15/03/2023
Bangladesh থেকে India যাওয়ার A to Z সঠিক গাইডলাইন। যশোর, বেনাপোল বর্ডার দিয়ে যারা যেতে চান তাদের জন্য উপকারে আসবে।
যারা ইন্ডিয়া ঘুরতে বা চিকিৎসার জন্য যেতে চান তারা সাধারনত কলকাতা থেকে ট্রেনে করেই বেশি সংখ্যক লোক বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে থাকে আর সেটা কলকাতার হাওড়া স্টেশন থেকেই বাংলাদেশের ৮০% লোক যাতায়াত করে ভারতের বিভিন্ন গন্তব্যের দিকে যেমন হাওড়া টু চেন্নাই, হাওড়া টু দিল্লি, হাওড়া টু কালকা, হাওড়া টু গোয়া, হাওড়া টু মুম্বাই ইত্যাদি।
আসুন জেনে নেই কিভাবে ভারতে যাবেন এছাড়াও ট্রেনের বিস্তারিত আপডেট তথ্য।
এই পোস্টটি (বিডিইন্ডি ট্রাভেরা) পেজের প্রথম পোস্ট ছিল যা (৯ জানু, ২০১৭) তে পাব্লিশ করা হয়েছিল যা ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল এবং অনেকে উপকৃত হয়েছিল। পোস্টটিতে পূনরায় আপডেট তথ্য যোগ করে আবারো দেওয়া হলো.....
@@ যারা খুলনা থেকে ট্রেনে করে বেনাপোল যাবেন তারা সকাল ৬ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে খুলনা রেল স্টেশন পৌঁছাবেন এবং কাউন্টার থেকে ৪৫ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে উঠে পড়ুন। ঠিক ৬ টা ৪৫ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে এবং সকাল ৯ টা ১৫ মিনিটে গিয়ে বেনাপোল স্টেশন পৌঁছাবে (এটি আগে ভোর ৬ টায় ছাড়তো)। বেনাপোল স্টেশন নেমে ইজিবাইকে বেনাপোল বর্ডার চলে যাবে এবং প্রতিজন ভাড়া নিবে ২০ টাকা, সময় লাগবে ১৫/২০ মিনিট। এরপর লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ ট্যাক্স ও বেনাপোল উন্নয়ন ফি বাবদ ৫৪৫ টাকা জমা দিন সোনালি ব্যাংক কাউন্টারে। তারপর পাসপোর্ট ও ভ্রমণ ট্যাক্স কপি দেখিয়ে ভিতরে প্রবেশ করুন আর ব্যাগ ও লাগেজ স্ক্যান করে সামনে এগিয়ে যান....
@@ যারা খুলনা বিভাগে বসবাস করেন যেমন বাগেরহাট, যশোর, নড়াইল, খুলনা, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর ও অন্যান্য অঞ্চলের মানুষ বেনাপোল বর্ডার দিয়ে যাতায়াত করে বা করতে পছন্দ করে, তাদের কে প্রথমে যা করতে হবে তবে বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ই বেনাপোল বর্ডার দিয়ে যাতায়াত করে কারণ সহজ ও সময় কম লাগে তাছাড়া কলকাতা কাছে।
# খুলনা থেকে কিভাবে ও কখন যাবেন?.....................................................
কখন যাবেন এটা নির্ভর করবে আপনার বা আপনাদের উপর। কারণ আপনি যদি আগে থেকে চেন্নাই/ভেলর/দিল্লি ট্রেনের টিকিট কোন পরিচিত এজেন্ট এর মাধ্যমে কাটিয়ে রাখেন তাহলে ওই এজেন্ট এর কাছ থেকে অগ্রীম টিকিট নিয়ে নিবেন এবং যাত্রার অন্তত ১ দিন আগে ট্রেনের সময় সূচি ঠিক আছে কিনা জেনে নিবেন।
ধরে নিলাম, আপনি এপ্রিল মাসের ৮ তারিখ রাত ১১:৫৫ মিনিটে হাওড়া স্টেশন থেকে চেন্নাই ( মাদ্রাজ ) এর উদ্দেশ্য নিয়ে ট্রেনে যাত্রা শুরু করবেন, ট্রেনের নাম Chennai mail (চেন্নাই মেইল) যা রাত ১১:৫৫ মিনিটে ছাড়বে। এই ট্রেন আছে রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে ছাড়তো কিন্তু এখন ১১ টা ৫৫ মিনিটে ছাড়ে।
আপনি যদি খুলনা থেকে শুরু করেন তাহলে প্রথমে খুলনার সোনাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে সকাল ৮ টায় এসে খুলনা টু কুস্টিয়া যাওয়ার অনেক বাস পাবেন। আপনি "গড়াই পরিবহণ" এ যশোর যাওয়ার টিকিট কেটে উঠবেন। গড়াই পরিবহণ এর সার্ভিস অন্য বাসের তুলনায় ভালো। ১ ঘণ্টা পর পর বাস ছাড়ে ওখান থেকে যশোর এর উদ্দেশ্য নিয়ে যশোর তারপর কুষ্টিয়া যায়।
বাস যদি সকাল ৮ টায় চালু করে তাহলে যশোর মনিহারের ওখানে পৌঁছাতে ১০ টা বেজে যাবে মানে ২ ঘণ্টা লাগে। খুলনা থেকে যশোর মনিহার ৬২ কি.মি.।
বিঃদ্রঃ অন্যদের ক্ষেত্রে যেখান থেকেই আসেন না কেন আগে যশোর মনিহারের কাছে আসতে হবে তারপর বেনাপোলের দিকে তবে অনেক জেলা থেকে সরাসরি বেনাপোল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন বাস আসে অর্থাৎ খোঁজ খবর নিবেন, তাহলে আরো সুবিধা হবে।
