর সর্বসম্মতিক্রমে পর্দা আল্লাহর সুস্পষ্ট নির্দেশ । যেহেতু পর্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য অবশ্য পালনীয় নির্দেশ সেহেতু পর্দা পালনের মাধ্যমে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত ও মর্যাদা সম্পন্ন হতে পারে ।
এছাড়াও পর্দা-বিধান সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করলে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, এ বিধানের পূর্ণ অনুসরণের মাধ্যমে নারী ও পুরুষের নৈতিক চরিত্রের হিফাযত হয় । পারিবারিক ব্যবস্থা সুরক্ষিত ও সুদৃঢ় হয় । কারণ, পর্দা পালনের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পরকিয়াবিহীন পবিত্র জীবন গঠিত হয় এবং চরিত্রহীনতা ও অবিশ্বাস তাদের থেকে বিদায় নেয় । তাই মুসলিম উম্মাহ অকপটে স্বীকার করতে বাধ্য যে, দুনিয়া ও আখিরাতে পর্দার গুরুত্ব অনস্বীকার্য ।

★পর্দাহীনতার পরিণতি: মূলত পর্দাহীনতার কারণে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা, অপকর্ম ও ব্যভিচারের মতো নিকৃষ্ট পাপের সূচনা হয় । যার কারণে ইভটিজিং, ধর্ষণ ও যৌন সন্ত্রাস প্রকট আকার ধারণ করে । ফলে নানা অঘটনসহ ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন বিপর্যস্ত হয় । যার বাস্তব চিত্র নিত্যদিনের সংবাদপত্র খুললেই চোখে পড়ে ।

এছাড়াও পর্দাহীনতার কারণে পরকিয়া ও চরিত্রহীনতার মতো ঘৃণিত কর্মের সূত্রপাত হয় । যার ফলে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস উঠে যায় । এতে পরিবারে অশান্তি ও বিপর্যয় নেমে আসে । যার বাস্তবতা আজ আমাদের নখদর্পণে ।

মূলত পর্দাহীন নারীরা হচ্ছে জগতের সবচেয়ে নিকৃষ্ট নারী । তাদের ব্যাপারে মানবতার বন্ধু মুহাম্মাদ ﷺ বলেনঃ তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে সবচে নিকৃষ্ট তারাই যারা পর্দাহীনভাবে চলাফেরা করে। (বায়হাকী: ১৩২৫৬)

তাই আমরা বলতে পারি যে, সুসভ্য ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী নারী কিছুতেই পর্দাহীন হতে পারে না । এমনকী অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে দয়ালনবী রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে লা’নত দিয়েছেন ।

এ প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবীকরিম আহমাদে মুহাম্মাদ ﷺ লা’নত (অভিশাপ) দিয়েছেন সেসব নারীদেরকে যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে । অর্থাৎ পর্দাহীনভাবে চলাফেরা করে । (আবু দাউদ: ৪০৯৭)

এছাড়াও পর্দাহীনতার কারণে আল্লাহর বিধানকে অমান্য করা হয় । আর এ অবাধ্যতার কারণে আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি ।

এ প্রসঙ্গে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, সাইয়েদুল মুরসালীন মুহাম্মাদ ﷺ বলেনঃ দুই শ্রেণীর জাহান্নামীদেরকে আমি দেখিনি (অর্থাৎ পরবর্তী সময়ে সমাজে তাদের দেখা যাবে)।
এক. এমন সম্প্রদায়, যাদের হাতে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, আর সেই চাবুক দিয়ে তারা (অন্যায়ভাবে) মানুষকে প্রহার করবে ।
দুই. এমন নারী, যারা পোশাক পরিধান করা সত্ত্বেও নগ্ন । তারা অন্যদেরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে এবং নিজেরাও অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট হয়৷ । তাদের মাথা হবে উটের হেলে পড়া কুঁজের মতো । তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এমনকি জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না, অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ অনেক অনেক দূর থেকেও পাওয়া যায় । (মুসলিম: ৫৪৪৫)

এ হাদীসে মূলত পর্দাহীনতার ভয়াবহ পরিণতির প্রতি ইঙ্গিত করেই বলা হয়েছে যে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এমনকী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না ।

এ হাদীস থেকে পর্দাহীনতার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জানা যায় যে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি । তাই জান্নাত প্রত্যাশী কোনো নারী কিছুতেই পর্দাহীন হতে পারে না । এ হাদীস থেকে আরো জানা যায় যে, যেসব পুরুষ তাদের অধীনস্ত নারীদের পর্দায় রাখার চেষ্টা করে না, তাদের জন্যও অনুরূপ পরিণতি ।

যেভাবে পর্দা পালন করতে হবে: একজন নারীর পর্দা পালনের তিনটি পর্যায় রয়েছে । যথা- গৃহে অবস্থানকালীন পর্দা, বাইরে গমনকালীন পর্দা এবং বৃদ্ধা অবস্থায় পর্দা ।

কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেকটি পর্যায়ে পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে । সামনে পর্দার তিনটি পর্যায় সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করা হলো ।

