Nousad's Story

Nousad's Story সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ

02/04/2024

শুক্রবারে হানিফ পরিবহনে উঠলাম। আমার কোণাকুণি সামনের সিটে বসেছেন হুজুরটাইপ একজন লোক। তিনি বাস ছাড়ার পরপরই সুপারভাইজারকে বললেন ভাই আমি জুমা পড়বো। নামাজের খুতবার আগে দাঁড়াবেন। সোয়া একটায় দাঁড়ালেই চলবে।

বাস যখন চৌদ্দগ্রাম বাজার পার হচ্ছে তখন সোয়া একটা। তিনি উঠে গিয়ে সুপারভাইজারকে বললেন "ভাই সোয়া একটা বাজে। দাঁড়ান না! খুতবা না শুনলে জুমা সম্পূর্ণ হয় না!"
আমার তখন চোখে ঘুম ঘুম ভাব। হালকা করে কানে বাজছে ভদ্রলোকের সাথে সুপারভাইজারের বাতচিত। শুধু সুপারভাইজার না আরো কয়েকজন যাত্রী বলছে নামাজ দেড়টায়। একটা পঁচিশে দাঁড়ালেই হবে।

বাসের সে যাত্রীদের মত আমরা অনেকেই জুমার নামাজ পড়াটাকে দায়সারা গোছের বানিয়ে ফেলেছি। শুক্রবার দুপুরে খুতবার শেষ দিকে মসজিদে ঢুকি ও ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর কত দ্রুত মসজিদ থেকে বের হওয়া যায় সে রাস্তা খুঁজি।

আমি চোখ খুলেই বললাম সুপারভাইজার সাহেব, বাস দাঁড় করান। ওযু করার একটা সময়ও লাগবে তো! ভদ্রলোক বললেন আমার ওযু আছে ভাই।

অন্যদের অব্যাহত একটা পঁচিশ দাবির মুখে আমার কন্ঠ হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। বাস ড্রাইভার একটা পঁচিশে দেখেন রাস্তার পাশে মসজিদ পাচ্ছেন না! আরো মিনিট তিনেক পর ফেনীর ফতেহপুরের দিকে একটা মসজিদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। ততক্ষণে নামাজ প্রায় শেষ! ভদ্রলোক দৌড়ে গিয়ে নামাজ ধরতে ধরতে ইমাম সাহেব সালাম ফিরিয়েছেন!
বাসে এতগুলো পুরুষ মানুষ। কারো কোন বিকার নেই শুধু ওই ব্যক্তি ছাড়া। আমি বাসের জানালা দিয়ে কড়া রোদে দাঁড়িয়ে তাকে নামাজ আদায় করতে দেখছি। জুমা মিস করে ফেলায় সম্ভবত জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন।

এতক্ষণ বাস একটা পঁচিশে দাঁড়াতে বলা লোকগুলো দ্রুত আশেপাশে চা দোকান খোঁজা শুরু করলো। কেউ কেউ বেনসন সিগারেট না পাওয়ায় বিরক্ত। গ্রামের দোকানে বেনসন না পাওয়া শীর্ষক হতাশা শুনলাম দুজনের গলায়। একজন বিস্কুট কীভাবে পাঁচ টাকা পিস হয় তা নিয়ে দোকানদারের সাথে ঝগড়া করছে। এক মহিলা বাচ্চার জন্য চিপস কিনতে এসেছেন। শুকনা সুপারি দিয়ে পান খাচ্ছেন দু'জন। আর আমি জানালা দিয়ে ওই আল্লাহর বান্দাকে দেখছি।
সুপারভাইজার তখন ইমাম সাহেব কেনো নামাজ তাড়াতাড়ি শুরু করেছেন এটা নিয়ে রাগে গজগজ করছেন!

দশ মিনিট পর বাস ছাড়লো। সুপারভাইজার বারবার লোকটাকে শুনিয়ে বলছিলো : "আইজকা আগে দাঁড়াই গেছে ইমাম সাব।"

আমি ভেবেছিলাম ভদ্রলোক খুব রেগে যাবেন। আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি একটা কথাও বলেননি। শুধু মাথা নিচু করে নিজের আসনে বসে ছিলেন। আমার কোণাকুণি সামনের সিটে বসেছিলেন বলে আমি তাকে দেখছিলাম।

পুরোটা পথ আর মাথা তোলেননি। সুপারভাইজারও আর কিছু বলেননি। শুধু মসজিদ্দা স্কুল পার হওয়ার সময় বলেছিলেন আমাকে রয়েল সিমেন্ট কোম্পানির সামনে নামাই দিয়েন। ভদ্রলোক উঠে সামনে যাচ্ছিলেন। সুপারভাইজার তার ব্যাগটা হাতে নিয়ে বললো ভাই কিছু মনে করিয়েন না!

লোকটা আমাকে সর্বোচ্চ অবাক করে দিয়ে সুপারভাইজারের চোখের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কাঁপিয়ে দুই চোখে পানি ঝরিয়ে দিয়ে বললো -“ভাই জুমার নামাজটা পড়তে পারলাম না!"

একজন বাবা তার দুই দশক ধরে লালিত পালিত একমাত্র কন্যাকে পাত্রস্থ করার সময় "আমার মেয়েটাকে দেখে রেখো" বলতে যেভাবে কাঁদে একজন মানুষ এক ওয়াক্ত জুমার নামাজ পড়তে না পেরে যেনো তেমন আবেগেই কথাটা বললো!

এই ঘটনারটার পর আমি নিজেকে নিয়ে ভাবিঃ
ঐ ভদ্রলোক যে জান্নাতের স্বপ্ন দেখেন, আমিও সে একই জান্নাতের স্বপ্ন দেখি। তাহলে আমাদের মধ্যে এত পার্থক্য কেন! কিভাবে সম্ভব যে আমরা দুইজন একই জান্নাতে অবস্থান করবো ?

সংগৃহীত

"অপমান জিনিসটা পলিথিনের মতোমাটির নীচে চাপা পরে যায় কিন্তু পচেঁনা! "
03/02/2024

"অপমান জিনিসটা পলিথিনের মতো
মাটির নীচে চাপা পরে যায় কিন্তু পচেঁনা! "


03/02/2024

সময় ও গুরুত্ব এ দুটি খুব দারুন জিনিস

তুমি যাকে সময় দিবে সে তোমাকে গুরুত্ব দেবে না

আর তুমি যাকে গুরুত্ব দেবে সে তোমাকে সময় দেবেনা

20/01/2024

21/12/2023

আমি ব্যক্তিগত ভাবে যৌথ পরিবার অপছন্দ করি। এই লাইনটার পরের লাইন যেটা অনেকের মাথায় আসে সেটা হল, নিজের তো ছেলে। নিজে কী করবা ভবিষ্যতে?