যাইহোক এবার যশোর মনিহারের ওখানে নেমে একটা ইজিবাইক ভাড়া করে নিবেন। প্রতি জন ২০ টাকা করে নিবে। ১২০/১৩০ টাকা দিয়ে রিজার্ভ করে নিলে ইজিবাইক ওয়ালা আপনাকে বেনাপোল বাসের কাউন্টার এর ওখানে নিয়ে যাবে, যেখান থেকে বেনাপোল যাওয়ার বাস ছাড়ে মুলত যায়গার টির নাম যশোর বাস টার্মিনাল নামে পরিচিত। তবে আপনি ২০ টাকা দিয়েও ইজি বাইকে আসতে পারবেন কারণ ৫ মিনিটের মধ্যে ইজি বাইকে লোক হয়ে যায়।
যশোরে মুলত একটা ইজি বাইকে ৮ জন করে নিয়ে থাকে। এবার ইজিবাইক থেকে নেমে টিকিট কেটে নিবেন বা বাসে সিট থাকলে উঠে পড়বেন। সিট না থাকলে পরের বাসের জন্য অপেক্ষা করে সিট নিয়ে বসে পড়ুন তবে আশা করি সিট পেয়ে যাবেন। যশোর মনিহার থেকে বেনাপোল বাসের কাউন্টারে যেতে ১৫/২০ মিনিট সময় লাগে।
# # যশোর টার্মিনাল থেকে বেনাপোল বাস স্ট্যান্ড ৩২ কি.মি. এবং ভাড়া নিবে ৭৫ টাকা করে প্রতি জন। সময় লাগবে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট তারমানে দুপুর ১২:৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবেন। বাস থেকে নেমে হেটে যেতে ২০/২৫ মিনিটস লাগে বেনাপোল মুল গেটে যেতে যদি লাগেজ বা ব্যাগ বেশি থাকে তাহলে একটা ইজিবাইক ভাড়া করে বেনাপোল গেটে যাবেন, ভাড়া নিবে প্রতিজন ১৫ টাকা।
প্রায় ২ কি.মি. এর কাছাকাছি তাই ভ্যানে বা ইজি বাইকে যাবেন। প্রতি জন ১৫ টাকা করে ভাড়া নিবে আর রিজার্ভ করলে ৪০/৫০ টাকা দিলেই ছেড়ে দিবে।
তারমানে খুলনা থেকে ৮ টায়, তারপর ১০ টায় যশোর তারপর যশোর টারমিনাল থেকে বেনাপোল ১২ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে মানে আরো ৩০ মিনিটস বেশি ধরে দুপুর ১ টায় পৌঁছে যাবেন।
এবার বেনাপোলে গিয়ে আগে যে কাজ করবেন তা হলো ওখানে সোনালি ব্যাংকে যাবেন। প্রতি জনের ভ্রমণ বাবদ ৫০০ টাকা করে ট্যাক্স ফি ও বেনাপোল উন্নয়ন ফি বাবদ ৪৫ টাকা মোট ৫৪৫ টাকা জমা দিয়ে ট্যাক্সের রিসিপ্ট কপি নিবেন। কপিতে উল্লেখ করা থাকবে ৫০০ টাকার কথা, এই টাকা আপনাকে দিতেই হবে এটাকে ভ্রমণ ট্যাক্স বলা হয়। এই ভ্রমণ ট্যাক্স আপনি যাত্রার ৩/৫ দিন আগেও সোনালী ব্যাংকে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে (বিকাস/রকেট) মাধ্যমে জমা দিয়ে রাখতে পারেন, ভ্রমণ ট্যাক্স এর কপি প্রিন্ট করে কাছে রাখবেন.....
তবে বেনোপোল থেকে দিতে গেলে একটু ভিড় থাকে। আপনি নিজে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিয়ে রিসিপ্ট কপি নিবেন আর যদি ঝামেলা মনে করেন তাহলে ওখানে দালাল পাবেন যারা এই কাজ করার জন্য আপনার পিছে লেগে থাকবে, ওদের কে দিয়ে করিয়ে নিলে পাসপোর্ট প্রতি ৪০/৫০ টাকা দেওয়া লাগে তবে নিজেরা করাই বেটার, কোন ঝামেলা নেই শুধু ভিড় থাকলে ২০/২৫ মি দেরি হবে এই আর কি।
তাহলে কাজ প্রায় শেষ, খাড়ান এখনো ঢের বাকি আছে। এবার ওই ট্যাক্স রিসিপ্ট আপনার ব্যাগে রেখে দিন বা পকেটে রাখতে পারেন যদি ইমিগ্রেশন অফিসার দেখতে চাই তাহলে দেখাবেন। যখন মুল গেটের ভিতরে প্রবেশ করবেন। তবে ট্যাক্স এর রিসিপ্ট কপি পাসপোর্ট বই এর ভিতরে রাখাই বেটার তাতে দেখতে চাইলে সহজে দেখে নিতে পারবে।
তবে কারো কাছে পাসপোর্ট দিবেন না, ভিতরে গেলে পুলিশ ও দালাল পাবেন, ওদের কাছে দিতে পারেন তবে সাথে যাবেন বা কাছাকাছি দাঁড়াবেন। আর না চাইলে নিজেই লাইনে দাড়িয়ে সব কাজ করতে পারবেন তাতে হয়তো ৩০ মি সময় লাগতে পারে। তবে ভীড় থাকলে আরো বেশি সময় লাগবে যেমন ১/২/৩ ঘণ্টাও লাগতে পারে।
তাহলে এবার মুল গেটের দরজায় আসুন, সাথে সাথে দুই / এক পুলিশ বা দালাল আপনাকে বলবে যে ভাই পাসপোর্ট এ সিল লাগানো লাগবে? যদি তাদের কাছে দেন তাহলে ৫/৭ মি পরে এসে আপনাকে পাসপোর্ট দিয়ে বলবে আপনার কাজ শেষ, এবার আপনার ব্যাগ বা লাগেজ স্ক্যান করে ছেড়ে দিবে আর আপনি কোন লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি গেট থেকে বের হয়ে যেতে পারবেন মানে বাংলাদেশের বর্ডার পার হওয়ার আগে ইমিগ্রেশনের অফিসার আপনার পাসপোর্ট আর ভিসা চেক করে আর Passport এ Departure Seal দিবে, এটা একটু দেখে নিবেন Departure নাকি Arraival seal মেরে দিলো কারণ যাওয়ার সময় Departure Seal হবে। এই ছাড়া আর কিছু নেই, এর জন্য প্রতি পাসপোর্ট এ ১০০ টাকা নিবে যিনি আপনাকে করে দিবেন তা না হলে নিজেরা লাইনে দাঁড়িয়ে একটু অপেক্ষা করে চেক করে নিতে পারবেন, কোন টাকা লাগবে না অর্থাৎ এটা সম্পূর্ণ আপনার বিষয়, তবে লাইনে দাঁড়িয়ে নিজের কাজ নিজে করুন, আগের থেকে অনেক ভালো সেবা পাবেন।
