Inspired Backpackers

Inspired Backpackers As one of the leading online travel company we provide customized Domestic as well as International
(1)

রাশিয়া থেকে দেশে ফিরতে পারবো তো, সব ফ্লাইট ক্যানসেলড্❗️বেড়াতে গিয়ে Emergency⚠️Video Link: https://youtu.be/zgYZnX-Ie7...
28/07/2022

রাশিয়া থেকে দেশে ফিরতে পারবো তো, সব ফ্লাইট ক্যানসেলড্❗️বেড়াতে গিয়ে Emergency⚠️

Video Link: https://youtu.be/zgYZnX-Ie7M

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২। মেঘলা আকাশ। বাইরে ক্রমাগত হাল্কা তুলোর মতো তুষারপাত হচ্ছে। তাপমাত্রা -7*C। ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে যে দুঃসংবাদটা শুনলাম, পাঁচ-পাঁচটা Layers এর ওপর দিয়ে Decathlon এর Winter Jacket টা পরেও হাত-পা জমে বরফ হয়ে গেল। 😥 যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে 😭

এক বছর ধরে নিজেদের প্ল্যান করা ১৬ দিনের রাশিয়া ট্যুরের আজ তৃতীয় দিন। সেইন্ট পিটার্সবার্গে আছি। Gulf of Finland এর পাশে অবস্থিত এই শহরটা রাশিয়ার সাংস্কৃতিক প্রানকেন্দ্র হলেও এই শহরটাকে বলে Window to West। ভিসা থাকলে এখান থেকে সহজেই ইউরোপে প্রবেশ করা যায়। ইউক্রেনের থেকে অনেক দূরে হলেও এর আশেপাশেই Russian Navy র বেস। রাস্তাঘাট প্রায় শুনশান। Grocery র দোকানে লম্বা লাইন। গতকাল অবধি যে ইউরোপিয়ান উচ্ছ্বলতার ছোঁয়া দেখেছিলাম, হঠাৎ করে সব শান্ত। বিদেশী দেখলেই উটকো জিজ্ঞাসাবাদ। মেট্রো স্টেশনেও Random Checking চলছে। হোটেলের সবকটা টিভিতে শুধু যুদ্ধের খবর দেখাচ্ছে। সহধর্মিনীর পরামর্শে তৎক্ষণাৎ এয়ারলাইনকে ফোন করলাম। লং লং ওয়েটিং! ফোনের ব্যালান্স প্রায় শেষ। প্রায় ৫০ মিনিট বাদে একজন ওপার থেকে আর একটা দুঃসংবাদ দিলেন। পরশুদিন থেকে All Outbound International Flights From Russia Cancelled 😭 কবে চালু হবে কেউ জানেনা। সেকি?!! আমাদের দেশে ফেরার ফ্লাইটতো সপ্তাহ দুয়েক পরে। বউ-বাচ্চা নিয়ে এই বিদেশে যাবো কোথায়, খাবো কি - সেটা ভেবেই হাতপা কাঁপতে লাগলো।

অ্যান্টার্কটিকা দেখার একটা স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আজ যা দেখলাম কম কি? জমাট বাঁধা সমুদ্র। এত ঠান্ডা যে একটা আস্ত সমুদ্র যতদূর দেখা যায় জমে বরফ। এটা বিচ Laskovyy, যেটা Gulf of Finland এর একটা অংশ। ওপারটা Finland। এই সমুদ্রের মাঝে ছোট্ট একটা দ্বীপ Kronstadt। দ্বীপের উপরেই বিখ্যাত Kronstadt Naval Cathedral যেটা কালকে দেখে এসেছি। জমাট বাঁধা সমুদ্রের ঢেউ এর ওপর দিয়ে বেশ খানিকটা হেঁটে ফটো তুলে এলাম। গতকাল মেট্রো রেল স্টেশন ট্যুর করতে গিয় এটা আবিষ্কার করেছি। রাশিয়ায় এলে মেট্রো ট্যুর করতেই হবে। একএকটা স্টেশন যেন মাটির নিচে একএকটা রাজপ্রাসাদ। সেইন্ট পিটার্সবার্গে দু’রাত কাটাবার পর আজই আমাদের Murmansk যাওয়ার ট্রেন ছিল। সেখানে এক রাত কাটিয়ে Northern Lights দেখে Irkutsk হয়ে Teriberka। Trans Siberian Railway চড়ে লেক Baikal এবং Olkhon Island ঘোরার প্ল্যানও ছিল। কোলকাতার Russian Consulate এর মেয়েটাই সাজেস্ট করেছিল যে Blue Ice Cave Grotto ট্রেক করতে হলে Feb-Mar টাই বেস্ট টাইম। কিন্তু এ যাত্রায় হলোনা। তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিলাম সব বুকিং ক্যানসেল করে আগামীকালের শেষ ফ্লাইট ধরে ভারতে ফিরবো।

অন্তত ১০০ জনের পিছনে -5*C তে কাঁপতে কাঁপতে Wife কে সঙ্গে নিয়ে এয়ারলাইনের অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। ছেলেকে কিছু খাবার, একটা মোবাইল ফোন, কিছু রুবেল, পাসপোর্টের কপি, আর আমার একটা Credit Card হাতে দিয়ে হোটেলের রুমে লক্ করে এসেছি। ওখানেই ও সবচেয়ে Safe থাকবে। রুম থেকে বেরনোর সময় ছেলে জিজ্ঞাসা করেছিল - Papa তোমরা কখন ফিরবে? কিছু বলে আসতে পারিনি। ডুপ্লিকেট্ চাবিটা রিসেপশনের সুন্দরী Anastasia কে দিয়ে এসেছি। ইমারজেন্সিতে কাজে লাগতে পারে। আসলে Flight Reschedule টা অনলাইনে হচ্ছেনা। সবাই পালাতে চাইছে, প্রচন্ড Rush এ সিস্টেম Hang হয়ে গেছে। তাই এয়ারলাইনের অফিসে গিয়েই করতে হবে। আগামীকালের Last Flight না পেলে কবে যে নিজের দেশে ফিরতে পারবো, পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো, কি খাবো কিছুই জানিনা 😥

লাঞ্চ Skip করে বাবার নাম জপ্ করতে করতে প্রায় ৬ ঘন্টা বাদে আমাদের PNR টা স্ক্রিনে ভেসে উঠলো। Wife আনন্দে লাফিয়ে উঠেছে। তাহলে দেশে ফিরতে পারবো। রুদ্ধশ্বাসে কাউন্টারের দিকে ছুটলাম ৩টে পাসপোর্ট আর ক্রেডিট কার্ডটা হাতে নিয়ে। প্রায় ডবল দাম দিয়েও হোক লাস্ট ফ্লাইটের টিকিটটা আজ পেতেই হবে। Any how at any cost!!!

New Delhi র ফ্লাইটে বসে আছি। গতকাল ফেরার প্লেনের টিকিট হাতে পেয়েও চমক তখনো বাকি ছিল। সেইন্ট পিটার্সবার্গ থেকে মস্কোর ফ্লাইট পৌনে দু’ঘন্টা লেট। ভাগ্যিস অনলাইন বোর্ডিং পাসটা ছিল। মস্কোয় নেমে ইমিগ্রেশন করিয়ে দিকবিদিক্ জ্ঞানশুন্য হয়ে একহাতে ছেলের হাতটা ধরে ছুটতে ছুটতে যখন বোর্ডিং গেটের সামনে পৌঁছলাম, বোর্ডিং প্রায় কমপ্লিট্। Last Call হচ্ছিল। ছেলে-বউকে নিয়ে তড়িঘড়ি করে ফ্লাইটে উঠতেই মিষ্টি হেসে রাশিয়ান এয়ার হোস্টেস মেয়েটি যখন Welcome Kit টা দিল, বুঝলাম বিপদ কেটে গেছে। প্রচন্ড ঠান্ডাতেও কপালে ঘাম দিচ্ছিল। সিটে বসে জ্যাকেটের Zip টা খানিক নামিয়ে বাবাকে প্রণাম করে বললাম - রণে বনে জঙ্গলে বিপদে পড়ে যখনই তোমায় স্মরণ করবো এইভাবেই চিরকাল রক্ষা কোরো 🙏