একটা লাইন ফেসবুকে ঘুরঘুর করতে দেখি। অধিকাংশ মেয়ে যৌবনে একক পরিবারের জন্য আন্দোলন করে আর বুড়া বয়সে শাশুড়ির সেবা করার হাদীস শোনায়।

আমি যখন বলি ছেলেকে বিয়ে করেই আলাদা করে দিবো। প্রশ্ন আসে তখন আমাদের বুড়ো বয়সে সেবা করবে কে?

এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আমার দারুণ একটা স্বপ্ন আছে। আমি জানি একটা নিজের সংসার, একফালি ব্যালকোনি, একটা কিচেন, কয়টা রঙিন মশলার কৌটা, একটা আলতা পরা অলস দিন, নতুন ট্রাই করা আনাড়ি রেসিপিটা, কয়টা চকচকে বাসন, প্লেট- রূপালি চামচ এসব একটা মেয়ের জন্য কী! এসবের মায়ায় একটা মেয়ে ঘর ছাড়ে।

বড় সংখ্যক ছেলের বউ শাশুড়ির মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকে। কারণ এরপর তার নিজের একটা সংসার হয়। অথচ এই সংসারটা বিয়ে করেই তার পাওনা ছিল।

আমরা ছেলেকে বিয়ের সাথে সাথেই আলাদা করে দেবো। পাশেই থাকুক না হয়। পাশের ফ্ল্যাটেই কিংবা বিল্ডিং এর আরেকটা ফ্লোর ওদের হোক। ছাদে ওরা খুনসুটি করে কাপড় মেলুক। পছন্দের রঙে ঘর সাজাক। এই মন না চাইলে চূলায় আগুন জ্বলে না, শরীর ম্যাজম্যাজ করলে আধা দিন বিছানায়ই- আমার এই স্বাধীন জীবনটা আমার ছেলের বউয়ের কেন হবে না? দু’জনার একটা রান্না ঘরে কত যে রূপকথার গল্প জমে রোজ! আমার ছেলে কেন সেই গল্প থেকে বঞ্চিত হবে?

এরপর রইলো বুড়ো বাপ-মার সেবা। আচ্ছা ছেলে যখন বিয়ে করায় তখন কি বাবা মা একদম বুড়ো হয়ে যায়? বিছানায় পরা? কই আশে পাশে তো তেমন দেখি না! ছেলের বাবার ইচ্ছা ছেলেকে দ্রুত বিয়ে করানো। আল্লাহ চান যদি তেমন হলে আমরা তখনই সেবার মুখাপেক্ষী না কিন্তু।

সংসার সুন্দর, বিয়ে সুন্দর। এই ঝগড়াঝাটি, হাজারটা দায়িত্ব, জাজমেন্ট এসব করে একটা মেয়ের সংসারের সৌন্দর্য নষ্ট করার অধিকার প্রচলিত সমাজের ছেলের মায়েদের কে দিল?

বিঃদ্রঃ একান্তই নিজের ছেলেকে নিয়ে নিজের ইচ্ছের কথা লিখলাম। যারা ছেলের বউ নিয়ে সুখে শান্তিতে একত্রে থাকছেন বা থাকতে চান তাদের বিরোধিতা করা হয় নি।

©নুফরাত জেরীন

শুধু খাবারটা মুখে দিয়ে খেতে কেমন হল আর সেটার দাম কত হল তা বলার নাম  #ফুডভ্লগিং নয়। উন্নত দেশে যারা ফুড ভ্লগিং করে তারা  ...
05/12/2023

শুধু খাবারটা মুখে দিয়ে খেতে কেমন হল আর সেটার দাম কত হল তা বলার নাম #ফুডভ্লগিং নয়।

উন্নত দেশে যারা ফুড ভ্লগিং করে তারা #বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Culinary Arts, Food Science and Technology, Baking and Pastry Crafts, Appetizing Culture, Diet and Nutrition Studies, History of Gourmet and Cuisine এর মত গবেষণাধর্মী বিষয়ের উপর উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে তবেই রাস্তায় নামে, শুধু পকেটে #টাকা আর হাতে #ক্যামেরা নিয়ে নয়।

“হ্যাল্লো গাইজ, ওয়েলকাম টু পুরাণ ঢাকার লালবাগের গোলাপজান রেস্টুরেন্টে গরম গরম #তান্দুরী খেতে। আজ আমরা খাব ১০০০ টাকা দামের একটা তান্দুরী” – বড় আপু আর ছোট ভাইয়াদের এই কর্মকান্ডের নাম না।

তান্দুরী খেতে এসে একজন আদর্শ ফুড ভ্লগার এর উচিত তান্দুরীর #ইতিহাস, #ঐতিহ্য ও #কৃষ্টি তুলে ধরা। অনেকটা এভাবে –

“….আজ পুরাণ ঢাকার লালবাগের গোলাপজান রেস্টুরেন্টে তান্দুরী খেতে এসে মনে হচ্ছে যেন ফিরে গিয়েছি খৃষ্টপূর্ব ২৬০০ সনের উজবেকিস্তানের সমরখান্দে যেখানে জন্ম হয়েছে এই তান্দুরীর।

খাবারের অর্ডার দিয়ে পত্রিকা হাতে নিতেই মনে হচ্ছে যেন পড়ছি আব্বাসীয় খেলাফতের সময় নাসিরুদ্দিন শাহ এর লেখা ‘ডেলিকেসি অফ তান্দুরী’ নামের বিখ্যাত সেই কুকিং ম্যানুস্ক্রিপ্ট।

রেস্টুরেন্টের টিভিতে কি চলছে বলতে পারবনা, কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে যেন দেখছি মন্ট্রিল ফিল্ম ফেস্টিভালে বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড জেতা মুভি ‘তান্দুরী লাভ’।

দেয়ালে টানানো অতি সাধারণ তান্দুরীর ছবিটাকেও মনে হচ্ছে মুঘল শিল্পী ফররুখ বেগ এর অসাধারণ এক তৈলচিত্র।….“

#শেয়ার করতে পারেন ফুড ভ্লগিংয়ের চেষ্টা করা #বড়আপু আর #ছোটভাইয়া’দের নজরে আনতে।

Faatiha Aayat
Faatiha Aayat Official Group

I have reached 100 followers! Thank you for your continued support. I could not have done it without each of you. 🙏🤗🎉
04/12/2023

I have reached 100 followers! Thank you for your continued support. I could not have done it without each of you. 🙏🤗🎉

01/10/2023

মিরার সাথে বিয়ের তিন মাস পর সুযোগ করে যখন হানিমুনে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছিলাম, মা এসে বলল ইতু আর মিতু কেও নিয়ে যেতে। ওরা যেতে চাইছে, না নিলে মন খারাপ করবে।

আমি বেল্টের হুক লাগাচ্ছিলাম। একপাশ হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম মায়ের দিকে। তারপর চোখ নামিয়ে বললাম, 'ওদের তো যাওয়ার কথা ছিলো না, তো মন খারাপের কথা আসছে কোত্থেকে?'