(এই সব কাজ করতে আপনার হায়েস্ট দুপুর ১:১৫ টা বা ১:৪৫ মিনিট বেজে যেতে পারে অর্থাৎ আপনি ইন্ডিয়ার মুল গেটের এরিয়াতে লাইনে ১:৪৫ টার মধ্যে দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন।) যদি ভীড় কম থাকে বা স্বাভাবিক থাকে এবং ভীড় থাকলে দুপুর ২/৩/৪ টাও বাজতে পারে🤔
এবার আসুন ইন্ডিয়ার মুল এরিয়ার গেট শুরু (No mans land) যেখানে ইন্ডিয়ান অফিসার আপনাদেরকে লাইনে দাড় করিয়ে সবার হাতে একটা করে ছোট কাগজ বা ফর্ম দিবে ওটা হাতে বা পকেটে রাখবেন। এক এক করে ভিতরে ইন করবেন আর নরমাল অফিসাররা আপনার পাসপোর্ট দেখে ছেড়ে দিবে তারপর আপনি আপনার ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে সামান্য হেটে সামনে একটা গলির ভিতর দিয়ে যাবেন, কয়েক সেকেন্ড যাওয়ার পর ইন্ডিয়ার বড় একটা রুমে প্রবেশ করে দেখতে পাবেন অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। ওখানে ২/৩ জন অফিসার চেক করছে এক এক জন করে যেমন ইন্ডিয়ান রুপি বা ডলার আছে কিনা? আপনার কাছে ডলার ও বাংলা টাকা ছাড়া আর যেন কিছু না থাকে।
আপনার কাছে যত ডলার থাকবে তাই বলবেন আর না থাকলে বলবেন যে বাংলাদেশি টাকা ছাড়া আর কিছু নেই আর কি উদ্দ্যেশ্য নিয়ে ইন্ডিয়া যাচ্ছেন সেটা বললেই হবে। ওখানে তেমন ঝামেলা নেই, তবে চেক করে যদি রুপি পাই সব রেখে দিবে সেই সাথে ধমক তো আছেই। কারণ আপনাকে টাকা চেঞ্জ করে রুপি নিতে হবে ওদের ফাইনাল ইমগ্রেশনের চেকাপ ও ছবি তুলে রাখার পর অর্থাৎ ওই পারে পৌঁছানোর পর।
তবে ওখানে পা দেওয়ার সাথে সাথে ১/২ জন লোক এসে আপনার কাছে ওই কাগজ বা ফর্মটা চাইবে যেটা ইন্ডিয়ার মুল গেটে ইন করার সময় সবার হাতে একটা করে দিয়েছিল। যে কোন একজন কে দিয়ে ফিলাপ করিয়ে নিন। মুলত ওটা ফিলআপ করতে হবে, এই কাজটা করার জন্য ৬/৭ জন লোক ওখানে থাকে তারা দ্রুত লিখে দিবে আপনার নাম, পাসপোর্ট নং, ইন্ডিয়ার কোথায় যাবেন ইত্যাদি ওদেরকে ২০ টাকা করে দিতে হয় প্রতি পাসপোর্ট এর জন্য। আর স্বাক্ষরের স্থানে নিজের পাসপোর্টে যেভাবে আছে সেভাবেই স্বাক্ষর করে রাখবেন।
আপনার কাজ শেষ এবার আপনি ওই ফর্মটা হাতে নিয়ে সামনে আগাতে থাকুন। একটু একটু করে আগাতে আগাতে আপনি ওখানে ইমিগ্রেশনের মুল অফিসাররা অসংখ্য পিসি নিয়ে বসে আছে, আপনি লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্ট দিবেন। ওরা পাসপোর্ট নিয়ে কম্পিউটার থেকে চেক করবে আর আপনার একটা ছবি তুলে রাখবে, ফিংগার রাখবে, ছবি তোলার সময় চশমা খুলে তারপর সোজা হয়ে ক্যামেরার দিকে তাকাবেন বা ওরা যে ভাবে বলবে সেই ভাবে তাকাবেন।
অফিসাররা আপনাকে জিজ্ঞেস করতে পারে কি জন্য যাচ্ছেন যদি মেডিকেল ভিসা হয় তাহলে বাংলাদেশের ডা: এর প্রেস্ক্রিপশন ও এপোয়েন্টমেন্ট লেটার দেখতে চাইবে তবে আপনার কথা বলার ধরণ ওদের ১০০% রিয়েল মনে হলে আর দেখবে না, যান যান বলে ছেড়ে দিবে আর পাসপোর্ট টাও পকেটে ঢুকিয়ে নিবেন।
ওই রুম থেকে বের হয়ে ১ মিনিট হেটে সামনে গেলেই মেইন গেট দেখতে পারবেন এবং গেট দিয়ে বের হয়ে যাবেন তারপর রাস্তার ওই পারে গিয়ে অসংখ্য মানি এক্সচেঞ্জ অফিস পাবেন।
এখান থেকে বাংলাদেশি টাকা বা ডলার ভাঙিয়ে রুপি নিবেন। আজকের রেট জিজ্ঞেস করে নিবেন ১০০ টাকায় কত রুপি দিবে, সেই অনুযায়ী অপেক্ষা করে টাকা দিয়ে ইন্ডিয়ান রুপি বুঝে নিবেন।
বর্তমানে,
(১২/০২/২০২৩) তারিখে পার হয়েছিলাম
১০০ টাকা= ৭৪.৭০ রুপি দিচ্ছে (১২/০২/২৩ পর্যন্ত রেট ছিল) তবে এর কাছাকাছি বা বেশিও পেতে পারেন।
আমি যখন ২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে গিয়েছিলাম তখন আমাকে ১০০ টাকা = ৭৬.৭০ রুপি দিয়েছিল কিন্তু আসার সময় কলকাতার মারকুইস স্ট্রীট রোড থেকে মাত্র ৭৪.৭০ রুপি পেয়েছিলাম। মূলত করোনার কারণে সব এলোমেলো হয়ে গেছে.....