★গৃহে অবস্থানকালীন পর্দা: নারীর প্রধান আবাসস্থল হলো তার গৃহ । সাধারণত গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করা নারীর জন্য শোভনীয় । এ জন্য আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে তাদের গৃহাভ্যন্তরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন ।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করো, প্রাচীন জাহেলী যুগের নারীদের ন্যায় নিজেদেরকে প্রর্দশন করো না। (সূরা আহযাব: ৩৩)
মূলত নারী নিজেকে যতো সংযত ও আবৃত রাখে আল্লাহ তায়ালার কাছে সে ততোই প্রিয় হয়ে ওঠে । ইসলামের দৃষ্টিতে তার মর্যাদা ও ব্যক্তিত্ব ততোই উচ্চতর হয়ে ওঠে ।
তাই মু’মিন নারীদের উচিত গৃহাভ্যন্তরে এমনভাবে অবস্থান করা যাতে আত্মীয় বা অনাত্মীয় কোনো গায়রে মাহরাম বা পরপুরুষের দৃষ্টিতে সে না পড়ে । আর এভাবে গৃহে অবস্থান করার মাধ্যমেই পর্দার যথার্থতা অর্জিত হয় ।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন তোমরা তাদের (নবী পত্মীদের) কাছে কিছু চাইবে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে । এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ । (সূরা আহযাব: ৫৩)
এ আয়াতে বিশেষভাবে নবী-পত্মীদের কথা উল্লেখ থাকলেও এ বিধান সমগ্র উম্মতের জন্য ব্যাপকভাবে প্রযোজ্য ।

এ বিধানের সারমর্ম এই যে, নারীদের কাছ থেকে ভিন্ন পুরুষদের কোনো ব্যবহারিক বস্তু, পাত্র, বস্ত্র ইত্যাদি নেয়া জরুরী হলে সামনে এসে নেবে না, বরং পর্দার আড়াল থেকে চেয়ে নিবে ।

এ নির্দেশনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নারীরা তাদের গৃহে অবস্থানকালীন মুহুর্তেও গায়রে মাহরাম বা পরপুরুষ, নিকটাত্মীয় হোক বা দূরাত্মীয় সকলের কাছ থেকে সম্পূর্ণ পর্দার আড়ালে অবস্থান করবে ।

তবে প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল থেকেই কথা বলবে । আর পরপুরুষরাও পর্দার আড়াল থেকেই কথা বলতে হবে । এতে পর্দার অপরিহার্যতা পরিস্ফূটিত হয় ।
★আয়াতের শেষাংশে পর্দার গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, পর্দার এ বিধান পুরুষ ও নারী উভয়ের অন্তরকে মানসিক কুমন্ত্রণা থেকে পবিত্র রাখার উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে ।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে নবী ! ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত সংযত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে । তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা করে, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো । (সূরা নূর: ৩১)

এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, নারীরা মাহরাম পুরুষ অর্থাৎ এমন পুরুষ যাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ, তারা ব্যতীত অন্য কোনো পুরুষের সামনে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারবে না । এতে পর্দার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয় ।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বনেতা রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ তোমরা নারীদের নিকট যাওয়া থেকে বিরত থাক । তখন এক আনসার সাহাবী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ﷺ দেবরের ব্যাপারে আপনার অভিমত কি ? তিনি বললেন, দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য । (বুখারী: ৫২৩২)
আলোচ্য হাদীসে ব্যবহৃত ‘হামউ’ শব্দের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে স্বামীর নিকটাত্মীয় । শব্দটির উদ্দেশ্য ব্যাপক । শব্দটি দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, স্বামীর যেকোনো দিকের ভাই, চাচা, মামা, খালু, ফুফা এবং তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে সন্তান । যেমন: দেবর, ভাসুর, চাচা শ্বশুর, মামা শ্বশুর, তাদের প্রত্যেকের ছেলে সন্তান ইত্যাদি ।

ইমাম তিরমিযী, লাইস ইবনু সা’দ, আল্লামা কাযী ইয়ায ও তাবারী সহ বহু আলেম অনুরূপ ব্যাখ্যা করেছেন । অর্থাৎ নারীর জন্য তার দেবর, ভাসুর, চাচা শ্বশুর, মামা শ্বশুর ও তাদের ছেলেদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা থেকে দূরে থাকতে হবে যেভাবে মৃত্যু থেকে দূরে থাকতে চায় ।
★বাইরে গমনকালীন পর্দা: বলা বাহুল্য যে, নারীদের জন্য গৃহের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী । এজন্য ইসলাম প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন ।
এ প্রসঙ্গে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ ﷺ তার স্ত্রী হযরত সাওদা (রা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেনঃ প্রয়োজনে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে । (বুখারী: ৪৭৯৫)

মূলত ইসলাম একটি সর্বাঙ্গীন ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা । তাই মানব প্রয়োজনের সকল দিকই ইসলামে বিবেচিত হয়েছে । তবে এক্ষেত্রে পর্দাবৃত হয়েই বাইরে বের হতে হবে । কিছুতেই পর্দাহীনভাবে বের হওয়া যাবে না ।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবী নবীকরিম ﷺ বলেনঃ নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু, যখনই সে পর্দাহীনভাবে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে উঁকি মেরে তাকায় । (তিরমিযী: ১১৭৩)

আর পবিত্র কুরআনে নারীদেরকে বাইরে গমনকালীন মুহুর্তে পূর্ণ পর্দা পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে । এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সুস্পষ্ট নির্দেশ, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা এবং মু’মিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন (প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার সময়) তাদের (পরিহিত) জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয় । এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ।’ (সূরা আহযাব: ৫৯)