মা আমার উত্তরে খুশি হয়নি, পর্দা নেড়ে বের হয়ে যেতে যেতে বলল, 'বাচ্চা মানুষ কখন কী ইচ্ছে হয়!'

মিরা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। ওকে বললাম, 'তুমি তাকিয়ে আছো কেন? তাড়াতাড়ি রেডি হও।'

আমিও বের হলাম মায়ের পিছু পিছু। ইতু আর মিতু আমার বোনের মেয়ে। দিদি আর দাদা দুজনেই চাকরি করে। তাই ওদের সকালে এইখানে নামিয়ে দিয়ে যায়। নতুন মামী পেয়ে বেশ খুশি ওরা। তাই তাদেরও ইচ্ছে হচ্ছে হয়তো যাওয়ার। এজন্যে চোখ মুখ কালো করে রেখেছে। সারাদিন মা ছাড়া থাকে, ওরা বায়না করেছে, তাই হয়ত মা বলতে বাধ্য হয়েছে।

আমি ইতু-মিতুর কাছে গিয়ে বললাম, 'তোমাদের যেতে ইচ্ছে হচ্ছে?'
একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ল।

আমি মিতুকে কোলে নিয়ে বললাম, 'এখন তো আমরা যাচ্ছি ছোট জায়গায়, বাসে করে। তোমাদের ঘুম এলে ঘুমাবে কোথায়?'
ইতু বড়, ও বলে, 'আমরা ঘুমাব না।'

আমি হেসে ওর গাল টিপে দিলাম। বললাম, 'আগামী মাসে মামার আরেকটা লম্বা ছুটি আছে, তখন মামী, দিদা, তোমার মা, তোমরা, আমি সবাই মিলে একসাথে বড় গাড়ীতে করে গান বাজাতে বাজাতে যাবো। অনেক মজা হবে। ঠিক আছে?'

দুইজনের এই অফারটা বেশ ভালো লাগলো, এক সাথে মাথা নাড়লো। ওদের গালে চুমু দিয়ে আমি চলে আসছিলাম, মা চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে ছিলো। বলল, 'মিথ্যা বললি কেন? তোরা তো গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিস।'

মিরা লাগেজ টেনে আনছে রুম থেকে। মায়ের কথা শুনে সেও দাঁড়িয়ে গেল।
বললাম, 'মা, আমরা যাবো বলে ঠিক করেছি, তাই। ওদের পরে নিয়ে যাবো, তুমি সহ।'

মা গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে বলে, 'বিয়ে হয়ছে তো অনেক দিন হলো, এখন এত কী? আর তোর বাবা আমাকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার সময় বোন বোনের বাচ্চা সব নিতো সাথে।'

আমি লাগেজ টেনে নিয়ে বের হতে হতে বললাম, 'তাই তুমিও বলছো? আমি দেখেছি এই নিয়ে বাবাকে তুমি কত কথা শোনাতে, তুমি কি চাও তোমার ছেলেও আজীবন এইসব কথা শুনে যাক?'

মা কিছু বলল না। দুইজনে মাকে নমস্কার করে বের হয়ে গেলাম। মা মিরার শাড়ির কোনা টেনে একটা গিট দিয়ে দিলো। বলল, 'চুল খোলা রেখে পাহাড় জংগলে ঘুরে বেড়িও না।'
মিরা মাথা নেড়ে সায় দিলো। ইতু-মিতুকে আদর করে দিলো, বলল, 'আমি অনেকগুলো চকলেট নিয়ে আসবো।'

গাড়িতে উঠতেই মিরা বলল, 'নিতে পারতাম ওদের।'
'না, আমরা যাচ্ছি নিজেরা একটু টাইম কাটাতে। ওদের নিলে তোমাকে ওদের পেছনে টাইম দিতে হবে। জীবনে অনেকবার ওদের নিয়ে যেতে পারবো। কিন্তু তোমার আমার মধ্যে এখন যে ব্যাপারটা আছে, তা পরে নাও থাকতে পারে।'

গাড়ী চলতে শুরু করলে মিরা কাঁধে মাথা রাখে। জানলা খোলা তাই সকালের বাতাসে ওর চুল আমার মুখে উড়ে আসছে।

ছোটবেলা থেকে প্রচুর দুষ্ট ছিলাম। বন্ধু মহলে কখনো আমায় কেউ কান্না করাতে পারতো না। কিন্তু বৃহস্পতিবারে যখন বাবা ঘরে আসতো, সেই দুইদিন আমার ভীষণ রকম মন খারাপ থাকতো।

বাবাকে ভীষণ ভালোবাসতাম। ঠাম্মি আমায় খুব আদর করতো, আর মা তো মা। তিনজনের টানাপোড়েন দেখে ভীষণ খারাপ লাগতো। প্রথম প্রথম বাবা এলে ঠাম্মি এটা ওটা বলে যখন বাবাকে রাগাতো, মায়ের রান্নাঘরে কান্না দেখে ঠাম্মিকে ভীষণ রকম ভিলেন লাগতো। আমাকে ভাত খাওয়ানোর সময় মা যখন আমার দিকে না তাকিয়ে ভাত মুখে দিতো, আমার গলায় ভাত আটকে যেতো। একটু যখন বড় হলাম, তখন বাবার জন্য ভীষণ রকম মায়া লাগতো, দুইদিনের জন্য বাড়ি এসেও শান্তি পেত না। আরো বড় যখন হলাম, তখন মা অনেক শক্ত হয়ে গিয়েছে। মাকে আর কেউ কান্না করাতে পারে না। কথার উত্তর কথাতে, নইলে চরম চিৎকারে মাকে কেউ আর হারাতে পারতো না। আমার ভীষণ মমতা ভরা মাকে একটু একটু করে ভিলেন ভাবতে লাগলাম। ব্যাপারটা যথেষ্ট মন খারাপের ছিলো আমার কাছে। বাবা একসময় সারাদিন বাড়িতেই থাকতো, কারো কথায় মাকে দোষ দিয়ে কথা শোনানোর সময় পার হয়ে গেলো, কারণ মা তখন সব। একটা সময়ের পর সংসারে কর্তার চেয়ে কর্ত্রীর কর্তৃত্ব বেশি হয়ে যায়। একা দায়িত্ব সামলাতে সামলাতে তারাই সবটা জুড়ে বসে। কিন্তু মাকে বাবার সাথে খুব একটা ভালো সময় কাটাতে দেখিনি। বাবা চাইলেও না। কখনো দেখিনি দুজন এক সাথে হাটতে বের হচ্ছে, কিংবা মা-বাবা টিভি দেখে দেখে পান চিবিয়ে চিবিয়ে আস্তে আস্তে কথা বলছে।