আপনাকে যখন রুপি দিবে তখন ১০০ রুপির নোট নিবেন ৪০০০/৫০০০ বাকি সব আপনাকে ২০০০ রুপির নোট দিবে। আবার নিউ ৫০০ রুপির নোট দিলেও নিতে পারেন।
আপডেটঃ এখন আর রুপির কোন ঝামেলা নেই তাই ২০০০/৫০০ রুপির নোট দিলে তা সহজেই নিতে পারেন ,নো টেনশন। মানে চেন্নাই বা যেখানে যাবেন তা সহজেই ভাঙ্গিয়ে নিতে পারবেন দোকান বা হোটেল থেকে।
রুপি আর পাসপোর্ট পকেটে রাখবেন যাতে নিরাপদ থাকে। এবার ফাইনালি গেট পার হওয়ার সময় দারোয়ান আর একবার চেক করে দেখে ছেড়ে দিবে। আপনি এবার ইন্ডিয়ার মুল রাস্তায় পা দিলেন যেখানে অনেক দোকান ঘর, অটো, কার দেখতে পারবেন মানে যাদেরকে দেখতে পাচ্ছেন তারা সবাই কলকাতার বাসিন্দা। এই সমস্ত কাজ করতে আপনার দুপুর ২:৩০ এর বেশি বাজবে না। মানে ওদের এরিয়াতে পিচের রাস্তায় যখন পৌছেবেন তখন বিকেল দুপুর ২:৩০ বেজে যাবে (যদি ভীড় না হয়)
** বি:দ্র:
টাইম টু টাইম উল্লেখ করছি কারণ বেনাপোল দিয়ে ভোর ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত মানুষ আসা যাওয়া করতে পারে। সন্ধ্যা ৬ টা বাজার সাথে সাথে গেট অফ মানে কেউ আর বর্ডার পার হতে পারবে না, আবার ভোর ৬ টা বাজার কয়েক মিনিট আগে গেট খুলে থাকে। তবে যারা ভিতরে প্রবেশ করে তাদেরকে বের হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, রাত ৮ টা বাজলেও বের হতে পারবেন।
ওদের এরিয়াতে প্রবেশ করার পর অনেক অটো, কার এবং প্রচুর দোকান দেখতে পারবেন। এবার একটা অটোতে উঠে পড়ুন, একটা অটোতে ৫ জন করে বসে মানে পিছনে ৩ জন আর ড্রাইভারের দুই পাশে দুই জন মোট ৫ জন হলে ছেড়ে দিবে বনগাও রেল স্টেশন পর্যন্ত। প্রতিজনের ভাড়া ৫০ রুপি করে নিবে (করোনার আগে ৩০ রুপি ছিল) ওরা রুপি কে টাকা বলে থাকে তবে যে রুপি নিছেন ওটাই ওদের টাকা, কলকাতা তো তাই। যদি রিজার্ভ করে নিতে চান তাহলে ২৫০ টাকা দিলে ওরা সাথে সাথে ছেড়ে দিবে আর ২০ মিনিটস পর "বনগাও" রেলস্টেশন এ গিয়ে নামিয়ে দিবে।
যে রাস্তা দিয়ে যাবেন তা মুলত যশোহর রাস্তা নামেই লেখা দেখতে পারবেন আর রাস্তার দুই ধারে বিশাল বিশাল গাছ দেখা যাবে। বেনাপোল থেকে বনগা ৮ কি.মি.। আপনি ২৫০ বা ৫০ রুপি দিয়ে অটো থেকে নেমে রেলের টিকিট কাউন্টারের ঘরের কাছে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে শিয়ালদা স্টেশন পর্যন্ত টিকিট কেটে নিন। মুলত এই বনগাঁ স্টেশন হচ্ছে লোকাল রেল স্টেশন। এখান থেকেই ট্রেন ছেড়ে শিয়ালদা পর্যন্ত যাতায়াত করে যা প্রায় ৯০ কিমি. দূরে।
বনগা থেকে শিয়ালদাহ স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া নিবে প্রতি জনের কাছ থেকে ২০ রুপি। সময় লাগবে ২ ঘন্টার একটু বেশি মানে আপনি বেনাপোল থেকে বিকেল ৩:৩০ এর দিকে পৌছালেন বনগাও রেল স্টেশনে এবং শিয়ালদা স্টেশন পৌছালেন বিকেক ৫:৩০ থেকে ৬ টার দিকে।
এবার ট্রেন থেকে নেমে সামনে হেটে মূল গেট দিয়ে বের হবেন এবং অনেক অটো পাবেন, একটা অটো নিবেন আর বলবেন হাওড়া স্টেশনে যাবেন অথবা হলুদ ট্যাক্সি নিতে পারেন। ওখান থেকে প্রায় ৪ কি.মি. দূরে হাওড়া স্টেশন, ভাড়া মোট ৩০০ রুপি নিবে তবে অনেকের কাছ থেকে ২৫০ রুপিও নিতে পারে সেটা আপনি ভাড়া ঠিক করে নিবেন এবং সময় লাগবে মাত্র ২৫/৩০ মি। তবে হলুদ ট্যাক্সিতে শেয়ার করে যেতে পারেন এক্ষেত্রে প্রতিজন ৭০/৮০ রুপি চাইতে পারে, তবে রিজার্ভ করে যাওয়া ভালো। হাওড়া স্টেশনের মুল গেটের ভিতর প্রবেশ করে আপনাকে নামিয়ে দিবে। ব্যাস, আপনি হাওড়া স্টেশনে পৌছে গেলেন সন্ধ্যা ৭ টার আগেই।
হাওড়া স্টেশনে মোট ২৩ টা প্লাটফর্ম মানে ২৩ টা ট্রেন আলাদা ভাবে আসা যাওয়া করার ব্যবস্থা আছে। তাই যারা আগে কখনো যান নাই তাদের কাছে একটু ভয় বা তালগোল লাগতে পারে আর হাজার হাজার মানুষ দেখতে পাবেন হাওড়া স্টেশনে। ভয়ের কিছু নেই আমরা তো আছি, ট্রেন যেখানে দাড় করানো আছে মানে ওই সময় কোন ট্রেন ছেড়ে যাবে ওটাই একটা প্লাটফর্ম, একটু উপরের দিকে তাকালেই দেখতে পারবেন ২২ বা ২১ বা অন্য ডিজিটাল প্লেটে লাল আলোতে লেখা আছে ওগুলো প্লাটফর্ম এর নম্বর। যদি আপনি উপরে তাকিয়ে দেখেন ২২ লেখা আছে তাহলে আপনি ২২ নং প্লাটফর্ম এ দাঁড়িয়ে আছেন। ২৩ দেখলে মনে করবেন ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছেন।