🌀 রাশিয়ায় দু’দিনে কি কি দেখলাম তা জানতে হলে নিচের ভিডিও লিংকে ক্লিক করতে হবে 🇷🇺: https://youtu.be/zgYZnX-Ie7M

🆘 দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে কয়েকটা জিনিষ সঙ্গে রাখতেই হবে, Emergency তে কাজে লাগতে পারে:

১. পাসপোর্টের ৫-৬ কপি (১ম, শেষ ও ভিসা পেজ) প্রত্যেকের এবং অবশ্যই অরিজিনাল
২. Entry স্লিপ (if available)
৩. 5-6 কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি (যেটা ভিসায় আছে)
৪. কিছু Cash (অবশ্যই যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশের অথবা US$)
৫. Credit এবং Debit কার্ড (visa / master card / both) - ব্যাংকে ফোন করে ইন্টারন্যাশনাল transaction ‘enable’ করাতে হবে
৬. লোকাল Indian Consulate এর জরুরী যোগাযোগের Phone নম্বর ও Email
৭. লোকাল SIM cards (কল + data)
৮. এয়ারলাইনের customer care এবং লোকাল অফিসের নম্বর
৯. অবশ্যই Online Check-in করে Boarding Pass সঙ্গে রাখতে হবে
১০. পোর্টেবল Mobile charger এবং universal wall adapter
১১. প্রেসক্রাইবড্ Medicine এবং First aid kit
১২. হোটেলের ঠিকানা ও ফোন নম্বর
১৩. ডিটেলড্ travel itinerary
১৪. কিছু শুকনো খাবার (চকলেট, বিস্কুট, বাদাম ইত্যাদি)

▶︎ লেখা, ছবি এবং ভিডিও: Tirtha Ghosh

৬০০ বছরের পুরোনো মাসাই উপজাতির মানুষরা এখন কেমন আছেন❓ আফ্রিকান সাফারি করলে এই ট্যুরটা MUST ‼️ভিডিও লিংক: https://youtu.b...
21/05/2022

৬০০ বছরের পুরোনো মাসাই উপজাতির মানুষরা এখন কেমন আছেন❓ আফ্রিকান সাফারি করলে এই ট্যুরটা MUST ‼️

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/FEt29K1FNH4

নরখাদক নয়তো? কথাটা মনে আসতেই বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল। ভয়ে ভয়ে বোকার মতো ড্যানকে (আমাদের ড্রাইভার) জিজ্ঞাসা করতেই মুচকি হেসে বললো “ভয় নেই, ওসব টারজানের গল্পেই আছে। মাসাইরা এখন fluent ইংলিশ বলে। তবে বর্শা হাতে সিংহ শিকার, শুভ অনুষ্ঠানে গরু-ছাগলের রক্ত পান করার প্রচলন এখন প্রায় নেই বললেই চলে”।

১১ ডিগ্রীতে বিনা সোয়েটারে কাঁপতে কাঁপতে ক্যামেরাটা নিয়ে গাড়ী থেকে নামতেই আমার ছেলে ছুট্টে এসে বললো ৩০০০ টাকা লাগবে। মানে দরদাম হয়ে গেছে। ভারতীয় মূদ্রায় ২০০০ টাকা দু’জন বড়র জন্য। বাচ্চা ফ্রি ☺️। চললাম মাসাইদের গ্রামে। আফ্রিকান সাফারি করলে এই optional ট্যুরটা highly recommended।

মাসাই সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা মা (Maa)। এছাড়া সহিলি-ও (Swahili) চলে। এছাড়াও তারা ইংরেজিতে পারদর্শী। ইতিহাস বলে, যাযাবর জীবনযাপনে অভ্যস্ত মাসাইরা প্রাথমিকভাবে বাস করতো দক্ষিণ সুদানে। পনেরোশো শতাব্দীতে উর্বর জমির খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে তারা এখানে পৌঁছায়। কিন্তু প্রচলিত প্রযুক্তিগত সভ্যতার সন্ধান পেয়েও আফ্রিকার মাসাই গোষ্ঠী আঁকড়ে ধরে রেখেছে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি। কেনিয়া এবং তানজানিয়ার বিশাল অংশ জুড়ে এদের বাস, যা সারা বিশ্বের পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্র। এখন আফ্রিকা জুড়ে মাসাইদের জনসংখ্যা এক মিলিয়নের কাছাকাছি। গল্পের বইয়ের বাইরে যে আফ্রিকার ঘন জঙ্গলে এমন একটি সম্প্রদায়ের উপস্থিতি একবিংশ শতাব্দীতেও সম্ভব, তা আমার কাছে কল্পনাতীত ছিল।

সিংহের শ্বদাঁতটা হাতে নিয়ে অবাক হলাম, ১৫-১৬ বছরের কিশোররা মিলে শিকার করে কিকরে? গায়ের সমস্ত জোর এক করে বর্শার ফলাটা কোনোরকমে সিংহের হাঁ এর মধ্যে দিয়ে মাথা এফোঁড় ওফোঁড় করতে পারলেই জঙ্গলের রাজা কুপোকাত। ১৫ বছর বয়সের পর ৩ বছর বনবাসে থাকাকালীন সিংহ শিকার করে মৃত সিংহের শ্বদাঁত প্রমান হিসেবে গ্রামে নিয়ে আসতে পারলেই মাসাই কিশোর যৌবনে পা দেয়। মাসাইদের গ্রামের প্রধানের সঙ্গে এখন গল্পে মত্ত। নরখাদক তো দূরের কথা, শিকার করা সিংহের মাংসেও এদের না না। মাসাই গোষ্ঠীর প্রিয় খাবার হলো মাংস। অল্প সংখ্যক মাসাই লোকেরা প্রধান খাদ্য হিসেবে শাকসবজি গ্রহণ করে। এছাড়া তাদের প্রিয় খাবারের তালিকায় আছে গরু, মহিষ বা ছাগলের দুধ। তবে বিয়ে বা শুভ অনুষ্ঠানে গরুর রক্ত পান করাটা সত্যি। একটু আগেই হুম হুম শব্দ করে মাসাইদের নাচে পা মিলিয়ে এসেছি। রংবেরঙের স্যুকা (মাসাইদের পোশাক) পরে লাফ দিয়ে নাচার ধরণকে বলা হয় আডুমু (Adumu)। শুধু লাফ না, ঘাড়ের একটি বিশেষ ছন্দবদ্ধ মুভমেন্ট থাকে এই নাচের মাঝে। সঙ্গে সাত-সাড়েসাত ফুট মাসাইদের সাথে jumping চ্যালেঞ্জ। হেরে গিয়েও অনাবিল সুখ। সৃজিতদার ক্যামেরা দূরে থাক, Nat Geo র ভার্চুয়াল ট্যুর কখনো এভাবে সত্যি হবে ভাবিনি।

জন্মের সময় থেকে বন্যপ্রাণী এবং মাসাইরা পাশাপাশি বাস করছে। বিশ্বের ৫০% সিংহ এই অঞ্চলে বাস করে। তাদের গ্রামকে বলা হয়ে থাকে মানয়াত্তা। বাবলা গাছের কাঁটা দিয়ে গ্রামকে ঘিরে রাখা হয় ঘরবাড়িকে বন্যপ্রাণী, বিশেষ করে সিংহের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। কাদা-বিষ্ঠা-ছাই দিয়ে মাসাইদের ঘরগুলো সাধারণত মেয়েরা তৈরি করেন, যেগুলোকে বোমা বলে। এই আদিবাসী গোষ্ঠী পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা মেনে চলে। মাসাই গোষ্ঠীর মাঝে বহুগামিতার প্রচলন আছে এখনো তবে এই বহুগামিতা তাদের কাছে প্রয়োজনের জন্য। কারণ মাসাই অর্থব্যবস্থার মাপকাঠি হচ্ছে সন্তান এবং গৃহপালিত পশু। যার যত বেশি সন্তান এবং গৃহপালিত পশু সে তত বেশি সম্পদশালী। তাই সংসার এবং এই গৃহস্থালি একসাথে দেখাশোনা করার জন্য একাধিক গৃহিণীর প্রয়োজন।