এ আয়াতে নারীদেরকে বাইরে গমনের সময় তাদের পরিহিত জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

★ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন, জিলবাব হলো নারীর এমন পোশাক যা দিয়ে তারা পুরো দেহ ঢেকে রাখে । অর্থাৎ বাইরে গমনের সময় দেহের সাধারণ পোশাক- জামা, পাজামা, ওড়না ইত্যাদির উপর আলাদা যে পোশাক পরিধান করার মাধ্যমে নারীর আপাদমস্তক আবৃত করা যায় তাকে জিলবাব বলা হয় । আমাদের দেশে যা বোরকা নামে পরিচিত ।

এ থেকে বুঝা যায় যে, বাইরে গমনের সময় বোরকা পরিধান করে আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়া আবশ্যক । আর আয়াতে জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে নেয়া । যা সাহাবী, তাবেয়ী ও নির্ভরযোগ্য মুফাসসিরদের তাফসীর থেকে প্রতিভাত হয় ।
এ প্রসঙ্গে আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা (এ আয়াতে) মুমিন নারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রয়োজনে তারা যখন বাইরে যাবে তখন তারা যেন জিলবাব দিয়ে (পুরো দেহ আবৃত করার পর) তাদের মাথার উপর দিক থেকে তাদের মুখমণ্ডলও আবৃত করে নেয় । তবে তারা (চলাফেরার সুবিধার্থে) দুটি চোখ খোলা রাখবে। (ইবনে কাসীর: ৬/৪৮২)
সাহাবী ও তাবেয়ীগণের পরবর্তী মুফাসসিরদের ব্যাখ্যার দিকে তাকালেও দেখা যায় যে, ইবনে জারীর তাবারী, ইবনে কাসীর, বায়যাবী, বাগভী, নাসাফী, সুয়ূতি, আবু বকর জাসসাস, মুফতি মুহাম্মদ শফিসহ সব তাফসীরকারকগণ এ আয়াতের অনুরূপ ব্যাখ্যাই করেছেন ।

অর্থাৎ সকলে একমত পোষণ করেছেন যে, এ আয়াতে নারীদেরকে তাদের চেহারাসহ আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে । এতে বাইরে গমনকালীন পর্দার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয় ।

আর এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো, কোনো প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যেতে হলে তখন তার জন্য আবশ্যক হচ্ছে চেহারাসহ গোটা দেহ আবৃত করে পূর্ণ পর্দার সঙ্গে বের হওয়া । যা সর্বসম্মতিক্রমে ফরয ।

এক্ষেত্রে জিলবাব বা বোরকা পরিধানের মাধ্যমে আপাদমস্তক আবৃত করে নিবে । প্রয়োজনে চেহারা বা মুখমণ্ডলের জন্য আলাদা নিকাব ব্যবহার করবে । আর হাতের কব্জি ও পায়ের গোড়ালীর জন্য মোজা পরিধান করবে । তবে চলাফেরার সুবিধার্থে রাস্তা-ঘাট দেখার জন্য শুধু চোখ খোলা রাখবে ।

★বৃদ্ধা অবস্থায় পর্দা: বয়স্ক নারীদের জন্য পর্দা পালনের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা গ্রহণেন অবকাশ রয়েছে । এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ ‘অতিশয় বৃদ্ধা নারী, যারা বিবাহের আশা রাখে না, তাদের জন্য অপরাধ নেই, যদি তারা তাদের সৌর্ন্দয প্রদর্শন না করে তাদের অতিরিক্ত বস্ত্র খুলে রাখে । তবে এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম । আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ ।’ (সূরা নূর: ৬০)

আয়াতের নির্দেশনা হল, যে বৃদ্ধা নারীর প্রতি কেউ আকর্ষণ বোধ করে না এবং সে বিবাহেরও যোগ্য নয় তার জন্য পর্দার বিধান শিথিল করা হয়েছে । গায়রে মাহরাম ব্যক্তিও তার কাছে মাহরামমের ন্যায় হয়ে যায় । মাহরামদের কাছে যেসব অঙ্গ আবৃত করা জরুরী নয় । বৃদ্ধা নারীদের জন্য গায়রে মাহরাম পুরুষদের কাছেও সেগুলো আবৃত করা জরুরী নয় ।

এরূপ বৃদ্ধা নারীর জন্য বলা হয়েছে, মাহরাম পুরুষদের সামনে যেসব অঙ্গ খুলতে পারবে, গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনেও সেগুলো খুলতে পারবে । (তাফসীরে মা’আরেফুল কুরআন: ৬/৪৩৯)

এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো, চরম বার্ধক্যে পৌঁছার কারণে যেসকল নারী বিবাহের উপযুক্ত নয় এবং যাদের প্রতি কারো আকর্ষণ সৃষ্টি হয় না, এ ধরনের বৃদ্ধা নারীর জন্যই এ বিধান । তাদেরকে এই সুবিধা দেয়া হয়েছে যে, গায়রে মাহরাম পুরুষের সামনে অন্যান্য নারীদেরকে যেমন আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হয়, তাদের জন্য তা জরুরী নয় ।

এ রকম বৃদ্ধা নারীগণ তা ছাড়াই পরপুরুষের সামনে যেতে পারবে । তবে শর্ত হল, তারা তাদের সামনে সেজেগুঁজে যেতে পারবে না । এর সঙ্গে স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বিধানের এ শিথিলতা কেবলই জায়েয পর্যায়ের ।