** এখন আপনি আপনার ট্রেন কিভাবে পাবেন?
আপনাকে যে টিকিট দিয়েছে অর্থাৎ এজেন্টের মাধ্যমে কাটিয়ে নিছেন সেটাতে ট্রেনের নাম, নম্বর, সিট নম্বর, টিকিটের দাম, আপনার নাম ও কোথায় যাবে ট্রেনটি তার বিস্তারিত দেওয়া থাকবে তবে কোন প্লাটফর্ম এ ট্রেনটি পাবেন বা উঠবেন তা দেওয়া থাকে না।
প্লাটফর্ম এর নাম্বার হেল্প সেন্টার বা তথ্য অফিস থেকে জেনে নিবেন পাশেই ১৮/১৯ নম্বর প্লাটফর্ম এর শুরুর দিকে একটু ভিতরে হেটে গেলেই পেয়ে যাবেন। তাদের কাছে জিজ্ঞেস করুণ যে চেন্নাই এর ট্রেন কোন প্লাটফর্ম থেকে ছাড়বে, ওরা সিরিয়াল দেখে আপনাকে বলে দিবে প্লাটফর্ম এর নাম মানে ২২/২৩ নম্বর। তবে চেন্নাই এর ট্রেন ২২ বা ২৩ নম্বর প্লাটফর্ম থেকেই ছাড়ে। আমাদের ট্রেন ২৩ নম্বর থেকে ছেড়েছিল।
তাছাড়া প্রতিটি ট্রেন ছাড়ার ২০ মিনিট আগেই দেখবেন নোটিশ বোর্ডের মত আছে প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে। আপনার প্লাটফর্ম যদি ২৩ নম্বর হয় তাহলে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাবেন আর ওখানে গিয়ে বসে সময় কাটাবেন কারণ আপনার ট্রেনটি ওখানে আসবে ঠিক ছাড়ার ৩৫/৪৪৫ মিনিট আগে। যখন ই আসবে তখন ই ট্রেনের লোকজন প্রতিটি বগির দরজায় প্যাসেঞ্জারের নাম ও ট্রেন নম্বর দেওয়া সম্বলিত একটি পেপারস আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিবে (তবে ইদানিং লাগাতে দেখি না) আপনি ট্রেনে উঠার আগে একটু চেক করে নিবেন মানে চোখ বুলিয়ে দেখবেন যে ওখানে আপনার নাম ও ট্রেন নম্বর দেওয়া আছে কিনা যদি না থাকে তাহলে কিন্তু উঠে লাভ নেই কারণ সিট ছাড়া আপনাকে যেতে দিবে না আর আপনি যেতেও পারবেন না। যদিও এরকম ভুল সাধারনত কখনো হয় না তবুও চেক করেই উঠবেন। আপনাকে কিন্তু অনলাইন টিকিট দিবে যে কোন এজেন্ট আর ইন্ডিয়ার ট্রেনের টিকিট এখন অনলাইন হয়ে গেছে যদিও ট্রেন স্টেশনে গিয়ে কিনলে মুল টিকিট পাবেন তবে ভয়ের কিছু নেই কারণ অনলাইনে টিকিট দিয়ে থাকে, সো নো টেনশন।
আপনার বগি নম্বর টিকিটে লেখা থাকবে সেটা দেখে ট্রেনের বগি খুঁজে উঠতে হবে। যদি এসির টিকিট কাটেন তাহলে বগি B1, B1, B3, A1, A2, A3 এদের মধ্যে কোন একটা হতে পারে তারপরও দেখে উঠবেন। আর যদি স্লিপারের টিকিট হয় অর্থাৎ নন এসি স্লিপার তাহলে S1, S2, S3 ,S4, S5, S6, S7, S8 এরকম যে কোন একটা বগি হবে। এসি বগিতে ৬৪ টি সিট থাকে আর ৮ টা করে রুম থাকে। প্রতি রুমে ৮ জন করে শুয়ে ,বসে আরামে যেতে পারবে। প্রতি বগির এমাথায় ২ টা টয়লেট এবং ওমাথায় ২ টা টয়লেট থাকে আর মুখ, হাত ধোয়ার জন্য বেসিনও থাকে।
এবার ট্রেনে তো উঠে পড়লেন। আপনি আপনার সিট নম্বর খুঁজে সিটে বসে পড়ুন আর মাল জিনিস একদম নিচে রেখে দিন কোন সমস্যা হবে না তবে লাগেজ বা ব্যাগ গুলো আগে থেকে তালা বা লক সিস্টেম করে রাখা অনেক ভালো। কারণ সাবধানের মাইর নেই। প্রয়োজনে লোহার সিকল টাইপের কিছু কিনে ব্যাগ সিটের নিচে থাকা লোহা টাইপের কিছু একটার সাথে তালা দিয়ে রাখুন, তাহলে আরো নিরাপদ থাকবে, আমি এটি করে থাকি।
হাওড়া থেকে চেন্নাই ১৬৬৩ কি.মি.। সময় লাগে ২৮ ঘণ্টার কিছু কম বেশি যদি চেন্নাই মেইল ট্রেনে যান আর যদি করোমন্ডল এক্সপ্রেসে যান তাহলে ২৬ ঘণ্টা সময় লাগবে। ওদের ট্রেন শিডিউলিং এ যে টাইম দেওয়া থাকবে সেই টাইমে ট্রেন ছাড়বে, নো লেট।
এবার ট্রেন তো ছেড়ে দিল যথাসময়ে। রাতে কিছু খাওয়া দাওয়া করে নিতে পারেন। আপনি আপনার সিটে বসেই পেয়ে যাবেন সমস্ত খাবার-দাবার। আপনার কাছে এসে জিজ্ঞেস করবে কি খাবেন, আপনার কিছু জানা না থাকলে জিজ্ঞেস করবেন যে i want to eat ruti or rice with chicken or Egg Vuna or etc। আপনাকে জিজ্ঞেস করবে Veg or Non Veg এখানে Veg মানে ভেজিটেবলস। আপনি যদি ভেজ রিলেটেড কিছু খেতে চান তাহলে জিজ্ঞেস করবেন Plz tell me what type of veg. item? ওরা আপনাকে একটা একটা করে বলে যাবে দামসহ। যাইহোক আপনার অর্ডার নেওয়ার সময় আপনার সিট নম্বর আর কোথায় নামবেন সেটা জিজ্ঞেস করে ওদের খাতায় টুকে রাখবে। তবে চেন্নাই মেইল যেহেতু রাত ১১ টা ৫৫ মিনিটে ছাড়বে তাই এই ট্রেনে রাতের বেলা খাবার অর্ডার দেওয়া সম্ভব নয় কারন তখন ঘুমানোর সময়। সন্ধ্যা বা বিকেলের কোন ট্রেনে উঠলে সেটি প্রযোজ্য, তবে পরের দিন সকালে খাবার সরবরাহ বা বুকিং দেওয়ার বহু লোক পাবেন, সিটে বসেই।