লম্বা ছুরির উপর একটা ছিদ্রযুক্ত অলিভ কাঠ রেখে ঐ ছিদ্রের মধ্যে সান গাছের একটা স্টিক্ দু’হাতের তালুর মাঝখান দিয়ে প্রাণপনে ঘোরালেই আগুন। আদিম মানুষের ইতিহাস পড়েছিলাম, আজ দেখলাম। এবার যাবো এদের মাটির ঘরের ভিতরে।

🌀 মাসাইদের ঘরের ভিতরটা কেমন, তাদের খাওয়াদাওয়া, দৈনিক জীবনযাপনের কথা জানতে নিচের ভিডিও লিংকে ক্লিক করতে হবে👇

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/FEt29K1FNH4

| লং উইকএন্ড-এ আফ্রিকান সাফারি - কোলকাতা থেকে ৫ দিনে ইচ্ছেপূরণ |🌀 আফ্রিকান সাফারি, কাঠ ঘষে আগুন জ্বালানো, মাসাই আদিবাসীদ...
05/04/2022

| লং উইকএন্ড-এ আফ্রিকান সাফারি - কোলকাতা থেকে ৫ দিনে ইচ্ছেপূরণ |

🌀 আফ্রিকান সাফারি, কাঠ ঘষে আগুন জ্বালানো, মাসাই আদিবাসীদের সঙ্গে নাচ, নরকের দরজা ইত্যাদি দেখতে হলে নিচের লিংকে ক্লিক করতে হবে 😊

ভিডিও লিংক: https://youtu.be/_S7CSIULo4I

| শুক্রবার |
সিংহ এত কাছে যে গায়ের গন্ধটাও নাকে আসছে। ড্রাইভার ধীরে ধীরে গাড়িটা আরো কাছে নিয়ে চলল। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার লেট নাইটের ফ্লাইটে কোলকাতা থেকে মুম্বাই এসেছি। তারপর বড়াপাও দিয়ে ডিনার সেরে নাইরোবির ফ্লাইট ধরেছি রাতে। যেহেতু ৬ ঘন্টার ফ্লাইং টাইম আর নাইরোবির টাইম আড়াই ঘন্টা পিছিয়ে, তাই ভোরবেলায় পৌঁছনো। এয়ারপোর্ট থেকে গাড়ি পিকআপ করেছে আজ শুক্রবার সকাল ৮ টায়। প্লেনে ভালো করে ঘুমিয়ে নিয়েছি আমরা তিনজনেই, যাতে পুরো দিনটা ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। রাস্তায় হাল্কা ইংলিশ ব্রেকফাস্ট করে মাসাইমারা পৌঁছেছি তখন বেলা ১টা। একটা হোটেলে কন্টিনেন্টাল লাঞ্চ করে সোজা ওলুলাইমুটিয়া গেট। এখান থেকেই বিখ্যাত আফ্রিকার জঙ্গলে প্রবেশ। ঢোকার পর থেকেই হরিণ, সিংহ, জেব্রা, জিরাফ, চিতা অনেক চোখে পড়েছে, তবে এইটা বেষ্ট। সাফারি ভ্যানের ঠিক পাশেই জঙ্গলের রাজা। ভাবা যায়? তাও খোলা অবস্থায়!

মাঝেমাঝেই মনে হচ্ছে কোনো হিংস্র জন্তু ক্যাম্পের গা ঘেঁসে মানুষের গন্ধ শুঁকে যাচ্ছে। খুব ভয় লেগে গেল। জঙ্গলের ঠিক মাঝখানে রিসর্টের সুইস্ ক্যাম্পে থাকার অভিজ্ঞতা এই প্রথম। চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বুফে ডিনার সেরে ক্যাম্পে ঢুকে ভিতর থেকে চেন লক্ করে দিয়েছি। অর্ডার আছে রাত ৯টার পরে ক্যাম্পের বাইরে আসা যাবেনা। সবেধন নীলমনি অটোমেটিক সোলার ল্যাম্প তখন থেকেই অফ্ থাকবে। সংলগ্ন টয়লেটে একটা ছোটো নাইট ল্যাম্প আছে দরকারে জ্বালানো যেতে পারে। বাইরে মাসাই আদিবাসী পাহারায় থাকে। সেও বোধহয় ঘুমাচ্ছে। ক্যাম্প ম্যানেজারের মোবাইল নম্বরটা দেওয়া আছে। ইমারজেন্সিতে কল করা যেতে পারে। পাশের বিছানায় বউ-ছেলে ঘুমাচ্ছে। বালিশের পাশে রাখা টর্চটা জ্বেলে মোবাইলটা হাতড়ালাম। সবে রাত দেড়টা। পাশ ফিরে শুতেই ক্লান্তিতে চোখ বুঝে এলো।

| শনিবার |
লম্বা ঘাসের মধ্যে থেকে হঠাৎ করে সিংঘিটা গাড়ির সামনে ঝাঁপ মেরেছিল! তবে এবারে নয়, আগেরবার, দিন ছয়েক আগে - চালক বললো। এখানে আকছাড় হয়। তার মধ্যে যখন ঘাসের জঙ্গলে গাড়ি থেকে নামতে বললো তখন নাম জপ্ শুরু করে দিয়েছি। এটা হলো “No Man’s Land” কেনিয়ার বর্ডার। একটু দূরে Mara River বয়ে চলেছে। ওপারটা তানজানিয়া। লাঞ্চের ব্যবস্থা এখানেই🙄! আগেও ৫-৬টা সাফারি ভ্যান দাঁড়িয়ে পড়েছে। একটু আগেই চিতা ও দাঁতালো হাতির পাল দেখে এসেছি। চালক ভরসা দেওয়াতে নামলাম। চুটিয়ে ফটোগ্রাফি করলাম। এরপর খোলা জঙ্গলের ঘাসে বসে প্যাক্ করে আনা গ্রিলড্ চিকেন, মেয়োনিজ স্যান্ডউইচ, ড্রাই ফ্রুটস আর বিয়ার দিয়ে ছোটখাটো পিকনিক, আহা lifetime experience ।

বন্দুক হাতে আগে আগে হেঁটে চলেছে ফরেষ্ট গার্ড। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পায়ে পায়ে তাকে ফলো করছি আমরা। Mara River চলেছে পাশে পাশে। লক্ষ্য hippo watching । নদীর কাছে যাওয়া বারণ। কাদার মধ্যে কুমীর লুকিয়ে থাকে, ঠাহর করা মুশকিল। জুন মাস থেকে Great Migration শুরু হয়। তানজানিয়া থেকে কাতারে কাতারে জেব্রা আর wild beast পাকা ঘাস খেতে Mara River পার হয়ে কেনিয়ায় আসে। নদী পার হবার সময়েই তাদের অনেককেই জলহস্তী বা কুমীরের পেটে যেতে হয়। Hippo র দেখা পাওয়ার পর এবার যাব আদিবাসীদের সঙ্গে নাচতে।

বনবাসে গিয়ে সিংহ শিকার করে দাঁত নিয়ে এলে তবেই যৌবনে পা দিতে পারে মাসাই পুরুষ। যে পুরুষ যত বেশি উচ্চতায় লাফাতে পারবে তাকে ততো কম যৌতুক দিতে হবে মাসাই নারীকে। এরকম অনেক নিয়ম আজও চলে আসছে। চোখের সামনে দুটো কাঠ ঘষে আগুন জ্বালাতে দেখলাম, নিজেও জ্বালালাম। মাটির ঘরের মধ্যে বসে শিকারের গল্প শুনলাম। আধুনিক যুগের বিন্দুমাত্র সুবিধা ছাড়া অত্যন্ত scientific আদিম কুটির। মুখে আওয়াজ করে দল বেঁধে নাচলাম ওদের সঙ্গে। মনে হলো সেই টারজানের যুগে ফেরৎ এসেছি।

| রবিবার |
গন্ডারটা পথ আটকে দাঁড়িয়েছিল। ২-৩ মিনিট পরে কি খেয়ালে সরে গেল। নাইভাসা এবং নাকুরু লেকের অনবদ্য ফ্লেমিঙ্গো দেখে এখন চলেছি “নরকের দরজা” (নাম Hells Gate National Park) দেখব বলে। এখানে গাইডের সাহায্য নিয়ে পাথরের খাঁজে খাঁজে পা দিয়ে অনেকটা নিচে gorge এ নামতে হয়। নিচে একটা অন্য জগৎ। আছে “শয়তানের বিছানা”। একটু বিপজ্জনক, কিন্তু যেমন সুন্দর এবং তেমনি terribly romantic । না গেলে বিরাট মিস্।

| সোমবার |
SGR ট্রেনে চলেছি নাইরোবি থেকে মোম্বাসা - the beach town । দু’তিনটে ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে দিয়ে ট্রেনের লাইন পাতা আছে। বুলেট ট্রেন নয়, কিন্তু খুব আরামদায়ক। মোম্বাসা ষ্টেশনে self drive car অপেক্ষা করছিল। ফরমালিটি মিটিয়ে, Google map টা navigation এ দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করলাম - যাবো Watamu । Peri Peri Pizza 🍕 খেয়ে ছেলে ততক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে। সহধর্মিনী আমার সাথে জেগে রইল। ২ ঘন্টা ড্রাইভ করে যাবো Mawe Resort ।