আমার কেন যেন মনে হতো এইসবের জন্য ঠাম্মি দায়ী। শেষ বয়সে মা ঠাম্মিকে কখনো মা ডাকেনি আর। এইটা নিয়ে ঠাম্মি কয়েক বার আফসোস করে বলেছে, কাজ হয়নি।

মায়ের সাথে ছোট ঠাম্মির খুব ভাব ছিলো। আগে যখন মা কান্না করত, উনি এসে মায়ের কাছে বসতেন, বুঝাতেন। এইটা ওটা এনে খাওয়াতেন। মায়ের পছন্দের কিছু রান্না করলে, যেমন- কচু শাক, ছোট মাছ, হলুদ ফুলের ভর্তা, কাচা মরিচের তরকারি, এক বাটি লুকিয়ে এনে মাকে দিতেন। মাও সবার খাওয়া শেষে তা দিয়ে খেতো।

ছোট ঠাম্মির দুইটা মেয়ে। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর কেউ ছিল না। তবে মা ভীষণ রকম সেবা করেছিলো। কোলে তুলে স্নান করিয়েছিলো। খাওয়াতো। মারা গিয়েছেন উনি। অথচ আমার ঠাম্মি যখন খাট থেকে পড়ে পা ভাঙ্গে, একটা কাজের মেয়ে রাখতে হয়েছিলো। কারণ বিছানায় পায়খানা প্রস্রাব মা ধরবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

ওষুধ খাওয়াতো মা, ভাত দিতো, ভালো রান্না করে থালে এনে রাখতো টেবিলে। কখনো পাশে দাঁড়িয়ে খাওয়াতে দেখিনি। একসময় মনে হতো, মা বেশি করছে। কিন্তু আরো যখন বয়স হলো, নিজেও বিভিন্ন সর্ম্পকের টানাপোড়েন খেয়ে বুঝেছি দোষটা পুরোপুরি মায়ের ছিলো না। ব্যাপারটা একদিনে হয়নি।

কত শখ করে মা বাপের বাড়ি থেকে শাড়ি আনলেও ঠাম্মি তা নিয়ে কথা শোনাতো। মায়ের পছন্দের জিনিস ঠাম্মি পিসিদের দিয়ে দিতো। একসময় মা কিছুই দিতো না আর।

বাবার সাথে মাকে কোথাও যেতে দেখিনি। ঠাম্মি কাপড় পরে রেডি থাকতো। কিংবা পিসিরা আসতো। মা জেদ ধরতো, যাবে না। তবে যেতে হতো, হাসতে হতো।

ঈদের ছুটিতে বোনাস পেলাম, কয়েক প্যাকেট কাপড় নিয়ে ঢুকলাম। মায়ের রুমে আমি আর মিরা।ছুটির দিন, দিদিও ছিলো। ইতু, মিতু, দাদা, ওকে, মাকে সবাইকে কাপড় দিলাম। সবার পছন্দ হলো। বললাম মিরা পছন্দ করেছে সবারটা। দিদি মিরার হাতে প্যাকেট দেখে বলে, 'আর ওরটা? দেখি দেখি কেমন হলো।'
মিরাও খুব উৎসাহ নিয়ে দেখাচ্ছে। দিদি বেশ প্রসংশা করল।
মা বলল, 'তোর পছন্দ হলে তুই নে এইটা। তোরটা বৌমাকে দিয়ে দে। একইতো দাম দেখি। আর কফি কালারটা তোকে বেশি মানাবে, ফর্সা তো, ও একটু শ্যামলা তাই ওকে গোলাপিটা ভালো লাগবে।'
মিরাও বলল, 'আচ্ছা।'

আমি দুইটা শাড়িই ভাজ করে বললাম, 'তোর এইটা পছন্দ? তাহলে এইটা দে, আমি একই রকম আরেকটা নিয়ে আসি। মিরা তোদেরটা পছন্দ করেছে, আর ওরটা আমি।"

দিদি বুঝতে পারল। ও তাড়াতাড়ি বলল, 'আরে না না, ঠিক আছে। দুইটাই তো ভালো। আর তুই যখন পছন্দ করে দিয়েছিস আমি কেন নেবো? তোর দাদা আমায় কিছু পছন্দ করে দিলে কি আমি দিতাম কাউকে?'

মা চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ পর দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। কারণ মায়ের পছন্দের শাড়িটা সবসময় বাবা পিসিদের হাতে তুলে দিয়েছিলো। শেষের দিকে মা আর কোনও অনুষ্ঠানে নতুন শাড়ি পরতো না।

এইভাবে আমি মিরার পাশে থাকা টা হয়ত মা হিসেবে মায়ের ভালো লাগার কথা ছিলো। কিন্তু আমরা মানুষেরা যখন একটা পুরো জীবন অপ্রাপ্তির রাগে জ্বলতে থাকি তখন অন্য কেউ যখন সবটা পেতে থাকে আমরা মানতে পারি না। জানি ব্যাপারটা। বুঝি তাও মানতে পারি না। স্বাভাবিক মানুষের নিয়ম বোধহয় এইটা।

আমি শুধু চাই, মিরা আর মায়ের মধ্যে মিল হোক না হোক, তিক্ততায় যেন ভরে না যায়। নাহলে শেষ বয়সে আমার মাও যে একা হয়ে পড়বে!

ছুটির দিনে বসে আছি। আমি বই পড়ছি, মিরা টিভি দেখছে।
মা বলল, 'আমার জন্য একটু গরম পানি করে দাওতো। হাটু ব্যাথা করছে।'
মিরা একটু আগে রান্না ঘর থেকে এলো। তাই চুপ করে বসে টিভি দেখছে। বলল, 'এখন পারবো না।'
হয়ত ভেবেছে আমি কিছু বলব না।
উঠছে না দেখে আমি বললাম, 'কিরে মিরা, মাকে গরম পানি দাও। আমি তোমাকে সব সময় সার্পোট করি বলে এই না যে তুমি আমার মাকে অবহেলা বা অসম্মান করতে পারো। আমি চাই তোমাদের মাঝে তিতক্তা না আসুক, কিন্তু মিষ্টতাতো তোমাকেই বানাতে হবে। কিছু কাজ যা মা পারে না তা তোমাকে করতে হবে। তুমি যদি ব্যস্ত থাকতে আমিই করে দিতাম। কিন্তু তুমি ইচ্ছে করে মায়ের কাজ করতে না চাইলে তা আমি মানতে পারবো না।'