যাইহোক তারপর ২৫/৩০ মি পর এসে একটা প্যাকেটে ভরে আপনার খাবার দিয়ে যাবে সাথে ছোট্ট করে এক গ্লাস পানিও পাবেন যা অন টাইম প্লাস্টিক গ্লাসে দিবে। এবার খাওয়া দাওয়া করে প্যাকেট ময়লা ফেলার জায়গাতে ফেলে আসুন। বাথরুমের/ওয়াশরুমের পাশেই ওই প্যাকেট গুলো ফেলে রাখবেন, ওরা সময় মতো এসে নিয়ে যাবে। এবার একটা ঘুম দেন আরাম করে।
পরের দিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে কিছুক্ষন হাটা চলা করতে পারেন মানে আপনার বগি থেকে অন্য বগিতে একটু আসা যাওয়া এই আর কি। ভোরবেলাতে উঠে ট্রেনের জানালা দিয়ে দেখতে পারবেন চারিদিকে শুধু ফাকা বিল আর পাহাড়। মাঝে মাঝে লোকারণ্য দেখতে পারবেন।
এবার নাস্তা করার পালা, সকালের নাস্তা কি খাবেন? তারজন্য আবার লোক এসে লিস্ট নিয়ে যাবে আর ৮ টার পর পর ই আপনার কাছে সকালের নাস্তা চলে আসবে। এভাবে খাওয়ার পর নিচে বসে আশেপাশেরর লোকের সাথে কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে সময় কাটাতে পারেন। তারপর ১০ টার দিকে আবার খাবারের লোক আসবে আর জিজ্ঞেস করবে দুপুরে কি কি খাবেন তার লিস্ট নিয়ে চলে যাবে। ঠিক ১ টার পর পর ই আপনার খাবার চলে আসবে।
এরপর একই ভাবে দুপুরের খাবার খাবেন + রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন। ভোর ৪ টা থেকে ৪ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে চেন্নাই স্টেশন পৌঁছাবে আর ওটাই লাস্ট স্টেশন। আপনার ব্যাগবুগ নিয়ে ধিরে ধিরে ট্রেন থেকে নেমে পড়ুন। এরপর নেমে ২/৩ মিনিট অপেক্ষা করে সামনের দিকে আগাতে থাকুন, কোন দিকে আগালে টেম্পু/ট্যাক্সি পাওয়া যাবে সেটা মানুষ এর আগানো দেখলেই বুঝতে পারবেন।
যাইহোক আপনি চাইলে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ভোর হলে রওনা দিতে পারেন তবে চেন্নাই তে কোন সমস্যা নেই, আপনি ওই সময় অটোতে করে বা ট্যাক্সিতে করে হোটেলে যেতে পারবেন।
এবার আসুন ট্যাক্সি নাকি অটোতে করে হোটেলে যাবেন? যেহেতু আপনি নতুন তাই Prepaid Taxi ভাড়া করতে পারেন মানে ট্রেন থেকে নামার পর একটু সামনে আগালেই ছোট ছোট ২/৩ টা বুথ ঘরের মত আছে ওখানে গিয়ে আপনার গন্তব্য বললে কত ভাড়া নিবে সেটার একটা স্লিপ দিবে (৫৫০/৬০০ রুপি) আর ড্রাইভার আপনার সাথে থেকে আপনাকে গাড়িতে উঠিয়ে হোটেলে নামিয়ে দিবে মানে ১০০% নিরাপদ যেহেতু একটা সিস্টেমের ভিতর দিয়ে যাচ্ছেন।
আর এক প্রকার ট্যাক্সি যা প্রাইভেট কার নামেই পরিচিত, এদেরকে ভাড়া করে হোটেলে যেতে পারেন কোন সমস্যা বা ভয়ের কিছু নেই, ওদের ভাড়া ৫০/১০০ রুপি কম হবে কিন্তু নিরাপদ।
অথবা একটা অটো ভাড়া করে সরাসরি গ্রীমস রোডে চলে আসবেন, ঠিক এপোলো হাসপাতালের কাছেই। মাত্র ১৬০/১৮০ রুপি নিবে। ৪ জন পর্যন্ত যেতে পারবেন।
#কোথায় যাবেন?
আপনি যদি Apollo or Sangkara Nethralaya হাসপাতালে ডা: দেখাতে যান তাহলে চেন্নাই স্টেশন থেকে অটো বা কারে করে Greams Road যাবেন, ওখানে ৮৫% বাংগালী পাবেন, বাংগালী হোটেল পাবেন, এক কথায় হাতের কাছে সব ই পাবেন আর এই গ্রীমস রোডের পাশেই এপোলো হাসপাতাল এবং ১ কি.মি. দুরেই বিখ্যাত চোখের সংকরনেত্রালয় হাসপাতাল।
রেল স্টেশন থেকে মাত্র ২০/২৫ মিনিট সময় লাগবে। আপনি অটো ওয়ালাকে বলবেন I want to go to greams road, Beside of apollo hospital তাহলে অটোওয়ালা বুঝে যাবে।
#কোন হোটেলে উঠবেন?
হোটেল নাম: Hotel Residency
ভাড়া: ৭০০ রুপি ( ২ জন থাকতে পারবেন)
ভাড়া: ৯০০ রুপি ( ৩ জন থাকতে পারবেন থ্রি বেড)
হোটেল টাইপ: ২ স্টার ( মিডিয়াম কিন্তু পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন)
একদম গ্রীমস রোডের মেইন রাস্তা থেকে ২ মিনিট ভিতরের দিকে হেটে গেলেই পেয়ে যাবেন। বেগম সাহিব স্ট্রীট এরিয়া নামে পরিচিত।
হোটেল নাম: Hotel Classical
ভাড়া: ৭০০ রুপি ( ২ জনের জন্য)
ভাড়া: ৯০০ রুপি ( ৩ জনের জন্য)
লিফট আছে, হোটেলটি ৪ তলা বিশিষ্ট আর উপরে উল্লেখিত হোটেলের একটু সামনে গেলেই পেয়ে যাবেন, একই রাস্তা একই পাশে।
**বি:দ্র: উপরে উল্লেখিত দুটি হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতার আলোকে বলেছি, আপনারা ওখানে গিয়ে খুঁজে আরো ভালো হোটেল পাবেন বা আরো কম দামের মধ্যে থাকতে পারবেন। অবশ্যই যাচাই করে হোটেলে উঠবেন, আমার লেখার উপর ভিত্তি করে হোটেলে উঠবেন না বা থাকবেন না। ভালো মনে হলে থাকতে পারেন নতুবা ভিন্ন হোটেল খুঁজবেন প্লিজ।
#চেন্নাই স্টেশন থেকে ভেলর ( CMC ) কিভাবে যাবেন?