যাওয়ার পথে Malindi, Marine National Park, Watamu বিচ্ থেকে ভারত মহাসাগর দর্শন করে পৌঁছলাম রিসর্টে। এখন ফ্রেশ হয়ে ডিনার করে সম্পূর্ণ রেষ্ট।

| মঙ্গলবার |
Duty free থেকে শপিং করে নাইরোবি এয়ারপোর্টের বোর্ডিং গেটের সামনে বসে আছি। মোম্বাসা থেকে ফিরে McDonald’s হয়ে সোজা এয়ারপোর্টে ড্রপ নিয়েছি। ফ্লাইটে রাতের মধ্যেই কোলকাতা ভায়া মুম্বাই।

11/03/2022

||Raw Essence Of Rural Santiniketan||

Spending a day in Santiniketan countryside is a charming experience. If you not been before to Srichandrapur Ferry Ghat, Senkapur Soshan Kali Temple or Choupahari Forest, then must experience on your next visit, the raw essence of Santiniketan. Country Villa houses 8 people with all possible comfort in the heart of rural Bengal. All the well known places along with the off beat destinations of Santiniketan are within arm's reach.

শ্রীচন্দ্রপুর খেয়াঘাট, সেনকাপুর শ্মশান কালী মন্দির, চৌপাহাড়ীর জঙ্গল নিয়ে এক ☆ অচেনা শান্তিনিকেতন ☆👉 সম্পূর্ণ ভিডিও - ...
22/02/2022

শ্রীচন্দ্রপুর খেয়াঘাট, সেনকাপুর শ্মশান কালী মন্দির, চৌপাহাড়ীর জঙ্গল নিয়ে এক ☆ অচেনা শান্তিনিকেতন ☆

👉 সম্পূর্ণ ভিডিও - https://youtu.be/hMGY6px3sko

পাখিটার ডাক ট্র্যাক করতে করতে জঙ্গলের মধ্যে অনেকটা চলে এসেছি। কিন্তু পাতার আড়ালে লুকিয়ে, ক্যামেরাটা ঠিক করে ফোকাস করতে যেতেই পিঠে কিল মেরে “এবার উঠবে তো নাকি? কতো বেলায় বেরোবে? আমরা রেডি”- মোবাইলটা দেখলাম সবে ভোর ৬:৩৫। এরমধ্যেই মিসেস আর ছেলে বেড়াতে যাওয়ার জন্য রেডি। আসলে শান্তিনিকেতনে এলে যখনি Country Villa এ উঠি ঘরে বসে থাকতে মন চায়না। এর চারপাশটা দারুন সুন্দর। তারপর গতকাল বাড়ীর মালকিন কাছাকাছি কয়েকটা অপরিচিত যায়গার সন্ধান দিলেন। ম্যাডামের মতে পথ হারিয়ে যাওয়ার সমুহ সম্ভবনা, google map ফেল, তাই হাতে আঁকা একটা ম্যাপ উনিই বানিয়ে দিয়েছিলেন। সকাল সকাল ব্রেড-বাটার, অমলেট আর চা দিয়ে ব্রেকফাষ্ট সেরে অজানা গ্রামের রাস্তায় গাড়ি ছোটালাম। ফেরার পথে শান্তিনিকেতনের পৌষমেলাও দেখতে হবে। তাই প্রকৃতির নির্জনতা যাদের পছন্দ, যারা নদী-ধানক্ষেত আর পাখির ডাক শুনতে হারিয়ে যেতে চান, যারা বিশ্বভারতী, সোনাঝুরির হাট, সৃজনী শিল্পগ্রাম, ইত্যাদি দেখে দেখে ক্লান্ত; একটু বেশি করে গ্রামের প্রকৃতির সঙ্গ চান, তারা পরেরবার বোলপুরে এলে এই জায়গাগুলো ট্রাই করতে পারেন। সবকটি জায়গাই ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে। তবে ম্যাপে ভরসা করবেন না, লোকাল লোকেদের সাহায্য নিন। পরিবেশকে পরিস্কার রাখুন। আর অবশ্যই, গ্রামের বাচ্চারা, পোষা গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি অসংখ্যবার আপনার পথে এসে পরবে - তাদের আগে জায়গা দিন। যেসব সরু, মেঠো রাস্তায় গাড়ি ঢুকবেনা, সেখানে কাদাজলে, ধানক্ষেতের আল ধরে হাঁটার প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন।

গোপালনগর থেকে সোজা রাস্তাটা শ্রীনিকেতন রোডের সঙ্গে কামারপাড়ায় মিশেছে। কামারপাড়া পেরলেই জঙ্গল শুরু। দুপাশের ঘন সবুজ জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে মসৃণ রাস্তা চলে গেছে ইলামবাজার। নাম চৌপাহাড়ীর জঙ্গল। সকালবেলায় দুএকজন কাঠুরে, মাছ-সবজিওয়ালা, আর সাঁই সাঁই করে ছুটে চলা কয়েকটা গাড়ী ছাড়া আর কিছু চোখে পড়লনা। এই রাস্তা দিয়ে ৩ কিমি মতো এগোনোর পর বনেরপুকুরের পাশ দিয়ে বাঁদিকে ঢুকে গেছে মাটির পথ। একে একে উষারদিহি, ইটাপুর, সাহেবডাঙ্গা গ্রাম পেরিয়ে পৌঁছলাম শ্রীচন্দ্রপুর।

রাস্তা খারাপ। কালভার্টের পরে ঢালু ও কর্দমাক্ত, মেঠো পথ নেমে গেছে ধানক্ষেতের মধ্যে দিয়ে। গাড়ী নামালে ওঠানো যাবে বলে মনে হয়না। তাই গাড়ী কালভার্টের ওপর রেখে কাদা বাঁচিয়ে পায়ে হেঁটে চললাম অজয় নদী দেখতে। মিনিট দশেক এগোনোর পর কুয়াশার চাদরে ঢাকা ধানক্ষেতের মাঝে দাঁড়িয়ে লম্বা শ্বাস নিলাম। সূর্যের নরম সোনালি আলোয় ঘন সবুজ ক্যানভাসে ধূসর নদীর রেখা চোখে পরবে। তখন ক্যামেরায় শুধুই ফটাফট্ শাটার পড়ার শব্দ। ডানদিকে একটু গেলেই শ্রীচন্দ্রপুর খেয়াঘাট। এটা বর্ধমান যাওয়ার সর্টকাট, স্থানীয়রা যাতয়াত করেন। ভুটভুটি খেয়া পারাপার হচ্ছে। নৌকার খোলের ওপর বাঁশের পাটাতন জুড়ে তাতেই মোটর লাগানো আছে। মানুষজন, সাইকেল, বাইক সবই পারাপার হচ্ছে। জায়গাটা অসম্ভব সুন্দর। ভুটভুটির আওয়াজ ছাড়া কোনো শব্দ নেই। বালিমাটির ওপর সূর্যদেব চিকচিক করছেন। চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। কিছুটা এগিয়ে অজয় আরো চওড়া হয়েছে। বৃদ্ধ বটগাছের ছায়ায় বসে, মোবাইলটা সুইচ অফ্ করে ২-৩ ঘন্টা এখানে অনায়াসেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। এবার উঠতে হবে, যাবো শ্মশানকালী দেখতে।