মা রুম থেকে সবটা শুনছে। মিরা উঠে গেল রান্নাঘরের দিকে।

কিছুদিন পর আমি টেবিলে বসে মিরাকে বলছিলাম। আজ একটু খিচুড়ি রান্না করো আর মাংস ভুনা, সাথে বেগুন ভাজা।
তখন দেখি মা কাপড় পরে রেডি হয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে।

- মা কোথায় যাচ্ছো তুমি?
- একটু বাইরে যাচ্ছি, মন্দিরে যাবো, একটু অন্য কাজও আছে।
- তো আমাকে বলতে।
- তোর আর এখন সময় আছে? বউয়ের আঁচল ধরে ঘুরতেই তো টাইম নেই আর।
- মা, দাঁড়াও আমি রেডি হয়ে আসছি। পাঁচ মিনিট।

মায়ের সাথে রিকশায় উঠলাম। কাল রাতে বৃষ্টি হয়েছে, রাস্তায় এখনো হাল্কা পানি জমে আছে। আছে গাছে গাছে স্নিগ্ধতা।

মায়ের সাথে বের হওয়াই মা হয়ত খুশি হয়েছে। তবে মুখ ভার করে রেখেছে। হাল্কা বাতাস আছে।
মন্দির থেকে ফেরার পথে মাকে বললাম, 'আইসক্রিম খাবে?'
মা অবাক চোখে তাকিয়ে বলে, 'না।'
'চলো, তুমি আমি অনেক দিন আইসক্রিম খাই না।'
মা চুপ করে আছে। এই আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে আমার আর মায়ের অনেক মজার স্মৃতি আছে। কলেজে থাকতে প্রায় বিকেল বেলা আমি মাকে নিয়ে যেতাম কলেজের পাশে একটা দোকানে। খুব ভালো ছিলো আইসক্রিমটা। মাঝেমধ্যে মাকে রাতেও টেনে নিয়ে বের হতে যেতাম। কারণ আমি দেখতাম মা অনেক দিন ঘর ছেড়ে বের না হতে হতে বিরক্ত হয়ে পড়তো। আমাকে বকা দিতো। তবে খুশি হতো।

দোকানের সামনে একটা বেঞ্চে বসলাম। মাকে তার পছন্দের কাপ আইসক্রিম দিয়ে আমিও বসলাম।
'অনেক দিন পর খাচ্ছি আইসক্রিম, তাই না মা?'
মা আমার দিকে তাকিয়ে বলে, 'এখন কি তোর মায়ের দিকে খেয়াল আছে? সব সময় বউয়ের ঢাল হয়ে দাঁড়াস। যেন বউকে মায়ের কাছ থেকে রক্ষা করতে হবে। আমি কি তোর বউ কে জ্বালাই? তোর ঠাম্মিরা আমাদের যে পরিমাণ জ্বালিয়েছে, কথার খোটায় রাখতো সারাক্ষন, তোর বাবাকে উল্টো পাল্টা বুঝাতো আমি কি আর ওসব করি?'

'মা আমি জানি তুমি অনেক ভালো। মিরাও ভালো মা। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাকে তোমার আর মিরার মাঝে থাকতেই হয় মা। কারণ আমি তোমাকে অনেক কান্না করতে দেখেছি। বাবার এই গা বাঁচিয়ে চলার অভ্যাস যে তোমাকে কত কষ্ট দিয়েছে তা আমার চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না। তুমি না পেতে পেতে একসময় আশা রাখা ছেড়ে দিয়েছো। বাবার উপর তোমার রাগ জমতে জমতে তা ঠাম্মির প্রতি ঘৃণায় রূপ নিয়েছিলো। শুধু একটু মায়া আর ভালো সর্ম্পকের কারণে তুমি ছোট ঠাম্মিকে কী সেবা করতে। আর বাবার আর ঠাম্মির প্রতি দায়িত্ব পালন করেছ কিন্তু মন থেকে ওদের তুমি মায়া দেখাতে পারোনি মা। আমি তোমার ছেলে, তোমাকে কখনো ভুল বুঝিনি। আমি জানি, আমার বাস্তব জীবনেও আমি এমন অনেক সর্ম্পক পেয়েছি মা। আমি জানি তিক্ততা ভরে গেলে তাকে মন থেকে সত্যিই আর ভালোবাসা যায় না। আমি চাই না তোমার আর মিরার মধ্যে এমন কিছু হোক, মিরাকে কখনো আমায় ঘৃণা করতে না হোক। আমি চলে যাওয়ার পর মিরা আমার জন্য এক ফোঁটা পানিও না ফেলুক আমি চাই না। তোমাকে শেষ বয়সে একা হয়ে যেতে না হোক। এমন তিতক্তা বাসা না বাঁধোক যাতে মিরা তোমায় মা ডাকতে বিরক্ত হয়।

মা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। আইসক্রিম খেয়ে উঠে পরে। ব্যাগ খুলে দোকানের দিকে যায়।

- টাকা দিয়ে দিয়েছি মা।
- আমরা খেলাম, বৌমার জন্য নিবি না?

আমি হেসে রিক্সা ডাকলাম। মা যত্ন করে ধরে রেখেছে আইসক্রিমটা।

মিরাকে বললাম, 'মা এনেছে তোমার জন্য আইসক্রিম দেখো।'
মিরার চোখে মুখে বাচ্চাদের মতো খুশি ছিলো। খেতে বসে বড় টুকরোটা মায়ের পাতে দিয়েই যেন ওর শান্তি লাগলো। খিচুড়ি তে লবণ বেশি হয়েছে বলাতে মা বলে,
'যেমন হয়েছে তেমন খা, কষ্ট করে বানিয়েছে ও। পরেরবার আরো ভালো হবে।'
মিরাও সুর মেলায়, 'হু, কষ্ট করে রেঁধেছি, যেমন হয়েছে খেতে হবে।'

আমাকে আজকাল আর ওদের মাঝখানে দাঁড়াতে হয় না। তবে মা মাঝেমধ্যে আমার আর মিরার মাঝখানে আসে আমাদের ঝগড়া হলে। আমি বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকি, ভাবি বাবা তুমিও তো ভাগীদার ছিলে এই মিষ্টি বাতাসের। তোমার ছোট্ট ছোট্ট ভুল গুলো শুধু আমি রিপিট করি নি। তিক্ততা ব্যাপারটা একদিনে হয় না। তার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী থাকি। কী ভীষণ রকম সত্যটা আমরা অন্যকে দোষ দিয়ে দিব্যি জীবন কাটিয়ে দিই!