চেন্নাই রেল স্টেশন নেমে লোকাল ট্রেনের কাউন্টার থেকে ১৮ রুপি দিয়ে টিকিট কাটবেন আর যেতে মাত্র ৩ ঘন্টার মত লেগে যাবে। আপনাকে ভেলরের Katpadi JN এ নামতে হবে। এরপর একটা অটো ভাড়া করে সরাসরি CMC Hospital এর মেইন গেটে নামিয়ে দিতে বলবেন। কাটপাডি স্টেশন থেকে মাত্র ২০/২৫ মিনিট লাগে আর ভাড়া নিবে ১৬০/১৮০ রুপি। অথবা কাটপাডি রেল স্টেশন থেকে বের হয়ে ১ মিনিট হাটলেই মেইন রাস্তা পাবেন, ওখানে ২০ রুপি নিবে প্রতিজন। ৪জন হলেই ছেড়ে দিবে।
যাহোক,রিজার্ভ নিলে হাসপাতালের মেইন গেটে নামিয়ে দিবে এবং ভাড়া দিয়ে রাস্তার বিপরীত দিকে তাকিয়ে দেখেন শত শত দোকান, হোটেল ইত্যাদি পাবেন। আপনার পছন্দ মত একটা হোটেল ঠিক করে উঠে পড়ুন। তবে ৫০০/৬০০ রুপির মধ্যে ভাল মানের হোটেল রুম পাবেন। আর চাইলে ৩০০/৪০০ টাকার রুমে থাকতে পারবেন, তবে তা একটু ভিতরের দিকে, খারাপ না।
#চেন্নাই থেকে বাসে করে ভেলর (CMC) কিভাবে যাবেন?
আপনি চাইলে চেন্নাই স্টেশন থেকে মেট্রো রেলে উঠে কোয়েম বেডু বাস স্ট্যান্ড যেতে পারেন, একদম সহজ। প্রতিজন মাত্র ২০ রুপি ভাড়া নিবে।
অথবা
চেন্নাই স্টেশনে নেমে একটা অটো ভাড়া করে সরাসরি কোয়েমবেডু (KOYAM BEDU ) বাস স্ট্যান্ডে যেতে হবে। অটো ভাড়া নিবে ২৫০/২৮০ রুপি আর গিয়ে দেখবেন সরকারি অনেক বাস আছে, বাস দেখলেই বুঝবেন। বাসের লোকের কাছে শুনে নিন কোন বাস ভেলর বাস স্ট্যান্ড যাবে আর সেই বাসে উঠে পড়ুন। ভাড়া মাত্র ৯০ রুপি আর ভাড়া বাসের মধ্যেই নিয়ে থাকে, আলাদা পস মেশিন থেকে টিকিট দিবে আপনাকে। আর অন্য একটা বাস আছে কিন্তু ভাড়া ১১০ রুপি করে রাখে সেটা আপনি পেলে উঠবেন, না পেলে উঠবেন না অর্থাৎ ২ বাই ২ সিট এজন্য কিছুটা ভাড়া বেশি।
এরপর ভেলর বাস স্ট্যান্ড নামবেন আর কোথাও নামার দরকার নেই যেহেতু আপনি নতুন।
এবার ভেলর বাস স্ট্যান্ড নেমে একটা অটো ভাড়া করে নিন মাত্র ৭০/৮০ রুপি নিবে তবে নতুন হলে ১০০ রুপিও নিতে পারে। যাইহোক ভাবখানা দেখাবেন যে আপনি নতুন না, আর অটোওয়ালাকে বলবেন যে I want to go to CMC main gate, Kitna rupee অথবা What's the cost/fare? এবার উঠে পড়ুন আর ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে CMC মেইন গেটে নামিয়ে দিবে। নেমে ভাড়া দিয়ে রাস্তার বিপরীতে তাকিয়ে দেখুন শত শত দোকান, লোকজন আর হোটেল আছে।
আপনাকে আগে হোটেল খুঁজতে হবে এবং ফ্রেশ হয়ে তারপর সময় থাকলে বাইরে একটু ঘুরাঘুরি করে নিতে পারেন। হোটেল ভাড়া ৩০০ থেকে শুরু করে ১২০০ রুপির মধ্যেই পেয়ে যাবেন। তবে ৫০০/৬০০ রুপির মধ্যে হলে ভালো মানের হোটেল পাবেন এবং রান্না করার সব কিছু পাওয়া যায়। কিছু হোটেল আছে হোটেল ভাড়ার সাথে এক্সট্রা গ্যাস বিল রাখবে আর বাইরে থেকে হাড়ি, পাতিল, কড়াই ইত্যাদি ভাড়া পাওয়া যাবে প্রতিদিনের জন্য। ১০ রুপি করে হাড়ি, কড়াই ভাড়া পাওয়া যায়, যদি ১০ দিনের বেশি থাকার দরকার হয় তাহলে কিছু কিছু জিনিস কিনে নিতে পারেন আর আসার সময় ব্যাগে করে আনবেন।
#হাওড়া থেকে কিভাবে ভেলরে (CMC) যাবেন?
এতোক্ষন বলেছি হাওড়া থেকে কিভাবে চেন্নাই যেতে হয় এবং চেন্নাই থেকে কিভাবে ভেলরে যাওয়া যায় কিন্তু এখন বলবো সরাসরি ভেলর কিভাবে যাবেন কারণ অনেকেই যত ঝামেলা কম হবে তত তার সুবিধা। চেন্নাই থেকে ১৪০ কি.মি. দূরে ভেলর তবুও চেন্নাই হয়ে অনেকে যায় কিন্তু সবাইতো আর যেতে চাইবে না কারণ আপনার যদি চেন্নাই সিটিতে কোন কাজ বা দরকার না হয় তাহলে অযথা ওখানে নেমে আবার কেন কষ্ট করে ভেলর যাবেন?