তাড়াহুড়ো করা যাবেনা। অত্যন্ত সরু রাস্তা। হাঁসের দল বাচ্ছাকাচ্ছা নিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছে। ফটো তুলবো জেনে পোজ দিয়ে হেলতে দুলতে পুকুরে নেমে গেল। জলে নেমে তাদের আনন্দ দেখে কে? সোনাঝুরির হাটের চেয়ে হাঁসেদের সাঁতারকাটা দেখা ঢের ভালো।আবার থামতে হলো। মা ছাগল তার ছানাপোনাদের নিয়ে রাস্তার মধ্যিখানে রোদ পোয়াচ্ছে। কোন হেলদোল নেই। এখানকার জমিদার এরাই। সহধর্মিনী গাড়ী থেকে নেমে কোলে করে বাচ্চাগুলোকে পাশে সরাতে ধীরে ধীরে এগোলাম। এরপর একে একে পুকুরপাড়ের পাঁক, রাস্তার ওপর খড়ের গাদা, অসংখ্য গরু-মোষ, হাঁস-মুরগি পাশ কাটিয়ে যখন সেনকাপুর পৌঁছলাম তখন রোদ বেশ চড়া হয়েছে।

সামনেটা উঁচু মাটির বাঁধ করা আছে। গাড়ী নিচে রেখে চড়াই বেয়ে বাঁধ পেরোলেই ওপারে ধানক্ষেত। আলপথে এগিয়ে ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ছোট্ট মাটির রাস্তা গিয়ে শেষ হয়েছে একটা চাতালে। এটাই সেনকাপুর শ্মশান। ঝোপটা পার হলে অজয় নদী। চাতালের উপর বাঁশ দিয়ে ঘেরা টিনের চালার ছাউনি একটা আছে। সামনে হাঁড়িকাঠ, বলি হয় হয়ত। ওটাই শ্মশানকালীর মন্দির। ভিতরে মায়ের মূর্তি বিদ্যমান। গামছা পরে একজন চাতাল ঝাঁট দিচ্ছেন। আলাপ করে জানলাম উনিই ডোম। সৎকারের কাজটা উনিই করেন সঙ্গে মা কালীর দেখাশোনা। কেমন একটা ছমছমে পরিবেশ। শহরের শ্মশানকালী বহু দেখেছি কিন্তু অজানা গ্রামে, নির্জন নদীতীরে, জঙ্গলের মধ্যে শ্মশানকালী - সে এক অবর্ননীয় অনুভূতি, জীবনে ভুলবনা।

এবার ফেরার পালা। বনলক্ষী রেস্টুরেন্ট নামেই চলছে, দামের তুলনায় খাবারের মান অতীব খারাপ। উলটোদিকে বরিশালের কিচেনেরও প্রায় একই অবস্থা। তাই আর ওমুখো হইনি। ঠিক করলাম গোপালনগরের তূফানের হোটেলে লাঞ্চ করে মেলার মাঠে যাব।

মেলার মাঠে পৌঁছে ভিড় দেখে বেশিক্ষণ কাটাতে মন চাইলনা। ইতিউতি অল্প ঘোরাঘুরি করে পা বাড়ালাম খোয়াইয়ের হাটের দিকে। সেখানেও একই অবস্থা। খানিকক্ষণ সময় কাটিয়ে যখন Country Villa য় ফেরার রাস্তা ধরলাম তখন সূর্যদেব পাটে বসেছেন। আজ দিনটা একটু অন্যরকম কাটল। Country Villa র ম্যাডামের দৌলতে আমার চেনা শান্তিনিকেতনের কিছু অচেনা জায়গা জানলাম। কাল যাবো আর একটা নতুন destination । সঙ্গে থাকুন (ক্রমশ)

ধন্যবাদ 🙏

★ এখানে এলে মন ভালো হবেই - কোলকাতা থেকে ১০৮ শিব মন্দির হয়ে বোলপুর শান্তিনিকেতন (১ম পর্ব) ★দীর্ঘ বছর ধরে বোলপুর নিয়মিত ...
09/12/2021

★ এখানে এলে মন ভালো হবেই - কোলকাতা থেকে ১০৮ শিব মন্দির হয়ে বোলপুর শান্তিনিকেতন (১ম পর্ব) ★

দীর্ঘ বছর ধরে বোলপুর নিয়মিত যাওয়া আসা করছি, এবারেরটা একটু অন্যরকম। দূর্গাপূজোয় কোলকাতার ভিড় না ঠেলে ইদানীং বাইরেই কাটাই - বেশিরভাগটাই গ্রামবাংলা, নতুবা পাহাড় কিংবা সমুদ্র। তবে বরাবরই বোলপুর-শান্তিনিকেতন আমার টান। গ্রামের মানুষগুলো খুবই চেনা, আর দিগন্তবিস্তৃত ধানক্ষেত, শাল-পলাশের বন, অজয় নদীর চড় - বড়ই কাছের।

ঘন্টাদুয়েক গাড়ী চালিয়ে যখন শক্তিগড় পৌঁছলাম দেখি ৭টা বাজে। পঞ্চমীর রোদ ঝলমলে আকাশ। ল্যাংচার দোকানগুলোতেও হাল্কা ভিড়। যে ভিড় কাটাতে সকাল সকাল আসা সেটা বোধহয় দুর অস্ত। সব দোকানই একরকম, তাও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন দেখে ল্যাংচা কুঠীতেই ঢুকলাম। আর একটা ব্যাপার এদের বসে খাওয়ার যায়গাটা বেশ খোলামেলা, আতিথেয়তাও ভালো। গরম গরম কচুরী, ডাল-তরকারি সহযোগে ল্যাংচা - আহা! সত্যি বলছি বারবার আসব। এখানে বলে রাখি, দক্ষিণ কোলকাতা থেকে বিদ্যাসাগর সেতু, সাঁতরাগাছি, কোনা, ডানকুনি হয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরেছি, শুধুমাত্র গড়পা ব্রীজের কাছে ১০-১৫ মিনিটের ট্রাফিক জ্যাম ছাড়া আর কোথাও দাঁড়াতে হয়নি। রাস্তাও খুবই ভালো। বিক্ষিপ্ত কয়েকটা জায়গায় অসম প্যাচের জন্য একটু দুলুনি হতে পারে, তবে হাইওয়েতে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ডানকুনি টোল প্লাজার খানিকটা আগের রাস্তাটা ব্যতিক্রম, মেরামতির অভাবে ছোটবড় খানাখন্দে ভর্তি। এই রাস্তায় বরাবর গাড়ী চালিয়ে মনে মনে আপস করে নিয়েছি। তবে একটা ব্যাপারে সাবধান থাকাটা জরুরী, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ফেরার লাইনে ট্রাকের জ্যাম থাকলে কিছু অতিরিক্ত পাকা ড্রাইভার সিঙ্গুরের কাছে ডিভাইডার ক্রস করে উল্টোদিক থেকে আপনার লেনে এসে পড়তে পারে। অ্যাম্বুলেন্স হলে তাও মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু বড় বড় টুরিস্ট বাস, প্রাইভেট গাড়ী ভুল লাইনে চালানোটা সম্পূর্ণ বেআইনি। তাই সাবধানে গাড়ী চালাবেন যদি ডানদিকের লেনটা একান্তই এড়াতে না পারেন।