্ম্পকের_তিক্ততা
দোলনা_বড়ুয়া_তৃষা

দেখতে দেখতে মা কতো বড় হয়ে গেলো।এক বছর আগের ভিডিও
24/09/2023

দেখতে দেখতে মা কতো বড় হয়ে গেলো।
এক বছর আগের ভিডিও

26/08/2023
সিংহ শিয়ালকে বলে - যা আমার জন্য খাবার নিয়ে আয়।শিয়াল ঘোড়ার কাছে গিয়ে বলে- ভাইজান কেমন আছেন?ঘোড়া চিন্তা করে- যে শিয়াল খ্যা...
24/08/2023

সিংহ শিয়ালকে বলে - যা আমার জন্য খাবার নিয়ে আয়।
শিয়াল ঘোড়ার কাছে গিয়ে বলে- ভাইজান কেমন আছেন?
ঘোড়া চিন্তা করে- যে শিয়াল খ্যাক খ্যাক করা ছাড়া কোনো কথা বলে না- সে আজ এতো মধুর স্বরে ডাকছে কেন?
নিশ্চয়ই কোনো বদ মতলব আছে।
ঘোড়া শিয়ালের ডাকে সাড়া দেয় না।
শিয়াল এবার ময়ুরীর কাছে গিয়ে বলে- আপুমনি কেমন আছো। দেখতে খুবই মিষ্টি লাগছে।
ময়ুরীও বুঝতে পারে- শিয়ালের মুখে মিষ্টি বচন। নিশ্চয়ই লক্ষণ ভালো না।
সে ও সাড়া দেয় না।
শিয়াল এবার গাধার কাছে গিয়ে বলে- বাহ! তোমাকে খুবই হ্যান্ডসাম মনে হচ্ছে।
এরকম হ্যান্ডসাম একটা প্রাণী খেটে খেটে জীবনটা নষ্ট করে দিলো।
তোমাকে আর কষ্ট করতে হবেনা। রাজার বয়স হয়ে গেছে।
তিনি অবসরে যাবেন। আর তোমাকে রাজা বানাবেন।
চলো আমার সাথে সিংহাসনে চলো।
গাধা খুব খুশি হয়। শিয়ালের সাথে সিংহাসনে আসে।
সিংহের কাছে আসা মাত্রই সিংহের এক থাবায় গাধা তার কান দুটো হারায়।
কিন্তু কোনো রকমে পালিয়ে বাঁচে।
শিয়াল গাধার কাছে এসে বলে- এতো বোকা হলে রাজা হবে কিভাবে।
রাজা তোমার মাথায় মুকুট পরাবে। কিন্তু দুপাশে দুটো কান থাকলে কি রাজমুকুট ঠিকমতো মাথায় বসবে।
তাইতো তোমার কান দুটো তোলে নেয়া হয়েছে।
কিছু বুঝনা অবুঝ প্রাণী- এটাকে গ্রুমিং বলে।
চলো চলো আমার সাথে চলো। দেরি হলে অন্য কেউ আবার রাজা হয়ে যাবে।
গাধা আবার সিংহের কাছে আসে। এবার সিংহের আরেক থাবায় তার লেজখানা খসে পড়ে।
কিন্তু এবারও পালিয়ে বাঁচে।
শিয়াল যথারীতি গাধার কাছে এসে বলে- আবারও ভুল করলে।
লেজ থাকলে রাজ সিংহাসনে বসবে কিভাবে।
তাই তোমার লেজটা খসানো হয়েছে।
অবুঝ প্রাণী দূরদর্শী চিন্তা করতেই পারোনা।
এটা হলো আলট্রা গ্রুমিং। মানে একেবারে ফাইনাল টাচ।
চলো চলো তাড়াতাড়ি সিংহাসনে চলো।
গাধা আবারও সিংহাসনে আসে।
এবার আর সে বাঁচতে পারে না।
সিংহের থাবায় তার ক্ষত বিক্ষত দেহ খানা মাটিতে পড়ে আছে।
সিংহের দাঁতে মুখে রক্তের দাগ।
শিয়াল সিংহকে বলে - মহারাজ এতো কষ্ট করে আপনি খাবেন।
মাথাটা আমাকে দেন। সুন্দর করে প্লেটে সাজিয়ে দেই।
শিয়াল গাধার ব্রেণটুকু খেয়ে মাথার অবশিষ্ট অংশ সিংহকে দেয়।
সিংহ বলে- ব্রেণ কোথায়।
শিয়াল বলে- মহারাজ যে বারবার ধোকা খেয়েও আপনার কাছে এসেছে- আপনি কি মনে করেন তার ব্রেণ বলে কিছু আছে।
গাছের ডালের উপর থেকে ময়ুর বলে-
তার ব্রেণ ঠিকই আছে। কিন্তু অতি সহজ সরল হওয়ায় প্রতারকদের বুঝতে পারেনি।
প্যাঁচা তার সন্তানকে বলে -এই ঘটনা থেকে তোমরা কি শিখলে।
শিখলামঃ
হঠাৎ করে কেউ যদি বড় আপন হয়ে ওঠে, বুঝতে হবে তার গোপন দূরভিসন্ধি আছে।
এটাও শিখলাম- যার যে কাজ তাকে সেটাই করতে হয়। অন্যের কুমন্ত্রণা শুনতে হয়না।
লোভের ফল কখনো মিষ্টি হয়না।
সাদাসিদা হওয়া ভালো। কিন্তু বোকা হওয়া ভালো না।
সবচেয়ে বড় জিনিসটা শিখলাম তা হলো- প্রতারকদের একবার বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু বারবার বিশ্বাস করা যায় না।
অতি বিশ্বাস করে সে ঠকেছে। আর নিজের জীবন দিয়ে তার বিশ্বাসের মর্মন্তুদ পরিসমাপ্তি ঘটেছে।

© ( #তুর্কীয়_গল্প_অবলম্বনে)


শৈবাল দিঘীরে বলে উচ্চ করে শীরলিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির
22/08/2023

শৈবাল দিঘীরে বলে উচ্চ করে শীর
লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির

😂😂😂
31/07/2023

😂😂😂

23/07/2023

কেল্টুর মা কেল্টুকে বললো..!🥹🫰

মা : কেল্টু তোর শশুরকে দেখে আয় গিয়ে। 😕

কেল্টু : আমি উনাকে গিয়ে কি বলবো মা?🙄

মা : গিয়ে বলবি আব্বা কেমন আছেন?
যদি বলে ভাল আছি, বলবি আমিও তাই আশা করি।।😍

তার পর জিঙ্গেস করবি কোন ডাক্তার দেখাইছিলেন?
যে ডাক্তারের নাম বলবো, তোই বলবি উনিতো খুব ভাল ডাক্তার.।😒

তারপর জিঙ্গেস করবি আপনি সুস্থ হবেন কবে?
যেদিনের কথা কইবো, তোই কইবি, সেইদিন আমি খুব খুশি হবো। 🤗