সুতরাং তারা যদি বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে এবং অন্যান্য নারীদের মত তারাও পরপুরুষের সামনে পুরোপুরি পর্দা রক্ষা করে চলে তবে সেটাই তাদের জন্য উত্তম । (তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন: ২/৪৬৮)

—★পরিশেষে বলছি, এ বিধানের ব্যাপারে সারকথা হলো, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে হিজাব বা পর্দা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নারী জাতির জন্য এক ফরয বিধান । সর্বাবস্থায় এ বিধানের প্রতি পূর্ণ সমর্পিত থাকা অপরিহার্য ।

তবে চিকিৎসা ইত্যাদি বিশেষ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন মাফিক শিথিলতা গ্রহণের অবকাশও অবশ্যই রয়েছে । আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সকলকে যথাযথভাবে এ বিধান পালনের তাওফীক দান করুন, আমিন ইয়া রব !

*শেষ বিচারটা হয়তো রাজনৈতিক হবে না, হবে অর্থনৈতিক- ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য*প্রধান বিরোধী দল বিএনপি একটি বড় ধরনের সমাবেশ কর...
25/11/2023

*শেষ বিচারটা হয়তো রাজনৈতিক হবে না, হবে অর্থনৈতিক- ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য*

প্রধান বিরোধী দল বিএনপি একটি বড় ধরনের সমাবেশ করেছে। সমাবেশকে ভণ্ডুল করে দেয়া হয়েছে। মানুষ কিন্তু ভোট দিতে চাচ্ছে। একটা ভীতির সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। শেষ বিচারের বিচারটা হয়তো রাজনৈতিক হবে না হবে অর্থনৈতিক। একটা কর্তৃত্ববাদী সরকার ততদিন টেকে যতদিন পর্যন্ত আপনার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকে। *সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেছেন।*

*চ্যানেল আইতে সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় টকশো ‘তৃতীয় মাত্রা’য় যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।*
এ সময় তিনি আরো বলেন, যখন মানুষ খুব কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করে, তখন বুঝতে হবে সেই মানুষ সমস্যার মধ্যে জর্জরিত আছে। আমরা যখন উত্তরাধিকার রেখে যেতে চাই তখন বড় চিন্তার উত্তরাধিকার হয়। *সেটা পদ্মা ব্রিজ, টানেল, ফ্লাইওভার দিয়ে রক্ষা করা যায় না।*
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কিন্তু বড় চিন্তা করেছেন। এটাই নেতৃত্বের জায়গা। বঙ্গবন্ধুর সময় কি অর্থনৈতিক কষ্টে ছিলাম কি অন্য কষ্টে ছিলাম এসব কেউ মনে রাখবে না। মনে রাখবে মানুষটা জীবন দিয়ে গেছে আমাদের জন্য। আমাদের নেতৃবৃন্দের উচিত বড় চিন্তা করা। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ আবার শান্ত হবে, ঝড় থেমে যাবে। গোলায় ধান ভরে উঠবে।
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আপনি যদি বিকাশমান গোষ্ঠী বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের যদি আপনি খাওয়া পড়ার ব্যবস্থা করে রাখতে পারেন তাহলে তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কম চিন্তা করে।
*যখন দেখে তার আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আরও খারাপ হচ্ছে তখন পরিবর্তনের জায়গা তৈরি হয়।*

*যারা দেশ চালাচ্ছেন তারা রাজনীতিতে যতটা বিনিয়োগ করলেন তার থেকে বেশি দল ভাঙার ক্ষেত্রে নির্বাচনে আনার ক্ষেত্রে করলেন।*
*এসব প্রণোদনা যদি আদা, পিয়াজ, ডিম, শাক লতাপাতার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দিতেন তাহলে আরও বেশি রাজনৈতিক সুফল পেতো।*
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ছয় মাস আগে বলেছিলাম *ত্রিমুখী সংকটে দেশ।*
এক. অর্থনৈতিক সংকট,
দুই. রাজনৈতিক সংকট ও
তৃতীয়ত বৈদেশিক সম্পর্কের সংকট।
এই ৬ মাসে এই ৩ সংকটই আরও গভীর হয়েছে। আরও নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। অথনৈতিক সংকটের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফিতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এটা সরকারি হিসেবে ১০ শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু খাদ্যমূল্য সূচক বেড়েছে ১৪ শতাংশের মতো। এরসঙ্গে আমরা ভাবতাম গ্রামে মূল্যস্ফিতি এতটা নয়। কিন্তু এখন দেখছি এটা সত্য নয়। সরকারি হিসেবে বলছে, গ্রামে আরও একটু বেশি। মূল্যস্ফিতি কি কমবে? না কমবে না। আমার টাকার মূল্যের অবনমনের কারণে এটা হবে। সরকার বর্তমানে ব্যয়ের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি অপারগ বা সংযমী। সেহেতু রাজস্ব ব্যয় ও উন্নয়ন প্রথম ৪/৫ মাসে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এটার ফলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শুধু বন্ধ হয়নি তা নয়, রাজস্ব ব্যয় পরিপালনের জন্য যেটা থাকে সরকারের নিজস্ব টাকায় করে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। গ্রামাঞ্চলে নির্বাচনকে ঘিরেও যেসব কাজ হয়ে থাকে সেসবও হচ্ছে না। ধরেন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিলেন সেটা কমে যাচ্ছে। ঠিকাদারকে বলতে হচ্ছে অপেক্ষা করো। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিনিয়োগও কমে গেছে। এখন আমদানি করতে পারছেন না। এলসি খুলতে পারছেন না। এটার ফলে সরকারি যে সুবিধা সরকারের হচ্ছে, আমদানি কমার ফলে বৈদেশিক মুদ্রায় ভারসাম্য আনার সুযোগ হচ্ছে। নভেম্বরে সব থেকে কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে রপ্তানিখাতে। আমদানি এক চতুর্থাংশ কমে গেছে। বাজারে গেলে দেখবেন প্রয়োজন অনুযায়ী আমদানি করা যাচ্ছে না। এমনকি ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে এটা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন ধরনের বৈদেশিক ব্যয় আরও বেড়ে গেছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ নেয়া বেড়েছে। যেটাকে আমরা ট্রেড ক্রেডিট বলি। যেগুলোর মূল্য অনেক বেশি। এরসঙ্গে বড় বড় প্রকল্পে ব্যয় পরিশোধের সময় চলে এসেছে। সাশ্রয়ী সময় যেটা ছিল ৩ বছর বা ৫ বছর যখন দিতে হয় না সেগুলো পার হয়ে গেছে। এই যে *বঙ্গবন্ধু টানেল করলাম। নিঃসন্দেহে বড় অর্জন। এটার জন্য যে ঋণ নিয়েছি এটা শুরু হবার আগেই টানেলের জন্য ঋণ পরিশোধের সময় এসে গেছে।*