গাংপুর পেরিয়ে আমরা নবাবহাট হয়ে সিউড়ি রোড ধরে বোলপুর পৌঁছবো। কয়েকটা ছোটোবড় বাম্পার, তালিতের লেভেল ক্রসিং আর ভেদিয়া আন্ডারপাসটা কমপ্রোমাইস করতে পারলে বাকি রাস্তা butter smooth। রাস্তার শুরুতেই ১০৮ শিব মন্দির পড়ে দেখেছি কিন্তু কখনও ভেতর অবধি যাওয়া হয়নি। এবারে মন্দির প্রাঙ্গনটা ঘুরে দেখার ইচ্ছে আছে। শক্তিগড় থেকে মিনিট কুড়ি। জলখাবার শেষ করে যখন মন্দিরের সামনে পৌঁছলাম তখন ঘড়ির কাঁটা প্রায় ৮টা ছুঁই ছুঁই। মন্দিরের সংলগ্ন পার্কিং জোনটা মেন রাস্তার গায়ে যে বাঁধানো পুকুরটা আছে তার পাশেই। এখান থেকে শান্তিনিকেতন আরও সোয়া ১ ঘন্টা। যেখানে “Country Villa” আমাদের আপ্যায়ন করার জন্য রেডি হয়ে অপেক্ষা করছে।

বর্ধমানের নবাবহাটে দু’শ চৌত্রিশ বছর আগে বহু অর্থ ব্যয় করে এই মন্দির গড়েছিলেন বর্ধমান রাজবংশের মহারানি বিষণকুমারী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধু সন্ন্যাসীদের এনে জাঁকজমক করে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। নবাবহাটের ১০৮ শিব মন্দির প্রতিষ্ঠার এক দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এই মন্দিরের নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। শেষ হয়েছিল ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে। সেই সময় বর্ধমান সংলগ্ন নবাবহাট এলাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মন্বন্তরে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। স্বজনদের হারিয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে গিয়েছিলেন এই এলাকার বাসিন্দারা। দৈব অনুগ্রহে এলাকায় মন্দির গড়ে বাসিন্দাদের ঈশ্বরমুখী করে তাঁদের শোক ভোলাতে চেয়েছিলেন বর্ধমানের মহারানিমা। সেই ভাবনা থেকেই নবাবহাটে এই একশো আট শিব মন্দির গড়েন তিনি। শিবমন্ত্র জপমালার ১০৮+১টি রুদ্রাক্ষের আদলে মন্দির স্থাপত্যগুলিকে গেঁথে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই ১০৮ শিবমন্দির। আটচালার নকশার আদলে নির্মিত মন্দিরগুলির গঠন একই রকমের। মন্দিরগুলির অবস্থান যেমন পাশাপাশি, তেমনি প্রতিটি মন্দিরের সামনেই আছে খোলা টানা বারান্দা। প্রতিটি মন্দিরই একটি দরজার। সব মন্দিরেই রয়েছে কষ্টিপাথরের গৌরীপট্ট-সহ শিবলিঙ্গ। মন্দিরগুলো বিভিন্ন ব্লকে বিভক্ত। উত্তর-পশ্চিম ব্লকের দক্ষিণ প্রান্তের মন্দির এবং দক্ষিণ-পশ্চিম ব্লকের উত্তর প্রান্তের মন্দিরের রৌপ্য প্রলেপযুক্ত দ্বারগুলি দেখতে ভুলবেন না যেন। এই মন্দিরমালা বর্ধমানের এক অনন্য শিল্পকীর্তি। সময়ের নিয়মে প্রাচীন মন্দিরমালা ধ্বংসের মুখে পড়লে সেগুলির সংস্কার এবং পুনর্নির্মান করা হয় বিংশ শতাব্দীতে, বর্তমানে যা ১০৮ শিব মন্দির ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত। মন্দিরের পূর্বদিকে আর একটি প্রবেশদ্বার আছে যেটা আপাতত বন্ধ আছে। এই দ্বারের সামনে ভগবান শিবের বাহন সাদা এবং কালো নন্দীর ভাস্কর্য আপনার নজর কাড়বেই। দিনভর অগণিত ভক্তের সমাগম হয় ইতিহাস প্রাচীন এই মন্দিরে। শিবরাত্রি উপলক্ষে সাত দিনের মেলা বসে মন্দির ও তার আশপাশ এলাকায়। মন্দির প্রাঙ্গন দারুন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। প্রবেশদ্বারের বাইরে জুতো খুলে প্রবেশ করতে হবে। ছোটো গাড়ীর পার্কিং ফি ২০ টাকা (বাইক ১০ টাকা) দিয়ে মন্দিরের পশ্চিমদ্বার পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার পর সে যেন এক অন্য জগৎ। ভগবানের বাসস্থান বোধহয় এরকমই হয়। সব মিলিয়ে শান্ত, শীতল মন ভালো করা বেশ একটা আধ্যাতিক পরিবেশ। অসংখ্য গাছে ঘেরা বিশাল পুকুরপাড়ের ছায়ায় বসে পাখির ডাক শুনতে শুনতে সময় কখন হারিয়ে যায় বোঝা যায়না। পুকুরকে বেষ্টিত করে চারপাশে সারিবদ্ধ শিবমন্দির আপনাকে টানবেই সবকটা ঘুরে দেখতে। স্ট্রেস মুক্ত হতে চাইলে অথবা কোলকাতার আশেপাশে (২ ঘন্টা, ১১৬ কিমি) লং ড্রাইভে যেতে চাইলে অথবা বোলপুর, তারাপীঠ, বক্রেশ্বর, ম্যাসাঞ্জোর ঘোরার পথে এখানে আসুন, নিশ্চিত ভালো লাগবে।

মন্দির থেকে বেরিয়ে সোজা শান্তিনিকেতন। তালিতের লেভেল ক্রসিং সহজেই পেরোলাম। শুনেছিলাম জ্যাম হচ্ছে, তবে আজ ট্রাফিক কম। উল্টোদিকের লাইন প্রায় ১ কিমি লম্বা। একে একে ওরগ্রাম, গুসকরা, দেবগ্রাম, আরো কয়েকটা ছোট ছোট গ্রাম, জনপদ, ধানক্ষেত পেরিয়ে যখন ভেদিয়া পৌঁছলাম ততোক্ষনে পেট গুড়গুড়ানি শুরু হয়ে গেছে। আন্ডারপাসের দু’পাশেই দেখি বেশ কয়েকটা গাড়ীর লাইন। একে একে পার হচ্ছে। যথারীতি কোনো সিভিক পুলিস নেই। আন্ডারপাসটা পুরোটাই জলমগ্ন। ছোট নিচু গাড়ীর নাম্বার প্লেট অবধি জলে চুবে যাচ্ছে। উঁচু গাড়ী হলে একটু সুবিধা। আমাদের SUV দুলতে দুলতে এযাত্রায় পার হলো। দেখি ওপারে একটা ছোট গাড়ী সাইড করা আছে, ওটার নিচের দিকটা ভালোই ঘষেছে মনে হল। এরপর আবার পরিস্কার রাস্তা। মাহুলির কাছে অজয় নদীর উপর অবনী সেতু পার হয়েই আমাদের প্রিয় বোলপুর।

“Country Villa”য় পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে দোতলার বারান্দায় চেয়ারটা টেনে বসতেই শরীর মনের ক্লান্তি উধাও। এর মধ্যেই মিসেস ছেলেকে নিয়ে পুকুর পাড়ের কাছে ধান ভাঙ্গা হচ্ছে দেখতে গেছে, এত এনার্জি পায় কোথায়? আসলে এই বাড়ীটার পজিশনই এমন। বড় রাস্তার ওপারে দিগন্তবিস্তৃত ধানক্ষেত, আর এদিকে পুকুর পাড়ের পাশ দিয়ে মোরামের রাস্তাটা পেরোলেই এই গাছে ঘেরা গ্রামের কুটির - মনটাকে দারুন সতেজ করে দেয়। আর আশেপাশের ঘোরার যায়গাগুলোও ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে। কিছু Off beat লোকেশনও আছে, পরে বলব। তাই শান্তিনিকেতনে এলে এটাই আমাদের বাসস্থান। চাইলে আপনিও থাকতে পারেন। Online এ বুক করুন অথবা ফোনও করতে পারেন (ফোন নম্বর: ৯৮৭৪৩৪৪৮৪৮)। সাজানো গোছানো পুরো দোতলা বাংলোটাই Owner ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য ভাড়া দেন অত্যন্ত ন্যায্য দামে। লাঞ্চ রেডি হচ্ছে। আমাদেরও রেডি হয়ে বেরোতে হবে জমিদার বাড়ীর দূর্গাপ্রতিমা দেখতে। সেই গল্প পরের পর্বে করব। সঙ্গে থাকুন...... (ক্রমশ)