#তো কেল্টু গেলো শশুর বাড়ি।🙂👍

কেল্টু : আব্বা কেমন আছেন ? ☹️

কেল্টুর শশুর : মরার মতো আছি।😑

কেল্টু : আমিও তাই আশা করি। 😄

কেল্টু : কোন ডাক্তার দেখাইছিলেন?🤨

কেল্টুর শশুর : আজরাইল। 😔

কেল্টু : উনিতো খুব ভাল ডাক্তার। আব্বা আপনি সুস্থ হবেন কবে?😊

কেল্টুর শশুর : দেহ থেকে যেদিন প্রানটা বেরিয়ে যাবে সেদিন..!😑

কেল্টু : সেদিন আমি খুব খুশি হবো..!😁

শশুর বেহুশ...!🫤🫤🫤

😁😁
25/06/2023

😁😁

😁😁😁
12/06/2023

😁😁😁

এখন শীত অথবা বৃষ্টি একটা হলেই চলবে আর কিছু লাগবে না
02/06/2023

এখন শীত অথবা বৃষ্টি একটা হলেই চলবে
আর কিছু লাগবে না

হাসুন প্রান খুলে 😂😂
25/05/2023

হাসুন প্রান খুলে 😂😂

07/05/2023

তিনজন শিক্ষক থাকা একটি গাড়িতে আগুন লাগলে; বাংলা শিক্ষক বললেন- বাঁচাও। ইংরেজি শিক্ষক বললেন -help,গণিত শিক্ষক কী বলবেন?

খুবই কর্মঠ, কাজ পাগলা চাইনিজরা শনি ও রবি দুইদিন ছুটি দেয়; দুপুরে লাঞ্চের পরে ঘুমানোর জন্য ১ ঘন্টা সময় দেয়। শুধু তাই নয়, ...
05/05/2023

খুবই কর্মঠ, কাজ পাগলা চাইনিজরা শনি ও রবি দুইদিন ছুটি দেয়; দুপুরে লাঞ্চের পরে ঘুমানোর জন্য ১ ঘন্টা সময় দেয়। শুধু তাই নয়, সবাই যাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারে তার জন্য বিশেষ ধরনের চেয়ার দেয়, পরিবেশ বানিয়ে দেয়।

কেন?

তারা কি বোঝেনা যে ৭ দিনে ৬ দিন ১০/১২ ঘন্টা করে কর্মী কে খাটালে আউটপুট বেশি পাওয়া যাবে?

এই প্রশ্নটি আমি এক চাইনিজ কে করেছিলাম; তিনি উত্তর দিয়েছিলেন ৭ দিনে ৬ দিন ১২/১৪ ঘন্টা খাটিয়ে তুমি শুধু গা-ধা পালবে; কোয়ালিটি পেতে চাইলে তোমাকে মানুষ পালতে হবে, যার ব্রেনকে তুমি যত বৈচিত্র দিতে পারবে, প্রয়োজনমত রেস্ট দিতে পারবে ; ক্রিয়েটিভ আউটপুট পাবে।

তোমার কোম্পানির কাজ যদি গা-ধার কাজ হয় ; মানে বুদ্ধিমত্তা দরকার নাই শুধুমাত্র মাল বহন করতে পারলেই হলো, তাহলে ৭ দিনে পারলে ৭ দিনই কাজ করাও; যখন আর মাল বহন করতে পারবেনা তখন একটিকে বাদ দিয়ে আরেকটিকে নিয়ে নাও।

কিন্তু যদি বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন হয়, তাহলে তাকে দুইদিন ছুটি, দুপুরে ঘুম, পেইড ভ্যাকেশন ইত্যাদি দিতে হবে।

সংগৃহীত পোস্ট।

05/05/2023

জুম্মা
মোবারক

27/04/2023

😂😂

27/04/2023

True fact

26/04/2023

কেমন হবে 😂😂😂

26/04/2023

21/04/2023

বিয়ের সাত আট মাস পরের ঘটনা।অফিস থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখছি ছোটো পিসিমা এসেছে।পিসিমা মানে পিসি শাশুড়ি।সেই প্রথম পিসিমাকে সামনে থেকে দেখা।বিয়েতে আসতে পারেননি তখন।শরীর খারাপ ছিল।আমি বাড়ি ঢুকতেই আমার শাশুড়ি মা বললেন,

--বৌমা উনি হলেন তোমার ছোটো পিসিমা।

আমি প্রণাম করতেই উনি বললেন,

--অফিস থেকে ফিরলে বুঝি?

--হ্যাঁ পিসিমা।

--প্রতিদিন এই টাইমেই বাড়ি ফেরো?

--হ্যাঁ।

আমি আরো কিছু বলতে যাব আমার শাশুড়ি মা বললেন,

--সবে তো ফিরলে।একটু রেস্ট করো।পরে গল্প করবে খন।

আমি নিজের রুমে চলে যেতেই আমার শাশুড়ি মা পিসি শাশুড়ির সাথে গল্প করতে শুরু করলেন।ততক্ষণে আমার হ্যাজব্যাণ্ড ফিরে গেছে।ও আমার থেকে ঘণ্টা খানেক আগেই ফেরে।আমি ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট করি তারপর আমার হ্যাজব্যাণ্ড এক কাপ চা আমাকে নিয়ে এসে দেয়।প্রতিদিন এটাই ওর রুটিন।ও ফিরলে আমার শাশুড়ি মা তখন চা করে দেয় ওকে।আমি যেহেতু পরে ফিরি তাই আমাকে চা টা ও-ই করে দেয়।চা করে যখন আমার জন্য নিয়ে আসছিল পিসিমার চোখে পড়ে এই ব্যাপারটা। তখন কিছু বলেননি উনি।ঘটনাটা ঘটল আরো একটু পরে।রাতের রান্নাটা আমরাই করি।মানে আমি আর আমার হ্যাজব্যাণ্ড।তরকারি বলতে সেদিন ছিল পনির তরকারি আর ছোলার ডাল।সেটা তখন রান্না হয়ে গেছে।লুচি হবে।আমার হ্যাজব্যাণ্ড লুচি বেলে দিচ্ছে আর আমি ভাজছি একটা একটা করে।সেই মুহুর্তেই পিসিমা রান্নাঘরে।এই দৃশ্য দেখে চোখ বড় বড় করে বলে,

---হ্যাঁ রে অর্ক, বিয়ে করে তো মেয়েলি কাজ অনেক শিখে নিয়েছিস?বৌকে চা করে খাওয়ানো,বৌকে রান্নার কাজে হেল্প করা।অফিস থেকে ফিরে তো রেস্ট পাস না একটুও।বৌ বললে তো শুনতেই হবে!যতই হোক চাকরি করা বৌ তো!