*রূপপুর যখন চালু হবে আর ২ বছর পর, তখন ৫০০ মিলিয়ন ডলার বছরে দিতে হবে। এখন ২/২.৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধজনিত ব্যয়। আগামী বছর এটা ৩ বিলিয়ন হবে, এটা আরও লম্বা হতে থাকবে। এটাকে মেটানোর মতো বৈদেশিক ক্ষমতা আমাদের নাই।*

যেটুকু ছিল সেটাও আমাদের বিভিন্ন গড়মিলের কারণে নাই। অর্থনীতি এখন কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। সরকার এই মুহূর্তে ৩ মাসের অর্থনীতি নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। *নির্বাচনের আগে তারা যেটা করছে অর্থনীতিকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। আদার দাম, পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন। প্রশাসনিক ব্যবস্থা দিয়ে অর্থনীতি ব্যবস্থা ধরে রাখতে চাচ্ছেন। আবার বলছেন সিণ্ডিকেট আছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা দিয়ে সব ধরনের সমাধান করবো, এটা দিয়ে অর্থনীতি চলে না।*
আরও করা যায় না বিদেশি সম্পর্কের ক্ষেত্রে। এটাই আমি বলেছিলাম ৫/৬ মাস আগে। এখন অর্থনীতি কতোদিন সহ্য করতে পারবে এটা এখন দেখার বিষয়। আমরা কোনো একটা জায়গায় গিয়ে বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে যদি না পারি? আমাদের যে দেনা আছে তেল আনা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে সেটা কীভাবে মোকাবিলা করবো সেটা নিয়ে চিন্তা আছে? এ ছাড়াও শ্রমের বাজারে নতুন করে আন্তর্জাতিকভাবে যে তিরস্কার পাচ্ছি সেটাতো আছেই।

তিনি বলেন, এই রকম পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফ যা করার তা তারা করেছে। চুক্তি অনুযায়ী কতোগুলো শর্ত পূরণ করতে হবে তা তারা বলেছে। একটা বড় বিষয় প্রথমত রাজস্ব আদায় করতে পারি নাই। বৈদেশিক মজুত রক্ষা করতে পারি নাই। এ দুটো না পারার একটা বড় কারণ হলো- যে ধরনের টাকার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার কথা ছিল তা আমরা করি নাই। সরকার ভয় পেয়েছে এটার ফলে মূল্যস্ফিতি আরও বাড়বে। এর কারণে সুদের হার বাড়বে। সুদের হার বাড়লে যে ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আছে তারা অখুশি হবে। একই রকমভাবে ব্যাংকিং খাতে যেহেতু কোনো সংস্কার করা হয়নি এটাও সঞ্চালন করার ক্ষেত্রে যে তারল্য সেটাও আনতে পারেনি। *তাই বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফ’র কাছে নতুন করে চাওয়ার কিছু নাই।* প্রাপ্য যে কিস্তি নভেম্বরেরটা ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা আছে এসব প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় যে শেয়ার হোল্ডার আছে তারা যদি কোনো কারণে অন্যকোনো মনোভাব পোষণ করলে সেটার উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
*বড় মালিকের সঙ্গে একটা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন।* সেক্ষেত্রে তারা যদি তাদের প্রভাবিত প্রতিষ্ঠান দিয়ে কোনো শিক্ষা দিতে চায়। আপনিতো নিজেই বলেছেন তারা পদ্মা ব্রিজের টাকা আটকে দিয়েছিল। তারা যদি পদ্মা ব্রিজের টাকা আটকে দিতে পারে তাহলে অন্য টাকাওতো তারা আটকে দিতে পারে। যদিও আমি মনে করি না এই বয়ানটা পূর্ণভাবে সত্য। এই মুহূর্তে আপনি ৪ বিলিয়ন ডলারের মতো বাজেট সাপোর্ট নিয়েছেন। বাজেট সাপোর্ট কোনো প্রকল্পে যায় না। এটা কম সময়ের জন্য দেয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে সিপিডি’র অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন তার ভিতরে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্র্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এসেছিলেন। তিনি ‘এ’ পেয়েছিলেন। আমরা যেখানে ‘ডি’ পেয়েছি। তিনি বলেছিলেন, *ঋণ করে ঋণের টাকা শোধ করো না। ঋণ করে ঋণের টাকা শোধ করলে আরও বড় ঋণের জালে জড়িয়ে যাবে। আমরা ঋণ করে ঋণ করে শোধ করছি।*
আপনার জবাবদিহিতা যদি না থাকে আপনি এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে দায় সৃষ্টি করেন। আপনি দায় সৃষ্টি করছেন সন্তানের জন্য তার সন্তানের জন্য। যেটা করার আপনার অধিকার নাই। আপনার সাংবিধানিক অধিকার থাকলে মামলা করা যেতো। *আপনি কীভাবে ঋণ করে ঘি খাচ্ছেন? এখানে কষ্ট হবে আপনার সন্তানের, আপনার না।*