বর্ণনার সম্পূর্ণ ভিডিও : https://youtu.be/3lYZY2tAoZw

★ তিস্তার বুকে RAFTING - কালিম্পঙে MUST DO ★কালিম্পঙ আজ অতিবর্ষণে প্রায় বিচ্ছিন্ন। তবে আবহাওয়া ভাল হওয়া শুরু হয়েছে। ...
21/10/2021

★ তিস্তার বুকে RAFTING - কালিম্পঙে MUST DO ★

কালিম্পঙ আজ অতিবর্ষণে প্রায় বিচ্ছিন্ন। তবে আবহাওয়া ভাল হওয়া শুরু হয়েছে। রাস্তা খুলেছে, খুলছেও। যাঁরা উত্তরবঙ্গ, সিকিম ঘুরতে গেছেন বা যাচ্ছেন, ঘোরার পর নিরাপদে, সুস্থভাবে ঘরে ফিরুন। যাঁরা কালিম্পঙ ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করছেন তাঁরা ভালো লাগলে এই পোষ্টটা পড়ে দেখতে পারেন। কালিম্পঙকে একটু অন্যভাবে দেখাতে চেয়েছি। এখানে মর্গান হাউস, ডেলো, নার্সারি, গুম্ফা ইত্যাদি নেই। আছে তিস্তা নদীতে Rafting, বিদ্যাং খোলার Hanging Bridge, রিশপের সৌন্দর্য এবং ইচ্ছেগাঁও-এর Trekking।

দার্জিলিং মেল যথাসময়ে NJP পৌঁছনোর পর প্ল্যান অনুযায়ী গাড়ী নিয়ে চললাম কালিম্পঙ। মর্গান হাউসে কোনদিনই থাকার ইচ্ছে ছিলনা। যতদিন থেকে ট্যুরিজম্ নিয়ে নিয়েছে, ওটার আমেজটা শেষ হয়ে গেছে। আর ডেলোর কটেজগুলোও শীতের মরশুমে গিজগিজে ভিড়। তাই স্পেশাল রিকোয়েষ্টএ পাহাড়ের কোলে একটা প্রাইভেট বাগানবাড়ী বুক করা ছিল। মর্গান হাউসের একটা ডিলাক্স ডবল রুমের যা দাম সেই দামের কিছু বেশি দিয়ে যদি পাহাড়ে ঘেরা, অর্কিড আর পাহাড়ি ফুলের বাগানের মধ্যে ৩ টি শয়নকক্ষ, ২ টি হল, কিচেন-জাইনিং, টেরাস-লন সহ আস্ত দোতলা বাংলো বাড়ীটাই পাওয়া যায়, তাহলে মর্গান, মেফেয়ার, সিনক্লেয়ার, সিলভার ওক টোকের দিকে কেন তাকাবো? দুপুর পৌনে ১২ টায় চেক-ইন করে একটু ফ্রেশ হতে না হতেই গরম ভাত, গন্ধরাজ লেবু, সোনামুগের ডাল, ঝুড়ো আলুভাজা, দেশি মুরগীর ঝোল ও আচার। উফ্ আর কি চাই? নেপালী কেয়ারটেকার যুগ যুগ জিও। একটু বিশ্রাম নিয়ে আশপাশটা explore করতে করতেই সন্ধ্যা নেমে এল সঙ্গে জাঁকিয়ে ঠান্ডা। তাড়াতাড়ি ডিনার করে সোজা লেপের তলায়। কাল সকালে তিস্তা নদীতে Rafting করতে হবে তো।

ড্রাইভার ভাইকে বলাই ছিল। জম্পেশ করে ব্রেকফাষ্ট করতে না করতেই গাড়ী নিয়ে হাজির। ও আজ আমাদের মেললি Rafting Point এ নিয়ে যাবে। আমাদের সঙ্গে একটা বয়স্ক জুটি ছিল। ওনাদের নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। কারন ভদ্রলোকের বয়স ৭৬ আর ওনার স্ত্রী ৬৯। Rafting এ ওনাদের দারুন উৎসাহ। কিন্তু আমার বুকটা দুরু দুরু করছে। নিজে তো সাঁতার জানিই না, খরস্রোতা তিস্তার বুকে Raft উল্টোলে কি করব? ড্রাইভার ভাই অভয় দিল। বলল Rafting দু’ধরনের হয়। একটা swimmer দের জন্য, যেখানে উল্টোনোর চান্স বেশি। আর একটা non-swimmer দের জন্য, যেখানে ‘প্রায়’ রিস্ক নেই। এই ‘প্রায়’ টাই বুকে সূঁচের মতো বিঁধছিল। যাই হোক, ১ ঘন্টার ৪০০০ টাকাটা দরদাম করে ৩৫০০ টাকায় বড় বোট নিয়ে আমরা ন’জন চেপে পরলাম। দুজন Instructor সঙ্গে ছিলেন। লাইফ জ্যাকেট ছিল। দাঁড় নিজেদেরই টানতে হবে। তবে বয়স্কদের শুধু দড়ি ধরে বসে থাকলেই চলবে। মোবাইল, ক্যামেরা সঙ্গে নেওয়া বারন। কারন হিসেবে বলছে জলে ভিজে নষ্ট হতে পারে। অবশ্য alternative ব্যবস্থা আছে। Instructor দের বললে ওদের লোকই ডাঙা থেকে ফটোশ্যুট করে দেবে, বিনিময়ে আরো ১৫০০ টাকা। কিন্তু আমি ক্যামেরা নেবই, এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবেনা। অগত্যা নিজের রিস্কে ক্যামেরার permission হল। এ এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। Experience না করলে ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়। সম্পূর্ন অভিজ্ঞতার ভিডিও লিংক নিচে দেওয়া আছে। সময় পেলে দেখতে পারেন।

Rafting এর পর আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ছিল বিদ্যাং খোলার ভগ্নপ্রায় Hanging ব্রিজ। ব্রিজের উপর থেকে নিচের দৃশ্য দেখলে রেলী নদীতে নামতে মন চাইবেই।লোহার দড়ির উপর ঝুলন্ত নড়বড়ে কাঠের পাটাতন পেরিয়ে অন্য পাড়ে এসে হাল্কা জঙ্গলের মধ্যে পাহাড়ের গা দিয়ে সর্পিল পথ নদীর কোল পর্যন্ত পৌঁছেছে। শীতকালে জল কম, তাই বোল্ডার আর বরফশীতল হাঁটুজল পেরিয়ে অনায়াসে মাঝনদীতে গিয়ে ফটোশ্যুট করা যেতেই পারে। রেলী নদীর তীরে রাত্রিবাসের জন্যে কয়েকটা ক্যাম্প আর হোমষ্টেও পেয়ে যাবেন।

এবার টিফিন দারা পার হয়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চললাম রিশপ। ইউক্যালিপটাস আর ঝাউবনের মধ্যে দিয় জঙ্গলের রাস্তা অতি মনোরম, অনেকটা চড়াই। গাড়ী ছাড়াও একটা ট্রেকিং রুটও আছে - লাভা থেকে রিশপ। আগেরবার ট্রেক করেছিলাম, কিন্তু বয়স্ক লোক সঙ্গে থাকায় এবারে সম্ভব নয়। আকাশ পরিস্কার থাকায় অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘা সমহিমায় সহজেই ধরা দিল।

গরম চা আর হাল্কা স্ন্যাকস খেতে খেতে এগোলাম ইচ্ছেগাঁও অভিমুখে। পথে ডাল, পাঁপড়, আচার সহযোগে মাছ, ভাত দারুন এনার্জি দিল; ইচ্ছেগাঁওতে ট্রেক করতে হবেতো।

ভেবেছিলাম গাড়ীর রাস্তার শেষ থেকে রামিতে ভিউ পয়েন্ট অবধি প্রায় ১ কিমি Jungle trail টা ট্রেক করব। বয়স্কদের জন্যেও সহজ। চড়াইও কম। সব মিলিয়ে perfect forest walk | কিন্তু রামিতে ভিউ পয়েন্টে গিয়ে নিরাশ হতে হল। মেঘ কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ায় ভালো ভিউ পাওয়া গেলনা। কিন্তু পাহাড়ী পথে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে প্রকৃতিকে কাছে পাওয়াটাই আমার কাছে অনেক।