মুলত অনেকে সরাসরি ভেলরের ট্রেন না পাওয়াতে চেন্নাই এর ট্রেনে যেয়ে থাকে আবার অনেকে শখে গিয়ে থাকে--- ওই যে মাদ্রাজ বলে কথা একটু পা না দিলে কেমন হয়ে যায় এই আর কি।
যাইহোক ভেলরে জাওয়ার প্রতিদিনের ট্রেন আছে একটি আর সাপ্তাহিক ট্রেন আছে ৩/৪ টি যা প্রতি সপ্তাহে একদিন/Duidin করে চলে। ম্যাক্সিমাম ট্রেন হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে যেমন:
১। Howra SMVB EXP (12863)
এটি প্রতিদিন রাত ১০ টা ৫৫ মিনিটে ছাড়ে (পূর্বে রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটে ছাড়তো) আর এখন পৌঁছায় রাত ২ টা ৪৮ মিনিটে, সময় লাগে: ২৭ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট। পৌঁছাবে: Katpadi Junction আর এখানে নেমে একটা অটো নিলে ২০/২৫ মিনিট লাগে CMC এর মেইন গেটে পৌঁছাতে। মুলত এই ট্রেনটি সরাসরি ভেলর হয়ে বেংগালুর পর্যন্ত যেয়ে থাকে। কিন্তু আপনাকে ভেলরের Katpadi Station নেমে যেতে হবে।
#ভাড়ার তালিকা:
এসি 3A tier: ৩০০০ টাকা
এসি 2A tier: ৪১০০ টাকা
নন এসি স্লিপার: ১৩০০ টাকা
এই ভাড়া সাধারণত কোন এজেন্টের মাধ্যমে নিতে চাইলে এরকম ই হয়ে থাকে কারন রুপি থেকে বাংলাদেশি টাকা তারপর সার্ভিস ফি যোগ করে।
২। TVC Suf express (ট্রেন নং: ২২৬৪২)
এটি প্রতি সপ্তাহের মংগলবার ছাড়ে রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে (আগে ছাড়তো রাত ১১ টা ৫ মিনিটে) আর এখন পৌঁছায়: ভোর ৪ টা ৪৫ মিনিটে আর সময় লাগে: ২৮ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। ট্রেনটি Shalimar স্টেশন থেকে ছাড়ে।
#ভাড়ার তালিকা:
নন এসি স্লিপার: ১৩২০ টাকা
3A tier AC: ৩০৫০ টাকা
2A tier AC: ৪১৫০ টাকা
৩। SMVB Humsafar exp (ট্রেন নং: ২২৮৮৭)
এটি সপ্তাহে ১ দিন ছাড়ে যেমন সোমবার। দুপুর ১২ টা ৪০ মিনিটে ছাড়ে আর পৌঁছাবে: পরের দিন বিকেল ৩ টা ৩০ মিনিটে। সময় লাগে: ২৬ ঘণ্টা ৫০ মিনিট। হাওড়া থেকে ১৭৯২ কি.মি. ভেলরের কাটপাডি স্টেশন পর্যন্ত।
#ভাড়ার তালিকা:
3A tier AC: ৩৩০০ টাকা
এই ট্রেনে শুধু এসি ৩ টায়ার বগি থাকে।
এই হলো ভেলরে জাওয়ার সমস্ত ট্রেনের বিস্তারিত যা হয়তো আপনার দরকার হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে যারা যাতায়াত করে তারা ম্যাক্সিমাম রাতের ট্রেনে যেতে পছন্দ করে।
তাহলে রাতের ট্রেনে উঠে খাওয়া দাওয়া করে নিন। খাওয়া দাওয়া বাবদ ১৪০ রুপির মত খরচ যাবে এর বেশি নয় তবে ভেজিটেবল কিছু খেলে ৬০ রুপির মধ্যে হয়ে যাবে। যাইহোক খাওয়া দাওয়া শেষ হলে একটা শান্তির ঘুম দিন।
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা করে নিবেন। একই ভাবে দুপুরের, রাতের খাবার খেয়ে নিবেন এতে করে দুপুরে ১২০ এবং ১২০ সব মিলে ২৪০ + সকালে ৬০ = ৩০০ রুপির বেশি নয়।
আপনার ট্রেন কিন্তু রাত ৪ টায় কাটপাডি স্টেশনে নামিয়ে দিবে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি যেহেতু নতুন তাই টিকিট কাটবেন এমন ট্রেনের যে ট্রেন ভেলরের Katpadi Station এ ভোরবেলা গিয়ে পৌঁছাবে। তাহলে আপনার জন্য সহজ হবে কারণ রাতে গিয়ে হোটেল খোজাখুঁজি ঝামেলার। তারপরও গেলে কোন সমস্যা নেই কারণ ভেলরে বাটপারের সংখ্যা খুব খুব কম তাই নিশ্চিন্ত মনে ঘোরাঘুরি করতে পারেন বা যেতে পারেন।
অটোবাইক ভাড়া করে নিবেন তাতে ১৭০/২০০ রুপি পর্যন্ত নিতে পারে, CMC মেইন গেটে যেতে সময় লাগবে: ২৫/৩০ মিনিট। এবার অটো থেকে নেমে ভাড়া দিয়ে দিন তারপর মেইন গেটের বিপরীত দিকে মানে রাস্তার ওই পারে যাবেন আর হোটেল খুঁজবেন। বিভিন্ন রকমের হোটেল আছে তবে অনেক কমে পাবেন হোটেলের রুম গুলো।
অটো বাড়া করে CMC হাসপাতালের গেটের বিপরীত দিকে বাজার ও প্রচুর হোটেল আছে যেমন New city Lodge, Mysore Palace এই হোটেলে ভাড়াও তুলনামূলক কম আছে যেমন নন এসি রুমের ভাড়া ৪০০ রুপি, ৫০০ রুপি আছে। আবার এক রুমে ৩জন থাকলে ৫৫০/৬০০ রুপি নিবে।
নিউ সিটি লজ হোটেলের নিচে মসজিদ আছে। ওই একই গলি বরাবর সামনে হেটে গেলে মাইশোর প্যালেস পাবেন, এছাড়াও আশে পাশে বা একটু ভিতরের দিকে গেলে আরো কমে পাবেন যেমন ৩০০ রুপিতে অসংখ্য হোটেল পাবেন।
আর যদি একটু ভালো মানের হোটেলে থাকতে চান সেক্ষেত্রে Vaibhab Residency (বৈভব রেসিডেন্সি), এটি সি এম সি হাসপাতালের মূল গেট থেকে পূর্ব দিকের রাস্তা বরাবর হাটলে LIC ইন্সুরেন্স কোম্পানি পাবেন তার পাশের গলিতে অবস্থিত অর্থাৎ সায়েদাপেট টেম্পু স্ট্যান্ড যাওয়ার যে গলি, সেখানে অবস্থিত।
এই হোটেলে ভাড়া ৮৫০/৯০০ রুপি নন এসি রুম কিন্তু খুব পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং প্রতি তলাতে রান্নাঘর আছে, প্রতি রান্নাঘরে ৩/৪ জন রান্না করতে পারে সেরকম ব্যবস্থা আছে। রুম ও বাথরুম যথেষ্ট ভালো। আমি নিজে ২বার থেকেছি।
আমি এ পর্যন্ত ভেলরে ৬বার গিয়েছি তাই বিভিন্ন হোটেল ও ফ্লাটে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এছাড়াও বহু হোটেলে গিয়ে খোঁজ নিয়েছি অর্থাৎ গ্রাহকদের তথ্য দেওয়ার জন্য গিয়েছি। তাই ভেলর বা চেন্নাই সম্পর্কে