তিনি বলেন, *মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বাত্মক সম্পর্কের মধ্যদিয়ে গেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে যে ধরনের বাক্য ব্যবহার করি এটা সম্পর্কের জন্য অনুকূল না। এটার জন্য যেকোনো কূটনৈতিকই অস্বস্তি বোধ করবে। সরকার প্রধান যখন এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করেন তখন কূটনৈতিক কাজ করাটাও ব্যাহত হয়।*

সাম্প্রতিক সময়ে যে ধরনের দ্বন্দ্বের কথা লক্ষ্য করেছি সেটার একটা বড় জায়গা *গণতন্ত্র ও মানবাধিকার।*

*দ্বিতীয়, বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি* এবং কলুষিত আছে সে সমস্তের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য দেশকে ব্যবহার করা। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের মনোভাব ও তৎপরতা।

*তৃতীয় জায়গা শ্রমের মান।* সেটার সঙ্গেও মানবাধিকারের জায়গা যুক্ত আছে ইত্যাদি। যেকোনো ডেমোক্রেট সরকারের ধারাবাহিক ইতিহাস দেখেন সর্বদা শ্রমের বিষয়টি এক নম্বরে ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যে বৈরিতার জায়গা দেখেন সেখানেও শ্রমের বিষয়টি বড় জায়গায় ছিল। আপনি যদি ফিরে দেখেন আমাদের রপ্তানিমূলক শিল্প প্রসারের কারণে তাদের দেশে মধ্য পর্যায়ে শিল্প উঠে যাচ্ছে সেটার ক্ষেত্রেও এই শ্রমের বাজারের বিষয়টি জড়িত। সস্তা শ্রমকে ব্যবহার করে এবং শ্রমের প্রতি যথেষ্ট মর্যাদাপূর্ণ আচরণ না করার বিষয়টি ছিল। আরেকটি বিষয় এখনো আসেনি সেটাও আসবে। *এটা হলো পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়।* পরিবেশ, নারীর অধিকার, শ্রমের অধিকার তার সঙ্গে মানবাধিকার চক্রাকারে ডেমোক্রেট সরকারের ভিতরে কাজ করে। এই বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে। কারণ একটা নব্য দ্বিকেন্দ্রিক আদর্শিক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সেহেতু অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়াবে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের ক্ষেত্রে আপনার মানবাধিকারের বিষয়টি। মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টি এবং খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার। অনেকে অনেক কথা বলবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কি হয় না হয়, তাদের ইতিহাস। কিন্তু আমরা বর্তমান নিয়ে আলোচনা করছি। এটাই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। বাংলাদেশ যেহেতু বহু দিক থেকে একটি বিপন্ন সম্পর্কের মধ্যে আছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যে ফুটবল স্টেডিয়াম বানানো নিয়ে বলেন, ল্যাটিন আমেরিকায় খনিতে কাজ করা শ্রমিকরা আছে তাদের কথা বলেন বা আফ্রিকাতে অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজ করে তাদের কথা বলেন। এরসঙ্গে বাংলাদেশ অনেক বেশি মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। লক্ষ্যণীয় বিষয়, এটা আসবে রাজনৈতিক নাকি প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দিয়ে। এই মুহূর্তে যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে কংগ্রেস বা রিপ্রেজেন্টিটিভ দিয়ে আইন পাস করে কোনোকিছু নতুন হবে না। যদি হয় বিদ্যমান আইনের অধীনে আদেশ বলে হবে। *এখন ডনাল্ড লু’দের সিদ্ধান্তের বিষয়টি এসেছে।* এখন তারা আইনের অধীনে কাজটি করবে। এসব আইনের অধীনে দেখা যায়, ওনারা একটা টেস্ট কেস বের করেন। যেটা দিয়ে ওনারা *ঝিকে মেরে বউকে শিক্ষা দিতে চান।* শ্রম আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কিন্তু আত্মীয় পর্যায়ের না, তার নিচের পর্যায়ের। কিন্তু আঘাতটা তার উপর আসবে অন্যদেরকে বার্তা পৌঁছানোর জন্য। র‌্যাবের উপর যখন স্যাংশন এসেছিল তখনো আমরা এ রকম দেখেছিলাম। ওনারা অনেক সংকেত দেন। আমরা বলি এটা কিছু না। এখন বলছি এটাতো আমাদের না পৃথিবীকে বলেছে। আরে পৃথিবীর সবাই কী করে খায় এখানে। আসলে তো কল্পনা তো কল্পনা না। এই নামটা প্রতীকীভাবে এসেছে। আসলে নির্বাচন ৩ নম্বরে। ২ নম্বরে আছে ময়লা অর্থ, সম্পত্তি এটা আর প্রথম হচ্ছে শ্রমের বিষয়। শ্রমিকের অধিকার, ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার কীভাবে রক্ষা করবেন যদি নাগরিক অধিকার না থাকে। স্যাংশনের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসে কি আসে না? অনেক সময় বলা হয় ইরান, মিয়ানমার, রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, বেলারুশতো চলছে।
*স্যাংশন হলো মার্কিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত গুহার ভিতরে ঢুকে যাওয়া।* মিয়ানমার যতক্ষণ চীন এবং রাশিয়া আছে ততক্ষণ অন্য দেশ নিয়ে চিন্তা করে না। বেলারুশের কাছে রাশিয়া থাকলে সে আর অন্যকিছু চিন্তা করে না। ইরান তার তেল সম্পদ ও মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে নিয়ে মোকাবিলা করছে। *এইদেশগুলো যা পারে তা কি বাংলাদেশ পারবে?*
তার যে বাজার, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ শিক্ষা এসব মিলে এটাতো তার কাছে একক কোনো গোষ্ঠীর কাছে গুহায় ঢুকে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব না। এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের কোনো স্থায়ী যেসব ভিত্তি থাকে। তাদের স্বার্থও যুক্ত থাকে। এ সমস্ত জায়গায় উদ্ধারের সুযোগ আসে চীনের টাকা থেকে।
*★চীন যদি বাংলাদেশকে আজ ৫ বিলিয়ন ডলার দেয় তার বৈদেশিক আর্থিক খাতকে ঠেকা দেয়ার জন্য। আর বাংলাদেশ সরকার যদি সেটা নেয়, ২/৩ বিলিয়ন এটা হবে বড় সংকেত।★*