কথাটা শুনে খারাপ লাগলো।আমার হ্যাজব্যাণ্ড কিছু উত্তর দেওয়ার আগেই দেখি আমার শাশুড়ি মা পিছনে এসে দাঁড়িয়ে পিসি শাশুড়িকে বলে,

--আরে কী যে বলো ছোড়দি!বৌমা ওকে কাজ করতে বলবে কেন?ও গুলো সব আমিই ঠিক করে দিয়েছি।অফিস থেকে তো বাবু একা ফেরে না।বৌমাও ফেরে।রেস্ট তো দুজনেরই পাওয়া দরকার।সবাই যদি রেস্ট করে খাওয়া দাওয়া তো বন্ধ থাকবে না?আর সকালের রান্নটা আমি করে দিই।দুজনেই অফিস যায়।তোমার দাদা আর আমি এমনিতেই ভোরে উঠি।দুজনে মর্ণিং ওয়াক সেরে এসে আমি রান্নাটা বসিয়ে দিই।তোমার দাদা তখন হাতেহাতে হেল্প করে দেয়।কাজের আবার মেয়েলি বলে কিছু আছে নাকি!তুমি তো জানো আমি ছেলেকে সব কাজ শিখিয়েছি।তোমার দাদাও তখন কত কাজ করে দিত।এখনো তাই করে।কাজ কাজই।সংসারে সুখ শান্তি বজায় থাকে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা ও ভালোবাসার মাধ্যমে। দুজন যদি দুজনকে না দেখে,দুজনের ভালো মন্দ না বোঝে তাহলে বুঝবে কে!তাই ওরা ওদের মতো কাজ করুক।আমরা এখানে দাঁড়িয়ে থেকে করব কি!চলো। বরং বাবুর বিয়ের ছবি গুলো তোমাকে দেখাই।

কথা গুলো শুনে পিসিমার মুখটা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল।রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার সময় পিসিমার একটা কথা কানে এল,

--বৌদি এতটা লাই দিও না।আশকারা পেয়ে গেলে মাথায় চড়ে বসবে।নিজের ছেলের কথাটাও ভাবো।

আমার শাশুড়ি তখন হাসতে হাসতেই বেশ জোরে জোরেই বললেন,

---ওরা এখনকার ছেলে মেয়ে।ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা ওদের আছে।আমি আমার মতো করে চালাতে চাইলেও চলবে না।সময় বদলেছে।তাই ওদের জীবন যাত্রার সঙ্গে আমাদেরই অ্যাডজাস্ট করতে হবে।আর তা না পারলেই সমস্যা বাঁধবে।নিজেদের আধুনিক হতে হবে আরো।পুরানো রীতি নীতির সঙ্গে ওদেরকে মেলালে আর চলবে না।বুঝলে ছোড়দি, বৌমা কখনোই নিজের মেয়ে হয় না,আর শাশুড়িও নিজের মা হয় না।নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া থাকলে একটা বন্ধুত্ব হয়ে যায়।আমার ছেলেটার ভালো থাকার কথা চিন্তা করতে গেলে বৌমাকেও ভালোবাসতে হবে বেশি।আমি তো বাবুর বিয়ের পরেই বাবুকে বলেই দিয়েছি,যে কাজটা নিজে করে নিতে পারবে সে কাজটা নিজেই করে নিও।বৌ এসেছে মানে বৌয়ের ওপর হুকুম করে পায়ের ওপর পা তুলে বসে খাবে সেটা চলবে না।বুঝতে হবে তোমার বৌ কিন্তু তার সব কিছু ছেড়ে তোমার কাছে এসেছে।তুমি কিন্তু যাও নি।তাই তোমাকেই সহযোগিতা করতে হবে।তোমাকেই অ্যাডজাস্ট করতে হবে বেশি।

আজ পাঁচবছর হলো এই বোঝা পড়ার মধ্যে দিয়েই সব কিছু চলছে ভালোভাবেই।না আছে ঝামেলা, না আছে অশান্তি।ব‍্যালেন্সটা শিখতে হয়।তার জন্য লাগে উন্নত মন আর উন্নত মনের মানুষ।সেই উন্নত মানসিকতার সংস্পর্শে থাকলে সংসার সুখের হবেই।

গল্প: অ্যাডজাস্ট
কলমে:সরজিৎ ঘোষ।

সবাই সচেতন হোন
21/04/2023

সবাই সচেতন হোন

20/04/2023

সম্পর্কের কোনো সমীকরণ হয় না।যে সমীকরণে অন্যজন ভালো আছে,ওই সমীকরণে তুমি ভালো না থাকতেও পারো।জীবনের সমীকরণ প্রত্যেকের কাছে আলাদা।

এই তো দেখো না,যে মানুষটার সাথে তুমি থাকতে পারলে না,সে মানুষটা অন্যের সাথে দিব্যি সংসার করছে।অথচ এক সময় তার সাথে তোমার সব বিষয়েই মিল ছিল।তুমি পাহাড় ভালোবাসতে,সেও পাহাড় ভালোবাসত।পূর্ণিমার চাঁদ দেখে তুমি মুগ্ধ হতে,সেও চাঁদের আলোয় নিজেকে ভেজাত।ভীড়,কোলাহল তোমাকে বিরক্ত করত,সেও নিরিবিলি নিরালা পছন্দ করত।তারপরেও সব অমিল হয়ে গেলে।একটা ঘর ভেঙে দুটো ঘর হলো।দুটো সংসার হয়ে গেল।

দুজনের মানুষের মধ্যে সব কিছু মিলে গেলে জীবনের কিছু বৈচিত্র্য থাকে না আর।সব একঘেয়ে লাগে।সব কিছু চেনা হয়ে যায়,অচেনা কিছুই থাকে না আর।

যা তোমার কাছে আছে,তা যদি তুমি আবার পাও,তাতে তোমার সাময়িক ভালোলাগা তৈরি হয়।কিন্তু আকর্ষণ থাকে না।তার প্রতি ততটা ভালোবাসা তৈরি হয় না।বরং যা নেই তা পেতেই পছন্দ করে মানুষ।একজন মানুষের সব পছন্দের সাথে নিজের পছন্দ মিলে গেলেই,সম্পর্কের বন্ধন সব সময় দৃঢ় হয় না। কিছু অপছন্দ কে পছন্দ করে নিয়ে চলতে পারলেই বন্ধন সুদৃঢ় হয়।প্রতিটা মানুষ আলাদা,তাদের পছন্দ আলাদা,জীবনের সমীকরণ আলাদা।সম্পর্ক মানে তার পছন্দের সাথে নিজের পছন্দকে মেলানো নয়,সম্পর্ক মানে তার পছন্দের সাথে নিজের অপছন্দকে মেলানো,তার অপছন্দের সাথে নিজের পছন্দকে মেলানো।সম্পর্কে টিকে থাকে অ্যাডজাস্টের সমীকরণে।

কলমে: সরজিৎ ঘোষ। Sarajit Ghosh

Address

Khulna

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Nousad's Story posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share