এবার ফেরার পালা, মন ভারাক্রান্ত। কয়েকটা ছবি আর ভিডিও লিংক শেয়ার করলাম। ভাল লাগলে সাবস্ক্রাইব করে ফলো করতে পারেন। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ। ভিডিও লিংক: https://youtu.be/b4t1vvL97Zk

★ কলকাতা থেকে সড়কপথে পিয়ালী দ্বীপ - জয়নগর - হেনরি দ্বীপ - বকখালি - ফ্রেজারগঞ্জ ভ্রমণ (১ম পর্ব) ★পিয়ালি দ্বীপ পশ্চিমব...
26/09/2021

★ কলকাতা থেকে সড়কপথে পিয়ালী দ্বীপ - জয়নগর - হেনরি দ্বীপ - বকখালি - ফ্রেজারগঞ্জ ভ্রমণ (১ম পর্ব) ★

পিয়ালি দ্বীপ পশ্চিমবঙ্গের একটি সুন্দর এবং দূষণমুক্ত নদী তীরবর্তী গন্তব্য, যা পিকনিক বা উইকএন্ড গেটওয়ের জন্য আদর্শ। এই দ্বীপে প্রচুর নয়নভিরাম জায়গা আছে এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য উপোভোগ করার উপযুক্ত সময়টি হল অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি এখানে আসে যা ফটোগ্রাফার বন্ধুদের আকর্ষণ করে। পিয়ালি নদীর সৌন্দর্য উপোভোগ করা ছাড়াও অন্যান্য আকর্ষণ হ'ল দিগন্ত বিস্তৃত ধানের ক্ষেত, ইউক্যালিপ্টাস জঙ্গল, পিয়ালী-মাতলা নদীতে নৌকাবিহার এবং ছবির মতো সুন্দর গ্রাম্য পরিবেশ। সম্পূর্ণ ভিডিওটি দেখুন, আশা করি আপনার এটি ভালো লাগবে। আর শুধু দেখলেই চলবে না, পরিকল্পনা করে পরিবার বন্ধুদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন, মাত্র ৩ ঘন্টা কলকাতা থেকে।

২২শে ডিসেম্বর ২0২0 ভোর ৫টায় গাড়িতে ডিজেল ভরিয়ে যাত্রা শুরু করলাম আলিপুর থেকে। প্ল্যান ছিল করুণাময়ী - কবরডাঙা - নেপালগঞ্জ - জুলপিয়া হয়ে বারুইপুরের রাস্তা ধরব। যেমন ভাবা তেমনি কাজ, কবরডাঙার মাছের বাজারের ৫ মিনিটের জ্যামটা ছাড়া ঘন কুয়াশার মধ্যে দিয়ে সূর্যদয় দেখতে দেখতে নির্বিঘ্নে বারুইপুর পৌঁছে গেলাম ১ ঘন্টার মধ্যে। ততক্ষনে খিদেয় পেট চুঁই চুঁই শুরু করেছিল, তাই বাড়ি থেকে আনা হাল্কা স্ন্যাক আর চা সহযোগে গাড়ি চালাতে লাগলাম। এই মহামারিতে বাইরের খাবার খেতে মন চাইছিলনা তাই ঠিক করেছিলাম বাড়িতে তৈরি খাবার দিয়ে ব্রেকফাস্টটা পিয়ালীতে গিয়েই সারবো।

বারুইপুরের পরে এল আর একটি লেভেল ক্রসিং কৃষ্ণমোহন হল্ট। লকডাউনের পরে লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে অল্প কিছুদিন আগে। ট্রেনের সংখ্যাও কম। কিন্তু ক্রসিং-এ লম্বা লাইন। ২০ মিনিট অপেক্ষার শেষে ট্রেন পাস করল। একে একে পেরোলাম গোচারণ, ধোসা - দুপাশে গাছের সারির মধ্যে দিয়ে বেনীর মতো রাস্তা, হাল্কা কুয়াশা ঢাকা সকাল, হাড় কাঁপানো ঠান্ডা - হু হু করে গাড়ী চালানোর মজাটাই আলাদা। ধোসা-র পর বাঁদিক ধরে অল্প এগোতেই দেখা দিলো সে - সুন্দরী পিয়ালী, পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলল পিয়ালী দ্বীপের অভিমুখে।

দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম মহিষমারী বাজার। এখান থেকে রাস্তা দুদিকে ভাগ হয়ে গেছে; ডানদিকেরটা গেছে বহরু - জয়নগর, আর বাঁদিকেরটা পিয়ালী নদীর গা ঘেঁসে চলেছে আমাদের প্রথম গন্তব্য পিয়ালী দ্বীপ। আসল অ্যাডভেঞ্চার শুরু এখান থেকেই। মহিষমারী বাজার থেকে পিয়ালী দ্বীপের দূরত্ব প্রায় ৮ কিমি। সময় লাগার কথা আধ ঘন্টা, কিন্ত লাগবে ডবল। ইচ্ছাখালি থেকে রাস্তা সরু, অনেক জায়গাতেই ভগ্নদশা। কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে রাস্তা সারানোর কাজ চলছে। এককথায় গ্রাম্য রাস্তায় Roller Coaster Ride। পাঁচুয়াখালি পেরনোর পর মোবাইল জিপিএস কাজ না করলেও চিন্তা নেই, বাঁ পাশ দিয়ে বয়ে চলা পিয়ালী নদী আপনাকে নিশ্চিত সঙ্গ দেবে এবং পথ দেখাবে। বলে রাখা ভালো, আমাদের এয়ারটেল নেটওয়ার্ক দারুন সার্ভিস দিয়েছে, বাকি বিএসএনএল, জিও, ভোডা - এই রাস্তায় সব ফেল। তাই এয়ারটেল না থাকলে একটা পেপার ম্যাপ সঙ্গে রাখাই ভালো। এই রাস্তায় এসইউভি গাড়ীর জুরি মেলা ভার; তবে হ্যাচব্যাক্, সেডান বা ট্রাভেলারও চলতে পারে। রাস্তায় পাম্পের সংখ্যা খুবই কম, তাই তেলের ট্যাংক শহর থেকে ফুল করে নিয়ে যাত্রা শুরু করাই ভালো। পথ হারালে গ্রাম্য মানুষজনের সাহায্য নিতে ভুলবেন না।

ঠিক ছিল, নতুন ব্রীজ দিয়ে পিয়ালী দ্বীপে প্রবেশ করব আর কেল্লা ব্রীজ দিয়ে ফিরব। প্ল্যান অনুযায়ী পিয়ালী নদীকে অনুসরন করে, পথের দুপাশে ছোটো ছোটো গ্রাম আর ইটভাটা পেরিয়ে যখন নতুন ব্রীজে পৌঁছলাম তখন ঘড়ির কাঁটা ৮টা ২০ ছুঁই ছুঁই। ব্রীজের উপর থেকে পিয়ালী নদীর সৌন্দর্য এককথায় অনবদ্য। কিন্তু বেশিক্ষণ সময় দেওয়া যাবেনা। পেটেও ততক্ষনে টান ধরেছে, তাই নতুন ব্রীজের উপর ১০ মিনিটের ফটো সেশন শেষ করে এগিয়ে চললাম পিয়ালী দ্বীপের গভীরে।

পরের পর্বে পিয়ালী দ্বীপের বাকিটা লিখব। অবশ্য এখনই পুরোটা দেখে নিতে পারেন এই ভিডিওটিতে https://youtu.be/ieVjPeb--fk ক্লিক্ করে। লেখার ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন। আর কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!

Address

Alipore
Kolkata
700027

Opening Hours

Monday 9am - 5pm
Tuesday 9am - 5pm
Wednesday 9am - 5pm
Thursday 9am - 5pm
Friday 9am - 5pm
Saturday 9am - 5pm
Sunday 9am - 5pm

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Inspired Backpackers posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Inspired Backpackers:

Videos

Share

Category


Other Travel Companies in Kolkata

Show All