এইযে বললাম গুহাতে ঢুকে যাবে কিনা?
*এই রকম সাহায্য শ্রীলঙ্কাকেও দেয়া হয়েছিল কিন্তু তা ঠেকানো যায়নি। কারণ সমস্যাটা কাঠামোগত। আপনার কিডনি ফাংশন করছে না যে কিডনিতে দেবেন। কারণ আপনার স্নায়ুওতো কাজ করছে না।*
কারণ আপনি অকার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিতর ঢুকে গেছেন। অর্থনীতির সমস্যা হলো এটা রাজনীতির সঙ্গে প্যাচ খেয়ে গেছে। রাজনীতি ঠিক না করলে অর্থনীতি ঠিক হবে না। আপনি যেনতেন একটা নির্বাচন করলেও অর্থনীতিকে ঠিক করতে পারবেন না। এইযে বেনামি টাকা নিয়ে গেল, বেনামিতে বিনিয়োগ করলো পুঁজিবাজারে, যারা ব্যাংকিং খাতকে ফোকলা করে দিলো।
*যারা ১০ টাকার প্রকল্পকে হাজার টাকা বানালো সেই লোকগুলোইতো আবার ফিরে আসে।* সেই লোকগুলোই যদি ক্ষমতায় আসে জবাবদিহিতা না আসে তাহলে সমস্যাতো রয়েই গেল। একই সমস্যা বৈদেশিক ক্ষেত্রে।

*চীনের অর্থের বিষয়ে বলেন, চীন থেকে আমরা বড় আমদানি করি। সে সেখানে আপনার টাকা মিটিয়ে দিতে পারে। এই টাকাটা পাঠানোর প্রয়োজন পড়ে না। বাজেট সমর্থনে যে টাকা আসে এটা দ্রুত পরিশোধ করতে হয়। যার কারণে আইএমএফ’র সঙ্গে যে চুক্তি হবে সেটার লঙ্ঘন হবে।*

*★ভারতের বিষয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ভারতের জন্য বর্তমান সরকার যে বাঞ্চিত সরকার এটাতো আর গোপন বিষয় না। সেইরকম একটা সরকারের জন্য যে রকম একটা বৈধতা লাগে এই সরকারের তো সেই রকম বৈধতা নাই। সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ সরকার বেছে নেবে। ভারতের নির্বাচনে আমার পছন্দ যদি কংগ্রেস সরকার হয় কিন্তু মোদি সরকার যদি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয় আমরাতো মেনে নিচ্ছি। বাংলাদেশেও যদি একটা নির্বাচিত সরকার আসে তারাও নতুন সম্পর্ক মেনে নিতে পারে। এটাতো গণতান্ত্রিক মনোভাবের বিষয়।★*
আপনার একটা আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। চাপিয়ে দেয়ার মনোভাব থাকতে পারে না। মার্কিন সরকার কিন্তু বারবার বলছে আমরা কোনো দলের পক্ষে না।
*ভারত বললো, এটা গণতান্ত্রিক ব্যাপার কিন্তু তারা বললো না আমি কোনো দলের পক্ষে না। আমাদের দেশের সঙ্গে যে রকম সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এগুলো চলমান রাখার আকাঙ্ক্ষা তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের ভিতরে যে সংখ্যালঘু, ভারতে সংখ্যালঘু আছে এই বিষয়গুলো তাদের মধ্যে আছে। তাদের ভেতর সম্পর্ক নষ্ট হলে শান্তি নষ্ট হবে। এই সমস্ত সম্পর্কগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, চীনের সঙ্গে, ভারতের সঙ্গে দ্বিদলীয় সমঝোতায় যেতে হবে। যাতে সরকার পরিবর্তন হলে এই সম্পর্কগুলো নষ্ট না হয়। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নষ্ট নয় নাই।*

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের। মোদি সরকার কী কম করছেন? না করছেন। আমরা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কুটচালে ওনারা ঠিকই আদায় করে নেয় কিন্তু আমরা পারি না। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা। আমি এখন পর্যন্ত দেখছি না নির্বাচনের যে পথরেখাতে এগুচ্ছি, এটা দিয়ে বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান হবে। নির্বাচন হলেও হতে পারে কিন্তু তাতে আমি সমস্যার সমাধান দেখি না। মৌল রাজনৈতিক সমস্যা দুটা। আমাদের সাংবিধানিক বৈধতা হয়েছে কিন্তু রাজনৈতিক বৈধতা ছিল না। রাজনৈতিক বৈধতা না থাকায় নৈতিক বৈধতা হয়নি। একটা সরকারের সাংবিধানিক ও নৈতিক বৈধতা না থাকলে দেশের ভেতরেও না বাইরেও ভালো কিছু হয় না। এই সমস্যার উল্টো পিঠে আছে এত উন্নয়নের পর কেন বৈষম্য বেড়ে গেল। কেন আমি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারলাম না। কেন আমি আমার প্রকল্পের টাকা আদায় করতে পারি না। ব্যাংকের যে ঋণ আছে সেটা আদায় করতে পারি না। আমার যে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা দেবো সেটার জায়গাটা নেই। যেহেতু বৈধতা নাই সেহেতু জাবাবদিহিতা দাবি করতে পারি না। তখন আমার সমঝোতায় যেতে হয়। এটার জন্য পক্রিয়া দরকার, আন্তর্জাতিক সমর্থন দরকার, এটার জন্য অর্থনৈতিক সংস্কার দরকার। এখকার ৭০ শতাংশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পরে জন্মগ্রহণ করেছে। প্রতিদিন দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পারি এতে দেশপ্রেম বাড়বে। কিন্তু কর্মস্পৃহা সৃষ্টি করতে অন্য রূপকল্প নিয়ে আসতে পারে।
*২০৪১ সালের কথা বলবো, কিন্তু দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলবো না। কথা বলার ক্ষেত্রে অত্যাচার হবে।*

*★নির্বাচনের জন্য সাড়ে সাত লাখ মানুষকে বন্দুক হাতে নামাতে হবে, সবথেকে বড় উৎসব করার জন্য এটা কী সম্ভব।★*

রাজনৈতিক সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, বিরোধীদলকে আরেকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে না, লড়তে হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে। তাদের টিকে থাকার লড়াই করতে হচ্ছে। *পুরো নেতৃত্বকে আপনি জেলে নিয়ে গেলেন কী করে? মির্জা ফখরুলকে আপনি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার জন্য গ্রেপ্তার করেন যুক্তির বাইরে। পিতাকে ধরতে না পারলে সন্তানকে ধরে নিয়ে যাবেন এটাতো হতে পারে না। গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছেন, আপনি বলছেন সে স্বীকার করেছে যে সে এসব করেছে। এটা কী আপনার করার অধিকার আছে। আপনি তাকে গায়ে হাত বুলিয়ে নাকি বাড়ি দিয়ে কী স্বীকার করিয়েছেন তা দিয়ে সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের সুযোগ নাই।*
অর্থাৎ আপনি একটা পরিবেশ সৃষ্টি করবেন যেখানে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি বিবেচনার ন্যূনতম পরিবেশ নাই। নির্বাচনকে আপনি অর্থবহ করতে পারবেন না। নির্বাচন একটা দিনের বিষয় না অব্যাহত প্রক্রিয়ার ব্যাপার।

*আমি মনে করি ৮০ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে চায়। অধিকাংশ মানুষ মনে করে এই পরিস্থিতিতে সম্ভব না।* এটা নিয়ে যদি ঐকমত্যের জায়গা তৈরি না হয় তাহলে পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না। ওই যে দুটো দলের নাম ধরে বলেছেন ১০-১৫ বছর পর দল থাকবে না। আমি বলি কোনো দলই থাকবে না। কারণ হলো আপনি থাইল্যান্ডের মতো হবেন। ইয়াং ছেলেটার দিকে দেখেন রাজনৈতিক দল করে জিতেও প্রধানমন্ত্রী হতে পারলো না।
*আপনি এমনভাবে স্বার্থগোষ্ঠী তৈরি করেছেন আপনি ভাঙতে চাইলেও ভাঙতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে।*
মৌলিক সমাধানের জায়গাটা যত দেরি করবো তত মূল্য দিতে হবে। এই সংকীর্ণ মনোভাবে শুধুমাত্র নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করলে হবে না।

Address

32, Naya Polton
Dhaka
1000

Telephone

+8801720353458

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Mahdee Overseas H/L # 381 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Mahdee Overseas H/L # 381:

Videos

Share

Category

Nearby travel agencies



You may also like